Name : খামিন
Gender : Male
Forum Name : খামিন



বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ভবগুরে জীবন, মুখে মাছির মতন ভঁন ভঁন করত পুঁজিবাদ পতন হোক, শোষিত মানুষ মুক্তিপাক, ইত্যাদি। এসবের কারণে বিপক্ষ রাজনৈতিক শিবিরেরে হুমকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন ছিল তিক্তাতায় ভরা। এরপর, দুটি কর্পোরেট ডিগ্রী হাতে আর অন্যদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের মগজে বেনিয়াদের ফেলে যাওয়া সেই ‘স্বেচ্ছা-শোষিত’ হবার স্বপ্ন গোঁজা নিয়ে ঢাকায় চাকরীর খুঁজে এসেই স্বেচ্ছায় মজদুর রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া, যদিও মজদুর রাজনীতির হাতেকড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই এমন এক ছাত্রের হাত ধরে যে কিনা প্রথম বর্ষেই পুলিশের বন্দুক কেড়ে নেয়ার অপরাধে জেল-জরিমানা হয়। ডিগ্রীগুলো আমাকে কর্পোরেট চাকরী সহজেই পাইয়ে দিল বটে কিন্তু ক্ষুধিত মন চায় না এ জীবন এবং অবশেষে ইস্তফা। এদিকে মার্কস-এঙ্গেলস অন্যদিকে সেতং-লেলিন-স্তালিন এর দেখিয়ে দেয়া পথ আর ফিদেল-গুয়েভরার অসাধ্য সাধনের কয়েক গাছী গল্প বুক পকেটে নিয়ে আজীবন রাজনীতি করার প্রতিজ্ঞা এবং কলেজ শিক্ষতা সহ ঢাকায় ভালই কাটছিল। কিন্তু বছর ফিরতেই বাণিজ্যিক শিক্ষালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিজের কাছেই যখন অপমানিত তখন শুরু করে দিলাম ঢাকা’র নামকরা একটি প্রভাবশালী জাতীয় ইংরেজি পত্রিকার ল্যাজ ধরে সাংবাদিকতা। সবে সাংবাদিকতার অ-আ গিলছি মাত্র কিন্তু পরিশ্রম ছিল অমানবিক তবে কজে ছিল নুন্যতম স্বাধীনতা যেন ভালই লাগছিল, আবার, আগে শিক্ষক হিসেবে যা পেতাম এখন তারও চেয়ে অনেক কম মাইনে নিয়ে যখন সারাদিন দিনে আনি দিনে খাই এমন, তখন পকেট আর পেট থেকে আবার পেশা পাল্টানোর তাড়না। কিন্তু হয়ে উঠেনি, কেনেনা ঠিক একবছর পরে কিন্তু একদিন ২০-২২ শে অগাস্ট ২০০৭ অন্তরবর্তী সেনাপুষ্ট তিনউদ্দিন সরকারের দেশজুড়ে জরুরীঅবস্থা জারি এবং আবুল বাশারের ‘অগ্নি বলাকা’ পাল্টে দেয় আমার মত, এবং আজঅব্ধি সাংবাদিক (সাংঘাতিক!)। প্রমোশন পেয়েছি, তবে এখনো দিনে আনি দিনে খাই এমনটি রয়েছে আগেরমত। তবে জীবন আমার শরৎ-উপন্যাসের নায়কদের মতনই ছিল, এখনো তায়, কেনান জীবনের চরম সময়গুলোতে এক আঁজলা জল খাওয়ানোর মত নায়িকার আবির্ভাব আমাকে টিকিয়ে দিয়েছে। সে নায়িকা দিদি,খালা অথবা সুন্দরিতমা। আমি ‘অগ্নি বলাকা’র রাহুল নই আবার লাল বই ও আমার ব্যাগে নেই তবে মাওবাদী বলে আমাকে অনেকে গালি দেয় আর বলে রাহুলের বড় দাদা ‘বুলুবনের’ ভাষায় প্রতিক্রিয়াশীল। তাতে আমার কিছুই যায় আসে না কিন্তু রাহুলের বিপ্লবী বন্ধু এবং সহযোদ্ধা ‘কবি’র প্রতি সংগঠনের অন্যায় সিদ্ধান্ত আমাকে বিষণ ভাবায় কেনান কবি’র মৃত্যুটি সুন্দর ছিল না। এবং আমার এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় সেই সর্বহারা সংগঠন কীভাবে নিজের দলের কর্মিকে হত্যা করতে পারে যেমন করেছিলো আমার সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের বন্দুক কেড়ে নেয়া বন্ধুটির বেলায়।


লেখকের অন্যান্য লেখা