জানুয়ারির ৫ তারিখঃ ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার কালো দিবস !
আমি একজন নাগরিক এবং ভোটার। নাগরিক হিশেবে এই লেখাটি লিখছি। নির্বাচন শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, সরাসরি নাগরিকদেরও বিষয়। ভোটার হিসাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নাগরিকরা রায় দিয়ে থাকেন। এই কথা সবাই জানেন। গণতান্ত্রিক সরকার – অর্থাৎ শাসিতের সম্মতি ছাড়া শাসন করবার অধিকার অর্জন করবার এই প্রক্রিয়া পালন না করলে কোন সরকারই নিজেকে বৈধ বলে দাবি করতে পারে না। আমি নিজে বুঝতে পারছি আমার ভোট দেয়ার অধিকার থাকছে না। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচন হলেও সব ভোটাররা উৎসাহিত হয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থিকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করতে চান। জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন সে কারণে আরও বেশি গুরুত্বপুর্ণ; কারণ এর মাধ্যমে ভাল হোক মন্দ হোক জনগণ বলতে পারে আমাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ একটি বিশেষ দল বা জোটকে নির্বাচিত করেছে। ফলে কোন ভোটার যদি সেই বিশেষ দলকে ভোট নাও দেয় তবুও মেনে নিতে কোন সমস্যা নেই কারণ কেউ না কেউ তাদের ভোট দিয়েই নির্বাচিত করেছে। তারা ভোটার দ্বারাই নির্বাচিত। আমি যাকে ভোট দিয়েছি তিনি সংখ্যগরিষ্ঠের সম্মতি নিতে পারেন নি। দেশের নাগরিক হিশেবে এই টুকুই আমাদের চাওয়া।
একটি বছর শেষ হয়ে নতুন বছর আসছে। সকলের জন্য শুভ হোক ২০১৪ সাল। কিন্তু শুরুতেই যেন কেমন একটি ঘটনা ঘটে যেতে পারে যা কালো দিবস বলে ভবিষ্যতে আখ্যায়িত হবে। জানুয়ারির ৫ তারিখে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকারের ধরণ বা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার পদ্ধতি নিয়ে মতের মিল না হওয়ায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট বা প্রধান বিরোধী জোট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। শুধু বিরোধী জোট নয়, একই সাথে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাম জো্ট, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সহ আরো অনেকে। রাজনৈতিক দল ছাড়াও, সমাজের অন্যরা যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতেন তাঁরাও প্রার্থী হচ্ছেন না। শুধু আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিশেবে আছেন। যেন গোস্বা করে প্রার্থী হওয়া। এদের ব্যাপারে ভোটারদের আগ্রহ কখনই তেমন থাকে না। ভোটারদের কাছে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগে-আওয়ামী লীগে লড়াই হচ্ছে, আবার একসময় হয়তো মিটে যাবে। ঠিকই তাঁরা নৌকা হয়ে যাবে। ফলে এতে ভোটার হিশেবে তার কিছু করার নেই।
একক প্রার্থী হিশেবে আছেন ১৫৪ জন, অর্থাৎ তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন বলে সবাই জানছে। নির্বাচন কমিশনও সেই ভাবে কাজ করছে। এই সব নির্বাচনী এলাকায় তাই ভোট হবে না, কারণ ভোট হলে তো এই একজন প্রার্থীকেই ভোট দিতে হবে। সব ভোটার নিশ্চয়ই তাদের ভোট দেবেন না। তাঁরা সবার পছন্দের প্রার্থী নাও হতে পারেন। তাহলে ভোট দিয়ে লাভ কি? শুনেছি তাদের অনেকেই প্রার্থী হবার যোগ্যই নন, কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের এখনো প্রার্থী রেখে দিয়েছেন। ঢাকা শহরে আমরা যারা ভোটার আছি, আমাদের তো ভোট দেয়ার কোন উপায় রইল না।
একটি ঘটনা বলি। সেদিন আমি রিক্সায় চড়ে চালককে জিজ্ঞেস করলাম তিনি ভোট দেবেন কিনা। বললেন নির্বাচন হলে অবশ্যই দেবো। আমি জানতে চাইলাম তিনি কোন এলাকার ভোটার। বললেন ঢাকার। যখন শুনলেন তার এলাকার প্রার্থী এমনিতেই নির্বাচিত হয়ে গেছেন, তখন রিক্সার গতি কমিয়ে দিয়ে পেছনে আমার দিকে ঘুরে তাকালেন। চোখে মুখে তার বিরক্তি ফুটে উঠেছে। কি বলেন? এমনি এমনি নির্বাচনের আগে জিতে গেল? আমি পালটা বললাম, কেন আপনি জানেন না? বল্লেন সারাদিন রিক্সা চালাই, সময় পাইনি খোঁজ নেয়ার। আমি তো জানি পাঁচ তারিখে হবে। আমি তাঁকে নিশ্চিতভাবে বল্লাম, আপনার এলাকার প্রার্থী একজনই আছেন কাজেই তিনি একাই জিতে গেছেন। রিক্সাওয়ালার মনে হোল খুব দুঃখ পেলেন। বিড় বিড় করে রিক্সা চালাতে চালাতে বলতে থাকলেন, তাইলে ভোট হবে না? তাইলে ভোট দিতে পারুম না? আমি বললাম, আপনার মতো আমিও ভোট দিতে পারবো না। এরই মধ্যে আমার গন্তব্য এসে গেছে। বল্লাম বাঁ দিকের গেটে থামেন। টাকা নিতে নিতে রিক্সা চালক বললেন, তাইলে জনগণকে জাগাতে হবে। বুঝলাম তিনি ভোট দিতে না পারার ব্যাপারটি মেনে নিতে পারছেন না। আমি এবং সেই রিক্সাওয়ালা সেই ৫ কোটি হতভাগা ভোটারদের অংশ যারা ১৫৩টি আসনের ভোটার হবার কথা ছিল। আমাদের ভোট ছাড়াই এরা আরাম করে সংসদ সদস্য হয়ে গিয়ে এখন ঢাকায় বসে আন্দোলনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। পত্রিকা পড়ে মনে হোল, বাকি যে আসন গুলোতে ভোট হবে সেখানেও ভোটাররা বুঝতে পারছেন তাদের ভোট দেয়ার জন্যে প্রার্থী নেই। অনেকেই জানেন না, প্রার্থী কে? কারণ কোন নির্বাচনী প্রচার নেই। সবাই জানে বিরোধী দল নির্বাচন করছে না, কাজেই পাল্টাপাল্টি কোন বক্তব্য নেই। নির্বাচিত হলে কে কি কাজ করবে তার কোন প্রতিশ্রুতি নেই। আমরা কি ধরনের কাজ চাই তা বলারও কোন সুযোগ পেলাম না। কোন নির্বাচনী ইশতেহার নেই, যা দেখে যারা একটু সচেতনভাবে ভোট দিতে চায় তারা বাছ-বিচার করবেন।
নির্বাচনের অনেকগুলো সামাজিক দিক আছে যা আমাদের সমাজে খুব মর্যাদা দেয়া হয়। যত ধনী প্রার্থী হোক না কেন, (যার সাথে দেখা করার জন্য এপয়েন্টমেন্ট করতে গিয়ে অপেক্ষা করতে দীর্ঘ দিন), তিনি নিজেই ভোটারের দরজায় গিয়ে হাজির হয়ে যান। গিয়ে হাত ধরে ভোট চান, পারলে একটু কোলাকুলি করেন। এতেই তৃপ্তি ভোটারের। আমাদের দেশের মানুষ এতো সরল সোজা যে একটু মিষ্টি কথা শুনলে সব দুঃখ ভুলে যান। তাই ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন শুধু প্রার্থিবিহীন নয়, এই নির্বাচন ভোটার-প্রার্থী কোলাকুলিবিহীন নির্বাচন। অর্থাৎ এই নির্বাচনে মানুষের সাথে প্রার্থীর কোনই সম্পর্ক নাই। তারা এক হিসেবে জনবিচ্ছিন্ন অ-নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। সংবিধানের ৬৫(২) অনুযায়ী “একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত তিন শত সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফার কার্যকরতাকালে উক্ত দফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত হইবে; সদস্যগণ সংসদ সদস্য বলিয়া অভিহিত হইবেন।” উল্লেখ্য ৬৫(৩) সংরক্ষিত নারী আসন সংক্রান্ত যা নির্বাচিত সংসদ সদস্য দ্বারা বা পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তাহলে সংবিধান অনুযায়ী দেখতে গেলে এই ১৫৪ জনকে একক প্রার্থী বলা যেতে পারে কিন্তু নির্বাচিত বলা যেতে পারে না। কারণ তাঁরা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন নি, অতএব তাঁরা সংসদ “সদস্য বলিয়া অভিহিত হইবেন” কিনা তা আমাকে কোন সংবিধান বিশেষজ্ঞ বুঝিয়ে দিলে বাধিত হবো। এদের অবস্থান সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের চেয়েও খারাপ কারণ তাঁরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত কোন সাংসদ দ্বারাও নির্বাচিত নন। তাঁরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের মনোয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী মাত্র। দলের বলাও বোধ হয় ঠিক নয়, সরাসরি দলীয় প্রধানের মনোনীত প্রার্থী। সেটা দলের দিক থেকে ঠিক আছে কি নেই দল বুঝবে, কিন্তু ভোটারের দিক থেকে তো মোটেও ঠিক নেই। এখানে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ছিল ভোটারের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে অন্তঃত এদেরকে জনগণ চায় কিনা তা “না” ভোটের বিধান রেখেই নির্বাচন দেয়া। তাহলে ভোটাররা বিরোধী দলকে প্রার্থী না দেয়ার জন্যে তিরস্কার করতে পারতো এবং যারা এদের ভোট দিতে চায় তারা ভোট দিত আর যারা চায় না, তারা তাদের “না” মত জানিয়ে দিতো। এদের অনেকেই সরকারের এখনো মন্ত্রী আছেন, এবং অনেকেই ছিলেন। তাঁরা ক্ষমতায় থেকে কি করেছেন, কত টাকা আত্মস্যাৎ করেছেন তাতো তাদের হলফনামায় প্রকাশ পেয়েছে। এখন একদিকে ভোট দিতেও পারবো না, তার উপর তাদেরকে আবার মাননীয় সংসদ সদস্য বলতে হবে, কিংবা মাননীয় মন্ত্রী হয়ে যাবেন তখন জনগণ কি এমনি মেনে নেবে? তাঁদের সম্বোধন করতে গিয়ে মুখে আটকে যাবে না তো? বিভিন্ন সভায় তাঁদের প্রধান অতিথি করতে গিয়ে হোঁচট খেতে হবে, সেটা হবে আর এক যন্ত্রণা। সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যরা সরাসরি নির্বাচিত নন বলে তাদের ক্ষমতাহীন মনে করা হয়, তাহলে এই ১৫৪ জন সংসদ সদস্যদের যোগ্যতা দলীয় মনোনয়ন ছাড়া আর কোন সার্টীফিকেট নেই। তাহলে তাদের ক্ষমতা কি বাকী ১৪৬ জনের মতো হবে? এই ১৪৬ জন প্রহসনমুলকভাবে হলেও কিছু নির্বাচনী প্রচার করেছেন, দুই একজনের সাথে হাত মিলিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কিছু ভোটার তাদের ভোট দিয়েছেন। বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে ভোট চাওয়ার জন্যে হাত তুলে ওয়াদা করিয়েছেন। সেটাও তো একটা চাওয়া। তাহলে একদিকে ভোটাররা চুপ করে বসে আছেন অন্যদিকে ভোটাররা কিছুটা নড়াচড়া করছেন। তবে উৎসবের আনন্দ থেকে সবাই বঞ্চিত।
গণতন্ত্র চর্চা করবার একটি বিশেষ ধরণ হচ্ছে নির্বাচন; নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয় এটা এখন সবাই বুঝে গেছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার কাজ বাকি রয়ে গেছে এটা আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু সংবিধানের ৭(১) ধারা “প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ, এবং জনগণের সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে” ---এই কথাগুলো মানুষকে এক ধরণের শক্তি যোগায় এবং তাঁরা নিজেরা সরাসরি ভোট দিয়ে তার সেই ‘মালিকানা’র ভাব রক্ষা করতে চায়। যদিও আমরা বুঝতে পারি রাষ্ট্র বা ক্ষমতাকে ‘মালিকানা’র ধারণা দিয়ে ব্যাখ্যা করা ভুল। আমরা সম্পত্তির মালিক হিসাবেই শুধু ক্ষমতাবান বোধ করি, ফলে ভাবি রাষ্ট্রও বুঝি এই ধরণে জমিজমার মালিকানা মাত্র। তবুও একজন সাধারণ দিনমজুর, ভুমিহীন, নিঃস্ব মানুষ, প্রতিবন্ধী সবাই চায় তাঁর নিজের মতো করে প্রার্থী নির্বাচন করতে। টাকার খেলা ও মাস্তানী যাই থাকুক তার ফাঁকেও তাঁর কিছু বলার সুযোগ আছে যা তিনি ভোটার হিশেবে সরাসরি বলতে পারেন। এবং সেটা তিনি নিজে স্ব-শরীরে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে হাতে কালী মেখে ভোটার পেপারে একটা সীল মেরে প্রকাশ করতে চা্ন। এই অধিকার একেবারেই তাঁর নিজস্ব। কারো চক্ষু রাঙানি বা লোভ লালসা যদি থাকেও প্রয়োগের সময় তিনি স্বাধীন। এই অনুভুতিটাই তাঁর জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বলতে আসলে বোঝায় গরিব মানুষ, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন জনগোষ্ঠিসহ, প্রত্যন্ত ও পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষ যাদের কাছে সহজে উন্নয়ন কর্মসুচি পৌঁছাতে পারে না। কিন্তু ভোটের বাক্স পৌঁছে যায়। এই সময় নারীদের কদরও বাড়ে এবং সংগঠিতভাবে যারা ভোটার যোগাড় করতে চান তাদের কাছে নারীরা খুব আন্তরিক। কিন্তু মনে করার কোন কারণ নেই যে নারীরা না বুঝে ভোট দেন। যারা নিজেরা প্রার্থীদের দেখেছেন এবং তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছেন তাঁদের ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে নারীরা নিজের সিদ্ধ্বান্ত সঠিকভাবেই দিয়ে থাকেন। ভোটের ব্যাপারে নারীদের মধ্যে উৎসাহও কম নয়। স্বামী এক দলকে দিলে স্ত্রী অন্যদলকে নিজের ইচ্ছায়। এটা তাঁর স্বাধীন ইচ্ছার একটা প্রতিফলন। শুধু বাংলাদেশে নয়, ভোট দেয়ার সাথে নারী অধিকার এবং তাঁর ব্যাক্তি স্বীকৃতির সাথে সরাসরি সম্পর্ক। পৃথিবীব্যাপী নারী অধিকার আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে নারীদের ভোটের অধিকার পাওয়ার মধ্য দিয়ে। পশ্চিমা দেশেও ভোটের অধিকার নির্ভর করতো সম্পত্তির পরিমানের সাথে। নারীদের ভোটের অধিকার পাওয়ার ইতিহাস খুব বেশী দুরের নয়, বড় জোর পঞ্চশ বছর পার হয়েছে হয়তো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নাগরিকদের গায়ের চামড়ার রং দেখে ভোট দেয়ার অধিকার দেয়ার ওপর বাধ্যবাধকতা ছিল; কালো মানুষ ভোট দিতে পারতেন না। কবেকার কথা মাত্র ১৯৬৫ সালের The Voting Rights Act of 1965 এর মাধ্যমে এই ভেদ দূর করা হয়েছে।এর ফলেই আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওবামা প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন। কালোরা ভোট দিতে না পারলে ওবামা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন কিনা সন্দেহ। আমাদের দু’টি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষে দুজন নারী আছেন। তাদের ক্ষেত্রে নারী ভোটারদের অবদান অনেক বেশী।একেবারে সাধারণভাবেও যদি দেখি তাঁরা একজনকে ভোট দিয়েছেন স্বামীহারা বলে আর একজনকে দিয়েছেন মা-বাবা হারা বলে। রাজনীতিতে নারীদের দৃষ্টি একেবারে পারিবারিক অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে এখনও অনেকাংশেই নির্ধারিত হয়। পুরুষদের পুরুষালী দৃষ্টিভঙ্গী এতে উন্নত তা বলা যাবে না, বরং দুজনকে সমর্থন দেয়া হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক কারণে; একজন জেনারেল জিয়ার স্ত্রী অন্যজন মুজিব কন্যা।বড় বড় নেতারাও এই ভাষাতেই সম্বোধন করেন। অথচ এই দুজনের মধ্যে একজনের শাসনামলে জনগণের ভোটের অধিকার হরণকারী ঘটনা ঘটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একটি দেশের জন্য এর চেয়ে লজ্জা আর কি হতে পারে!
আমামদের গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু বলতে পারতাম ভোত আছে। কিন্তু এখন সেটাও হরণ করা হোল।
তাই বলছি, আমরা ভোটার,আমাদের অধিকার হরণকারী নির্বাচন বন্ধ করুন।