রাজপুত্র সমাচার-১ - মাহবুব সুয়েদ

এক-সুচনা কথাঃহাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহ্য হচ্চে রাজনৈতিক পিতা/মাতার জায়গায় উত্তরাধিকার সুত্রে তাদের পুত্র কন্যাদের আগমন।শুধু আমাদের দেশে নয় এই সংস্কৃতির চর্চা মুঠামোটি বলা চলে গোঠা বিস্বে বিরাজমান।হোক তা রাজনৈতিক দলে,হোক ক্ষমতায় বা রাজতন্ত্রে প্রায় সব জায়গায়ই এর চর্চা বিদ্যমান।হাল জামানায় যদিও বিশ্বায়নের এ যুগে একবিংশ শতাব্দির এই প্রতিযোগিতার যুগে এ উত্তরাধিকার আগমনের সংস্কৃতিকে অনেকটা বাকা চোখে দেখা হয় কিন্তু তার পরেও তা চলছে এবং মনে হয় চলবে।কমিউনিস্ট ভাবধারায় বিশ্বাসি-ইসলামী গনতন্ত্র তথা খেলাফাতে বিশ্বাসি এবং ওয়েস্ট মিনিষ্টার গনতন্ত্রের ভাবশিষ্যরা এ সংস্কৃতির ঘোর বিরুধী।কেউ যদি রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিয়ে নিজ যোগ্যতায় জনগন-দলের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তুলতে পারে এবং নেতৃত্বে আসীন হয় তাহলে অবশ্যই কারো আপত্তি থাকার কথা নয়।দুই-দেশে দেশে উত্তরাধীকারের চর্চাঃরাজতন্ত্রে উত্তরাধিকার সংস্কৃতির যে চর্চা তা মুলত রাজতন্ত্রের এক অবিচ্চেদ্দ্য অলংকার ও বঠে।মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে চলে আসা হাজার হাজার বছর ধরে এ ধারায় তাদের জনগন এবং সমাজ ব্যবস্থা গ্রহন করে নিয়েছে ও এত সহজে তা পরিবর্তন হবে বলেও বমনে হয়না।তবে এই উত্তরাধীকার সংস্কৃতির সবচেয়ে বেশি চর্চা হোয় আমাদের এ দক্ষিন এশিয়ায় এবং বলা যায় দক্ষিন এশিয়ার জনগন তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।ইন্দোনেশিয়ার মেঘবতি সুকর্নপুত্রি,দক্ষিন কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের ভাইকে বসানো,শ্রীলংকার চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা,মালদ্বিপের গাইয়ুমের ছোট ভাইয়ের দলের নেতৃত্বে আগমন,পাকিস্থানের ভুট্রো পরিবার এবং শরিফ পরিবার,ভারতের গান্ধী পরিবার এবং আমাদের বাংলাদেশের শেখ পরিবার ও জিয়া পরিবার বলা যায় এ সংস্কৃতির প্রকৃস্ট উদাহরন।তিন-বাংলাদেশে এর চর্চা বনাম রাজপুত্রনামাঃপৃথিবির শপ্তাসচর্যের অন্যতম দাবিদার হওয়ার যোগ্যতা রাখা দেশ হচ্চে আমাদের প্রিয় দেশ বাংলাদেশ।দুনিয়ার অদ্ভুদ রাষ্ট্র পাকিস্থানের কাছ থেকে রক্তসাগরের বিনিময়ে অর্জিত এ প্রিয় দেশের অর্জনের পরিমান অনেক।আমরা আমাদের ৪৩ বছরের এ যুক বয়সে নোবেল,নাইঠুড,এভারেষ্ট জয় থেকে শুরু করে অনেক সুকর্মের এবং সুসন্তানের জন্ম দিয়েছি।এ ৪৩ বছরে আমাদের যে কয়টি অর্জনকে সেরা তালিকায় নিয়ে আসা যায় তার মাঝে মনে হয় শীর্ষে অবস্থান করছে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দল এবং জনগনের উপর নেতার কন্যা ছেলে বা স্ত্রীকে বসানো।প্রধান দুদলে ছাড়াও ছোট ছোট দলসমুহেও এর চর্চা বিদ্যমান।আমরা আমাদের দুই সবেদন নীলমনি তথা প্রধান দুদলে এ উত্তরাধীকারতন্ত্রের প্রভাব এবং এর প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ নিয়ে আলোকপাত করব।ক- বিএনপিঃআমাদের মহান মুক্তিযোদ্বের সেক্টর কমান্ডার এবং ঘোষক জেড ফোর্স প্রধান শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গড়া দল হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল।সময়ের প্রয়োজনে এবং ঐতিহাসিক বাস্তবতায় ৭৫র পটপরিবর্তনের পর যখন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়া গনভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তখন তিনি বহুদলীয় গনতন্ত্রের প্রবর্তন করেন এবং ডান-বাম দু মেরুর রাজনৈতিক দলসমুহ এবং নেতাদের সমন্বয়ে গঠন করেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী দল বিএনপি।অল্পসময়ের মাঝে তার এ দল সারা দেশে ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে ফেলে এবং তিনি যখন নিজ দলকে সারা দেশে আরো শক্তিশালী করনের কাজ করছিলেন তখন সেনাবাহীনির কিছু বিভ্রান্ত অফিসারের এক ব্যর্থ অভ্যুথ্বানে প্রান হারাতে হয় ক্ষনজন্মা এ রাজনৈতিক ও বহুগুনে গুনান্বিত মহান ব্যক্তিটিকে।তার মৃত্যুর পর তার তৎকালীন দল ও সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাত্তারকে দলের চেয়ারম্যনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।এদিকে দেশের ঘাড়ে তখন সওয়ার হয়ে বসেছেন সেনাপ্রধান এরশাদ।সদ্যক্ষমতাচ্যুত দল বিএনপির প্রধান হিসেবে দল এবং স্বৈরশাহীর বিরুদ্বে লড়াই চালিয়ে যেতে চালিয়ে যেতে যে ধরনের শারিরিক এবং মানষিক শক্তি দরকার তা ছিলনা বিএনপি প্রধান বিচারপতি সাত্তার সাহেবের।এদিকে দলেও তখন ভাংগন দেখা দিয়েছিল।দল এবং দেশের বিশেষ প্রয়োজনে শিহিদ জিয়ার সহধর্মীনি বেগম খালেদা জিয়া একজন গৃহবধু থেকে বেরিয়া আসতে বাধ্য হন রাজপথে।১৯৮২ সালের শুরুর দিকে তিনি দলের প্রাথমিক সদস্যপদ লাভ করেন এবং রাজপথে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে থাকেন।স্বৈরাচার এরশাদ বিরুধী আন্দোলনে তার আপোষহীন ভুমিকা সারা দেশে দলের সমর্থকদের কাছে তাকে করে তুলে তাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিকে।৮২ সালের শেষ দিকে বেগম খালেদা জিয়াকে দলের ভাইস চেয়ারম্যন হিসেবে মনোনীত করা হয়।বয়সের ভারে নুহ্য বিচারপতি সাত্তার সাহেবের স্থলে দল তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যনের দায়িত্ব ও দেয়।এবং তিনি তার আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন অতঃপর দুই বছর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন থাকার পরে ১৯৮৫ সালের দিকে এসে দলের কাউন্সিলে তাকে বিনা প্রতিদন্দিতায় দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করা হয় এবং আজওবদি তিনি স্বপদে বিদ্যমান।(চলবে)


নিজের সম্পর্কে লেখক

অসত্য, আমানবিকতার বিরুদ্ধে সমালোচনায় অপ্রতিরোধ্য। আস্তিক, তবে বাড়াবাড়ী অপছন্দ। কোমল, কিন্তু নৈতিকতার ক্ষেত্রে কঠোর। চাওয়া একটাই, প্রাণের জন্মভূমিটা হোক সুন্দর ও শান্তিময়। আনন্দে ভরে ঊঠুক সবার প্রান।

ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন


৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।