তামাক চাষের বিরুদে বিক্ষুদ্ধ কৃষকদের প্রতিবাদ
তামাক কোনো খাদ্য শস্য নয়, মানুষের কোনো উপকারে আসেনা, এমনকি পশু খাদ্যও নয় অথচ প্রতিবছর তামাক বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাময়িক মুনাফার লোভ দেখিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। ফলে খাদ্য ফসলের জমি চলে যাচ্ছে তামাকের দখলে। সরকারের দেওয়া কোটি কোটি টাকার ভর্তূকি সার ও সেচ সুবিধা ব্যবহার করে বছরের পর বছর মুনাফা লুটে নিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। কিন্তু তামাক চাষ না করে এই জমিতে খাদ্য শস্য উৎপাদন করা হলে দেশের খাদ্য নিশ্চয়তায় হতো। তামাক কোম্পানিগুলো থেকে তামাকচাষীরা যে লাভ পায় তার বেশীর ভাগই চলে যায় কোম্পানির ঋণ শোধ দিতে আর বাকি যেটুকু থাকে সেটা যা তামাক জনিত রোগের চিকিৎসার খরচ মেটাতে। অন্যদিকে তামাক চাষ এবং তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণে দীর্ঘ সময় লাগে। ফলে তামাক এলাকার পরিবারগুলো বছরের অধিকাংশই সময় বিভিন্ন রোগে ভোগেন। এছাড়া তামাক চাষে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে একদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে একই সাথে জমির উৎপাদন শক্তি মারাত্মক রকম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তামাক চাষের জমিতে অন্য ফসল উৎপাদন করা বেশ কষ্টকর । এছাড়া তামাক চাষের পাশের জমিতে অন্য ফসল আবাদ করা কঠিন রকম বাঁধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। অথচ তামাকচাষ নিরুৎসাহিতকরণে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন নীতিমালা না থাকায় বিগত কয়েক দশকে অরক্ষিত কৃষকদের ব্যবহার করে তামাক কোম্পানিগুলো আগ্রাসীভাবে তামাকচাষ বাড়িয়ে চলেছে। ফলে সারা দেশে এই বিষাক্ত ফসলের আবাদ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ মোকাবেলার বিধান সম্বলিত কোন কার্যকর তামাকচাষ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা না থাকায় তামাক কোম্পানিগুলোর আগ্রাসী কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। উল্লেখ্য যে একটি কার্যকর তামাকচাষ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নই আগ্রাসী তামাক কোম্পানিগুলোর নিষ্ঠুর জাল থেকে কৃষকদের সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তামাকচাষ রুখতে সক্ষম। এ সব কঠিন বাস্তবতার কারণে ভুক্তভোগি তামাকচাষীসহ এলাকার বিক্ষদ্ধ কৃষকসমাজ বিকল্প চাষের দাবিতে কুষ্টিয়া এবং বান্দরবানে আন্দোলন শুরু করেছেন।