খালেদা জিয়ার রাজনীতি, এখন...
শেষাবধি ২৫ অক্টোবর...
এই লেখা লিখছি বহু প্রতিক্ষার ২৫ অক্টোবর, শুক্রবারে। বাংলাদেশের রাজনীতি কোনদিকে যেতে চাইছে তার কিছুটা আন্দাজ আমরা আজ ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে করতে পারব। যেহেতু গতকাল অবধি দুইপক্ষের মধ্যে তথাকথিত ‘সমঝোতা’ বা ‘আপোষ’ হয় নি, অতএব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মীমাংসা বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়েই সম্ভবত নিষ্পন্ন হতে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা আইন-আদালত, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবিসহ রাষ্ট্রের সকল শক্তি প্রয়োগের প্রতিষ্ঠানকে বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কৌশল ও প্রতিরোধের প্রস্তুতি কেমন সেটা আমরা সম্ভবত এখন দেখতে শুরু করব আরও স্পষ্ট ভাবে। বিনেপির হিম্মতেরও একটা পরীক্ষা হবে।
বলাবাহুল্য এই ধরনের পরিস্থিতিতে বলপ্রয়োগের ক্ষমতাই রাজনীতিতে নির্ধারক ভূমিকা পালন করবে। তবে এর পরিণতি নির্ভর করবে সমাজে রাজনৈতিক চিন্তাচেতনার মাত্রার ওপর। এই মুহূর্তে খালেদা জিয়া সামগ্রিক রাজনীতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মূল্যায়নের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করবে কী ধরনের নীতি ও কৌশল এই প্রতিরোধ-পর্বে তিনি গ্রহণ করবেন। এখানে ভুল করলে বিশাল খাদে তিনি পড়ে যেতে পারেন। সেখান থেকে তাঁর পক্ষে উঠে আসা খুবই কঠিন হবে।
এটা ২০০৭ সাল নয়, ২০১৩ সাল। এক এগারোর নায়কেরা একটি সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক দল ছিল না। তারা সুশীলদের সুবিধাবাদী রাজনীতির ধারক হলেও আওয়ামি লীগ বা মহাজোটের মতো কোন রাজনৈতিক মতাদর্শে ঐক্যবদ্ধ ছিল না। ক্ষমতাসীন মহাজোটের রাজনৈতিক মতাদর্শ হচ্ছে ইসলাম-বিদ্বেষ, ফ্যাসিবাদ ও বাংলাদেশকে দিল্লীর অধীনস্থ করা। ক্ষমতাসীনরা দেশকে কার্যত দিল্লীর কাছে বিকিয়ে দিয়েছে। জনগণের সঙ্গে তাদের বিরোধের মূল জায়গা গুলো এই তিনটি ক্ষেত্র মনে রাখলে আমরা সহজে বুঝতে পারব। বিএনপির সঙ্গে জনগণের বিরোধের জায়গাও ধরা কঠিন নয়। এই বিরোধের ক্ষেত্রগুলোকে জনগণ সমাজের নানান স্তর থেকে মোকাবিলা করছে। কেউ ইমান-আকিদার জায়গা থেকে, কেউ জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই হিসাবে, আবার কেউ বাংলাদেশের জনগণের ইতিহাস ও সংস্কৃতি হিসাবে।
মুশকিল হচ্ছে, একটি বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দল হিসাবে ইসলাম প্রশ্নে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গী আসলে কী সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তাদের মধ্যে কেউ শাহবাগের সমর্থক, আবার কেউ শাপলা চত্বরের। অনেকে মাঝখানে পেণ্ডুলামের মতো একবার বামদিকে একবার ডানদিকে হেলছে। এই ধরণের দল নিয়ে বড় কোন নীতিগত আন্দোলন করা যায় না। রাজনৈতিক উদারবাদও না। কিন্তু নানান কারণে বাংলাদেশের জনগণের বিশাল একটি অংশ খালেদা জিয়ার ওপর নতুন করে ভরসা করছে। এই ভরসা কতোটুকু বাহ্যিক আর কতোটুকু সারবস্তু সম্পন্ন সেটা আমরা এখন দেখতে থাকব। আসলে নির্বাচনে বিএনপিকে ভোট দেওয়া আর আন্দোলনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের ওপর ভরসা করার মধ্যে পার্থক্য আছে। আওয়ামী লীগ বিএনপির শত্রু, ইসলামপন্থীদেরও বটে। কিন্তু শত্রুর শত্রু আমার মিত্র – এই কৌশল যথেষ্ট নয়। সুনির্দিষ্ট নীতি ও সঙ্গতিপূর্ণ কৌশল দরকার। খালেদা জনগণের সঙ্গে থাকবেন নাকি তার দলের দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তদের সঙ্গে থাকবেন সেটা তাঁর সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
দ্বিতীয়ত গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপান্তর ছাড়া বাংলাদেশে ন্যূনতম লিবারেল বা উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তনও এখন অসম্ভব -- সেটা শুধু বিএনপি ও তার জোটের শরিকদের নয়, ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব নাগরিকদেরই বুঝতে হবে। আর খালেদা জিয়াকে বুঝতে হবে, আন্দোলনের যে কোন পর্যায়ে আপোষ করে তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে পারবেন, কিন্তু ফ্যাসিবাদের মতাদর্শিক, রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক খুঁটি উপড়ে ফেলতে না পারলে তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন না। মিসরের ঘটনাবলী থেকে তিনি কিছুটা শিক্ষা নিতে পারেন।
তৃতীয়ত রয়েছে দিল্লিকে মোকাবিলার প্রশ্ন। সেটা নিছকই দিল্লীর সঙ্গে সুসম্পর্ক নয় – নতুন ভাবে একটি জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। মহাজোট সরকার গত পাঁচ বছরে সেটা ধ্বংস করে দিয়েছে। তার জোটের শরিকদের মধ্যে এই ধরণের উপলব্ধি যেন না হয় যে তিনি তার রাজনৈতিক স্বার্থে জোটের শরিকদের ব্যবহার করছেন, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও প্রতিরক্ষার প্রশ্নে সকলের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট নীতি ও কৌশল গড়ে তোলা তাঁর অনেক আগেই জরুরী ছিল। শুধু বক্তৃতা যথেষ্ট নয়। লড়াই সুস্পষ্ট ভাবে ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রাম হিসাবে হাজির হতে থাকবে। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবার রাজনীতি তিনি কিভাবে হাজির করেন তার ওপর তার নেতৃত্বের নিশ্চয়তা নির্ভর করছে।
এ সরকার অবৈধ
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে এই সরকারের বৈধতার সীমা ২৪ অক্টোবর বেঁধে দিয়েছিলেন। অপরিসীম দমন পীড়ন, নির্যাতন ও উস্কানির মুখেও তিনি নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির বাইরে যান নি। এই কৌশলের একটা তাৎপর্যপূর্ণ ফল হচ্ছেসাধারণ মানুষ ২৪ অক্টোবরের পর এই সরকারকে অবৈধ সরকার হিসাবে গণ্য করছে। গতকাল শিক্ষক কর্মচারীদের সভায় খালেদা জিয়া স্পষ্ট ভাবেই আবার বললেন এই সরকার বৈধ সরকার নয়, অতএব একে হটানো জনগণের কর্তব্য, নাগরিকদের দায়। এর মানে হচ্ছে এই সরকারকে মানতে জনগণ যেমন বাধ্য নয়, ঠিক তেমনি প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব বা সেনাবাহিনীও মানতে বাধ্য নয়। (২৫ অক্টোবরের মহাবেশে খালেদা জিয়া নতুন করে সরকারের বৈধতার সীমা ২৭ অক্টোবর বলেছেন)
ক্ষমতাসীনদের পক্ষে বলা হচ্ছে খালেদার দাবি ঠিক না। শেখ হাসিনাই ‘বৈধ’সরকার। তাঁরা আসলে বৈধতা (legitimacy) এবং আইনী দাবির (legality) মধ্যে গোলমাল করে ফেলেছেন। শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ, তিনি পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান বদলিয়ে ফেলেছেন। তিনি নিজে আইন করে এখন বলছেন আমাদের তা মানতে হবে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে তিনি নাগরিক ও মৌলিক অধিকার হরণ করে নিয়েছেন। সংসদে সংখাগরিষ্ঠতার জোরে আইন প্রণয়ন করলেই সেটা 'বৈধ' হয়ে যায় না। 'বৈধতা' আইনী ধারণা নয়। গণতন্ত্র একটি রাষ্ট্রের ধরণ। সেই রাষ্ট্রে নাগরিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত না করলে ও বলবৎ করা না গেলে সে রাষ্ট্র আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র থাকে না। সেটা তখন অবৈধ রাষ্ট্র – তার সংবিধানও অবৈধ। এর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক জনগণের বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু যেহেতু গায়ের জোরে আইন করা হয়েছে, অতএব সেই কালো আইনের জোরে তাকে ‘আইনী’ বলা যায়, কিন্তু সে আইন আসলে জংলী আইন। জংলি আইন বৈধ আইন তো নয়ই। কোন আইনই নয়। এই ধরনের রাষ্ট্র ও সরকার কোন নৈতিক বা দর্শনগত বৈধতার জোরে টিকে থাকে না। টিকে থাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের জোরে, নগ্ন ভাবে বল প্রয়োগের মাধ্যমে। এর কোন নৈতিক বা আদর্শগত ভিত্তি নাই। একে বল প্রয়োগের মাধ্যমেই মোকাবিলা করতে হয়, ইতিহাসে তার ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। এই ধরণের রাষ্ট্র বা সরকারের সঙ্গে সমরতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সামরিক শাসনের কোন প্রভেদ নাই। তুলনায় সামরিক আইনের চেয়েও ফ্যাসিবাদ ভয়ংকর। সামরিক একনায়কতন্ত্রের কোন জন সমর্থন থাকে না, কিন্তু ফ্যাসিস্ট একনায়কতন্ত্রের পক্ষে বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম ও সমাজের উগ্র একটি অংশের সমর্থন থাকে।
খালেদা জিয়া এই সরকারকে ‘অবৈধ’ বলে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। তাঁকে সমর্থন করে তিনি যেন এই অবস্থান থেকে পিছলে সরে না যান তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। তার জন্য তাঁর নির্দেশ মোতাবেক স্থানীয় সংরাম কমিটিগুলো গঠন ও সক্রিয় করে তোলা দরকার।
কিন্তু নাগরিকদের অবস্থান হবে ক্রিটিকাল। পর্যালোচনামূলক। বেগম জিয়া জনগণের সঙ্গে কতোদূর যাবেন তাঁর ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। জনগণ কতোতুকু যেতে চায় তার ওপরও নির্ভর করবে। এই কথা মনে রেখে আমরা এখন বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের পর্যালোচনা করব।
পরাশক্তির মুখাপেক্ষি হওয়া বিপজ্জনক
গত একুশে অক্টোবর বেগম খালেদা জিয়া হোটেল ওয়েস্টিনের সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বক্তব্য পেশ করেছেন। একই সঙ্গে সম্ভাব্য নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হতে পারে তার একটা প্রস্তাবও দিয়েছেন। বাংলাদেশের ক্রান্তিকালীন রাজনৈতিক মুহূর্তের কারণে তাঁর বক্তব্য ও প্রস্তাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে তার প্রশংসা করেছেন। প্রশংসার ধরণ অনেকটা এরকম যে ক্ষমতাসীনরা খেলার বোর্ড যেভাবে সাজাবার চেষ্টা করছে তার বিপরীতে বিরোধী দলীয় নেত্রী একটা ‘চাল’ চেলেছেন। কথাটা কেউ সরাসরি বলেছেন, কেউ বলেছেন প্রচ্ছন্ন ভাবে। বাংলাদেশের বর্তমান অতি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে তাঁর বক্তব্যের এই মূল্যায়নটা প্রশংসাসূচক হলেও ইতিবাচক নয়। অর্থাৎ রাজনীতির বর্তমান মূহূর্তে বিরোধী দলীয় নেত্রীর কাছ থেকে জনগণ রাজনৈতিক ‘চাল’ চাইছে না, সুনির্দিষ্ট নীতি ও দিক নির্দেশনা প্রত্যাশা করে। প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণও 'চাল' ছাড়া কিছুই ছিলনা। বাংলাদেশের এখনকার রাজনৈতিক্ মুহূর্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে জনগণের চোখে দুই নেত্রীর বক্তব্য, বিশেষ করে বিরোধী দলের নেত্রীর বক্তব্য যদি ‘চাল’ কিম্বা রাজনৈতিক চালাকি বলে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে সেটা খুবই বিপজ্জনক। তাঁর নিজের জন্য যেমন, বাংলাদেশের জনগণের জন্যও।
আবারও বলছি, বাংলাদেশের জনগণ দেশের এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার কাছ থেকে রাজনৈতিক নির্দেশনা চেয়ে আসছে। অর্থাৎ তিনি বাংলাদেশের জনগণকে কী দিতে পারেন বা কী দেবেন সেটা এখনকার সংকট তৈরী হবার অনেক আগেই স্পষ্ট করে বলা দরকার ছিল। তিনি বলেন নি। ইতোমধ্যে খুবই দেরি হয়ে গিয়েছে। এখন তিনি নির্বাচনের সময় সরকারের ধরণ নিয়ে যেপ্রস্তাব করেছেন, সেটা অনেকের মতো আমার কাছেও ‘অবাস্তব’ মনে হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নাম না ধরে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের জন্য বাংলাদেশে তিনি পুরানা লোক ছাড়া নতুন কাউকে খুঁজে পেলেন না। কৌশল্গত হলেও সেটাও ঠিক মনে হয় নি। অদূরদর্শিতার রাজনৈতিক প্রভাব সমাজে পড়ে। যেমন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তৈরীর সময় এই ধারণা দেশের মানুষকে দেওয়া হয়েছিল যে একমাত্র বিচারকরাই বাংলাদেশে ফেরেশতা, তাঁদেরকেই প্রধান উপদেষ্টা বানাতে হবে। এর ফল বাংলাদেশের রাজনীতি ও বিচার ব্যবস্থার জন্য ভয়াবহ হয়েছে। খালেদা জিয়ার এখনকার প্রস্তাবের একটা ব্যাখ্যা হচ্ছে ১৬ কোটির এই দেশে মাত্র বিশ জন লোকই আছেন – মরা কিম্বা জীবিত – যারা নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারেন। আর ইতিবাচক ভাবে বিচার করলে তিনি বলতে চেয়েছেন তত্ত্ববাধায়ক সরকারের একটি আমলে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছে, অন্যটায় বিএনপি নির্বাচিত হয়েছে, কাজেই এদের ব্যাপারে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়, এই ভেবে তিনি সহজ অবস্থান নিতে গিয়ে এই বিষয়টাকে খামাখা আরও জটিল করে ফেলেছেন। এটা সুবিধাবাদী অবস্থান, যে কোন একটি ছুতায় বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়, এটাও আমামদের বুঝতে হবে। এখন সবাই অংক মেলাচ্ছেন, কতজন বেঁচে আছে, কতজন অসুস্থ, কত জন রাজী হবেন; ইত্যাদি করতে গিয়ে শেষতক লোম বাছতে কম্বল উজাড় হচ্ছে। তাঁর প্রস্তাবে বাংলাদেশের সুশীল নাগরিক সমাজ কিছুটা ক্ষুব্ধ হতে পারে, কারণ নির্দলীয় নিরপেক্ষ মুহূর্তগুলোর দিকে তারা তাকিয়ে থাকে। এর চেয়ে ভাল কোন প্রস্তাব দিলেও যে শেখ হাসিনার কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হোত এমন কোন গ্যরান্টি নাই। আসলে শেখ হাসিনার প্রস্তাবের বিপরীতে তিনি কোন প্রস্তাব দিচ্ছেন না কেন বলে যারা তাঁর সমালোচনা করছিল ও চাপ দিচ্ছিলো তিনি তাঁদের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছেন।
একুশে অক্টোবরের প্রেস কনফারেন্সকে তিনি আন্দোলন আরও শক্তিশালী নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবার সুযোগ নিতে পারতেন। গ্রামে গঞ্জে চায়ের দোকানে রেডিও টেলিভিশনে তাঁর বক্তব্য শোনার জন্যে লোকের ভিড় ছিল, যদি কোন আন্দোলনের ঘোষণা আসে এই আশায়। তারা হতাশ হয়েছে এবং তাঁর দোদুল্যমানতাকে পছন্দ করে নি। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে মনে হয়েছে তিনি দেশের জনগণকে নয়, বরং পরাশক্তিগুলোকে সন্তুষ্ট করবার দিকেই অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়ে ফেলেছেন।সময় ও সুযোগের উপযুক্ত ব্যবহার তিনি করেন নি।
যে দিকটা বিশেষ ভাবে লক্ষ্যণীয় সেটা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে যতোটুকু বলা দরকার অতি উৎসাহী হয়ে তিনি তার চেয়েও অনেক বেশী বলেছেন। তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের স্থানীয় বরকন্দাজ হতে চান, যে যুদ্ধ মূলত পরিচালিত হচ্ছে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে, তিনি সেই যুদ্ধে পাশ্চাত্য শক্তির অংশীদার হতে চান, তাদের হাত মজবুত করতে চান। পাশ্চাত্যের হয়ে তিনি এদেশের জনগণের বিরুদ্ধে লড়তে চান। যে র্যাবকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ‘ঘাতক বাহিনী’ আখ্যা দিয়েছে তিনি তার জন্য গর্বিত। এর আগেও তিনি এই ধরনের ভুল গর্বে গর্বিত হয়েছেন। নাগরিক ও মানবাধিকার লংঘনের দায় তাঁর ওপর কালো ছায়ার মতো ঝুলছে। আজ যখন জনগণ মানবিক ও নাগরিক অধিকার অর্জনের জন্য লড়ছে তখন তার চরম মানবাধিকার বিরোধী অবস্থান নেওয়া ঠিক হয় নি। এই অবস্থান তাঁর রাজনৈতিক শক্তি ও সমর্থনের ভিত্তিকে দুর্বল করবে।
তাছাড়া বেগম জিয়া ভুলে যাচ্ছেন তিনি যতোই চেষ্টা করেন না কেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের সেনাপতি শেখ হাসিনা। তিনি শত চেষ্টা করেও শেখ হাসিনার চেয়ে বেশী ফ্যাসিস্ট হতে পারবেন না। এবং ফ্যাসিস্টরাই পরাশক্তির পছন্দ। শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র এটা নয়। বরং ফ্যসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরদ্ধে লড়াইটাই তাঁর জায়গা। সেই জায়গা তিনি অলংকৃত করতে না চাইলে তা খালি থাকবে না। আমি বারবারই বলে আসছি তাঁকে ঘিরে আছে এমন কিছু শক্তি যারা তাঁকে পরাশক্তির ইচ্ছামতো পরিচালিত করতে চান। এতে তাঁদের নিজেদেরও লাভ আছে।। তারা তাঁকে সারাক্ষণই বিভ্রান্ত করছে ও ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁকে বাংলাদেশের জনগণের বিপরীতে দাঁড় করাচ্ছে। কিন্তু তি্নি যদি সত্যিই দেশনেত্রী হতে চান তাহলে তাঁকে এদের জাল ছিন্ন করে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি শেখ হাসিনাকে টালবাহানা বন্ধ করার কথা বলেছেন, এই ক্ষেত্রে তাঁকেও টালবাহানা বন্ধ করতে হবে।
তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছিলেন। তাঁর দিক থেকে এই দাবির যুক্তি আছে। প্রথমত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভাল হোক কি মন্দ হোক বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতির ভিত্তিতেই সংবিধানে যুক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত প্রতিকুল পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে তিনি নির্বাচনে যেতে চান না। কিন্তু শেষাবধি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তাঁর দলের ক্ষমতায় যাবার দাবি। এই দাবি জনগণের কাছে কোন রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়। কিম্বা বাংলাদেশের বর্তমান অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার বা বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপান্তর ঘটিয়ে নতুন ভাবে বাংলাদেশ গঠন করবার কর্মসূচিও নয়। বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ভাবে তিনি কিভাবে গড়ে তুলতে চান সেই কর্মসূচি কই? নিদেন পক্ষে একটি সহনশীল শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলবার ন্যূনতম নীতিমালা কী হতে পারে সেই বিষয়েও তাঁর কাছ থেকে জনগণ কোন নির্দেশনা পায় নি।
বিএনপি কোন বিপ্লবী দল নয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের দল উদার রাজনৈতিক (liberal) দল বলে পরিচিত। তারপরও সীমিত রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এই দলটি অনেক কিছুই করতে পারে। করার আছে। যেমন নাগরিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করা, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করবার অধিকার স্বীকার করা এবং কারখানায় তাদের প্রাণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা, প্রাণ ও পরিবেশের ক্ষতি না করা, দুর্নীতি না করা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করা, দিল্লীর আগ্রাসন থেকে রক্ষা, অবাধ বাজারের নামে সাম্রাজ্যবাদী লুন্ঠন বন্ধ করা, ইত্যাদি। বিএনপি এই ন্যূনতম কাজগুলো করবে জনগণ সেই প্রতিশ্রুতি তাঁর কাছ থেকে চায়। এখন আওয়ামী লীগ যদি হঠাৎ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে বসে তাহলে বিএনপি নির্বাচনে যাবার পরিস্থতি সৃষ্টি হলেও এই প্রতিশ্রুতি দেবার সময় পাবে না। কিন্তু তিনি এখনও সুনির্দিষ্ট কোন প্রতিশ্রুতি দেন নি। মনে রাখা দরকার আমরা অবাস্তব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও প্রপাগাণ্ডামূলক কর্মসূচীর কথা বলছি না। বলছি এমন কিছু নীতিগত সংস্কারের কথা যা জনগণকে আশার বাণী শোনায়, এবং যার বাস্তবায়ন তাঁর দল বা আঠারো দলীয় জোটের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যেমন, পঞ্চদশ সংশোধনীর পর যে অগণতান্ত্রিক, নাগরিক ও মানবাধিকার বিরোধী সংবিধান আমাদের ঘাড়ের ওপর বাঘের হিংস্র নখের মতো বসে রয়েছে আর আমাদের ক্রমাগত রক্তক্ষরণ ঘটছে তিনি কিভাবে তার সংস্কার করবেন? কিম্বা আদৌ করবেন কিনা আমরা এখনও জানি না। গণমাধ্যমের ওপর যে নিপীড়ন চলছে সেই নিপীড়নের বিবিধ কালো আইন তিনি বাতিল করবেন কিনা। তিনি মাহমুদুর রহমান, আদিলুর রহমান খানের ওপর দমন নিপীড়নের কথা বলেছেন, অবশ্যই। কিন্তু এই নিপীড়ন বন্ধ করতে হলে তাঁকে তো বিচারব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে, দুষ্ট বিচারকদের হাত থেকে নাগরিকদের মুক্তি দিতে হবে, পুলিশ ও প্রশাসনের ট্রিগার হ্যাপী সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে হবে। ইত্যাদি। তিনি এই সকল সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে কিছুই বলেন নি। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করবেন না বলেছেন, সেটা খুবই ভাল নীতি। একথা তাঁর বারবার বলা দরকার। কিন্তু যারা গণহত্যা করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, মানুষ গুম করেছে, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, আলেম ওলামাদের আলো নিভিয়ে নির্বিচারে হত্যা করেছে, নিজেরা কোরান শরিফ পুড়িয়ে আলেম ওলেমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষমা করে দেবার অধিকার তো জনগণ তাঁকে দেয় নি। প্রতিহিংসা অবশ্যই নয়, কিন্তু ন্যায়সঙ্গত বিচার থেকে কাউকে রেহাই দেবার অধিকার তাঁর নাই। কারুরই নাই। এই প্রত্যাশাগুলোকেই তিনি লম্বা দাবিনামা বা অনর্থক বিশাল তালিকা না বানিয়ে সহজে বলতে পারেন যে একাত্তরে স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করা। তিনি ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের সেই ঘোষণাই বাস্তবায়িত করবেন। আসলেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় স্তরে প্রবেশ করতে চাইছি। জয় শাহবাগ!
এটা সত্য যে তিনি ‘নতুন ধারার রাজনীতি’র কথা বলেছেন এবং বিমূর্ত হলেও তার কিছু রূপরেখা দেবার চেষ্টা করেছেন। ওর মধ্যে আবেগ ও আশা আছে, কিন্তু নতুন ভবিষ্যৎ তৈরীর কোন সুচিন্তিত সূত্র নাই। তবু তিনি যখন নিজের ভুলত্রুটি অকপটে স্বীকার করেন তখন তাঁকে প্রশংসা না করে পারা যায় না। তিনি বলেছেন, “প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, মানুষ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। এবং একথা স্বীকার করতে আমার কোনো দ্বিধা নেই যে, অতীতে আমাদেরও ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে। তবে একই সঙ্গে আমি বলতে চাই যে, আমরা ঐসব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আগামীতে একটি উজ্জল, অধিক স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি সেই প্রবচনের সঙ্গে একমত যে, ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। তাই আমরা অতীতের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করবো না”। এই কথাগুলো আমাদের সোনার অক্ষরে খোদাই করে রাখা দরকার। কারন এই কথার ওপর দাঁড়িয়েই আগামি দিনে জনগণ তাঁকে মূল্যায়ন করবে। কিন্তু চিন্তার বিষয় হচ্ছে বিদেশীদের সন্তুষ্ট রাখবার ভুল ও হীনমন্য নীতি তিনি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। স্বীকার করি, পরাশক্তির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁকে কৌশলী হতে হবে। কিন্তু সেটা দেশের ও জনগণের স্বার্থের বিনিময়ে নয়।
তিনি এতদিন শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আসছেন। আমি অনেকবারই তার সমালোচনা করেছি। তিনি ক্ষমতার রাজনীতি করেন, ক্ষমতায় যেতে চান, এতে কোন অসুবিধা নাই। সেটা অন্যায়ও নয়। তবে আমরা অনেকেই বারবার তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি, বিএনপি কোন বিপ্লবী দল নয়, ফলে এতোটুকুই বিএনপির কাছে আশা করা ন্যায্য যে তাঁরা অতীতের দুর্নীতিপরায়ন চরিত্র ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনা থেকে যথাসম্ভব নিজেদের সংশোধন করে একটা উদার কিন্তু গণতান্ত্রিক নীতির চর্চা করবে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটাও কঠিন কাজ। এর অর্থ হচ্ছে পঞ্চদশ সংশোধনীর পর সংবিধানের যে-দুর্দশা ঘটেছে সেই সংবিধান বহাল রেখে গণতন্ত্র কায়েম ও চর্চা রীতিমতো অসম্ভব। এই সত্য মাথায় রেখেই তাঁকে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। গণ-অভ্যূত্থান ছাড়া বাংলাদেশের জনগণের সামনে আর কোন পথ ক্ষমতাসীনরা রাখে নি। তিনি চান বা না চান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেইদিকে যাবারই সমূহ সম্ভাবনা। বুর্জোয়া দল হিসাবে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের বাধ্যবাধকতার মধ্যে থাকলেও এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করলে তিনি নিজেকে গৌন শক্তিতে পরিণত করবেন। ষাট ও সত্তর দশকে শেখ মুজিবর রহমান আইনী পরিমণ্ডলে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিই করেছিলেন। কিন্তু তা আইন ও নিয়মতান্ত্রিকতার সীমা অতিক্রম করে গণভ্যূত্থান ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়। কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানো যায় না, ঠিক, কিন্তু ফল পেকে গেলে সেটা পাড়তে না পারলে সেই ফল বাদুড়ের খাদ্য হয়।
বাংলাদেশের মানুষ এখন বেগম জিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি কি বলবেন না বলবেন সেটা তাঁকে অনেক সাবধানে ও বহু কিছু বিবেচনা করে বলতে হবে। পরাশক্তি তাঁকে ক্ষমতায় আনবে না, জনগণই আনবে। যদি তারা চায়। পরাশক্তি যদি কাউকে আনে তবে তারা হচ্ছে তথাকথিত ‘তৃতীয় শক্তি’। তিনি নন। যারা এলে এবার দুই বছর নয়, আরও দীর্ঘকাল থাকবে। আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে তথাকথিত তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপের ম্ভাবনা সবসময়ই থাকবে। অতএব ঢাকার কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে সৌহার্দ থাকুক, কিন্তু তাদের হাত ধরে চলার নীতি বেগম জিয়াকে ত্যাগ করতে হবে। বিশেষত তিনি যদি বলেন যে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অন্যায়, সহিংস ও মানবতা বিরোধী যুদ্ধে তিনি বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে লড়বেন, তাহলে ইসলাম ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের জনগণ তাঁর পেছনে দাঁড়াবে কেন? শেখ হাসিনা এই নীতি নিয়েছেন বলেই জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করছে। আর যারা এই নীতির সমর্থক তারাই বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি। এই সরল কাণ্ডজ্ঞান আমরা যেন না হারাই।
২৫ অক্টোবর ২০১৩/ ১০ কার্তিক, ১৪২০। শ্যামলী।