- মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
- আমাদের এখনকার সংকট
- আওয়ামি লিগের ইতিহাসও পারিবারিক ইতিহাসে পর্যবসিত হয়েছে...
- বাংলাদেশে 'নিউকনি' সিপাই
- রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি
- রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র
- গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য
- মোদীর ভারত এবং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য বদল
- দেখলেই গুলি?
- আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
ভাসানী, রবুবিয়াত ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের উদয়, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং উপমহাদেশের জনগনের লড়াই সংগ্রাম থেকে যেভাবে মুছে ফেলা হয়েছে সে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বাংলাদেশে নতুন রাজনীতির পুনর্গঠনের প্রশ্ন মওলানা ভাসানীকে নতুন ভাবে জানা, পড়া ও চর্চায় নিয়ে যাবার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লেখাগুলোর পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গঠনের গলদ, গণতন্ত্র ও এখনকার কর্তব্য
বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, আইন ও বিচারব্যবস্থার গোড়ার গলদ হচ্ছে শুরু থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা ও গঠন করা যায় নি। মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু ও সংঘটিত হয়েছিল একাত্তরের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে -- যার ঘোষিত ও লিখিত মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফ কায়েম ও চর্চার উপযোগী গণমানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু ডান কি বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ধারা মুক্তিযুদ্ধ ও গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গণশক্তির বিকাশ ও বিজয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অসমাপ্ত যুদ্ধ সম্পন্ন করতে পারে, এটাই এখনকার রাজনৈতিক কাজ। এদেশের সকল মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, লোকায়ত জ্ঞান ও ভাবুকতা সবই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে গড়ে ওঠার আন্তরিক ও ঐতিহাসিক উপাদান। কিন্তু গণ ঐক্য ও গণশক্তি বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ধর্মের নামে, ধর্ম বিরোধিতার নামে কিম্বা বাস্তবতা বিবর্জিত নানান আসামানি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও আশু রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও কর্তব্য পূরণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে তারাই -- ডান কিম্বা বাম -- জনগণের শত্রু।
- চতুর্থ সংশোধনীতে হারানো ক্ষমতা সামরিক আইনে ফিরে পাওয়ার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছে আদালত
- আইনের শাসনের তামাশা ও বাকশাল ‘দর্শনের’ জের
- আদালত অবমাননার বিচার ও দণ্ড প্রসঙ্গ
- ‘কমিউনিস্ট’দের রিমান্ড সমস্যা
- হাসিনার কনস্টিটিউশন সংশোধন: আসলে কি হতে যাচ্ছে?
- সংজ্ঞাহীন অবারিত এখতিয়ার বন্ধ হবে কবে?
- ছয় বছরেও চূড়ান্ত হয় নাই আদালত অবমাননা আইন
বাংলার ভাবসম্পদ
লালন ও ভাবান্দোলন
চিনিয়ে দেওয়া, ধরিয়ে দেওয়া
এই পাতায় পড়ছেন ভূ-রাজনীতি, বিশ্বব্যবস্থা ও দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত লেখা
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ১৬ নভেম্বর তারিখের প্রতিবেদন অত্যন্ত সময়োচিত হয়েছে। (দেখুন, Bangladesh: UN Rights Review Amid Violent Crackdown) । তবে ‘মানবাধিকার’ কতোটা কাজের তা নিয়ে তর্ক আছে। থাকবে। বিশ্বের সামনে প্রকাশ্যে ইসরাইল প্যালেস্টাইনের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটাচ্ছে
From River to the Sea
Palestine WILL be FREE
সারা দুনিয়ায় ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলমান কিম্বা পরিচয় নির্বিশেষে সকলেই একদা মুক্ত হবে। জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তির বিরুদ্ধে সারা দুনিয়ার জনগণের এই রণধ্বণি নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত ঘোষণা করছে।
সমুদ্রের পরিবেশ ও বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ আন্দোলনের জন্য পরিবেশবাদীদের কাছে সম্ভবত প্রাক্তন মার্কিন স
পাশ্চাত্য মিডিয়াগুলিতে হরদম যখন দাবি করা হয় যে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, তখন অনেকের কাছে সেটা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইনে ‘এপারথেইড’ যদি অপরাধ হয়, তাহলে একটি এপারথেইড রাষ্ট্র সগর্বে টিকিয়ে রাখার যুক্তি কি? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোভূক্ত ইউরোপ কেন ইসইরাইল রাষ্ট্রের চরিত্র না বদলিয়ে সশস্ত্র, সহিংস ও ‘এপারথেইড’ রাষ্ট্র হিশাব
নিজ বাসভূমি থেকে বিতাড়িত প্যালেস্টাইনের জনগণের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করা, অসলো শান্তি চুক্তিসহ বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘের প্রস্তাব বাস্তবায়িত না করা, প্যালেস্টাইন জনগণের দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামকে চিরকালের জন্য যাদুঘরে পাঠিয়ে যাবার সকল প্রক্রিয়া জারি রাখা এবং সেটলার-কলোনিয়াল রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সোদি আরব সহ মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করবার যে নীতি মার্কন যুক্
ইউক্রেন যুদ্ধ বুঝতে হলে বিশ্ব ব্যবস্থার দ্বন্দ্ব বোঝার জন্য পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়ন এবং মরণাস্ত্র উৎপাদন ব্যবসার কালে ভূ-রাজনীতি কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সেটা সবার আগে বুঝতে হবে। বিশ্ব ব্যবস্থার গোড়াতে টান পড়ছে এবং পারমাণবিক যুদ্ধের কথাও শোনা যাচ্ছে। বর্তমান বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের চরিত্র সম্পর্কে ভালভাবে অবহিত থাকা খুবই জরুরি।
ইউক্রেন যুদ্ধকে মার্কিন
পশ্চিমা মিডিয়া সাড়ে পনেরো আনা মিথ্যুক। তাদের মিত্থ্যাচার সম্পর্কে আমাদের কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা আছে। ইউক্রেনের পরিস্থিতি যদি আমরা শুধু পশ্চিমা গণমাধ্যমের প্রপাগান্ডা দিয়ে বূঝতে চেষ্টা করি, তাহলে কিছুই আসলে বুঝব না। তারা যেটা হামেশা প্রচার করছে সেটা হোল রাশিয়া একটি সার্বভৌম দেশের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। সম্প্রসারণবাদী রুশদের খায়েশ মেটাতে রাশিয়া ইউক্রেন নিজের
ইউক্রেনের যুদ্ধ আরও তীব্র হচ্ছে। যুদ্ধ পূর্ব ইউক্রেনের দিকে জোরদার হবার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের চরিত্রেরও বদল ঘটতে থাকবে। পূর্ব ইউক্রেন বলতে বোঝায় পাঁচটি প্রদেশ: দনেস্ক (Donesk), খারখিভ (Kharkiv), লুহান্সক (Luhansk), জাপোরিঝঝিয়া (Zaporizhzhia) এবং নিপ্রোপেট্রোভস্ক(Donipropetrovsk)। ডনবাস অঞ্চল দখল নিয়ে ডনবাসের বিভিন্ন শহরে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার বাহিনীর মধ্যে এখন রাস্তায় রাস্তায় লড়াই চলছে। ডনবাসে ৩০০ মাইল দীর
যুদ্ধ মাত্রই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। কোন যুদ্ধই ব্যাতিক্রম নয়। যে কারণে রাশিয়ার যুদ্ধকে নৈতিক বা নীতিবাগীশ জায়গা থেকে অনেকেই 'আগ্রাসন বলে নিন্দা করছেন। আমরাও সরবে যুদ্ধ বন্ধ করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরুর ওপর জোর দিচ্ছি। কিন্তু নীতিবাগীশগিরি আর রাজনীতি দুটো ভিন্ন বিষয়। তাই ইউক্রেন কেন্দ্র করে একদিকে রাশিয়া আর অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্
১. আবার লেনিন!
ইউক্রেনের সংকট শেষাবধি যুদ্ধে গড়ালো। তথাকথিত স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর অনেকে এই আশা করেছিলেন যে অস্ত্রের প্রতিযোগিতা এবং যুদ্ধ বিগ্রহের দুর্দশায় বিশ্বকে পড়তে হবে না। মানুষের বৈষয়িক সমৃদ্ধি এবং নৈতিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া সহজ হবে। কিন্তু ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের 'সাম্রাজ্যবাদ' সংক্রান্ত তত্ত্ব সত্য বলে বারবারই প্রমাণিত হয়েছে। পুঁজিত
গত বছর, মানে ২০২১ সালের সামারে করোনাকালীন কঠিন নিয়ন্ত্রণ ট্যুরিজম-বাণিজ্যের কারণে শিথিল হওয়ায়, আমি এবং আমার শিক্ষক, পোস্টকলোনিয়াল স্টাডিজের এসোসিয়েট প্রফেসর একটা ঝুলে থাকা আড্ডা দিতে তালিনের কেজিবি মিউজিয়ামের ২৩ তলার টপফ্লোর রেস্টুরেন্টে বসি। কেজিবি, সোভিয়েত ইউনিয়নকালে যেটা দেশটির প্রধান সিকিউরিটি এজেন্সি ছিল, সেটা এখন জাদুঘর, ট্যুরিস্টদের প্রধান আকর্ষণও।
এক
এখানে আফগানিস্তান নিয়ে আমরা একটু ভিন্ন ভাবে আলোচনা করব, যেন বাঁধিগৎ তর্কাতর্কি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি।
বাঁধিগৎ তর্কাতর্কি নানান ধরনের হতে পারে। যেমন, তালেবানরা হানাদার ও দখলদার মার্কিন বাহিনীর চোখে সন্ত্রাসী বা ‘টেররিস্ট’। তাদের ইসলাম , বিশেষত ‘শরিয়া আইন’ পাশ্চাত্যের লিবারেল বা উদারবাদী চিন্তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ফলে আফগানিস্তা
আফগানদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ‘ক্রুসেড’ চলছে। সেকুলার ভাষায় এই ক্রুসেডের নাম ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’। আফগানদের লড়াই দখলদার মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই, দখলদারদের বিরুদ্ধে নিপীড়িত আফগানদের লড়াই। এই লড়াই ন্যায় সঙ্গত ও ন্যায্য। গণতান্ত্রিক ধ্যানধারনার দিক থেকে আফগানদের লড়াই জাতীয় মুক্তি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের লড়
আমরা চিন নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু যেভাবে চিন নিয়ে কথা হয় তাতে আমাদের বিশেষ আগ্রহ নাই। যেমন, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনরা কি ভারত ছেড়ে পিকিং-এর দিকে ঝুঁকছে? ভারতকে শায়েস্তা করতে হলে আমাদের কি চিনের পক্ষে থাকা উচিত? ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থাকে কি চিন সমর্থন দিচ্ছে? এইসব নিরর্থক কৌতুহল ও গালগল্পের আবর্জনার বাইরে ভাবতে পারার সামর্থ্য আমাদের এতদিনে হওয়া উচিত ছিলো।
নিজের ঠিক নাই কিন্তু চিন ও ভারত নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার অবধি নাই। সম্প্রতি ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিবাদ বাংলাদেশে খুবই হাস্যকর কিছু তর্ক তৈরি করেছে। যেমন, আমরা কার পক্ষে থাকব? বালখিল্য জোকারে দেশ ভর্তি বলেই এই ধরণের প্রশ্ন তোলা হয়। কেন বললাম? কারন আপনি কার পক্ষে থাকবেন কি থাকবেন না সেটা কেউই বাংলাদেশকে জিজ্ঞাসা করে নি, করবেও না। ঘুড়ির সুতা অনেক আগেই ছিঁড়ে গিয়েছে। ভূ-র
কাশ্মির পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন। এমন নয় যে কাশ্মিরে এখন যা ঘটছে তা হঠাৎ করে হয়েছে বলেই এই উদ্বিগ্নতা। বিগত ৭০ বছর ধরে, ১৯৪৭ সালের পর থেকেই কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে বিরোধ ও কাড়াকাড়ি তার বিরুদ্ধে কাশ্মিরের মানুষ সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে ভারত অধ্যুষিত জম্মু ও কাশ্মিরে ভারতীয় সৈন্যদের দমন-পীড়ন আমাদের সকলের জানা। এরই মধ্যে কাশ্মীরের জনগ
শুধু সাম্রাজ্যবাদীর মুখোশ উন্মোচন নয়, নয়া-উপনিবেশ অধিকৃত দেশগুলোর স্বৈরশাসকদের মুখোশও উন্মোচিত হয় নগুগি ওয়া থিয়াঙ্গোর উপন্যাসে। ২০০৬ সালে প্রকাশিত ‘উইজার্ড অফ দ্যা ক্রো’-কে সমালোচকরা চিহ্নিত করেছেন ‘অ্যান এপিক স্যাটায়ার অফ নিও কলোনিয়ালিজাম’ নামে; উপন্যাসটা ঠিক তেমন ধাঁচেরই একটা কালজয়ী উপন্যাস। ৭৬৬ পৃষ্ঠার বিশাল কাহিনীটি যাদু বাস্তবতার আদলে অত্যন্ত রসালোভাবে এক
১৯৯৬ সালে ভারতের হায়দ্রাবাদের নিজাম মহাবিদ্যলয়ে কেনিয়ার নাট্যকার,ঔপন্যাসিক এবং প্রাবন্ধিক গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো ( Ngũg wa Thiong'o) যখন নয়া ঔপনিবেশবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আফ্রিকার জাতীয় আন্দোলনগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তখন ইদি আমিন, গাদ্দাফি এবং সাদ্দাম হোসেন সম্পর্কে তার অভিমত জানাতে চাওয়া হয়। উত্তরে বলেন “ আমার কাছে কি ধরণের উত্তর আশা করছেন তা আমি জানি। দুচার কথায় এর জবাব
সাংবাদিক জামাল খশগগীর হত্যার ঘটনা ৩৩ বছর বয়সী সউদী শাহজাদা মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) ক্যারিয়ারে কি ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ এবং পর্যবেক্ষকরা নানা আন্দাজ পেশ করছেন। ঠিক সেই সময় তার চেয়ে ২৫ বছরের বড় আরেক শাহজাদা একটু দূরে থেকে সব দেখছেন এবং নিশ্চয়ই একটু অস্বস্তি বোধ করছেন।
এমবিএসের সঙ্গে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ইস্যুতে জড়িয়েছেন সংযুক্ত আ
“হয় জিতবো নয় মরবো” -ওমর মুখতার
“অবিচার নিপীড়িত মানুষকে নায়ক করে তোলে। প্রতিরোধের একজন আইকনিক নেতা হিসেবে লিবিয়ার জনগণ আজও স্মরণ রেখেছে ওমর-আল-মুখতারকে ( ১৮৬২-১৯৩১ ), যিনি তার জীবনের শেষ বিশ বছর নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন ইতালির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। লিবিয়াবাসীদের কাছে আল-মুখতার মৃত্যুর ছিয়াশি বছর পরেও, সমষ্টিগত চেতনায় জীবিত
প্রাক কথা
৯/১১ পরবর্তী দুনিয়ায় সাধারণ ভাবে ধর্ম এবং বিশেষ ভাবে ইসলাম প্রশ্ন সামনে চলে আসার কারনে একাডেমিক জগতে ধর্ম, দর্শন, রাষ্ট্র ইত্যাদি নতুন করে পর্যালোচনার অধীন হচ্ছে আবার, বিশেষত এদের পারস্পরিক সম্পর্ক বিচার জরুরী হয়ে উঠেছে। এই তাগিদে নতুন উৎসাহে ইসলাম নিয়ে নতুন পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। ‘আধুনিকতা’, ‘প্রগতি’, ‘স্বাধীনতা’, ‘অধিকার’ ইত্যাদ
কিশোর হাফেজ হত্যার ক্ষরণ
আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশে মাদ্রাসার শহিদ কিশোর ছাত্রদের ছবি মন ভয়ংকর ভাবে বিষন্ন ও শোকার্ত করে। এই কিশোরদের অনেকে সবে মাত্র মাদ্রাসায় তিরিশ পারা কোরান হেফজ ব মুখস্থ করেছে। হাফেজ হবার স্বীকৃতি ও সনদ পত্র পাবার জন্য মাদ্রাসার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় তারা জড়ো হয়েছিল। এই বাচ্চাদের মিলিটারি হেলিকপ্টার থেকে বোমা মেরে হত্যা কর
মার্কিন নির্বাচনী ব্যবস্থার নিয়মেই ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে বিজয় লাভ করেছেন। তিনি কোন কারচুপি করেন নি। গণতান্ত্রিক ভাবেই, এমনকি বিরূপ গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছেন। বলা হচ্ছে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে যোগ্য ব্যক্তি নন। এমনকি তাকে পাগল প্রমাণ করবারও চেষ্টা চলছে। কয়েকজন সাইকোলজিস্টের বরাতে বলা হয়েছে তাঁর আচরণের মধ্য দিয়ে নাকি প্রমাণিত
জিহ্বা কাটা পড়বেই...
ফেইসবুকে মাঝে মধ্যে চলমান বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করবার সুযোগ নিতাম। কিন্তু ফেইসবুক গণতন্ত্রের মানসকন্যা বন্ধ করে দিয়েছেন। ইন্টারনেটে যেতে পারি, কিন্তু ফেইসবুক খুলতে পারি না। এতে আমার বিশেষ ক্ষোভ আছে বলব না। তথাকথিত ‘গণতন্ত্র’ নামক ব্যবস্থায় চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া, কিম্বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গীত গাওয়া
আজকের দুনিয়ার আইএস বা ইসলামী স্টেট ইস্যুটি দিনকে দিন বিশ্বরাজনীতিকে জটিল থেকে জটিলতর করে তুলছে। ব্যাপারটি অনেকটা ‘কুইনাইন সারাবে কে’ অবস্থার মতো। ম্যালেরিয়া তাড়ানোর জন্য রোগীকে কুইনাইন খাওয়ানো হয়েছিল। এতে কুইনাইন ম্যালেরিয়া তাড়ানো গিয়েছিল কিনা, সেকথা চাপা পড়ে গিয়ে এর চেয়েও বড় ঘটনা হয়ে গিয়েছিল নতুন রোগ সৃষ্টি। কুইনাইন এ নতুন রোগ ডেকে এনেছে। তা থেকে আবার আরও অনেক নতুন ন
তুর্কিরা মার্কিনীদের দেয়া এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান দিয়ে সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে তুরস্কের আকাশ সীমায় মাত্র সতেরো সেকেন্ডের জন্য ঢুকে পড়া একটি ‘সুখয় এস ইউ ২৪’ রুশ যুদ্ধ বিমান ২৪ নভেম্বর গুলি করে ফেলে দিয়েছে। পাইলটরা যখন প্যারাসুট দিয়ে আকাশ থেকে নামছিলেন তখন সিরিয়া সীমান্তের ওপারে তুরস্ক সমর্থিত তুর্কমেন যোদ্ধারা তাদের গুলি করে। আকাশে গুলি করেই একজনকে হত্যা করা হয়, অন্য জন রাশিয়া
‘We don’t do body counting’ - Gen. Tommy R. Franks, US Army
চিন্তার আলস্য এমন এক স্বোপার্জিত অসুখ যা সারিয়ে তোলা মুশকিল। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে তেমনি স্বেচ্ছায় চিন্তা করতে অক্ষম হবার সাধনা: যখন কোন ঘটনা বা বিষয় নিয়ে আমরা আর চিন্তা করতে চাই না। অলস হয়ে যাই। তখন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে আমরা আমাদের চিন্তার অক্ষমতা ঢাকতে চেষ্টা করি।
যেমন, আইসিস। আইসিস নিয়ে বাংলাদেশে যা কিছু পড়েছি তার সা
মনে হচ্ছে পাশ্চাত্য দেশগুলো ইতালির নাগরিক সিজার তাভেল্লার হত্যাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসাবে মানতে নারাজ। ঘটনা হোল, সিজার গত সোমবার ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের গভর্নর হাউসের দক্ষিণ পাশের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষা ফুটপাতে খুন হন। দুই অস্ত্রধারি রিভলবার দিয়ে পর পর তিনটি গুলি করে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা একজনের মোটরসাইকেলে চড়ে ৮৩ নম্বর সড়ক ধরে দ্রুত পাল
ইন্টারনেশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট ( বা আই আর আই) বাংলাদেশে অফিস খুলেছে ২০০৩ সালে। কী চায় তারা বাংলাদেশে? তাদেরই দাবি, তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে চায়। কিভাবে তারা সেটা করবে? আমরা অসভ্য, গণতন্ত্র বুঝি না, গণতান্ত্রিক আচার আচরণ করি না, অতএব তারা আমাদের গণতন্ত্রের ট্রেনিং দেবে। তার জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে তারা।
সকলকে দেবে কি? যেমন ধরুন আওয়ামি লীগ, বিএনপি কিম্বা
এক
মার্কিন কংগ্রেসে গত বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময় ২১ নভেম্বর ২০১৩)বাংলাদেশের ওপর একটি শুনানি হয়েছে। এর প্রতি বাংলাদেশে আগ্রহ রয়েছে প্রচুর। বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা ছাড়াই একপক্ষীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি নির্বাচনের পথে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জনগণ উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠিত। বাংলাদেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিক ভাবে এই নির্বাচন অগ্রহণযো
তালেবান হামলায় স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু। প্রশ্ন হচ্ছে, যুদ্ধের গোয়েন্দা এজেন্ট হয়েই কি জাতিসংঘ নিজেকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে?
গত ১৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচী ও পেশোয়ারে ছয় জন স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে পাকিস্তানে এধরণের গুলিতে নিহত বা বোমা বিস্ফোরণ কিম্বা আত্মঘাতি বোমার আঘাতে হতাহত হওয়া প্রায় রুটিন ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সেই বিচারে ১৮ ডিসেম্
১
যতোদূর জানা যায়, হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আসেন নি, অর্থাৎ যে সময় শেখ হাসিনা তাকে চেয়েছেন সেই সময় নয়, ডক্টর ইউনুস নিয়ে টানাপড়েন একটা কারন ছিল। এমন কি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরপরই তাঁকে বাংলাদেশে আনবার চেষ্টা চলছিল। এই বছর মে মাসে চিন থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লী যাবার পথে মাঝখানে ছুটির দিনে বাংলাদেশ সফরে আসার দিনক্ষণ হিলারি নিজেই নির্
১
হিলারি ক্লিনটন শুধু বাংলাদেশে আসছেন না। প্রথমত তিনি আসছেন চিন থেকে। তারপর তিনি আসবেন বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে যাবেন ভারতে। কলকাতায় মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও দেখা করবেন। তাঁর বাংলাদেশ সফরকে দিল্লী-ঢাকা-ওয়াশিংটন মিলে চিনের বিরুদ্ধে একটা প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তোলার সফর হিশাবে দেখতে চাইছেন অনেকে। এটা খুবই সরল ভাবে দেখা। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা এবং ভাঙন বেসামা
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য প্রথম প্রকাশ। এছাড়াও আরো দুটি কবিতার বই নতুন করে সংস্করণ করা হয়েছে। (১) অসময়ের নোট বই। (২) কবিতার বোনের সঙ্গে আবার। সাহিত্য ও কবিতা পাঠক প্রেমিকদের ধন্যবাদ।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকাশক ফরহাদ মজহারের বই প্রকাশ করেছেন। আগ্রহী পাঠকদের সুবিধার জন্য এখানে কয়েকটি বইয়ের পরিচিতি দেওয়া হোল।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী গণমাধ্যম নিপাত যাক
সম্প্রতি ফরহাদ মজহারের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিকৃতি ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ক্যাডার একটি ক্ষুদ্র সাংবাদিক গোষ্ঠি মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে ও থানায় জিডি দায়ের করে। বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাসহ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ফরহাদ মজহারের নিরাপোষ লড়াই কারোরই অজানা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে ফরহাদ মজহারকে রাষ্ট্রীয় ভাবে দমন, পীড়ন ও নির্যাতনের জন্য এই গোষ্ঠি তাদের সকল শক্তি নির্লজ্জ ভাবে নিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এদের সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জিঘাংসার যে-চেহারা ফুটে উঠেছে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য চিরকাল কলংক হয়ে থাকবে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মীসহ সকল স্তরের পেশার মানুষ এক্ত্রিত হয়ে 'আক্রান্ত গণমাধ্যম ও সংকটের আবর্তে দেশ' শিরোনামে একটি গোলটেবিলে একত্রিত হয়। তাঁরা সাংবাদিকতার নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সহিংসতার নিন্দা জানান। এখানে সেই প্রতিবাদ সভার কিছু ছবি ও উপস্থিত নাগরিকদের বক্তব্য হাজির করা হচ্ছে। এ সভার মূল লক্ষ ছিল মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা এবং চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ-এলবামে প্রবেশের জন্য ওপরের ছবির ওপর ক্লিক করুন; বক্তব্যের জন্য খোলা-এলবামে প্রত্যেক বক্তার ছবির ওপর ক্লিক করুন। ট্রান্সক্রিপশান সময় সাপেক্ষ বলে ধীরে ধীরে তোলা হচ্ছে। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়তে হলে দয়া করে নীচের সংযোগচিহ্নে যান
আমার দেশ: গোলটেবিল বৈঠকে ফরহাদ মজহারের পাশে বিশিষ্টজনরা : প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই সঙ্কট মোকাবিলায় একমাত্র সমাধান : আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন
চিন্তার সাম্প্রতিক সংখ্যা
পুরানো 'সন্ত্রাস' সংখ্যা। বছর ১৪ সংখ্যা ১, নভেম্বর ২০০৫ / অগ্রহায়ন ১৪১২। সম্পাদকীয়। দেরিদা, হাবারমাস এবং সন্ত্রাসকালে দর্শন -- জিওভান্না বোরাদরির সঙ্গে আলাপ। সন্ত্রাস, আইন ও ইনসাফ। বলপ্রয়োগ বিচার। সন্ত্রাসবাদের হকিকত। আধুনিকতায় ক্ষমতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের পুনর্গঠন। বিশ্ববাণিজ্য চুক্তির সন্ত্রাসঃ হংকং সভা। বীজ ও নারী বিপন্ন যমজ। মান্দিদের জীবন। নাখোজাবাদ বুলেটিন। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ৪র্থ সার্ক পিপলস ফোরাম। স্পেকট্রাম গার্মেণ্ট ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ড।
চিন্তা পুরানা সংখ্যা
পাক্ষিক চিন্তার পুরানো কয়েকটি সংখ্যা। এর বেশ কয়েকটি এখনও পেতে পারেন। যোগাযোগ করুন, পাক্ষিক চিন্তা, ২২/১৩ খিলজি রোড, মহাম্মদপুর, ব্লক-২। শ্যামলী। ঢাকা-১২০৭।
ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
- ১. দর্শনের ভাষা বা বুদ্ধির ভাষায় কথা বলার গুরুত্ব
- ২. পর্যালোচনা মানে সমালোচন বা বিরোধিতা নয়
- ৩. ধর্মে কি কোন চিন্তা নাই
- ৪. উপলব্ধি, বুদ্ধি ও সংবেদনা
- ৫. নফি ও এজবাত
- ৬. ধর্মবিরোধীদের কবল থেকে মার্কসকে উদ্ধার একালে জরুরী
- ৭. হজরত সোলায়মান ও ফয়েরবাখ
- ৮. দ্বান্দ্বিক চিন্তার পর্যালোচনা
- ৯. মানুষের নিজের কাছ থেকে নিজের বিযুক্তি
- ১০. ধর্মের প্রতি তত্ত্বীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সীমাবদ্ধতা
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
দর্শনের দিক থেকে ধর্মভাবনা মানুষের চেতনা বা চিন্তারই বিশেষ রূপ। এই বিশেষ রূপের বিচার ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচার দিয়ে নিষ্পন্ন হয় না, তার বিষয় ও পদ্ধতি আলাদা। ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচারের গুরুত্ব আছে বটে, কিন্তু সেটা দার্শনিক বিচার নয়। সক্রিয় ও সজীব চিন্তা ধর্মভাবনায় নিজেকে যে রূপে হাজির দেখে দর্শনের স্তরে একই রূপে হাজির না দেখলেও এই দাবি জানাতে কুন্ঠিত হয় না যে “দর্শনের বিষয় সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে ধর্মেরই বিষয় – উভয় ক্ষেত্রে সেটা হোল, সত্য। কথাটা এই চূড়ান্ত অর্থে যে আল্লাহ এবং একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সত্য। তাই উভয়েই প্রকৃতি ও মানুষের এই সীমিত জগতকে পরস্পরের সম্পর্ক এবং তাদের সত্য আল্লার সত্যে বিচার করে”। কথাটি জর্মন দার্শনিক গেঅর্গ ভিলহেল্ম হেগেলের (১৭৭০-১৮৭১)। সত্য বলতে হেগেল কি বুঝতেন এই ঘোষণায় তা আমরা আন্দাজ করতে পারি। আল্লার সত্য নির্ণয়ের আকুতির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতি ও মানুষের সীমিত জগতের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষের সম্ভাবনা বিচার করে -- আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক, নীতি-নৈতিকতা ও রাষ্ট্র হেগেল কিভাবে বিচার করেছেন তার ইঙ্গিতও এই অল্প কথার মধ্যে আমরা টের পাই।
সত্য শুধু বিশুদ্ধ বুদ্ধির নির্ণয় নয়, বরং মানুষ তার ইন্দ্রিয়পরায়ণ তৎপরতার পরিমণ্ডলে যে সত্য 'উপলব্ধি' করে সেখানেও চিন্তা বা বুদ্ধির কারবার হাজির থাকে, তবে আত্মসচেতন চিন্তা হিসাবে নয়। সে কারণেই একে আমরা কাঁচা ইন্দ্রিয়োপলব্ধি বলি, বুদ্ধি যে কাঁচামাল থেকে জ্ঞান উৎপাদন করে। ইন্দ্রিয়োপ্লব্ধির সত্য বুদ্ধি তার নিজের স্বরূপে কিম্বা নিজের পরিমণ্ডলে কিভাবে প্রকাশ করবে হেগেলের দর্শনের সেটাই ছিল প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে সকল বৃত্তির সামষ্টিক উদ্যোগ বা প্রণোদনা থেকে মানুষ যে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, বুদ্ধি সেই সত্য নিজের স্বরূপে আদৌ ধারণ বা প্রকাশ করতে পারে কিনা সেটা দর্শনে এখনও বড়সড় তর্ক হয়ে রয়েছে। ধর্মের পর্যালোচনা সেই তর্ককে সক্রিয় ও সজীব চিন্তার নিজের সমস্যা হিসাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। যে কারণে 'ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম' নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রকট লড়াই জারি রয়েছে। বলাবাহুল্য, এই আলোচনা সেই বাস্তবতার বাইরে নয়। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠি, সম্প্রদায়, শ্রেণি এবং বিভিন্ন শারিরীক চিহ্নে ও শারিরীক বাসনায় বিভক্ত জগতে সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের লড়াইও নানা কারনে অনিবার্য বটে, কিন্তু ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার লড়াই আর বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় মানুষের চিন্তার সংকট মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলামের সম্ভাব্য অবদান বিচার সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্য নাজিল হয় নি, ফলে তা মানুষের চিন্তার ইতিহাস ও দর্শনেরও বিষয়। এই অনুমান থেকে লেখাগুলো পাঠ করলে পাঠক উপকৃত হবেন আশা করি।
- See more at: http://chintaa.com/index.php/network/index/bangla#sthash.OYNrOjTu.dpuf