- মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
- আমাদের এখনকার সংকট
- আওয়ামি লিগের ইতিহাসও পারিবারিক ইতিহাসে পর্যবসিত হয়েছে...
- বাংলাদেশে 'নিউকনি' সিপাই
- রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি
- রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র
- গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য
- মোদীর ভারত এবং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য বদল
- দেখলেই গুলি?
- আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
ভাসানী, রবুবিয়াত ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের উদয়, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং উপমহাদেশের জনগনের লড়াই সংগ্রাম থেকে যেভাবে মুছে ফেলা হয়েছে সে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বাংলাদেশে নতুন রাজনীতির পুনর্গঠনের প্রশ্ন মওলানা ভাসানীকে নতুন ভাবে জানা, পড়া ও চর্চায় নিয়ে যাবার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লেখাগুলোর পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গঠনের গলদ, গণতন্ত্র ও এখনকার কর্তব্য
বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, আইন ও বিচারব্যবস্থার গোড়ার গলদ হচ্ছে শুরু থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা ও গঠন করা যায় নি। মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু ও সংঘটিত হয়েছিল একাত্তরের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে -- যার ঘোষিত ও লিখিত মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফ কায়েম ও চর্চার উপযোগী গণমানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু ডান কি বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ধারা মুক্তিযুদ্ধ ও গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গণশক্তির বিকাশ ও বিজয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অসমাপ্ত যুদ্ধ সম্পন্ন করতে পারে, এটাই এখনকার রাজনৈতিক কাজ। এদেশের সকল মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, লোকায়ত জ্ঞান ও ভাবুকতা সবই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে গড়ে ওঠার আন্তরিক ও ঐতিহাসিক উপাদান। কিন্তু গণ ঐক্য ও গণশক্তি বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ধর্মের নামে, ধর্ম বিরোধিতার নামে কিম্বা বাস্তবতা বিবর্জিত নানান আসামানি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও আশু রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও কর্তব্য পূরণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে তারাই -- ডান কিম্বা বাম -- জনগণের শত্রু।
- চতুর্থ সংশোধনীতে হারানো ক্ষমতা সামরিক আইনে ফিরে পাওয়ার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছে আদালত
- আইনের শাসনের তামাশা ও বাকশাল ‘দর্শনের’ জের
- আদালত অবমাননার বিচার ও দণ্ড প্রসঙ্গ
- ‘কমিউনিস্ট’দের রিমান্ড সমস্যা
- হাসিনার কনস্টিটিউশন সংশোধন: আসলে কি হতে যাচ্ছে?
- সংজ্ঞাহীন অবারিত এখতিয়ার বন্ধ হবে কবে?
- ছয় বছরেও চূড়ান্ত হয় নাই আদালত অবমাননা আইন
বাংলার ভাবসম্পদ
লালন ও ভাবান্দোলন
চিনিয়ে দেওয়া, ধরিয়ে দেওয়া
এই পাতায় পড়ছেন মার্কস: এখনকার পড়া এখনকার কাজ সংক্রান্ত লেখা
পুঁজিতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় উৎপাদিত জিনিস (product) কে বলা হয় পণ্য (commodity)। পণ্য বা কমোডিটির বৈশিষ্ট্য হল তার মূল্য বা ভ্যালুকে দুইভাবে বিবেচনা করা হয়ঃ একটি হল তার use value বা ব্যবহারিক মূল্য আর আরেকটি হল তার exchange value বা বিনিময় মূল্য। Use value বা ব্যবহারিক মূল্য হল পণ্য স্বয়ং। আর Exchange value বা বিনিময় মূল্য হল পণ্যটির মূল্য (value), যা দামের (price) মাধ্যমে টাকায় প্রকাশিত হয়। পণ্যের এই use value এবং exchange value দুই বিপরীত
৯ নভেম্বর, ২০১৯, চিন্তা পাঠচক্রের পঞ্চম বৈঠকে আমরা বসেছিলাম। দুই সপ্তাহের বিরতির পর আবার বসা। কার্ল মার্কসের ‘পুঁজি’ গ্রন্থ ধারাবাহিক পাঠ হিসেবে মার্কসের মুদ্রাতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। প্রধান আলোচক জনাব ফরহাদ মজহার।
পাঠের শুরুতে নতুন সদস্যদের জন্যে পূর্ব-পাঠের একটা সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরা হয়। এরপর থেকে যারা যোগ দেবেন তাদের অবশ্যই পাঠচক্রের নোটগুলো পাঠ করে আসতে হব
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯। মার্কসের ‘পুঁজি’ পড়বার চতুর্থ পাঠ শুরু হয়। মূল্যের রূপ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়। ‘পণ্যের ভতুড়ে কারবার’ নামক গুরুত্বপূর্ণ অংশ আপাতত বাদ রাখা হয়। কারন এর সঙ্গে ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ও সমাজতত্ত্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তর্কবিতর্ক জড়িত। আগামিতে সেই বিষয়ে আলাদা ভাবে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখানে আলোচনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ পেশ করা হোল।
১. আব
২৪ আগস্ট, ২০১৯। চিন্তা পাঠচক্রের ‘পুঁজি’ পড়ার ছিল দ্বিতীয় পাঠ। প্রধান আলোচক ছিলেন ফরহাদ মজহার। ‘পণ্য’ নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল, এই ক্লাস ছিল তারই ধারাবাহিকতা। পাঠ শুরুর আগে ‘পুঁজি’ পাঠের ভূমিকা হিশাবে কিছু বিষয় আলোচনা করা হয়।
১. ‘চিন্তা পাঠচক্রের ‘পুঁজি’ পাঠের ক্লাস সকলের জন্যে। যারা অর্থনীতি নিয়ে পড়েছেন কিম্বা পড়েন নাই তাতে কিছু আসে যায় না। আগ্রহ এবং নিয়
[এই লেখাটি গত ১৭ আগস্ট, শনিবার চিন্তা পাঠচক্রে ‘পুঁজি’ বইটি পাঠের পরিপ্রেক্ষিতে ফরহাদ মজহারের আলোচনার ভিত্তিতে লেখা। আলোচনায় আমার কাছে যে কথাগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তুলে দিচ্ছি। এটি চলবে। অন্যদের গুরুত্বপূর্ণ কোন পয়েন্ট বা প্রশ্ন থাকলে আশা করি যোগ করবেন। ‘পণ্য’ নিয়ে সরাসরি আলোচনা আরেকটি পোস্টে পেশ করা হবে]
১. সতেরো অগাস্টে পাঠচক্রে নির্ধারিত আলোচনার বিষ
হেগেলের রাষ্ট্রতত্ত্ব নিয়ে তরুন বয়সের মার্কসের পর্যালোচনামূলক রচনা (Kritik des Hegelschen Staatsrechts (§§ 261-313)) নানান ভাবে পড়া সম্ভব এবং তার গুরুত্বকে নানান দিক থেকে পর্যালোচনা করা যায়। এই লেখাটির দুটো ইংরেজি অনুবাদ সহজ লভ্য। একটি রদনি লিভিংস্টোনের অনুবাদ (Marx 1975)। লুসিও কোলেত্তির সম্পাদিত Early Writings'-এ অন্তর্ভূক্ত: Critique of Hegel' Doctrine of the State ((§§ 261-313)) । আরেকটি হচ্ছে, এনেট জোলিন ও জোসেফ ও'মালের অনুবাদ Critique of Hegel's Philosophy of
‘রাজনৈতিক রূহানিয়াত’ (spiritualite politique) ধারণাটি ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো (১৯২৬-১৯৮৪) ব্যবহার করেছেন। মার্কসের ব্যবহারিক সম্বন্ধ চর্চার পরিপ্রেক্ষিতে ফুকোর 'রাজনৈতিক রূহানিয়াত' নিয়ে এখানে আলোচনা করব।
ইরানে গত শতাব্দির সত্তর দশকের শেষে বৈপ্লবিক উত্থান পতনের সময় ফুকো ১৯৭৮ সালে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে একবার এবং দ্বিতীয়বার নভেম্বরের শুরুতে ইরানে গিয়েছিলেন। ইটালির সংবাদপত্র &
এর আগের আলোচনায় আমরা দেখিয়েছি মানুষ ও জগতের সম্বন্ধ বিচারই মার্কসের দার্শনিক পর্যালোচনার প্রধান ভরকেন্দ্র। বিমূর্ত দর্শনের পরিমণ্ডল বাদ দিয়ে অর্থশাস্ত্রের পর্যালোচনা দার্শনিক জিজ্ঞাসারই অনিবার্য পরিণতি। অর্থশাস্ত্রীয় বিচার মানুষ ও জগতের সম্বন্ধ বিচার, সেকারণে মার্কসের অর্থশাস্ত্র দর্শনেরই বিষয়।
দুটো শব্দ সাধারণত অদল বদল করে প্রায় একই অর্থে অনেক সময় আমরা ব্যবহার
মার্কস পাঠের ক্ষেত্রে এই সাধারণ ভুলটা মার্কস অনুসারী কিম্বা মার্কস বিরোধী প্রায় সকলেই করে থাকেন যে মার্কস দর্শন থেকে প্রস্থান করেছেন। বাংলাদেশে এর অতিশয় স্থূল মানেও আছে। সেটা অনেকটা এরকম যে মার্কস বলেছেন, চিন্তাভাবনা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ যা করবার সেটা এ যাবতকাল দার্শনিকরা করেছেন। দর্শনচর্চা বা তত্ত্ব গিরি করা বিপ্লবীর কাজ নয়। এখন কাজ হচ্ছে দর্শন বা চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে শুধ
মার্কস আর এঙ্গেলস-এর তরুণ বয়সের যৌথ রচনার খসড়া ‘জর্মান ভাবাদর্শ’। তাঁদের জীবদ্দশায় এই খসড়া ছাপা হয় নি। কমিউনিজম সম্পর্কে কমিউনিস্ট পার্টির সরকারি ভাষ্যের সঙ্গে এর মর্ম পুরাপুরি মেলানো কঠিন। ফলে ছাপা হবার পরে এর যে সারকথা ও ব্যাখ্যা সরকারি ভাবে হাজির করা হয়েছিলো তার সীমাবদ্ধতা ধরা পড়তে দেরি হয় নি। আমরা অধিকাংশই জানিনা যে ‘মার্কসবাদ’ নামে যা আমাদের কাছে পরিচিত তার নির
আমরা মার্কস ও এঙ্গেলসের নাম এক নিঃশ্বাসে নিতে অভ্যস্ত। অনুমান করি তাঁদের চিন্তা অবিভাজ্য। কিন্তু ব্যক্তি হিসাবে তাঁরা আলাদা এবং তাঁদের চিন্তাও গড়ে উঠেছে ভিন্ন প্রক্রিয়ায়। এই ভিন্নতার কথা মনে রেখে উভয়কে তাঁদের নিজ নিজ চিন্তার জায়গা থেকে বোঝা দরকার। দুজনে নামের মাঝখানে হাইফেন দিয়ে যুক্ত করে এক না ভবে বরং তাঁদের স্বতন্ত্র সত্তাকে 'এবং' দিয়ে যুক্ত রাখাই যুক্তি সঙ্গত সেটাই এই ল
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য প্রথম প্রকাশ। এছাড়াও আরো দুটি কবিতার বই নতুন করে সংস্করণ করা হয়েছে। (১) অসময়ের নোট বই। (২) কবিতার বোনের সঙ্গে আবার। সাহিত্য ও কবিতা পাঠক প্রেমিকদের ধন্যবাদ।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকাশক ফরহাদ মজহারের বই প্রকাশ করেছেন। আগ্রহী পাঠকদের সুবিধার জন্য এখানে কয়েকটি বইয়ের পরিচিতি দেওয়া হোল।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী গণমাধ্যম নিপাত যাক
সম্প্রতি ফরহাদ মজহারের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিকৃতি ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ক্যাডার একটি ক্ষুদ্র সাংবাদিক গোষ্ঠি মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে ও থানায় জিডি দায়ের করে। বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাসহ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ফরহাদ মজহারের নিরাপোষ লড়াই কারোরই অজানা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে ফরহাদ মজহারকে রাষ্ট্রীয় ভাবে দমন, পীড়ন ও নির্যাতনের জন্য এই গোষ্ঠি তাদের সকল শক্তি নির্লজ্জ ভাবে নিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এদের সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জিঘাংসার যে-চেহারা ফুটে উঠেছে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য চিরকাল কলংক হয়ে থাকবে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মীসহ সকল স্তরের পেশার মানুষ এক্ত্রিত হয়ে 'আক্রান্ত গণমাধ্যম ও সংকটের আবর্তে দেশ' শিরোনামে একটি গোলটেবিলে একত্রিত হয়। তাঁরা সাংবাদিকতার নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সহিংসতার নিন্দা জানান। এখানে সেই প্রতিবাদ সভার কিছু ছবি ও উপস্থিত নাগরিকদের বক্তব্য হাজির করা হচ্ছে। এ সভার মূল লক্ষ ছিল মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা এবং চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ-এলবামে প্রবেশের জন্য ওপরের ছবির ওপর ক্লিক করুন; বক্তব্যের জন্য খোলা-এলবামে প্রত্যেক বক্তার ছবির ওপর ক্লিক করুন। ট্রান্সক্রিপশান সময় সাপেক্ষ বলে ধীরে ধীরে তোলা হচ্ছে। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়তে হলে দয়া করে নীচের সংযোগচিহ্নে যান
আমার দেশ: গোলটেবিল বৈঠকে ফরহাদ মজহারের পাশে বিশিষ্টজনরা : প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই সঙ্কট মোকাবিলায় একমাত্র সমাধান : আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন
চিন্তার সাম্প্রতিক সংখ্যা
পুরানো 'সন্ত্রাস' সংখ্যা। বছর ১৪ সংখ্যা ১, নভেম্বর ২০০৫ / অগ্রহায়ন ১৪১২। সম্পাদকীয়। দেরিদা, হাবারমাস এবং সন্ত্রাসকালে দর্শন -- জিওভান্না বোরাদরির সঙ্গে আলাপ। সন্ত্রাস, আইন ও ইনসাফ। বলপ্রয়োগ বিচার। সন্ত্রাসবাদের হকিকত। আধুনিকতায় ক্ষমতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের পুনর্গঠন। বিশ্ববাণিজ্য চুক্তির সন্ত্রাসঃ হংকং সভা। বীজ ও নারী বিপন্ন যমজ। মান্দিদের জীবন। নাখোজাবাদ বুলেটিন। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ৪র্থ সার্ক পিপলস ফোরাম। স্পেকট্রাম গার্মেণ্ট ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ড।
চিন্তা পুরানা সংখ্যা
পাক্ষিক চিন্তার পুরানো কয়েকটি সংখ্যা। এর বেশ কয়েকটি এখনও পেতে পারেন। যোগাযোগ করুন, পাক্ষিক চিন্তা, ২২/১৩ খিলজি রোড, মহাম্মদপুর, ব্লক-২। শ্যামলী। ঢাকা-১২০৭।
ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
- ১. দর্শনের ভাষা বা বুদ্ধির ভাষায় কথা বলার গুরুত্ব
- ২. পর্যালোচনা মানে সমালোচন বা বিরোধিতা নয়
- ৩. ধর্মে কি কোন চিন্তা নাই
- ৪. উপলব্ধি, বুদ্ধি ও সংবেদনা
- ৫. নফি ও এজবাত
- ৬. ধর্মবিরোধীদের কবল থেকে মার্কসকে উদ্ধার একালে জরুরী
- ৭. হজরত সোলায়মান ও ফয়েরবাখ
- ৮. দ্বান্দ্বিক চিন্তার পর্যালোচনা
- ৯. মানুষের নিজের কাছ থেকে নিজের বিযুক্তি
- ১০. ধর্মের প্রতি তত্ত্বীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সীমাবদ্ধতা
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
দর্শনের দিক থেকে ধর্মভাবনা মানুষের চেতনা বা চিন্তারই বিশেষ রূপ। এই বিশেষ রূপের বিচার ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচার দিয়ে নিষ্পন্ন হয় না, তার বিষয় ও পদ্ধতি আলাদা। ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচারের গুরুত্ব আছে বটে, কিন্তু সেটা দার্শনিক বিচার নয়। সক্রিয় ও সজীব চিন্তা ধর্মভাবনায় নিজেকে যে রূপে হাজির দেখে দর্শনের স্তরে একই রূপে হাজির না দেখলেও এই দাবি জানাতে কুন্ঠিত হয় না যে “দর্শনের বিষয় সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে ধর্মেরই বিষয় – উভয় ক্ষেত্রে সেটা হোল, সত্য। কথাটা এই চূড়ান্ত অর্থে যে আল্লাহ এবং একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সত্য। তাই উভয়েই প্রকৃতি ও মানুষের এই সীমিত জগতকে পরস্পরের সম্পর্ক এবং তাদের সত্য আল্লার সত্যে বিচার করে”। কথাটি জর্মন দার্শনিক গেঅর্গ ভিলহেল্ম হেগেলের (১৭৭০-১৮৭১)। সত্য বলতে হেগেল কি বুঝতেন এই ঘোষণায় তা আমরা আন্দাজ করতে পারি। আল্লার সত্য নির্ণয়ের আকুতির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতি ও মানুষের সীমিত জগতের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষের সম্ভাবনা বিচার করে -- আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক, নীতি-নৈতিকতা ও রাষ্ট্র হেগেল কিভাবে বিচার করেছেন তার ইঙ্গিতও এই অল্প কথার মধ্যে আমরা টের পাই।
সত্য শুধু বিশুদ্ধ বুদ্ধির নির্ণয় নয়, বরং মানুষ তার ইন্দ্রিয়পরায়ণ তৎপরতার পরিমণ্ডলে যে সত্য 'উপলব্ধি' করে সেখানেও চিন্তা বা বুদ্ধির কারবার হাজির থাকে, তবে আত্মসচেতন চিন্তা হিসাবে নয়। সে কারণেই একে আমরা কাঁচা ইন্দ্রিয়োপলব্ধি বলি, বুদ্ধি যে কাঁচামাল থেকে জ্ঞান উৎপাদন করে। ইন্দ্রিয়োপ্লব্ধির সত্য বুদ্ধি তার নিজের স্বরূপে কিম্বা নিজের পরিমণ্ডলে কিভাবে প্রকাশ করবে হেগেলের দর্শনের সেটাই ছিল প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে সকল বৃত্তির সামষ্টিক উদ্যোগ বা প্রণোদনা থেকে মানুষ যে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, বুদ্ধি সেই সত্য নিজের স্বরূপে আদৌ ধারণ বা প্রকাশ করতে পারে কিনা সেটা দর্শনে এখনও বড়সড় তর্ক হয়ে রয়েছে। ধর্মের পর্যালোচনা সেই তর্ককে সক্রিয় ও সজীব চিন্তার নিজের সমস্যা হিসাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। যে কারণে 'ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম' নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রকট লড়াই জারি রয়েছে। বলাবাহুল্য, এই আলোচনা সেই বাস্তবতার বাইরে নয়। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠি, সম্প্রদায়, শ্রেণি এবং বিভিন্ন শারিরীক চিহ্নে ও শারিরীক বাসনায় বিভক্ত জগতে সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের লড়াইও নানা কারনে অনিবার্য বটে, কিন্তু ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার লড়াই আর বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় মানুষের চিন্তার সংকট মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলামের সম্ভাব্য অবদান বিচার সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্য নাজিল হয় নি, ফলে তা মানুষের চিন্তার ইতিহাস ও দর্শনেরও বিষয়। এই অনুমান থেকে লেখাগুলো পাঠ করলে পাঠক উপকৃত হবেন আশা করি।
- See more at: http://chintaa.com/index.php/network/index/bangla#sthash.OYNrOjTu.dpuf