৪. বিএনপির 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা'


বিএনপি ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন ‘জাতীয় ঐকমত্য’ চায়। কিন্তু ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন ‘জাতীয় ঐকমত্য’ বলতে বিএনপি কি বোঝে? কিম্বা আমরাই বা এর দ্বারা কি বুঝেছি? ‘দেশ প্রেম’, 'জাতি' ‘জাতীয় ঐক্য’ ইত্যাদি আবেগী ধারণা। রাজনীতিতে আবেগের দরকার হয়, তার ব্যবহার আছে। সাধারণ মানুষের কাছে দেশ অরধানত তার 'আবাস', তার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ, সংস্কৃতি, ইত্যাদি। কিন্তু লুটেরা ও ধনী শ্রেণীর কাছে দেশ নিছকই তাদের অর্থ-সম্পদ বৃদ্ধি ও ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি স্ফীত করবার উপায় মাত্র। তারা চাইলেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারে। সাধারণ মানুষে কাছে সেটা সম্ভব না। তাই তার নিজের আবাস ও জীবন জীবিকা রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষকে দেশের কথা ভাবতে হয়। ধনী ও লুটেরা শ্রেণীর তার দরকার হয় না। তারা চাইলে যে কোন দেশেই তাদের ধন সম্পদ নিয়ে পাড়ি দিতে পারে। তাহলে এটা বোঝার দরকার আছে যে 'দেশ' বলতে বিএনপি জনগণের 'আবাস', জীবন, জীবিকা ইত্যাদি বোঝে কিনা। 'আবাস' মানে শুধু ভূগোল নয়। প্রাণ, প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঙ্গে জনগণের সম্বন্ধ। তাহলে রাজনৈতিক  অর্থে দেশপ্রেম মানে সবার আগে সাধারণ মানুষের আবাস ও জীবন জীবিকা নিশ্চিত করবার অঙ্গীকার এবং সেটা প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার মধ্য দিয়েই নিশ্চিত করা যায়। 

পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের কালে 'দেশপ্রেম' কথাটা পুঁজির বিশ্বব্যাপী মুনাফা কামানো এবং পুঁজির স্ফীতি ও বিস্তৃতির বিপরীতে জনগণের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করবার জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়ন বোঝায়। কোন বিমূর্ত বা রহস্যময় সত্তার প্রতি আবেগ বা ভালবাসা বোঝায় না। কিন্তু ধনী ও লুটেরা শ্রেণী জনগণের আবেগ নিয়ে খেলতে ভালবাসে কারন এর দ্বারা জনগণকে ইচ্ছে মতো নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো যায়। বাংলাদেশ বিশ্ববাজারের বাইরের কোন দেশ না। জাতীয় অর্থনীতি বিশ্ববাজারের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। বিএনপি আওয়ামী লীগের মতোই কাছাখোলা অবাধ বাজার ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশকে বহুজাতিক কোম্পানির মুনাফা কামাবার সহজ ক্ষেত্রে পরিণত করতে আগ্রহী। আওয়ামী লীগ এক কাঠি সরেস হলেও উভয় দলই নয়া উদারনৈতিক অর্থনীতি (neo-liberal economic policy) মনে প্রাণে বাংলাদেশে বাস্তবায়িত করতে আগ্রহী। জিয়াউর রহমান ও বিএনপির নেতৃত্বেই আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের অবাধ বাজার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের উন্নীত হবার নীতি -- বিশেষত কাঠামোগত সংস্কারের কালপর্ব শুরু হয়। বিএনপির আমলেই সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বাংলাদেশকে ভারতীয় পণ্যের বাজারে পরিণত করেন। বাংলাদেশে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চুক্তি ও নিয়মনীতির অধীনস্থ হয়। দেখা যাচ্ছে 'দেশ', 'দেশপ্রেম' ইত্যাদি  আবেগী ও অপরিচ্ছন্ন শব্দ দ্বারা পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের পরিপ্রেক্ষিতে কিভাবে বাংলাদেশের ভূগোল, পরিবেশ, প্রাণ প্রকৃতি এবং সর্বোপরী জনগণের জীবন ও জীবিকা য়ামরা নিশ্চত করব সেই কঠিন প্রশ্ন আড়াল হয়ে যায়। আবেগ দ্বারা  বাংলাদেশের জনগণের জীবন জীবিকা নিশ্চিত করবার প্রশ্ন এবং প্রাণ প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার কর্তব্য অস্বীকার করা হয়। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের কালে দেশ মানে বিশ্ববাজারের চরম প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে জাতীয় অর্থনীতি, জাতীয় বাজার, জনগণের জীবন ও জীবিকা এবং প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ সুরক্ষার ব্যবস্থার ভাবনা। এই ভাবনা বাদ দিয়ে 'দেশ', 'দেশপ্রেম' ইত্যাদি কোন অর্থ বহন করে না। বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখায় আবেগের খোলসটুকু ছাড়া  দেশ প্রেমের বাস্তব কোন ইঙ্গিত বা অঙ্গীকার নাই।

তারপরও আমরা ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্র  কাঠামো মেরামতের দাবি নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের মাঠে থাকা বিএনপির প্রতি সদয় থাকতে চাই।  বিএনপিকে হয়তো এই মূহূর্তে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারকেই প্রাধান্য দিতে চায়। আন্দোলনের স্বার্থে আমরা সেই ক্ষেত্রে বিএনপির দোষ ধরতে চাই না।  ইঙ্গিত রয়েছে যে একটি জাতীয় সরকার কায়েম করা গেলে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা জাতীয় ক্ষেত্রে আন্তরিক তর্কবিতর্ক করতে সক্ষম হব।  এটা অবশ্য পরিষ্কার হয়ে যাওয়া উচিত আবেগ দিয়ে দেশপ্রেম হয় না। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের কালপর্বে দেশ, দেশপ্রেম ইত্যাদি যে অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাত্মক রাজনৈতিক বিষয়ে পর্যবসিত হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের দ্রুত হুঁশিয়ার হয়ে উঠতে হবে।  'দেশ', 'জাতি', 'দেশপ্রেম' ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। কিন্তু তারা চিরায়ত কোন ধারণা না। যে ভুগোল কল্পনা এবং সমাজ ও ইতিহাসের অনুষং মনে রেখে একসময় 'দেশ' ধারণার উৎপত্তি ঘটেছি, পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়ন এবং বর্তমান এককেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থায়  তাৎপর্য বিশেষ আর অবশিষ্ট নাই। একসময়  মানুষের জীবন ও জীবিকা  নিজের দেশের জল, জমি, ভূগোল, প্রকৃতি, হাট, গঞ্জ বা স্থানীয় বাজারের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তখন 'দেশ' কথাটার আলাদা তাৎপর্য ছিল কিন্তু পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক বৈশ্বিক হয়ে ওঠা এবং বিশ্ব বাজারের বিপুল বিকাশের পরেই সকল আবেগী ধারণা অন্তঃসারশূব্য হয়ে গিয়েছে।

বিএনপি ব্যবহারিক রাজনীতির জায়গা থেকে কথাটা হয়তো বলছে। অর্থাৎ জাতীয় ঐকমত্য কাদের মধ্যে করা রাজনৈতিক ভাবে জরুরি, সেই কথাটাই বিএনপি উত্থাপন করতে চায়।  কাদের মধ্যে ‘ঐকমত্য’ প্রতিষ্ঠা সম্ভব? সেই ক্ষেত্রে বিএনপির ব্যাখ্যা এখনও অস্পষ্ট। কারন ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হলে ‘জাতীয় ঐক্য’ দরকার জনগণের সঙ্গে। কিন্তু বিএনপি ঐক্য চায় ‘যুগপৎ’ আন্দোলনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। এটা অযৌক্তিক নয়, কিন্তু এই ঐক্য যারপরনাই দলী ঐক্য ; অতএব অতিশয় সংকীর্ণ এবং বিপজ্জনক। তারা ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট শক্তি ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্য চাইছে না, তারা চাইছে আওয়ামীলীগ বিরোধী বা আওয়ামী লীগে রাজনৈতিক  প্রতিদ্বন্দী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য বা ‘দলীয় ঐক্য’। 

দলকেন্দ্রিক ধারণার মধ্যে ‘জনগণ’ হাজির নাই বা প্রায়শই থাকে না। রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগ বিরোধী হতে পারে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে তারা নিজেরা ক্ষমতায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু চিন্তাচেতনায় তারাও ফ্যাসিবাদ লালনকারী হতে পারে। আওয়ামী লীগের বিপরীতে ‘দল’ হিশাবে কেউ উত্তম এটা আগাম মনে করার কোন যুক্তি নাই। বাস্তব রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী ঐক্য গড়ে উঠছে, কারন জনগণ এই ফ্যাসিস্ট শাসকদের ক্ষমতায় আর চায় না। বাংলাদেশের রাজনীতির এটা নতুন বাস্তবতা।

জনগণের দিক থেকে আরেকটি বিরাট সমস্যা হচ্ছে আন্দোলনরত প্রায় সব দ্লই স্পষ্টতই অগণতান্ত্রিক এবং ইসলাম বিদ্বেষী। গণতন্ত্র বলতে তারা স্রেফ নির্বাচন বোঝে, রাষ্ট্র ক্ষমতাকে তারা ‘মালিকানা’ ব্যবস্থা বোঝে। জনগণ রাষ্ট্রের ‘মালিক’ বলতে বোঝায়, যারা ভোটে কিম্বা যেনতেন উপায়ে ক্ষমতায় যেতে পারবে তারাই কার্যত রাষ্ট্রের ‘মালিক’ হবে, রাষ্ট্রও তাদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তিতে পর্যবসিত হবে। রাষ্ট্র সম্পর্কে সাধারণ ভাবে আমাদের চিন্তাচেতনার স্তর কতোটা নিম্ন মানের তা রাষত্র ক্ষমতা সম্পর্কে এই পেটি বুর্জোয়া 'মালিকানা' ধারণা দ্বারা বোঝা যায়। অত্যন্ত ক্ষমতাসীন বা ক্ষমতাবহির্ভূত কোন দল বা শক্তি ‘গণতন্ত্র’কে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিশেষ ধরণ বা রূপ হিশাবে বোঝে না। তারা জমিতে ব্যাক্তিগত মালিকানা যেমন সেই মালিকানার ধারণা দিয়ে রাষ্ট্র শক্তি বা রাষ্ট্র ক্ষমতাকে বোঝে।

রাজনৈতিক চিন্তাচেতনায় রাজনৈতিক দল্গুলো পাশ্চাত্যকে নকল করে, কিন্তু পাশ্চাত্যে গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জনগণের রাষ্ট্র কিভাবে গড়ে ওঠে এবং বাংলাদেশের বাস্তবতায় কিভাবে সেটা গড়ে তুলতে হবে সে ব্যাপারের বাংলাদেশের রাজনোইতিক দলগুলো সম্পূর্ণ অজ্ঞ এবং উদাসীন। তারা ক্ষমতায় যেতে চাওয়ার অতিরিক্ত জনগ নিয়ে ভবে না। ভাববার কোন সামর্থ তাদের নাই। তারা গণতন্ত্র বলতে নির্বাচন বোঝে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ওপর বিজয়ী দলের ব্যক্তিগত মালিকানা ব্যবস্থা কায়েম করা বোঝে। সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক চেতনার বর্তমান স্তর ভয়ানক বিপজ্জনক। গণরাজনৈতিক ধারা বিকাশের দিক থেকে বিদ্যমান প্রতিটি দলেরই মারাত্মক অভাব আছে। প্রতিটি দলই গণরাজনৈতিক ধারা বিকাশের প্রতিবন্ধক। অন্যদিকে যেটা বিপজ্জনক সেটা হোল ফ্যাসিস্ট শক্তিকে যারা ক্ষমতা থেকে অপসারণ করতে চাইছে তারা প্রধানত রাজনীতির সেকুলার ধারা। এদের অনেকের মধ্যে ইসলাম বিদ্বেষ কাজ করে। অনেকের মধ্যে প্রচণ্ড রূপেই বর্তমান রয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনীতির গভীর কিন্তু মৌলিক প্রশ্ন হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষ মোকাবিলা দ্বিতীয়ত বাঙালি জাতিবাদের বিপরীত মূদ্রা ইসলামি জাতিবাদী ফ্যাসিস্টদের মোকাবিলার জন্য ইসলামের বৈপ্লবিক মর্ম রাজনৈতিক-দার্শনিক ভাবে হাজির করা। অর্থাৎ ইসলামকে গণরাজনৈতিক চেতনার অন্তর্গত করে নেওইয়ার বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্ক্ৃতিক এবং রাজনোইতিক কাজ দ্রুত সমাধান করা। যেন ইসলাম বনাম ধর্ম নিরপেক্ষতা নামক বাইনারির চিপায় আমাদের পড়তে না হয়। অর্থাৎ ধর্মীয় বা ধর্ম নিরপেক্ষ ফ্যাসিবাদের কোন ধারাই যেন রাজনীতিতে গণরাজনৈতিক ধারা বিকাশের প্রতিবন্ধক হতে না পারে। ইসলামের নামে গণরাজনৈতিক চেতনা বিরোধী ফ্যাসিস্ট প্রবণতা মোকাবিলার জন্য ধর্মের পর্যালোচনা জরুরি এবং ধর্মীয় জাতিবাদ মোকাবিলা অতিশয় আবশ্যিক শর্ত। তাই নীতি ও কৌশল উভয় দিক থেকে একটি বিষয়ে ঐকমত্য জরুরি যে বাংলাদেশে ইসলাম প্রশ্নের মীমাংসা ছাড়া বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শক্তি বিরোধী লড়াইয়ে জয়ী হওয়া অসম্ভব।

বর্তমান আন্দোলন সংগ্রামের প্রধান দুর্বলতা হচ্ছে ইসলামপন্থি দলগুলো এবং ইসলামি প্রবণতা সম্পন্ন জনগণের বিশাল একটি অংশ এই আন্দোলনের বাইরে রয়ে গিয়েছে। জনগণকে বাদ রাখার ফলে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট শক্তি বর্তমান আন্দোলনকে দমন ও পরাস্ত করার জন্য জনগণের বৃহৎ একটি অংশকে তাদের নিজেদের পেছনে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম হবে। বিএনপি পাশ্চাত্য শক্তি এবং বাংলাদেশের ইসলাম বিদ্বেষী শক্তিকে সন্তুষ্ট করবার জন্য জামাতে ইসলামের সঙ্গে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া সম্পর্ক ছেদ করেছে। তার নেতিবাচক ফল ফ্যাসিস্ট শক্তি বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে পড়তে বাধ্য। হেফাজতে ইসলামের বড় একটি অংশই ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনও চলমান আন্দোলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্টদের পক্ষাবলম্বন করবে, এর বাইরে ভিন্ন কোন লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। শেখ হাসিনার তাহাজ্জতের নামাজ পড়াকে আমরা হাল্কা ভাবে নিতে পারি, কিন্তু গণরাজনৈতিক চেতনায় পশ্চাৎপদ একটি সমাজে তাহাজ্জুতি ধর্মপ্রাণতার নগদ রাজনৈতিক ফল রয়েছে। ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্টরা তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবে।

ইসলাম প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া একান্তই রাজনীতি বিবর্জিত সুবিধাভোগী চরিত্র। সেটা জনগণের কাছে সহজেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। ধর্মের প্রশ্ন মীমাংসা না করার ফলে যে গণবিচ্ছিন্নতা তৈরি হবে সেটা বিএনপি ও আন্দোলনরত দলগুলোকে কোন না কোন পরাশক্তির কাছে পুরা আন্দোলনকে বিকিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। ইতোমধ্যেই আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা দেখছি। তারা ভূরাজনৈতিক স্বার্থে ক্ষমতাসীনদের আওয়ামী লীগের  বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এর পালটা আমরা রুশ দূতাবাসের সমালোচনা দেখেছি। কূটনৈতিক নিয়ম নীতি ভঙ্গ করে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ আন্তর্জাতিক রীতিনীতির বরখেলাফ সেটা তারা স্পষ্ট করেই বলেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনীতি পরিষ্কার ভাবে ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। 

এই বিচিত্র বাস্তবতার ফলে জাতীয় রাজনীতি কার্যত আবার সেকুলার বনাম ইসলামপন্থি বিভাজনে বিভক্ত হতে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পরাশক্তিকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে বিএনপি ইসলাম প্রশ্নে নীরব। এই নীরবতা বিপজ্জনক। ইসলামপন্থি দলগুলোর ব্যাপারে বিএনপি যে অবস্থান নিয়েছে তা বুমেরাং হতে পারে। ইসলাম প্রশ্ন মীমাংসা কেন ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিরোধী গণান্দোলনের আবশ্যিক শর্ত সেই বিষয়টি আমরা পরে আরও বিস্তৃত আলোচনা করব।

অতএব ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন ‘জাতীয় ঐকমত্য’ খুবই হাওয়াই কথাবার্তা। কারন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা বিএনপির ‘রূপরেখা’-র উদ্দেশ্য না। “চলমান আন্দোলনে যারা জনতার বিজয় অর্জনে’ লড়ছে তাদের মধ্যে শুধু সেকুলার ও ধর্ম নিরপেক্ষ দলগুলোর ঐক্য চাইছে বিএনপি। এই ঐক্য সেকুলার রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য। দলীয় রাজনীতির দিক থেকেও ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে এটা কৌশলগত ভুল। বিএনপি দলীয় ঐক্যই চাইছে, ফ্যাসিবাদ বিরোধী জনগণের ঐক্য নয়। এই দলীয় ঐক্যকেই তারা ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন ‘জাতীয় ঐকমত্য’ দাবি করছে।

এই দলকেন্দ্রিক চিন্তা ও দলীয় সংকীর্ণতা জাতীয় রাজনীতির দিক থেকে সমস্যাসংকুল। এখনকার লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থাৎ মাঠের আন্দোলন-সংগ্রামে সরাসরি হাজির থেকে যে সকল রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছে – বিএনপি তাদের সঙ্গে ঐক্য চায়। আপাত দৃষ্টিতে তা আমাদের যুক্তিসঙ্গত মনে হতে পারে। কিন্তু এই দলীয় ঐক্যের অর্থ জাতীয় ঐক্য নয়।

আন্দোলনের এই পর্যায়ে বিএনপির এই অবস্থান সংকীর্ণ হলেও বৃহত্তর গণ আন্দোলনের আশায় আমাদের তা আপাতত মেনে নিতে আপত্তি নাই। কিন্তু এর প্রকট সীমাবদ্ধতা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে। বিশেষত আমাদের মনে রাখতে হবে ‘দল’ আর ‘জনগণ’ এক কথা নয়। জাতীয় রাজনীতিতে শ্রমিক, কৃষক মেহনত জীবী শ্রেণী এবং নারী সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। সেই ক্ষেত্রে ‘দেশপ্রেমের শপথে উজ্জীবিত এক সুকঠিন জাতীয় ঐকমত্য’-কে আমরা যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়ছে তাদের ‘ঐক্য’ হিশাবে বুঝেছি, এর অতিরিক্ত কিছুই নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কাজ হচ্ছে এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণের গণরাজনৈতিক চেতনার বিকাশ জনগণের স্বার্থের দিক আমরা কতোটা অর্জন করতে পারি তার জন্য অবিরাম চেষ্টা করে যাওয়া। যারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের নিজেদের স্বার্থে অপসারণ করতে চায় এবং আন্দোলন সংগ্রামে বিজয়ী হতে চায় তাদের 'দলীয় স্বার্থ আর 'জনগণের স্বার্থ' এক নয় – এই ফারাক মনে রেখেও আমরা বিভিন্ন দলের ‘ঐক্য’ বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার কারনে সমর্থন করি। কিন্তু সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকতে চাই।

‘দল’ আর ‘জনগণ’-এর পার্থক্য মনে রাখলে চলমান আন্দোলনে জনতার বিজয় অর্জনের পর বিএনপি কেন একটি ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন’ করতে চায় তার মর্ম আমরা বুঝব। বিএনপি জাতীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞ দল। বিএনপি জানে বড় দল হিশাবে ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’-এর উপর বিএনপির একক দলীয় আধিপত্য থাকবে। সেটা আসলে হবে বিএনপিরই সরকার। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিচালনায় “একটি অবাধ নির্বাচনে বিজয়ী হলে, সবার মতামত ও সম্মতির মাধ্যমে দেশ পরিচালনার নিমিত্তে, বর্তমান সরকারবিরোধী রাজপথের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দলসমূহকে নিয়ে’ বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করবে। তাহলে ‘জাতীয় সরকার’ গঠন নির্ভর করবে আন্দোলন-সংগ্রামে বিজয়ের পরে, বিএনপির আধিপত্যে গঠিত তথাকথিত ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’-এর অধীনে নির্বাচনের পর। অর্থাৎ যারা এই আন্দোলনে বিএনপির শরিক হয়েছে তাদের নিয়ে বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করবে না। তাদের কি আবার নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে হবে? বলা বাহুল্য সেই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিশাবে বিএনপিরই নির্বাচিত হয়ে আসার সমূহ সম্ভাবনা। যেসব দল আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেছে তাদের জয়ী হয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। যে দল কার্যকর ভাবে ক্ষমতায় সেই দলই আসলে জাতীয় সরকার গঠন করবে। আসলে সেটা হবে একান্তই বিএনপির সরকার।

অর্থাৎ 'জাতীয় সরকার'-এর কথা বললেও বিএনপি কার্যত ক্ষমতাসীনদের বিপরীতে একটি দলীয় সরকারই চায়। পুরানা মদই নতুন ভাবে বিএনপি পরিবেশন করছে। জাতীয় রাজনীতিতে তাদের সুবিধাজনক অবস্থান, অর্থনৈতিক এবং সাংগঠনিক শক্তির কারণে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে স্রেফ নিজেদের হাতেই বিএনপি ক্ষমতা চায়। একে আমরা দোষ মনে করি না। রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্দেশ্যই তাই। নিজ দলের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা। কিন্তু ফল যেটা দঁড়াবে জনগণ বিজয়ী গণঅভ্যূত্থানে সফল হলেও, তারা কোন বিপ্লবী সরকার পাবে না। পাবে পুরানা দলীয় সরকার, যারা পুরানা সংবিধানই আবার একটু আধটু সংস্কার করে কায়েম করবে। জনগণের আত্মত্যাগ নিস্ফল হবে।

তাহলে বুঝতে হবে বিএনপির দলকেন্দ্রিক ‘ঐক্য’, তথাকথিত রাষ্ট্র ‘মেরামত’ , কিম্বা ‘সুকঠিন জাতীয় ঐকমত্য’ ইত্যাদি বাগাড়ম্বর মাত্র। এইসবের রাজনৈতিক মর্ম একটাই: আওয়ামী লীগিকে সরিয়ে বিএনপির দলীয় একচ্ছত্র শাসন কায়েম। বিএনপি ততোটুকুই রাষ্ট্রের টুকরা টাকরা মেরামত করবে যতোটুকু দল হিশাবে বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারবে। বড়জোর ততোটুকুই যতোটুকু দল হিশাবে বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ক্ষমতা নিজেদের করায়ত্ব করতে বিএনপি সক্ষম হবে।

এই জন্য আমরা বারবারই বলছি আমরা আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির ভূমিকা সমর্থন করি, বিএনপির অবদান স্বীকার করি, কিন্তু দলের বাইরে যে বৃহৎ ‘জনগণ’ – যারা এখনও কার্যত জাতীয় রাজনীতিতে অনুপস্থিত – তাদের অবস্থান থেকে বিএনপির প্রতি আমাদের অবস্থান ও সমর্থন পর্যালোচনা নির্ভর। আন্দোলনের গতি-প্রকৃতির উপর তা নির্ভর করবে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় কঠোর পর্যালোচনা ছাড়া বিএনপির ইতিবাচক অবদানকে আমরা জাতীয় অর্জন হিশাবে আদায় করতে পারব না। আমরা যেই লাউ সেই কদুর দ্বারা প্রতারিত হতে চাই না। বিএনপির রাজনীতির যে ঐতিহাসিক ইতিবাচক সম্ভাবনা রয়েছে সেই সম্ভাবনা গণমানুষের পক্ষ থেকে আমরা যথাসম্ভব আদায় করতে চাই।

তাহলে এটা পরিষ্কার রাজনীতিতে বিএনপির ‘দেশপ্রেম’, দলকেন্দ্রিক ঐক্য, নির্বাচন কালীন সরকার, সুকঠিন জাতীয় ঐক্যমত্য, জাতীয় সরকার ইত্যাদি ধারণাকে আমরা দুর্বল ও সংকীর্ণ মনে করি। ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্টদের ক্ষমতা থেকে অপসারণের পরবর্তী যে পর্বে বিভিন্ন কমিশন সহ যে সকল রাজনৈতিক পদক্ষেপের কথা বিএনপি বলছে সেগুলো এই মূহূর্তে স্রেফ অলংকার। আসল লড়াইয়ের জায়গায় আমরা বিএনপির সঙ্গে আর একমত হতে পারছি না। রাষ্ট্র মেরামত সংক্রান্ত বিভিন্ন আলংকারিক দাবিদাওয়া অস্পষ্ট ও অপরিচ্ছন্ন। সেইসব আমরা পরের কিস্তিতে আলোচনা করব।

এখন যে কথা আমাদের সবার আগে বুঝতে হবে সেটা হোল, জনগণ যদি ‘সুকঠিন জাতীয় ঐকমত্য’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয় এবং ফ্যাসিস্ট শক্তিকে ‘অসাংবিধানিক ভাবে’ ক্ষমতা থেকে অপসারণ বা উৎখাত করে ‘বিজয়ী’ হতে পারে, তাহলে কেন পুরানা ফ্যাসিস্ট ‘সংবিধান’ বহাল রেখে গণঅভ্যূত্থানের ঐতিহাসিক, নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতা এবং ন্যায্যতাকে পুনরায় চরম হুমকির মধ্যে ফেলতে হবে? তার কোন যুক্তি নাই। কেন যে সকল দল নিয়ে আন্দোলনের সংস্থা গড়ে উঠছে জনগণের বিজয় অর্জিত হলে তাদের নিয়ে (বিপ্লবী) জাতীয় সরকার গঠনের বিরোধিতা করছে বিএনপি? তাকে কেন বিএনপি আবার নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার বানাতে চায়? কেন তাদের ভূমিকা আবার নির্বাচনে বিএনপিকে জয়ী করে আনবার স্রেফ ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার’ হতে হবে?। বিএনপির দিক থেকে এটা হচ্ছে অন্যান্য শরিক দল ও জনগণের সঙ্গে চরম চাতুরি। এই চাতুরিপূর্ণ রাজনীতি থেকে বিএনপিকে সরে আসতে হবে।

ফ্যাসিস্ট সরকার ‘অপসারণ’ বা গণ অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার একটি বিপ্লবী সরকার, এই সরকার সাংবিধানিক বা সংবিধানসম্মত সরকার নয়। যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এবং আন্দোলনের জাতীয় সংস্থা হিশাবে ভূমিকা রেখেছে তারাই এই বিপ্লবী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে। কিন্তু বিএনপি সেটা মানতে নারাজ। ফ্যাসিস্ট শক্তিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে, বিএনপি নিজেই একা ক্ষমতা করায়ত্ত করতে চায়। অর্থাৎ বি্প্লবী সরকার'-কে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার বানাতে চায়, যাদের কাজ নির্বাচন করে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া। এটাই হচ্ছে বিএনপির An Outline of The Structural Reform of the State বা বিএনপির ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা-র মর্মবাণী, যাকে বিভিন্ন সংস্কার ও কমিশন গঠনের অলংকারে ভূষিত করে বিএনপি হাজির করেছে। ।

লড়ে, রক্ত দিয়ে শহিদ হয়ে গণ অভ্যূত্থান সম্পন্ন করলেও জনগণ কোন বিপ্লবী সরকার পাবে না। পাবে 'নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার'। অভূত্থান করেও বা রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েও বাংলাদেশের জনগন নতুন ভাবে তাদের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ভাবে নতুন ভাবে গঠনের জন্য নতুন 'গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সভা' (Constituent Assembly) আহ্বান করতে পারবে না, বিপ্লবী সরকারকে স্রেফ পুরানা সংবিধানের ভিত্তিতে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাধায়ক সরকার’ বানাবে বিএনপি।

জনগণ কি ধরনের রাষ্ট্র চায়, তাদের ইচ্ছা আকাঙ্খা চাওয়া পাওয়া কী? – তা বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ণের সময়ও চাওয়া হয় নি। যদি জনগণের সেই সুযোগ আবার আসে তাহলে বাংলাদেশ নতুন ভাবে গঠন (Constitute) করবার জন্য নতুন 'গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সভা' নির্বাচনের কথা কেন ভাবছে না বিএনপি? কেন আমরা জনগণ কি চায়, কেমন রাষ্ট্র চায় সেটা জনগণকে নির্ণয় বা নির্ধারণের সুযোগ আমরা জনগণকে দেব না? দিতে চাইনা কেন? কেন পুরানা সংবিধান বিএনপি একটু আধটু ‘মেরামত’ করতে চায়? কেন বাংলাদেশের জনগণকে পুরানা ফ্যাসিস্ট জঞ্জাল বয়ে বেড়াতে হবে? এর কি যুক্তি? – বিএনপির রাজনীতিতে এই দিকটি খুবই অস্পষ্ট এবং বিপজ্জনক ভাবে হাজির রয়েছে।

বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের দাবি, তারা এইসকল বিষয় স্পষ্ট করে বলবেন। নইলে বাংলাদেশকে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাথেকে ‘অপসারণ’, ‘গণ অভ্যূত্থান ইত্যাদি বলে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে তা নিস্ফল গৃহযুদ্ধের অধিক কোন ফল আনবে কি? বাংলাদেশকে কি আমরা ইউক্রেনের মতো পরাশক্তির প্রক্সি যুদ্ধের ক্ষেত্র বানাতে চাই?

নিশ্চয়ই না।


December 27, 2022

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।