পরিবার ও সামাজিক সংকট

১.           ক্রমশ পরিবারগুলো  ভেঙ্গে যাচ্ছে। একান্নব‌র্তী পরিবারগুলো যেন ছোট ছোট পরিবারে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। সে পরিবারগুলোকে আমরা অনু পরিবার বলতে পারি। বৃদ্ধ পিতা মাতারা সন্তানদের সঙ্গে থাকছেনা কিংবা থাকতে পারছেনা । তারা অসহায় জীবন যাপন করছে। অপরদিকে তাদের সন্তানদের পরিবারগুলো পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্নতার কারণে অসহায় জীবন যাপন করছে। অনু পরিবারগুলোতে যে সব শিশু সন্তান, তরুন-তরুনী বেড়ে উঠছে তারাও প্রতিনিয়ত যান্ত্রিক, নিষ্ঠুর, নির্দয়, নিলজ্জাতার উপাদানগুলো চর্চা করছে। সেই ক্ষেত্রে অভিভাবকরা/পিতা-মাতারা খুবই অসহায়। কিছুই করার নেই, কি করতে পারে ? তারা যেন কোন উপায় কিংবা সমাধানের পথ খুঁজে পাচ্ছে না। না পাওয়ারই কথা। এই পরিস্থিতির জন্য পরিবারগুলোই দায়ী সর্বপ্রথম। আমরাই নিজেদেরকে নিয়ে নিজ নিজ করতে করতে অপর থেকে সমাজ থেকে অনেক দূরে নিয়ে গেছি শুধুমাত্র একাংক সুখের জন্য। সার্বিক সুখ আমরা চোখে দেখি না। চোখ থেকেও আমরা ক্রমশ অন্ধ হয়ে গেছি। এই অন্ধ অভিভাবকের সন্তানরাই বিপদগামী হয়। সম্প্রতি জংঙ্গি তৎপরতায় যে সব তরুন-তরুনীদের চিহ্নিত করা হয়েছে তারা সকলেই সেই সব পরিবারেরই সন্তান। একটু লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাই গুলশান হামলায় যে সব তরুনরা অংশগ্রহন করেছিলো তাদের প্রত্যেকের পরিবারগুলোর প্রতিক্রিয়ায় এই বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে যে- তারা খুবই অসহায়।  এমনটি কি করে হলো? এর জন্য সর্ব মহল থেকে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উপরই বিষদগার করেছেন সকলে অথচ তার চেয়েও এটা যে একটা গুরুত্বপূর্ন সামাজিক সংকট সেই বিষয়টির প্রতি খুব কম লোকেরই দৃষ্টি পড়েছে। যদি এই ভাবে বলি যে     ” শিক্ষা ব্যবস্থার র্দুবলতা কিংবা হজবরল শিক্ষা ব্যবস্থাই একটা সামাজিক সংকট” তাহলে ঠিক আছে। শিক্ষা ব্যবস্থার এই দূর্বলতার সাথে সামাজিক সংকট সৃষ্টির একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে।  সেই বিষয়ে বিশদ আলোচনার দাবি রাখি।

২.            শিক্ষার প্রাথমিক স্তরটি আমাদের পরিবার। সেটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। পরিবার যদি শিক্ষাবান্ধব না হয় তবে ব্যক্তির সাথে সামাজিক সম্পর্কটি প্রখর হয়ে উঠে। একটি পরিবারের মাতার দায়িত্ব সর্বপরি। ব্যক্তির জন্ম থেকে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়ে উঠা পূর্ব পর্যন্ত মাতার প্রভাব বিশেষ ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং মাতাকে হতে হবে শিক্ষিত, মার্জিত, রুচির অধিকারি, সহনশীল, বিবেকবান, সংস্কৃতিবান, সর্বপরি আদর্শ মাতা। তবে আদর্শ মাতার গুনাবলিগুলির উপাদান সমুহ সকল মাতার মধ্যে নাও থাকতে পারে। সেই নূণ্যতম ইতিবাচক গুনাবলিগুলির উপস্তিতি থাকা বাঞ্চনীয়। তবে সম্পূর্ণ আদর্শ মাতা হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। নতুবা ব্যক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এটা স্বাভাবিক। প্রত্যেক মাতার উচিৎ, সন্তান হওয়ার সাথে সাথে আদর্শ মাতার গুনাবলি অর্জন করা। দ্বিতীয়ত আশা যাক পিতার প্রভাব। পিতা একটি পরিবারের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। পিতার সাথে মাতার যুক্ত সম্পর্কের যে ইতিবাচক প্রক্রিয়াগুলো ফুটে উঠে সেই সব ইতিবাচক প্রক্রিয়াগুলোই সন্তানদের উপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পিতা মাতার যেই বৈশিষ্ট্যগুলি সন্তানদের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে সেটি হচ্ছে মানবিকতা ও সংস্কৃতি। পিতা-মাতার সুস্পর্ক মানবিকতা ও সংস্কৃতিকে আরো উজ্জ্বল ও সুসংহত করে তোলে। সংস্কৃতি শিক্ষা অবশ্যই ধর্মীয়/নৈতিক ও জাতীয়তা ভিত্তিক হতে হবে। কোন ভাবেই যেন অপসংস্কৃতির, ধর্মীয় কুসংস্কারগুলোর প্রকাশ কিংবা বিকাশ হয়ে না উঠে। ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষাটা এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ভাবে যদি এই বিষয়টিকে সন্তানদের মধ্যে বিদ্ধ করা না যায় তাহলে পরিবার নৈতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়। পরবর্তীতে ধর্মের সাথে অধর্ম ও স্বার্থবাদী ধর্ম যখন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে তখন সে বিচার বুদ্ধিহীন ভাবে কালো অন্ধকার জগতে জড়িয়ে পড়বে। যেমনটি আমরা অতি সম্প্রতি গুলশান হামলায় জড়িত জংঙ্গি নামক হতভাগা সন্তানদের কথা বলতে পারি। এই সব সন্তানরা যে সব পরিবারগুলো মধ্যে বেড়ে উঠেছিলো সেই পরিবারগুলোকে আর যাই হোক ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষার অভাব ছিলো তা না হলে ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে গঠিত জংঙ্গি নামক সংগঠনের কার্যক্রমে নিজেদের জড়িয়ে ফেলত না । একবার হলেও চিন্তা করত ছোট বেলায় পরিবারের কাছে ধর্মের যে শিক্ষা পেয়েছিলো তা অবশ্যই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেনা, হত্যা কওে কখনই ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় না।

৩.           পারিবারিক সমাজ কাঠামোকে আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিনটি স্তরে ভাগ করতে পারি। যেমন- শহর কেন্দ্রিক, মফস্বল কেন্দ্রিক ও গ্রাম কেন্দ্রিক। শহরের মধ্যে তিনটি শ্রেণী দেখা যায়। ধনী, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র/বস্তীবাসী। এই তিনটি শ্রেণীর সামাজিক ও পারিবারিক বিন্যাস ও ভিন্ন ভিন্ন রকম। ধনীদের সামাজিক অবস্থান অন্যান্য দুইটি শ্রেণী (মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র) থেকে আলাদা । তাদের সামাজিক অবস্থান, ব্যবসা বাণিজ্য, ধন-সম্পত্তি  সব কিছুরই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়। এদেরকে অনেক ক্ষেত্রে ভি আই পি হিসেবে আক্ষায়িত করা হয়। এদের সামাজিক অবস্থানটি অত্যান্ত দৃঢ় ও মজবুত। অপরদিকে শহরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী বলতে আমরা যাদেরকে বুঝাই তারা প্রকৃত পক্ষে দরিদ্র জনগষ্ঠীর পর্যায়ই পড়ে। শুধুমাত্র শিক্ষিত, সরকারি, বেসরকারি অফিস চাকুরিজীবি, মাঝারি ব্যবসায়ি কোন রকমে এক পায়ে দাড়িয়ে জীবন জীবিকা নির্বহ করছে আর উচ্চ বিত্তদের দিকে অসহায় দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে থাকেন কখন ভিআইপি মর্যাদায় পৌছানো যায়, এতটুকু সান্তনার কারণে মধ্যবিত্ত নামটি আকড়ে ধরে পড়ে আছেন। দরিদ্র বলেও ব্যক্তিত্বে লাগে। আমার দৃষ্টিতে এই শ্রেণীটি অত্যান্ত হতদরিদ্রের চেয়েও দরিদ্র। নিম্মবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণীরা ছোট দোকানদার, পিয়ন, কেরানী, মালি, মেথর, মুচি, শীল ইত্যাদি উপশ্রেণীগুলো একত্রি হয়ে দরিদ্রগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে । তাদের না আছে কোন সামাজিক মর্যাদা, না আছে অর্থবিত্ত, সুখ ইত্যাদি। ভাল করে দু’বেলা খাবারও জোগার করতে হিমসিম খেতে হয়। সন্তানদের লেখা পড়া, চিকিৎসা, বাসস্থান কোন কিছুরই নিশ্চিয়তা নাই। রাষ্ট্রীয় প্রতিটি পর্যায়ে এই তিনটি শ্রেণির জন্য জীবন ধারনের ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা পাকাপক্ত করে রাখা হয়েছে যেমন- ধনীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, যানবাহন ইত্যাদি অন্য দুইটি শ্রেণী থেকে ভিন্নতর। এই ব্যবস্থাটিকে আমরা সামাজিক বৈষম্য হিসাবে চিহ্নিত করতে পারি। আর এই সামাজিক বৈষম্যের ভিতর দিয়ে যদি কোন পরিবার কিংবা ব্যক্তি বেড়ে উঠতে থাকে স্বাভাবিক ভাবে সেই পরিবার ব্যক্তিটি হয়ে উঠবে সামাজিক সংকট তৈরির একটি উপাদান বা বস্তু । সুতারাং সামাজিক বৈষম্য থেকেই সামাজিক সংকটের সৃষ্টি হয়। এই ক্ষেত্রে রাজনৈকিত প্রক্রিয়াটিও একটি বড় ভূমিকা রাখে এই সমস্ত সংকট তৈরির ক্ষেত্রে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন জরুরী। ব্যক্তি ও সমাজকে তাদের অন্তর্ভুক্ত কাঠামোগুলোকে সাধারনীকরন ও গণমুখি করতে রাষ্ট্রেরও একটি দায় রয়ে গেছে। বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে ব্যক্তি কিংবা সমাজই শুধু নয় রাষ্ট্র ও কি দায়িত্ব পালন করছে কিংবা রাষ্টের চরিত্রটি কেমন সেটাও দেখা উচিত। অথচ রাষ্ট্র পরিবারের সদস্যাগুলোর সামাজিক নিরাপত্তা দিতে কতটুকু সামর্থ্য। সামাজিক নিরাপত্তা মানে পরিবারের সন্তানদের সঠিক জাতীয়তাবোধ ও ধর্মীয় অনুশাসনে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা  ও সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পৃষ্ঠ পোষকতা, নারী-শিশু ও কিশোর যুবতী মাতাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সহিত জীবন যাপনের নিরাপত্তা সহ সর্বপরি কুসংস্কারমুক্ত একটি প্রগতিশীল, আধুনিক সমাজের নিশ্চয়তা প্রদান করা। পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে পরিবারগুলো ক্রমশ ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং অনু পরিবারে পরিনত হচ্ছে। একটি যৌথ পরিবারে যে পরিবেশ বিরাজ করে অর্থাৎ দাদা-দাদী, ফুফু, কাকা-কাকী, চাচা-চাচি সেই ক্ষেত্রে প্রত্যেকের ভিতর ও সেই সব পরিবারের সন্তান অনেক ¯েœহশীল, মানবিক, সামাজিক হয়ে গড়ে উঠে। পারস্পরিক সহার্থতাবোধ তৈরি হয়। আনন্দে, সুখে-দুঃখে পারস্পরিক সহায়তার বিষয়টি তৈরি হয়ে যায় এমনিতেই। কিন্তু একক পরিবারগুলোর মানুষগুলো হয়ে উঠে স্বার্থপর, নিজ নিজ চিন্তা ধারক, অনেক ক্ষেত্রে নিষ্ঠুর ও বর্বর বটে। শিক্ষা-দীক্ষায় উচ্চ শিক্ষিত হয়েও মানবিকতায়, নৈতিকতা বোধের ক্ষেত্রে এই সব পরিবারের সন্তানগুলো একেবারেই আনারি হয়ে থাকে। শহরের পরিবারগুলো পরস্পর পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে, যেগাযোগ, সোহার্যতা, সহযোগীতা, সামাজিক ক্ষেত্রগুলো এদের ভূমিকা তেমন একটা উল্লেখযোগ্য নয়। তাই সামাজিক সংকটগুলো শহরে অতিমাত্রাই পরিলক্ষিত হয় বিধায় মানুষে মানুষে বিবেদের জায়গায়টাও শহরে প্রখর। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বৈষম্যটাই  শহরের সামাজিক সংকটের মূল কারণ। আমাদের দেশের মত উন্নয়নশীল পুঁজিবাদী দেশের এই চিত্রটি খুবই সাধারন। প্রত্যেকটি পুঁজিবাদী সমাজেই পুঁজির প্রয়োজনে অর্থনৈতিক প্রতিযোগীতাটা বেড়ে যায়। এই অর্থনৈতিক প্রতিযোগীতা বেড়ে যাওয়ার কারণেই মানুষগুলো আর মানুষ থাকে না। কাকে ছাড়িয়ে কে এগুবে । এইগুলোর প্রতিযোগীতাটা বিভিন্নমুখি হয়ে থাকে। সঠিক ও ন্যায়ের পথে থেকে প্রতিযোগীতা তেমন একটা গুরুত্ব পায় না। গুরুত্ব পায় অতি অল্প সময়ে অতি মাত্রায় অধিকতার লাভবান হওয়ার সহজ ও সরল সর্টকাট রাস্তায়। এই ক্ষেত্রে বলির পাঠা হন সহজ-সরল সাধারন হত দরিদ্র মানুষগুলো।

সামাজিক ও পারিবারিক শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চার ক্ষেত্রটি শহরের পরিবেশে খুবই দূর্বল। মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে কিছুটা পরিলক্ষিত হয় বটে কিন্তু উচ্চ বিত্তের পারিবারিক শিক্ষাটা পুরোটাই পাশ্চত্য কেন্দ্রিক এবং সংস্কৃতির ধারনাটাও দেশজ নয়। সেই ক্ষেত্রে মফস্বলে অনেকটা এগিয়ে আসে। মফস্বলে সামাজিক ও পারিবারিক চর্চাবোধটা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে বড় মফস্বল শহরগুলোতে মহানগরীয় অপসংস্কৃতি পরিবার বিচ্ছিন্ন ঘটনাবলি লক্ষন চোখে পড়ে। এটা শুধুমাত্র আকাশ সংস্কৃতি ও বিশ্বায়নের সম্প্রসারনের কারণে। বাঙ্গলি পরিবার ও সংস্কৃতির চর্চাবোধটা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য পরিবার ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর দায়িত্ব অনেক। একজন মানুষ ও তার পারিপার্শ্বিক চিত্র (যেমন- শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলা-ধুল) প্রভাবিত হন খুব সহজেই। তাই এই সব কিছুর প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গ হতে হবে সচেতন বুদ্ধিমত্তায় প্রখর দূরদৃষ্টি, সর্বপরি দেশ প্রেমিক। দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেনঃ- “ An ideal rular must be a philosopher”( একজন আদর্শ শাসক একটি দার্শনিক হতে হবে) এখানে প্লেটো এমন একজন দার্শনিকের কথা বলেছেন যিনি হবেন মানবতার জ্ঞানের উচ্চ প্রজ্ঞাময় ব্যক্তিও দূরদৃষ্টি যার মাধ্যমে জাতি উন্নয়নের পথ দেখাবে। সুতরাং প্লেটো উক্তি করেছেন রাষ্ট্রের ব্যাপারে। কিন্তু পরিবার কিন্তু সমাজের ক্ষেত্রেও প্লেটোর উক্তিটি প্রযোজ্য বলে আমি মনে করি। পরিবারের প্রধান কিংবা সমাজের প্রধানকে হতে হবে প্লেটোর যুক্তিতে দার্শনিক।

গ্রামীন সমাজে ধনী ও দরিদ্র এই দুই শ্রেণীর পরিবার আমরা দেখতে পাই। গ্রামীন ধনীরা সাধারনত অনেক জমির মালিক, কৃষি ভিক্তিক পুঁজি ব্যবসায় জড়িত, দরিদ্ররা ক্ষেতে খামারে কাজ করে বাজারে ছোট খাটো দোকানের ব্যবসা, মাঝি, জেলে, মুচি, নাপিত ইত্যাদি । গ্রামীন ধনীর সন্তানরা গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া শেষ করে শহরে পাড়ি জমায় উচ্চ শিক্ষার জন্য অথবা পৈতিক ব্যবসা পরিচালনা সহ সমাজ সেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের ভবিষৎ গ্রামেই আটকা পরে থাকে।তবে নারীদের ক্ষেত্রে চিত্রটি একটু ভিন্ন। গ্রামীন ধনী কিংবা দরিদ্র পরিবারের নারীরা শুধুমাত্র স্বামীর সংসার ব্যতিত অন্য কিছু করা সুযোগ থাকেনা। তাছাড়া বাল্য বিবাহ ও শিক্ষা অনগ্রসরতা গ্রামীন দরিদ্র পরিবারগুলোতে প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করা যায়। বাল্য বিবাহ রোধের সরকারি আইন এবং শিক্ষায় নারীদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা সরকারি ভাবে থাকা সত্বেও এই সংকটটি গ্রামীন পরিবার থেকে দূর করা যাচ্ছে না। এই ক্ষেত্রে সামাজিক সচেনতা খুবই জরুরী। পরিবারগুলোর সামাজিক নিরাপত্তার একটি বড় সংকট এই ক্ষেত্রে কাজ করে যার ফলে সচেতন পরিবার হওয়ার সত্বেও সামাজিক বাস্তবতার কারণে এবং উচ্চবিত্ত গ্রামীন নাগরিকদের অসহযোগীতায় কারণে নারী শিক্ষা অনগ্রসরতা ও বাল্য বিবাহ রোধের সরকারি কিংবা রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমগুলো প্রায় নিস্ক্রিয় হয়ে আছে।

গ্রামীণ জনসাধারনের অসচেতনার একটি বড় দূর্বল দিক হচ্ছে গ্রামীন শিক্ষা বা গ্রামীণ পরিবারগুলোর শিক্ষায় অনাগ্রহ। বিগত দুই শতক কিংবা তিন দশক ধরে অর্ধ শিক্ষিত, মধ্য শিক্ষিত যুবকদের বিদেশ গমন সহ শহর কেন্দ্রিক পোশাক শিল্পের উন্নয়নের ফলে গ্রামীন সমাজ ব্যবস্থায় একটি পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। শিক্ষায় প্রয়োজনীয়তার চাইতে বিদেশে গিয়ে কিংবা শহরে গামেন্টর্স শিল্পে চাকুরি করে প্রচুর অর্থ উপার্জনের দিকে দিকে ঝুকে পড়েছে গ্রামীন জনগোষ্ঠী। তাই গ্রামীন শিক্ষিত ও অর্ধ শিক্ষিত (বিদেশগামী ও গামেন্টর্স কর্মী) জনসাধরনের মধ্যে বিরাট একটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের ব্যবধান তৈরি হয়ে গেছে। যেটি কিনা গ্রামীন শিক্ষা সচেতনার বৈপরিত্য। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা অবশ্যই আমাদের প্রয়োজন তাই বলে শিক্ষায় অনাগ্রহ কিংবা নীতি নৈতিকতা বর্জিত মানবিক জীবন ধারনাকে অগ্রহ করা যায় না কিছুতেই। অর্ধ শিক্ষিত বিদেশগামী গ্রামীন  জনগনের মধ্যে এই বিষয়টি প্রচুর পরিমানে বিদ্যমান। সেই সুযোগে গ্রামীন রাজনীতি ও সংস্কৃতি হচ্ছে বিপদগামী। অর্থাৎ সুস্থ্য রাজনীতি ও সংস্কৃতির চর্চা গ্রাম থেকে প্রায় উঠে গেছে।

গ্রামীন সমাজ ব্যবস্থার উপরোক্ত বৈষম্য ও সংকট গুলো তাদের সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করছে। ফলে অবাধ্য হচ্ছে সন্তানরা পিতা-মাতার নিকট থেকে। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক অপরাধ আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের মত গ্রামেও যদি পরিবারগুলো ভেঙ্গে অনু পরিবারের দিকে ঝুঁকে পড়ে তাহলে গ্রামীন সমাজ ও পরিবারগুলোতে অবক্ষয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকবে ফাটল ধরবে আপনজনদের মধ্যে সম্পর্ক। পরিনামে দেখা যাবে মহামারির মত পারিবারিক ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতাবোধ যা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। সুতরাং গ্রামীন পরিবার ও শহরের পরিবার উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা ও সংকটগুলোর ধরন কিংবা প্রেক্ষাপট একই রকম শুধুমাত্র উৎস ও উপাদানগুলো ভিন্ন ভিন্ন। যেমন-শহরের পরিবারগুলো জেনে শুনে ভুল করে গ্রামের পরিবারগুলো না জেনে। শহর আর গ্রাম সব ক্ষেত্রেই মানুষ অর্থাৎ মানবের বসবাস। মানুষের বসবাসের ক্ষেত্রটি হতে হবে মানবিক অবশ্যই। মানিবিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে শিক্ষা, সংস্কৃতি, কালচার,কৃষ্টি, ধর্ম ও সর্বপরি জাতীয়তায় সমৃদ্ধ একটি মানব বান্ধব সমাজ। প্রতিটি পরিবার হবে এক একটি সংস্কৃতির ক্লাস। সুস্থ্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চা প্রচলন যে পরিবারে থাকবে সে পরিবারগুলো কখনও অনু পরিবার কিংবা সমাজ বিচ্ছিন্ন কোনরুপ আকৃতি ও প্রকৃতিগত বিপদগ্রস্থতার আশংকা থাকবে না এটা নিশ্চিত। তাই সর্ব প্রথম নিশ্চিত করতে হবে আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির সচেতনা প্রতিটি পরিবারের ও সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের ।

৪।           ধর্ম বিষয়টির সাথে আমি অসাম্প্রদায়িকতার বিষয়টিকে মিলাতে চাই না । কারণ ধমীয় ও অসাম্প্রদায়িকতার শিক্ষা দুটি পৃথক বিষয়। অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষায় শুধুমাত্র নিজ নিজ ধর্ম সম্পর্কে যেমনটি সুশিক্ষিত করে তেমনি অপর ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধার বিষয়টি ও সুনিশ্চিত করে।অর্থাৎ এখানেই অসাম্প্রদায়িক সচেনতা সৃষ্টি হয়ে যায়। পৃথক ভাবে শুধুমাত্র অসাম্প্রদায়িকতার ঢাকঢোল পিটানোর দরকার হয় না। আর পৃথক ভাবে ধর্ম জ্ঞান বিচ্ছিন্ন শুধুমাত্র অসম্প্রদায়িকতার জ্ঞান চর্চাটা আমার দৃষ্টিতে নির্থক। এটা অনেকটা ফ্যাশনিক কালচার বা ধর্ম হীনতার নামান্তর। নিজেকে অসম্প্রদায়িক পরিচয় দিয়ে নিজ ধর্ম কে অবজ্ঞা করার মত অসম্প্রদায়িতকা অবশ্যই কাম্য নয়। সুতরাং পারিবারিক ভাবে ধর্ম চর্চাটা ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা আমরা লক্ষ করি এটাকে অবশ্যই ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করলে ভুল করা হবে। এটা পুরোটাই একটি সামাজিক চিন্তা । প্রত্যেকটি মানুষের ধর্মীয় জ্ঞান কিংবা সচেনতা অবশ্যই সমাজের উপর প্রভাব বিস্তার করে। ধর্ম শিক্ষাটা যেমন জরুরী সাথে সাথে নিজেদের কৃষ্টি, কালচার সম্পর্কে জানাটাও জরুরী। সাম্প্রদায়িকতার কোন ধর্ম নেই। যিনি সাম্প্রদায়িক তিনি অবশ্যই ধর্মহীন। সামাজিক ও পারিবারিক ভাবে যদি আমরা এই ধর্মহীনতাকে বিচার ও বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাই যে পরিবারের সবচেয়ে দুষ্ট ছেলেটিকে মাদ্রাসায় পড়াশুনার প্রতি গুরুত্ব দেয় অনেক পরিবার। এটি একটি সামাজিক সংকট এই সংকটটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। যার ফলে দুষ্ট ছেলেটি বা মেয়েটি যখনি ধর্মীয় আবেশে সামাজিক শিক্ষা পেতে থাকে পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার ও পরিবেশ দেখতে পায় তখন সেই ছেলেটি কিংবা মেয়েটির মধ্যে যে ধর্মীয় জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে তা নিছকই সামাজিকতার জন্য কখনই ধর্মের অনুকুলে যাবে না। সুযোগ পেলেই আধুনিক শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং এই আকৃষ্টতার কারণটি হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষাটা তাকে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে তাই। তাই বলে ধর্মীয় শিক্ষাকে অবজ্ঞা করা ঠিক না। কেন পরিবারের মেধাবী ছেলে কিংবা মেয়েটি মাদ্রাসায় পড়বে না। তাকে কেন শুধু ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে । এই সব পরিবারিক প্রথাগত ট্রাডিশনগুলো ভাঙ্গতে হবে তাহলেই ধর্মীয় শিক্ষার সাথে যে সামাজিক সংকটি আমরা লক্ষ করি তা দূর করা সম্ভব। পারিবারিক ও সামাজিক সংকট নিরসনে আমাদের ধর্মীয় চর্চাবৃদ্ধি অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।  বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায, কোরআন তেলওয়াত, তজবিহ গুনা, ইত্যাদি যদি ভাষাগত গন্ডিতে না থেকে আমাদের দেশীয় ভাষার আঙ্গিকে পালন করা হত তবে এই ধর্মের ভিতর যে আদর্শগুলো  রয়েছে ভাষা ও অর্থের যে মূল্যাবান রসগুলো রয়েছে। সে গুলো বেশ প্রভাব ফেলত আমাদের দৈনন্দিন প্রত্যাহিক জীবন যাত্রায়। বিষয়টি অনেকের নিকট বিশ্বয়কর ও আজব চিন্তার মত মনে হতে পারে এটা কিভাবে সম্ভব। আমি বলছি অবশ্যই সম্ভব। কোরআনের অর্থ না বুঝে আমরা তেলওয়াত করছি। বিশেষ করে গ্রামের মা বোনেরা।  নামাজের মধ্যে সূরা সমূহ আরবীতে পড়ছি এবং সঠিক নিয়মে নামাজ আদায় করছি। যদি কোরআনের প্রতিটি লাইনের বাংলা অর্থ আমরা জানতাম কিংবা বাংলায় প্রতিদিন এই পংথিমালা (আয়াত) উচ্চারণ করতাম তাহলে এই সব ভালো ভালো অর্থ গুলো আমাদের জীবন যাত্রায় প্রভাব পড়ত সরাসরি। এখনো যে প্রভাব পড়ছে না তা বলছি না। না বুঝেও কিছুক্ষন কোরআন পড়ার পর কিংবা নিয়মিত নামাজ পড়ার পর প্রত্যাহিক জীবন যাত্রায় একটা নিয়ম শৃঙ্খলা ফিরে আসে। সৎ থাকার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। বাংলা ভাষায় রুপান্তরিত করে ধর্ম পালনে এর কার্যকারিতা আরো বৃদ্ধি পেতো এবং পরিবার ও সমাজে ফিরে আসতো শান্তির হাওয়া। এটা শুধু ইসলাম ধর্মের জন্য নয় প্রতিটি ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । ব্যক্তির মধ্যে ধর্মের জ্ঞান বিধ্যমান থাকলে ব্যক্তিকর্তৃক পারিবারিক ও সামাজিক বৈপীরিত্য কার্যগুলোর প্রবণাত গুলো হ্রাস পাবে। সুতারাং ধর্মীয় শিক্ষা ক্ষেত্রেও সংস্কার দরকার বলে আমি মনে করি। বিষয়টি মাওলানাদের নিকট গ্রহনযোগ্য হবেনা সেটা আমি বিশ্বাস করি। তারা বলবে ধর্ম শুধু জীবন মানের উন্নয়নের জন্য আসেনি এর সাথে সোয়াব, বেহেশত এবং পুরস্কারের বিয়য়গুলো জড়িত। তাছাড়া ধর্মের একটা আন্তর্জাতিকতাবাদও রয়েছে,রয়েছে সুন্নত, ফরজ এই সব বিষয়ের সাথে সংযুক্ত শরীয়ত ইত্যাদি। এভাবে ধর্ম এক ও অভিন্ন,পরিবর্তণ কিংবা সংস্কার এখানে কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি তেমন নয় এখানে মৌলিক কোন পরিবর্তণ বা সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার সংস্কারের কথা।

৫।           পারিবারিক ভাবে নারী নির্যাতন একটি বড় সংকট হিসাবে বিবেচিত। পারিবারিক ভাবে নারীরা বিশেষ করে যৌতুক, স্বামী-স্ত্রীর উভয় পক্ষেরই পরকীয়ায় কারণে, শ্বাশুরীর ও বউমা সঙ্গে মতের অমিল, ইত্যাদির কারণে পরিবারে নারীরা নির্যাতিত হচেছ। যেটি কিনা আমাদের সমাজ জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। শুধু শ্বশুর বাড়ি নয় নারীরা পৈত্রিক পরিবারেও নির্যাতিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। নারী শিশুর জন্ম নেওয়াটাও যেন পরিবারের জন্য অভিশাপ। এ রকম মনস্তাত্বিক মূল্যবোধহীন মন মানসিকতা নারীদের পরিবারে বলেন, সমাজ বলেন সকল ক্ষেত্রেই স্বভাবিক জীবন যাপনে ব্যাহত হচ্ছে। সার্বিক দৃষ্টিকোন থেকে এই সিদ্ধান্ত উপনীত হওয়া যায় যে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় কিংবা পারিবারিক ব্যবস্থায় নারীরা প্রতিনিয়ত অসহায়। যত দিন পর্যন্ত নারী সম্পর্কিত সামাজিক, নৈতিক মূল্যবোধের পরিবর্তন না ঘটবে কিংবা নারীকে শুধু নারী হিসাবে না দেখে মানুষ হিসাবে বিবেচ্য হবে,  সর্বপরি নারীর সামগ্রী মূল্য স্বত্ত্বার বিকাশ না ঘটবে এবং মানব সম্পদ ও মানুষ হিসাবে মূল্যায়ন না করা হবে তত দিন নারীর পারিবারিক বলেন আর সামাজিক বলেন কোন ক্ষেত্রেই মুক্তির আশংকা নেই। নারী নির্যাতন বিষয়টিকে রোধ করতে হলে সমাজের চেয়ে প্রতিটি পরিবারের ভূমিকাই মূখ্য। কারণ প্রত্যেকটি মানুষের নৈতিক আদর্শ, মূল্যবাধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি সহ মনস্ততাত্বিক বিকাশের মূল জায়গাটি হলো পরিবার। তাই আমি মনে করি আমাদের সমাজের বৃহত্তর একটি সমস্যা নারী নির্যাতন, এই নারী নির্যাতনকে রোধ করতে পারে একমাত্র পরিবার। আমাদের পরিবার ও সমাজ এক সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আমাদের জাতীয়তা বোধ বাঙালিয়ানা সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সাহিত্যবোধ, ধর্মীয় নৈতিকতা, মানবিকতা, ও সর্বপরি শ্রেষ্ঠ মানুষের শ্রেষ্ঠ আবাসস্থল। প্রত্যেকটি মানুষ সুখ ও শান্তির জীবন যাপন করার অধিকার রয়েছে। চাইলে আমরা আমাদের পরিবারকে সুন্দর ও শান্তির নীড় করতে পারি। প্রত্যেক মানুষ ও পরিবার যখন শান্তি নীড়ের বাসিন্দা হবেন তখনই সমাজ হবে সুন্দর ও অবক্ষয় মুক্ত, সংকটমুক্ত আধুনিক সমাজ। আমাদের প্রত্যেক প্রত্যাশা আমরা একটি আধুনিক সমাজে বসবাস করি। আধুনিক পরিবার ও সমাজ বিনির্মানে গড়ে উঠুক সু-শৃঙ্খল পরমত সহিষ্ণু মূল্যবোধের চর্চা যে মূল্যবোধের চর্চা থেকে সৃষ্টি হবে একটি আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামো।


নিজের সম্পর্কে লেখক



ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন


৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।