সংগীত অথবা অকূল সমুদ্দুরে অবগাহন

আমরা যখন কোনকিছু বলি-অর্থবোধকই বলি। যাতে অপরকে নিজের ভাব বুঝাতে পারি। শুধু তাই নয়, নিজের ভেতর সে অর্থের প্রতি এক ধরণের তাড়না থাকে। অর্থ মূলতঃ নির্দেশনামূলক। এই নির্দেশনা কোন ঘটনাকারে উপস্থিত হয়, যা একাধারে বস্তুকেন্দ্রিক আবার অনুভূতির সাথেও জড়িত। যখন আপনি কিছু বললেন, তা ধ্বনি আকারে অপরের কানে পৌঁছায়। তা বিশিষ্ট দ্যোতনা তৈরী করে। যেমন- আনন্দ। এর যে অর্থবোধকতা, রহস্যময় মনে হতে পারে, কেননা বস্তু আকারে এর নির্দেশনাটি কি? এই শব্দটি উচ্চারণের সাথে সাথে আপনার মনে উৎফুল তার যে ভাব আসে তা ভাষায় বা বস্তু দিয়ে দেখানোর নয়। এই হলো শব্দ ও অনুভূতির নিজস্ব সম্পর্ক। কোন নাম শুধু নিছক নামই নয়, অনুভূতির বাহকও, যার ব্যাপকতা অনির্ণীয়। এর চেয়ে আরো গুঢ় উদাহরণ হলো সংগীত। যদি বলেন সংগীত, মনে হবে অদৃশ্য কোন সুতোয় টান পড়ল বুঝি। হৃদয়তন্ত্রীতে সে টান কম্পন তৈরী করে- যার অনুরণন ঘটে সমগ্র সত্ত্বায়। মানুষকে দার্শনিক বা যুক্তিগ্রাহ্যরূপে বুঝাতে গেলে তার বুদ্ধিমত্তা বা কুশলতার কথা বলা হয়। একে স্বীকার করে নিতে হয়। কিস্তু মানুষের নান্দনিকতার কথায় আসলে সংগীতের কোন বিকল্প নাই। শিল্পের মধ্যে সংগীতের স্থান সবার উপরে। এতে যুক্তি বুদ্ধি মতা আছে বটে, তা আবার নতুন যুক্তিবোধ ও প্রকরণের স্থানে চলে আসে। যা নিয়মের ভেতর থেকে নিয়মের লঙ্ঘনও বটে। বুঝতে হবে এটাই সৃজনশীলতার ধরণ। আবার ব্যক্তির সংগীত রুচি থেকেও ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা করা যায়। ব্যক্তির বুদ্ধিবৃত্তির সাথে তার সংগীত রুচির সবিশেষ সম্পর্ক আছে। অথবা এই সম্পর্কে তার বলার কিছু আছে। একমাত্র সংগীতই সার্বজনীন শিল্প। বোধ করি সংগীত মানুষের বাইরের সাথে সাথে ভেতরকার কথা বলে দেয়। প্রতিটি মানুষই নিজেকে প্রকাশে ভাষা সংকটে ভুগে, পরম ভাষার অনুসন্ধান করে। জগতকে জানার বুঝার যে আকুলতা তাও এই ভেতর বাইরের সম্পর্ককে বুঝার বিষয়। এ অর্থে, সংগীত ভেতরকার সঙ্গতিও বটে। মানুষে মানুষে যোগাযোগে আমরা যদি নির্দেশনামূলক কোন কিছুর কথা না বলতে চাই - একমাত্র সংগীতই সার্বজনীন হয়ে উঠে। সে হিসেবে তার অবদান দেশ-কাল উর্ধ্বে। আমরা যখন কোন মহৎ কম্পোজিশন বা গান শুনি, তা আপনার মাঝে যে অনুভূতি এনে দেয়, দেখা যাবে শত মাইল দূরের একজনের ভেতরও কাছকাছি অনুভূতি তৈরী করে। কেন? সংগীতের অন্তর্নিহিত শক্তি যা অকৃত্রিম প্রাকৃতিক এবঙ মহাজাগতিক। মিথলজিতে, এমনকী ধর্মের ক্ষেত্রে সংগীতকে মানবকূল এবঙ প্রকৃতি জগতের সম্পর্কের যোগসূত্রের জায়গায় দেখানো হয়। প্রাকৃতিক জগতে ছড়িয়ে আছে সুরের বৈচিত্র্য লীলা। পাখির কলতান, ঝর্ণার কলকল ধ্বনি অথবা বাতাসে বৃক্ষের দুলুনীতে সকল কিছুতে পাওয়া যাবে সংগীতের সাতসুর। তার মানে এই নয় যে, সংগীতকে এত সহজে ব্যাখ্যা করা চলে, তারপরও ক্ষুদ্রজ্ঞান এবঙ মুগ্ধতার স্থান হতে কিছু কথা বলার চেষ্টা মাত্র। কেনই বা এই অপচেষ্টা করতে হয়! সার্বিকভাবে, মানুষের যে কোন সৃজনীই মহৎ সৃজনী। সকল সৃজনীতে সুক্ষ্মতার ছাপ থাকে। তার অপরাপর কর্মের চেয়ে গুনগতভাবে একেবারে পৃথক। এবং অনুভূতির গভীরতম স্থানে এর অধিষ্ঠান। যদি মানুষের সকল ক্রিয়াশীলতাকে মোটা দাগে বিবেচনা করা হয়, তাহলে সৃজনীশক্তির প্রকাশ এবঙ বিকাশ সম্ভব নয়। আমরা প্রকৃতির ভেতর হতে যে সুর সম্ভার অনুভব করি না কেন, তাকে ধারণ করা বা লালন করা সহজ বিষয় নয়। একে শুধুমাত্র বিদ্যমান অপরাপর ঘটনা বা কার্যকারণ পরম্পরারূপে দেখলে চলে না। মানুষের মতো শিল্প নিজেও নানামাত্রায় বিকাশমান, যা মানুষের হাতে হওয়া না হওয়ার উপর নির্ভর করে না। মানুষ হলো অফুরন্ত সম্ভাবনার স্বার। সে সম্ভাবনাকে অনুধাবন করে বেড়ে উঠে অথবা যথার্থ হয়ে উঠে যথার্থ মানুষ। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিদেন পক্ষে তার সৃজনী শক্তির ক্ষেত্রে - যা তার অন্তর্নিহিত নয়, সে হয়তো তার সম্পর্কে চিন্তা করতে পারে, বুঝতে পারে কিন্তু ধারণ করতে পারে না। সংগীত যদি তার ভেতরকার বিষয় না হয়- সে হয়তো চর্চা করতে পারবে কিন্তু একে লালন বা এর সৃজনী বুঝতে অক্ষম। মানব অনুভূতির মধ্যে প্রধানতম হলো দুঃখবোধ, বিরহ। সংগীতের চেয়ে আর কে আছে যে এতো নিখুঁতভাবে এই বোধগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে পারে। শুধু দুঃখবোধই নয় মানুষের অপরাপর অনুভূতিগুলোকেও সে সুক্ষ্মভাবে ধারণ করে। আরো, মনে রাখা দরকার সংগীত শুধুমাত্র বিশেষ অনুভূতিকে প্রকাশ করে তা-ই নয়, সে আমাদের অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে, শাণিত করে, নিরাময় গুণধারী এবঙ বাস্তব জগতের বিষয়। আকাশের অসীমতা, সাগরের বিশালতা, পাখির উড়ে যাওয়া, ঋতু পরিবর্তন, বিশেষ কোন লগ্ন সকল কিছুই এর মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। একেবারে জাগতিক ঘটনাকারে সংগীত আমাদের সামনে বিপুল শক্তি সামর্থ্য নিয়ে হাজির হয়। আমাদের শ্রমের সাথে ঘামের সাথে। মাটি যেমন সোনা ফলায়, তেমনি মাটি থেকেই উঠে আসে মাটির গন্ধ মাখা সংগীত। এটাকে নিছক জাগতিক বললে ভুল বিবেচনার সুযোগ থাকে। কেননা আধ্যাত্মিক দ্যোতনা ছাড়া সংগীত সম্ভব না। জাগতিক অর্থে এ জন্য যে, এটা সরাসরি আমাদের কায়িক জীবনকে প্রভাবিত করে, সহজ করে তোলে। ফর্মের দিক হতে এদের উচ্চাঙ্গিকতাকে আলাদা করা যায় না। শুধুমাত্র অলৌকিক খোলস পড়ালেই সে মহৎ হয়ে উঠে না অথবা শ্রেণীগত চেতনায় ব্যাখ্যা করলে সংগীতকে তার নিখাদ স্থান হতে বিচ্যুত করা হয়। কারণ, ইতিহাসের উত্থান-পতন, মানব সভ্যতার ক্রমিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়েও সংগীতকে উঠে আসতে হয়েছে। তাই এটি শুধুমাত্র অবসরের আনন্দ বিনোদনই নয়, সেই মানুষের এই মানুষ হয়ে উঠার স্বাক্ষী ও বটে। ভাব প্রকাশে সংগীতের অবদান সার্বজনীন। এই সার্বজনীনতা মানুষে মানুষে, মানুষের সাথে প্রকৃতি, মানূষের সাথে অধিসত্ত্বার যোগাযোগ। মানুষ যখন নিজের স্বরূপ অন্বেষণ করে, তখন সে যাকে দেখে, সে আসলে অপর। মানুষের গূঢ়তম, প্রাজ্ঞ এবঙ জটিল অনুভুতি। আমরা দেখি সংগীত কত সহজে এই অনুভূতি প্রেমে বিরহে মূর্ত করে তোলে। এইসব সম্পর্কের স্বরূপ নির্ণয়ে জগতের প্রায় সকল ধর্মে, দর্শনে সংগীতের দেখা মেলে। মানবসত্ত্বার সাথে অধিসত্ত্বার যে সম্পর্ক- মানুষের জগতে তার সব' চে’ মূর্তরূপগুলো আমরা পাই কাব্য এবঙ সংগীতে। কেউ কেউ বলে থাকেন, সেটাই সব' চে’ ভালো কবিতা যা গান হয়ে উঠতে পারে। সূফী সাধনায়, বাউল গানে, গীর্জার প্রার্থনা সংগীত সহজ উদাহরণ। মানুষ সত্ত্বা হিসেবে একই সাথে ইতিহাসে এবঙ অনৈতিহাসে, একই সাথে বস্তুরূপে আবার চিন্তারূপে। মানূষের এই দ্বৈতরূপ তার নিজের ভেতর পরম মানব আবার পরম সত্ত্বাকেও অনুসন্ধান করে। এই যে অনুসন্ধান তা কালে কালে সংগীতে প্রকাশিত হয়েছে। ভেদের মাঝে অভেদ, রূপের মাঝে অরূপ। সংগীতের সাথে নিখুঁত পরিমান জ্ঞান জড়িত। তাল লয় মাত্রার যে ধারণা- তা পুরোপুরি গাণিতিক। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে নিখুঁত জ্ঞানের জায়গাটা গণিতের দখলে। গণিতই বার বার একই ফলোৎপাদন করতে পারে। তাছাড়া সকল বিজ্ঞানের ব্যবহারিক বিন্যাস ঘটে গণিতের সাহায্যে। যখন কোন স্বরলিপি তৈরী করা হয়, তা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের মতোই গণিতের সাথে সঙ্গতি রা করে। যার মধ্যে একচুল এদিক ওদিক হলে পুরো প্রক্রিয়াটা মূল লাইন থেকে বিচ্যুত হয়। উদ্দেশ্যবাদীতা বা অন্য কোন নির্দেশনার দিক হতে অথবা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে জগতকে দেখি আভ্যন্তরীণ সঙ্গতির নিপুণ বিন্যাসে। তেমনি সংগীত বরাবরই এমন কিছুর কথা বলে যায়। আবার তাল লয়ের যে ফর্ম তাকে ভেঙ্গে চুরে অসাধারণ সব কম্পোজিশন তৈরী হয়, যা আসলে নতুন নতুন গাণিতিক বিন্যাস। মানুষের যে কোন সৃজনীশক্তি তার প্রকৃতিগত। এখানে আরোপিত কিছু থাকে না। যদি কিছু আরোপ করা হয় মূল মতারই বিকৃতি ঘটে। শৈশবে সংগীত প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। সে আমাদের বাউল গানই হোক আর পাশ্চাত্যের মোজার্টের কথা আসুক। কিন্তু শুধু ব্যক্তির একার ঘটনা নয়, বরঙ সামষ্টিক দ্যোতনা বহমান। মানুষের নিজের যে কোন ক্ষমতার অনুধাবন, জানা, বুঝা, মূল্যায়ন, বিকাশ এবঙ অপরের সাথে ভাগ করে নেয়া পবিত্র দায়িত্ব। সংগীতের সুধা যদি মর্ত্যে ইন্দ্রজাল তৈরীর মতা রাখে তবে সে অপরকে এর থেকে বঞ্চিত রাখবে কেন? সংগীতকে জানা বুঝা অনুশীলন এবঙ এর সমঝদার হওয়া সদগুণের বিষয় বটে। সংগীত একাগ্র সাধনার বিষয়। সাধনার ভেতর দিয়েই স্থান করে নিতে হয়। চর্চা এবঙ সাধনার ভেতর দিয়ে এক একটি সিঁড়ি অতিক্রম করা আর এক একটি দরোজা খুলে যাওয়া। সাধনার মাধ্যমে কোন কলাকে সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম অনুধাবন করা যায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছুর মর্মে পৌঁছা। এর নিজের ভেতরের শক্তি হিসেবে অনুভব করা এবঙ এর সাথে একজন মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থকতা, প্রকৃতির মতাকে উপলব্ধির বিশাল যজ্ঞ ভর করে। একজন প্রকৃত কৃষক যে মাঠে ফসল ফলায়, সে আসলে অন্য সকলের মতো নয়। তার জীবনবোধ ঐ ফসলের জীবনচক্রের সাথে জড়িয়ে যায়, তার কাছে ঐ ফসলের মাঠ, ফসল হয়ে উঠে জীবন্ত সত্ত্বা, যার সাথে নিজের-সকলের সুখ দুঃখ ভাগ করে নেয়া যায়। একজন সংগীত সাধকের সংগীত এভাবেই জীবন্তরূপে হাজির। যা নানা কাল চক্রে নানা রূপে আবির্ভূত হয়। তাই সংগীত নিছকই শিল্পের জন্য শিল্প নয়, দুনিয়াবী ভেদ-অভেদ, ঘাত-প্রতিঘাত, পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত। আমাদের বুঝতে হবে কেন মানুষ সংগীতের টানে ঘর ছাড়ে। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক ধর্ম সাধক সংগীতের মধ্য দিয়ে তাঁর সাধনা করে গেছেন। সংগীতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে বিনয় ভাব। সাধককে বিনয়ী হতে হয়, তাহলে সংগীত স্বমহিমায় তার কাছে ধরা পড়ে। (এখানে ভুল বুঝার কোন সুযোগ নাই, সংগীত আল্লাহ প্রদত্ত) বিনয় ছাড়া কোন শাস্ত্রেই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। যদি আপনি কোন কিছুর মর্মে পৌঁছাতে চান, তবে আপনাকে বিনয়ী হতে হবে। বিনয়ই কোন কিছুকে বোধগম্য করে, এটা সাধনার অংশ। এমনকি আপনার অযোগ্যতা কখনো কখনো বিনয় ভাবের কারণে যোগ্যতার স্তরে উন্নীত হয়। সকল কিছুর মতো ভেদজ্ঞান সংগীতের মধ্যেও ক্রিয়াশীল। যদি বিনয়ে অনর্থ ঘটে, তখন ফারাকগুলো আপনি বুঝতে পারবেন না অর্থাৎ অর্থের চেয়ে অনর্থই বেশী। সাধনা, বিনয় এ শব্দ দু’টি আমাদের সহজ উপসংহারে পৌঁছে দেয়, গুরু ছাড়া কোন বিদ্যা অর্জনই হয় না। পথ চলার জন্য পথপ্রদর্শকের প্রয়োজন। জ্ঞানের সোপান গুরুই চিনিয়ে দেবেন। গুরু ছাড়া সংগীতের সাগরে অবগাহন সম্ভব নয়। যে কোন দেশ যে কোন কালে গুরুই আপনাকে পথ দেখাবে। আমরা সবাই কথা বলতে পারি, তার ভেতর স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ সকলই আছে, তারপরও কি বর্ণমালা নিজে নিজে আয়ত্ব করার বিষয়? গুরু শিষ্যের পরম্পরায় সংগীতের মহান কীর্তিগুলো আমরা দেখি। এতক্ষণ যা হলো, এগুলো বাইরের কথা, ভেতরকার কথা ধ্যানে গিয়ে বুঝতে হবে। নতুবা আপনি এমন কিছুর কল্পনা করুন যার মধ্যে কোন সঙ্গতি খুঁজে পাবেন না। যেখানে প্রত্যেকে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বসবাস করেন, কেউ কারো ভাষা বুঝেন না। লোকযাত্রা পত্রিকা জুন ২০০৯ সংখ্যায় প্রকাশিত।


নিজের সম্পর্কে লেখক

ইচ্ছেশূন্যতার কোন অর্থ হয় না। মানুষ নিজেই ইচ্ছের রূপান্তর। তার বাসনাগুলো নানারূপে অধরাকে ধরে, অনুধাবন করে। একই সাথে সে নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে চায়। এই চাওয়া-না চাওয়ার কি ঘটে সেটা কথা নয়। কথা হলো, তাকে চাইতে হয় আবার চাওয়াটাকে অস্বীকার করতে হয়। এই স্বীকার-অস্বীকারের দ্বন্ধে যেটুকু আশা বেঁচে থাকে তাকে বলি, এই তো আছি। এই বেঁচে থাকাটাই আনন্দের।

ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন


৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।