ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ নারী নেতৃত্ব


ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল ঐতিহাসিক আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মিছিলে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছেন, আন্দোলন করেছেন, কিন্তু তাঁদের স্বীকৃতি দিতে ইতিহাস সবসময়ই কার্পণ্য করেছে। কিন্তু এবার ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (বা ইংরেজি সংক্ষিপ্ত নাম ডাকসু) নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ছাত্রীরা যে ভূমিকা রেখেছেন, তা সবার নজর কেড়েছে। তাদের লাল সালাম জানাই। নারী আন্দোলনের একজন কর্মী হিশেবে আমি গর্ব বোধ করছি। আর একটি ইতিহাস রচনা হচ্ছে যেখানে নারীর অবদান খোঁজার জন্যে হারিকেন নিয়ে বেরুতে হবে না; তাদের অবদান জ্বলজ্বল করে সবার চোখের সামনে ফুটে উঠেছে। এটা ২০১৯ সাল, এখন নারীর অবদান ঢেকে রাখার সুযোগ নেই। আমরা যা ঘটছে সাথে সাথেই জানতে পারছি।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন(?) হয়েছে ১১ই মার্চ, ২০১৯ তারিখে। এর আগে ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে জাতীয় সংসদ ‘নির্বাচন’ হয়েছে কি হয় নি, এমন একটা সংশয় নিয়ে দেশের মানুষ আছে। ভোট ডাকাতির অভিযোগ, নানা রকম নির্যাতনের মহড়া সারা দেশের মানুষের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও দেখেছেন। তাদের অনেকেই প্রথম বার ভোটার হয়েও ভোট দিতে পারেন নি। কাজেই ডাকসু নির্বাচনে সরাসরি নিজেদের শিক্ষা জীবনের দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার এই সুযোগ ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ হারাতে চায় নি। এই নির্বাচনের কোন প্রকার অভিজ্ঞতা এই প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের কারো নেই। তাদের বাবা মায়েরা হয়তো এমন নির্বাচন করেছেন; বড় ভাই বোনেরাও সেই সুযোগ পায় নি। তাই ভোটের লাইনে তাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। অন্যদিকে সারা দেশে একই সময়ে উপজেলা নির্বাচন চলছে ঢিমে তালে, ভোটারের কোন আগ্রহ ছাড়া নিরামিশের মতো। অথচ গ্রাম পর্যায়ে এই নির্বাচন কত উৎসব মুখর হয় এর আগে যেসব নির্বাচন হয়েছে জনগণ তা দেখেছে। মানুষ নির্বাচনেই আগ্রহ হারিয়েছে, প্রহসন আর দেখতে চায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট সেই দিক থেকে ভিন্ন তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের কথা ছাড়া অন্যান্য দল, জোট বা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কোন দাবি মেনে নেয় নি। এর মধ্যে একটি অন্যতম প্রধান দাবি ছিল ভোট কেন্দ্র হলে না করে ক্লাস রুমে করার, যেন সকল ছাত্র-ছাত্রীরা সমান সুযোগ পায়। শেষ পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনে হলের ভেতরের পরিস্থিতিই ছাত্রীদের বাধ্য করেছে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। এখানেই ছাত্রীদের নেতৃত্বের লক্ষণ আমরা টের পেতে শুরু করি।

নির্বাচনের আগে গণমাধ্যম ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রীদের ভূমিকা নিয়ে কিছু পরিসংখ্যানগত পূর্বাভাস দিয়েছিল। যেমন প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন (৬ মার্চ, ২০১৯) শিরোনাম করেছে “জয়ে মূল ভূমিকা রাখবে ছাত্রীদের ভোট”। ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪২ হাজার ৯২৩। এর মধ্যে শতকরা ৬০% ছাত্র-ছাত্রী ১৮টি আবাসিক হলগুলোতে থাকেন। ছাত্রীদের হল সংখ্যা ৫টি, এখানে ভোটার ৭ হাজার ৭৯৪ জন। ছাত্রীদের মধ্যে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৩৮২ জন। যদিও ছাত্রীদের বেশির ভাগ হলের বাইরে থাকছেন তবুও যারা হলে আছেন তাদের অবস্থান হলে থাকা ছাত্রদের চেয়ে ভিন্ন। গত দশ বছরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগ বিশ্ববিদ্যালয় হল গুলোতে আধিপত্য চালিয়েছে। সাধারণ ছাত্ররা হলে থাকতে হলে ছাত্র-লীগের নিয়ন্ত্রণে সীট পেতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখানে গণ রুম ও গেস্ট রুমের ভয়াবহ নির্যাতনের কথা অনেকটা ওপেন সিক্রেটের মতো হয়ে আছে। অন্যদিকে ছাত্রী হলে সিট বরাদ্দের বিষয়টি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকায় এমন কাহিনী সেখানে নেই, যদিও ছাত্র-লীগের নারী নেত্রীদের দাপট সহ্য করতে হয়েছে সাধারণ ছাত্রীদের। ছাত্র হলের সাধারণ ছাত্রদের, ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়, ছাত্র লীগের সাথে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে হয়েছে, সেখানে ছাত্রী হলের মেয়েরা নিজেদের মুক্ত রাখতে পেরেছেন। এর একটি সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায় প্রার্থী তালিকা দেখে। ছাত্রীদের প্রতিটি হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র প্যানেল দিয়েছে, অথচ ছাত্রদের ১২টি হলের কোনটিতে কোন স্বতন্ত্র প্যানেল নেই। প্রথম আলো জানিয়েছে ছাত্রীদের পাঁচটি হলের প্রতিটিতেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র প্যানেল দিয়েছেন। কুয়েত মৈত্রী হলের দুটো প্যানেলের প্রতিটি প্যানেলে ভিপি ও জিএসসহ সাতটি পদেই প্রার্থী দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বাকি চারটি হলের প্রতিটিতেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি করে প্যানেল রয়েছে।

রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন হিশেবে বাংলাদেশ ছাত্র-দল গত ১০ বছরের নিস্ক্রিয়তা এবং খোদ বিএনপির সাংগঠনিক বেহাল দশা থাকার কারণে তাদের সব হলে পূর্ণ প্যানেল দিতে পারে নি, এবং প্রচারের কাজেও চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারে নি। কাজেই ছাত্র লীগের সাথে সত্যিকার অর্থে ছাত্র দলের প্রতিযোগিতা ছিল না; বরং ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে জনপ্রিয়তা পাওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাথে। বলা বাহুল্য, এই প্যানেল ছাত্রীদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পেয়েছে।

এসব গুরুত্বপুর্ণ তথ্য সংবাদমাধ্যম দিয়েছে এবং তারা বুঝতে পেরেছে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রীরা একটা বিরাট ফ্যাক্টর হয়ে আছেন। কিন্তু হয়তো অনেকেই ধারণা করতে পারেন নি, নির্বাচনের সময় অনিয়ম ঠেকাতে এই “অ-সাধারণ” ছাত্রীরা পুরো নির্বাচনের মূখোশ খুলে দিয়েছে। যে কাজ জাতীয় নির্বাচনের বড় এবং অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দল এবং জোট করতে পারে নি, ছাত্রীরা তা করে দেখিয়েছেন। সাব্বাশ।

এগারো মার্চ, নির্বাচন শুরু হতে না হতেই টেলিভিশনে ব্রেকিং নিউজ - কুয়েত মৈত্রী হলের ভোট ডাকাতি ধরা পড়ার বিষয় হাতে নাতে ধরে ফেলেছে ছাত্রীরা। এই হলে যথারীতি সকাল ৮টার আগেই ভোট দেয়ার জন্যে ছাত্রীদের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। প্রার্থীরা হল প্রভোস্টের কাছে তাঁদের সামনে ব্যালট বক্স, (যা স্বচ্ছ বাক্স নয়) খোলার দাবি করেন। কিন্তু তিনি তাঁদের সামনে বাক্স খোলেন নি। প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট মিলে ব্যালট বাক্স হলের রিডিংরুমে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে ছাত্রীরা গিয়ে রিডিং রুম থেকে বস্তাভর্তি ব্যালট পান। এসব ব্যালটে ছাত্রলীগের হল সংসদের প্রার্থীদের পক্ষে ক্রসচিহ্ন বা ভোট দেওয়া ছিল। ছাত্রীরা তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। এক পর্যায়ে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীও স্বীকার করে বলেন ‘সিল মারা ব্যালটের সত্যতার প্রমাণ আমরা পেয়েছি।’ এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ এসে এ হলে ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন। এবং হল প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহানকে অপসারিত করে অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ করা হয়। যদিও মনে হতে পারে প্রশাসন খুব আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছে, আসলে এছাড়া তাদের আর কিছু করার উপায় ছিল না, কারণ ছাত্রীদের অভিযোগ শতভাগ সত্যি ছিল। এবং তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। হলে পুনরায় ভোট শুরু হয় ১১.১৫ মিনিটে।

এদিকে রোকেয়া হলেও ঘটে গেল আর একটি অনিয়মের ঘটনা। রোকেয়া হলে মোট ভোটার ৪ হাজার ৬০০ জন; এখানে নয়টি ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার সময় ছয়টি ব্যালট বাক্স দেখানো হয়। ছাত্রীরা প্রশ্ন তোলেন বাকি তিনটি ব্যালট বাক্স কোথায় গেল। জানা গেল পাশের একটি কক্ষে ওই তিনটি ব্যালট বাক্স রাখা হয়েছে। ছাত্রীরা কক্ষটির দরজা ভেঙে ওই তিনটি ব্যালট বাক্স বের করে বাইরে নিয়ে আসেন। পরে তাঁরা ওই ব্যালট বাক্সগুলোর তালা ভেঙে দেখেন, সেগুলোয় ব্যালট পেপার ভরা। যদিও সেগুলোয় কারও পক্ষে ভোট দেওয়া ছিল না। ছাত্রীরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার আন্দোলনের ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুর সেখানে গেলে তাকে ছাত্রলীগের নারী কর্মীরা মারধর করেন। অনিয়মের অভিযোগে রোকেয়া হলে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ প্রথমে স্থগিত রাখা হয়, এবং পরে পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়।


 


শামসুন্নাহার হলের মেয়েরা, বিশেষ করে প্রার্থীরা, সারারাত জেগে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিয়েছেন। দিনের বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা নজরদারিতে রেখেছিলেন। এখানে কারচুপি করার কোনো সুযোগ ছিল না। খুবই সংগঠিত ভাবে, নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে, কাজ করেছেন। ভেতরে কলাপসিবল গেট বন্ধ করা সত্ত্বেও মেয়েরা কয়েকজন তিন ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে প্রভোস্টের অফিস রুমে রাখা ব্যালট বক্স এবং অনার্স বিল্ডিং এবং মিট বিল্ডিংয়ের মাঝখানে টিভিরুমে স্থাপিত ভোটকেন্দ্র সারারাত জেগে পাহারা দেন। তাদের ইচ্ছা একটি ভাল নির্বাচন হোক।

মেয়েদের সতর্ক অবস্থানের কারণে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বা ছাত্র লীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জাতীয় নির্বাচনের মতো কারচুপি করে পার পায় নি। সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। শিক্ষার্থি-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যেও আস্থাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে মেয়েদের প্রতিবাদ শেষ হয় নি।

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রোকেয়া হলের পাঁচ শিক্ষার্থী কারচুপির অভিযোগ থাকা রোকেয়া হল সংসদ নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন এবং হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদার পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে পাঁচ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। অন্য দুটি দাবি হচ্ছে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীসহ ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা ৪০ জনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং আন্দোলনে অংশ নেওয়া হলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

রোকেয়া হল সংসদে মোট ১৩টি পদে ছাত্রলীগ জিতেছে ১১টি, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছে ২টি পদে। এই পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজন হল সংসদে প্রার্থী ছিলেন৷ অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রাফিয়া সুলতানা, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সায়েদা আফরিন, একই বিভাগের জয়ন্তী রেজা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শ্রবণা শফিক দীপ্তি ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রমি খিশা৷ এই সাহসী শিক্ষার্থীদের নাম সকলের জানা থাকা দরকার।

মেয়েদের ৫টি হল সংসদের নির্বাচনের ফলাফল হচ্ছে চারটির ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, জিএস পদের তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী, ২টি পদে ছাত্র লীগ। কুয়েত মৈত্রী হলের ভিপি-জিএস সহ সব পদেই স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তবে সুফিয়া কামাল হল সদস্য পদে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েও লামইয়া তানজিন তানহা ডাকসু নির্বাচনের সার্বিক ফল বাতিল চেয়েছেন। সামগ্রিকভাবে ডাকসু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন তানহা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এবং এতো প্রতিকুল অবস্থায় কোন প্রকার পুর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই সাধারণ ছাত্রীরা যে নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এদের কারো কারো আন্দোলনের হাতেখড়ি হয়েছে কোটা আন্দোলনের সময়, কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় হয় নি, হয়েছে স্বতঃস্ফুর্তভাবে। এরই সুফল তারা ডাকসু নির্বাচনে দেখিয়েছে। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ওপরেই আস্থা রেখেছে বেশি। তবে বাম রাজনৈতিক জোটের ছাত্রীদের মধ্যে কিছুটা রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল। তাদের মধ্যেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে।

এই ছাত্রীরা নেতৃত্বে এসে গেছেন; তাদেরকে এখন আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভাবতে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে। কোন কিছুই একটি গোষ্ঠির নিজস্ব বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে সার্বিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির সম্পর্ক থাকে। কাজেই ছাত্রীরা চাইলেই নিজেদের সার্বিক আন্দোলন থেকে দূরে রাখতে পারবেন না। আমরা নতুন নেতৃত্বের বিকাশ দেখতে চাই। আশা জাগছে, নিশ্চয়ই পাবো।

১৫ মার্চ ২০১৯। শ্যামলী।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।