ক্ষমতার বিকার ও গণশক্তির উদ্বোধন
ক্ষমতার বিকার ও গণশক্তির উদ্বোধন, ফরহাদ মজহার; প্রথম প্রকাশ আশ্বিন ১৪১৪, সেপ্টেম্বর ২০০৭। দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশন কর্তৃক প্রকাশিত, ঢাকা। পৃষ্ঠা ৩০৩; মূল্য:১৮০/=
'ক্ষমতার বিকার ও গণশক্তির উদ্বোধন' বইটি এক এগারোর জরুরি অবস্থার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে লেখার সংকলন। বাংলাদেশ ভয়াবহ রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে, বাংলাদেশের জনগণ যখন আবারও পরাধীনতায় নিপতিত! এই পরাধীনিতার চরিত্র পরবর্তীতে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসার মধ্য দিয়ে এখন আরও স্পষ্ট হয়েছে। এই পতনের নৈর্ব্যক্তিক কারণ সঠিকভাবে বিশ্লেষণ ও অনুধাবনের চেষ্টা করেছেন ফরহাদ মজহার এই বইয়ের লেখাগুলোতে। এটা সেই সময়, যখন তথাকথিত লিখিয়েরা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে আর তথাকথিত ‘মুক্তিচিন্তা’র গণমাধ্যেমগুলো ঘোষণা করে যাচ্ছে যে তারাই লেখালিখি করে একটি অনির্বাচিত ও অগণতান্ত্রিক সরকার এনেছে। যে সরকারের সমর্থনের ভিত্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও অষ্টেলিয়া এবং নেপথ্য ভারত। ভারতের ভূমিকা অনেকটা বাষের মোঘ ধরার জন্য অপেক্ষা করে থাকে হায়েনার মতো।
ফরহাদ মজহার প্রতিদিনের ঘটনা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রামকে পাঠ করেন পরাশক্তি ও বহুজাতিক কর্পোরেশানগুলোর বিপরীতে জনগণের ক্ষমতা পুনর্গঠনের প্রশ্ন মাথায় রেখে। গণশক্তির উদ্বোধন ঘটানোর সঙ্কল্পে। যে শক্তি জনগণের সামষ্টিক ইচ্ছা ও সঙ্কল্পের শক্তি ধারণ করে পরিগঠিত। তার চর্চা, গণশক্তিকেই রাষ্ট্রশক্তিতে পরিণত করবার জন্য যাঁরা লড়তে প্রস্তত তাঁদের ঐক্যবদ্ধ করা এবং বিপরীতে যাঁরা আজ বাংলাদেশকে খাঁমচে ধরেছে তাঁদের শত্রুজ্ঞান করে জনগণকে সংগঠিত করা। যে লড়াইয়ের নিয়ামক শক্তি শ্রমিক, কৃষক এবং নিম্ন আয়ের গরিব খেটে খাওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ।
ফরহাদ মজহারের অনুমান, সাধারণ সৈনিকরা সৈনিকতার মর্যাদা রক্ষার তাগিদে এই লড়াইয়ে জনগণের পক্ষে থেকে সেনাবাহিনীকে পরাশক্তি ও বহুজাতিক কর্পোরেশানের স্বার্থে ব্যবহার করতে দেবেন না। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ও সৈনিকের মৈত্রীই গণশক্তির পূর্ণ বিকাশের প্রধান শর্ত। নাগরিক ও সৈনিক উভয়কেই এই ক্ষেত্রে সচেতন হবার দরকার আছে। বাংলাদেশের সুরক্ষা ও জোরকদমে এগিয়ে যাবার এটাই পথ। নাগরকদের সৈনিক কিম্বা সৈনিকতার বিরুদ্ধে আর সৈনিকদের নাগরিক ও নাগরিকতার বিরুদ্ধে দাঁড় করাবার রাজনীতি মূলত সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতি। কারণ গণশক্তির প্রশ্ন একই সঙ্গে নাগরিকতা ও সৈনিকতার চর্চা ও বিকাশেরও প্রশ্ন। নাগরিক মাত্রই সৈনিক এবং সৈনিক মাত্রই নাগরিক -- এই নীতিই সার্বভৌম রাজনৈতিক গোষ্ঠি হিশাবে আমাদের এখন বাঁচাতে পারে। অন্য কোন কাপুরুষ চিন্তা নয়।
সূচি
- কেন এই বই?
- ক্ষমতার বিকার ও গণশক্তির উদ্বোধন।
- তত্ত্ববাধায়ক সরকার ও বলপ্রয়োগের রাজনীতি।
- অন্তর্ঘাত না নির্বাচন।
- গুড়ে বালি অথবা গুড়ের মধ্যে বালি পিঁপড়েও খায় না।
- প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে শীত কমে নি।
- মেরেছো কলসির কানা তাই বলে কি প্রেম দেবো না।
- কেউ কেউ এতো খুশি কেন?
- বেলুন টেপাটিটি।
- সংকটের মূল্যায়ন এবং দেশ ও দশের স্বার্থ: এক।
- সংকটের মূল্যায়ন ও দেশ ও দেশের স্বার্থ: দুই।
- র্যাংগস ভবন, বস্তি উচ্ছেদ ও পেন্টাগন।
- তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবার দাও শকতি!।
- রাজনৈতিক গতিপ্রক্রিয়া ও নতুন মেরুকরণের সম্ভাব্য ফলাফল।
- জটিল আবর্তে পড়েছে বাংলাদেশ।
- আমি কোকাকোলা খাই না।
- টাটার প্রস্তাব কি আসলেই ‘বিনিয়োগ প্রস্তাব?।
- টাটা কাহিনী।
- বার্ড ফ্লু: পরাধীন সময় ও পরাধীন চিন্তা।
- দিল্লী ১৪ সার্ক সামিট ও বাংলাদেশের রাজনীতি।
- ভূতের কারবার!!।
- রাজনীতিই রাজনীতি মোকাবিলার একমাত্র পথ।
- পহেলা মে, লাল শুভেচ্ছা।
- ‘বন্দুকের নলই সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস’-কার তত্ত্ব?।
- আমরা আসলে কী চাইছি?।
- লেখালিখি ও লেখকের কর্তব্য।
- গণমাধ্যম, রাষ্ট্র ও মানবাধিকার জনগণের আস্থা অর্জন জরুরি।
- অনাহরি পাটকল শ্রমিকের মৃত্যু এবং বাজেট প্রসঙ্গে।
- বাজেট ও নয়া উপনিবেশবাদী নীতি।
- ‘ঋণ নাও সুদ মেটাও, বিশ্বব্যাংকের গুণ গাও’।
- পলাশ, পলাশি ও পলাশির যুদ্ধ।
- পরাধীনতা বনাম জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা এবং নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান।
- ভাবতে হবে, কিন্তু কীভাবে?।
- মানবাধিকার ও আইনী প্রক্রিয়ায় বিচার।
- বাজেয়াপ্ত রাজনীতি।
সংযোজন:
- ফহাদ মাজহারের কাছে এক ডজন প্রশ্ন।
- সাপ্তাহিক ২০০০: ফরহাদ মজহারের সাক্ষাৎকার।