নারী শ্রমিক ও নারী আন্দোলন
তোবার আন্দোলনকারী ও অনশনরত শ্রমিকদের নির্মম নির্যাতন করে যেভাবে পুলিশ তোবা গার্মেন্ট ফ্যাক্টরী ‘মুক্ত’ করলো তার বিস্তারিত বর্ণনা গণমাধ্যমে এসেছে। নারী আন্দোলনের কর্মীদের তা প্রচণ্ড বিক্ষুব্ধ করেছে, তা বলাই বাহুল্য। নির্যাতনের বর্ণনা বিভিন্ন পত্রিকায় দেয়া আছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাবার সময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের নেত্রী মোশরেফা মিশু সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিলের নেতৃত্বে পুলিশ তাদের ভবন থেকে বের করে দিয়েছে। ভবন থেকে বের না হলে অনশনরত নারী শ্রমিকদের ধর্ষণ করার হুমকি দিয়েছেন।”
একই সাথে তোবার আর একজন শ্রমিক হাফসা সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রীও একজন নারী। তাইলে সরকারের একজন ওসি মহিলা শ্রমিকগো রেপ (ধর্ষণ) করার কথা কওনের সাহস পায়!” অন্য সব পত্রিকা এই কথাটির উল্লেখ না করলেও নারী শ্রমিকদের টেনে হিঁচড়ে বের করার দৃশ্য বর্ণনা রয়েছে। একটি টিভি চ্যানেলে মিশুকে বের করে নেয়ার সময় সাংবাদিকদের মিশু যে কথা বলেছেন তার মধ্যে এই কথা বলতে আমি নিজেও শুনেছি। নারী শ্রমিকদের ধর্ষণের হুমকি সরাসরি নারী নির্যাতনের মধ্যেই পড়ে এবং সেটা যদি আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সদস্যের পক্ষ থেকে করা হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কিনা সেটা অবশ্যই আমাদের দেখতে হবে। (দেখুন, দৈনিক প্রথম আলো ৮ আগস্ট, ২০১৪ তারিখে ‘চাপ-পিটুনি, পরে বেতন’ শীর্ষক প্রতিবেদন)
শনিবার (৯ আগস্ট) পত্রিকা খুলে দেখেছি পুলিশের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ আসে কিনা যে এমন কথা কোন পুলিশ সদস্য বলেন নাই, কিংবা পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। কারণ যদি কথাটি সত্য হয় তাহলে এটা এক মারাত্মক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে, যা কোন আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আশা করা যায় না। আর যদি পুলিশ তা না বলে থাকে তাহলে এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমান করা তাদের দায়িত্ব। তবে এটা পরিষ্কার সরকার আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেবার জন্য কঠোর অবস্থানে ছিল। সেই ক্ষেত্রে এমন কথা বলে নারী শ্রমিকদের ধমক দিলে অবাক হবার কিছু নাই। যুদ্ধ এবং যে কোন সংঘাতমুলক পরিস্থিতিতে ক্ষমতাবানরা এই ক্ষমতার প্রয়োগ অবশ্যই করে থাকেন, নারীদের এই ইতিহাস ভালই জানা আছে। তার নজির সবখানেই আছে। এখানে পুলিশ সেই কাজ করবার হুমকি দেয় নি, তার প্রমাণ পুলিশকেই করতে হবে। পুলিশ কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভাবমুর্তি নিয়ে আদৌ চিন্তিত কিনা সন্দেহ হয়।
শুধু ধর্ষণের হুমকি নয়, নারী শ্রমিকদের ওপর শারিরীক নির্যাতন করা হয়েছে। তোবা গার্মেন্টের অনশনরত শ্রমিকদের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়, তাদের চোখে মুখে পিপার স্প্রে মারা হয়েছে। এটা অবশ্যই শারীরিক নির্যাতন। শ্রমিকরা কাজ করেছে, কিন্তু তাদের বেতন দেওয়া হয় নি, শাস্তি পাবার কথা গার্মেন্ট মালিকদের, কিন্তু নির্যাতন করা হচ্ছে শ্রমিকদের। এই এক অদ্ভূত দেশ। ‘পুরুষতন্ত্র’ কথাটা নারী আন্দোলনে বলা হয়, কিন্তু তাকে শুধু ব্যাক্তি হিসাবে নারীর হীনাবস্থা হিসাবে দেখলে চলে না, সেটা তখন মধ্যবিত্ত নারীর ব্যক্তিতান্ত্রিক চেতনার বলয়ে প্রায়ই আটকা পড়ে যায়। কিন্তু নারী শ্রমিকের ওপর গার্মেন্ট মালিক ও সরকারের যৌথ হামলা – যেখানে নারীকে ধর্ষণ করবার কথা পুলিশ নির্ভয়ে মুখে উচ্চারণ করতে পারে – সেখানে পুরুষতন্ত্র যে চেহারাটা দেখায় সেটা আরও ভয়ংকর ও কুৎসিত। তাকে হাতেনাতে চিনতে হবে নারীকে। এটা আরও ভালো বোঝা যাবে যদি আমরা মনে রাখি কাজ করার পরেও বেতন না দেবার যে অন্যায় গার্মেন্ট মালিকরা করে, তার প্রতিকার পাবার কোন আইনী উপায় শ্রমিকদের নাই। এটা শ্রমিককে লড়ে আদায় করতে হচ্ছে।
ন্যায্য দাবীতে শ্রমিকদের আন্দোলন, যার অধিকাংশই নারী -- তাকে নস্যাত করার ঘৃণ্য চেষ্টা পুরুষতান্ত্রিক, কিন্তু একই সঙ্গে এটা কাপুরুষোচিত – এই স্ববিরোধিতা তাৎপর্যপূর্ণ। পুরুষতন্ত্র নারীকে ‘অবলা’ গণ্য করে, কিন্তু এখানে অনশনরত ও আপাদমস্তক নিরস্ত্র ও অহিংস নারীকে সে বিপজ্জনক গণ্য করছে। নারী এখানে ‘অবলা’ নয় মোটেও। পুরুষতন্ত্রের চিৎকার নারী পুরুষের দিকেই ছুঁড়ে দিয়েছে। ফলে নারী শ্রমিককে লাঠি দিয়ে নির্বিচারে আঘাত করে, জোর করে অনশনরত অসুস্থ নারীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার মধ্যে পুরুষের বীর রস ও বীরত্ব এক প্রচণ্ড অট্টহাসির বস্তুতে পরিণত হয়েছে। ন্যায্য দাবীর মূখে নিজেদের নৈতিক মনোবল নেই বলে দুর্বলের ওপর ক্ষমতা প্রয়োগের ব্যর্থ চেষ্টার দিকটি বোঝা কঠিন কিছু নয়। একমাত্র শ্রমিক নারীই রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের মুখে পুরুষতন্ত্রকে এই অপরিসীম ঠাট্টার অধঃপতনে ছুঁড়ে দিতে পারে। নারী আন্দোলনের কর্মীদের এই শিক্ষা লাভ হলেই নারী শ্রমিকদের এই আন্দোলন যথার্থ হবে। আমি এটাই মনে করি।
শ্রমিকদের শক্তি তাদের ন্যায্য দাবী। ন্যায্য কোন বিপ্লবী অর্থে নয়, বিমূর্ত হিসাব নিকাশেরও ব্যাপার নয়। তারা কাজ করেছেন বলেই বকেয়া বেতন চাচ্ছেন। কাজ না করে কেউ এখানে বেতন চাওয়ার আবদার করছে না। কাজেই এখানে শ্রমিকের চেয়ে শক্তিশালী আর কেউ নেই। সাধারণ মানুষও তাদের এই দাবী সমর্থন করে। অন্যদিকে মালিক পক্ষের শক্তি রাষ্ট্রযন্ত্র, পুলিশ – প্রয়োজনে র্যাব, বিজিবি কি মিলিটারি! তারা যে কোন প্রকার সশস্ত্র বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়ে শ্রমিককে হঠিয়ে দিতে পারে। বল প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুরুষ কিন্তু শুধু তার দ্বারা ক্ষমতার পুরুষতান্ত্রিক চরিত্র আমরা বুঝবো না। আন্দোলনকারীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশী বলে নারী পুলিশও বেশী সংখ্যক দেয়া আছে, বায়লজি এখানে ক্ষমতার চরিত্র নির্ণয় করছে না। নগ্ন বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হয়ে পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও দেখছি আমরা। নারী পুলিশ তাদের লাঠিয়াল বাহিনী মাত্র! তাদের হুকুম দিলে তারা নারীদের টেনে হিঁচড়ে নিতে সহায়তা করেন। বাহ। তাদের এই টানা হিচড়ানোর কাজ খুব দক্ষতার সঙ্গে করা না হলে পুরুষ পুলিশ এসে নারীদের হেনস্থা করতে ছাড়েন না। পত্রিকায় প্রকাশিত কয়েকটি ছবি একত্র করলেই এই চিত্র পরিস্কার দেখা যাবে। তবে কিছু পত্রিকায় নারী শ্রমিক ও নেত্রীদের ছবি যেভাবে ছাপানো হয়েছে তা খুবই আপত্তিকর মনে হয়েছে।
বায়োলজি ক্ষমতার চরিত্র নির্ণয় করে না, সেটা সমাজের চিন্তাচেতনা, সমাজ গঠনের নানান সম্পর্ক ও তাদের টানাপড়েনের সঙ্গে যুক্ত। সর্বোপরি নগ্ন বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হয়ে পুরুষের পাশাপাশি নারী যখন দাঁড়ায়, তখন পুরুষতন্ত্র আর শরীরতত্ত্বের তর্ক হয়ে থাকে না...। সেটা সমাজ, ক্ষমতা ও রাষ্ট্রের তর্কে পরিণত হয়।
নারী শ্রমিকদের প্রতি এ অবমাননা নারী আন্দোলনের কোন কর্মীরই কোন মতেই সহ্য করা উচিত নয়। ধর্ষণ করা হবে এই নোংরা ঘোষণা যে কোন নারীর জন্যে শোনাই অবমাননাকর। নারীর দিক থেকে দেখলে কাউকে গুলি করে মারার চেয়েও এই অমর্যাদার হুমকি ভয়ানক এবং বড় অপরাধ হিশেবে গণ্য হওয়া উচিত। তাছাড়া তোবা গার্মেন্টের শ্রমিকদের এবং তাদের নেত্রীদের যেভাবে টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় নামানো হয়েছে তা শারীরিক নির্যাতনের মধ্যেই পড়ে। নারী পুলিশ এই ক্ষেত্রে পুরুষদের মতোই আচরণ করেছে। নারী শ্রমিক ও তাদের নেতৃবৃন্দকে যেভাবে তারা ধরে নিয়ে যাচ্ছে তাতে মনে হয় যেন কোন বড় অপরাধীকে ধরেছে তারা। কাজ করবার পরেও বেতন যে পায় নি তার প্রতি সমবেদনা ও সহানুভুতি দূরের কথা, বরং উল্টা তারা বকেয়া বেতন কেন চাইলো তার জন্য নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ আছে বলেই পুলিশ এই কাজ করেছে।
বকেয়া বেতন পাওয়ার জন্যে আন্দোলন করা কি অপরাধ? শ্রমিকরা কাজ করে পেটের দায়ে, তাদের উপার্জন করে খেতে হয়। ফ্যাক্টরীগুলো সব ঢাকা শহরে বা তার আশে পাশে। গ্রাম ছেড়ে এসে তারা বাসা ভাড়া করে থাকে। দৈনন্দিন জীবন চালাতে খুবই কম খরচে চলতে শেখে এই নারী শ্রমিকরা। তবুও বাড়ী ভাড়া দিতে হয় মাসে মাসে, চাল-ডাল কিনতে হয়, অসুখ হলে (ডাক্তার নয়) ফার্মাসীতে গিয়ে ওষুধ কিনতে হয় নগদ টাকায়, কখনো বাকিতে। তাদের বাড়ী ভাড়া দিয়ে বাড়ীওয়ালারা ভাল ব্যবসা করছে, ভাড়া ঠিক মতো না দিলে গালমন্দও শুনতে হয় নিয়মিতভাবে। বিজিএমইএ কি করে বুঝবে এই কষ্ট, কারণ তাদের রয়েছে নিজস্ব ফ্ল্যাট বাড়ী। তাদের মুদির দোকান থেকে বাকিতে খেতে হয় না, বড় বড় শপিং সেন্টারে গিয়ে সকল ধরণের খাবার তাদের জন্যে রয়েছে। এই তুলনা করার দরকার ছিল না, কিন্তু এই জন্যে করতে হচ্ছে যে শ্রমিকরা দু’তিন মাস বেতন না পাওয়ার অর্থ হচ্ছে তাদেরকে বাড়ীওয়ালা, মুদির দোকান সব খানে জবাব দিতে হচ্ছে। অন্যান্য গার্মেন্টে বেতন দেয়া হয়েছে তোবায় দেয়া হয়নি, এই কথা ১৬০০ গার্মেন্ট শ্রমিকদের বাড়ীর মালিক নাও মানতে পারে। তাদের ঘর থেকে বের করে দিলে কিছু করার নেই। বাধ্য হয়ে তারা অনশনে নেমেছে! আবার তারা যখন বেতন নিতে বিজিএমইএ তে গেছে তখন অনেকে বলছে তাদের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। আসলে আন্দোলন ও অনশন ছাড়া বিজিএমইএ-র কাছ থেকে বকেয়া বেতন আদায় করা যেত না। অর্থ কষ্ট শ্রমিককে অসহায় করে দেয়, আন্দোলনেও বিভক্তি আনে। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে এক শ্রমিক পত্রিকার সাংবাদিককে বলেছে,‘আমাদের টাকা দরকার। তাই নিতে এসেছি। কেউ নিতেও বলেনি;কেউ বাধাও দেয়নি।’ যারা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল, তারা অবিচল ছিল, তাই তারা বিজিএমইএ চেয়ার-টেবিল সাজিয়ে নিজেদের কার্যালয়ে প্রস্তুত থাকলেও যথেষ্ট পরিমানে শ্রমিকরা সাড়া দেয়নি। টানা ১০ দিন অনশনে থেকেও তারা অনড় ছিল। তাদের দাবি দুই মাসের বেতন নয় একবারে তিন মাসের বেতন দিয়ে দেয়া হোক। কিন্তু শ্রমিকরা যায়নি বলে পুলিশ অনেক “তালা” নাটক করেছে। বিজিএমইএ দিচ্ছে শুধু দুই মাসের। কেন এই বঞ্চনা? তাদের প্রাপ্য বেতন, ওভারটাইমের টাকা ও বোনাস দিতে এই গড়িমসি কেন? কেন সরকার নিজে এগিয়ে আসছে না?
নারী ডাক্তাররা এসেছেন অনশনরত শ্রমিকদের সেবা দিতে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে নানান পেশার নারীদের মধ্যে ঐক্যের জায়গাগুলো চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটি পাঁচটি দাবিতে অনশন করেছে। এগুলো হলো পুরো তিন মাসের বেতন-বোনাস ও ওভারটাইম সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করা, তোবার কারখানা সচল করে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, তোবার মালিক দেলোয়ার হোসেনের জামিন বাতিল করে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করা,তাজরীন ফ্যাশনসের নিহত ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা প্রদান এবং আন্দোলনরত শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিপূরণ প্রদান। দাবি মানা হয়নি, হচ্ছে না, হবে কিনা তাও সন্দেহ। তোবার মালিককে ছেড়ে দিয়ে সরকার ও বিজেওএমইএ প্রমাণ করলো তারা অপরাধীর পক্ষ নিচ্ছে। অন্যদিকে গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রতি সরকার, প্রশাসন ও বিজিএমইএর অমানবিক আচরণ প্রমাণ করছে গার্মেন্ট সেক্টরে অশান্তি ও শ্রমিক অসন্তোষ উসকে দেবার ক্ষেত্রে তারাই দায়ী। শ্রমিকেরা নয়। অসন্তোষ আরো বাড়বে। আর যদি নারী শ্রমিকদের প্রতি অবমাননা চলতে থাকে, তাদেরকে অনায়াসে ধর্ষণের হুমকি দেয়া যায় তাহলে আন্দোলন বলাবাহুল্য শুধু শ্রমিকদের পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকবে না। নারী আন্দোলনের বিষয় হয়ে উঠবে। সমাজের সব স্তরে তা ছড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশের নারী আন্দোলন এখনও শ্রমিক আন্দোলনকে নারীর দিক থেকে বিচার ও আত্মস্থ করবার পরিপক্কতা অর্জন করে নি। নারী শ্রমিকের সংগ্রাম বাদ দিলে নারী মুক্তির ধারণা ব্যক্তিতান্ত্রিক চিন্তা চেতনার অধিক কিছু হয়ে উঠতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশের নারি আন্দোলন এ ব্যাপারে সজাগ। এই অভাবটুকুর তীব্র উপলব্ধি শ্রমিক আন্দোলন ও নারী আন্দোলন উভয়কেই জাতীয় রাজনীতিতে আরও কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখতে অনুপ্রাণিত করবে। এই আশা রাখি।
তোবা গ্রুপের আন্দোলন ও অনশনে নারী নেত্রীদের অংশগ্রহণ ও সংহতি প্রকাশ এই দিকটিকে দ্রুত বিকশিত করুক, সেই কামনা করি।
১২ অগাস্ট ২০১৪। ২৮ শ্রাবণ ১৪২১। শ্যামলী।