বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
আমি অনেকদিন আগে গ্রামে একটা হিন্দু ভাইবোনদের একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম সেখানে আমি যখন যাই তখন একটা গান হচ্ছিল, ‘বেলা নাই বেলা নাই...’, আমার কাছে মনে হয় এই সরকারেরও এখন আর বেলা নাই। একটু আগে তুহিন মালিক তেহরান রেডিওতে কী বলেছিলেন বললেন: সমস্যা সৃষ্টি করেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রি। আমি আজকে নয়াদিগন্তে আমি একটি লেখা লেখেছিলাম, সেই লেখাতে এই কথাই আমি লিখেছি: একমাত্র সমাধান প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ। এই ভাবে আমরা একই কথা বলছি। আবার কি কাকতালীয় ব্যাপার, ফরহাদ মজহার এখানে পাশে আছেন, আজকে নয়াদিগন্তে তার আর আমার পাশাপাশি দুটি ছবি আছে -- একটু আগে যেখানে ছিলাম এই ছবি যেভাবে সাজানো হয়েছিলো --- এই একটু সামান্য ব্যতিক্রম - তো আমরা আছি , পাশাপাশি আছি।
ফরহাদ মজহারকে আমি খুব পছন্দ করি। কারন আমি সোজা কথা পছন্দ করি তিনিও সোজা কথা পছন্দ করেন। এখন কেমন হয় যে কোথাও লেখা রইল যে এই কাজ করিবেন না, করিলে দশ টাকা জরিমানা; এই দাড়ি অথবা কমাটা দিয়ে যদি বলা হয় এই – করিবেন, না করিলে তার জন্য জরিমানা -- তাহলে ফরহাদ মজহারের বক্তব্য নিয়েও এ রকম অবস্থা। এরকম কাজ কিন্তু বহু মানুষ করেছেন। আমি যাদের বক্তৃতা শুনলাম প্রধানমন্ত্রীর উপর প্রথম এই অভিযোগে অভিযুক্ত হবার সাক্ষী। তিনি খুব গুছিয়েসাজিয়ে কথা বলেন না, প্রধানমন্ত্রীর মত কথা বলেন না।
আমি আপনাদের ঘরের লোক না, আমি আরেক ঘরের লোক। আপনাদের বিরোধীদের যে আরেক পক্ষ আছে আমি তাদের লোক; যখন তারা আক্রান্ত হয় এবং তাদের পক্ষ গিয়ে দাঁড়াই। তিনি আমাকে ব্যাপক ভাবে চান স্বাধীনতার পর থেকে -এখানে এসে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধে যেন সবার কাছে আসতে পেরেছিলাম। আমি গর্ববোধ করি দুই জনের মধ্যে। সেটা হলো গাজী -- রুহুল আমীন গাজী আর একজন আবার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। এখন আগের আবদুল সবুর খান যখন আবেদ খান - আমরা তখন শুধুমাত্র সাংবাদিকদের লাগিয়ে দিয়ে বিভেদ সৃষ্টি । যদি আমরা বিভেদ অতিক্রম করতে পারি তাহলে তো ...
আমি একটা মানুষ, আমাকে আপনারা আহবান করেছেন। আমাকে প্রয়োজন হলে যখন ডাকবেন আমি আমার মতের বাইরে যেতে পারব না। আমি দিগন্ত টিভিতে যেতাম বলে আমি রাজাকার হয়েছি; কিন্তু আমি রাজাকার নই। নয়াদিগন্ত পত্রিকায় লিখি কিন্তু আমি আমার কথাই লিখি। আমি পত্রিকার লেখা লেখিনা। দিগন্ত টিভিতে গোলাম আযমের কথা বলি না। আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম এখন যদি দেশের জন্য রাজাকার হতে হয় তা আমার কোন আপত্তি নাই। মুক্তিযুদ্ধে আমার কমান্ডার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এখন আর কেউ নেই। এখন রাজাকারের কমান্ডার আমি নিজেই রাজাকার হয়ে যাব। কিন্তু দেশের মানুষের স্বার্থের বাইরে আমাকে নেওয়া যাবে না।
এখানে ফরহাদ মজহাররের বক্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে। তার কথার উপব্যাখা হয়ে থাকে, তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন এটাই মানুষের ধর্ম এবং তিনি ব্যাখা দিয়েছেন সেই জন্য আমি এসেছি। একজন সাংবাদিক, আমার দেশের সম্পাদক এই রকম একটা শক্তি অর্জন করতে পারে এটা আমার জানা ছিলনা। যদি তার দোষ হয় তাহলে আপনাদের অনেকেরই গলায় দড়ি পড়তে হয়, মাজায় দড়ি পড়তে হয়, হাতে হ্যান্ডকাফ পরে জেলখানায় যেতে হয়। আপনারা বাহিরে থাকবেন মাহমুদুর রহমান জেলখানায় থাকবে এটাতো হতে পারে না।
তাই আমি অনুরোধ করব ফরহাদ মজহারকে ফোর্স করা দূরের কথা মাহমুদুর রহমানকে ছেড়ে দিন। সামনে যদি নির্বাচন করতে চান ছেড়ে দিন, ছেড়ে দিন। ছেড়ে না দিয়ে আপনাদের কোনো উপায় নেই। আমি খুব চিন্তিত, এই সভায় এসে শুনছি, ফরহাদ মজহার আক্রান্ত। তার কিছু কথার কারনে। কয়েক দিন পর গ্রেফতার করবেন। আমার মনে হলো যে আপনারা তার প্রতিকার করবেন। বাংলাদেশে ৪২-৪৩ বছর পরে মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার বলে বিভাজন সৃষ্টি করে আর যাই হোক জাতীয় কোনো উন্নয়ন করা যাবে না। আমি আবারো আমাকে আহ্বান করবার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফরহাদ মজহারকে বলব, ভয় নাই ভয় নাই। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে প্রাণ যে করিবে দান ভয় নাই তার ভয় নাই।