সদরুদ্দীন
সদরুদ্দীন, ফরহাদ মজহার; প্রথম প্রকাশ: ফাল্গুন ১৪২৪, ফেব্রুয়ারি ২০১৮। আগামী প্রকাশনী ঢাকা। পৃষ্ঠা: ৬৯; মূল্য: ১৫০/=
সদরুদ্দীন। দীনের সেনাপতি। ধর্মের নেতা।
ধৃ থেকে ধর্ম, যা আমরা ধারণ করি। দান হিসাবে পাওয়া বস্তু অধিকাংশ মানুষ অকালে অপচয় করে। যাঁরা নিজের মধ্যে নিজের বিকাশ ঘটাতে সক্ষম শেষাবধি তাঁরা কী আস্বাদন করেন জানি না, কিন্তু কামিয়াব যাঁরা ঝিনুকের মতো বুকে বিষ নিয়ে তাঁরা জবান বন্ধ করে ফেলেন।
বাংলা কবি স্বভাবে বাচাল, কিন্তু বাংলারানির একজন নগন্য সেবক হিসাবে এতোটুকু বুঝি, তিনি কবিদেরও আরাধ্য। তাই পদগুলো লিখতে হোল।
ঘোরের মধ্যে দুটো ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গে পদসকল লেখা হয়েছে। এর কোন মানে আছে কিনা জানি না, কিন্তু দুই তরঙ্গের কালপর্ব উল্লেখ করে দিয়েছি। ভেতর কিম্বা বাহির যেখান থেকেই হোক যা আসতে চায়, আসতে দিয়েছি।
একদা এক ডুমুর গাছ দেখেছিলাম, তার তলায় কেউ একজন জায়নামাজে বসে গান গাইছে। আমি অনন্তকাল ধরে শুনছি। তাঁর তেলাওয়াতের ধ্বনি অনুসরণ করে এই পদ্য।
কোথায় যাবো?
সদরুদ্দীন
এক
ছোট হয়ে আসছে বাংলাদেশ। এই শেষ উপত্যকা, এরপর গহীন গভীর গহ্বর। লাফ দাও, সদরুদ্দীন, গুম হয়ে যাবার পর লুকিয়ে রাখা লাশগুলোর এখন পাহাড় ডিঙ্গিয়ে যাবার সময়।
স্থান পরিবর্তন করতে হবে তোমাকে। যেন বিজয়ীর বেশে আবার ফিরতে পারো। এখানেই।
মক্কা থেকে মদিনার দূরত্ব খুব বেশী নয়। যুদ্ধ সবে শুরু হোল।
দুই
মানচিত্র ফেলে দাও, তোমাকে আমি ব্রহ্মা- দান করেছি। সীমানাগুলো মুছে ফেলো, ইহকাল কি পরকাল পুরা পৃথিবীটাই তোমার, সে জন্যই তোমাকে আমি জান্নাতবাসী শহিদের সাদা পোশাক পরিয়েছি। চলো ইহকালে আমরা পরকাল বুনতে শিখি।
নিহত সৈনিকেরা উঠে দাঁড়াবে এখন। কুচকাওয়াজের শব্দে মাটির পৃথিবী কেঁপে উঠবে। তাদের তকবিরে সাড়া দিয়ে নতুন বোনা প্রতিটি শস্যদানার মধ্যে মাথা তুলবে অবিনাশী অঙ্কুর।
তিন
যে ভূখ- তুমি জয় করেও হারিয়ে ফেলেছ, সেই মানচিত্র তোমার নয়। আমার পাশে এসে দাঁড়াও, তোমার বাদশাহী মানুষের হৃদয়ের মধ্যে যেখানে কাঁটাতারের বেড়া নাই।
ফেলানির ঝুলন্ত শরীর তুলে নিয়ে গিয়েছেন ফেরেশতারা। আজ তার শুভবিবাহ।
চার
ছোট হয়ে আসছে বাংলাদেশ। আষাঢ়ের মেঘ গর্জন করতে করতে ছুটে আসছে ভূমিতে। কোথাও বুঝি বাজ পড়ল, সদরুদ্দীন, বিদ্যুতে ঝলসে উঠছে আকাশ।
এসো আমরা আগুন আর বারুদের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
দেখো, কতো দ্রুত লাল আর হলুদ ফুলে যুদ্ধক্ষেত্রগুলো ঢাকা পড়ছে। কোন আত্মত্যাগই বৃথা যায় না। অতীতের স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়েই ফুলগুলো পাপড়ি মেলে ধরেছে। আজ প্রজাপতিদের জনসভায় তুমিই প্রধান অতিথি।
পাঁচ
ছোট হয়ে আসছে বাংলাদেশ। এই শেষ উপত্যকা। চলো, সব দ্বন্দ্বের অবসানের জন্য ইহকালেই আমরা পরকাল বুনতে শিখি।
যেখানেই যাই, ফিরতে হবে এখানেই।
সূচিপত্র:
প্র থ ম ত র ঙ্গ
আর্জুমান্দ।
ইটালিয়ান পাস্তা আর কফি খাই।
নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ।
নিষ্ঠুর।
জৈষ্ঠ্যের পুরাণ।
আমি তাঁরই দাসানুদাস।
সদরুদ্দীন।
এহতেকাফ।
মানস সরোবর।
পহেলা জুলাই ২০১৬।
দ্বি তী য় ত র ঙ্গ
খাঁচা।
জাতীয় সঙ্গীত।
মুসাফির।
কমরেড।
সোফিয়া।
বিয়েবাড়ি।
হাড্ডিগুড্ডি।
পান্নালাল।
জেলার।
ঝরা পাতা।
ছাদ।
চলো।
বিচার।