চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা

কুলের বউ হয়ে মন

কুলের বউ হয়ে মন [১] আর কতদিন থাকবি ঘরে
যাওনা চলে ঘোমটা ফেলে সাধবাজারে।।

কুলের ভয়ে মান হারাবি
কুল নিবি কি সঙ্গে করে
(ও রে) পস্তাবি শ্মশানে যেদিন
      ফেলবে তোরে।।

দিসনে আটির  কড়ি[২]
নেড়া নেড়ি হও যে রে
তুই থাকবি ভাল পরকাল
      যাবে দূরে।।

কুলের গৌরব যার হয়
গুরু সদয় হয় না তারে
লালন বেড়ায় কুলের চড়ায়
     কুলের ফেরে।।[৩]

 

(আরো পড়ূন)

অবোধ মন তোরে আর কী বলি।

অবোধ মন তোরে আর কী বলি।
পেয়ে ধন সে ধন হারালি।।

মহাজনের ধন এনে
ছড়ালি তুই উলুবনে
কী হবে নিকাশের দিনে
      সে ভাবনা কই ভাবিলি।।

সই করিয়ে পুঁজি তখন
আনলি রে তিন রতি এক মণ
ব্যাপার করা যেমন তেমন
       আসলে খা’দ মিশালি।।

করলি ভালো বেচাকেনা
চিনলি না মন রাং কি সোনা
লালন বলে মন রসনা
   কেন সাধুর হাটে আ’লি।।

 

(আরো পড়ূন)

শহরে ষোলজনা বোম্বেটে

শহরে ষোলজনা বোম্বেটে
করিয়ে পাগল পারা
    নিল তারা সব লুটে।।

রাজ্যেশ্বর রাজা যিনি
চোরের শিরোমনি
নালিশ করিব আমি
   কোন সময় কার নিকটে।।

ছয়জন ধনি ছিল
তারা সব ফতুর হল
কারবারে ভঙ্গ দিল
   কখন যেন যায় উঠে।।

ছিল ধন মাল পোরা
খালি ঘর জমা করা
লালন কয় খাজনারই দায়
   কখন যেন যায় লাটে।।

(আরো পড়ূন)

আমার হয়না রে সেই মনের মত মন

আমার হয়না রে সেই মনের মত মন
কি-সে জানব রে সেই রাগের করন।।

পড়ে রিপু ইন্দ্র ভোলে
মন বেড়ায়রে ডালে ডালে
দুই মনে এক মন হইলে
   এড়ার শমন।।

রসিক ভক্ত যারা
মনে মন মিশাল তারা
শাসন করে তিনটি ধারা
   পেল রতন।।

কবে হবে নাগীনি বশ
সাধব করে অমৃত রস
সিরাজ সাঁই কয় বিষেতে নিশ
   হলি লালন।।

(আরো পড়ূন)

মন ভবে এসে হয়েছে এক মায়ায় ঢেঁকি

মন ভবে এসে হয়েছে এক মায়ায় ঢেঁকি।
পরের ভানা ভানতে ভানতে নিজের ঘরে নাই খোরাকি।।

দিনে দিনে কামশক্তি বেড়ে যায়
কামিনীর কাঞ্চন লুটে পিতৃধন খোয়ায়
কাবার কাঞ্চন কুলাই ঝেড়ে পাচড়ে
     চাল নেই শুধু তুষ দেখি।।

আমি ঢেঁকি ছিলাম ষোল পোয়া
ভবে এসে কর্মদোষে হই চৌদ্দ পোয়া
আমি যদি হতাম পনের পোয়া
     শমনকে দিতাম ফাঁকি।।

পাপ-ঢেঁকি যদিও স্বর্গে যায়
তিন বেলা তার ভানা কুটা, লাথি না এড়ায়
ফকির লালন বলে নিদানকালে
     যেন সৎগুরুর খাই লাথি।।

 

(আরো পড়ূন)

মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে

 মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে।
জানে না কানচির খবর রঙমহলের নিকাশ নিচ্ছে।।

ঠিক পড়ে না কুড়ো কাঠা
মুলে ধরে সতের গণ্ডা
অকারন খাটিয়ে মনটা
   পাগলামি প্রকাশ করতেছে।।

যে জমির নাই আড়া-দিঘতলা
কীরূপ কালি করে সেথা
শুনি চৌদ্দ পোয়ার কথা
   কুড়ো কাঠা কই আন্দোজে।।

কৃষ্ণদাস পণ্ডিত ভাল
কৃষ্ণলীলার সীমা দিল
তার পণ্ডিতি চুর্ণ হ’ল
   টুনটুনি এক পাখির কাছে।।

বামন হয়ে চাঁদ ধরতে যায়ৰ
অমনি আমার মন মনুরায়
লালন বলে কবে কোথায়
   এমন পাগল কে দেখেছ।।

(আরো পড়ূন)

ভাল জল-ছেঁচা কল পেয়েছ মনা

ভাল জল-ছেঁচা কল পেয়েছ মনা।
ডুবারু জন পায় সে রতন তোর কপালে ঢনঢনা।।

মান সরোবর নামটি তার
লালমতি আছে অপার ডুপতে পারলে না
ডুবতে যেয়ে খাবি খেয়ে
   সুখটা বোঝ শেষখানা।।

ইন্দ্রদ্বারে কপাট দেয়
সেই বটে ডুবারু হয়, নইলে হবেনা;
আপা ছেঁচা কাদা খচা
কী অদ্ভুতের কারখানা।।

জল ছেঁচা নদী শুকায়
কার বা এমন সাধ্য হয় কে পায় পরশখানা;
লালন বলে ছন্দি পেল
   যায় সমুদ্দুর লঙ্ঘনা।।

 

(আরো পড়ূন)

কৈ হল মোর মাছ ধরা

কৈ হল মোর মাছ ধরা।।
সারাদিন ধাপ ঠেলিয়ে বল হারা।।

একে যাই ধাপো বিলে
তাতে মোর ঠেলা জালি
ওঠে শামুকের ভরা
যোগ না পেলে সে মাছ
   হয় না কভু ক্ষার ছাড়া।।

কেউ বলা কওয়া করে
সে মাছ তো প্রেম সাগরে
সে নদীর তিন ধারা
আমি মারতে গেলাম সেই নদীতে
   খাটল না ক্ষেপলা ধরা।।

যে জন ডুবারু ভাল
মছের ক্ষার সেই চিনিল
তার যাত্রা সিদ্ধি হল
লালন বলে একই কালে
   সার হল মোর লাল পড়া।।

(আরো পড়ূন)

খুলবে কেন সে ধন মালের গ্রাহক বিনে

খুলবে কেন সে ধন মালের গ্রাহক বিনে।
মুক্তামনি রেখেছে ধনী
   বোঝাই করে সে দোকানে।।

সাধু সওদাগর যারা
মালের মূল্য জানে তারা
মন দিয়ে মন অমূল্য রতন
   জেনে শুনে তারাই কেনে।।

মাকাল ফলে রূপ দেখে
সদায় যেমন নাচে কাকে
আমার মন চটকে বিভোর
   সার পদার্থ নাহি চিনে।।

মন তোর  গুন জানা গেল
পিতল কিনে সোনা বল
সিরাজ সাঁই বচন, মিথ্যা নয় লালন
   তুই মন হারালী দিনে দিনে।।

 

(আরো পড়ূন)

কিসে আর বুঝাই মন তোরে

কিসে আর বুঝাই মন তোরে
দিল-মক্কার ভেদ না জানিলে
     হজ্জ্ব হয় কীসেরে।।

দিল গঠন কুদরতি সে কাম
খোদ খোদা দেয় তথায় বারাম
তাইতো হোল দিল-মক্কা নাম
     সর্ব সংসারে।।

এক দিল যার জিয়ারত হয়
হাজার হজ্ব তার তুল্য নয়
দলিলে তাই সাফ লেখা হয়
     তাইতে বলিরে।।

মানুষে হয় মক্কার সৃজন
মানুষে করে মানুষের ভজন
লালন বলে মক্কা কেমন
   চিনবি কবে রে ।।

(আরো পড়ূন)

আবোধ মন রে তোর হলো না দিশে

আবোধ মন রে তোর হলো না দিশে।
এবার মানুষের করন হবে কিসে।।

কোনদিন আসবে যমের চেলা
ভেঙে যাবে ভবের খেলা
সেদিন হিসাব দিতে বিষম জ্বালা
   ঘরবে শেষে।।

উজান-ভেটেন দুটি পথ
ভক্তি-মুক্তির করন সেতো
এবার তাতে যায় না জরা-মৃত
   যমের ঘর সে।।

যে পরশে পরশ হবি
সে করন আর কবে করবি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন রলি
   ফাঁকে বসে।। 

(আরো পড়ূন)

যেওনা আন্দাজি পথে মন রসনা

যেওনা আন্দাজি পথে মন রসনা
কুপাকে কুপেঁচে পড়ে,
   (তোমার) প্রান বাঁচবে না।।

পথের পরিচয় করে
যাও না মনে সন্দেহ মেরে
লাভ লোকসান বুদ্ধির দ্বারে
   যায় গো জানা।।

উজান ভাটি পথ দুটি
দেখে নয়ন কর খাঁটি
দাও যদি মন-গড়া ভাটি
   কুল পাবা না।।

অনুরাগ তরনী কর
বাও চিনে উজানে ধর
লালন বলে করতে পার
   মূল ঠিকানা।।

 

(আরো পড়ূন)

মন কি তুই ভডুয়া বাঙ্গাল জ্ঞান ছাড়া

 মন কি তুই[১]ভডুয়া বাঙ্গাল জ্ঞান ছাড়া
সদরে সাজ করছ ভাল
   পাছ-বাড়ী তোর নাই বেড়া।।

কোথায় বস্তু কোথায় মন
চৌকি পাহারা দাও অনুক্ষন
কাজ দেখি পাগলের মতন
   কথায় দেখি কাঠ ফাঁড়া।।

কোন কোণায় কি হচ্ছে ঘর
এক দিন দেখলি না তারে
পিতৃধন সবে গেল চোরে
   হলিরে তুই ফুকতারা।।

পাছ-বাড়ী আঁটেল কর
ঘর-চোরার চিনে ধর
লালন বলে নইলে তোরও
   থাকবে না মুল এক কড়া।।

(আরো পড়ূন)

দেখে শুনে জ্ঞান হোল না

দেখে শুনে জ্ঞান হোল না
কি করিতে কি করিলাম
     দুধেতে মিশালাম চনা।।

মদন রাজার ডঙ্কা ভারি
হলাম আজ্ঞাকারী
যার মাটিতে বসত করি
   চিরদিন তারে চিনলাম না।।

রাগের আশ্রয় নিলেরে মন
কী করিতে পারে মদন
আমার হোল কামলোভী মন
   (হলাম) মদন রাজার গাঁটরি টানা।।

উপর হাকিম এক দিনে
দয়া করবেন নিজ গুনে
দ্বীনের অধীন লালন ভনে
   গেল না মনের দো-টানা।।

(আরো পড়ূন)

মনের হল মতি মন্দ

মনের হল মতি মন্দ।।
তাইতো রইলাম আমি জন্ম অন্ধ।।

ভব রঙ্গে থাকি মজে
ভাব দাঁড়ায় না হৃদয় মাঝে
গুরুর দয়া হবে কিসে
   দেখে ভক্তিহীন পশুর ছন্দ।।

ত্যজিয়ে রে সুধা রতন[১]
গরল খেয়ে ঘটায় মরন,
(আমি) মানিনে সাধু গুরুর বচন,
   মূল হারাইয়ে শেষ হইরে ধন্দ।।

বালক বৃন্ধ সকলে কয়,
সাধু চিত্ত আনন্দময়,
লালন বলে আমার সদায়,
   যায় না মনের নিরানন্দ।।

(আরো পড়ূন)

মনেরে বোঝাব কত

মনেরে বোঝাব কত
যে পথে মরন ফাঁসী
   সেই পথে মন সদায় রত।।

যে জলে লবন জন্মায়
সেই জলেই লবন গলে যায়
তেমনি আমার মন মনরায়
   একা একা হচ্ছে হত।।

চারের লোভে মৎস্য গিয়ে
চারেতে পড়ে ঝাঁপিয়ে
অমনি আমার মন ভেয়ে
   মরন ফাঁসী নিচ্ছে সে ত ।।

সিরাজ সাঁই দরবেশের বাণী
বুঝবি লালন দিনই দিনই
ভক্তিহারা ভাবুক যিনি
   সেকি পাবে গুরুর পদ।।

 

 

(আরো পড়ূন)

সমুদ্রের কিনারে থেকে

সমুদ্রের কিনারে থেকে জল বিনে চাতকী মলো
ওরে বিধি হারে বিধি
   তোর মনে কি ইহাই ছিল।।

নবঘন বিনে বারি
খায় না চাতক অন্য বারি
চাতকের প্রতিজ্ঞা ভারি
   যায় যাবে প্রান সেও ভাল।।

চাতক থাকে মেঘের আশে
মেঘ বরিষে অন্য দেশে
বল চাতক বাঁচে কিসে
   ওষ্ঠাগত প্রান আকুল।।

লালন ফকির বলছে রে মন
হলো না মোর ভজন সাধন
ভুলে সিরাজ সাঁইজির চরন
   মানব জনম বৃথাই গেল।।

 

(আরো পড়ূন)

আমি ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়

(আমার) মনের মনে হোল না একদিনে
আমি ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
   যাব কার সনে।।

আমার বাড়ী আমারই ঘর
বলা কেবল ঝাকমারী সার
কোনদিন পলকে হইবে সংহার
   হবে কোন দিনে।।

পাকা দালান কোঠা দিব
মহাসুখে বাস করিব
(আমি) ভাবলাম না কোনদিকে যাব
   যাব শ্মশানে।।

কি করিতে কিবা করি
পাপে বোঝাই হইল তরি
ফকির লালন কয় তরঙ্গ ভারী
   দেখি সামনে।।

(আরো পড়ূন)

হাতের কাছে মামলা থুয়ে

হাতের কাছে মামলা থুয়ে কেন ঘুরে বেড়াও ভেয়ে।
ঢাকা শহর দিল্লি-লাহোর খুঁজলে মেলে এই দেহে।।

মনের ধোঁকায় যেথায় যাবি
ধাক্কা খেয়ে হেথায় ফিরবি
এমনি ভাবে ঘুরে মরবি
   সন্ধান না পেয়ে।।

গয়া-কাশী মক্কা-মদিনা
বাইরে খুঁজলে ধান্দা যায় না
দেহরতি খুঁজলে পাবি
   সকল তীর্থের ফল তাহে।।

দেখ দেখি মন রে আমার
অবিশ্বাসের ধন প্রাপ্তি হয় কার?
যার বিশ্বাসের মন, নিকটে পায় ধন
   লালন ফকির যায় কয়ে।।

 

(আরো পড়ূন)

সরল হয়ে করবি কবে ফকিরি

সরল হয়ে করবি কবে ফকিরি।
দেখ মনুরায় হেলায় হেলায় দিন তো হল আখেরি।।

ভজবি রে লা-শরিকালা
ঘুরিস কেন কালকেতলা
খাবি রে নৈবেদ্য কলা
   সেইটা কি আসল ফকিরি।।

চাও অধীন ফকিরি নিতে
ঠিক হয়ে কই ডুবলি তাতে
কেবল দেখি দিবারাতে
   পেট-পূজার টোল ভারি।।

গৃহে ছিলি ছিলি ভাল
আঁচলা ঝুলায় কী লাভ হ’ল
সিরাজ সাঁই কয় নাহি গেল
   নাল পড়া লালন তোরি।।

(আরো পড়ূন)

বিনা পাকালে গড়িয়ে কাঁচি করছো নাচানাচি

বিনা পাকালে গড়িয়ে কাঁচি করছো নাচানাচি।
ভেবেছ কামার বেটায় ফাঁকিতে ফেলেছে।।

জানা যাবে এসব নাচন
কাচিতে কাটবে না যখন কারে করবি দোষি
বোঁচা অস্ত্র টেনে কেবল
   মরছো মিছামিছি।।

পাগলের গো-বধ আনন্দ
মন তোমার আজ সেহি ছন্দ দেখে ধন্দ আছি;
নিজ মরন পাগলে বোঝে
   তাও তোমার নাই বুঝি।।

জানা গেলে এসব নীলে
আপন ফাঁকে আপনি প’লে তাও তো মহাখুশি’
লালন বলে সঙ্গ গুনে
   জ্ঞান হলো নৈরাশী।।

(আরো পড়ূন)

ফেরব ছেড়ে করো ফকিরি

ফেরব ছেড়ে করো ফকিরি।
দিন তোমার হেলায় হেলায় হল আখেরি।।

ফেরের ফকিরের ধারা
দরগা নিশান ঝাণ্ডাগাড়া
গলায় বাঁধে হড়ামড়া
   শিরনি খাওয়ার ফিকিরি।।

আসল ফকিরি মতে
বাহ্য আলাপ নাহি তাতে
চলে শুদ্ধ সহজ পথে
   অবোধের চটক ভারি।।

নাম-গোয়ালা কাজি ভক্ষন
তোমার দেখি তেমনি লক্ষন
সিরাজ সাঁই কয় অবোধ লালন
   কর সাধুর খাতায় জুয়াচুরি।।

 

(আরো পড়ূন)

ফের প’লো তোর ফকিরিতে

ফের প’লো তোর ফকিরিতে
যে ঘাটে মারা ফিকির- ফাকার
   ডুবে ম’লি সেই ঘাটাতে।।

ফকিরি সে এক নাচাড়ি
অধর ধরে দিতাম বেড়ি
পাস্তানি খোলা দুয়ারি
   তাই দেখে রেখেছি পেতে।।

না জেনে ফিকিরি আঁটা
শিরিতে পরালাম জটা
সার হলো ভাং ধুতরা ঘোটা
   ভজন-সাধন সব চুলাতে।।

ফকিরি-ফিকিরি করা
হতে হবে জ্যান্তে মরা
লালন কয় নেংটি এড়া
   আঁট বসে না কোনো মতে।।

(আরো পড়ূন)

না হলে মন সরলা কি ধন মেলে কোথায় ঢুঁড়ে

না হলে মন সরলা
   কি ধন মেলে কোথায় ঢুঁড়ে।
হাতে হাতে বেড়াও কেবল
   তওবা পড়ে।।

মুখে যে পড়ে কালাম
তারি সুনাম হুজুর বাড়ে;
ও যার মন খাঁটি নয় বাঁধলে কী হয়
     বনে কুঁড়ে।।

মক্কা মদিনা যাবি, ধাক্কা খাবি
   মন না মুড়ে;
হাজি না পাড়ানোর লভ্য কাবল
   জগৎ জুড়ে।।

মন যার হয়েছে খাঁটি, মুখে যদি
   গলদ পড়ে;
তাতে খোদা নারাজ নয় রে
   লালন ভেরে।।

(আরো পড়ূন)

বসত বাড়ীর ঝগড়া কেজে

বসত বাড়ীর ঝগড়া কেজে
   আমার ত কই মিটল না।।

কার গোহালে কে ধুয়া দেয়
    সব দেখি তা-নানা।।

ঘরের চোরে ঘর মারে যার
শতের সুখ হয় কিসে তার
ভূতের কীর্ক্তি যমন প্রকার
   এমন তার বসতখানা।।

দেখে শুনে আত্ম কলহ
কর্ত্তাব্যক্তি হত হল
সাক্ষাতে ধন চোরে গেল
   এ লজ্জাত যাবে না।।

সবজয় হাকিমের তরে
আরজি করি বারে বারে
লালন বলে আমার পানে
   একবার ফিরে চাইলেন।।

(আরো পড়ূন)

মনেরে বোঝাই কিসে

মনেরে বোঝাই কিসে
ভব যাতনায় জ্ঞান চক্ষু আঁধার
     ঘিরল রে যেমন রাহুতে এসে।।

যেমন বনে আগুন লাগে  দেখে সর্ব লোকে
মন আগুন কে দেখে মন-কোঠায় ভাসে।।

এ সংসারে বিধি বড় বল ধরে
কর্ম ফাঁদে বেঁধে মারিছে আমারে
কা’রে সুধাই এ সব কথা  কে ঘুচাবে ব্যাথা
মন আগুনে মন দগ্ধ হ’তেছে।।

ভবে আসা আমার মিথ্যা আসা হল
অসার ভাবিয়ে সকলি ফুরাল
পূর্বে যে সুকৃতি ছিল  পেলাম তার ফল
আবার যেন আমার কী হবে শেষে।।

গুনে আনি দেওয়া হয়ে যায় রে কুয়ো
তেমনি হল আমার সকল কার্য ভুয়ো
লালন ফকির সদাই দিচ্ছে গুরুর দোহাই
আর যেন না আসি এমন দেশে।।

(আরো পড়ূন)

দেখ না মন ঝাকমারি এই দুনিয়াদারি

দেখ না মন ঝাকমারি এই দুনিয়াদারি।
পরিয়ে কোপনি ধ্বজা মজা উড়ালো ফকিরি।।

বড় আশার বাসা এ ঘর
পড়ে রবে কোথা রে কার
   ঠিক নাই তারি
পিছে পিছে ঘুরছে শমন
   কোনদিন হাতে দেবে ডুরি।।

দরদের ভাই বুন্ধুজনা
ম’লে সঙ্গে কেউ যাবে না
   মন তোমারই
খালি হাতে একা পথে
   বিদায় করে দেবে তোরি।।

যা কর তাই কর রে মন
পিছের কথা রেখ স্মরন
   বরাবরই;
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় শোন রে লালন
হোস নে কারো ইন্তেজারি।।

(আরো পড়ূন)

তিন পোড়াতে খাঁটি হলে না

তিন পোড়াতে খাঁটি হলে না।
না জানি কপালে তোমার কী আছে তাও বুঝলাম না।।

লোহা জব্দ কামারশালে
যে পর্যন্ত থাকে জ্বালে
যায় না স্বভাব তা মারিলে
   তেমনি মন তুই একজনা।।

অনুমানে জানা গেল
চুরাশি ফের পড়িল
আর কবে কী করবি বল
   রংমহলে প’লো হানা।।

দেব-দেবতার বাসনা হয়
মানবজনম লওয়ার আশায়
লালন কয় সে মানুষ হয়ে
   মানুষের করন করলে না।।

(আরো পড়ূন)

চিরদিন জল ছেঁচিয়ে জল

চিরদিন জল ছেঁচিয়ে জল
ছারে না এ ভাঙ্গা নায়।
একমালা জল ছেঁচতে গেলে
   তিন মালা জোগায় তলায়।।

আগা নায়ে মন-মনুরায়
বসে বসে চুমুক খেলায়
আমার দশা তলা ফাঁসা
   জল ছেঁচি আর গুধরি গলায়।।

ছুতোর বেট্যার কারসাজিতে
জনম-তরীর ছাদ মারা নাই
নৌকার আশেপাশে কাষ্ঠ সরল
   মেজেল কাঠ গড়েছে তলায়।।

মহাজনের অমূলয ধন
মারা গেল ডাকনি জোলায়
লালন বলে মোর কপালে
   কী হবে হিসাবের বেলায়।।

(আরো পড়ূন)

কোন কুলেতে যাবি মনরায়

কোন কুলেতে যাবি মনরায়।
গুরুকুল ধরতে গেলে
      লোককুল ছাড়তে হয়।।

দুকুল ঠিক রয় না গাঙে
এক কুল গড়ে আর এক কুল ভাঙ্গে
তেমনি যেন সাধুর সঙ্গে
   বেদবিধির কুল দূরে রয়।।

রোজা-পূজা জাতের আচার
মন যদি চায় কর এবার
বেজাতের কাজ বেদান্তর
   মায়াবাদীর কার্য নয়।।

ভেবে বুঝে এক কূল ধর
দোটানায় কেন ঘুরে মর
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোর
   ফুঁ ফুরাবে কোন সময়।।

(আরো পড়ূন)

কারে দিব দোষ নাহি পরের দোষ

কারে দিব দোষ নাহি পরের দোষ
আপন মনের দোষে আমি প'লাম রে ফেরে।
আমার মন যদি বুঝিত  লোভের দেশ ছাড়িত
   লয়ে যেত আমায় বিরজা পারে।।

মনের গুনে কেউ হলো মহাজন
ব্যাপার করে পেল অমূল্য রতন
আমারে মজালি ওরে অবোধ মন
   এখন পারের সম্বল কিছুই পেলাম না করে।।


অন্তিম কালের কালে কি না জানি হয়,
একদিন ভাবলে না অবোধ মনুরায়
ভেবেছ দিন এমনি বুঝি যায়
সকল জানা যাবে যেদিন শমনে ধরে।।

কামে চিত্ত হত মন রে আমার,
সুধা ত্যেজে গরল খায় সে বেশুমার
সিরাজ সাঁই কয়, লালন রে তোমার
বুঝি ভগ্নদশা ভারি ঘটল আখেরে।।


 

(আরো পড়ূন)

কতদিন আর রইবি রঙ্গে

 কতদিন আর রইবি রঙ্গে।
বাড়িতেছে বেলা ধর এই বেলা
   যদি বাঁচতে চাও তরঙ্গে।।

নিক্টে বিক্টে বেশেতে শমন
দাঁড়াইয়া আছে হরিতে জীবন
মানিবে না কারে, কেশে ধরে তোরে
   লয়ে যাবে সে জন আপন সঙ্গে।।

দ্বারা-সূত-আদি যত প্রিয়জন
বক্ষমাঝে যাদের রাখ সর্বক্ষন
আমার আমার, বল বারেবার
   তখনি হেরিবে না কেহ অপাঙ্গে।।

অতএব শোন থাকিতে জীবন
কর অন্বেষন পতিতপাবন
সিরাজ সাঁই কয় লালন, অধ্ম তারন
   বাঁচো এখন পাপ আতঙ্কে।।

(আরো পড়ূন)

অন্তিম কালের কালে  ওকি হয় না জানি

অন্তিম কালের কালে  ওকি হয় না জানি।
কি মায়াঘোরে কাটালাম হারে দিনমনি।।

এনেছিলাম বসে খেলাম,
উপার্জন কৈ কি করিলাম,
নিকাশের বেলা খাটবে না ভোলা
   এলো বাণী।।

জেনে শুনে সোনা ফেলে,
মন মজালাম রাঙ পিতলে,
এ লাজের কথা বলিব কোথা
   আর এখনি।।

ঠকে গেলাম কাজে কাজে,
ঘিরিল উনপঞ্চাশে,
লালন বলে, মন কি হবে এখন
   বলরে শুনি।।

(আরো পড়ূন)

আমি দেখলাম এ সংসার ভোজবাজী প্রকার

আমি দেখলাম এ সংসার ভোজবাজীর প্রকার
দেখিতে দেখিতে অমনি কেবা কোথা যায়।
মিছে এ ঘরবাড়ি  মিছে টাকা কড়ি
     মিছে দৌড়াদোড়ি করি কার মায়ায়।।

কীর্তিকর্মার কীর্তি কে বুঝতে পারে
সেই বা জীবকে লয়ে কোথায় রাখে ধরে
একথা আর শুধাব কারে নিগূঢ় আত্মতত্ত্ব অর্থ
     কে বলবে আমায়।।

যে করে এই লীলা তারে চিনলাম না
'আমি' 'আমি' করি ভবে 'আমি' কোন জনা
মরি একি হায় আজব কারখানা
    আমি গুণে পড়ে কিছুই ঠাহর নাহি পাই।।

ভয় ঘোচে না আমার দিবা রজনী
কার সঙ্গে কোন দেশে যাব না জানি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় এ বিষম করণি
     পাগল হওরে লালন এবার যে যা’ বুঝতে চায়।।

(আরো পড়ূন)

কারো রবে না এ ধন জীবনযৌবন

 কারো রবে না এ ধন জীবনযৌবন
তবে রে মন কেন এতই বাসনা।।
একবার সবুরেরি দেশে রও দেখি দম দম কষে
   উঠিস নারে ভেসে পেয়ে যাতনা।।

যে করে কালার চরনেরই আশা জাননারে মন তাহার দুর্দশা
ভক্ত বলীরাজা ছিল সবংশে নাশিল
   বামন রূপে প্রভু করে ছলনা।।

প্রহ্লাদ চরিত্র দেখ দৈত্য ধামে কত কষ্ট তার এই হরি নামে
তারে আগুনে পুড়াল জলেতে ডুবাল
   তবু না ছারিল শ্রীরূপ সাধনা।।

কর্নরাজা ভবে বড় দাতা ছিল    অতিথি রূপে পুত্রকে নাশিল
কর্ন-অনুরাগী না হইল দুঃখী
   অতিথির মন করে সান্ত্বনা।।

রামের ভক্ত লক্ষন ছিল সর্বকালে
শক্তিশেল হানিল তাহার বক্ষস্থলে
তবু রামচন্দ্রের প্রতি না ছাড়িল ভক্তি
   লালন বলে কর এ বিবেচনা।

(আরো পড়ূন)

আপন মনের গুনে সকলি হয়

আপন মনের গুনে সকলি হয়।
ও সে পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর পায়।।

নামটি রামদাস বলে
জাতে সে মুচির ছেলে
গঙ্গামায়ের এমনি লীলে
   (এলো) চাম-কাটুয়ায়।।

জাতে সে জোলা কুবীর
উড়িষ্যায় তাহার জাহির
বারো জাত তাহার হাঁড়ির
   তুড়ানি খায়।।

না বুঝে ঘর ছেড়ে
জঙ্গলে বাঁধে কুঁড়ে
লালন কয় রিপু ছেড়ে
   যাবি কোথায়।।

(আরো পড়ূন)

আজ রোগ বাড়ালি শুধু কুপথ্যি করে।

আজ রোগ বাড়ালি শুধু কুপথ্যি করে।
ঔষধ খেয়ে অপযশটি করলি কবিরাজেরে।।

মানিলে কবিরাজের বাক্য
তবে রোগ হত আরোগ্য
মধ্যে মধ্যে নিজে বিজ্ঞ
   হয়ে গোল বাধালি রে।।

অমৃত ঔষধ খালি
তাতে মুক্তি নাহি পেলি
লোভ-লালসে ঘুরে মলি
   ধিক তোর লালসেরে।।

লোভে পাপ পাপে মরণ
তা কি জান না রে মন
লালন বলে যা যা এখন
   মন গা যা ঘোর বিমারে।।

(আরো পড়ূন)

আপন মনে যার গরল মিশে

আপন মনে যার গরল মিশে
যেখানে যায় সুধার আশে তলায় গরল দেখে।।

মনের গরল যাবে যখন
সুধাময় সব দেখবে তখন
পরশিলে এড়ায় শমন
   নইলে পড়বি পাকে।।

কীর্তিকর্মার কীর্তি ইঠাঁই
যে যা ভাবে তাই দেখতে পায়
গরল বলে কারে দোষাই
   ঠিক পড়ে না ঠিকে।।

রামদাস মুচির মন সরলে
চামের কৌটায় গঙ্গা মিলে
সিরাজ সাঁই কয় লালনের
   তা কি ঘটবে তোকে।।

(আরো পড়ূন)

যেতে সাধ হায়রে কাশী কর্ম ফাঁসি বাধল গলায়

যেতে সাধ হায়রে কাশী কর্ম ফাঁসি বাধল গলায়।।
আর কতদিন ঘুরব এমন নাগর দোলায় ।।

হলরে এ কি দশা সর্বনাশা মনের ঘোলায়
ডুবল ডিঙ্গি নিশ্চয় বুঝি জন্ম নালায়।।

বিধাতা হয় বিবাদী  কি মন পাজী ফেরে ফেলায়
বাও না বুঝে বাই তরনী  ত্রুমে তলায় ।।

কলুর বলদ যমন    ঢেকে নয়ন পাকে চালায়
লালন প’ল তমনি পাকে   হেলায় হেলায়।।

(আরো পড়ূন)

খালি ভাঁড় থাকবে রে পড়ে

খালি ভাঁড় থাকবে রে পড়ে
দিনে দিনে কর্পূর সব যাবে উড়ে।।

মন যদি গোল মরিচ হতো
তবে কি আর কর্পূর যেত
তিলকাদি না থাকিত
     সুসঙ্গ ছেড়ে।।

অমূল্য কর্পূর যাহা
আছে সদায় ঢাকা দেওয়া
কেমনে প্রবেশে হাওয়া
      কর্পূরের ভাঁড়ে।।

সে ধন রাখিবার কারন
মিলনা মন গুরুর স্মরন
লালন বলে বেড়ায় এখন
      আগাড়ে ভাগাড়ে।।

(আরো পড়ূন)

মূল হারালম লাফ করতে এসে

মূল হারালম লাফ করতে এসে
দিয়ে ভাঙ্গা নায় বোঝায় ঠেসে।
জন্মভাঙ্গা ডিঙ্গে আমার
   ভল ফুরালো জল ছেঁচে।।

গলুই ভাঙ্গা জলুই খসা
বরাবরি এমনি দশা
গাবকালিতে যায় না কসা
   কী করি তার নাই দিশে।।

কত ছুতোর ডেকো আনি
সারতে এই ভাঙ্গা তরনি
এক জাগায় খোঁচ গড়তে অমনি
   আর এক জাগায় যায় ফেঁসে।।

যেন ছুতোরের নৌকা গঠন
তারে যদি পেতাম এখন
লালন বলে মনের মত্ন
   সারতাম নৌকা তার কাছে।।

(আরো পড়ূন)

মনের মানুষ চিনলাম না রে

মনের মানুষ চিনলাম না রে.
পেতাম যদি মনের মানুষ
   সাধিতাম তার চরন ধরে।।

সাধুর হাটে কাচারি হয়
অধ মুণ্ডে ঘুরে বেড়ায়
ছয়জনা মিশতে না দেয়
   মনের মানুষ ধরি কী করে।।

আরজ আমার সাধুর হাটে
মানুষ হয়ে মানুষ কাটে
তাহার বাস কাহার নিকটে
   সৃষ্টি করলে কী প্রকারে।।

লালন বলে ভেবে দেখি
কেবল তোমার ফাঁকাফাঁকি
চাতুরী ছুড়েছ নাকি
   আছি তোমার আশা করে।।

(আরো পড়ূন)

মনেরে বুঝাতে আমার দিন হল আখেরি

 মনেরে বুঝাতে আমার দিন হল আখেরি।
বোঝে না মন আপন মরন একি অবিচারী।।

ফাঁদ পাতিলাম শিকার বলে
সে ফাঁদ বাঁধিল আপন গলে
এ লজ্জা কি যাবে ধুলে
   এই ভবের কাচারি।।

পর ধরতে যাই লোভ দেখায়ে
আপনি লোভে পড়ি যেয়ে
হাতের মামলা হারায়ে
   শেষে কেঁদে ফিরি।।

ছা’য়ের জন্যে আনিলাম আধার
আধারে ছা’ খেল এবার
লালন বলে বুঝলাম আমার
   ভগ্নদশা ভারি।।

(আরো পড়ূন)

মনের ভেদ মন জানে না একি কারখানা

মনের ভেদ মন জানে না একি কারখানা।
এ মনে ও মন করছে ওজন কোথা সেই মনের থানা।।

মন দিয়ে মন ওজন সই হয়
দুই মনে এক লেখে খাতায়
তাইবি ধরে যোগসাধনে
   কর গো মনের ঠিকানা।।

মন এসে মন হরন করে
লোকে ঘুম যায় বলে তারে
কত আনকা নহর, আনকা শহর
   ভ্রমিয়ে দেখায় তৎক্ষনা।।

সদাই সে মন বাইরে বেড়ায়
বদ্ধ সে তো রয় না আড়ায়
লালন ভনে সন্ধি জেনে
   কর গা মনের ঠিকানা।।

(আরো পড়ূন)

মনের নেংটি [১] এঁটে কর রে ফকিরি

মনের নেংটি [১] এঁটে কর রে ফকিরি।
আমানতের ঘরে মনা হয় না যেন চুরি।।

এ দেশেতে দেখি রে ভাই
ডাকিনী যোগিনীর ভয়
দিনেতে মানুষ ধরে খায়
   থেকো হুঁশিয়ারি।।

বারে বারে বলি রে মন
কর রে আত্মসাধন
আকার্ষনে দুষ্টদমন
   করো[২] ধরি ধরি।।

কাজে দেখি দড়বড়ে
নেংটি তোমার নড়বড়ে
খাটবে না লালন ভেড়ে
   টাকশালে চাতুরী।।

(আরো পড়ূন)

মন র’লো সেই রিপুর বশে রাত্রিদিনে

মন র’লো সেই রিপুর বশে রাত্রিদিনে।
মনের গেল না স্বভাব, কিসে মেলে ভাব সাধুর সনে।।

আমি বলি শ্রীচরন
মনে যদি হয় কখন
অমনি উঠে হয়, দুষ্ট সে সময়
   ধরে যেদিক টানে।।

নিজগুনে যা করেন সাঁই
তা বিনে আর ভরসা নাই
তুমি জান মোর, মনের ভক্তির জোর
   যেরূপ মনে।।

দিনে দিনে দিন ফুরালো
রঙমহল অন্ধকার হ’ল
লালন বলে , হায় কী হবে
   উপায় তো দেখি নে।।

(আরো পড়ূন)

মন এখন আর কাঁদলে কী হবে

মন এখন আর কাঁদলে কী হবে।
কীর্তিকর্মার লেখাপড়া আর কি ফিরিবে।।

তুষে যদি কেউ পাড় দেয়
তাতে কি আর চা’ল বাহির হয়
মন হ’ল সেই তুষেরই ন্যায়
   বস্তহীন ভবে।।

কর্পূর উড়ে যায় রে যেমন
গোলমরিচ মিশায় তার কারন
মন হ’ল গোলরিচের মতন
   বস্ত কেন যাবে।।

হাওয়ায় চিড়ে কথার দধি
ফলার দিচ্ছে নিরবধি
লালন কয় যার যেমন প্রাপ্তি
   কেন না পাবে।।

(আরো পড়ূন)

অসার ভেবে সার দিন গেল আমার

অসার ভেবে সার দিন গেল আমার
সারবস্তু ধন এবার  হলাম রে হারা
হাওয়া বন্ধ হলে সব যাবে বিফলে
   দেখে শুনে লালস গেল না মারা।।

গুরু যার সহায় আছে সংসারে
লোভে সাঙ্গ দিয়ে সেহি যাবে সেরে
অঘাটায় মরন হল আমারে
   জানলাম না গুরুর করন কী ধারা।।

মহতে কয় থাকলে পূর্ব সুকৃতি
দেখিতে শুনিতে হয় গুরুপদে মতি
সে সুকৃতি আমার থাকতো যদি
   তবে কি আর আমি হতাম পামরা।।

সময় ছাড়িয়ে জানিলাম এখন
গুরু কৃপা বিনে বৃথা এ জীবন
বিনয় করে কয় ফকির লালন
   আর কি আমি পাব অধরা।।

(আরো পড়ূন)

দেখনা মন ঝাকমারি এই দুনিয়দারী

দেখনা মন ঝাকমারি এই দুনিয়দারী
পড়িয়ে কপনি-ধ্বজা কি মজা উড়ালে ফকিরী।।

বড় দরদের ভাই বন্ধুজনা
    সাথের সাথী কেউ হবে না মন তোমারি
সেদিন খালি হাতে একা পথে
    বিদায় করে দেবে তোরি।।

যা কর তা কররে মন
    শেষের কথা রেখ স্মরন বরাবরই
ও তোর পিছে পিছে ফিরছে শমন
    কোনদিন হাতে দিবে ডুরি।।

বড়ো আশার বাসা এ ঘর
    পড়ে রবে কোথায় রে কার ঠিক নাই তারই,
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন ভেড়ো,
   (তুই) করিস রে কার[১]এন্তেজারী।।

(আরো পড়ূন)

মনের মনে হোলনা একদিনে

মনের মনে হোলনা একদিনে
(আমি) ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
   যাব কার সনে।।

আমার বাড়ী আমারই ঘর,
বলা কেবল ঝাকমারী সার,
পলকে সব হবে সংহার-
   হবে কোন দিনে।।

পাকা দালান কোঠা দিব
মহাসুখে বাস করিব,
ভাবলাম না কোন দিকে যাব-
   যাব শ্মশানে।।

কি করিতে কিবা করি,
পাপে বোঝাই হইল তরি,
লালন কয় তরঙ্গ ভারী
   দাখি সামনে।।

(আরো পড়ূন)

মন আমার কিছার গৌরব করছ ভবে

মন আমার কিছার গৌরব করছ ভবে
দেখনা রে সব হাওয়ার খেলা
   বন্ধ হৈতে দের কি হবে।।

থাকতে ঘরে হাওয়াখানা,
মওলা বলে ডাক রসনা,
মহাকাল বসেছে সিনায়[১]
   কখন যেন কু ঘটাবে।।

বন্ধ হলে এই হাওয়াটি,
মাটির দেহ হবে মাটি,
দেখে শুনে হও মন খাঁটি;
   কে তোরে কতই বুঝাবে।।

ভবে আসার অগ্রেরে মন,
বলেছিলে করব সাধন,
লালন বলে সেকথা মন,
   ভুলেছ এই ভবার্ণবে[২]।।

(আরো পড়ূন)

বাকির কাগজ গেল হুজুরে

বাকির কাগজ গেল হুজুরে
কোন দিন জানি আসবে শমন সাধের অন্তঃপুরে[১]।।

যখন ভিটায় হও বসতি
দিয়াছিলে খাস কবুলতি
হরদমে নাম রাখবে স্মৃতি[২]
   এখন ভুলেছো তারে।।

আইন মাফিক নিরিখ দে না
তাও দেখি তোর ইতরপনা,
যাবে রে মন যাবে জানা
   জানা যাবে আখেরে।।

সুখ পেলে হও সুখে  ভোলা ,
দুঃখ পেলে হও দুঃখ উতলা,
লালন কয় সাধনের খেলা
   কীসে যুত ধরে।।

(আরো পড়ূন)

একবার চাঁদ বদনে বল গো সাঁই

একবার চাঁদ বদনে বল গো সাঁই
বান্দার এক দমের ভরসা নাই

হিন্দু কি যবনের বালা,
পথের পথিক চিনে ধর এই বেলা,
পিছে কাল শমন, আসছে সর্বক্ষন,
    কোন দিন বিপদ ঘটাবে ভাই।।

আমার বিষয় আমার বাড়ী ঘর,
সদাই এই ভাবে দিন গেল রে আমার,
বিষয় বিষ খাবা সে ধন হারাবা
   শেসে কাঁদলে কি আর সারে ভাই।।

নিকটে থাকিতে সেহি ধন,
বিষয় চঞ্চলতাতে খুঁজলিনে রে মন
ফকির লালন কয়, সে ধন কোথায় রয়,
   আখেরে খালি হাতে যাই সবাই।।

(আরো পড়ূন)

ভুলব না ভুলব না বলি

ভুলব না ভুলব না বলি
কাজের বেলায় ঠিক থাকে না।।

আমি বলি ভুলব নারে  স্বভাব ছাড়ে না মোরে
কটাক্ষে মন পাগল করে
   দিব্য জ্ঞানে দিয়ে হানা।।

সঙ্গ গুনে রঙ্গ ধরে     জানিলাম কার্য অনুসারে
কুসঙ্গে সম্বন্ধ হয়ে সুমতি মোর গেল ছেড়ে
খাবি খাই অপাত্রে পড়ে
   এ লজ্জা ধুলেও যায় না।।

যে চোরের দায়ে দেশান্তরী   সেহি চোর  দেখি সঙ্গধারী
মদন রাজার ডংকা ভারি  কাম জ্বালা দেয় অন্তর পূরি
ভুলে যায় মোর মন-কাণ্ডারি
   কি করিবে গুনিজনা।।

রঙ্গে মেতে সঙ্গ সাজিয়ে   বসে আছি মগ্ন হয়ে
সু-সখারে সঙ্গ করে   জানতাম যদি সু-সঙ্গেরে
লালন বলে তবে কিরে
   ছেঁচড়ে মারে মালখানা।।

(আরো পড়ূন)

এ জনম গেলো রে অসার ভেবে

এ জনম গেলো রে অসার ভেবে
পেয়েছো মানব জনম হেন দুর্লভ জনম আর কি হবে?

জননীর জঠরে যখন
অধোমুণ্ডে ছিলে রে মন
বলেছিলে করব সাধন
   এখন কী তা মনে হয় না ভবে।।

ও মন কারে বলো আমার
ও তুমি কার আজ কেবা তোমার
যাবে সকল গোমর
   যেদিন শমন রায় আসিবে।।

ও মন এদিনে সেদিন ভাবলে না
কি ভেবে কি করো মনা
লালন বলে যাবে জানা
   হারলে বাজি কাঁদলে কি আর পাবে।।

(আরো পড়ূন)

এমন মানব জনম আর কি হবে

এমন মানব জনম আর কি হবে
মন যা কর ত্বরায় করো এই ভবে।।

অনন্তরূপ সৃষ্টি করলেন সাঁই
শুনি মানবের উওর[১] কিছুই নাই
দেব  দেবতাগন করে আরাধন    
     জন্ম নিতে মানবে।।

কতো ভাগ্যের ফলে না জানি (মন রে)
পেয়েছ এই মানব তরণী
বেয়ে যাও ত্বরায় তরী সু-ধারায়
     যেন ভারা না ডোবে।।

এই মানুষে হবে মাধুর্য ভজন
তাইতে মানুষ-রূপ গঠলেন নিরঞ্জন
এবার ঠকিলে আর না পাবে কিনার   
     লালন কয় কাতর ভাবে।।

 

[১] উত্তর। অনেকে এই গুরুত্বপূর্ণ শব্দটি ভুল ভাবে 'উত্তম' গেয়ে থাকেন। নদীয়া মানুষ ভজনা করে মানুষ 'উত্তম' বলে নয়। কারণ জীব হিশাবে মানুষের চেয়ে অনেক জীবই 'উত্তম' । 'মানবের উত্তর কিছু নাই' মানে হোল মানুষের পরে আর কিছু নাই। উত্তর মানে পরে -- মানবের উত্তর মানে মানুষের পরে। বিশব্রহ্মাণ্ডের এটাই সর্বোচ্চ বিকাশ। মানুষই বিশ্ব-ইতিহাস -- এরপর আর কিছু নাই।

(আরো পড়ূন)

মনরতি সে রিপুর বশে রাত্রি দিনে

 মনরতি সে রিপুর বশে রাত্রি দিনে
মনের গেলো না স্বভাব   কিসে মেলে ভাব
     সাধুর সনে।।

নিজ গুনে যা করে সাঁই
তা বিনে আর ভরসা নাই
জানা মোর   মনের ভক্তির জোর
    যে রূপ মনে।।

বলি সে শ্রী চরন
যদি মনে হয় কখন
তেম্নি উঠে হয়   দুষ্ট সে সময়
    বৈদিক টানে।।

দিনে দিনে ফুরায়ে গেলো
রংমহল অন্ধকার হোল
লালন বলে হায় কি করি উপায়
    পথ দেখি নে।।

(আরো পড়ূন)

আপনারে আপনি চিনে নে

আপনারে আপনি চিনে নে
দিন-দোনের[১] পর যা নাম অধর 
   তারে চিনব কেমনে।।

আপনারে চিনতাম যদি
মিলত অটল চরন নিধি
মানুষে করন হত সিদ্ধি
   শুনি আগম পুরানে।।

কর্তা রূপের নাই অন্বেষণ
আত্মরই কি হয় নিরূপন
আত্মতও্বে  [২] পায় শতধন
   সহজ  সাধক জনে।।

দিব্যজ্ঞানী যেজন হোল
নিজ তও্বে নিরঞ্জন পেলো
সিরাজ সাঁই কয় লালন র’ল
    জন্ম ওন্ধ নিজ গুনে।।

(আরো পড়ূন)

বল কারে খুঁজিস ক্ষেপা দেশ বিদেশে

বল কারে খুঁজিস ক্ষেপা দেশ বিদেশে
আপন ঘর খুজলে রতন পায় অনাসে।।

দোড়াদৌড়া দিল্লি লাহোর
আপন কোলে রয় ঘোর
নিরূপ আলেক সাঁই মোর
   আত্মারূপ সে।।

যে লীলা ব্রহ্মাণ্ডের পর
যে লীলা ভাণ্ড মাঝার
ডাকা যমন চন্দ্র আকার
   মেঘের পাশে।।

আপনাকে আপনি চেনা
সেই নবটে উপসনা
লালন কয় আলেক বেনা
   হয় তার দিশে।।

(আরো পড়ূন)

মন তোরে আজ ধরতে পারতাম হাতে

মন তোরে আজ ধরতে পারতাম হাতে
দেখতাম ওরে মন কি মনা
কেমন করে সদায় আলডেঙাতে[১]।।

কি কর মন বে –হাতে আমার
নৈলে কি মন এভাব তোমার
নিইলে গনি তালের শুমার
   কোন তালে আমায় নাচাও কোন পথে।।

সদা বল আর ভুলবো না
তিলেকে তো ঠিক থাকে না
দুষ্ট লালন বিষম সেনা
   আমার মজালি নানা মতে।।

(আরো পড়ূন)

এ জনম গেলরে আমার ভেবে

এ জনম গেলরে আমার ভেবে
   পেয়েছ মানব জনম
এমন দুর্লভ জনম
   আর কি হবে।।

(ও মন তুমি) জঠরে যখন
   অবোধ খণ্ডে  ছিলেরে মন
বলেছিলে করবো সাধন
   এখন মনে হয়না ভবে।।

কারে বল আমার আমার
   তুমি কার আজ কেবা তোমার
ভাঙ্গিবে সকল সুসার
   যেদিন শমন রায় আসিবে।।

এদিনে সেদিন ভাবিলে না
   কি ভেবে কি কর মনা
লালন বলে যাবে জানা
   হারলে বাজী কাঁদলে কি সারিবে।।

(আরো পড়ূন)

ফকিরী করবি ক্ষেপা কোন রাগে

ফকিরী করবি ক্ষেপা কোন রাগে
হিন্দু মুসলমান দুই জনা রয় দূই ভাগে।।

বেহেস্তের আশায় মমিনগন
হিন্দুদের স্বর্গেতে মন
টল কি অটল মোকাম সেহ
   লেহাজ করে জান আগে।

ফকিরী  সাধন করে
খোলাসা রয় হুজুরে
বেহেস্ত-সুখ ফাটক সমান
   শরায় ভাল তাই দেখে।।

অটল প্রাপ্তি কিসে হয়
মুরশিদের ঠাঁই জানা রয়
সিরাজ সাঁই কয় লালন ভেড়ো
   ভুগিস না ভবের ভোগে ।।

(আরো পড়ূন)

বিষয় বিষে চঞ্চলা মন

বিষয় বিষে চঞ্চলা মন দিবারজনী
মন তো বোঝালে বোঝে না   কর্মকাহিনী।।

বিষয় ছাড়িয়া কবে
মন আমায় শান্ত হবে হে
আমি কবে সে চরন করিব স্মরন
   শীতল হবে তাপিত প্রানী।।

কোনদিন শ্মশানবাসী হবো
কি ধন সঙ্গে লয়ে যাবো হে
(আমি) যাই কি করে বয়ে ভূতের বোঝা লয়ে
   ভাবলাম না গুরুর বানী।।

অনিত্য দেহেতে বাসা
তাইতো এত আশায় আশা হে
অধীন লালন তাই বলে নিত্য হলে
   আর কতই মনে করতাম না জানি।।

(আরো পড়ূন)

কারে দিব দোষ নাহি পরের দোষ

(আমি) কারে দিব দোষ নাহি পরের দোষ
আপন মনের দোষে আমি প’লাম রে ফেরে
আমর মন যদি বুঝিতো লোভের দেশ ছাড়িতো
   লয়ে যেতো আমায় বিরাজ্য পারে।।

মনের গুনে কেহ হোল মহাজন
বেপার কৈরে পেলো অমূল্য রতন
আমারে মজালি ওরে অবোধ মন
   পারের সম্বল কিছুই না গেলাম করে।।

অন্তিম কালের কালে কিনা জানি হয়
একদিনও ভাবলি না অবোধ মনু রায়
ভেবেছো দিন এমনি বুঝি যায়
   (সকল) জানা যাবে যে দিন শমনে ধরে।।

কামে চিও হতে মনরে আমার
সুধা ত্যাজে গরল খায় বেশুমার
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোমার
   ভগ্ন দশা ভারি দেখি আখেরে।।

(আরো পড়ূন)

আমি কি দোষ দেব কারে রে

আমি কি দোষ দেব কারে রে
আপন মনের দষে প’লেম
   সুবুদ্ধি স্বভাব গেলো।।

কাকের স্বভাব মনের হোল
ত্যাজিয়ে অমৃত ফল
   মাকাল ফলে মন মজিলো রে।।

যে আশায় ভবে আশা
ভাঙিল সে আশায় বাসা
ঘটালো একী দুর্দশা
   ঠাকুর গড়তে বান্দর হোল রে।।

গুরুবস্তু  চিনলি নে মন
অসিময়ে কি করবি তখন
বিনয় করে বলছে লালন
   যজ্ঞের ঘৃত কুত্তায় খেলো রে।।

(আরো পড়ূন)

গেড়ে গাঙ্গে রে ক্ষ্যাপা

গেড়ে গাঙ্গে রে ক্ষ্যাপা
   হাপুর হুপুর ডুব পাড়িলে
হায় কি মজা যাবে বুঝা
   কার্তিকের উলানীর কালে।।

বায় চালা দেয় ঘড়ি ঘড়ি
ডুব পারিস কেন তাড়াতাড়ি
প্রবল হবে কফের নাড়ি
   তাইতে জীবন হানি মূলে।।

কাঁদবি যখন কফের জ্বারায়
তাবিজ তাগা বাঁধবি গলায়
তাতে কি রোগ হবে ভালায়
   মস্তকের জল শুস্ক হলে।।

ক্ষান্ত দেরে ঝাপই খেলা
শান্ত হওরে ও মন ভোলা
লালন কয়, গেল বেলা
   দেখ না এবার চক্ষু মেলে।।


(আরো পড়ূন)

এবার কে তোর মালিক চিনলি না তারে

এবার কে তোর মালিক চিনলি না তারে [১]
মন কি এমন জনম আর হবে রে।

দেবের দুর্লভ এবার
মানুষ জনম তোমার
এমন জনমের আচার
   করলি কিরে।।

নিশ্বাসের নাইরে বিশ্বাস
পলকে সব করবে নৈরাশ
(তখন ) মনে রবে মনেরি আশা
বলবি কারে।।

এখন শ্বাস আছে বজায়
যা কর তাই সিদ্ধি হয়
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয়
   লালনেরে।

(আরো পড়ূন)

দিনে দিনে হল আমার দিন আখেরি

দিনে দিনে হল আমার দিন আখেরি
ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
   যাবো কোথায় সদা ভাবে মরি।।

বসত করি দিবা রাতে
ষোল জন বোম্বেটের সাথে
যেতে দেয় না সরল পথে
   আমায় কাজে কামে করে তাগাদারি

বাল্যকাল খেলাতে গেল
যৌবনে কলংক হল
বৃদ্ধকাল সামনে এল
   মহাকালে করল অধিকারী

যে আশায় প’ল ভগ্ন দশা
আশায় প'ল ভগ্ন দশা
লালন বলে হায় কী দশা
    উজান যেতে ভাটি প’ল তরী।।

(আরো পড়ূন)

কে তোমার আর যাবে সাথে

কে তোমার আর যাবে সাথে
কোথায় রবে ভাই বন্ধু সব
   পড়বি যেদিন কালের হাতে।।

নিকাশের দায় করে খাড়া
মারবে রে আতশের কোড়া
সোজা করবে ব্যাকা ত্যাড়া
   জোরজবর খাটবে না তাতে।।

যে আশায় এই ভবে আসা
হোল না তার রতি মশা[১]
ঘটালিরে কী দূর্দশা
   কুসঙ্গে কুরঙ্গে মেতে

যারে ধরে পাবি নিস্তার
তারে সদাই ভাবলিরে পর
সিরাজ কয় লালন তোমার
   ছাড়ো ভবের কুটুম্বিতে

 

(আরো পড়ূন)

একদিন পারের ভাবনা ভাবলিনারে

একদিন পারের ভাবনা ভাবলিনারে
পার হবি হীরার সাঁকো কেমন করে।।

একদমের ভরসা নাই
কখন কি করবে সাঁই,
তখন কার দিবি দোহাই
   কারাগারে।।

বিনা কড়ির বেচা কেনা,
মুখে সাঁইয়ের নাম জপনা,
তাতে কি  তোর অলসপানা,
   দেখি হা রে।।

ভাসাও অনুরাগ-তরী
মুরশিদ কাণ্ডারী,
লালন কয় যার পাড়ি
   যাও না সেরে।।

(আরো পড়ূন)

অবোধ মনরে তোমার হল না দিশে

অবোধ মনরে তোমার হল না দিশে
এবার মানুষের করন হবে কিসে।।

কোনদিন আসবে যমের চেলা
ভেঙে যাবে ভবের খেলা
সেদিন হিসাব দিতে বিষম জ্বালা
   ঘটবে শেষে।।

উজান ভাটি দুটো পথ
ভক্তিমুক্তির করন সেতো
এবার তাতে যায় না  জরাস্রোত
   যমের ঘর সে।।

যে পরশে পরশ হবি
সে কারন আর কবে করবি
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন রইলি
   ফাঁকির বশে।।

 

(আরো পড়ূন)

চল দেখি মন কোন দেশে যাবি

চল দেখি মন কোন দেশে যাবি
অবিশ্বাসী কোথায় কি ধন পাবি।।

এ দেশে ভূত প্রেতে হলে
যারে পিঁড়েয় ফয়তা দিলে
পেঁড়োর ভূত কোন দেশে গেলে
   মুক্তি পায় কীসে ভাবি।।

মন বোঝে না  তীর্থ করা
মিছামিছি খেটে মরা
পেঁড়োর কাজ পিঁড়েয় সারা
   নিষ্ঠা মন হয় যদ্যপি।।

বার ভাটি বাংলা জুড়ে
একই মাটি আছে পড়ে
সিরাজ শাহ কয় লালন ভেড়ে
   ঠিক দাও আপন নসিবি।।

(আরো পড়ূন)

কোন পথে যাবি মন ঠিক হোল না

কোন পথে যাবি মন ঠিক হোল না
করো লাফালাফি সার কাজে শূন্যকার [১]
টাঁকশালে পড়িলে যাবে জানা।।

যেতে চাও মক্কা  যদি পাও ধাক্কা
ফিরে দাঁড়াও তৎক্ষণা।।
বলে এতে কার্য্য নাই  কাশীধামে যাই
করে সহজ বিবেচনা।।

ক্ষণেক উদাসী ক্ষনেক গৃহবাসী
ক্ষনেক মন হতাভাগা আনমনা।।
বাজায় তিলেকে তিন তাল বাজায় হামে হাল
মনের ঘরে বাঁধায় তা না না।।

একে নিরিখ যার যেতে ভবে পার
সেই তরী টাল খাবে না।।
হারে পাঁচ পায়ের চলন  চলিয়ে লালন
   (এখন) চৌরাশি করে আনাগোনা।।

 

(আরো পড়ূন)

কি হবে আমার গতি

কি হবে আমার গতি
কতই জেনে কতই শুনে
   ঠিক পড়ে না কোনো প্রতি[১]।।

মুচির কৌটায় গঙ্গা এল
কলার ডেগো সর্প হলো
এ সকলই ভক্তির বল
   আমার  নাইকো কোনই শক্তি।।

যাত্রা ভঙ্গ যে নাম শুনে
বনের পশু হনুমানে
নিষ্ঠা গুন যার রামচরনে
   সাধুর খাতায় তার সুখ্যাতি।।

মেঘপানে চাতকের ধিয়ান
অন্য বারী করে না পান
লালন কয় জগতে প্রমান
   ভক্তির শ্রেষ্ঠ সেহি ভক্তি।।

(আরো পড়ূন)

কি এক অচিন পাখি পুষলাম খাঁচায়

কি এক অচিন পাখি পুষলাম খাঁচায়
হল না জনম ভরে তার পরিচয় ।।

আঁখির কোণে পাখির বাসা
দেখতে নারে কি তামাশা
আমার এ আঁধলা দশা
     কে আর ঘুঁচায় ।।

পাখি রাম রহিম বুলি বলে
ধরে সে অনন্ত লীলে
বল তারে কে চিনিলে
     বল গো নিশ্চয় ।।

যারে সাথে সাথে লয়ে ফিরি
তারে বা কই চিনতে পারি
লালন কয় অধর ধরি
     কিরূপ ধ্বজায় ।।

 

(আরো পড়ূন)

আমার হয় নারে সেই মনের মতো মন

আমার হয় নারে সেই মনের মতো মন
কিসে জানবো সেই রাগের করণ।।

পড়ে রিপু ইন্দ্রিয়ের ভোলে
মন বেড়ায় রে ডালে আলে
দুই মনে মন এক হইলে
     এড়াই শমন।।

রসিক ভক্ত আছে যারা
মনে মন মিশালো তারা
শাসন করে তিনটি ধারা
     পেল রতন।।

কিসে হবে নাগিনী বশ
সাধবো কবে অমৃত-রস
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয়, বিষে বিনাশ
     হলি লালন।।

(আরো পড়ূন)