'মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নেই'

গত ২২ ফেব্রুয়ারী শনিবার জাতীয প্রেস ক্লাব মিলনায়তে আমার দেশ পত্রিকার কারারুদ্ধ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের লেখা, মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নেই। এই শিরোনামে বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে দেশের রাজনীতিক,বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক,আইনজীবীসহ বিশিষ্ট জন’রা এই প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন।


book


সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এই প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে। এই বইটি প্রকাশ করেছে কাশবন প্রকাশনা, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে বক্তব্য রাখেন বি এন পির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ঢাকা বিশ্বব্যিালয়ের সাবেক উপাচার্য ও রাষ্টবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড.এমাজউদ্দিন আহমদ, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, রাষ্ট ও সমাজ চিন্তক কবি ফরহাদ মজহার, বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান, ইউনিভারসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্বব্যিালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ইঞ্জনিয়ার্স ইনস্টটিউিট অব বাংলাদেশের (আইইবি) ঢাকা কেন্দ্রের সভাপতি প্রকেীশলী মহসিন আলী, ঢাকা বিশ্বব্যিালয় শিক্ষকসমিতির সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, বইটির প্রকাশক ও কাশবন প্রকাশনার স্বত্বাধিকারী আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই উল্লেখ করে বক্তারা বলেন দেশে বর্তমানে ফ্যাসিবাদ বনাম গণতন্ত্রের লড়াই চলছে।  ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, নির্যাতিত জনগণের পক্ষে সাহসিকার সঙ্গে  সত্য উচ্চারণ করায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বিনা বিচারে ১০ মাস ধরে কারারুদ্ধ রয়েছেন।

অধ্যাপক ড.এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে মাহমুদুর রহমানের লেখা ’মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নেই’ বইটি পড়ার আহ্বান জানিয়ে, সারা বিশ্বেই বর্তমানে মুসলমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তার বিবরণ মাহমুদুর রহমানের বইটিতে রয়েছে। অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, শত সাহস নিয়ে সত্য বলার কারণেই আজ মাহমুদুর রহমানকে জেলে আটকে রেখেছে এই অবৈধ সরকার।

কবি ফরহাদ মজহার বলেন, অন্যের ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি সম্মান অপরের  'মানবিক মর্যাদার' রক্ষার অন্তর্গত, এটা মানবাধিকারের প্রশ্ন। কারো বাপ মা তুলে গালি দেওয়া যেমন ব্যক্তির মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে, ঠিক তেমনি যাঁদের কাছে তাদের নবী বাবা মায়ের চেয়েও অধিক শ্রদ্ধা ও ভালবাসার মানুষ, সেই নবী সম্পর্কে অবমাননাকর উক্তি বা লেখালিখি মানবিক মর্যাদা লংঘনেরই শামিল। কোন কিছুতে অবিশ্বাস যে কারুরই অধিকার হতে পারে, কিন্তু অন্য ব্যাক্তির মর্যাদায় আঘাত মানবাধিকারে অবিশ্বাস ছাড়া কিছু নয়।। অথচ  মানবাধিকারের এই মৌলিক নীতির জায়গায় দাঁড়িয়ে কেউ যদি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের অধিকার বা মানবিক মর্যাদার  কথা বলেন, তাহলে তাকে মৌলবাদী বলে নিন্দা করা হয়। অর্থাৎ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মানবিক মর্যাদার কথা বলা যাবে না। বাংলাদেশে মানুষ হিসাবে  ৯০ ভাগ মুসলমানের মর্যাদাকে বর্তমানে ক্রমাগতভাবে অবমাননা করা হচ্ছে। প্রত্যেক মানুষের ধর্মের স্বাধীনতার অধিকার আছে, ধর্ম নিয়ে চিন্তা ও প্রচারের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত। এগুলো বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক অধিকার -- এই অধিকার সকলেরই আছে, ইসলামপন্থিদেরও রয়েছে।  অথচ যারা নিজেদের গণতন্ত্রী বলে দাবি করে তারা ইসলামপন্থিদের অধিকার ও মর্যাদা ক্রমাগত হরণ করে চলেছে। এ দেশ আসলেই এক বিস্ময়কর দেশ, অসাম্প্রদায়িকতার মুখোশ এঁটে এখানে সরবে সাম্প্রদায়িকতার চর্চা হয়, মানবাধিকার পদদলিত করা হয়। মাহমুদুর রহমান ঠিকই বলেছেন, 'মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নেই'।

সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, মুসলমানদের নিয়ে কেউ কিছু লিখলেই তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। মাহমুদুর রহমান নির্যাতিত মুসলমানদেও পক্ষে কথা বলায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।

book

 


নিজের সম্পর্কে লেখক



ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন


৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।