ক্ল্যাপ ডিজিটাল বাংলাদেশ ইট হ্যাস স্ল্যাপড অফ ‘ফেছবুক’। ২০ তারিখের ঘটনায় কেন সরকার ৩০ তারিখে রাসুলের পিরিতে উথলাইয়া ঊথল?
সরকার তেনা পেচায়া ইনায়া বিনায়া অনেক কিছু একসাথে বইলা ফেছবুক বন্ধ করার ব্যাপারে যা কইল তার সারাংশ হচ্ছেঃ দেশের প্রবৃদ্ধি ও প্রগতি রুধ করিতে এবং একতা বিনষ্ট করিতে ফেছবুক যারপরনাই খেপিয়া উঠিয়াছে। একই সঙ্গে ফেছবুক জনগনের মনেও আঘাত করিয়াছে। আসলে সরকার উভয় ধরনের রাজনীতিই একঢিলা কইরা ফালাইল। কিন্তু অন্য সবার মত এই সরকারও জনগন নামক বস্তুকে স্রেফ ছাগল ঠাওরাইয়াছে। এর আগে বিবিসি রিপোর্ট করেছে র্যাব মাহাবুবুল আলম নামের একজন ফেইসবুকার কে গ্রেফতার করেছে। ওয়ারী এলাকা থেকে ভোররাতে র্যািবের সাইবার ক্রাইম টিম গ্রেফতার করেছে। র্যাাবের তরফে রনির বিরুদ্ধে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হর্তা-কর্তাদের কার্টুন আঁকা, ভিন্নরুপে ছবি প্রকাশ করা, ব্যাংগ বিদ্রুপ করা এবং বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে আপত্তিকর কথাবার্তা পোস্ট করা এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। র্যাবের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, “সরকারের ‘গন্যমান্য’ ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কথা বার্তা বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা এবং তাদের ছবি আজেবাজেভাবে প্রকাশ করা এবং বিকৃত করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে”। বিবিসির তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলাদেশে নিয়মিতভাবে পত্রপত্রিকায় সরকারের শীর্ষব্যক্তিদের ব্যাংগ বিদ্রুপ করা কার্টুন প্রকাশ হচ্ছে তাহলে এরকমভাবে রনিকেই কেন ফেইসবুকিং এর অপরাধে গ্রেফতার করা হল? এর জবাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন যে সরকারের শীর্ষব্যক্তিদের ছিবি অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে প্রকাশ করা হয়েছে সেজন্য রনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঠিক কী ধরনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল তা অবশ্য র্যা বের পক্ষথেকে জানানো হয় নাই। সরকার কোনক্রমেই রাসূলের প্রেমে পাগল হয়ে ফেছবুক বন্ধ করে নাই এটা জনগনের কাছে পরিস্কার। আবার মুফতি আমিনীগো পলিটিক্স করার চান্সটার ঃন্দ মাইরা দেওয়া গেল এই দানের মইধ্যে দিয়া। আবার তথাকথিত বাম্পন্থিরা ছেকুলারিজম গেল গেল যাতে ম্যাৎকার করিতে না পারে সেই স্বার্থে খানিকটা প্রগতির গন্ধ জুড়িয়া দেওয়া হইল। এই সব ঘটনা দেইখা প্রশ্ন জাগলো রনির ঘটনাটা কি পুরাটাই নাটক? রনি আবার টিভির সামনে নিজেরে পাগল কইতাছে। মনে লয় হেয় ছাড়া পাইতে বেশী দিন লাগব না। এই চামে আওয়ামীলীগ ইসলাম বিদ্বেষী সেই অপবাদও খানিকটা কাটে যদি। এইটা আওয়ামীলীগের হিযাব তসবীহর মত আরো একটা সিসনাল ধর্ম ব্যবসাও হইতারে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের দুই ধরনের তাৎপর্য রয়েছে। এই আচরন থেকে সরকার প্রমান করেছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আসলে টাকা দিয়ে কিনতে না পারলে পাওয়া যায়না। একটা নূন্যতম প্রেস মিডিয়ার মালিক বা স্টেক হোল্ডার হতে গেলে যে পরিমান পুঁজি দরকার তা বাংলাদেশের ৯৯% এর বেশি সংখ্যক মানুষের নাই। মত প্রকাশের জন্য প্রত্যেকের একটা করে মিডিয়া হাউস থাকা বোধকরি যৌক্তিকও না। মিডিয়ায় ঢুকতেই যে পরিমান পুঁজি প্রথম ধাক্কায় দরকার তার অভাব দূর করতে কিছুটা হলেও সাহায্য করছে ইন্টারনেট মাধ্যম। স্বতস্ফূর্তভাবে আমার মতামত সারাবিশ্বের অনেকের কাছে সহজেই পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। গরীবেরও মিডিয়ার মালিক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে ইন্টারনেট। কিন্তু এই জায়গায় এসে রাষ্ট্রযন্ত্র এবং সরকারের শ্রেণী চরিত্র আরেকবার প্রকাশ পেল। যারা বিশাল মিডিয়া হাউসের মালিক তারা কার্টুন আঁকতে পারবে, ব্যাংগ বিদ্রুপ করতে পারবে কিন্তু সাধারন মানুষ তা করতে পারবেনা। এর মানে দাঁড়াচ্ছে আপনি মত প্রকাশ করতে চাইলে আপনাকে অনেক টাকার মালিক হতে হবে। কম টাকা থাকলে সরকারের সমালোচনা না করা পর্যন্ত আপনার সীমারেখা, এর বাইরে আসা আপনার জন্য নাজায়েজ। এটা টাকা পয়সা আলা ব্যাক্তিদের জায়গা, আপনি সেখানে নিতান্তই অচ্ছুত। এই জায়গায় সরকার সুস্পষ্টভাবে তার গনবিরোধী অবস্থান আরেকবার প্রমান করেছে। এমন যদি হত যে সরকার তার আগের ইতিহাস ঐতিহ্যের আলোকে বাংলাদেশকে একটা বাকশাল মার্কা টোটালিটারিয়ান রাষ্ট্রে পরিনত করেছে তবে এই আচরনের একটা তথাকথিত আইনগত ভিত্তি ঠাওরানো সম্ভব হত। কিন্তু সরকার একদিকে ‘মূলধারার’ সংবাদ মাধ্যমের জন্য এ ধরনের কাজ নিত্যদিন অনুমোদন করছে অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সার জাতীয় ফেইসবুকার বা ব্লগারকে গ্রেফতার করছে। যদি নিতান্তই আপত্তিকর কোন বিষয় ঘটে থাকে তবে সরকার তা প্রকাশ করুক। আর অশ্লীলতার কারনেই যদি সরকার রনি কে গ্রেফতার করে থাকে তাহলে দেশে অজস্র অসংখ্য দেশি এবং বিদেশি পর্নো সাইট এমনকি টিভি চ্যানেল চলে কিভাবে? সুতরাং তথাকথিত মূলধারার সংবাদ মাধ্যম এবং জনগনের সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে সরকার মত প্রকাশের জায়গায় যেভাবে সুস্পস্টভাবে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড অবলম্বন করছে ঠিক একইভাবে অশ্লীলতার জায়গায় ও দুরকমের আচরন করছে। আরেক তাৎপর্য হচ্ছে ২০ এ মে তারিখে ফেইসবুকে রাসূল সা. কে ব্যংগ করার উৎসব পালিত হল। এর প্রতিকারে কিছু ইসলামপন্থী রক্ষনশীল সংগঠনের পক্ষ থেকে ফেইসবুক বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছিল। কিন্তু যে কোন কারনেই হোক সরকার সে দাবী মেনে নেয় নাই। যদি ‘গন্যমান্য ব্যাক্তির ব্যংগ করাই রনিকে গ্রেফতারের মূল কারন হয়ে থাকে তবে সরকারের বিবেচনায় মুহাম্মদ সা. তেমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ নন বলেই প্রতিভাত হচ্ছে। অবশ্য রক্ষনশীল দলগুলোর ফেইসবুক বন্ধ করে দেওয়ার আহবান এবং সরকারের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সমালোচনা করায় গ্রেফতার এবং জিজ্ঞাসাবাদ (রিমান্ডের নামান্তর) কোনটাই গনতন্ত্রের জায়গা থেকে আকাংখিত নয়। তবে নীতির জায়গায় সরকার এখানেও আরেকটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের নজীর স্থাপন করলো। এইবার বুঝলেন তো ২০ তারিখের ঘটনায় কেন সরকার ৩০ তারিখে রাসুলের পিরিতে উথলাইয়া ঊথল? চলুক। দেশ ডিজিটাল হচ্ছে আর বাম্পন্থিরা দেশকে সমাজতন্ত্র (আগেরকার বাকশালের নতুন ব্র্যান্ড) কচ্ছে। সবকিছু একসাথে কেওমনে হইবেক তাই হল আজকের জন্তার থিছিছ বিষয় বস্তু।
নিজের সম্পর্কে লেখক
Contributor