- মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
- আমাদের এখনকার সংকট
- আওয়ামি লিগের ইতিহাসও পারিবারিক ইতিহাসে পর্যবসিত হয়েছে...
- বাংলাদেশে 'নিউকনি' সিপাই
- রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি
- রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র
- গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য
- মোদীর ভারত এবং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য বদল
- দেখলেই গুলি?
- আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
ভাসানী, রবুবিয়াত ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের উদয়, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং উপমহাদেশের জনগনের লড়াই সংগ্রাম থেকে যেভাবে মুছে ফেলা হয়েছে সে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বাংলাদেশে নতুন রাজনীতির পুনর্গঠনের প্রশ্ন মওলানা ভাসানীকে নতুন ভাবে জানা, পড়া ও চর্চায় নিয়ে যাবার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লেখাগুলোর পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গঠনের গলদ, গণতন্ত্র ও এখনকার কর্তব্য
বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, আইন ও বিচারব্যবস্থার গোড়ার গলদ হচ্ছে শুরু থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা ও গঠন করা যায় নি। মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু ও সংঘটিত হয়েছিল একাত্তরের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে -- যার ঘোষিত ও লিখিত মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফ কায়েম ও চর্চার উপযোগী গণমানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু ডান কি বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ধারা মুক্তিযুদ্ধ ও গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গণশক্তির বিকাশ ও বিজয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অসমাপ্ত যুদ্ধ সম্পন্ন করতে পারে, এটাই এখনকার রাজনৈতিক কাজ। এদেশের সকল মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, লোকায়ত জ্ঞান ও ভাবুকতা সবই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে গড়ে ওঠার আন্তরিক ও ঐতিহাসিক উপাদান। কিন্তু গণ ঐক্য ও গণশক্তি বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ধর্মের নামে, ধর্ম বিরোধিতার নামে কিম্বা বাস্তবতা বিবর্জিত নানান আসামানি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও আশু রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও কর্তব্য পূরণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে তারাই -- ডান কিম্বা বাম -- জনগণের শত্রু।
- চতুর্থ সংশোধনীতে হারানো ক্ষমতা সামরিক আইনে ফিরে পাওয়ার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছে আদালত
- আইনের শাসনের তামাশা ও বাকশাল ‘দর্শনের’ জের
- আদালত অবমাননার বিচার ও দণ্ড প্রসঙ্গ
- ‘কমিউনিস্ট’দের রিমান্ড সমস্যা
- হাসিনার কনস্টিটিউশন সংশোধন: আসলে কি হতে যাচ্ছে?
- সংজ্ঞাহীন অবারিত এখতিয়ার বন্ধ হবে কবে?
- ছয় বছরেও চূড়ান্ত হয় নাই আদালত অবমাননা আইন
বাংলার ভাবসম্পদ
লালন ও ভাবান্দোলন
চিনিয়ে দেওয়া, ধরিয়ে দেওয়া
এই পাতায় পড়ছেন মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সংক্রান্ত লেখা
আমার একটি পোস্টে আমি নেলসন মানডেলাকে ‘কমরেড’ সম্বোধন করায় আমার একজন ফেইসবুক বন্ধু জিজ্ঞাসা করেছেন তাঁকে কেন আমি ‘কমরেড’ সম্বোধন করলাম? ভাল প্রশ্ন।
যারা জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের জন্য লড়েন তাদের যথাযথ সম্মান জানাবার জন্য ‘কমরেড’ ঐতিহাসিক কারণেই খুবই সম্মানসুচক সম্বোধন। দক্ষিণ আফ্রিকার ‘এপারথেইড’ বা জাতিবৈষম্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নেলসন মান্ডেলার লড়াই
জেসমিনের কি অপরাধ ছিল তা তদন্তের বিষয়। কিন্তু, তাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দেয়া এই আইনের ‘অপব্যবহার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ২৯ মার্চ আইনমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা অনেকটা ‘এপোলজেটিক’।
জেসমিন সুলতানা র্যাবের হাতে আটক অবস্থায় মারা গেছেন। তাঁকে রাজশাহী র্যাব-৫ এর একটি দল রাজশাহী বিভাগীয় কমিশন
সাজানো বা বিন্যাসের প্রশ্ন
আমরা ‘আইন, সংবিধান ও গণতন্ত্র’ নিয়ে কথা বলব। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা নতুন নয়, কিন্তু সম্প্রতি গণতন্ত্র কাজ করছে না, এই অভিযোগ খোদ পাশ্চাত্যে প্রবল ভাবে উঠেছে। লিবারেলিজম সম্পর্কে পুরানা অভিযোগ যে উদারবাদী রাজনৈতিক আদর্শের কেচ্ছা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা কায়েমের আদর্শ। মার্কিনিরা তাদের
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী নানা কিসিমের হয়, কিন্তু সবাই অরুন্ধতী রায় নয়। অরুন্ধতীই বলতে পারেন, ‘কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়, কখনোই ছিল না, ভারত সরকারও তো তা মানে।’ এই সত্য কথা বলার তৌফিক ভারতের কংগ্রেসি কিংবা সিপিআই/সিপিএম মার্কা প্রগতিবাদীদের মধ্যে দেখি না। কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ কখনও ছিল না, এই ঐতিহাসিক সত্য অস্বীকার করার মুরোদ ভারতের সরকার বিশেষত বাম ও বামসমর্থি
[এক]
আজ মে মাসের ৩ তারিখ। ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ বা বিশ্বব্যাপী স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চা দিবস। সংবাদপত্র যেন রাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে ভয় না পায় কিম্বা মাফিয়ায়দের গোলাম না হয় সেটা মনে করিয়ে দেবার দিবস।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২১ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম সূচকে বাংলাদেশ খালি পেছাচ্ছে তো পেছাতেই আছে। বাংলাদেশ ২০১৯ সাল থেকে এক ধ
দুর্ঘটনা এখন ‘নিয়মিত’ ঘটনা
পাহাড় ধসের কারনে মানুষ মরছে। এটা এখন আর দুর্ঘটনা নয়, নিয়মিত ঘটনা। বর্ষা এলেই কোন কোন উপজেলায় পাহাড় ধসে মানুষ জ্যান্ত কবর হয়ে যাচ্ছে। এবার একটু আগাম ও টানা বর্ষণ নামতে না নামতেই চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ১৫০ জনের বেশী মানুষ মরেছে বলে কিছু পত্রিকা দাবি করেছে। দৈনিক যুগান্তরের ১৪ জুনের সংবাদ বলছে, ‘পাহাড়
তর্কটা ফেইসবুকের, কিন্তু তর্কটা গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে ফেইসবুকে তর্কটা চলছে সেখান থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি না। তবে তর্কের মর্মটা পেশ করছি।
ধরুন আপনি দাবি করছেন আপনি মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। ফাইন। তার মানে সেটা শুধু আপনার মতের স্বাধীনতা না, সকলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আপনি যে মতের সমর্থক শুধু সেই মতের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করলে তো হবে না, আপনাকে ভিন্ন বা বিরোধী মতের
আধুনিক জমানায় বাণিজ্য চুক্তি করার রেওয়াজ উঠেছিল আশির দশকের শুরু থেকে। অর্থাৎ যাদের গরিব দেশ কিম্বা ছোট অর্থনীতির রাষ্ট্র বলা হয়, তাদের সাথেও বাণিজ্য চুক্তি করার দরকার বোধ করবার শুরু এখান থেকে। বাণিজ্য চুক্তি বলে এটিকে বাড়িয়ে বলার অর্থ হয় না। সার কথা বললে আমেরিকা তার নিজের বাজারে তার নিজের নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার অধীনে গরিব দেশগুলোকে পণ্য রফতানি করতে দেয়া শুরু করেছিল। দ্বিতী
বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার দুর্দশা নতুন কোন খবর নয়, তবে সম্প্রতি বিচারকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব যেভাবে প্রকাশ হয়েছে তাতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট আরও তীব্র হতে পারে। কিছুদিন আগে অবসর নেওয়া সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী যেভাবে প্রধান বিচারপতিকে ঘায়েল করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন পৃথিবীর আর কোথাও এই প্রকার আচরণের কোন নজির আছে কিনা আমার জানা নাই।
'র্যাব' বা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে আমাদের সমাজে। নাগরিকদের মধ্যে সম্মানিত অনেকে আছেন যারা বলছেন- ‘র্যাব’ এর ভূমিকা আমাদের প্রশংসা কারা উচিত, সন্ত্রাস দমনে র্যাব ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে ‘মানবাধিকার’- এর কথা তুলে তীব্র সমালোচনা চলছে যে, ‘ক্রসফায়ারে’ র্যাবেরই হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত অপরাধী মারা যাওয়া গ্রহণযোগ্য হ
‘র্যাব’ হচ্ছে ইংরেজি 'র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন' কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ। এর বাংলা করলে দাঁড়ায় জলদি কাম খতম করার সংঘ। ব্যাটালিয়ন কথাটা সামরিক। ‘সামরিক’ কথাটি বাংলা ‘সমর’ বা যুদ্ধ থেকে তৈরি। অর্থাৎ যা যুদ্ধ সম্পকির্ত। র্যাব সেই দিক থেকে যুদ্ধ সম্পর্কিত ধারণা বলা যায়। রাষ্ট্রের এই ধরণের সশস্ত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে অনুমান হচ্ছে সমাজে এমন এক পরিস্থিতির
বাংলাদেশে আমরা খালি খারাপ রাজনৈতিক দশার ফেরে পড়ি নি, মন্দ শিল্প ভাবনার রাহু গ্রাসেও পড়েছি, ফলে শিল্পকলা কিভাবে ক্ষমতা ও রাজনীতির কেন্দ্রীয় প্রশ্নকে নিজের বিষয়ে পরিণত করে সে সম্পর্কে এখন আর খোঁজ খবরও বিশেষ রাখি না। এমন কিছু ঘটলে তার অর্থ বুঝে ওঠাও কঠিন হয়।
সম্পতি বার্লিনে ইতালীয় ভাস্কর ডেভিড ডরমিনোর একটি ব্রো
এই লেখাটি যেদিন ছাপা হবে সেইদিন ২৬ তারিখ। আমার মনে হয় না এই দিনটির কোন গুরুত্ব আমাদের কাছে আছে। মনে হয় কবরস্থানে আছি। নিজের নিঃশ্বাসকেও নিঃসাড় মনে হয়। অথচ বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই দিনটির গুরুত্ব অসামান্য। ব্যবহারিক রাজনীতি ও নৈতিক অবস্থান দুই দিক থেকেই।
২৬ জুন নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস। বিভিন্ন দেশে যাঁরা নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাঁ
গত পাঁচদিন ধরে বিএনপির মুখপাত্র সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন্দ্র করে তিনটা শব্দ মিডিয়া ছেয়ে রেখেছে – মেঘালয়, সালাহউদ্দিন আর খোঁজ। যারা সালাহ উদ্দিনকে গুম বা ‘নিখোঁজ’ করে রেখেছিলেন বলা বাহুল্য তারাই এ’বিষয়টায় সবচেয়ে ভাল জানেন ও বলতে পারবেন। ফলে তারাই তো সবার উপরে সালাহ উদ্দিনের খোঁজ প্রসঙ্গে নির্ভরযোগ্য সোর্স। কিন্তু বুঝা যাচ্ছে তাঁরা সেটা চাচ্ছেন না। বলাই বাহুল্য তা
এক
প্রথম আলো বলছে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে সাংবাদিকরা ‘অব্যাহতি’ পেয়েছেন (১৩ মার্চ ২০১৪)। অব্যাহতি পেয়েছেন সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার ও প্রকাশক এ কে আজাদ, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন ও প্রকাশক শামসুল হুদা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বরিশাল বিভাগীয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান, ঢাকা বি
এক
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনারের অফিসের (Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights) কার্যক্রম, এখতিয়ার ও ভূমিকা সম্পর্কে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা কতোটা জানেন বলা মুশকিল। রাজনীতিবিদরা তাদের কর্মকাণ্ডের দায় বহন করতে না চাইলেও নিজের দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার লংঘন করলে তার দায় আন্তর্জাতিক ভাবে এড়িয়ে যাবার সুযোগ নাই বললেই চলে। পার পেয়ে যাবার সম্ভাবনা কম
এক
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে।এতে আমি দুঃখিত ও মর্মাহতই শুধু নই,একই ভাবে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। গণমাধ্যম আইনশৃংখলা বাহিনী নয়, তবুও কারা এই ধরণের বোমাবাজি করছে সেটা গণমাধ্যম কর্মীদের নিজ নিজ পেশাদারি দক্ষতা ও অনুসন্ধানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। শুধু তাই নয়, চাইলে কেন এধরণের বোমাবাজি ঘটছে
রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে যে কোন নাগরিকই দুঃখিত ও মর্মাহতই হবেন। আমি ব্যতিক্রম নই। শুধু তা নয়,একই ভাবে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত।
এই পরিস্থিতিতে গত ২৮ অক্টোবর রাতে ইটিভির ‘একুশের রাত’ অনুষ্ঠানে আমি গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে নিজ দায়িত্বে কিছু কথা বলেছি। আর,আমি দায়িত্ব নিয়েই কথা বলি। সাং
মাহমুদুর রহমান একবার আদালত অবমাননার দায়ে জেল খেটেছেন, নির্যাতীত হয়েছেন। দ্বিতীয়বারও তিনি গ্রেফতার হয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন হয়েছে। তার মতাদর্শ ও রাজনীতির বিরোধীরা এতে পুলকিত হয়েছে, তাঁর সমর্থকরা তাঁর পক্ষে লড়ে গিয়েছেন। এই দুই পক্ষের বাইরেও অনেকে রয়েছেন যারা শুধু মাহমুদুর রহমান কেন, যে কোন ব্যক্তির নাগরিক ও মানবিক অধিকার রক্ষার নীতি অলংঘনীয় গণ্য করেন। তারা মা
আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে প্রথমে অপহরণ করা হয়েছিল, তাঁর বাসার সামনে থেকে। আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, অপহরণ ও গুমের যে রেকর্ড বর্তমান সরকারের রয়েছে তা বিবেচনা করে এই অপহরণকে দেশে ও বিদেশে মানবাধিকার কর্মীরা সহজ ভাবে নেয় নি। তার পরদিন তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে তার কোন নিশ্চয়তা ছিল না। সরকার তাঁকে হাজির করেছে বাধ্য হয়ে। কারন তাঁকে অপহরণের খবর দেশে বিদেশে বেশ দ্রুততার সঙ্গেই জানা
আজকাল কোন সভাসমিতিতে যেতে ইচ্ছা করে না। এটা পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার নয়। প্রায় সবসময়ই দেখি, যে কথা বলি কোন সময়ই সেটা ঠিক ভাবে গণমাধ্যমে আসে না। প্রতিটি পত্রিকা তাদের নিজেদের মতো করেই তাদের যে-বাক্য পছন্দের সেটাই সারকথা হিসাবে হাজির করে। এতে অসুবিধা নাই। যদি উদ্ধৃতি সঠিক হয়। যে-প্রসঙ্গে বাক্যটি বলা বা যুক্তির যে ধারাবাহিকতায় কথাটি উঠেছিল তা না হয় উহ্যই থাকল। কিন্তু বিপদ হয়ে দাঁ
বাংলাদেশের কয়েকজন সম্পাদক গত ১৮ তারিখে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, বন্ধ টিভি চ্যানেল ও আমার দেশ ছাপাখানা খুলে দেবার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন। মাহমুদুর রহমান গ্রেফতার হবার প্রায় ৪০ দিন পর এই বিবৃতি এলো। এই ৪০ দিনে অবশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে। তবুও একদমই কোন বিবৃতি না আসার চেয়েও দেরিতে আসাকে মন্দ বলা ঠিক না। সাহেবরা যেভাবে বলেন, ‘বেটার লেইট দেন নেভার’। আমর
‘নাগরিক’ বা ‘নাগরিকতা’ আমাদের রাষ্ট্র কিম্বা সমাজচিন্তার গুরুত্বপূর্ণ কোন ধারণা নয়। মানবাধিকার নিয়েও আমরা কথা বলি এবং কাজও করি, কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের সঙ্গে নাগরিক ও মানবিক অধিকারের সম্পর্ক ঠিক কোথায় এবং কিভাবে তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গাঠনিক ভিত্তি হিশাবে কাজ করে সেই সব বিষয়ে আমাদের সমাজে ভাবনা চিন্তার অভাব আছে। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, ফলে মুক্তি
প্রথমে একটি কথা স্পষ্ট ভাবে বলা দরকার। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের নাগরিকদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা করা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে, অনেক বাড়ি জ্বালিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয়েছে। যারা এই হামলার স্বীকার হয়েছেন তাদের প্রায় প্রত্যেকেই গরিব ও নিপীড়িত শ্রেণির মানুষ। তাঁদের অপরাধ তারা হিন্দু। মনে রাখতে হবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণমানুষের পালটা ক্ষমতা
১
মানুষকে ‘গুম’ করে ফেলার অপরাধ মানবাধিকারের চরম লংঘন। রাষ্ট্র নাগরিকদের রক্ষা করবার কথা, কিন্তু রাষ্ট্রই নাগরিকদের ‘গুম’ করে ফেলছে। যে ‘গুম’ হয়ে যাচ্ছে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না, কিম্বা কিছুদিন পর তার লাশ আবিষ্কৃত হচ্ছে। এই অপরাধের বিরুদ্ধে বিএনপির ডাকা হরতালের ইতিবাচক দিক হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষার লড়াই জাতীয় রাজনীতির বিষয়ে পরিণত হবার সম্ভাবনা এই প্রথ
১
বিএনপির নেতা সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী এখনও ‘গুম’ রয়েছেন। আজ ২৩ এপ্রিল তার জন্য বিএনপির দ্বিতীয় দিনের হরতাল চলছে। যদি ইলিয়াস ছাড়া না পান তাহলে এই হরতাল লাগাতার চালানো হবে বলে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে আরও অনেকে গুম হয়েছে। তারা সাধারন নাগরিক। মানবাধিকার কর্মীরা এর বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে সোচ্চার ছিলেন। এতে ‘গুম’ হয়ে যাবার বিভীষিকা মানুষের মনে ছাপ ফেল
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এর সাথে আলাপচারিতা
ড. মিজানুর রহমান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা খাতে মানবাধিকার নিশ্চিত হচ্ছে কি না--সে বিষয়ে তদারকি করতে সম্প্রতি তিনি রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলা পরিদর্শন করেন। এর সূত্র ধরে মানবাধিকারের সাথে স্বাস্থ্যসেবার সম্পর্ক এবং বাংলাদেশে স্বাস
সংবাদপত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিহিংসা
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর জুলুম নিপীড়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার যে তৈরি হচ্ছে সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই। আওয়ামী নেতানেত্রীদের ভাষা ব্যবহারের মধ্যেই মাহমুদুর রহমানের প্রতি যে ঘৃণার প্রকাশ দেখেছি তাতে আতংকিত হয়েছিলাম আমি। ভাষা ব্যবহা
মাঝরাতের সমঝোতায় আরো এক বছর সময় পেল নেপাল
নেপালের সংবিধান হয়তো মাওবাদীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল ঊনত্রিশে মে’তে রাজপথ থেকেই ঘোষিত হতে যাচ্ছিল, যদি তার আগের দিন গত আটাশে মে মাঝরাতে দেশটির সাংবিধানিক পরিষদের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়াতে অর্ন্তবর্তী আইনভায় সমঝোতায় না পৌঁছতে পারতেন রাজনীতিকরা। সেক্ষেত্রে আবারো চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছিল
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য প্রথম প্রকাশ। এছাড়াও আরো দুটি কবিতার বই নতুন করে সংস্করণ করা হয়েছে। (১) অসময়ের নোট বই। (২) কবিতার বোনের সঙ্গে আবার। সাহিত্য ও কবিতা পাঠক প্রেমিকদের ধন্যবাদ।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকাশক ফরহাদ মজহারের বই প্রকাশ করেছেন। আগ্রহী পাঠকদের সুবিধার জন্য এখানে কয়েকটি বইয়ের পরিচিতি দেওয়া হোল।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী গণমাধ্যম নিপাত যাক
সম্প্রতি ফরহাদ মজহারের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিকৃতি ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ক্যাডার একটি ক্ষুদ্র সাংবাদিক গোষ্ঠি মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে ও থানায় জিডি দায়ের করে। বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাসহ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ফরহাদ মজহারের নিরাপোষ লড়াই কারোরই অজানা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে ফরহাদ মজহারকে রাষ্ট্রীয় ভাবে দমন, পীড়ন ও নির্যাতনের জন্য এই গোষ্ঠি তাদের সকল শক্তি নির্লজ্জ ভাবে নিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এদের সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জিঘাংসার যে-চেহারা ফুটে উঠেছে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য চিরকাল কলংক হয়ে থাকবে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মীসহ সকল স্তরের পেশার মানুষ এক্ত্রিত হয়ে 'আক্রান্ত গণমাধ্যম ও সংকটের আবর্তে দেশ' শিরোনামে একটি গোলটেবিলে একত্রিত হয়। তাঁরা সাংবাদিকতার নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সহিংসতার নিন্দা জানান। এখানে সেই প্রতিবাদ সভার কিছু ছবি ও উপস্থিত নাগরিকদের বক্তব্য হাজির করা হচ্ছে। এ সভার মূল লক্ষ ছিল মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা এবং চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ-এলবামে প্রবেশের জন্য ওপরের ছবির ওপর ক্লিক করুন; বক্তব্যের জন্য খোলা-এলবামে প্রত্যেক বক্তার ছবির ওপর ক্লিক করুন। ট্রান্সক্রিপশান সময় সাপেক্ষ বলে ধীরে ধীরে তোলা হচ্ছে। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়তে হলে দয়া করে নীচের সংযোগচিহ্নে যান
আমার দেশ: গোলটেবিল বৈঠকে ফরহাদ মজহারের পাশে বিশিষ্টজনরা : প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই সঙ্কট মোকাবিলায় একমাত্র সমাধান : আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন
চিন্তার সাম্প্রতিক সংখ্যা
পুরানো 'সন্ত্রাস' সংখ্যা। বছর ১৪ সংখ্যা ১, নভেম্বর ২০০৫ / অগ্রহায়ন ১৪১২। সম্পাদকীয়। দেরিদা, হাবারমাস এবং সন্ত্রাসকালে দর্শন -- জিওভান্না বোরাদরির সঙ্গে আলাপ। সন্ত্রাস, আইন ও ইনসাফ। বলপ্রয়োগ বিচার। সন্ত্রাসবাদের হকিকত। আধুনিকতায় ক্ষমতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের পুনর্গঠন। বিশ্ববাণিজ্য চুক্তির সন্ত্রাসঃ হংকং সভা। বীজ ও নারী বিপন্ন যমজ। মান্দিদের জীবন। নাখোজাবাদ বুলেটিন। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ৪র্থ সার্ক পিপলস ফোরাম। স্পেকট্রাম গার্মেণ্ট ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ড।
চিন্তা পুরানা সংখ্যা
পাক্ষিক চিন্তার পুরানো কয়েকটি সংখ্যা। এর বেশ কয়েকটি এখনও পেতে পারেন। যোগাযোগ করুন, পাক্ষিক চিন্তা, ২২/১৩ খিলজি রোড, মহাম্মদপুর, ব্লক-২। শ্যামলী। ঢাকা-১২০৭।
ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
- ১. দর্শনের ভাষা বা বুদ্ধির ভাষায় কথা বলার গুরুত্ব
- ২. পর্যালোচনা মানে সমালোচন বা বিরোধিতা নয়
- ৩. ধর্মে কি কোন চিন্তা নাই
- ৪. উপলব্ধি, বুদ্ধি ও সংবেদনা
- ৫. নফি ও এজবাত
- ৬. ধর্মবিরোধীদের কবল থেকে মার্কসকে উদ্ধার একালে জরুরী
- ৭. হজরত সোলায়মান ও ফয়েরবাখ
- ৮. দ্বান্দ্বিক চিন্তার পর্যালোচনা
- ৯. মানুষের নিজের কাছ থেকে নিজের বিযুক্তি
- ১০. ধর্মের প্রতি তত্ত্বীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সীমাবদ্ধতা
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
দর্শনের দিক থেকে ধর্মভাবনা মানুষের চেতনা বা চিন্তারই বিশেষ রূপ। এই বিশেষ রূপের বিচার ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচার দিয়ে নিষ্পন্ন হয় না, তার বিষয় ও পদ্ধতি আলাদা। ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচারের গুরুত্ব আছে বটে, কিন্তু সেটা দার্শনিক বিচার নয়। সক্রিয় ও সজীব চিন্তা ধর্মভাবনায় নিজেকে যে রূপে হাজির দেখে দর্শনের স্তরে একই রূপে হাজির না দেখলেও এই দাবি জানাতে কুন্ঠিত হয় না যে “দর্শনের বিষয় সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে ধর্মেরই বিষয় – উভয় ক্ষেত্রে সেটা হোল, সত্য। কথাটা এই চূড়ান্ত অর্থে যে আল্লাহ এবং একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সত্য। তাই উভয়েই প্রকৃতি ও মানুষের এই সীমিত জগতকে পরস্পরের সম্পর্ক এবং তাদের সত্য আল্লার সত্যে বিচার করে”। কথাটি জর্মন দার্শনিক গেঅর্গ ভিলহেল্ম হেগেলের (১৭৭০-১৮৭১)। সত্য বলতে হেগেল কি বুঝতেন এই ঘোষণায় তা আমরা আন্দাজ করতে পারি। আল্লার সত্য নির্ণয়ের আকুতির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতি ও মানুষের সীমিত জগতের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষের সম্ভাবনা বিচার করে -- আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক, নীতি-নৈতিকতা ও রাষ্ট্র হেগেল কিভাবে বিচার করেছেন তার ইঙ্গিতও এই অল্প কথার মধ্যে আমরা টের পাই।
সত্য শুধু বিশুদ্ধ বুদ্ধির নির্ণয় নয়, বরং মানুষ তার ইন্দ্রিয়পরায়ণ তৎপরতার পরিমণ্ডলে যে সত্য 'উপলব্ধি' করে সেখানেও চিন্তা বা বুদ্ধির কারবার হাজির থাকে, তবে আত্মসচেতন চিন্তা হিসাবে নয়। সে কারণেই একে আমরা কাঁচা ইন্দ্রিয়োপলব্ধি বলি, বুদ্ধি যে কাঁচামাল থেকে জ্ঞান উৎপাদন করে। ইন্দ্রিয়োপ্লব্ধির সত্য বুদ্ধি তার নিজের স্বরূপে কিম্বা নিজের পরিমণ্ডলে কিভাবে প্রকাশ করবে হেগেলের দর্শনের সেটাই ছিল প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে সকল বৃত্তির সামষ্টিক উদ্যোগ বা প্রণোদনা থেকে মানুষ যে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, বুদ্ধি সেই সত্য নিজের স্বরূপে আদৌ ধারণ বা প্রকাশ করতে পারে কিনা সেটা দর্শনে এখনও বড়সড় তর্ক হয়ে রয়েছে। ধর্মের পর্যালোচনা সেই তর্ককে সক্রিয় ও সজীব চিন্তার নিজের সমস্যা হিসাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। যে কারণে 'ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম' নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রকট লড়াই জারি রয়েছে। বলাবাহুল্য, এই আলোচনা সেই বাস্তবতার বাইরে নয়। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠি, সম্প্রদায়, শ্রেণি এবং বিভিন্ন শারিরীক চিহ্নে ও শারিরীক বাসনায় বিভক্ত জগতে সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের লড়াইও নানা কারনে অনিবার্য বটে, কিন্তু ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার লড়াই আর বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় মানুষের চিন্তার সংকট মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলামের সম্ভাব্য অবদান বিচার সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্য নাজিল হয় নি, ফলে তা মানুষের চিন্তার ইতিহাস ও দর্শনেরও বিষয়। এই অনুমান থেকে লেখাগুলো পাঠ করলে পাঠক উপকৃত হবেন আশা করি।
- See more at: http://chintaa.com/index.php/network/index/bangla#sthash.OYNrOjTu.dpuf