তামাক চাষ ও খাদ্য সংকট


দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকা তামাক চাষ খাদ্য সংকট তৈরি করছে

প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় খাদ্য শস্যের জমিতে তামাক চাষ করা হচ্ছে। তামাক কোম্পানিগুলার আগ্রাসনে কৃষি জমির এমন বিনাশ সাম্প্রতিক বছরগুলাতে বাড়ছে খুব দ্রুতগতিতে। ২০০৬-০৭ সালে তামাক উৎপাদন হয়েছে ৭৫,৮৬০ একর জমিতে, এবং ২০০৮-০৯ সালে হয়েছে ৭৩,৮০৮ একর জমিতে। অর্থাৎ ২০০৫ সালের তুলনায় ২০০৮-০৯ তে এসে তামাকের আওতায় জমির পরিমাণ ১৩৮% বাড়ানো হয়েছে।

 তামাক পাতা উৎপাদন এদেশে নতুন না, তবে তা ছিল সাধারণভাবে পানের সাথে খাওয়ার জন্য কিম্বা হুকা, বিড়ির জন্য। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে নির্দিষ্ট কোম্পানি, যেমন বৃটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে ও সিদ্ধান্তে তামাক চাষ শুরু হয়েছে রংপুর জেলায় ১৯৬৪ সালে। বাংলাদেশে তিন জাতের তামাক পাতার চাষ হয়, জাতি, মতিহার এবং ভার্জিনিয়া। বাণিজ্যিকভাবে তামাক কোম্পানির প্রয়োজনে উৎপাদন হয় ভার্জিনিয়া জাতের তামাক। প্রায় ৪৯,৬০০ একর জমিতে চাষ করে প্রায় ১২,৭৫৫ টন তামাক পাতা উৎপাদন করা হয়। কিন্তু রংপুরে জমির উর্বরতা কমে যাওয়া এবং তামাক পাতা পোড়াবার জন্য জ্বালানি কাঠের অসুবিধা দেখা দিলে কোম্পানি তামাক চাষ অন্য জেলায় নিতে শুরু করে। রংপুরের পরে তামাক চাষ শুরু হয় পদ্মা নদীর চরের উর্বর অঞ্চল কুষ্টিয়া জেলায়। ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বছরে ৪১,০০০ মেট্রিক টন উৎপাদন হত। ক্রমে জমির উর্বরতা কমতে থাকে এবং তামাকের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। তামাক কোম্পানি এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাওয়ার কারণ এর চাহিদা বাড়া না, বরং যে এলাকায় দীর্ঘদিন তামাক চাষ করা হয় সেখানে জমির উর্বরতা নষ্ট হবার কারণেই তাদের চলে যেতে হয়। কুষ্টিয়া থেকে আশেপাশের জেলায় গেলেও তারা জ্বালানি কাঠের সুবিধার জন্য ১৯৮৪ সালের দিকে একেবারে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবান জেলার দিকে ছুটে আসে। শুরুতে এখানে তামাক হয়েছে মাত্র ৭৪০ একর জমিতে ২০০৫-২০০৬ সালে এসে তা বেড়ে যায় ৪৭৫০ একর জমিতে। অর্থাৎ ৫৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে। কুষ্টিয়াতে তা বেড়েছে ৪১%।

সবমিলিয়ে সারা দেশে দুই হাজার পাঁচ সালের তুলনায় গত বছর তামাক চাষের কবলে পড়েছে একশ আটত্রিশভাগ বেশি কৃষিজমি। এর জন্য সরকারি কোনও সিদ্ধান্ত বা নীতিমালা ছিল না, তারপরও এটা ঘটেছে, ঘটছে। তবে তামাক কোম্পানিগুলা ২০০৬-০৭ বছরের তুলনায় ২০০৮-০৯ সালে এসে ২০৫২ একর কম জমিতে তামাক উৎপাদন হওয়ায় খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এই সময় হঠাৎ করে কুষ্টিয়াতে তামাকের জমিতে ভুট্টা চাষ বেড়ে যাওয়া এবং বান্দরবানে তামাক চাষের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী তৎপর থাকায় কৃষকরা চাষে নিরুৎসাহিত হতে থাকে। তখন তামাক কোম্পানি অস্থির হয়ে তামাকের পাতার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। তামাকের পাতার দাম ২০০৮-০৯ সালে কোন গ্রেড ছাড়াই প্রতি কেজি ১৩৫ টাকায় কোম্পানিগুলো কিনে নেয়। এবং পরবর্তী মৌসুম অর্থাৎ ২০০৯-১০ এ তামাকের পাতার দাম আগেই প্রতি কেজি ১৫০ টাকার ঘোষণা দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০০৯ এর নভেম্বর মাসে তামাক চাষ করার সময় যে দাম পাবে আশা করেছিল ২০১০ এর এপ্রিল মাসে এসে দেখা গেছে তামাক কোম্পানিগুলা নিজেদের মনগড়া দামে তামাক বেচতে বাধ্য করেছে। তামাক কোম্পানি ছাড়া অন্য কোথাও তো বিক্রির সুযোগ নাই। তাছাড়া তামাক পাতা উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপাতে তাদের সুবিধা হয়েছে। কোম্পানি মোট ৮ গ্রেডে তামাক পাতা ভাগ করে দাম ঠিক করেছে। সর্বোচ্চ দাম ১ নং গ্রেডের প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং গ্রেড ২ থেকে ৭ পর্যন্ত প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত কিনেছে। এই মূল্য প্রতিশ্রুত মূল্যের চেয়ে অনেক কম। এই গ্রেড করা এবং মূল্য নির্ধারণে তামাক চাষীর কোন মতামত নেয়া হয় না। কোম্পানি যা নির্ধারণ করে তাই তাকে মেনে নিতে হয়। তাছাড়া উপকরণের দাম যেমন সার, কীটনাশক, তামাকের বীজ ইত্যাদির দাম কোম্পানি কেটে নেয় ইচ্ছামত।

তামাকের আওতায় নতুন এলাকা

২০০৯-১০ সালে এসে প্রথম থেকেই তামাক কোম্পানিগুলা কৃষককে পাতার দাম বাড়ানোর লোভ দেখিয়ে আগের চেয়েও বেশি পরিমাণ জমি এবং নতুন নতুন জেলা তামাক উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিশেষ করে রাঙ্গামাটি, চলনবিল, নাটোর, যশোর, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, রংপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, সাটুরিয়া এবং টাঙ্গাইলে ব্যাপক জমি তামাক চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

কুষ্টিয়া, কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় তামাক চাষ বাড়ার বিস্তারিত তথ্য প্রতিবেদন তৈরি করেছে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘উবিনীগ’--তাদের তথ্যে দেখা যাচ্ছে বান্দরবানে, আলী কদম উপজেলার ২টি ইউনিয়নেই (আলীকদম ও চ্যৈং) তামাক চাষের আওতায় ৫১২০ একর জমি ব্যবহার হচ্ছে। এখানে তামাক চাষীর সংখ্যা ১৫৯৬। লামা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে (লামা সদর, গজালিয়া, ফাসিয়া খালী, রূপশী পাড়া, সরই, আজিজ নগর, পৌর সভা), তামাক চাষের আওতায় জমির পরিমাণ ১০০৯০ একর এবং চাষীর সংখ্যা ৬০২০। কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলা অর্থাৎ মাতামুহুরী নদীর পারে ১০টি ইউনিয়নে ৪২৮৩ একর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। চাষীর সংখ্যা ২৬৪৩। ২০০৮-২০০৯ সালে চকোরিয়া উপজেলায় তামাক চাষের আওতায় জমি ছিল ২৩৭৯ একর, ২০০৯-২০১০ সালে তামাক চাষ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এই সময় চকোরিয়া উপজেলায় নতুন করে চারটি ইউনিয়নে তামাক চাষের বিস্তার ঘটেছে।

কুষ্টিয়া জেলায় মোট চাষের জমির পরিমাণ ২,৮৪,০০০ একর, এর মধ্যে ২০০৯-২০১০ সালে তামাক চাষ ১,০১,২৭০ একর জমি তামাক চাষের আওতায় আনা হয়েছে। অর্থাৎ মোট চাষের জমির ৩৬% তামাক চাষের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ২০০৮-২০০৯ সালে কুষ্টিয়াতে তামাক চাষ হয়েছে ৩২,৭৯০- একর জমিতে, কিন্তু ২০০৯-১০ সালে ৩ গুণ বেড়েছে। কুষ্টিয়ার মোট ৬টি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলায় (যেমন দৌলতপুর এবং মিরপুরে) সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হয়েছে। এখানে প্রায় ৯২০০০ একর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। অর্থাৎ কুষ্টিয়ার মোট তামাক চাষের আওতায় আনা জমির প্রায় ৯১% এই দুটি উপজেলাতেই রয়েছে।

তামাক চাষে খাদ্য সংকট: দৈনিক পত্রিকাগুলাতে যেভাবে এসেছে

এবার বড় ধরনের খাদ্য সংকট হবে এটা ইতিমধ্যে নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে। প্রতি বছর গড়ে ১% হারে ৬৫ হাজার হেক্টর কৃষি জমি কমে যাওয়া, কৃষি জমিতে হাউজিং, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ নানা ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করে খাদ্য শস্য চাষের জমি কমে যাচ্ছে। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলছে। সমকাল (৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১০) পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার কারণে প্রতিদিন গড়ে ২০% হারে ফসলি জমি কমছে। গত তিন দশকে কৃষি জমির পরিমাণ কমেছে ১ কোটি ৮২ লাখ একর। জমি কমায় বছরে ১৬ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন কম হচ্ছে। দেশে গড়ে ১ লাখ টনের মত খাদ্য ঘাটতি থাকে বলে বলা হয়। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে (১৭ এপ্রিল, ২০১০) বলা হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম মজুদ ১০ লাখ টন থাকতে হয়, বর্তমান আছে ৫ লাখ টনের কম। সরকারের ভাণ্ডারে আপদকালীন খাদ্যশস্য মজুদ আছে ৫ লাখ ৪০ হাজার টন (১৪ এপ্রিল, ২০১০) এর মধ্যে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন চাল আর বাকি ১ লাখ ৮০ হাজার টন গম। কিন্তু তামাক উৎপাদনই খাদ্য উৎপাদনের জন্য সব চেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।

দুটি বড় তামাক কোম্পানি ধান চাষ প্রধান চলনবিলে ব্যাপকহারে তামাক উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়ে ১ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক উৎপাদন করছে। অথচ এই জমিতে ধানের আবাদ করলে ১২ হাজার টন ধান উৎপাদন করা যেত (সমকাল, ৭ জানুয়ারি, ২০১০)। আমার দেশ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে (১৯ ডিসেম্বর, ২০০৯) কুষ্টিয়া জেলার সর্বমোট আবাদী জমির পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে গত মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল ৩৩ হাজার ৮৫২ হেক্টর, সরিষা ৭ হাজার ৬৯০ হেক্টর, সবজি ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর এবং ১৩ হাজার ২৭৬ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল। গত বছর (২০০৮-০৯) কুষ্টিয়ায় খাদ্য শস্যের চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত ছিল ৭৪ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে (২০০৯-১০) তামাকের আওতায় জমি বাড়ানোর কারণে খাদ্য ঘাটতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গাকবলিত উত্তর জনপদের অভাবী কৃষকদের উর্বর ধানী জমিতে এখন তামাক চাষ করানো হচ্ছে। দৈনিক যুগান্তর (১৮ মার্চ, ২০১০) জানাচ্ছে ধান, আলু, ভুট্টা, আখ, পাট, সরিষা, বাদাম চাষ করে সরকারের সহযোগিতার অভাবে দাম না পাওয়ার কারণে তামাক চাষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে কৃষকরা। বান্দরবানের লামা সম্পর্কে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে (১৯ মার্চ, ২০১০) বলা হচ্ছে ‘আগে এখানকার তরিতরকারি পানির দরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সরবরাহ হত। আর এখন চকোরিয়া, পেকুয়া থেকে তরিতরকারি, মাছ, মাংস এনে বিক্রি করতে হচ্ছে’। গত বছর (২০০৮-০৯) লামায় ১০ হাজার একর জমিতে বোরোসহ রবিসশ্যের চাষ হয়েছিল। এ বছর (২০০৯-১০) সালে পুরা উপজেলার ৪০ হাজার একরের বেশি ফসলি জমি গ্রাস করে নিয়েছে বিষাক্ত তামাক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তামাক চাষের আগ্রাসন দিন দিন বাড়তে থাকায় শস্যভাণ্ডার খ্যাত জেলাগুলোর ফসলি জমিতে এখন তামাকের চাষাবাদ হচ্ছে। তামাক চাষের কারণেও ব্যাপকহারে কমে আসছে ফসলি জমির পরিমাণ। চলনবিল অঞ্চলে, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, নাটোর এলাকার প্রায় ১০০০ একর জমিতে আবাদ হচ্ছে তামাক। এ এলাকার কৃষকরা জানান, তামাক চাষে তাদের তেমন কোন খরচ নাই। অনেক বেশি দামে হলেও সার বীজ ও কীটনাশকের খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধা বিভিন্ন টোবাকো কোম্পানি তাদের দিয়ে আসছে। আলু চাষাবাদের জন্য বিখ্যাত এলাকা মুন্সীগঞ্জেও শুরু হয়েছে তামাকের আগ্রাসন। এ অঞ্চলকে সবাই সবজি ও আলু উৎপাদনকারী এলাকা হিশাবে চিনলেও এখন তা পরিচিত হচ্ছে তামাক এলাকা হিশাবে। কুষ্টিয়া জেলার প্রায় ৪৯ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। এ ফসল উৎপাদনের প্রায় ২০ হাজার পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। তামাক চাষের কারণে মাটির গুণাগুণ নষ্ট হওয়াসহ পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। (দৈনিক সমকাল ১৯ এপ্রিল ২০১০)।

ফসল চক্রের হিশাবে দেখলে তামাক উৎপাদনের মৌসুম বিশেষত রবি ফসলের মৌসুমের সাথে মিলে যায়। ফলে তামাক করলে ডাল, সরিষা, তেল, শীতকালীন সবজিসহ অনেক ফসল করা যায় না। সাথী ফসলগুলাও হয় না। ধানের মধ্যে বোরো ধান যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি আউশ ধান লাগাবার সময় ধরা যায় না। পাট লাগানোটাও ব্যাহত হয়। ফলে তামাক চাষে শুধু একটি মৌসুমের ফসল নয়, বছরের অন্যান্য ফসলগুলোও লাগাবার সময় পায় না। এটা লক্ষ্য করার বিষয় যে, তামাকের চাষ নতুন এলাকায় যেভাবে ছুটছে সেগুলা আউশ ধানের এলাকা। অর্থাৎ এভাবে তামাক চাষ নির্বিচারে বাড়তে দিলে আউশ ধানের সংকটও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।

তামাক চাষের পরে কোনও খাদ্য শস্য উৎপাদন করা যায় নাই

কক্সবাজার, বান্দরবান ও কুষ্টিয়ায় তামাক চাষের এলাকার কৃষকদের সাথে বসে গত এক সপ্তাহে (এপ্রিল ১৭-২৪, ২০১০) খাদ্য উৎপাদনের হিশাব করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান উবিনীগ। এই গবেষণায় দেখা গেছে চকোরিয়া এবং লামায় তামাক চাষ না করলে কার্তিক থেকে বৈশাখ মাসের মধ্যে যেসব ফসল উৎপাদন করত; সেগুলা হল: গোল আলু, বেগুন, বাদাম, রঙ্গিমা সীম, ফেলন, মরিচ, টমেটো, সরিষা, তরমুজ, বাঙ্গি, ক্ষিরা, মিষ্টি কুমড়া, রসুন, বরবটি, কপি, ঢেঁড়শ, পেঁয়াজ, করলা, কচু, বোরো ধান, মিষ্টি আলু, ভুট্টা ইত্যাদি। আলী কদম উপজেলায় এই সব ফসলের পাশাপাশি মুগডাল ও মাসকলাই করার কথাও কৃষকরা বলেছেন।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কৃষকরা যেসব ফসলের কথা বলেছেন সেগুলা হল: আলু, বোরো ধান, গম, রাই, মশুর, রসুন, ভুট্টা। দুঃখজনক হচ্ছে কৃষকরা বাজারজাত করার প্রয়োজনীয় সুবিধা না পাওয়ার কারণে এবার আলু চাষ করে সবাই লাভবান হতে পারেন নাই। তবে মিশ্র ফসল যারা করেছেন তারা অন্তত নিজ পরিবারের প্রায়োজন মেটাতে পেরেছেন এবং ঘরে রেখে দিয়ে দাম বুঝে বিক্রি করতে পেরেছেন।

editor@chintaa.com

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।