কোভিড ভ্যাক্সিন: ব্যবসা, বিজ্ঞান ও রাজনীতির গুহ্য পরিভাষা: ২

ভারতীয় ভ্যাক্সিনের ‘উপহার’ কূটনীতির তামাশা এবং বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যাক্সিনের বাজার দখলের কৌশলের পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট ভাবে ভারত থেকে ভারতীয় কোম্পানি সিরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত ভ্যাক্সিন নিয়ে আমি একটি পোস্ট দিয়েছি। আমার পোস্ট ইংলন্ডের এস্ট্রা-জেনেকা নিয়ে নয়, কিম্বা তার ফেইজ থ্রি ট্রায়াল শেষ হয়েছে কি হয় নি সেই বিষয়েও নয়, Lancet পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়েও নয় । এমনকি তার ‘ইমার্জেন্সি এপ্রুভাল’ হয়েছে কি হয় নি সেই প্রকার কোন বিষয়ই আমার পোস্টের আলোচ্য ছিল না। কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারীর অবহিতকরণ সম্মতিপত্রের শর্তে বলা হয়েছে, “এই টিকা গ্রহণের সময়/পরে যে কোন অসুস্থতা, আঘাত, ক্ষতি হলে তার দায়ভার স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী বা সরকারের নয়”। তাছাড়া ব্যবহারকারী টিকা গ্রহণের পর তার প্রতিক্রিয়া জানাবে। গ্রহণকারীর কাছ থেকে “টিকাদান পরবর্তী প্রতিবেদন/গবেষণা পত্র” তৈরির ব্যাপারে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। এটা মূলত বায়ো-মেডিকাল গবেষণার জন্য সম্মতি পত্র। ভোক্তার ব্যবহারের জন্য সম্মতিপত্র নয়। তাই আমি লিখেছি, “সম্মতিপত্রের শর্ত পড়লে বোঝা যায় বাংলাদেশে এই ভ্যাক্সিন নিছকই টীকা কর্মসূচী নয়, বরং মানবদেহে ভ্যাক্সিন পরীক্ষা করাই আসল উদ্দেশ্য। সেটা করা হবে কোন প্রকার খরচ বা দায় ছাড়াই। বাংলাদেশের জনগণকে ভ্যাক্সিন পরীক্ষার গিনিপিগ বানানো হবে এবার”। আমার পোস্টে অনেকে এই গোড়ার তর্ক বাদ দিয়ে, অর্থাৎ মাথা থুয়ে কান নিয়ে টানাটানি শুরু করেছেন। বিজ্ঞানপন্নতার আড়ালে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে কোন দায়দায়িত্ব ছাড়া বৈজ্ঞানিক গবেষণার গিনিপিগ বানাবার পক্ষে বৈধতা খাড়া করবার যুক্তি খুঁজছেন। অতএব আমাকে অপ্রাসঙ্গিক, ফালতু ও খুচরা তর্ক না করে বড় আরেকটি পোস্ট দিতে হচ্ছে।

আমি সবচেয়ে বিস্মিত হয়েছি আমার বন্ধু Sayan Bhattyacharya-র মন্তব্যে। যে সম্মতিপত্র দেখে আমি মন্তব্য করেছি, তিনি তা ভা্লভাবে পড়েও দেখেন নি। তিনি ইনফ্লুয়েঞ্জা শট নেবার জন্য ভোক্তার সম্মতি পত্র কমেন্ট বক্সে যুক্ত করে দিয়ে দাবি করলেন, আমি ভুল। কিন্তু তাঁর সম্মতিপত্র যে আমার উল্লেখ করা বাংলা সম্মতিপত্রের শর্ত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা তিনি তা পরখও করলেন না। তিনি দাবি করলেন, “ফার্মেসীর ছাত্র হিসাবে আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে বহু দেশে (যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে) ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে গেলেও কনসেন্ট ফর্মে সই করতে হয়। এর সঙ্গে "মানবদেহে ভ্যাক্সিন পরীক্ষা করা"-র কোনো নেসেসারি সম্বন্ধ নেই”।

সায়ান ভট্টচার্য মারাত্মক ভুল করেছেন। সম্মতিপত্র নানান প্রকারের হয়। যেমন, হাসপাতালে যে কোন গুরুতর অপারেশানের জন্য সম্মতিপত্র লাগে। আমি যে সম্মতিপত্রের কথা বলেছি ও পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে ছবি দিয়েছি, সেটা বাংলাদেশ সরকারের। এমন এক সরকার যারা জগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারী। বাংলাদেশের জনগণ কিভাবে কোভিড-১৯ বিপর্যয় মোকাবিলা করবে সেই ক্ষেত্রে জনগণের মতামত ও অংশগ্রহণেরও কোন সুযোগ নাই। সরকারপক্ষের কিছু মিডিয়া একপাক্কখিক ভাবে সরকাএর পক্ষে প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার এক তরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

সম্মতিপত্রে পরিষ্কার জনগণের জীবন ও স্বাস্থ্যের দায়দায়িত্ব এড়ানোই সরকারের উদ্দেশ্য। তাই সম্মতিপত্র পরিষ্কারই ঘোষণা করে যে ভারতে উৎপাদিত ভ্যাক্সিন ব্যবহারে কেউ মারা গেলে, ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে তার কোন দায় সরকার নেবে না, শুধু তাই নয়, সিরাম ইন্সটিটিউটকেও এই সম্মতি পত্র দ্বারা সকল দায় থেকে মুক্ত করে দেবার ব্যবস্থা হয়েছে। একই ভাবে যে বাংলাদেশী প্রাইভেট কোম্পানি পরবর্তীতে ভ্যাক্সিন এনে কোটি কোটি টাকা মুনাফা কামাবে তারাও দায়মুক্ত। ভয়াবহ নোংরা রাজনীতি ও মুনাফা কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক স্বার্থের ডামাডোলে জনগণের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তাকে জলাঞ্জলী দেওয়া হচ্ছে। সম্মতিপত্রের ধরন সেটাই প্রমাণ করে। তর্কটা এখানেই। একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকলে এবং ভ্যাক্সিন এই ক্ষেত্রে স্রেফ মুনাফাকারী পণ্যে পর্যবসিত হলেই এই ধরণের সম্মতিপত্র তৈরি হতে পারে। জনগণের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার প্রতি চরম অবহেলার প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবার জন্যই আমি পোস্টটি দিয়েছিলাম। এর সঙ্গে ফেইজ থ্রি ট্রায়াল হয়েছে কি হয় নি, ভ্যাক্সিন নিরাপদ কি নিরাপদ নয়, ভ্যাক্সিন এপ্রুভ কিনা সেই সব স্রেফ বাজে ও অপ্রাসঙ্গিক তর্ক। কারন এগুলো আমরা সকলেই জানি। কিন্তু সেই সকল তর্কের বিষয়েও পরের পোস্টে আস্তে আস্তে আমি আসছি। অবশ্যই।

এবার আমরা Sayan Bhattyacharya দেওয়া ইনফুয়েঞ্জা শটের সম্মতি পত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করি। প্রথমেই সায়ানের দেয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা শটের সম্মতি পত্রে পরিষ্কার দেখব, “এই টিকা গ্রহণের সময়/পরে যে কোন অসুস্থতা, আঘাত, ক্ষতি হলে তার দায়ভার স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী বা সরকারের নয়”—এই রকম কোনই শর্ত নাই। টিকার প্রতিক্রিয়ার তথ্য দেওয়া কিম্বা গবেষণা প্রতিবেদন তৈরির অনুমতি কিছুই নাই। অতএব বাংলাদেশের সম্মতি পত্রের বিপরীতে এই সম্মতিপত্র হাজির করা শুধু ভুল নয়, চরম অন্যায় এবং নীতিগর্হিত কাজ। এটা সায়ানের কাছে আশা করি নি। সায়ানের কন্সেন্ট ফর্ম কমেন্ট বাক্সে দিয়েছি।

আরও দেখুন একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা শট নেবার আগে রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা জানবার জন্য খুবই জরুরী কিছু প্রশ্ন থাকে। ফ্লু শটের সম্মতিপত্রে তা আছে, কিন্তু বাংলাদেশের সম্মতিপত্র তার ধারে কাছেও নাই।

যেমন গ্রহীতার কোন কিছুতে এলার্জি আছে কিনা? ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কোন স্নায়ু জনিত রোগ আছে কিনা, গ্রহীতা গর্ভবতী কিনা, ইত্যাদি। বাংলাদেশের সম্মতিপত্রের এই সবের কিছুই নাই। সম্মতি পত্রের একমাত্র উদ্দেশ্ হচ্ছে সিরাম ইন্সটিটিউট, ভ্যাক্সিন ব্যবসায়ী এবং সরকারের নিজেকে সকল দায় থেকে মুক্তি দেওয়া।

বাংলাদেশের সম্মতি পত্রের শর্তে পরিষ্কার লেখা রয়েছে 'টিকাদান পরবর্তী প্রতিবেদন/গবেষণা তৈরির ব্যাপারে অনুমতি দিলাম”, এটা তাহলে বায়োমেডিকাল গবেষণা , স্রেফ ফ্লু শট জাতীয় কিছু না। ফ্লু শটের সম্মতিপত্রে এমন কিছু নাই। সম্মতি পত্রের এই ধরন দেখেই আমি বলেছি, এটি বাংলাদেশের জনগণকে কার্যত বায়ো-মেডিকাল গবেষণার জন্য গিনিপিগ বানাবার প্রকল্প। বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে ভ্যাকসিন গবেষণা ও বেচাবিক্রির প্রতিযোগিতা চলছে। ভারতীয়রা চাইছে কোন প্রকার খরচ ছাড়া ও দায় না নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ওপর ভ্যাক্সিনের পরীক্ষা, আর বায়ো-মেডিকাল তথ্য সংগ্রহ এবং আন্তর্জাতিক ভ্যাক্সিনের বাজারে তাদের পণ্যের চাহিদা তৈরি করা। এই ‘উপহার’ কূটনীতি বাংলাদেশের জনগণকে গিনিপিগ বানানোর প্রকল্প থেকে আলাদা। বৈজ্ঞানিক তর্কবিতর্ক এই উপহারগিরি থেকে আলাদা। সময় ও সুযোগ মতো সে প্রসঙ্গে আমরা আলোচনা করব।

উল্লেখ করা দরকার, অতি মারির অজুহাতে ভ্যাক্সিন মানবদেহের জন্য আদৌ নিরাপদ কিনা তার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় সীমা কমিয়ে নয় মাসের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে, জেনেটিক ইঞ্জিনীয়ারিং এবং ভাইরাসের জেনেটিক মডেফিকেশানও করা হয়েছে। অতএব অতিমারীর অজুহাতে দশ বছরের গবেষণা কালকে নয়মাসে সংক্ষিপ্ত করে আনলে সেই ভ্যাক্সিন ‘নিরাপদ’ দাবি করা স্রেফ বিদ্যমান পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটিয়ে সেই দুর্দশাকে পুঁজি করে মুনাফা কামাবার জন্য বিজ্ঞান ও কর্পোরেট স্বার্থের ‘মধুর মিলন’ আখ্যা দেওয়া যায়। ‘নিরাপদ’ কথাটা কর্পোরেট স্বার্থে কতোটা আমরা টেনে লম্বা করছি, তার ওপর নির্ভর করছে। সেটা দীর্ঘ তর্ক: বিজ্ঞান, কৃৎকৌশল এবং তাদের বাজারজাত করণের কৌশল ও ইডিওলজির সঙ্গে যুক্ত। শুধু ভ্যাক্সিন কেন, কোন ওষুধের ক্ষেত্রেই ‘নিরাপদ’ কথাটা মোটেও নিরাপদ নয়, কারণ ওষুধ খাদ্য নয়, পথ্যও নয়। ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। ওষুধ বিষ জেনেও আমরা গ্রহণ করি কারন তার ওষুধিগুণ ওষুধের বিষগুণ থেকে ভিন্ন নয় এবং অসুস্থতার মাত্রা এবং জীবনের বিপন্নতার কথা ভেবে আমরা তা গ্রহণ করতে বাধ্য হই। তাই ওষুধের ক্ষেত্রে ‘নিরাপদ’ কথাটা তার সম্ভাব্য খারাপ প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবেই বলা হয়। কিন্তু জনগণকে মিথ্যা আশ্বাস দেবার জন্য এবং ভাক্সিনজনিত ক্ষতির দায় এড়াবার জন্য যখন ‘নিরাপদ’ কথাটা যথেচ্ছা ব্যবহার করা হয়, তখন তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়ংকর বিপদ হয়ে ওঠে। এই গোড়ার সত্য আগে আমাদের বুঝতে হবে।

কোভিড ভ্যাক্সিনের অনুমোদন স্বাভাবিক ‘এপ্রুভাল’ নয়, অতিমারির ইমার্জেন্সির নামে ভ্যাক্সিন মানব দেহে নিরাপদ কিনা সেই সকল গবেষণার ধাপকে অতিশয় সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও সেখানে বিপুল তর্ক আছে। গবেষনা বিতর্কিত ব্যাপার। সেই সবের পর্যালোচনা দীর্ঘ, টেকনিকাল ও ভিন্ন বিষয়। আমার পোস্টে আমি তা উল্লেখ করিনি। আগামিতে করা্র ইচ্ছা আছে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনাও, যতোটুকু সম্ভব, সেটাও মুনাফা লোভী ভ্যাক্সিন ব্যবসায়ী কর্পোরেট ফ্যাসিস্টদের কারণে ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। যারা সামগ্রিক ভাবে ভ্যাক্সিনের যুক্তি সঙ্গত ও বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা করতে চাইছেন, অতিমারী ও ইমার্জেন্সির অজুহাতে তাদের মুখ বন্ধ করা্র জন্য বলা হয়, এটা তো ইংলন্ডে ‘এপ্রুভ’ হয়েছে, আপনি আপত্তি করছেন কেন? ইত্যাদি। আমা্র বন্ধু সায়ান ভট্টাচার্যের হয়েছে সেই দশা!

আধুনিক রাষ্ট্র কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষাকারী, বহুজাতিক কর্পোরেশানের প্রধান সহযোগী, বাংলাদেশ তার নিকৃষ্ট উদাহরণ। ভ্যাক্সিন ব্যবসায়ী কোম্পানির কাছে স্রেফ একটি মুনাফাকারী পণ্য। অপরদিকে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্টদের জন্য রাজনীতি। কেউ পারে নাই আমরা ভহারত থেকে ভ্যাক্সিন এনে দিয়েছি বলে আরও দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার নতুন হাতিয়ার। মূলত বিজ্ঞানীদের গবেষণার অর্থ এবং যে পত্রিকায় সেই গবেষণার ফলাফল ছাপা হয় তার প্রায় সবই আসে মুনাফালোভী কর্পোরেট সেক্টর থেকে। বিজ্ঞান ও টেকনলজির ক্ষেত্রে কর্পোরেট স্বার্থের বিপরীতে স্বাধীন বৈজ্ঞানিক গবেষণা একালে রীতিমতো অসম্ভব। অতএব বিজ্ঞান ও টেকনলজির চরিত্র একালের পুঁজির চরিত্র বিচার না করে বিচ্ছিন্ন ভাবে করা বাতুলতা। সেই তর্ককে আইনী তর্কে পর্যবসিত করার অর্থ বহুজাতিক কর্পোরেশানের মার্কেটিং প্রপাগান্ডার দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া। যেমন এস্ট্রা-জেনিকার ভ্যাক্সিন বিলাতে এপ্রুভ হোল কি হোল না, ভারত অনুমোদন দিয়েছে কি দেয় নাই, থার্ড ফেইজ ট্রায়াল কমপ্লিট হয়েছে কি হয় নাই, ইত্যাদি । যারা জনস্বার্থে সামগ্রিক পরিস্থিতির আলোকে ভ্যাক্সি্নের পর্যালোচনা সমালোচনা করছেন, সম্ভাব্য বিপদের কথা বলছেন, তাদের কন্ঠ্স্বর কর্পোরেট স্বার্থে বন্ধ করার জন্যই এই সকল অপ্রাসঙ্গিক তর্ক হাজির করা হয়।

আমাদের অবশ্যই বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতিটি স্তরেই কথা বলতে হবে। প্রত্যকেটি স্তরে যেখানেই সম্ভব ভ্যাক্সিন নামক মহা মূল্যবান একচেটিয়া মুনাফাকারী ‘পণ্য’কিভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে সেই প্রতিক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র, এখানে যারা ক্ষমতায় তারা অনির্বাচিত এবং জনগণের প্রতি তাদের আদৌ কোন দায় আছে বলে আমি মনে করি না। দায় ও জবাবদিহিতা চাইবার জন্য যে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন সেটা বাংলাদেশ নাই। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ইমার্জেন্সি অনুমোদন দেওয়া ভ্যাক্সিন গণতান্ত্রিক অধিকার বা কথা বলার অধিকারের অনুপস্থিতিতে ভয়ানক বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ ভ্যাক্সিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলা হলে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে ‘গুজব' বলে শাস্তির ব্যবস্থাও রয়েছে।

কিন্তু কোম্পানি, বিজ্ঞানী ও সরকার সকলকেই বিজ্ঞানের নামে নানান গুহ্য পরিভাষার আড়ালে আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের সকল্কেই জবাবদিহি করতে হবে। গুহ্য বৈজ্ঞানিক পরিভাষার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে দেওয়া যাবে না।

 


নিজের সম্পর্কে লেখক

কবিতা লেখার চেষ্টা করি, লেখালিখি করি। কৃষিকাজ ভাল লাগে। দর্শন, কবিতা, কল্পনা ও সংকল্পের সঙ্গে গায়ের ঘাম ও শ্রম কৃষি কাজে প্রকৃতির সঙ্গে অব্যবহিত ভাবে থাকে বলে মানুষ ও প্রকৃতির ভেদ এই মেহনতে লুপ্ত হয় বলে মনে হয়। অভেদ আস্বাদনের স্বাদটা ভুলতে চাই না।



ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন


৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।