গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবিতা: এখনকার রাজনৈতিক কর্তব্য
রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে যে কোন নাগরিকই দুঃখিত ও মর্মাহতই হবেন। আমি ব্যতিক্রম নই। শুধু তা নয়,একই ভাবে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত।
এই পরিস্থিতিতে গত ২৮ অক্টোবর রাতে ইটিভির ‘একুশের রাত’ অনুষ্ঠানে আমি গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে নিজ দায়িত্বে কিছু কথা বলেছি। আর,আমি দায়িত্ব নিয়েই কথা বলি। সাংবাদিক মনির হায়দার অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন। এতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আমার বিশ্লেষণ ও মন্তব্য নিয়ে তর্ক তৈরী হয়েছে। তার কিছু উত্তর আরেকটি দৈনিকে আমি দিয়েছি। এই তর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভিন্ন কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে এখানে আলোচনা করব।
তর্কবিতর্ক গণতন্ত্রের মর্ম। কিন্তু সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতা ভঙ্গ করে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একাত্তর টেলিভিশন আমার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্রচার শুরু করে। তারা তাদের নিজেদের একটি টকশো আয়োজন করে। ইটিভির টক শো থেকে বেছে বেছে খণ্ডিত ও বিকৃত ভাবে কিছু অংশ পরিবেশন করে। এমন ভাবে তা হাজির করে যাতে ইটিভির টক শোতে আমার মূল বিশ্লেষণই হারিয়ে যায়। সর্বোপরি কেন আমি সেদিন গণমাধ্যম সম্পর্কে এভাবে মন্তব্য করছি সেই গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকুই বাদ দেয়। উদ্দেশ্য, সেদিন একাত্তরের টক শোতে যারা হাজির ছিলেন তাদের বিভ্রান্ত করা এবং আমার বক্তব্য সম্পর্কে ভুল ধারণা দেওয়া। বিচক্ষণ দুই একজন আলোচক সেই মুহূর্তে না বুঝলেও পরে ইটিভির টকশোর পুরোটা দেখার পর একাত্তর টিভির মিথ্যাচার থেকে মুক্ত হয়েছেন। এই প্রত্যাশা আমি করি।
যে মন্তব্য নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আমার কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলেছে সেই মন্তব্য সম্পর্কে সেই একই দিনে একই রাতে একই অনুষ্ঠানে আমি এটাও বলেছি, “যে আমি স্বভাবতই কখনই চাইব না কেউ পটকা, নিন্দা বা ঢিলও যেন গণমাধ্যমের ওপর ছুঁড়ুক। এটা কথার কথা, rhetoric। আলোচনা করার জন্য, যাতে আমরা বুদ্ধিজীবীরা, গণমাধ্যমের কর্মীরা বুঝতে পারি যে এই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া একমাত্র দায়ী নয়। আমরা, আমাদের ভুমিকার কারণে আজকে এই পরিস্থিতি আমরা তৈরী করেছি”। একাত্তর টিভি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমার মন্তব্যের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দিয়েছে।
এমনকি একুশে টিভি আমি রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ করেছি, সেটাও প্রতিষ্ঠিত করবার চেষ্টা করেছে। ডক্টর সলিমুল্লাহ খান এই ওভিযোগ তুলেছেন, কথাগুলো বলেছেন। টিভিতে তাঁর মুখভঙ্গীর মধ্যে আমাকে রাষ্ট্রের নিপীড়িনমূলক যন্ত্রের দ্বারা শাস্তি দেবার জিঘাংসা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। তার চোখে মুখে যে হিংস্রতা ও প্রতিহিংসাপরায়নতা ফুটে উঠেছে তাতে আমি অবাক না হয়ে পারি নি। যাক আমাদের দেশে এই ধরণের বুদ্ধিজীবীর জন্ম হয়েছে যারা প্রতিপক্ষকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করে শাস্তি দিতে ইচ্ছুক। সত্যিই আমরা অনেকদূর অগ্রসর হয়েছি। ইতোমধ্যে আমার নামে থানায় দুটো জিডি হয়েছে। ডক্টর সলিমুল্লাহ খান অবশ্যই এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল।
যেখানে যুগে যুগে বুদ্ধিজীবীরা রাষ্ট্রের নিপীড়নের বিরুদ্ধে নাগরিক ও মানবিক অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছে, মতভিন্নতা থাকলেও পরস্পরকে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন,সেখানে ডক্টর সলিমুল্লাহ খান আমাকে বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের হাতে নির্যাতনের জন্য তুলে দিতে চাইছেন। এই ধরণের মহৎ কাজ করেছেন বলে আমি তাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছি না। প্রকাশ্যে তিনি টেলিভিশন টক শোর বরাতে রাজসাক্ষী হয়েছেন। আমি তাঁর এই উন্নতিতে অভিভূত।
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান ও আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ডক্টর খান আমাকে হত্যাই যদি করতে চান,করতেই পারেন। তবে যার বক্তব্য তিনি পছন্দ করেন না তার চিন্তার বিরুদ্ধে লড়ার কাজকে এতোকাল তিনি গালিগালাজ বলেই বুঝেছেন। এখন আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে আমাকে হত্যা করে মনের ঝাল মিটিয়ে নিতে চান। এটাই তার বুদ্ধিজীবিতা।। এটাই আমরা শেষমেষ জানলাম। তাঁকে যখন চিনতাম তখন তার মধ্যে এই ধরণের জিঘাংসা কাজ করে সেটা আমি কখনই বুঝতে পারি নি। নিজের এই অক্ষমতার জন্য নিজের আত্ম-সমালোচনা করা ছাড়া আমার এখন আর উপায় কী!
ডক্টর খানের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আমার কিছুই বলার নাই। তিনি প্রায়ই আমাকে গালিগালাজ করেন। সেটা তাঁর রুচি। গালিগালাজের সঙ্গে বুদ্ধিবৃত্তিক সুস্থ তর্কবিতর্কের কোনই সম্পর্ক নাই, সে সম্পর্কে আমি কি বলব! পাল্টা গালি তো আর দিতে পারি না। তার গালিগালাজের কোন উত্তর দেওয়া আমি তাই কখনই সমীচিন মনে করি নি। এখনও করি না। ইতোমধ্যেই একুশে টিভির কল্যাণে এবং তার মতো ব্যাক্তিদের উস্কানির কারণে নানান স্তরের সন্ত্রাসীরা আমার ক্ষতি করবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিষয়টি থানা, পুলিশ, আইন ও রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডল অবধি নিয়ে গিয়েছেন তারা। ওপরের কথাগুলোও বলতে চাই নি। না চাইলেও এখন থানাপুলিশের কারনে উপেক্ষাও করতে পারছি না।
গণমাধ্যমের সমালোচনা রাষ্ট্রদ্রোহিতা?
ইটিভির টক শোতে গণমাধ্যম কেন আক্রান্ত হচ্ছে সেই ফেনোমেনার ব্যাখ্যা করতে গিয়েছিলাম আমি। পত্রপত্রিকায় গণমাধ্যমের ওপর হামলা হচ্ছে সেই খরের সূত্র ধরে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আলোচনা তুলেছিলেন। আমি গণমাধ্যমের সমালোচনা করলে সেটা কিভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয় সেই পাণ্ডিত্য বোঝার ক্ষমতা আমার নাই; বিশেষত যদি সুস্পষ্টভাবে বলা হয়, হামলা তো দূরে থাকুক, কেউ ঢিল ছুঁড়ুক আমি সেটাও চাই না। যদি পরিষ্কার থাকে যে যিনি কথা বলছেন, তিনি গণমাধ্যমের বাইরের কেউ নন; আর, কথাগুলো বলা হচ্ছে গণ-মাধ্যমের আত্ম-সমালোচনা হিসাবে? বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য নিজেদের দায়ী করে? কথাগুলো বলা হয়েছে বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে গণমাধ্যমের সম্পর্ক বিচার করে।
এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমাদের নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করেছে। খোদ রাষ্ট্রই ‘সন্ত্রাস’ করে। আমাদের কণ্ঠরোধ করে। পত্রিকা ও টেলিভিশান স্টেশান বন্ধ করে দেয়। অতএব আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে গণমাধ্যমের ওপর রাষ্ট্রীয় হামলা ও সন্ত্রাস বন্ধ করা। আমরা সে দায়িত্ব পালন করি নি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর এই রাষ্ট্র আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। যেসব গণমাধ্যম ও ব্যক্তি রাষ্ট্রের এই সন্ত্রাসী ও সহিংস ভুমিকার দৃশ্যমান সহযোগী তাদের সমালোচনা করলে তাদের কাছেই সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা হতে পারে। এছাড়া গণমাধ্যমের সমালোচনা করলে কিভাবে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয় সেটা বোঝার ক্ষমতা আসলেই আমার নাই। এতোটুকু বুঝতে পারি যারা আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন তারা গণবিরোধী ও গণতন্ত্রবিরোধী ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন। তাদের জিঘাংসা দেখে মনে হয় ঢাকার পুলিশ কমিশনারের চেয়েও তারা হয়তো আরো ভাল কাজ করতে পারবেন, নাগরিকদের ধরে নিয়ে টর্চার সেলে টর্চার করার কাজও আরও দক্ষ ভাবে করতে পারবেন। নাগরিকদের নির্যাতন, গুমখুন ও হত্যার দায়িত্ব তাদের ওপর দিতে তদের পক্ষের শক্তি তাদের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করতে পারেন। কিন্তু আমরা, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সাধারণ নাগরিকরা তাদের সাংবাদিক, গণমাধ্যমের কর্মী কিম্বা বুদ্ধিজীবী বলতে পারি কি?
এটা সত্য বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপান্তর ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অসম্ভব, সেটা আমি দীর্ঘদিন ধরেই বলছি। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কেউ নির্বাচিত হয়ে এলেও সেটা গণতন্ত্র নয়, বরং সেটা সাংবিধানিক একনায়কতন্ত্র কায়েম করে। এই বক্তব্য আজ নয়,নব্বই দশক থেকেই আমি বলে আসছি। বাংলাদেশের সংবিধানের সমালোচনা যখন আমি শুরু করি,তখন কেউই এই গোড়ার গলদ নিয়ে কিছু বলে নি। বাহাত্তরের সংবিধান প্রায় সকলের কাছেই ছিল পূতপবিত্র জিনিস। কিভাবে সংবিধান ধর্মগ্রন্থের স্তরে উন্নীত হয় সে এক আজব কাহিনী। নৃতত্ত্ববিদদের দারুন খোরাক। কিভাবে জাতিবাদ ও সেকুলার ধর্মপ্রাণতা ফ্যসিবাদকে ভিত্তি দেয়, রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট রূপান্তর ত্বরান্বিত করে -- তথাকথিত নানান অধ্যাপকেরাও যার প্রবক্তা হয়ে ওঠে -- তার নানান নজির আমরা বেয়াল্লিশ বছর ধরেই দেখছি। এই অবস্থায় রাষ্ট্রদ্রোহী হওয়ার অর্থ এই রাষ্ট্রেরই দ্রোহী হওয়া। আমি এই অভিযোগ আমার মাথার মুকুট হিসাবে গ্রহণ করি। আমি তো ফ্যাসিস্ট রাষ্টব্যবস্থার বিরুদ্ধেই লড়ছি। এমন একটি সত্যভাষণের জন্য ডক্টর খানকে ধন্যবাদ জানাবার ভাষা আমি খুঁজে পাচ্ছি না।
দলবাজ ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও সন্ত্রাসীর সহযোগী গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছি বলে আমি রাষ্ট্রদ্রোহী। কথাটা আরও একটু খতিয়ে দেখা যাক। আমরা এখন পঞ্চদশ সংশোধনী সম্বলিত সংবিধানশরিফের কালপর্বে রয়েছি। মজা হচ্ছে এই সংবিধানের ভিত্তিতে যে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে, সেই রাষ্ট্রের আমি দ্রোহী নই। বরং গণমাধ্যমের সমালোচনার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহী। সত্যি চমৎকার। যে বিশেষ বিশেষ গণমাধ্যম রক্ষা করতে গিয়ে আমার বিরূদ্ধে অভিযোগ সেই সকল গণমাধ্যম আর ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র যে সমার্থক যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, থানাপুলিশ করছেন তারা তা খুব ভালভাবেই অবহিত। ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখবার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের কর্মী হিসাবে তারা তাদের ভূমিকাকেই স্বীকার করে নিচ্ছেন। একই সঙ্গে ইতোমধ্যে চিহ্নিত গণমাধ্যমগুলোর দায়ও তারা নিয়েছে। বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থা রক্ষার জন্য তারা মরিয়া। তবে পঞ্চদশ সংশোধনীর পর তার যে দুর্দশা ঘটেছে তাতে সেটা এখন বেশ কঠিন। সে কারনে রাষ্ট্রের এই ফ্যাসিস্ট চরিত্রের পক্ষে তারা একদিকে প্রকাশ্যে সরাসরি দাঁড়াতে চাইছেন, আবা্র শরমও পাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন শক্তি ও ফ্যসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা উভয় রক্ষা এখন নীতিনৈতিকতার দিক থেকেও বেশ কঠিন। এই পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত মিথ্যা হলেও তারা বলছে, আমি গণমাধ্যমে বোমা মারতে বলেছি আমি রাষ্ট্রদ্রোহী। অথচ আমি পরিষ্কার করে কী বলেছি তা ওপরে উদ্ধৃত করেছি। আমি কথার ছলে রেটরিক হিসাবে যা বলেছি তার ব্যখ্যাও সুস্পষ্ট ভাবেই সেদিন ইটিভির টক শোতে দিয়েছি।
এখনকার রাজনীতি, এখনকার কর্তব্য
আমি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি বাংলাদেশের জনগণকে অবশ্যই নতুন ভাবে বাংলাদেশ ‘গঠন’ বা constitute করতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তিক বা রাষ্ট্রদর্শনের জায়গা থেকে বাংলাদেশের রাস্তবতা বিচার করে এ সিদ্ধান্তে আমি অনেক আগেই এসেছি। পঞ্চদশ সংশোধনীর পর রাষ্ট্রব্যবস্থার যে-ফ্যাসিস্ট রূপান্তর ঘটেছে তারপর এই কর্তব্য এখন সরাসরি ঘাড়ের ওপর চেপে বসেছে। নতুন ভাবে গঠন ছাড়া অন্য কোন পথ নাই। অর্থাৎ আন্দোলন-সংগ্রাম যদি জয়ী হয় তাহলে একটি রাষ্ট্রগঠন সভার (Constituent Assembly) প্রয়োজন অবশ্যই হবে। আমার রাজনৈতিক অবস্থান এবং রাজনীতিতে আমি আশু কি অর্জন করতে চাই তা সবসবময় পরিষ্কার ভাবে হাজির করেছি। আমি কখনই লুকাই নি। এই রাজনৈতিক কর্তব্যের গোড়ার জায়গা বাদ দিয়ে যারা বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত ভাবে কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করে তারা বাংলাদেশকে রাজনীতিশূন্য করতে চায়, সে কথাও আমার চেয়ে শক্ত ভাবে কেউ বলেছে বলে আমার জানা নাই। বিদ্যমান রাষ্ট্রকে বহাল রেখে বেগম জিয়া ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে চিরতরে সরিয়ে দেবার মামলা এটা নয়। আমি সে রাজনীতির বিরোধী। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর একটি বৈপ্লবিক কিন্তু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এটা কোনভাবেই এক এগারোর আগণতান্ত্রিক ‘মাইনাস টু’ ফর্মূলার প্রয়োগ নয়।
এখনকার লড়াই হচ্ছে ফ্যাসিস্ট রাষ্টব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের গণতান্ত্রিক লড়াই। এ লড়াইয়ে মতাদর্শিক বিভাজনের ভেদরেখা হচ্ছে কারা বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে আর কারা তার রূপান্তর কামনা করে। জনগণের মধ্যে নানান মতাদর্শিক বিভ্রান্তি, বিরোধ ও বিভাজন রয়েছে। এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নাই। তার সুরাহা করে নতুন ভাবে রাষ্ট্র গঠনের গণতান্ত্রিক কর্তব্য তাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া আমাদের এখনকার প্রধান কাজ। আমি বর্তমান বাস্তবতায় এই রাজনীতিকেই সঠিক মনে করি। যারা ফ্যাসিস্ট রাষ্টব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা শুধু নয়, সেই রাষ্ট্রের ফাঁসির কাষ্ঠে প্রতিপক্ষকে – বিশেষত আমাকে ঝুলাতে মরিয়া হয়ে গিয়েছে, তাদের সঙ্গে এই গণতান্ত্রিক রাজনীতির পার্থক্য দুস্তর। প্রতিপক্ষের হাতে রাষ্ট্র ক্ষমতা আছে, তারা তা প্রয়োগ করছে এবং আমাকে গ্রেফতারের আগে ক্ষান্ত হবে কিনা জানি না। কিন্তু যে জনগণের জন্য আমি লড়ছি তারা যেন আমার রাজনীতি বুঝতে ভুল না করেন সেটাই এখন একমাত্র কামনা।
এই নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট হলে নতুন ভাবে রাষ্ট্র গঠন কেমন ও কিভাবে হবে তার কৌশল নিয়ে অবশ্যই তর্ক বিতর্ক হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে কিভাবে ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণার ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়া যায় তা নিয়ে আমাদের নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হবে, নতুন ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফ বা ন্যায়বিচারের জন্য লড়েছি, কোন বিদেশী প্রভুর নির্দেশ বা কোন একটি দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করি নি। যে কেউই ইচ্ছা করলে স্বাধীনতার ঘোষণা পড়ে দেখতে পারেন। এই তিন নীতির ভিত্তিতেই যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে তা পরিষ্কার ভাবে স্বাধীনতার ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা এই তিন নীতি কায়েমের জন অকাতরে শহিদ হয়েছেন। অথচ বেয়াল্লিশ বছর এদেশের জনগণকে একটি গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্র থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ জলাঞ্জলী দিয়ে দেশের জনগণকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরাশক্তির অধীনতা ও বশ্যতা স্বীকার করে নেবার রাজনীতির চর্চা হয়েছে। আমরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি, কারও পরাধীনতা মেনে নেবার জন্য নয়। বেয়াল্লিশ বছর ধরে এ দেশের জনগণের মনে যে তীব্র ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়ে রয়েছে যে কোন মুহূর্তে তার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। আমাদের প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে গণশক্তির উন্মেষ যেন তার লক্ষচ্যূত না হয়। সঠিক ভাবে বিকশিত হয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপ নিতে পারে। আমি সেদিকে নজর রেখেই আমাম্র লেখালিখি করি।
খেয়াল করতে হবে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ইনসাফ একদিকে যেমন বাংলাদেশে আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার ভিত্তি একই সঙ্গে ইসলামের নৈতিক ও দার্শনিক আদর্শের সঙ্গেও গভীর ভাবে যুক্ত। এই তিন নীতি অন্তত নতুন রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক ভিত্তি নির্ণয় করতে পারে, যার শক্তিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা সম্ভব। মনে রাখা দরকার পাশ্চাত্য থেকে ধার করা প্রচলিত গণতন্ত্র বা তথাকথিত লিবারেলিজমের সঙ্গে ইসলামের বিরোধ আছে। আছে বলেই ইসলাম নিজের দার্শনিক অবস্থান থেকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফকে পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার যুগে নতুন তাৎপর্য দিতে সক্ষম। কিন্তু সেটা ধর্মতাত্ত্বিক অবস্থান থেকে বোঝা যাবে না। ইসলামের ইতিহাস ও দার্শনিক তাৎপর্য থেকে বুঝতে হবে। অর্থাৎ মজলুম জনগণের ধর্মীয় চেতনার মধ্যে জালিম বিশ্বব্যবস্থা ব্যবস্থা উৎখাতের যে সার্বজনীন ইচ্ছা, আকাংখা ও সংকল্প কাজ করে এবং বাস্তবে যার অভিপ্রকাশ আমরা এখন বিশ্বব্যাপী দেখছি তাকে ধরিয়ে দিতে হবে। আমাদের কাজ হবে জনগণকে বুঝিয়ে দেওয়া তার লড়াই-সংগ্রামের কোন দিকটি সার্বজনীন, আর কোথায় সংকীর্ণতা ও সাম্প্রদায়িকতার গহ্বরে পতিত হয়ে ইসলামের ক্ষতি সাধন করবার বিপদ নিহিত রয়েছে।
জনগণের ওপর আস্থা আমার রাজনৈতিক তৎপরতার ভিত্তি। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতা ও সার্বজনীনতার ভেদ বুঝতে সক্ষম। এই সক্ষমতা তাদের সহজ ও স্বাভাবিক ক্ষমতা, তার নিজস্ব বয়ান বা ডিসকোর্স রয়েছে। সে বয়ান আমরা প্রায়ই আমাদের চারপাশে সাধারণ মানুষের আলাপ আলোচনায় দেখি। এ এক অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি যার ওপর আমি মনে প্রাণে নির্ভর করি। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফকে সার্বজনীন আদর্শ হিসাবে ইসলামের দিক থেকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে এমন এক রাষ্ট্র গড়বার স্বপ্ন তাদের মধ্যে সঞ্চারিত করা সম্ভব যারা শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই ধারণ করে না, একই সঙ্গে পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে ধ্বংস ও বিলয়ের অভিমুখ নির্ণয় করতে সক্ষম। এটা ঠিক যে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ও সাম্রাজ্যবাদী মন মানসিকতায় গড়ে ওঠে শহুরে শিক্ষিত শ্রেণির ওপর নানা কারণে আমি আস্থা রাখি না, কিন্তু তাঁদের মধ্যেও নতুন তরুণদের দেখে উৎসাহিত হই যাঁরা শাপলা আর শাহবাগের ভেদরেখা মানেন না। এখনকার লড়াই সংগ্রামকে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র রূপান্তরের কর্তব্য থেকে তারা বিচার করতে সক্ষম। তারা প্যান্ট শার্ট পরে টুপি পড়া পাঞ্জাবি পড়া গরিব মাদ্রাসার ছেলেদের পাশে দাঁড়িয়ে জীবন দিতে কুন্ঠিত নন। এই ভেদরেখ যতো তাড়াতাড়ি আমরা বিলুপ্ত করতে পারব ততো তাড়াতাড়ি আমরা বৈপ্লবিক মুহূর্তের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবো। আমাদের এখনকার কাজ হচ্ছে জনগণের ঐক্যের ক্ষেত্রগুলো স্পষ্ট করে তোলা, যেন গণশক্তির গঠন ও বিকাশ ত্বরান্বিত হয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসের দিক থেকে এই তিন নীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হোল একই সঙ্গে এই তিন নীতির ঐতিহাসিক ও আইনী ভিত্তি আছে। ঐতিহাসিক -- কারণ এই তিন নীতি কায়েমের জন্য আমরা লড়েছি। এর আইনী ভিত্তি আছে -- কারণ স্বাধীনতার ঘোষণার দলিলেই তা ঘোষিত ও সন্নিবেশিত। ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সঙ্গে ধর্মীয় পরিচয়ের যে কৃত্রিম সংঘাত জিইয়ে রাখা হয়েছ্বে, যার কারণে আমরা বিভক্ত ও জর্জরিত এবং এখন পরস্পরকে ধ্বংস করতে উদ্যত --তা রাজনৈতিক ভাবে নিরসনের এটাই সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর পথ। যেহেতু ঘোষিত এই তিন নীতি কায়েমের জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, অতএব এর ন্যায্যতা ইতিহাসে, দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের প্রতিটি বড় কিম্বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার রাজনৈতিক আকাংখায় এবং তৃতীয়ত, প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মানুষের রূহানি সত্তায়। এই তিনটি নীতি আমাদের সমাজের বিভিন্নতা ও বৈচিত্রকে একপাত্রে ধরে রাখতে সক্ষম। ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের পরিগঠিত করবার জন্য যা আমাদের অবশ্যই দরকার।
যারা আমার লেখা পড়েন ও অনুপ্রাণিত হন তারা জানেন ও বোঝেন যে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রেখে সাম্রাজ্যবাদ ও আঞ্চলিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়াই আমার রাজনীতি। এই কারণেই আমি জনগণকে বিভক্ত করবার, বিভাজিত রাখবার যে কোন মতাদর্শিক ও রাজনৈতিক অবস্থানের বিরোধিতা করি। যারা জনগণকে অজ্ঞ ও অসচেতন ভেবে সজ্ঞানে-অজ্ঞানে বিভক্ত করে ও সচেতন ভাবে বিভক্ত রাখারা রাজনীতি করেন আমি তাদের বিরোধী। তারা যে যার খুশি আমাকে নাস্তিক কমিউনিস্ট কিম্বা ইসলামী মৌলবাদী বলে নিন্দা করে থাকেন। এতে কিছুই আসে যায় না। লড়াইটা আস্তিকের বিরুদ্ধে নাস্তিকের, শাপলা বনাম শাহবাগ, কিম্বা ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ম-নিরপেক্ষতার লড়াই নয় – সুনির্দিষ্ট ভাবে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থায় নারীপুরুষ নির্বিশেষে সমাজের সকল স্তরে নিপীড়িত ও শোষিত জনগণ ও শ্রেণীর লড়াই। তাদের ঐক্যবদ্ধ করবার সঠিক মতাদর্শিক বয়ান হাজির করা আমাদের এখনকার কাজ। যাতে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপান্তর যারা চায় তাদের আমরা ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারি এবং জনগণে্র বিজয়ী গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিরে নতুন গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত ও সফল করা সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কান্ড!
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বর্তমান সরকার ও রাষ্ট্রের সমর্থক। তারা নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করেন, গণতন্ত্রমনা সাংবাদিক মহলের নয়। আমার বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য গণতন্ত্রমনা সাংবাদিক সমাজের বক্তব্য নয়। এটা পরিষ্কার। সরকারী বলেই তারা ক্ষমতার দম্ভে দিশাহারা হয়ে গিয়েছেন। তারা এতোই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েছেন যে সারাদেশের সাংবাদিকদের ওপর হামলার জন্য আমাকে একক ভাবে দায়ী করে রাষ্ট্রীয় ভাবে নির্যাতনের জন্য উস্কানি ও হুমকি দিচ্ছেন। যেহেতু রাষ্ট ও সরকার তাদের, তারা সফল হতে পারেন। অসম্ভব কিছু নয়। তবে এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার যে নজির তারা সৃষ্টি করেছেন ও করবেন তা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে কলংকজনক, নিন্দনীয় ও প্রতিহিংসামূলক অধ্যায় হিশাবেই চিরকাল চিহ্নিত হয়ে থাকবে। গত দুদিন ধরে টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমে এদেরই কেউ কেউ আমা্র বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, মিথ্যাচার ও বিকৃত ব্যাখ্যা করে যাচ্ছেন, তাতে নাগরিক হিসাবে আমি উদ্বিগ্ন এবং আমার নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করি।
সাংবাদিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ টেলিভিশন টক শোতে আমি কী বলেছিলাম তা পর্যালোচনা না করে যে অসহনশীল বক্তব্য দিয়েছেন ও দিয়ে যাচ্ছেন তা নিন্দার ভাষা আমার নাই। একজন নাগরিকের শুধুমাত্র টেলিভিশনের একটি টক শোতে একটি বিশ্লেষণ মুলক বক্তব্যকেই বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সকল হামলার কারণ বলে দায়ি করা সাংবাদিক নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। সাংবাদিকের কাজ হচ্ছে সত্য উদ্ঘাটন করা, কিন্তু তারা নিজেরাই মিথ্যাচার করছেন।
গণমাধ্যম বা সংবাদপত্রে যারা কাজ করেন সাধারণত তাঁরা সংবাদ বা গণমাধ্যম কর্মী বলে পরিচিত। কিন্তু সাংবাদিকতা একটা পেশা। যেমন, ডাক্তারি, শিক্ষকতা, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। প্রত্যেকটি পেশারই নিজস্ব কিছু বিধিবিধান আছে, কিছু পেশাগত নৈতিকতা বা মানদণ্ড আছে, যাতে পেশার ভাবমূর্তি বা পেশাদারিত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়। সাংবাদিকদেরও আছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাই তাদের পেশাদারিত্বের ভাবমূর্তি অক্ষূন্ন রাখবার জন্য কিছু লিখিত বা অলিখিত মানদণ্ড অনুসরণ করে। কেউ তা মানছেন কিনা তার দ্বারা তিনি সেই পেশার আদৌ অন্তর্ভুক্ত কিনা বোঝা যায়।
সরকারপন্থী সাংবাদিক ইউনিয়ন আমাকে গণমাধ্যমের শত্রু ঘোষণা করেছেন। মিথ্যাচার ও অন্যের বক্তব্যের বিকৃতি ঘটিয়ে যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীন শক্তিকে সন্তুষ্ট করার জন্য সদাই তৎপর, নিজেদের তারা গণমাধ্যমের কর্মী দাবি করতে পারে না। এরা শুধু গণমাধ্যমের শত্রু নয়, জনগণের শত্রু। গণতন্ত্রের দুষমন। ফ্যাসিস্ট সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে দাঁড়িয়ে উলঙ্গ ভাবে এরা বাক ব্যক্তি চিন্তার স্বাধীনতার বিরোধিতা করছে।
ইতিহাস তার নিজের নিয়মেই এদের শায়েস্তা করবে।
১ নভেম্বর ২০১৩। ১৭ কার্তিক ১৪২০। আরশিনগর।