চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা



ফরহাদ মজহার ফরিদা আখতার সাংবাদিক সম্মেলন

আমরা সুবিচার চাই: গুম অপহরণ বন্ধ হোক

১. ফরিদা আখতারের বক্তব্য

 শ্রদ্ধাভাজনেষু

আজ আমি এবং ফরহাদ মজহার আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি দীর্ঘদিন পর আমাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরার জন্য। গত ৩ জুলাই সকালে ফরহাদ মজহার যে ঘটনার শিকার হয়েছিলেন, সেদিন সারাদিন দেশের মানুষ, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, সুশীল সমাজ, সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন শুভাকাঙ্ক্ষী আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞ করেছেন।

সুষ্ঠ তদন্ত ও আইনী প্রক্রিয়ার স্বার্থেই আমরা এতদিন চুপ থাকা সঠিক মনে করেছি। গুমের শিকার অধিকা (আরো পড়ূন)

কেন ইসলাম নিয়ানিরন্তর কথা কৈতে হবে: ২

মানি, বাংলাদেশে জাতিবাদী ইসলাম আছে, কিন্তু সেটা শক্তিশালী না। 'ইসলামি মৌলবাদ' নামে সেকুলারদের ইসলাম বিদ্বেষী একটা পরিভাষা আছে, কিন্তু আদতে 'ইসলামী মৌলবাদ' বৈলা কিছু নাই। যেটা আছে সেটা হৈল ইসলামি জাতিবাদ। যার মর্ম হচ্ছে মুসলমানেরা আধুনিক অন্যান্য জাতির মতোই একটি আলাদা জাতি। আধুনিক জাতিবাদের মোকাবিলা ঠিক মতো করা গেলে জাতিবাদী ইসলামও মুখ থুবড়া পইড়া যাইব। ইসলামকে জাতিবাদের আছর থেকে মুক্ত করার জন্যই ইসলাম নিয়া নিরন্তর কথা কৈতে হবে।

'ছহি ইসলাম' বৈলাও কিছু নাই, ইসলামে তর্কবিতর্ক মতবিরোধ সব সময়ই ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আপাতত বুঝতে হবে 'ইসলামি মৌলবাদ', 'ছহি ইসলাম' (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ৭

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার বয়াতি শরিয়ত সরকারকে জামিন দেন নি। গত ৯ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মির্জাপুর থানায় শরিয়ত বয়াতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন একই উপজেলার আগধল্যা দারুসসুন্নাহ ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. ফরিদুল ইসলাম। ইতোমধ্যে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বেশ কয়েকটি আলোচনা দেখেছি, যেখানে দাবি করা হয়েছে ফরিদুল ইসলাম ব্যক্তিগত রেষারেষি বা হিংসা চরিতার্থ করবার জন্য এই মামলা করেছেন। কিন্তু এই মামলা ধর্ম ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক ও দ্বন্দ্ব যেমন স্পষ্ট করছে, তেমনি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির অবস্থানও (আরো পড়ূন)


কাঁটাতারের বেড়া, বর্ডার এবং ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকাণ্ড : ২

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে। ভারত সরকার ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তে ৩৩২৬.১৪ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। এরমধ্যে ২৭০৮.৭৭ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়ে গিয়েছে।

তো আমি সীমান্তে 'বেড়া' দেওয়া নিয়ে কথা বলব। হোক সেটা সীমান্তের পিলার, কাঁটাতার কিম্বা দেয়া্ল। 'বেড়া দেওয়া' কথাটা স্রেফ ইঁট, পাথর, পিলার জাতীয় প্রত্যক্ষ বস্তু মাত্র নয়। বেড়া অপ্রত্যক্ষ অর্থাৎ মানসিক, সাংবিধানিক বা আইনী বেড়া, কাঁটাতার বা দেয়ালও হতে পারে। ধরুন সংবিধান বা আইনের দ্বারা একটি রাষ্ট্রের না (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ৬

"সংসদে প্রধানমন্ত্রী: শরিয়ত বাউল কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেই গ্রেপ্তার" -- প্রথম আলোর সংবাদের শিরোনাম।

"কোনো ব্যক্তিবিশেষ অপরাধে সম্পৃক্ত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে"। একদম ঠিক কথা। 'অভিযোগ' তোলা যেতে পারে। শরিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের অধীনে মামলা হয়েছে। কিন্তু শরিয়ত সরকার কি কোন অপরাধের সঙ্গে 'সম্পৃক্ত' ? এটা বিরাট রাজনৈতিক প্রশ্ন।

ওপরের বাক্যটি যদি বাদ দিয়ে পড়ি: "‘নিশ্চয়ই কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেই তাঁকে (শরিয়ত) গ্রেপ্তার করা হয়েছে"। অর্থাৎ শরিয়ত 'অপরাধ' করেছেন, তাই তিনি 'গ্রেফতার' -- তখন তা ভিন্ন মানে দাঁড় করা (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ৫

বাংলার সকল তরিকার ভাবুক ভাই বোন এবং শ্রদ্ধা ভাজন মুফতি আলেম ওলেমাদের প্রতি

আসসালামো আলাইকুম!

জ্বি, গল্প আছে। জালালুদ্দিন রুমিকেও জবাব দিতে হয়েছিল।

তাঁর আমলেও কোরান হাদিসের ভয় দেখিয়ে ভূয়া যুক্তি দেওয়া হয়েছিল ইসলামে গানবাজনা হারাম। কোরানে এই রকম কোন আয়াত পাওয়া যায় নি। হালাল হারামের লিস্টেও গান নাই।

তারপর বলা হোল গান হারাম না, কিন্তু বাজনা হারাম। তারপর যখন বলা হল যে গান মানুষকে আল্লার দিকে ধাবিত করে, রসুলের প্রেমে মাতাল করে সেই গান কি করে হারাম হয়? তখন বলা হোল কিছু কিছু গান হারাম, কিন্তু সব গান হারাম না।

রুমিকে এসে তখন তাঁর ভক্তরা জিজ (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ৪

শরিয়ত সরকারের ভাষা ও রুচি নিয়ে যে তর্ক চলছে তার উদ্দেশ্য ডিজি্টাল নিরাপত্তা আইন থেকে সাধারণ জনগণের নজর ফিরিয়ে নেওয়া। এটা এক নম্বর। এর ওপরই সবার আগে জোর দিয়েছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আড়লে রয়েছে সমাজের অধিপতি শ্রেণীর রুচিবোধ: একপ্রকার রাবিন্দ্রীক আকাঙ্ক্ষা যে টাঙ্গাইলের শরিয়ত সরকার টাঙ্গাইলের ভাষায় কথা না বলে শান্তিনিকেতনী ভাষায় পালা গানে বাহাস করবেন। এটা দুই নম্বর।

সাধারণ মানুষের মুখের ভাষার প্রতি যে ঘৃণা দেখলাম, তাতে বুঝেছি বাংলা ভাষায় শ্রেণী ও আভিজাত্যের বিরুদ্ধে বয়াতিদের লড়াই একদমই সঙ্গত। এটা ধনি, অভিজাত ও তথাকথিত সংস্কৃতিবানদের বিরুদ্ধে সাধারণ গরিব ও নিরীহ ম (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ৩

বাংলার ভাবান্দোলনের যাঁরা সজীব ও জীবন্ত কর্মী তাঁরা শরিয়ত সরকারের পক্ষে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের প্রতি পূর্ণ সংহতি। এঁদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। আমি যে সিরিজ পোস্ট করছি, তা লিখা এখন আরও সহজ হয়ে গেল।

এঁদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে তাঁরা বিবেক, চিন্তা ও মতের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। বাংলাদেশে আলেম ওলেমারা বিভিন্ন তরিকা ও মজহাবে যারপরনাই বিভক্ত। সারাক্ষণই পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া ফ্যাসাদ করছেন। পরস্পরের বিরুদ্ধে তাঁরা সারাক্ষণই কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টে মামলা হোল না, হোল বাউলের বিরুদ্ধে।

পালা গানে বাউলে (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ২

বয়াতি শরিয়ত সরকার নিয়ে তর্ক আদতে ইসলাম ধর্মে সঙ্গীত হারাম নাকি হালালের তর্ক না। তার প্রকাশভঙ্গি কিম্বা তার গান নিয়েও নয়। এমনকি তার বক্তব্য নিয়েও নয়। সেই তর্ক হতে পারত তাঁকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার না করে তর্কবিতর্ক করলে, ধর্মীয় বিষয়ে বাহাসে। তর্ক করে কাউকে পরাস্ত করা আর আইন দিয়ে শায়েস্তা করা এক জিনিস না। শরিয়ত সরকারের চ্যালেঞ্জ কিন্তু বহালই রইল, সেই প্রশ্নে আমরা পরে আসব। আইনই যখন তর্কের সমাধান হিশাবে হাজির, তখন এটাই প্রমাণিত হয় চিন্তার হিম্মতের দিক থেকে আমরাই প্রতিবন্ধী। বয়াতিরা নয়। ফার্স্ট রাউন্ডে শরিয়ত সরকারই জিতে গেল। আলেম-ওলেমারা হারলেন। সাধারণ মানুষ বুঝবে শর (আরো পড়ূন)


ইসলাম, সঙ্গীত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ১

আমি বয়াতি শরিয়ত সরকারকে ডিজিটাল. নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যাঁরা একজন বয়াতিকে ধর্মের নামে জেলে ঢুকালেন এই ফ্যসিস্ট রাষ্ট্র একই আইন আপনাদের বিরুদ্ধেও মওকা মতো ব্যবহার করবে।

গত শনিবার ১১ জানুয়ারি ছিল কুখ্যাত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতারোহন এবং বাকশালের পর ২০০৭ সালে বাংলাদেশকে নিউলিবারেলিজম কালপর্বে নতুন করে আরও নিখুঁত ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থায় পর্যবসিত করবার স্মৃতিধন্য দিন।

কাকতালীয় কিনা জানি না, কিন্তু প্রতীকী অবশ্যই। এই তারিখে বয়াতি শরিয়ত সরকারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক সময় ফ্যসিবাদ বাঙালি জাতিবা (আরো পড়ূন)


'বাঙালি' এবং পশ্চিম বাংলার নির্বাচন ৫

বাদ পড়া বা পিছিয়ে পড়াদের বৃহত্তর 'বাঙালি' সমাজে অন্তর্ভূক্ত করে নেবার কঠিন কাজ বাদ দিয়ে মমতা ব্যানার্জি ‘মুসলমান তোষন’-এর সোজা পথ নিয়েছিলেন। ফলে হিন্দু ও মুসলমান উভয়ই তাঁকে ভুল বুঝেছে। তাঁর হিজাব পরা মোনাজাত করা দেখে আমি বারবারই ভেবেছি, তিনি পশ্চিম বাংলার মুসলমানকে কেন শুধু ধর্মীয় পরিচয়ে পর্যবসিত করতে চান? তারা তো বাঙালিও বটে। এটা তাঁর জন্য যেমন বুমেরাং হবে একই ভাবে হিন্দু মুসলমান ভেদও বাড়বে, কমবে না। বরং দরকার ছিল সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়কে আরও বৃহত্তর পরিসরে অন্তর্ভূক্ত কিম্বা অঙ্গীভূত করে নেবার জন্য নিরলস কাজ করে যাওয়া। ‘বাঙালি’ কথাটার উচ্চবর্ণীয়, (আরো পড়ূন)