চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা



ফরহাদ মজহার ফরিদা আখতার সাংবাদিক সম্মেলন

আমরা সুবিচার চাই: গুম অপহরণ বন্ধ হোক

১. ফরিদা আখতারের বক্তব্য

 শ্রদ্ধাভাজনেষু

আজ আমি এবং ফরহাদ মজহার আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি দীর্ঘদিন পর আমাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরার জন্য। গত ৩ জুলাই সকালে ফরহাদ মজহার যে ঘটনার শিকার হয়েছিলেন, সেদিন সারাদিন দেশের মানুষ, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, সুশীল সমাজ, সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন শুভাকাঙ্ক্ষী আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞ করেছেন।

সুষ্ঠ তদন্ত ও আইনী প্রক্রিয়ার স্বার্থেই আমরা এতদিন চুপ থাকা সঠিক মনে করেছি। গুমের শিকার অধিকা (আরো পড়ূন)

ফেব্রুয়ারি ভাবনা: ৫

পুরানা সমাজ ভাঙা এবং নতুন করে সমাজ গড়ার ইচ্ছার অর্থ হোল বিদ্যমান রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে পালটা রাজনৈতিক শক্তি হিশাবে পরিগঠিত হওয়া। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের সামন্ত সমাজ ও প্রাচীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিপ্লবীরা তত্ত্বগত ভাবে যে ধারণা ব্যবহার করে এসেছেন সেটা হচ্ছে ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লব’।পাশ্চাত্যে গণতন্ত্র আপসে আপ কায়েম হয় নি। দীর্ঘ আন্দোলন, সশশ্ত্র লড়াই এবং গণ অভ্যূত্থানের মাধ্যমে কায়েম হয়েছে। আমরা এখন যেভাবে গণতন্ত্র বলতে নির্বাচন বুঝি -- সেই গণতন্ত্র (?) ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করে। জনগণ তাদের মানবিক ও নাগরিক অধিকার আপোষে আদায় করতে পারে নি। অতএব জনগণকে গণতান্ত্রি (আরো পড়ূন)


ফেব্রুয়ারি ভাবনা: ৩

বায়ান্ন বা একাত্তর পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন থেকে আলাদা বা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। একুশ ও একাত্তর সাতচল্লিশেরই ধারাবাহিকতা। তবে বাংলাদেশের হিন্দুত্ববাদী শক্তি তা অস্বীকার করে। এই অস্বীকারের মধ্য দিয়ে তারা এই দেশের কৃষকদের জমির অধিকার ও মালিকানা লাভের লড়াইকেও অস্বীকার করে।

বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের কৃষকদের সংগ্রাম ভুলে যাওয়া, শেরে বাংলা ফজলুল হককে ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়া, শেখ মুজিবরের পাশা পাশি মওলানা ভাসানীর নাম না নেওয়ার বাতিক একান্তই বাংলাদেশের নব্য পেটি বুর্জোয়া শ্রেণীর। এরাই বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদের প্রধান ধারক ও পোষক। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক বিপ্লব সফল করতে হলে এই শ্রে (আরো পড়ূন)


ফেব্রুয়ারি ভাবনা: ৪

মতাদর্শিক ভাবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের লড়াই মূলত বাঙালী জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে। বিদ্যমান ফ্যসিস্ট শক্তি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার যা মতাদর্শিক ভিত্তি। শ্রেণী হিশাবে জনগণের শত্রু হচ্ছে শহর ও মফস্বলের আধাখেঁচড়া ‘শিক্ষিত’ পেটি বুর্জোয়া শ্রেণী, যারা বাংলাদেশের ইতিহাস বলতে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ বোঝে। শেখ মুজিবর রহমানকেও এরা তাঁর ঐতিহাসিক তাৎপর্যের আলোকে বোঝে না। ইংরেজ আমলে বাঙালি মুসলমানের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় লড়াইয়ের পরিণতি হিশাবে কিভাবে একজন তরুণ মুসলিম লীগ সমর্থক একাত্তরে বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠলেন সেটা বোঝার ক্ষমতা এই শ্রেণীর নাই। ক (আরো পড়ূন)


ফেব্রুয়ারি ভাবনা: ১

জাতীয় রাজনীতির মৌলিক পরিবর্তন কখন কিভাবে ঘটে সেটা সবসময় সংবাদপত্র পড়ে কিম্বা গবেষণা করে বোঝা যায় না। যে প্রতীকী চিহ্নগুলো সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী তাদের শ্রেণীর আধিপত্য কায়েমের জন্য গড়ে তোলে সেই চিহ্নগুলোর বিকাশ, রূপান্তর ও ক্ষয় বিচার খুবই জরুরী কাজ। আমরা লক্ষ্য করলে বুঝব বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বা বর্ণবাদী বাঙলিত্বের ক্ষয় একই সঙ্গে শহিদ মিনার বা বেদীকেও গৌণ করে তুলেছে। তার মানে কিন্তু নিজের ভাষার সঙ্গে আমাদের বন্ধন শিথিল হওয়া না। বরং আরও দৃঢ় হওয়া। মাতৃভাষা মানে শুধু 'প্রমিত' ভাষা না, বরং তার নানান জীবন্ত চর্চা জনগণের মধ্যে জারি রয়েছে যার মধ্যে আমরা 'বাস' করি।

(আরো পড়ূন)


ফেব্রুয়ারি ভাবনা: ২

বাংলাদেশে ‘বাঙালিত্ব’ সংক্রান্ত ধারণা গড়ে উঠেছে ‘বাঙালি’র ঔপনিবেশিক ইতিহাসে; বর্ণ হিন্দুর হাতে তৈরি ‘বাঙালি’ ধারণার রাজনৈতিক অভিপ্রকাশ হিশাবে। ইংরেজ ঔপনিবেশিক আমলের বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি -- বিশেষ ভাবে হিন্দু উচ্চ বর্ণের ধ্যান ধারণার মধ্য দিয়ে। এই বর্ণ হিন্দু ও অভিজাত শ্রেণি একই সঙ্গে জমিদার-মহাজন শ্রেণীর অন্তর্গত, ইংরেজের তাঁবেদারি করে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বাগিয়ে নিয়েই তারা ‘বাবু’ বা ‘ভদ্রলোক’ হয়েছে। পূর্ব বাংলা বা বর্তমান বাংলাদেশ একদা মূলত তাদের অনেকেরই জমিদারির অন্তর্গত ছিল। সেই জমিদারি তারা আইনী ভাবে ভোগ করত (আরো পড়ূন)


কোভিড ভ্যাক্সিন: ব্যবসা, বিজ্ঞান ও রাজনীতির গুহ্য পরিভাষা: ২

ভারতীয় ভ্যাক্সিনের ‘উপহার’ কূটনীতির তামাশা এবং বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যাক্সিনের বাজার দখলের কৌশলের পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট ভাবে ভারত থেকে ভারতীয় কোম্পানি সিরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত ভ্যাক্সিন নিয়ে আমি একটি পোস্ট দিয়েছি। আমার পোস্ট ইংলন্ডের এস্ট্রা-জেনেকা নিয়ে নয়, কিম্বা তার ফেইজ থ্রি ট্রায়াল শেষ হয়েছে কি হয় নি সেই বিষয়েও নয়, Lancet পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়েও নয় । এমনকি তার ‘ইমার্জেন্সি এপ্রুভাল’ হয়েছে কি হয় নি সেই প্রকার কোন বিষয়ই আমার পোস্টের আলোচ্য ছিল না। কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারীর অবহিতকরণ সম্মতিপত্রের শর্তে বলা হয়েছে, “এই টিকা গ্রহণের স (আরো পড়ূন)


কোভিড ভ্যাক্সিন: ব্যবসা, বিজ্ঞান ও রাজনীতির গুহ্য পরিভাষা: ১

নরেন্দ্র মোদীর দিল্লী তাদের তাঁবেদার সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে তাদের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ২০ লাখ চার হাজার ডোজ ভ্যাক্সিন ‘উপহার’ দিচ্ছে। ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ ভারত সরকার বাংলাদেশের মানুষের জন্য ২০ লাখ চার হাজার ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা 'উপহার' হিসেবে পাঠিয়েছে। এটা বিলাতের অক্সফোর্ড ও এস্ট্রাজেনিকার ভ্যাক্সিন না, অর্থাৎ বিলাতে উৎপাদিত হয়ে বাংলাদেশে আসে নি। ভারতের উৎপাদিত ভ্যাক্সিন। ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার কোম্পানির দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এর অনুমো (আরো পড়ূন)


ভাসানী পাঠ ও পর্যালোচনা: ৪

মওলানা ভাসানীকে বঙ্গীয় কমিউনিস্টরা ‘লাল’ ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না। ‘সবুজ’ বা ইসলামি ছোপ দেখলেই তারা গোস্বা করে। ইসলামপন্থিরা আবার এককাঠি চড়া।

আগ্রহভরে ফেইসবুকে একজন তরুন আলেম ইফতেখার জামিলের (Iftekhar Jamil) লেখা পড়লাম। তিনি লিখেছেন, ‘ভাসানী ইসলাম প্রশ্ন’ বুঝতেন না’। টাস্কি খাবার মতো অবস্থা! প্রথমত ভাসানী ‘ইসলাম’ বুঝতেন না বললে তার একটা অর্থ হোত। বুঝতাম আলেমরা ভাসানীর ইসলাম কবুল করেনা, তাই সেকথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বলা হোল ‘ইসলাম প্রশ্ন’টাই ভাসানী বুঝতেন না। বাংলাদেশে এই ‘ইসলাম প্রশ্ন’ (আরো পড়ূন)


ভাসানী পাঠ ও পর্যালোচনা: ৩

বাঙালির ইতিহাস বলতে বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট শক্তি শুধু নয় মাসের ইতিহাস বোঝে, কারন তারা বাংলার অন্য সকল মনীষী ও নেতাদের বাঙালির ইতিহাস থেকে ছেঁটে ফেলে দিয়ে শুধু একজনকে একমাত্র নেতা হিশাবে প্রমাণ ও কায়েম করতে চায়। এই রকম একজনকে আইকন বানানো এবং তার প্রতি সকলের নিঃশর্ত আনুগত্য দাবি ফ্যাসিবাদের প্রধান চরিত্র লক্ষন। শেখ মুজিবর আমাদের ইতিহাসে অনন্য কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু তিনি হাওয়া থেকে জন্ম লাভ করেন নি। তাঁর আগে আরও অনেক বাঘের বাচ্চা এই ভূগোলে জন্ম গ্রহণ করেছে। শেরে বাংলা ফজলুল হক, হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দি, শরৎ বোস, যোগেন মণ্ডল, মানবেন্দ্র নারায়ন লার্মা এবং আরো অনেকে।

ভাসা (আরো পড়ূন)


ভাসানী পাঠ ও পর্যালোচনা: ২

তরুণ বন্ধু জ্যোতি পোদ্দার লিখেছেন: মাওলানা পাঠ জরুরি এটি অস্বীকার করার উপায় নেই। সময়ের সুর ও স্বর তিনি অনুভব করেছিলেন।

একত্ব ধারনাটি চমৎকার। দ্বৈত ভাব ভাবনা ভেদগ্রস্ত করে। অপরের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো ছাড়া অথবা অপর নিকৃষ্ট এমন ধারনা পোষণ ছাড়া তার চলে না।

এখন যে নানা রঙ দেখি সকলই ভেদগ্রস্ত। অভেদের ইশারা আছে বলে দাবি করে কিন্ত চর্চা কই?

চর্চা আর চিন্তাও কিন্তু অভেদ। ভেদগ্রস্ত হলেই সর্বনাশ।

আমার বক্তব্য হচ্ছে অবশ্যই। একদম। অর্থাৎ ভেদগ্রস্ত হলেই সর্বনাশ! চিন্তা ও চর্চা অভেদ কথাটা আলাদা ব্যখ্যার দাবি রাখে। সেটা অন্যসময় আলোচনা করব।

বিভেদবাদীদে (আরো পড়ূন)