- মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
- আমাদের এখনকার সংকট
- আওয়ামি লিগের ইতিহাসও পারিবারিক ইতিহাসে পর্যবসিত হয়েছে...
- বাংলাদেশে 'নিউকনি' সিপাই
- রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি
- রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র
- গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য
- মোদীর ভারত এবং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য বদল
- দেখলেই গুলি?
- আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
ভাসানী, রবুবিয়াত ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের উদয়, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং উপমহাদেশের জনগনের লড়াই সংগ্রাম থেকে যেভাবে মুছে ফেলা হয়েছে সে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বাংলাদেশে নতুন রাজনীতির পুনর্গঠনের প্রশ্ন মওলানা ভাসানীকে নতুন ভাবে জানা, পড়া ও চর্চায় নিয়ে যাবার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লেখাগুলোর পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গঠনের গলদ, গণতন্ত্র ও এখনকার কর্তব্য
বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, আইন ও বিচারব্যবস্থার গোড়ার গলদ হচ্ছে শুরু থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা ও গঠন করা যায় নি। মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু ও সংঘটিত হয়েছিল একাত্তরের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে -- যার ঘোষিত ও লিখিত মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফ কায়েম ও চর্চার উপযোগী গণমানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু ডান কি বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ধারা মুক্তিযুদ্ধ ও গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গণশক্তির বিকাশ ও বিজয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অসমাপ্ত যুদ্ধ সম্পন্ন করতে পারে, এটাই এখনকার রাজনৈতিক কাজ। এদেশের সকল মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, লোকায়ত জ্ঞান ও ভাবুকতা সবই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে গড়ে ওঠার আন্তরিক ও ঐতিহাসিক উপাদান। কিন্তু গণ ঐক্য ও গণশক্তি বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ধর্মের নামে, ধর্ম বিরোধিতার নামে কিম্বা বাস্তবতা বিবর্জিত নানান আসামানি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও আশু রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও কর্তব্য পূরণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে তারাই -- ডান কিম্বা বাম -- জনগণের শত্রু।
- চতুর্থ সংশোধনীতে হারানো ক্ষমতা সামরিক আইনে ফিরে পাওয়ার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছে আদালত
- আইনের শাসনের তামাশা ও বাকশাল ‘দর্শনের’ জের
- আদালত অবমাননার বিচার ও দণ্ড প্রসঙ্গ
- ‘কমিউনিস্ট’দের রিমান্ড সমস্যা
- হাসিনার কনস্টিটিউশন সংশোধন: আসলে কি হতে যাচ্ছে?
- সংজ্ঞাহীন অবারিত এখতিয়ার বন্ধ হবে কবে?
- ছয় বছরেও চূড়ান্ত হয় নাই আদালত অবমাননা আইন
বাংলার ভাবসম্পদ
লালন ও ভাবান্দোলন
চিনিয়ে দেওয়া, ধরিয়ে দেওয়া
এই পাতায় পড়ছেন সাম্প্রতিক রাজনীতি সংক্রান্ত লেখা
‘নো ট্যাক্স উইদাউট রিপ্রেজেন্টেশান’
এবার আমরা আসি বিএনপির অসহযোগ ঘোষণার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে। সেটা হোল, অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারকে ট্যাক্স, খাজনা ও ইউটিলিটি বিল না দেওয়া। নির্বাচিত সরকার না হলে ট্যাক্স, খাজনা বা কর নেবার অধিকার নাই, বা "নো ট্যাক্স উইদাউট রিপ্রেজেন্টেশান" – গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সম্পর্কে এই ধারণা দানা বেঁধেছে মার্কিন দেশে আঠারোশ শতকের শেষের
২১ ডিসেম্বর ২০২৩
বিএনপি এবং ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শেখ হাসিনার সরকারের ২০২৪ সালের নির্বাচনে যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে বিএনপি বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সাতই জানুয়ারির ভোট বর্জন করা, ট্যাক্স, খাজনা ও ইউটিলিটি বিল না দেওয়া। এই আহ্বান বিএনপি প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জ
জো বাইডেন শুরু থেকেই যেভাবে নিঃশর্তে নেতানিয়ানহুকে সমর্থন করে যাচ্ছিলেন তার রাজনৈতিক পরিণতি তাঁর জন্য ভাল হয় নি। ইসরায়েলের গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের প্রতি তার নিঃশর্ত সমর্থন দেশের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে মার্কিন জনগণের বৃহৎ একটি অংশ তাঁর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভাবে যুক্তরাষ্ট্র তার ভাবমূর্তি ও আধিপত্য খুইয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যুদ্
নারী আন্দোলনের দাবি, আসন সংরক্ষিত যদি থাকে তা হতে হবে সরাসরি নির্বাচিত; যেখানে রাজনৈতিক দলের নারী সদস্য, সমাজ কর্মী, নারী আন্দোলন কর্মী সকলেই নারীদের পক্ষে কথা বলার জন্যে এবং সার্বিকভাবে দেশের মানুষের জন্যে কাজ করার সুযোগ পাবেন। একইসাথে এটাও বলা দরকার যে নারী আজীবন সংরক্ষিত আসনে থাকবেন এটাও কাম্য নয়। নারীরা পুরুষের মতোই সাধারণ আসনে নির্বাচন করবেন এটাই হচ্ছে লক্ষ্য।
এই বছ
বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলের বিভাগীয় সমাবেশ সফল হোক।
শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মধ্য দিয়ে ফ্যসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের এই কৌশল সঠিক। আওয়ামী লীগের যেসকল ফ্যাসিস্ট বলছে পল্টনে সভা করার দাবি ত্যাগ করে গোলাপবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত মানা বিএনপির ‘অর্ধেক পরাজয়’, তারা ভুল। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের উৎকন্ঠা আমলে নিয়ে
আওয়ামী লীগ আরেকটি গৃহযুদ্ধ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। ফ্যাসিস্ট শাসনের দায়ভার এড়াবার এটাই সবচেয়ে শস্তা কিন্তু ভয়ংকর বিপজ্জনক পথ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ফালতু অভিযোগ আইনী ভাবে মোকাবিলার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া আন্তর্জাতিক ভাবে প্রমাণ করেছেন তিনি আইন ও আইনী প্রক্রিয়া মানেন, সেই আইন ফ্যাসিস্ট শক্তির হাতে প্রতিহিংসার হাতিয়ার হলেও তিনি শান্তিপূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংঘাতের ম
সাত তারিখের ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও পরিষ্কার হোল বিএনপি আসলে কী চায় সেটা পরিষ্কার ভাবে বিএনপি এখনও বলে নি, বলাবাহুল্য বলার দরকার রয়েছে। আমরা চাই বা না চাই তুফান তো ঘাড়ের ওপর এসে পড়েছে। এর আগে ‘গণমুখী রাজনৈতিক ধারার নীতি ও কৌশল প্রসঙ্গে’ নিবন্ধে আমি বলেছি নীতি হিশাবে বিজয়ী গণভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন ভাবে গঠন করবার কথা জনগণের মধ্যে প্রচার করতে হবে। এটাই গণরাষ্ট্র
শেষ পর্যন্ত যা অনুমান করেছিলাম তাই হোল। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সংঘর্ষকে ব্যাপক হানাহানি এবং গৃহযুদ্ধের দিকে ঢেলে দিচ্ছে। দশ তারিখে বিএনপির ঢাকা সমাবেশ করতে না দিয়ে বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশি হামলা এবং গুলি করে হত্যার নিন্দা জানাবার ভাষা নাই। দশ তারিখের বিএনপির সমাবেশের আগেই বাংলাদেশকে সংঘাতের দিকে সামনে ঢেলে দেওয়া হোল। এর রাজনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে আওয়ামি লীগ অজ্ঞ তা নয়। এটা ব
১. আমরা কি চাই?
আমরা মানুষের মহিমা উপলব্ধি করতে চাই, একালে তার তাৎপর্য বিচারের জন্য সজীব ও সক্রিয় চিন্তার ধারা গড়ে তোলা জরুরি মনে করি, যেন বৈষয়িক জীবন ও জগতের অন্তর্গত মানুষকে তার সামগ্রিক কায়কারবারসহ আমরা বুঝতে পারি। বুঝতে পারি কিভাবে বৈষয়িক জীবন ও জগত মানুষকে এবং বিপরীত দিক থেকে মানুষের চিন্তা বৈষয়িক জীবন ও জগতকে প্রভাবিত ও নির্ণয় করে। এই পারস্পরিক
এক
জাতীয় ইনসাফ কমিটি গত ১৬ মার্চে তাদের প্রস্তাবনায় বাংলাদেশ নতুন ভাবে ‘গঠন’ করবার প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। বাংলাদেশে চিন্তার দুর্ভিক্ষ এতোই প্রবল যে দৈনিক পত্রিকাগুলো গণরাজনৈতিক সত্তা হিশাবে রাষ্ট্রের ‘গঠন’-কে স্রেফ আইনী ব্যাপার ধরে নিয়েছে। তাদের রিপোর্টে সকলেই লিখেছে আমরা নাকি নতুন সংবিধান চাইছি। অথচ আমরা বলেছি রাষ্ট্র স্রেফ ‘আইনী’ প্রতিষ্ঠা
একটি দৃশ্যমান হত্যা প্রক্রিয়ায় কিভাবে আমরা সকলে শামিল হই সেটাই আমার আলোচনার বিষয়। সুনির্দিষ্ট ভাবে ফ্যাসিবাদকে শনাক্ত করতে হলে বুঝতে হবে ফ্যাসিবাদ একনায়কতন্ত্র নয়। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আমাদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পর্কে্র ধরণ একনায়কতন্ত্র থেকে আলাদা। আমাদের মন ও বুদ্ধির জগতে ফ্যাসিবাদ কিভাবে কাজ করে সেটাই এখানে বুঝবার এবং বোঝাবার চেষ্টা করছি।
আজকাল অনেকে বাংলা
খুবই দৃশ্যমান ভাবে -- অর্থাৎ বাংলাদেশের জনগণকে দেখিয়ে দেখিয়ে এবং জনগণের সক্রিয় ও সচেতন অংশগ্রহণের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে 'হত্যা' করা হচ্ছে। বলাবাহুল্য 'হত্যা'র এই প্রক্রিয়া বা কাণ্ডটিকে যার যার মর্জি মাফিক স্রেফ মেটাফোর হিশাবে, কিম্বা বাস্তবেই ঘটানো হচ্ছে বলে নানান জনে নানান ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, অসুবিধা নাই। তাই সকলে যেন নিজের নিজের অনুমান ও ধারনাগুলোর প্রতি ঘনিষ্ঠ
প্রথম কিস্তি
সম্প্রতি শ্রদ্ধেয় ফরহাদ মজহার কুরবানি নিয়া একটি সিরিজ লেখা শুরু করছেন। কুরবানি নিয়া ফরহাদ মজহারের লেখাগুলা ধারাবাহিক; এখন পর্যন্ত দুইটা কিস্তি উনি লিখছেন। সেই দুই কিস্তিতে যা যা আসে নাই, তা সামনের কিস্তিগুলায় আনবেন— বলছেন সেকেন্ড কিস্তির শেষে। তাই কুরবানি নিয়া ফরহাদ মজহার যা যা বলতে চান, তা এখনো সম্পন্ন ও সম্
সোরেন আবায়া কিয়ের্কেগার্ড (Søren Aabye Kierkegaard) বা সংক্ষেপে সোরেন কিয়ের্কেগার্ড (১৮১৩-১৮৫৫) আধুনিক কালের সামনের সারির দার্শনিক। পাশ্চাত্য যখন এনলাইটমেন্টের শিখরে – অর্থাৎ জীবন ও জগতের প্রচলিত অনুমান, সংস্কার, ধারণা, প্রত্যয় প্রতিজ্ঞা সবকিছুই যখন বুদ্ধির প্রবল পরাক্রমে বিধ্বস্ত, সবকিছুই যখন সার্বভৌম বুদ্ধির সঙ্গে লড়ে পরাজিত এবং বুদ্ধির অধীনস্থ, শুধু বুদ্ধি যখন মানুষের সকল বৃত্তি
এক
কারো কারো অভিজ্ঞতা ভিন্ন হতে পারে, তবে আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই মনে করেন আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আঃ)-কে তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রমাণ করবার জন্য নিজের সন্তান কোরবানি করবার ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন। এটা আসলে বাইবেলের আদি পুস্তক বা তৌরাত শরিফের গল্প। কিন্তু এই গল্পকেই তাঁরা কোরানুল করিমের বয়ান মনে করেন। এটা ঠিক না। কোরানুল করিমে আল্লার 'আদেশ' পালন করবার জন্য সন্
অনেকে প্রায়ই প্রশ্ন করেন বাংলাদেশের রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে? কিন্তু প্রশ্ন হওয়া উচিত আমরা একে কোন দিকে নিতে চাই?
বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিক ও কৃষকদের উপস্থিতি না থাকলেও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও ছাত্র অধিকার পরিষদের অধিকাংশ সংগ্রামী তরুণেরা গরিব কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের সন্তান। আন্দোলনে শ্রেণিগত ছাপ স্পষ্ট না হলেও এটা পরিষ্কার সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মরে কিম্বা পঙ্গু হয়ে
এক
এই লেখা যখন লিখছি তখন হেফাজতের হরতাল চলছে। হেফাজতে ইসলাম ২৮ মার্চ রোববার জানিয়েছে ইতোমধ্যে শহিদ হয়েছেন ১৭ জন এবং কমপক্ষে ৫০০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও ছাত্রলীগ, অর্থাৎ রাষ্ট্র ও দলের যৌথ সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভও তীব্র হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতি একটা নতুন কালপর্বে প্রবেশ করেছে এবং সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশের ধর্মীয় এ
ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল ঐতিহাসিক আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মিছিলে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছেন, আন্দোলন করেছেন, কিন্তু তাঁদের স্বীকৃতি দিতে ইতিহাস সবসময়ই কার্পণ্য করেছে। কিন্তু এবার ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (বা ইংরেজি সংক্ষিপ্ত নাম ডাকসু) নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ছাত্রীরা যে ভূমিকা র
কিছু বিষয় আছে যা মেয়েদের খুব গভীরে আহত করে, যা মেয়ে না হলে বোঝা কঠিন।
সালেহা বেগম, কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানের মা। তিনি ঢাকায় ছুটে এসেছেন ছেলের ওপর আক্রমণ এবং তাকে রিমান্ডে নেয়া থেকে মুক্তি দিতে। ছেলের জীবন বাঁচাবার জন্যে কতখানি অসহায় হলে, হাত জোড় করে একজন মা বলতে পারেন, ‘আমার মণিকে তোমরা মাফ করে দাও। শুধু মুক্তি দাও। ও আর চাকরী চাবে না গো। ওকে ভিক্ষা দাও। আমার
আজ ঈদ। ঈদ মোবারক।
বাংলাদেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখে ঈদুল ফিতর পালন করছে। এ এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা। রাজনৈতিক সংবেদনা ও উপলব্ধির দিক থেকে অস্বস্তির।
আইন প্রণেতা ও আইন বাস্তবায়নকারীর মধ্যে যখন ফারাক লুপ্ত হয়, তখন আইন, অধিকার বা ন্যায় বিচারের তর্ক অর্থহীন। জনগণকে এই সহজ সত্যটুকু বোঝাবার কার্যকর কোন চেষ্টা বিএনপি করে নি। বাংলাদেশের বাস্তবতায় শুধু আ
কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে শেখ হাসিনার ‘সন্ধি’ বাংলাদেশের রাজনীতির অনেক হিসাব নিকাশ নিমেষে বদলে দিয়েছে। সমাজে বিভিন্ন শক্তির ভারসাম্যের ক্ষেত্রে এই ‘সন্ধি’ গুণগত রূপান্তরের ইঙ্গিত। চরম ইসলাম বিদ্বেষী ‘নাস্তিক’, সেকুলার বা ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীরা আওয়ামি লীগের ঘাড়ে বন্দুক রেখে এই দেশে যেভাবে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা চর্চা করছিল ত
গত ২ মার্চ রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় মোটামুটি বড় একটা গণ্ডগোল হয়ে গেল। প্রথমে ঘটনা তুচ্ছই ছিল। গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় (১ মার্চ দিবাগত রাতে) ওই এলাকার এক নিরাপত্তারক্ষী ও এক ছাত্রের মধ্যে। এর জের ধরে ছাত্রটিকে পিটিয়ে আহত করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বিভিন্ন পত্রিকার খবর অনুযায়ী, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র শাহরিয়ার হাসনাত তপুকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপা
প্রেক্ষাপট
ভারত এবং মিয়ানমার বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তি ভারতের সঙ্গেই বাংলাদশের প্রধান সীমান্ত যার দৈর্ঘ ৪০০০ কিলোমিটারের অধিক। এর মধ্যে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মেঘালয় এবং পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের যথাক্রমে ২৬২, ৮৫৬, ১৮০, ৪৪৩ এবং ২২১৭ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যবর্তী সীমান্তের দৈর
কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাবার পর মাহমুদুর রহমান কথা বললেন।
মঙ্গলবার ( ৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মাহমুদুর রহমান প্রথম সংবাদ সম্মেলন করলেন। দীর্ঘকাল ক্ষমতাসীনদের অন্যায় নির্যাতনের শিকার দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের কথা শুনতে সাংবাদিকরা আগ্রহী ছিলেন। তাঁর কথা কতোটা সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করবে বা করলেও অবিকৃত ভাবে করবে কিনা সে স
বলা হচ্ছে, ২০১৯ সালে জাতীয় নির্বাচন হবে। নিয়ম অনুযায়ী তেমনটাই হওয়ার কথা। সে উপলক্ষে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দাবি আছে সর্ব মহলে। নির্বাচনকে ঘিরে, অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আরো নানা দাবি আছে বিভিন্ন পক্ষের। নিরপেক্ষ কমিশন গঠন তার অন্যতম। এ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ডিসেম্বর মাসজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করেছেন। আওয়ামী লীগ-বি
‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’
যাঁরা ঈদ এলে প্রায়ই নিজেকে মহান পশু দরদী প্রমাণ করবার জন্য পশু কোরবানি না দিয়ে ‘মনের পশু’ কোরবানির তত্ত্ব দিয়ে থাকেন,তাদের কিছু বিষয় বিবেচনার জন্য পেশ করছি। আশা করি তাঁরা ভেবে দেখবেন।
১. প্রায় সব ধর্মেই নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী পরমের সন্তুষ্
অগাস্ট মাসে শেখ মুজিবর রহমানের সপরিবার নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ হিসাবেই পালন করা হোত। আজকাল ‘শাহাদাৎ বার্ষিকী’ হিসাবে উদযাপন করা হচ্ছে। এটা নতুন। এবারের নতুন আরেকটি দিক হোল ‘শাহাদাৎ বার্ষিকী’ উদযাপনের জন্য সারাদেশ থেকে বেশ কিছু বাউলদের নিয়ে এসে শিল্পকলা একাডেমি ‘সাধুসঙ্গ’ আয়োজন করেছে। খবরে তাই দেখেছি। ‘সাধুসঙ্গ’ ব্যাপারটা আসলে কি এটা অনেকেই
সংঘাতের চরিত্র যাই হোক, দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রতিটি সমাজেই থাকে। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চরিত্র বোঝা এবং সমাজ কিভাবে তা সমাধান করছে, কিম্বা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তার দ্বারা একটি সমাজের টিকে থাকা না থাকা সম্পর্কে আগাম অনেক কিছু অনুমান করা যায়। সংঘাত আর্থ-সামাজিক সম্পর্কের দ্বন্দ্ব বা বিরোধ থেকে হতে পারে; কিম্বা বোঝাবুঝি, চিন্তাচেতনার ফারাক অথবা সাংস্কৃতিক-আদর্শিক বিরোধ থেকেও হতে পারে। দ্ব
হোলি আর্টিসান ও তার পরে শোলাকিয়ার ঘটনা বাংলাদেশকে গোড়াসুদ্ধ কাঁপিয়ে দিয়েছে। গুলশানে হামলার ধরণ ও নৃশংসতা সবাইকে আতংকিত করেছে; নিরাপত্তাহীনতা আরও ভারি হয়েছে।
মাত্র পাঁচ জনকে মোকাবিলা করতে গিয়ে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, সোয়াত টিম, গোয়েন্দা বাহিনীর বিভিন্ন দল এবং বিশেষ কমান্ডোদের ব্যবহার করতে হয়েছে। অর্থাৎ বিমান বাহিনী ছাড়া রাষ্ট্রের আইন শৃংখলা ও জাতীয়
মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জেমস ক্ল্যাপার এ বছর ফেব্রুয়ারির নয় তারিখে ইউএস আর্মড সার্ভিসেস কমিটি ও সিনেট সিলেক্ট কমিটির কাছে একটি লিখিত প্রতিবেদন পেশ করেছিলেন। এ ধরনের প্রতিবেদনকে বলা হয় ‘Statement for the Record’। অনেকটা ভবিষ্যতে রেফারেন্সের জন্য নথি করে রাখার মতো ব্যাপার। হোলি আর্টিসানের রক্তপাতের পরে এখন তা রেফারেন্স হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর লিখিত মন্ত
কেন হিন্দু প্রশ্ন?
বদরুদ্দিন উমর সম্প্রতি বেশ কয়েকটি লেখায় বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন ও সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর সাম্প্রতিক দুটো লেখা গুরুত্বপূর্ণ। ‘এটা কি সাম্প্রদায়িকতা?', লিখেছেন ২৫ মে ২০১৪ সালে, যুগান্তরে; দ্বিতীয় লেখাটি হচ্ছে, ‘
Read more... | View: 17839 | Comment () |
ছয়দফায় করা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানুষ মরেছে। কতজন? সংখ্যা এখন খুব ধর্তব্য নয়। শুধু সংখ্যা রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত হতে পারে কিন্তু সংকটের পরিসর ও গভীরতার নির্দেশক না। তাছাড়া কয়জন মরেছে, কতজন পঙ্গু হয়েছে, কতজন নিখোঁজ আর কতজন পুলিশের ভয়ে গ্রাম ছাড়া সেইসব সুনির্দিষ্ট করে নির্ণয়ের উপায় নাই। দ্বিতীয়ত ব্যাপক প্রাণহানির যে ধারা তৈরি হোল তা গ্রামাঞ্চলকে মূলত আরও রক্তপাতের দিক
ঠাট্টা করে নয়, বাংলাদেশের সমাজকে আপনি সিরিয়াসলি ‘সত্যবাদীদের সমাজ’ বলতে পারেন। এই সমাজে বিবাদমান সকল পক্ষই 'সত্যবাদী'। অর্থাৎ তারা মনে করে তারা নিজেরা যা বলে ও প্রচার করে এটাই চরম সত্য। রাজনীতিও এখানে অতএব সত্য কায়েমের রাজনীতি। অর্থাৎ প্রতিটি পক্ষই মনে করে সত্যে শুধু তাদেরই একচেটিয়া। একমাত্র তারাই সত্যবাদী, আর মিথ্যা শুধু অন্য পক্ষে। সত্যবাদীদের সমাজে বিবাদমান পক্ষ অপর
বাস্তবকে জানুন, জেগে উঠুন
সরলীকরণের দোষ স্বীকার করেও সহজে পাঠকদের বোঝাবার জন্য উপমা দিয়ে বলিঃ ধরুন আপনি জানেন আপনি যে গাড়িতে উঠতে চাইছেন তা ভাঙা গাড়ি। চলে না। তদুপরি মোটেও নিরাপদ না, ভেঙে পড়তে পারে। আপনাকে নিরাপদে পৌঁছানোর পরিবর্তে আপনাকে এমন এক জায়গায় এসে এই গাড়ি নামিয়ে দিতে পারে যা বিপদ সংকুল। দেখলেন, আপনি হাজির হয়েছেন একটি ভয়ংকর যুদ্ধক্ষেত্রে। ধরুন
‘নাস্তিকতা আল্লাহ আছে এই সত্য অস্বীকার করে, যে অস্বীকৃতির মধ্য দিয়ে মানুষই শুধু আছে সেই সত্য জাহির করা হয়। কিন্তু কমিউনিজমের জন্য এ ধরনের ঘোরাপথের দরকার পড়ে না।’ (কার্ল মার্কস)
‘যে নৈরাজ্যবাদী খেয়ে না খেয়ে আল্লাহখোদার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ওয়াজ করে বেড়ায় সে আসলে মোল্লা-মৌলবি-পুরোহিত আর বুর্জোয়াদের স
কেন?
কারণ বিশ্ব ইতিহাসে অবদান রাখবার হিম্মত ও সম্ভাবনা কমিউনিজমের এখনও ফুরিয়ে যায় নি। আছে।
মানুষ সামাজিক এবং নিজেকে সে কোন না কোন সমাজ বা কমিউনিটির মধ্যেই আবিষ্কার করে। ফলে সামাজিকতার বা সামাজিক বন্ধনের যে কোন অভাবই তাকে পীড়া দিতে বাধ্য। পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যখন পরিবার ও সমাজের বন্ধনগুলি ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায় তখন 'উম্মাহ' বা সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে একই মানব্জা
জাতীয় ক্ষেত্রে বেশ কিছু বড় বড় ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কেলেংকারি, নিরাপত্তা বিশ্লেষকের গুম হয়ে যাওয়া, ব্যাংকের ভেতর থেকেই টাকা পাচারের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি এবং গভর্নরের পদত্যাগ; ধর্ষণ, নির্যাতন ও মেয়েদের খুন করে ফেলার ভীতিকর প্রবণতা বৃদ্ধি ও তনু ধর্ষণ ও হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা, যার প্রতিবাদ সারা দেশে হচ্ছে। কিন্তু একই সাথে লক্ষণীয় সামগ্রিক ভাবে নারী নির্যাতনের প্রতিবা
এক এগারোর সময় পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে নিজের ভূমিকার ভুলের কথা মাহফুজ আনাম একটি টেলিভিশান টক শোতে স্বীকার করেছেন। তাঁর এই উপলব্ধিকে আন্তরিক মনে না করার কোন যুক্তি নাই। সরকারপক্ষের টেলিভিশান চ্যানেলটি তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলবার জন্যই তাদের অনুষ্ঠানে নিয়েছিল কিনা সেটাও আমরা ভাবতে পারি। কিন্তু যে উপলব্ধির জায়গা থেকে মাহফুজ আনাম সম্প্রতি ভুল স্বীকার করেছেন তাকে স্বাগত জানাবার
নতুন ঈসায়ী নববর্ষে সবাইকে ভালবাসা
আজ ২০১৫ সালের শেষ দিন। আর একটি ঈসায়ী সাল চলে যাচ্ছে। আরেকটি ঈসায়ী সাল সামনে। ইসলামের নবী-রসুলদের মধ্যে যিনি ঘৃণা ও হিংসার বিপরীতে প্রেমের অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করে অমর হয়ে আছেন তিনি হজরত ঈসা (আ:)। তিনি রুহুল্লা। প্রেমের প্রতীক। ইসলামে তাঁর মর্যাদা অসামান্য। তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে বলে ইসলাম মনে করে না। তিনি আবার প্রত্যাবর্তন কর
সবাইকে ঈসায়ী নববর্ষের শুভেচ্ছা। নতুন বছরের শুরুতে অল্প কিছু কথা বলব। বরং সবাইকে বলব, ভাবুন, আমরা কোন্দিকে যাচ্ছি।
চরম দুর্নীতি, লুটপাট, নাগরিক ও মানবিক অধিকার লংঘন এবং ভোটের তামাশা সত্ত্বেও আমি মনে করি না বাংলাদেশের জনগণ ভুল পথে যাচ্ছে। গত বছরের (২০১৫) শেষে পৌর সভার নির্বাচন গিয়েছে। নির্বাচনের কারচুপি ঘটেছে, একে কোন অর্থেই নির্বাচন বলা যায় না। ইসির ভূমিকা নিন্দনীয়। বিএন
সকালে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ২২ তারিখের ‘দৈনিক প্রথম আলো’য় চোখ বুলাচ্ছিলাম। উপসম্পাদকীয়র পাতায় রওনক জাহানের একটা লেখা চোখে পড়ল। লেখার শিরোনাম 'গণতান্ত্রিক উত্তরণের ২৫ বছর’। রওনক জাহান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত। র
নীতিবাগীশতা ও ক্ষমতার বিচার
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সমাজের ক্ষমতাসীনদের জন্য আরামের কিনা বলা মুশকিল তবে তারা তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মতাদর্শিক স্বার্থ উসুল করে নিতে পারছে, এটাই বাস্তবতা। স্বার্থ উসুল করা কথাটা বোঝা আশা করি কঠিন কিছু নয়। তারা ক্ষমতার সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লুট করছে ও বিদেশে টাকা পাচার করতে পারছে। বড় কোন প্রকল্পের জন
আসলেই, ‘সমাজ বদল’ কথাটার অর্থ কী?
বাংলা ভাষায় ‘সমাজ’ নামে একটি শব্দ আছে। কিন্তু শব্দটি এখন কী বোঝায় সে সম্পর্কে আমরা আর একদমই অবহিত নই। আগেও খুব সজ্ঞান ছিলাম বলা যাবে না। যদি থাকতাম তাহলে সমাজ বদল, পরিবর্তন বা রূপান্তর ইত্যাদি ধারণার একটা মানে আমরা দাঁড় করাতে পারতাম এবং আমাদের বর্তমান অবস্থা বিচার করবার মানদণ্ড হিসাবে তা ব্যবহারও করা যেতো। সেই সুব
যখন বুঝতে পারি দেশের মানুষ ভয়ংকর বিপদের দিকে ধেয়ে চলেছে তখন লিখতে গিয়ে সবকিছু গুছিয়ে লিখতে পারছি কিনা বারবার সেই দিকে সতর্ক থাকতে হয়। এই কাণ্ডজ্ঞানটুকু বজায় রাখা জরুরী যে যদি সমাজের রাজনৈতিক ও আদর্শিক বিভক্তি আমাদের বিপদ ও বিপর্যয়ের গোড়া হয় তাহলে সেই বিভক্তির গোড়ায় পানি ঢালা এখনকার কাজ নয়। এটা খুশির কথা যে অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হবার কথা বলছেন। আমি কাতর ভাবে বুঝতে চাইছি তাঁরা কাদে
সাধারণত আমি লেখা শেষ করার পর লেখার শিরোনাম দিয়ে থাকি। কিন্তু আজ ব্যতিক্রম করেছি। আগে শিরোনাম লিখলাম। উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে একবার বিস্ময় চিহ্ন আর আরেকবার প্রশ্নচিহ্ন দেয়ায় পাঠকের একটু মিস্টেরিয়াস মনে হতে পারে। আসলে রহস্যের কিছু নাই। ব্যখ্যা করে বলি।
শেখ হাসিনার সরকার এতদিন আমাদের বুঝিয়েছিল,বাংলাদেশ ইসলামী সন্ত্রাসীতে ভরে গিয়েছে। তিনি দাবী করতেন, তার সরকারের আমলে কোনো
শেখ হাসিনা সফল ভাবে বিরোধী দলকে নাস্তানাবুদ করে দিতে পেরেছেন। খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। তাঁর ফিরে আসার কথা থাকলেও এখন শোনা যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য দেরি হবে। তাঁর প্রত্যাবর্তনের তারিখ এখনও অনিশ্চিত। এতে ক্ষমতাসীনদের পুলকিত থাকবার যথেষ্ট কারন রয়েছে। কিন্তু সাধারণ নাগরিকদের জন্য আনন্দিত হবার কিছু নাই। অন্যদিকে আমরা বারবারই আমাদের লেখায় বলেছি, বিরোধী দলের বিপ
[ বর্তমান পৃথিবীতে যেসব প্রশ্ন আমাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে এবং নতুন রাজনীতি নির্মাণে প্রধান প্রশ্ন আকারে সামনে এসেছে এর মধ্যে ‘শরিয়াহ’ অন্যতম। কিন্তু শরিয়া নিয়ে আলোচনা সহজ নয়। এর বাস্তব প্রয়োগ যেমন বিতর্ক তৈরি করে তেমনি ইসলামকে দানবীয় বর্বর ধর্ম হিসাবে হাজির করবার জন্য পাশ্চাত্য শরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রপাগাণ্ডা চালায়। ঐতিহাসিক ভাবে শরিয়ার উৎপত্তি ও বিবর্তন বোঝা
ক্ষমতাসীনদের প্রতিপক্ষ যেখানে নির্জীব এবং দমন পীড়নে পর্যুদস্ত তখন হঠাৎ রাজনীতি আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। বাইরে থেকে দেখেএকে ক্ষমতাসীনদের নিজেদের ভেতরকার বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে পত্রিকায় কেউ কেউ বলেছেন -- এরফকমই সন্তবত দেখেছি। এই মূল্যায়ন অবশ্য সস্তা, কারণ একথা ক্লাস সেভেনে পড়া ছেলেটিও বলতে পারে। বিরোধী দলের সাড়াশব্দ নাই, এই ফাঁকে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল মাথা
এক
দৈনিক যুগান্তরে গত সপ্তাহে ‘আয়নায় মুখ দেখা’ লেখাটি ছাপা হবার পর একজন পাঠক আমাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন (এই লিঙ্কেও লেখাটি পড়তে পারেন)। তাঁকে ধন্যবাদ। চিঠিতে তিনি নাম উল্লেখ না করে ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর প্রকাশিত একটি লেখার অংশ উদ্ধৃত করে
‘নির্বাচনই গণতন্ত্র’ – এই ধরণের একটি ধারণার প্রকট প্রাবল্য বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে আমরা দেখেছি। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদে নির্বাচন নিয়ে যে তামাশা জনগণ দেখেছে সে কারণে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সম্পর্ক নিয়ে কিছু কিছু ভাবনা শুরু হয়েছে বটে, কিন্তু আমার অনুমান সেটা খুবই ক্ষীণ। রাষ্ট্র নামক ব্যাপারটা আসলে কী, তা নিয়ে আমাদের সমাজে আলোচনা নাই বললেই চলে। একটি সর্বগ্
বিরোধী জোটের রাজনৈতিক কৌশলের ব্যর্থতা ও দুর্দশা নিয়ে প্রায়ই অনেককে কথা বলতে শুনি। নানান জনে নানান কারনের কথা বলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেইসকল মন্তব্য অকাজের। অর্থাৎ বিশ্লেষণ বলি কিম্বা ভবিষ্যতে বিরোধী দলের কি করা উচিত সেই ঔচিত্যের ক্ষেত্র থেকে বলি – লক্ষ্যহীন বাগাড়ম্বর কোন কাজে আসে না।
তাহলে এক কথায় বিরোধী রাজনীতির কৌশলগত ব্যর্থতার সারমর্ম কিভাবে করা যায়! এর উত্তর মিলব
বিভাজন, বিভক্তি ও নির্মূলের রাজনীতির বিপদ
অন্ধ হয়ে রাজনৈতিক বিভাজন ও বিভক্তি রেখা যেভাবে আমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে টেনে দিচ্ছি এবং ভিন্ন চিন্তাকে দুষমণ গণ্য করে তাকে নির্মূল ও কতল করবার জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছি তার পরিণতি সহিংস ও আত্মঘাতী হতে বাধ্য। বাংলাদেশের জন্য সেটা ইতোমধ্যেই মারাত্মক হয়ে উঠেছে। শুনতে অনেকের ভাল নাও লাগতে পারে -- এই বিভা
শেখ হাসিনা ধমক দিয়েছেন!
শেখ হাসিনা ধমক দিয়েছেন। শুনতে মন্দ লাগতে পারে, কিন্তু সংবিধানকে ব্যবহার করবার ইচ্ছা নিয়ে তিনি যেভাবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী করেছেন তাতে এই ধরনের ধমক অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই’। বলছেন, খালেদা জিয়াকে। তাঁর ধারনা উত্তরপাড়া থেকে কেউ এসে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেব
দুই হাজার পনেরো সালের জানুয়ারির ৫ তারিখ বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ কারন এই দিনে দীর্ঘকাল ধরে জমে থাকা সমাজের নানান স্তরের দ্বন্দ্ব-সংঘাত মীমাংসার অতীত রাজনৈতিক বিরোধের রূপ নিয়ে ক্রমে ক্রমে মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশের অতীতের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের তুলনায় এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নতুন। এর মীমাংসা সহজ নয়।
একদ
গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে সংসদে আওয়ামি লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনছিলাম। ‘যারপরনাই ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন’-এর মধ্য দিয়ে তিনি ‘প্রধান মন্ত্রী’, তাঁর ক্ষমতার বৈধতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অথচ তিনি তাকে আমলে নিচ্ছেন না। যার কুফল বাংলাদেশকে ভোগ করতে হচ্ছে।
‘যারপরনাই ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন (extremely flawed election) আমার ভাষ্য নয়। বিদেশিদের মূল্যায়ন। যুক্তিসঙ্গত কারনেই আন্তর্জাতিক ম
সম্প্রতি দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়াশান মিলনায়তনে ২৮ জানুয়ারি তারিখে ‘চলমান জাতীয় সংকট: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক একটি সভায় 'জাতীয় ঐকমত্যের সরকার' গঠন এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব করেছেন। সেই সভায় বিচারপতি আব্দুর রউফ, খোন্দকার মাহবুব হোসেন, লে: কঃ (অঃ) মো
বাংলাদেশ বিস্ময়কর দেশ। এই এক দেশ যেখানে পশ্চিমা মিডিয়ার বর্ণবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক চিন্তার প্রাবল্যের জন্য পড়াশোনা জানা শিক্ষিত ভদ্রলোকরা বিশ্বাস করে বাংলাদেশের সকল নষ্টের গোড়া দুই বেগম। তাদের ভাষায় ‘ব্যাটলিং বেগামস’। সমাজে যারা শিক্ষিত, অভিজাত ও বুদ্ধিমান বলে পরিচিত তাদের এই বিশ্বাস কি করে এতো বদ্ধমূল হোল সেটা সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার বিষয়। অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতির ই
দমন পীড়ন হত্যা, গুম খুন ও যৌথ বাহিনীর নির্মম ও নিষ্ঠুর অপারেশানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলের কর্মসূচি নস্যাৎ করবার যে চেষ্টা চালাচ্ছে, তা ক্ষমতাসীনদের আরও দুর্বল করবে। বিদেশ থেকে পরিচালিত একটি পোর্টালে পুরা পরিকল্পনার সমেত সংবাদ প্রচার হওয়ায় তেইশ তারিখ দুপুর থেকেই শুনছিলাম সরকার নিজেই একটি বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছে। যাতে তার পুরা দায় বিরোধী দলের উপর চাপিয়ে দে
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমি একটি কবিতা লিখেছিলাম, ‘এরশাদ তোমাকে দেখা মাত্রই গুলি করবে’। সে রকম একটা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই সময়। তখনই বুঝেছিলাম এটা মরণকামড়ের মতো। শেষ মূহূর্ত হাজির। সামরিক শাসকের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া স্রেফ অল্পকিছু সময়ের ব্যপার মাত্র। তাই ঘটেছে। গতকাল দেখছি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, ‘একজন ব্যক্
৫ জানুয়ারি ২০১৫। নৈতিক ও সাংবিধানিক দিক থেকে অবৈধ সরকারের একবছর শেষ হোল। বিরোধী দলের কাছে দিনটি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’, আর ক্ষমতাসীনদের কাছে ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেউ কেউ ‘বিতর্কিত’ বলে কৌশলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষালম্বন করে থাকেন। অথচ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার যেমন কোন নৈতিক ভিত্তি নাই, তেমনি ‘প্রত্যক্ষ নির্বাচন’ ছাড়া বিনা প্রতি
মাত্র সাড়ে তিন বছরের শিশু জিহাদ সারা দেশে কান্নার রোল তুলতে পেরেছে। সে কান্না এখনো থামে নি। শেষ পর্যন্ত জিহাদকে তোলা হোল, কিন্তু পাওয়া গেছে মৃত অবস্থায়। ছোট্ট ভেজা শরীরটা বিশেষ খাঁচার কারিগরি খাটিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ওঠানো হয়েছে। ততক্ষণে ঘোষণা দিয়ে ফায়ার ব্রিগেড তার কাজ স্থগিত ঘোষণা করেছে। একজন মন্ত্রী বলেছেন, কেউ ওয়াসার পাইপের মধ্যে নাই, এটা গুজব। জিহাদকে রেখেই ফায়ার
আরেকটি ঈসায়ী বছর শেষ হচ্ছে। নতুন বছরের জন্য সবাইকে শুভেচ্ছা।
নতুন বছরে আমরা সবাই ভবিষ্যতের কথা ভাবি। গতবছরগুলো যতো মন্দই হোক, সামনের বছরগুলো অতীতের চেয়ে ভালোভাবে কাটবে আশা করি। সেই আশাটা নতুন বছরে প্রকাশ করাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও প্রায়ই ভাবি, যে-বছর চলে যাচ্ছে সেটা যদি পিছিয়ে পড়া ব্যর্থতার বছর হয় তারপরও তো নতুন বছরের উৎসব করি আমরা। সেটা তো দোষের না। এবারও তার ব্যতিক্র
পেশোয়ারে একটি মিলিটারি স্কুলে পাকিস্তানী তালেবানদের হামলা আমাকে স্তম্ভিত ও শোকার্ত করেছে। সেই বিষয়েই কয়েকটি কথা বলব।
দুই হাজার ১০ সালের ১৮ অক্টোবর মার্কিন ড্রোন হামলায় প্রাণঘাতী লোহার টুকরা দশ বছরের বালক নাসিমুল্লার বুক ও শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যায়। শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকা মৃত নাসিমুল্লার ছবিটি ইন্টারনেটে দেখেছিল
[ এ লেখাটি দুই হাজার দশ সালে লেখা। চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে এসেছি। ছাপা হয়েছিল অনলাইনে বিডিনিউজ২৪ ডট কমে অগাস্ট মাসের ৮ তারিখে। পিয়াস করিমকে শেষ বিদায় জানাবার আগে নাগরিক শ্রদ্ধা জানাবার জন্য শহিদ মিনারে নেবার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে রাজনৈতিক মেরুকরণ ও তর্ক চলছে এই লেখা সে কারণে এখন আবার প্রাসঙ্গিক হতে পারে ভেবে এখানে তুলে দেওয়া হোল – চিন্তা]
রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে পৃথিবীর অনেক দেশে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে নারী বিরোধিতা বা বিদ্বেষ কমে গেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ সব পথ পরিস্কার করে দিয়েছে তাই নারী সহজে উচ্চ পদে বসতে পারছেন এমন কোন কারণ নাই। ধনী ও উন্নত দেশ যেখানে নারী স্বাধীনতা অনেক এগিয়ে আছে বলে মনে করা হয় সেখানে এখনো প্রধান মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদে নারীদের পাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। অথচ দক্ষিণ
বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে এই প্রশ্ন প্রায় সকলের। রাজনীতি নিয়ে যে সকল আলোচনা দেখি তার অধিকাংশই হচ্ছে যার যার মনের বাসনার প্রতিফলন। সেটা হাজির হয় কোন দিকে যাচ্ছে তাকে নৈর্ব্যক্তিক বা ইচ্ছা অনিচ্ছার বাইরের একটি বাস্তব প্রক্রিয়া হিসাবে দেখবার চেষ্টা না করে ঔচিত্যবোধের জায়গা থেকে দেখবার বাসনা থেকে। অর্থাৎ কোন দিকে যাচ্ছে সেই আলোচনা না করে আমরা কোনদিকে যাওয়া উচিত সেই দিক নিয়ে পর
সরকারের সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে বিস্তর তর্ক বিতর্ক হয়েছে এবং হচ্ছে। পত্রিকায় দেখছি সম্পাদক পরিষদও বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা আশংকা প্রকাশ করেছেন, সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। প্রশ্ন হচ্ছে গণমাধ্যম তো পুরোটাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে, আর কি নিয়ন্ত্রণ করবে ক্ষমতাসীনরা? সংশয় ও সমালোচনা সত্ত্বেও সম্পাদক পরিষদের এই বিবৃতি আমি সমর্থন করি। সেটা বলার জন্যই এই লেখা।
যাঁরা বিব
আমি ‘আধুনিক’ নই। এর মানে এই নয় যে আমি অনাধুনিক। কিম্বা আমি অনাধুনিকতাকে মহিমান্বিত করতে চাই। আধুনিক যুগের আবির্ভাবের আগে প্রাক-আধুনিক যুগ নামক যদি কিছু থাকে সেখানে প্রত্যাবর্তন করার ইচ্ছা বা সংকল্প কোনটিই আমার রাজনীতি না। আমি কোথাও প্রত্যাবর্তন করছি না, ফিরছি না; বরং আধুনিকতা/অনাধুনিকতার বিভাজন অতিক্রমের চেষ্টা করছি। যে কারনে আমি আধুনিকতা বনাম অনাধুনিকতা এই দুইয়ের একট
অন্যের ভূখণ্ড দখল এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে উৎখাত ও বিতাড়িত করে সাম্রাজ্যবাদী যুগে যে 'সেটলার কলোনিয়াল' রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল সেই ধরণের একটি রাষ্ট্র। রুজভেল্ট ও চার্চিলের আটলান্টিক চার্টার অনুযায়ী এই ধরণের রাষ্ট্রের 'সেলফ ডিফেন্স' দূরের কথা অস্তিত্বের বৈধতা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী থাকবার কথা নয়। অথচ জায়নবাদের পক্ষে গণমাধ্যম সেলফ ডিফেন্স
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানান বিদেশি ফ্যাক্টর কাজ করে, এটা আমরা জানি। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, সহাবস্থান ও আঁতাতের বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে এই ফ্যাক্টরগুলো কি রূপ নিতে পারে সে বিষয়ে বাস্তবসম্মত আলোচনা খুব একটা চোখে পড়ে নি। এখানে চার কিস্তিতে প্রাথমিক কিছু আলোচনা আমরা হাজির করছি।
<এক
লেখাটি এ বছর চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির জন্য তৈরি করেছিলাম, যদি সেদিনই বেরুতো ভাল লাগতো। কিন্তু পাঠাতে পারি নি। আজ পনেরো তারিখে পাঠাচ্ছি। অতএব কাল ষোল ফেব্রুয়ারিতে বেরুবে।
তবে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে ১৪ ফেব্রুয়ারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। স্বাধীনতার পরে তরুণদের সবচেয়ে গৌরবের
বাংলাদেশ ইসলামি সন্ত্রাসীতে ভরে গিয়েছে যেভাবেই হোক আন্তর্জাতিক ভাবে এটা প্রমাণের ওপর নির্ভর করছে ক্ষমতাসীনদের রাজত্বের মেয়াদ। অতএব সঙ্গত কারণেই সাধারণ্যে প্রায়ই অপরিচিত জেনস সেন্টার (IHS Jane’s Terrorism and Insurgency Centre ) বলে একটা সংগঠন বাংলাদেশে হঠাৎ পরিচিত হয়ে উঠছে। তাদের তালিকা নিয়ে এই লেখা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারী তারিখে জামাতের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশের ইসলামি ছাত্র শি
এক
আলজাওয়াহিরি কথিত ভিডিও বার্তা নিয়ে প্রপাগান্ডা চলছে। কিন্তু দেশি বা বিদেশি কেউই নিশ্চিত করে এখনও বলতে পারছে না, এই ভিডিও বার্তা আসলে কার। যারা খবরটি ছেপেছে তারা সবাই খবরের সোর্স পরীক্ষা না করে এবং খবরটা কোন ক্রসচেক না করেই ছেপে দিয়েছে। খবরের কোন সত্যতা নাই জেনেশুনেই খবরটি ছেপে নিজ নিজ পক্ষে প্রপাগান্ডা চালিয়ে গিয়েছে। মুল গলদটা এখানেই। বলা বাহুল
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে জামায়াত ও হেফাজত সংক্রান্ত প্রস্তাব ছাড়া বাকি সবগুলোই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে। প্রত্যেকেই এই নির্বাচনকে ' ভূয়া' বা কূটনৈতিক ভাষায় 'অগ্রহণযোগ্য' বলেছে। আবার দ্রুত নির্বাচন চাইছে তারা।
এক
তথাকথিত ‘নির্বাচন’ নামক তামাশার পরে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট ১৬ জা
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রস্তাবের সার কথা বিকৃত করে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনরা আঠারো দলীয় জোটে ভাঙন ধরাবার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের দাবি ইউরোপ চায় বিএনপি জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গ ত্যাগ করুক। বিএনপির অভ্যন্তরেও এই মতের সমর্থক রয়েছে। এর সঙ্গে তারা ক্ষমতাসীনদের আরেকটি প্রপাগাণ্ডা যোগ করে; সেটা হোল, খালেদ জিয়া দিল্লীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখেন নি বল
এক
আগের লেখায় আন্দোলনের ধরণ নিয়ে আলোচনা করেছি (দেখুন, ‘হাসিনার নয় দফা ও আন্দোলনের ধরণ’ - নয়াদিগন্ত, ১৯ জানুয়ারি ২০১৪)। সেই প্রসঙ্গে ছিয়ানব্বইয়ের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সম্পন্ন হবার পর তখনকার বর্জনের নেত্রী শেখ হাসিনার বিখ্যাত ‘নয় দফা’র কথাও সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছি। বেগম খালেদা জিয
বোঝা যাচ্ছে আন্দোলনের একটা বিরতি ঘটেছে। খালেদা জিয়া ১৫ তারিখে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ২০ জানুয়ারি গণ সমাবেশ ও ২৯ তারিখে কালোপতাকা মিছিল। অন্যদিকে খবর খুব দ্রুত ঘটছে। অনেক খবর তাদের প্রিন্টিং প্রেস সমেত সিল গালাও হয়ে যাচ্ছে। তিনটি বিষয় খবর হিসাবে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটি বিরতির ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার সাংবাদিক সম্মেলন; এখান থেকে আ
দুই হাজার চৌদ্দ সালের ৫ জানুয়ারী রোববার; বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কালো দিন। দিল্লীর সাধের নির্বাচনের দিন। রঙতামাশার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে পুনর্বার ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া হবে। এ লেখা যখন লিখছি তখন শেখ হাসিনার রক্তপাতে সিক্ত নির্বাচনে ১৮ জন মানুষ শহিদ হয়েছেন। সংবাদ নিয়ে জেনেছি ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোট দিতে কম ভোটারই হাজির হয়েছেন। মিথ্যুক ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী মিডিয়াগু
প্রথম আলোয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের লেখা ‘প্লিজ নির্বাচন করবেন না’ (৩ জানুয়ারি ২০১৩) আমার জন্য ছিল সবচেয়ে বিব্রতকর ও লজ্জাজনক পাঠ। তিনি চান না ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন হোক। নির্বাচন না হলে, তাঁর আশা, সংবিধানের মধ্যে একটা সমাধানের পথ বের করা যাবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা সমঝোতাও নাকি করা সম্ভব। যদিও সংবিধানের মধ্যে সমাধানের যে-পরামর্শের ইঙ্গিত
দুই হাজার তেরো ঈসায়ী সাল শেষ হচ্ছে আজ। বছরকে বিদায় জানাবার রীতি পাশ্চাত্যের; বরণ করবার সংস্কৃতিও। সময়কে সরল রেখা গণ্য করার চিন্তাও ‘আধুনিক’। তাই সরল রেখার যে বিন্দুতে আমরা দাঁড়াই তাকে বলি ‘বর্তমান’, পেছনকে ‘অতীত’ আর সামনে ‘ভবিষ্যৎ’। সময় আসলে সরলরেখার মতো একদিক থেকে অন্যদিকে আদৌ ছুটে চলেছে, নাকি বৃত্তের মতো ফিরে ফিরে আসছে, এই তর্ক দীর্ঘ দিনের। সময় যদি সরল রেখা হয় ত
এক
সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় কয়েকটি লেখায় আমি বেশ কয়েকবার জোর দিয়ে বলেছিলাম পুঁজির প্রান্তের দেশগুলোতে ‘লিবারেল’ বা উদার রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে। এই দাবির পক্ষে দুই একটি কথা বললেও কোন্ অর্থে কথাগুলো বলেছি তা যথেষ্ট ব্যখ্যা করতে পারি নি। এখানে লিবারেলিজম নিয়ে কিছু প্রাথমিক তত্ত্বকথা বলব। আশা, এতে কিছু কথা পরিষ্কার হবে। লিবারেলিজমের ভালো ব
শেখ হাসিনা দারুন! তাঁর দলের সন্ত্রাসীরা পুলিশের সহায়তায় যখন লাঠি হাতে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও কিম্বা সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে পুলিশের প্রশ্রয়ে গেইট ভেঙে ঢুকে আইনজীবীদের নির্দয় ভাবে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে, আর পেটাচ্ছে নারী আইনজীবীদের -- শেখ হাসিনা তখন বলছেন, “এক এগারোর কুশীলবরা আবার সক্রিয়। এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চান”। তখন তাঁকে বেশ
আমি একজন নাগরিক এবং ভোটার। নাগরিক হিশেবে এই লেখাটি লিখছি। নির্বাচন শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, সরাসরি নাগরিকদেরও বিষয়। ভোটার হিসাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নাগরিকরা রায় দিয়ে থাকেন। এই কথা সবাই জানেন। গণতান্ত্রিক সরকার – অর্থাৎ শাসিতের সম্মতি ছাড়া শাসন করবার অধিকার অর্জন করবার এই প্রক্রিয়া পালন না করলে কোন সরকারই নিজেকে বৈধ বলে দাবি করতে পারে না। আমি নিজে বুঝতে পারছি আ
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সমঝোতা হলে দশম সংসদ ভেঙে তিনি একাদশ সংসদের নির্বাচন দেবেন। এই প্রস্তাবের পেছনে পরাজয়ের সুর আছে। কিন্তু এটা কি পিছু হটা? মোটেও নয়। তাঁর এই প্রস্তাব কি তথাকথিত সমঝোতার ইঙ্গিত? তাও নয়। তিনি যা বলছেন আসলেই কি তা করবেন? না, করবেন না। এটা অসম্ভব। এর কারন, সিদ্ধান্ত তিনি নিজে নেবেন না, সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লী। যদি তার নিজের সিদ্ধান্ত নেবার জায়গাগুলো অবশিষ্ট থাকতো ত
দেশের মধ্যে হানাহানি, সহিংসতা, অরাজকতা, হিংসা-বিদ্বেষ চলছে আগামি দশম সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে। সবাই দোষারোপ করছেন দুইটি প্রধান দলের দুই নেত্রীকে। তাঁরা হলেন শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়া। বলা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে যে বিরোধ তারই প্রতিফলন ঘটছে সারা দেশে। এই কথা আমার নয়, নিরানব্বই দশমিক নয় ভাগ পুরুষ এই কথাই বলে। মেয়েদের কথা ভিন্ন। সমাজ অনেক বড় ব্যাপার। সেখানে সমাজনীতি, অর্থনীতি, স
এ লেখাটি লিখছি শহরে, গ্রামে ও প্রবাসে সেইসব বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যারা বয়সে তরুণ। যাঁরা ‘তরুণ প্রজন্ম’ অবশ্যই, কিন্তু শুধু ঢাকা শহরের নয়। মফস্বল ও গ্রামেরও। গ্রামে আছে তরুণ প্রজন্মের বিশাল একটি অংশ যারা কৃষি সহ বিভিন্ন উৎপাদনমূলক কাজে জড়িত। কলকারখানায় মেহনত দিয়ে অর্থনীতির চাকা যাঁরা সচল রাখছেন তাঁরাও তরুণ প্রজন্ম; প্রায় পুরানা দাস ব্যবস্থার মতো ‘তরুন প্রজন্ম’ ত
এক
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ঝড়ের মতোই এসেছিলেন, ঝড়ের মতোই গেলেন। পাঁচ তারিখ খুব সকালে যখন তিনি দিল্লী ফিরে যাচ্ছেন তখন থেকেই ভাবছি তাঁর এই আসার আদৌ নতুন কোন তাৎপর্য আছে কিনা। দিল্লী ঢাকাকে যেটা জানাতে চেয়েছে সেটা ভারতীয় পত্রপত্রিকা ও তাদের থিংক ট্যাংকগুলোর সুবাদে আমরা জানি। সেটা হোল, শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনের নীতি সমর্থন করছে দিল্লী। নিজ
এক
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে এসে শেখ হাসিনার এক তরফা নির্বাচনের পথকেই সম্মতি জানিয়ে গেলেন; দিল্লী ঢাকাকে যেটা জানাতে চেয়েছে সেটা ভারতীয় পত্রপত্রিকা ও তাদের থিংক ট্যাংকগুলোর সুবাদে আমরা জানি। সুজাতা সিং নেপালের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, সেখানেও একটি দল নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়েছিল, কিন্তু শেষাবধি সেখানে নির্বাচন হয়েছে। অতএব নির্বাচন বর্জনের
প্রসঙ্গ একঃ আমেরিকা ভারতের কথা শুনল না
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে স্থানীয় মিডিয়ার জন্য একটা প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়েছে ০৯ নভেম্বর সন্ধ্যায়। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ইংরাজীর সাথে বাংলাতেও বিবৃতিটি দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি নিউজপোর্টালে খবরটি ছাপা হয়েছে, প্রিন্ট পত্রিকাতেও এসেছে। প্রথম আলোর ১০ নভেম্বর প্রিন্ট কিম্বা অনলাইন সংস্করণেও তাদের
এ লেখা যখন লিখছি তখন বিরোধী দলের ওপর নতুন করে দমন পীড়ন শুরু হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গভীর রাতে খালেদা জিয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় গ্রেফতার হয়েছেন ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমূল বিশ্বাস। কী অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করা হোল পুল
এ লেখা যখন লিখছি, তখন আঠারো দলীয় জোটের ডাকা হরতাল চলছে। হেফাজতে ইসলামও তাদের দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য কর্মসূচী দিয়েছে। সংলাপের মাধ্যমে – অর্থাৎ উদার বা লিবারেল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের কোন সুযোগ আদৌ ছিল কিনা তা নিয়ে এখন কূটতর্ক হতে পারে, কিন্তু তার কোন উপযোগিতা আর নাই। হরতালের মতো কর্মসুচী দেয়া শুরু হয়ে যাবার পর রাজনীতির গতিমুখ বোঝা যাবে আগামি কয়ে
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বকাঠামোতে গণতান্ত্রিক চর্চা মানেই সাম্রাজ্যবাদীদের কর্পোরেট আধিপত্য মেনে নিয়েই রাজনীতি করা, বাংলাদেশে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো তাই করে কিন্তু তারপরও এই সাম্রাজ্যিক হেজিমনির যুগেও আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নিজস্ব কিছু স্বকীয়তা, সীমিত স্বাধীনতা রয়েছে তার ভিত্তিতে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের অধিকার আদায়ের বন্দোবস্ত করে। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রের
বেগম জিয়া ২৫ অক্টোবরের মহাসমাবেশে ঘোষণা করেছেন, আন্দোলন এবং সংলাপ দুই পথ ধরেই তিনি অগ্রসর হবেন। রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে এটা সঠিক অবস্থান। কিন্তু তিনি কী অর্জন করতে চাইছেন সেটা এখনও সাধারণ জনগণের কাছে অস্পষ্ট। তাঁর রাজনীতির এই দিকটি সবচেয়ে দুর্বল। যখন লিখছি তখন শোনা যাছিল তাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করবেন। শেষমেষ ফোন করেছেন হরতাল প্রত্যাহার করবার জন্য, আন্দোলন থেকে
শেষাবধি ২৫ অক্টোবর...
এই লেখা লিখছি বহু প্রতিক্ষার ২৫ অক্টোবর, শুক্রবারে। বাংলাদেশের রাজনীতি কোনদিকে যেতে চাইছে তার কিছুটা আন্দাজ আমরা আজ ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে করতে পারব। যেহেতু গতকাল অবধি দুইপক্ষের মধ্যে তথাকথিত ‘সমঝোতা’ বা ‘আপোষ’ হয় নি, অতএব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মীমাংসা বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়েই সম্ভবত নিষ্পন্ন হতে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা আইন-আদ
এক
সমাজে অর্থনীতিতে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কিম্বা রাজনীতিতে যে সকল সম্পর্ক আমাদের জাপটে ধরে রাখে, মুক্ত হতে দেয় না, আমি তা উপড়ে ফেলার পক্ষপাতি। কেবল তখনই নতুন কিছুর নির্মাণ সম্ভব। সে নতুনের রূপ কেমন হবে সেটা বর্তমানের ভেতরে থেকেই অনুমান ও চিহ্নিত করা সম্ভব। বর্তমানের মধ্যে কাজ করেই তাকে ‘বর্তমান’ করে তোলা যায়, বাস্তবায়নও সম্ভব।
এক সময় দাবি করা হ
আন্দোলনে বিএনপির সাময়িক ইস্তফা
গত কিস্তি ছাপা হবার আগেই বোঝা গিয়েছে আন্দোলনের প্রশ্নে দোদুল্যমানতা ও পরাশক্তির ফাঁদে খাবি খাবার দুর্দশাই বিএনপি বেছে নিয়েছে। বিএনপি বাংলাদেশের জনগণের ওপর নয়, নির্ভর করতে চাইছে জাতিসংঘের ওপর। আন্দোলন থেকে পিছু হটে জাতিসংঘের সহায়তায় ক্ষমতায় আসতে চাইছে। বিএনপি হরতাল-অবরোধ বা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে যাবে না। গরম ভ
কূটনৈতিক মহলের তৎপরতা
‘যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভেজাবো না’ শিরোনামে কিছু কথা বলা শুরু করেছিলাম। এ লেখা তারই ধারাবাহিকতা।
ইতোমধ্যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার কূটনৈতিক মহল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা সুষ্ঠ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। তারা চাইছেন বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেমন আছে তেমনি থাকুক; বড় কিসিমে
‘এক চুলও নড়বো না’
শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি ‘একচুলও নড়বেন না’। তিনি যেভাবে তাঁর অধীনে নির্বাচন করতে চান, সেভাবেই নির্বাচন হবে। তাঁর ইচ্ছাই শেষ কথা। বলেছেন, কিভাবে হবে সেটা সংবিধানেই লেখা আছে। এরও সুনির্দিষ্ট অর্থ আছে। অর্থ হোল, তিনি যেভাবে সংবিধান সংশোধন করে রেখেছেন, সেইভাবেই নির্বাচন হতে হবে: তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, সংসদ জারি থাকবে; থানা-পুলিশ-প্রশাস
বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগে আদৌ কোন নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় নতুন নয়। হয়তো হবে না, হয়তো হবে। ভদ্রলোক সমাজে যে উদ্বিগ্নতা আমরা দেখছি তাকে মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এক পক্ষে রয়েছে আইনী উদ্বিগ্নতা। যেমন, এই সরকারের মেয়াদ শেষ হলে যে সাংবিধানিক জটিলতা তৈরী হবে তার মীমাংসা কিভাবে হবে? আরেক ধরণের উদ্বিগ্নতা হচ্ছে সামাজিক। সেটা হোল নির্বাচন যদি না হয়, ক্ষমতাসীনরা যদ
তথ্য মন্ত্রণালয় তথ্য চায়। তাদের কাছে তথ্য নাই যে তা না, তবু তারা তথ্য চায়। আজব ব্যাপার! তথ্য মন্ত্রণালয় তথ্য চেয়েছে ‘অধিকার’ ও ‘টি আই বি’র কাছে। দৈনিক জনকন্ঠে বিভাষ বাড়ৈ রিপোর্ট করেছেন, “শাপলা চত্বরের মৃত্যুর বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিপাকে ‘অধিকার’ (১৪ জুলাই ২০১৩)”। ভালো তো, ভালো না?
পড়ুক অধিকার বিপাকে। আসলে কেউই মারা যায় নি। জাতীয় সংসদেও সরকারদলীয় নেতৃস্থানীয় সং
শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেবেন না, তিনি পণ করেছেন তাঁর অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। এর পক্ষে তিনি আদালতের বরাত দিচ্ছেন। আদালত রায় দিয়েছে, তিনি আদালতের কথা মতোই চলবেন। আদালত ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বাইরে স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেই সত্য আদালত কিম্বা আওয়ামি লীগ দুইয়ের কেউই প্রতিষ্ঠিত করতে পারে নি। বলাবাহুল্য, বেগম খালেদা জিয়া জানেন এর অর্থ হচ্ছে নির্ব
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মানুষের প্রচুর ভালবাসা পেয়েছেন। ব্যক্তি হিশাবে এটা বিরল সৌভাগ্য। তবে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর মূল্যায়ন রাজনৈতিক ভাবেই হওয়া উচিত। সেটা তাঁর মৃত্যুর পরপরই করতে হবে এমন কথা নাই। আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে সেটা খাপ খাবে না। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীদের যে সাংস্কৃতিক মান দেখি তুলনায় তাঁকে ফে
বাংলাদেশের সমাজ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে, এতে সন্দেহ নাই। এই বিভাজনকে এতদিন আমরা যেভাবে আওয়ামী লীগ- বিএনপি বলে চিনতাম সেই বিভক্তি নয়। এই ভাগাভাগি আরও গভীরে, আরও ব্যাপক, আরো বিস্তৃত।
সমাজে মানুষ বিভিন্ন পরিচয় নিয়ে হাজির থাকে। সমাজের ভাষা ও সংস্কৃতিগত নানান ভিন্নতা ও বৈচিত্র আছে, নানা নৃতাত্ত্বিক জাতি আছে, বিভিন্ন ধর্ম রয়েছে এবং তাদের নিজের নিজের সংস্কৃতি, ধর্ম ও আত্মপরিচয়ের
দৈনিক সমকাল ঘোর আওয়ামীপন্থী পত্রিকা হিশাবে পরিচিত। গত আটই মার্চে দেখলাম তারা আট কলামে বড় লাল অক্ষরে প্রথম পাতায় শিরোনাম করেছে ‘মহাসংকটে দেশ’। বোঝা যাচ্ছে এটা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের কোন একটি অংশের উপলব্ধি। ঘটনা ঘটছে দ্রুত। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও শক্তি এই পরিবর্তনশীল ঘটনার মধ্যে কখন কী উদ্দেশ্যে কি অবস্থান গ্রহণ করছে সেটা এই ধরণের খবর দেখে আন্দাজ করা যায়। মধ্যবি
এ লেখাটি মূলত একটি অভিভাষণ। এই সময়ে রাজনৈতিক মঞ্চে সর্বাধিক আলোচিত মানুষ মাহমুদুর রহমানের বই প্রকাশনা উপলক্ষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে অভিভাষণটি দেওয়া হয়েছিল। শাহাদৎ তৈয়ব ভাষণটির অনুলিখন করেছেন। মাহমুদুর রহমানের প্রকাশনার মধ্যে দুইটি তার নিজের লেখা এবং একটি তিনি সম্পাদনা করেছেন। বইয়ের দুইটির নাম হচ্ছে, 'জয় আসলে ভারতের' এবং 'গুমর
বাংলাদেশের সঙ্গে পদ্মাসেতু প্রকল্প চুক্তি বিশ্বব্যাংক বাতিল করায় বিশ্বব্যাংক নিয়ে তর্ক উঠেছে। বিতর্ক নানান দিক থেকে জমে উঠেছে। অন্যান্য তর্কের তুলনায় 'সুশাসনের' প্রবক্তা 'সুশীল সমাজ' কী অবস্থান নিল তার আলাদা গুরুত্ব আছে। মনে হচ্ছে তারা বড়ই অস্বস্তি আর বিপদে আছে। এই তর্ক তাদের তাদের ইজ্জত ও সম্মান একেবারে ছেড়াব্যাড়া করে ছেড়েছে। অবস্থা হয়েছে দশহাত শাড়ির মত, একদিক
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য প্রথম প্রকাশ। এছাড়াও আরো দুটি কবিতার বই নতুন করে সংস্করণ করা হয়েছে। (১) অসময়ের নোট বই। (২) কবিতার বোনের সঙ্গে আবার। সাহিত্য ও কবিতা পাঠক প্রেমিকদের ধন্যবাদ।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকাশক ফরহাদ মজহারের বই প্রকাশ করেছেন। আগ্রহী পাঠকদের সুবিধার জন্য এখানে কয়েকটি বইয়ের পরিচিতি দেওয়া হোল।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী গণমাধ্যম নিপাত যাক
সম্প্রতি ফরহাদ মজহারের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিকৃতি ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ক্যাডার একটি ক্ষুদ্র সাংবাদিক গোষ্ঠি মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে ও থানায় জিডি দায়ের করে। বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাসহ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ফরহাদ মজহারের নিরাপোষ লড়াই কারোরই অজানা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে ফরহাদ মজহারকে রাষ্ট্রীয় ভাবে দমন, পীড়ন ও নির্যাতনের জন্য এই গোষ্ঠি তাদের সকল শক্তি নির্লজ্জ ভাবে নিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এদের সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জিঘাংসার যে-চেহারা ফুটে উঠেছে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য চিরকাল কলংক হয়ে থাকবে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মীসহ সকল স্তরের পেশার মানুষ এক্ত্রিত হয়ে 'আক্রান্ত গণমাধ্যম ও সংকটের আবর্তে দেশ' শিরোনামে একটি গোলটেবিলে একত্রিত হয়। তাঁরা সাংবাদিকতার নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সহিংসতার নিন্দা জানান। এখানে সেই প্রতিবাদ সভার কিছু ছবি ও উপস্থিত নাগরিকদের বক্তব্য হাজির করা হচ্ছে। এ সভার মূল লক্ষ ছিল মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা এবং চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ-এলবামে প্রবেশের জন্য ওপরের ছবির ওপর ক্লিক করুন; বক্তব্যের জন্য খোলা-এলবামে প্রত্যেক বক্তার ছবির ওপর ক্লিক করুন। ট্রান্সক্রিপশান সময় সাপেক্ষ বলে ধীরে ধীরে তোলা হচ্ছে। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়তে হলে দয়া করে নীচের সংযোগচিহ্নে যান
আমার দেশ: গোলটেবিল বৈঠকে ফরহাদ মজহারের পাশে বিশিষ্টজনরা : প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই সঙ্কট মোকাবিলায় একমাত্র সমাধান : আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন
চিন্তার সাম্প্রতিক সংখ্যা
পুরানো 'সন্ত্রাস' সংখ্যা। বছর ১৪ সংখ্যা ১, নভেম্বর ২০০৫ / অগ্রহায়ন ১৪১২। সম্পাদকীয়। দেরিদা, হাবারমাস এবং সন্ত্রাসকালে দর্শন -- জিওভান্না বোরাদরির সঙ্গে আলাপ। সন্ত্রাস, আইন ও ইনসাফ। বলপ্রয়োগ বিচার। সন্ত্রাসবাদের হকিকত। আধুনিকতায় ক্ষমতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের পুনর্গঠন। বিশ্ববাণিজ্য চুক্তির সন্ত্রাসঃ হংকং সভা। বীজ ও নারী বিপন্ন যমজ। মান্দিদের জীবন। নাখোজাবাদ বুলেটিন। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ৪র্থ সার্ক পিপলস ফোরাম। স্পেকট্রাম গার্মেণ্ট ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ড।
চিন্তা পুরানা সংখ্যা
পাক্ষিক চিন্তার পুরানো কয়েকটি সংখ্যা। এর বেশ কয়েকটি এখনও পেতে পারেন। যোগাযোগ করুন, পাক্ষিক চিন্তা, ২২/১৩ খিলজি রোড, মহাম্মদপুর, ব্লক-২। শ্যামলী। ঢাকা-১২০৭।
ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
- ১. দর্শনের ভাষা বা বুদ্ধির ভাষায় কথা বলার গুরুত্ব
- ২. পর্যালোচনা মানে সমালোচন বা বিরোধিতা নয়
- ৩. ধর্মে কি কোন চিন্তা নাই
- ৪. উপলব্ধি, বুদ্ধি ও সংবেদনা
- ৫. নফি ও এজবাত
- ৬. ধর্মবিরোধীদের কবল থেকে মার্কসকে উদ্ধার একালে জরুরী
- ৭. হজরত সোলায়মান ও ফয়েরবাখ
- ৮. দ্বান্দ্বিক চিন্তার পর্যালোচনা
- ৯. মানুষের নিজের কাছ থেকে নিজের বিযুক্তি
- ১০. ধর্মের প্রতি তত্ত্বীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সীমাবদ্ধতা
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
দর্শনের দিক থেকে ধর্মভাবনা মানুষের চেতনা বা চিন্তারই বিশেষ রূপ। এই বিশেষ রূপের বিচার ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচার দিয়ে নিষ্পন্ন হয় না, তার বিষয় ও পদ্ধতি আলাদা। ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচারের গুরুত্ব আছে বটে, কিন্তু সেটা দার্শনিক বিচার নয়। সক্রিয় ও সজীব চিন্তা ধর্মভাবনায় নিজেকে যে রূপে হাজির দেখে দর্শনের স্তরে একই রূপে হাজির না দেখলেও এই দাবি জানাতে কুন্ঠিত হয় না যে “দর্শনের বিষয় সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে ধর্মেরই বিষয় – উভয় ক্ষেত্রে সেটা হোল, সত্য। কথাটা এই চূড়ান্ত অর্থে যে আল্লাহ এবং একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সত্য। তাই উভয়েই প্রকৃতি ও মানুষের এই সীমিত জগতকে পরস্পরের সম্পর্ক এবং তাদের সত্য আল্লার সত্যে বিচার করে”। কথাটি জর্মন দার্শনিক গেঅর্গ ভিলহেল্ম হেগেলের (১৭৭০-১৮৭১)। সত্য বলতে হেগেল কি বুঝতেন এই ঘোষণায় তা আমরা আন্দাজ করতে পারি। আল্লার সত্য নির্ণয়ের আকুতির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতি ও মানুষের সীমিত জগতের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষের সম্ভাবনা বিচার করে -- আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক, নীতি-নৈতিকতা ও রাষ্ট্র হেগেল কিভাবে বিচার করেছেন তার ইঙ্গিতও এই অল্প কথার মধ্যে আমরা টের পাই।
সত্য শুধু বিশুদ্ধ বুদ্ধির নির্ণয় নয়, বরং মানুষ তার ইন্দ্রিয়পরায়ণ তৎপরতার পরিমণ্ডলে যে সত্য 'উপলব্ধি' করে সেখানেও চিন্তা বা বুদ্ধির কারবার হাজির থাকে, তবে আত্মসচেতন চিন্তা হিসাবে নয়। সে কারণেই একে আমরা কাঁচা ইন্দ্রিয়োপলব্ধি বলি, বুদ্ধি যে কাঁচামাল থেকে জ্ঞান উৎপাদন করে। ইন্দ্রিয়োপ্লব্ধির সত্য বুদ্ধি তার নিজের স্বরূপে কিম্বা নিজের পরিমণ্ডলে কিভাবে প্রকাশ করবে হেগেলের দর্শনের সেটাই ছিল প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে সকল বৃত্তির সামষ্টিক উদ্যোগ বা প্রণোদনা থেকে মানুষ যে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, বুদ্ধি সেই সত্য নিজের স্বরূপে আদৌ ধারণ বা প্রকাশ করতে পারে কিনা সেটা দর্শনে এখনও বড়সড় তর্ক হয়ে রয়েছে। ধর্মের পর্যালোচনা সেই তর্ককে সক্রিয় ও সজীব চিন্তার নিজের সমস্যা হিসাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। যে কারণে 'ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম' নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রকট লড়াই জারি রয়েছে। বলাবাহুল্য, এই আলোচনা সেই বাস্তবতার বাইরে নয়। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠি, সম্প্রদায়, শ্রেণি এবং বিভিন্ন শারিরীক চিহ্নে ও শারিরীক বাসনায় বিভক্ত জগতে সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের লড়াইও নানা কারনে অনিবার্য বটে, কিন্তু ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার লড়াই আর বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় মানুষের চিন্তার সংকট মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলামের সম্ভাব্য অবদান বিচার সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্য নাজিল হয় নি, ফলে তা মানুষের চিন্তার ইতিহাস ও দর্শনেরও বিষয়। এই অনুমান থেকে লেখাগুলো পাঠ করলে পাঠক উপকৃত হবেন আশা করি।
- See more at: http://chintaa.com/index.php/network/index/bangla#sthash.OYNrOjTu.dpuf