অনন্ত রাজপথে

বাইরে তাকাই, ছেলেবেলা দেখি
আমার আর তাকাতে ইচ্ছা করে না
কিন্তু এখন আমি ভিতরেই দেখি
আমার সাথেই চোখাচোখি হয়ে যায় মেয়েটার

অনেক শব্দ অক্ষর উড়ছে আর উড়ছে
আমি হাত বাড়াব না
আমার চিৎকার ফিরে আসছে তাদের গায়ে ধাক্কা লেগে

সমুদ্র, নীলাভ আকাশ অসহ্য হয়ে উঠছে
আমি কোনো সুর পাচ্ছি না যার গায়ে হেলান দিতে পারি
আমি স্থির, শব্দহীন— পানি না, পাথর না, না কোনো হাওয়া
আমাকে স্তব্ধতায় আকুল করে রাখছে যুদ্ধে ঘায়েল কবুতর


বিয়ে বাড়িতে ফুলশয্যা ছাড়া সবকিছুর আয়োজন পাকা
ছবির জন্য মেকী হাসি কীভাবে হাসব তার মহড়া দিচ্ছি
থরে থরে সেজে আছে প্রেম আমার জন্যে
বসন্ত আর বর্ষণের মিশেলে শরীর সঁপে দিচ্ছি বাতাসে
জমে যাচ্ছে আগুনগুলো বিষের নীলে 


আমি তো শেষ পাতাটার ঝরে যাওয়াকে নিজের মৃত্যু ভাবছি না
আমি বাইরে তাকাবো না 


তারপরও প্রায়শই আমাকে রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়
পাতাগুলো আমাকে দেখে নিশ্চয়ই
আমি তাদের দেখি না

অথচ দু’টো ফুল গাছের গোড়ায় পানি ঢালি রোজ
কিছুদিন আগে একটা ফুলের গাছ শুকিয়ে গেল
আমি শুকনো পাতাগুলোকে ধরেছিলাম, ছুঁইয়েছিলাম গালে
আমার মৃত্যু হয়ে যায় নি। হয়তো বা সেটা অতীত

mukta
অনন্ত রাজপথে অন্তর ভরা ফকিরি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
দেখি প্রবল গতিতে এক একটা যান্ত্রিক সিংহ আমাকে পেরিয়ে যাচ্ছে
চারপাশ দিয়ে— শো শো শব্দে আমাকে ফেলে যাচ্ছে


আমি স্থির থাকতে চেয়েছিলাম অনন্তকাল
অটল থাকতে চেয়েছিলাম
— থাকছি না কি?


রাস্তার পাথর নিয়ে খেলতে খেলতে আমি হাঁটতে থাকি
সিঁদুর মাখা একটা কপালের কথা মনে পড়ে
কপাল ভেদ করা দৃষ্টি পেলাম পর থেকে আমার আর মানবতা বোধ নেই


তবে আমি কাঁদি। হয়তো আমি বস্তুবাদী বলেই— কাঁদি। মানবতাবোধ থাকলে হয়তো
আমি আত্মহত্যা করে ফেলতে পারতাম

করোটির ভিতরে দেখার দৃষ্টি নিয়ে
আর কোনো স্পর্শে শিহরণ না হলে
আর কোনো প্রেম রহস্যময় না হলে
আর কোনো কবিতা সৎ না হলে
গোলাপ কেন ফুটবে এই জগতে? 


আমাদের কেন দুটি দেহ এই বেদনায়
উড়ে গেছে পরাগায়ণের প্রজাপতি


নিজের সম্পর্কে লেখক

কবি, কবিতা ভালবাসি...



ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন


৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।