সুতা ও বস্ত্র খাতের কাঁচামাল সমস্যা


বস্ত্র খাতের নিরাপত্তায় তুলা আমদানির বিকল্প বাজার তালাশ

আন্তর্জাতিক বাজারে এ বছরের শুরু থেকেই তুলার দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছিল। পাশাপাশি ছিল দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের নজিরবিহীন ঘাটতি। দুয়ে মিলে একদিকে দেশে সুতা উৎপাদন কমছিল অনেকটা অন্যদিকে সুতার দামও বাড়ছিল অস্বাভাবিক হারে। ফলে দেশীয় সুতার ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের তাঁত ও যন্ত্রচালিত বস্ত্র খাতে প্রচুর কারখানা উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। দেশীয় সুতা উৎপাদন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে— এই আশঙ্কা উপেক্ষা করে সরকার ইনডিয়া থেকে সুতা আমদানির অনুমতি দিল, তাঁত ও বস্ত্র কারখানাওয়ালাদের দাবির মুখে। এতে করে এখনকার মতো সংকট কাটানো গেল, নিশ্চিতভাবেই।

কিন্তু বাংলাদেশের বস্ত্র খাতের সামনে থাকা সুতা সমস্যার কোনো সমাধান তাতে হবে কি? সুতা উৎপাদনের জন্য আমদানি করা তুলার ওপরই নির্ভর করে বাংলাদেশ। আর পুরা চাহিদার প্রায় অর্ধেক পরিমাণ সুতাও আমদানি করতে হয়। দেশে তুলা এবং সুতার উৎপাদন এই পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনা নাই, যাতে করে এই আমদানি নির্ভরতা কমানো যায়।কিন্তু আমদানির ক্ষেত্রে একটি দেশের ওপর একতরফা নির্ভরতা কি বাংলাদেশের বস্ত্র খাতের জন্য ইতিবাচক? সমস্যার সমাধানে সুতা আমদানি’র ক্ষেত্রে বিকল্প বাজার তালাশ করা কতটুকু জরুরি?

ইনডিয়ার তুলা রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ এবং বেনাপোল বন্দর উন্মুক্তকরণের দাবি

এ বছরের উনিশে এপ্রিল দেশীয় চাহিদার কারণ দেখিয়ে তুলা রপ্তানি নিষিদ্ধ করে ইনডিয়া। ফলে ইনডিয়া থেকে আমদানি করা তুলার ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের সুতা শিল্প গত দুই দশকের মধ্যে নজিরবিহীন উৎপাদন সংকটে পড়ে। ইনডিয়ার ওই নিষেধাজ্ঞার পরপরই বিকেএমইএ এবং বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম এন্ড পাওয়ারলুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি উন্মুক্ত করার জন্য দাবি করা হয়। তাঁতীরা বিক্ষোভ ধর্মঘট করে। সুতা শিল্পের মালিকরা বলেন, যদি বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সুতা নিয়ে আসার অনুমতি দেয়া হয় তাহলে দেশীয় সুতা শিল্প মাঠে মারা যাবে। তাদের মতে, এই সংকট সাময়িক। অক্টোবর মাস নাগাদ স্বাভাবিকভাবেই এই সংকট কেটে যাওয়ার কথা। কেননা ভরা মৌসুমে উজবেকিস্তান ও অন্যান্য উৎস থেকে সহজেই আগের মতো তুলা আমদানি সম্ভব হবে। তাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ইনডিয়া থেকে একবার স্থলপথে তুলা আমদানি শুরু হলে দেশীয় সুতা শিল্পে ধ্বস নেমে আসবে।

নানা পক্ষের অবস্থান

বাংলাদেশ হ্যান্ড লুম এন্ড পাওয়ার লুম ওনার্স এসোসিয়েশন 

তাদের দাবি ছিল, বেনাপোল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি উন্মুক্ত করতে হবে। একুশে এপ্রিল থেকে তারা এই দাবিতে ধর্মঘট শুরু করে।

 

 

বিকেএমইএ

 

বস্ত্র কারখানাগুলার এই ফোরামের বক্তব্য ছিলো, একদিকে চলমান বিদ্যুৎ সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে, অন্যদিকে সুতার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে বস্ত্র উৎপাদন ব্যয় আরো বেশি পরিমাণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ফোরামের দাবি; সুতা কারখানাগুলা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে।

 

বিটিএমএ 

সুতা তৈরির কারখানাগুলার এই ফোরামটি বারবার সতর্ক করে আসছে যে, সড়ক পথে সুতা আমদানি করলে তা দেশীয় সুতাশিল্পকে ধ্বংস করে দেবে। কিন্তু একইসাথে তারা এও বলছে যে, যেহেতু আগামী মৌসুম অর্থাৎ অক্টোবর আসার আগে আন্তর্জাতিক বাজারে সুতার দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নাই। কাজেই সে পর্যন্ত তাঁতীদের ও মিল মালিকদের সুরক্ষায় ভর্তুকি দেয়া যেতে পারে।

অন্যদিকে তাদের অভিযোগ; কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সবসময়ই সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে ইনডিয়া থেকে সুতা আমদানি করতে চায়।

 

সরকার 

অচলাবস্থা চলার সময়, সরকার বারবার বলছিল সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সাথে দফায় দফায় বৈঠক সত্ত্বেও কোনো ফল পাওয়া যায় নাই। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছেন, সুতার মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাঁতিদের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে। তাঁত বোর্ডের তরফ থেকে তখন বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আলাপ-আলোচনার পর সুতা আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।


সুতা ও তুলার দাম বাড়ার কারণ ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলা

  • হস্ত ও মেশিন চালিত তাঁত।
  • রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প।
  • সুতার ওপর নির্ভরশীল দেশের হোসিয়ারি শিল্পও মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছিল।

মে মাসের শেষ পর্যন্ত দেশের শতকরা ষাটভাগের বেশি তাঁত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শুধু নারায়নগঞ্জ এলাকার পাঁচশ হোসিয়ারি শিল্প উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। আরও প্রায় তিন হাজার হোসিয়ারি শিল্প লোকসানের মুখে পড়েছিল।

দেশে উৎপাদিত সুতার মাত্র পনেরো শতাংশ ব্যবহার হয় তাঁত শিল্পে। বাকি পঁচাত্তর শতাংশ ব্যবহার করে যন্ত্রচালিত বস্ত্র খাত, প্রধানত রপ্তানিমুখি নিটওয়্যার কারখানাগুলা। বিশাল মূলধন থাকার কারণে, এই খাত উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয় নাই, কিন্তু প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল।

সুতাশিল্পের বর্তমান অবস্থা: একনজরে

চাহিদা 

সরবরাহ

ঘাটতি

 

বিভিন্ন হিশাব-নিকাশ মিলিয়ে সুতার চাহিদা ১০ লাখ টন। নিটওয়্যার শিল্পে চাহিদা ৭ লাখ টন, তাঁত শিল্পে চাহিদা ৩ লাখ টন। 

 

দেশী স্পিনিং মিলগুলো উৎপাদন করে ছয় লাখ টন। উৎপাদিত সুতার ৮৫% নিটওয়ার শিল্পে ব্যবহার হয়। অবশিষ্ট ১৫% তাঁত শিল্পে ব্যবহার হয়।

 

স্বাভাবিকভাবে দেশীয় বাজারের সরবরাহের চাইতে চাহিদা ৪ লাখ টন বেশি থাকে।

বিদ্যুত সংকটের কারণে চাহিদার সাথে সরবরাহের ফারাক দ্বিগুণ বেড়েছে।

 

 বিদ্যুৎ সংকটের কারণে এবছর সুতা উৎপাদন প্রায় ৫০% হ্রাস পেয়েছে।

 

বিদ্যুত ঘাটতির কারণে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ টন। গত দুই বছরে দেশে নতুন তাঁত বসেছে লাখখানেক ফলে ঘাটতি আরও বেড়েছে।

 

 

সুতার সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়া ও বিদ্যুতের অভাব

বিকেএমইএ’র অভিযোগ, সুতা কারখানাগুলা প্রায়ই অযৌক্তিকভাবে হঠাৎ করেই সুতার দাম বাড়িয়ে দেন। এজন্য সুতা খাতের শিল্প মালিকদের অতিরিক্ত মুনাফার প্রবণতাকে দায়ী করছে সংগঠনটি। সুতার দামের পরিসংখ্যান তুলে ধরে গত এপ্রিলে সংগঠনটির প্রধান জানিয়েছিলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি সুতার দাম ২ দশমিক ৮৫ মার্কিন ডলার থাকলেও এপ্রিলে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৮৪ ডলার। কিন্তু অন্যদিকে বিটিএমইএ তখন জানিয়েছিল; অতি মুনাফা না বরং আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বাড়া এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটে তাদের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সংগঠনটির তথ্যমতে, গ্যাস ও বিদ্যুতের অভাবে কারখানাগুলাতে উৎপাদন গত এপ্রিলে প্রায় ৬০ ভাগ কমে এসেছিল, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছিল কয়েকগুণ। একারণেই বাজারে সুতার মূল্য বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন বিটিএমইএ সভাপতি।

সুতার দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বেড়ে যাওয়া। এ বছরের প্রথম ৬ মাসে সুতার প্রধান কাঁচামাল তুলার দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ। তবে আমাদের দেশে বাজার উন্মুক্তকরণের পর থেকেই যেটা দেখা যাচ্ছে তা হল আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বাড়ার প্রবণতার সাথে দেশীয় বাজারের প্রবণতা কিছুটা ফারাক থাকে। মুদ্রা ও করনীতির পার্থক্যের কারণে যে ফারাক থাকে তা কোনো ব্যতিক্রম না। কিন্তু এর বাইরে কোনো ফারাক থাকলে বাজারে কারসাজি রয়েছে বুঝা যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম যে কারণে যেভাবে বেড়েছে

বাংলাদেশ পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম তুলা আমদানি কারক দেশ। বাংলাদেশে সুতার চাহিদা অনেক। কিন্তু সে তুলনায় তুলার উৎপাদন অনেক কম। প্রতি বছর বাংলাদেশ কমপক্ষে ৪০ লাখ বেল তুলা আমদানি করে। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি তুলা আমদানি করে উজবেকিস্তান থেকে। এরপর করে ইনডিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন রাজ্য, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম আফ্রিকা, কাজাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ থেকে।

গত বছর খারাপ আবহাওয়ার জন্য উজবেকিস্তানে তুলার উৎপাদন কমে গেছে। সাথে মানও কমে গেছে। ফলে উজবেকিস্তান থেকে আমদানি কমে গেছে। তাছাড়া ইরানের ওপর আমেরিকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণেও উজবেকিস্তান থেকে তুলা আমদানি করা অনেক সময় সাপেক্ষ ও ব্যয় বহুল হয়ে পড়েছে। কারণ উজবেকিস্তানের কোনো সমুদ্র বন্দর নাই। দেশটি সমুদ্র পথে আমদানি রপ্তানি করে ইরানের বন্দর ব্যবহার করে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের বন্দর হয়ে জাহাজ চলাচল সীমিত হয়ে যাচ্ছে এবং ব্যাংকগুলো ইরানের সাথে লেনদেনে ঋণপত্র খুলতে প্রায়ই আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কিছুদিন আগে জাতীসংঘের চতুর্থ দফায় অবরোধ আরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে এক্ষেত্রে সামনে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবার সম্ভবনা বেড়েছে।  

অন্যদিকে দেশটির একটি সাংস্কৃতিক উৎসবও তুলা রপ্তানিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মৌসুম শেষে তুলা চাষীরা পরিবারের সবাই মিলে উৎসব করে ফসল তোলে। এটা তাদের জাতীয় উৎসব। কিন্তু তুলা চাষীদের শিশু সন্তানদের শিশু শ্রমিক হিশাবে শনাক্ত করছে উন্নত দেশগুলা। আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটি থেকে তুলা ঢোকা’র ক্ষেত্রে নানা বাধা তৈরি করছে এই কারণ দেখিয়ে। এমনকি বাংলাদেশের মতো তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ থেকে আমেরিকার বা ইওরোপের যেসব ক্রেতারা পোশাক কেনেন, তারাও খবরদারি করছেন উজবেকিস্তান থেকে তুলা না কেনার জন্য। কোন দেশ থেকে তুলা কিনবে বস্ত্র উৎপাদক দেশগুলো, সে বিষয়টি তারাই পছন্দ করে দিচ্ছে। টেসকো, মার্ক অ্যান্ড স্পেন্সার, ভিএফ সহ আরও অনেক বড় কোম্পানিই বাংলাদেশী রপ্তানিকারকদের বলে দিয়েছে তারা উজবেকিস্তানের তুলার সুতায় তৈরি পোশাক আমদানি করবে না। সব মিলিয়ে উজবেকিস্তান থেকে তুলা আমদানি ৫০% হ্রাস পেয়েছে।

এসব কারণেই গত কয়েকমাসে ইনডিয়া থেকে তুলা আমদানি স্বাভাবিক আমদানি ১০% থেকে বেড়ে ৩০% এ পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ বিপদে পড়েছে মূলত ইনডিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে। উনিশে এপ্রিল থেকে ইনডিয়ার রপ্তানি কারকরা আর নতুন করে ফরমায়েশ নিতে পারছেন না। যদিও এই মৌসুমে ইনডিয়ার ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে প্রচুর তুলা চলে যাওয়া আটকাতে ইনডিয়া সরকার এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

অক্টোবর মাস হচ্ছে ক্ষেত থেকে তুলা পাওয়ার মৌসুম। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বলছেন, বিশ্বজুড়েই এখন সুতার দাম চড়া। এ দাম আগামী অক্টোবরের আগে কমার কোনো সম্ভাবনা নাই। তাই এ সময়ের জন্য সরকার সুতার উচ্চ মূল্যের কারণে তাঁতীদের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল কটন অ্যাডভাইজরি কমিটিও তাদের মূল্যায়নে বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বেড়ে যাওয়ায় সুতার দাম বাড়ছে। এই সংকটের পর আমদানিকারকরা আরো কিছু উৎস যেমন অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল প্রভৃতি দেশ থেকে আমদানির চেষ্টায় তদবির চালাচ্ছে।

বিকল্প বাজার তালাশ করা

শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে একতরফাভাবে ইনডিয়ার ওপর নির্ভরতা বাংলাদেশের শিল্পখাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সর্বশেষে সুতা ও তুলা সংকট তা আরেকবার প্রমাণ করল। উজবেক তুলার উৎপাদন খারাপ হওয়ার এই সময়ে বাংলাদেশে তুলা রপ্তানি বন্ধ করে দিলো ইনডিয়া। দীর্ঘদিনের স্থায়ী গ্রাহক হবার পরও বাংলাদেশের সাথে ব্যবসায়ীক সম্পর্কটা আস্থা ও বিশ্বাসের উপার প্রতিষ্ঠিত করবার মত আচরণ করে নাই দেশটি। বাংলাদেশের শিল্পখাতের জন্য এমন পরিস্থিতি নতুন না। যেকোনো সংকটকালে এধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে একটা অসহায় অবস্থায় ফেলে দেবার প্রবণতা এবং প্রমাণ দুটোই ইনডিয়ার রয়েছে। সেটা ২০০৮সালে চাল-এর বেলায় যেমন ঘটেছে অন্য যেকোনো কিছুর বেলায়ও সমানভাবে তা ঘটতে পারে।

ফলে বস্ত্র শিল্পখাতের নিরাপত্তা, উৎপাদন চালু রাখা ও অগ্রগতির স্বার্থে বাংলাদেশকে খুব তাড়াতাড়িই বিকল্প আমদানি বাজার তালাশ করতে হবে। সেই কৌশল এবং নীতিনির্ধারণী বিষয়ে এখনই ভাবা দরকার। বিকল্প বাজার ইনডিয়া বা উজবেকিস্তানের চেয়ে কতটা লাভজনক হবে, মান কেমন হবে এবং পুরা আমদানি প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে এসব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অস্ট্রেলিয়া সেক্ষেত্রে একটা বিকল্প হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। এক্ষেত্রে একইসাথে বাধাগুলা দূর করার জন্য উজবেকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে কূটনৈতিকভাবে জোর তৎপরতাও চালাতে হবে।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।