মিসোজিনি: অস্ট্রেলিয়ার জুলিয়া ও বাংলাদেশের দুই নেত্রী


রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে পৃথিবীর অনেক দেশে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে নারী বিরোধিতা বা বিদ্বেষ কমে গেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ সব পথ পরিস্কার করে দিয়েছে তাই নারী সহজে উচ্চ পদে বসতে পারছেন এমন কোন কারণ নাই। ধনী ও উন্নত দেশ যেখানে নারী স্বাধীনতা অনেক এগিয়ে আছে বলে মনে করা হয় সেখানে এখনো প্রধান মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদে নারীদের পাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। অথচ দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে ধনীদেশের আগেই তা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে (২০১৪ সালে) ২২টি দেশে নারী প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি রয়েছেন। তার মানে জাতিসংঘ সদস্য ১৯৩ টি দেশের মাত্র ১১.৩% দেশে নারী রাষ্ট্র ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আছেন। বাইশটি দেশের মধ্যে মাত্র তিনটি ইওরোপের দেশ: ডেনমার্ক, নরওয়ে ও জার্মানী; বাকি সবই এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায়। বাংলাদেশও এই তালিকায় রয়েছে। এঁদের মধ্যে ৪ জন ছাড়া বাকি সকলেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন। অস্ট্রেলিয়াতে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এখন নেই। প্রায় সকল দেশেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও ক্ষমতা কাঠামো ডিঙ্গিয়ে এই নারীরা ক্ষমতায় কেমন করে আছেন? তাঁরা কি পুরুষতন্ত্রের সাথে নিত্যদিন লড়াই করছেন? নাকি পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর সাথে খাপ খাইয়ে টিকে আছেন? এই প্রশ্নগুলো দীর্ঘ দিন ধরেই আমার মনে ঘুরছিল। সম্প্রতি (আক্টোবর, ২০১৪) একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড সম্পর্কে অনেক কথা বন্ধুদের কাছ থেকে শুনি। তাঁকে বোঝার চেষ্টা করছিলাম আগে থেকেই। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তাঁর সম্পর্কে নতুন করে জানার সুযোগ হোল। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছিলাম অস্ট্রেলিয়ার এই সাবেক প্রধান মন্ত্রীকে কেন্দ্র করে সে সম্পর্কে আরও কিছু কথা বলা যায়। সেই অভিজ্ঞতার কথা লিখছি।

আমরা অনেকে ‘নারীমুক্তি’র কথা বলি। সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে যে সব নারীরা জড়িত তাদের কাছে পুরুষতন্ত্র (patriarchy) বোঝা খুব জরুরী। পুরুষতন্ত্রকে প্রায়ই পুরুষ বিদ্বেষে পর্যবসিত করার কারণে পুরুষতন্ত্র সাধারণ ভাবে সমাজে ক্ষমতার উৎপত্তি ও ক্ষমতা চর্চার বিচারের সঙ্গে কিভাবে জড়িত সেটা বাস্তবিক ও তত্ত্বগত ভাবে বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। ক্ষমতার চরিত্র বোঝার জন্য পুরুষতত্ত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা, এটা বায়োলজি বা নারীর শরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোন ধারণা নয়। এ বিষয়ে আমি আলাদা লিখেছি বলে, আর এখানে বিস্তৃত করছি না।

কিন্তু পুরুষতন্ত্রের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় আছে যা নারীর অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে উঠতে পারে। সে বিষয়গুলো শুধু পুরুষতন্ত্র দিয়ে বোঝানো যাবে না। তেমনি একটি ইংরেজীতে শব্দ হচ্ছে misogyny (মিসোজিনি)। মিসো অর্থ ঘৃণাকারী; জিনি হচ্ছে নারী (স্ত্রী)। অভিধানে একই সাথে পাওয়া যাবে মিসোগেমী (misogamy) যার অর্থ বিবাহে বিতৃষ্ণ ব্যাক্তি। নারীর প্রতি বিদ্বেষ বা একেবারে নারী বিরোধিতার ভিত্তি শুধু ‘নারী বলেই’ এমন সাংস্কৃতিক আচরণকেই মিসোজিনি বলা হচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা এই নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। যারা এই ধরণের নারী বিদ্বেষি তাদের misogynist বলা হয়। অর্থাৎ কোন বিশেষ নারীর বিশেষ সমস্যার কারণে নয়, শুধু সে ‘নারী বলেই’ তার প্রতি বিদ্বেষি আচরণকে মিসোজিনি বলা হয়। অবাক হবার কিছু নেই যে পাশ্চাত্যের অনেক বড় বড় দার্শনিক মিসোজিনিস্ট হিশেবে চিহ্নিত হয়েছেন। সতের শতাব্দি থেকে বিংশ শতাব্দির মধ্যে পাশ্চাত্যের অনেক বিখ্যাত দার্শনিক যেমন, রনে দেকার্তে ( René Descartes), থমাস হবস ( Thomas Hobbes), জন লক (John Locke), ডেভিড হিউম (David Hume), ইমানুয়েল কান্ট (Immanuel Kant), জাঁ-জাক রুশো (Jean-Jacques Rousseau), হেগেল (G. W. F. Hegel), আর্থার শপেনহাওয়ার (Arthur Schopenhauer) , ফ্রেড্রিক নীৎসে (Friedrich Nietzsche), সিগমন্ড ফ্রয়েড (Sigmund Freud), অটো অয়েনিঙ্গার ( Otto Weininger), অসওয়াল্ড স্পেংলার ( Oswald Spengler) এবং জন লুকাস (John Lucas) -দেরকে মিসোজিনিস্ট বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

নারীবাদী চিন্তা থেকে মিসোজিনিকে দেখা হয় নারীর প্রতি হিংসাত্মক, বিদ্বেষ পুর্ণ আচরণ হিশেবে। নারী বলেই তার সাথে বিদ্বেষি হয়ে উঠছে। মিসোজিনিস্ট তালিকায় কোন বিখ্যাত নারীর নাম পাওয়া না গেলেও নারীদের মধ্যেও মিসোজিনিস্ট থাকতে পারেন কিনা দেখার বিষয় আছে। নারীবাদের অনেক পর্ব পার হয়ে বিংশ শতাব্দির শেষে এসে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে মিসোজিনি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোর কারণেই সৃষ্টি হয়।

একবিংশ শতাব্দিতে এসে মিসোজিনির শিকার উচ্চ পর্যায়ে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে লিখছি। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী প্রধান মন্ত্রী, জুলিয়া গিলার্ড। ক্ষমতায় ছিলেন মাত্র তিন বছর তিন দিন। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ২৭তম প্রধানমন্ত্রী, ২৪ জুন, ২০১০ থেকে ২৭ জুন, ২০১৩ পর্যন্ত। সরকার গঠনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে যথেষ্ট আসন না থাকায় তাঁকে গ্রীন পার্টি এবং তিনজন স্বতন্ত্র সদস্যের সমর্থন নিতে হয়েছিল। তিনি প্রধান মন্ত্রী থাকা অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতার (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী টনি এবোট, লিবারেল পার্টি অব অস্ট্রেলিয়া) স্পীকার পিটার স্লিপারকে অপসারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেটা আমাদের এই আলোচনার জন্যে প্রাসঙ্গিক না হলেও এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে গিয়ে মিসোজিনি নিয়ে জুলিয়া গিলার্ড সংসদে একটি অত্যন্ত মূল্যবান ভাষণ দেন

 

জুলিয়ার এই বক্তৃতা আন্তর্জাতিকভাবে সাড়া জাগিয়েছিল। ইউটিউবে (YouTube) মাত্র কয়েকদিনেই ২৩ লক্ষ (২.৩ মিলিয়ন) দর্শক এই বক্তৃতা দেখেছেন এবং শুনেছেন। আক্টোবর ১০, ২০১২ তারিখে পনের মিনিটের এই ভাষণে তিনি টনি এবোটকে একজন মিসোজিনিস্ট হিশেবে চিহ্নিত করে বলেন সরকার এই পুরুষ দ্বারা নারী বিদ্বেষি কথা শুনবে না। তিনি বলেন "If he wants to know what misogyny looks like in modern Australia, he doesn't need a motion in the House of Representatives, he needs a mirror." [“ আধুনিক অস্ট্রেলিয়াতে মিসোজিনি দেখতে কেমন তিনি জানতে চাইলে তাকে হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভ-এ কোন প্রস্তাব আনার দরকার নাই, তার শুধু প্রয়োজন (তার নিজের চেহারা দেখার জন্য) একটি আয়নার”]।

টনি এবোট বিরোধী দলের নেতা থাকা কালে নারী প্রধান মন্ত্রী হিশেবে জুলিয়ার প্রতি আপত্তিকর বক্তব্য রাখেন। যেমন টনি মুখে না বললেও জুলিয়ার প্রতি অবমাননাকর আচরণ প্রকাশের জন্য “Ditch the witch” ডাইনীকে গর্তে ছুড়ে মারো এমন সাইনের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। জুলিয়া বলেন প্রধানমন্ত্রীর আসনে কোন পুরুষ বসে থাকলে তিনি এই আচরণ করতেন না। শুধু জুলিয়ার প্রতি নয়, অস্ট্রেলিয়ার নারীদের প্রতিও টনি এবোট নারী বিদ্বেষি আচরণ করেছেন। জুলিয়া তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর ভাষনে সেই কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “I was also very offended on behalf of the women of Australia when in the course of this carbon pricing campaign, the Leader of the Opposition said “What the housewives of Australia need to understand as they do the ironing…” Thank you for that painting of women's roles in modern Australia”. টনি বলেছিলেন, “What the housewives of Australia need to understand as they do the ironing is that if they get it done commercially it’s going to go up in price and their own power bills when they switch the iron on are going to go up.” February 8th, 2010 অস্ট্রেলিয়ার গৃহিনীদের কাপড় ইস্তিরি করতে গিয়ে বুঝতে হবে যে তারা বাইরে বাণিজ্যিকভাবে করালে তাদের খরচ বেড়ে যাবে আর যদি তারা নিজেরা করেন তাহলে তাদের বিদ্যুতের বিল বাড়বে। টনি এবোটের কথার উদ্ধৃতি এখানে পাওয়া যাবে।

জুলিয়া টনি এবোটকে বলেন আধুনিক অস্ট্রেলিয়ায় নারীদের এই ভুমিকা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

জুলিয়ার ভাষণের পুরো ট্রান্সক্রিপ্ট এই লিংকে পাওয়া যাবে।

জুলিয়া এখন প্রধানমন্ত্রী পদে নেই কিন্তু তাঁর এই বক্তৃতা নারীবাদীদের কাছে খুব মূল্যবান। তারা এখন ইন্টারনেটে এই বক্তৃতা বারে বারে শুনছেন, এবং যেখানে জুলিয়া বক্তৃতা দিচ্ছেন সেখানে গিয়ে ভিড় করছেন ।

বাংলাদেশে বসে অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন সম্পর্কে জানলেও বুঝিনি জুলিয়া অস্টেলিয়ার নারীবাদীদের কাছে কত গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠেছেন। আমি ব্রিসবেনে আন্তর্জাতিক নারী মুক্তি সম্মেলনে (অক্টোবর ৩ থেকে ৬, ২০১৪) এসে এই বিষয়ে জানতে পারলাম যে অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে পুরুষতন্ত্র এমন প্রভাব বিস্তার করে আছে যে জুলিয়ার বিপক্ষে সমগ্র প্রচারমাধ্যম সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তাকে এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ থেকে সরে যেতে হয়। নারীবাদীরা বলছেন না যে প্রধান মন্ত্রী হিশেবে জুলিয়া সব কাজ ভাল করেছেন। তবে বেশ কিছু ভাল কাজও করেছেন। কিন্তু তাকে সরাবার জন্যে অস্ট্রেলিয়া সমাজে মিসোজিনিস্ট আচরণের নগ্ন প্রকাশ ঘটেছে। জুলিয়া ছাত্র জীবনে ১৯৮৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টির সদস্য হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন, এবং রাজনীতির পথ ধরেই তিনি প্রথমে উপ-প্রধান মন্ত্রী [এই পদেও জুলিয়া গিলার্ডের আগে অস্ট্রেলিয়ায় কোন নারী ছিল না] ও পরে প্রধান মন্ত্রী হিশেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কাজেই কোন পারিবারিক সম্পর্ক দিয়ে নয় সক্রিয় রাজনীতি করেই এক পর্যায়ে পুরুষতান্ত্রিক-পুঁজিতান্ত্রিক অস্ট্রেলিয়ার মত একটি দেশে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হবার গৌরব অর্জন করেন। সাতাইশতম প্রধান মন্ত্রী হিশেবে ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ পদে ছিলেন, কিন্তু কাজ করতে গিয়ে বুঝেছেন মিসোজিনি কত ভয়াবহ। তবে প্রধান মন্ত্রীর পদ ছেড়ে তিনি বসে নেই। তিনি বিভিন্ন কর্মসুচিতে অংশগ্রহণ করছেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। তাঁর বক্তৃতা হলে দর্শক উপচে পড়ে। ফেমিনিস্ট সংগীত শিল্পীরা তার মিসোজিনি বক্তৃতা নিয়ে গান রচনা করেছেন। 

বাংলাদেশে ১৯৯১ সাল থেকে দুইজন নারী প্রধান মন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী, শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া একের পর এক ক্ষমতার আসনে আসছেন, যাচ্ছেন। তার মানে কি বাংলাদেশে 'মিসোজিনি' বলে কিছু নেই? জুলিয়া গিলার্ড নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে বিরোধী দলীয় 'পুরুষ' নেতার মিসোজিনিস্ট বা নারী বিদ্বেষি আক্রমণের শিকার হয়েছেন। একদিক থেকে এটা পুরুষজতান্ত্রিক অস্ট্রেলিয়ায় অস্বাভাবিক কিছু নয়। জুলিয়া বলেছেন, প্রধান মন্ত্রীর আসনে পুরুষ থাকলে ভাষা ও আচরণ ভিন্ন হোত। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা দেখি দুই নেত্রী পরস্পরকে আক্রমণ করছেন। তাঁরা দুইজনই নারী, কিন্তু বক্তব্যের মধ্যে বিদ্বেষের প্রকাশ পুরুষতান্ত্রিক, কখনো বা মিসোজিনিস্ট। দুই নেত্রীর মধ্যে একজন একটু বেশী মাত্রায় ব্যাক্তিগত আক্রমণ ও কটুক্তি করছেন যা ছড়িয়ে পড়ছে দলের অন্যান্য নারী ও পুরুষ সদস্যদের মধ্যে। বলা হচ্ছে আমরা এই দুজনের একজনকেও ক্ষমতায় দেখতে চাই না। জনগনের মধ্যে হাসিনা-খালেদা বিদ্বেষ তৈরির পেছনে এই নারী বিদ্বেষী আচরণ একটা বড় কারণ হতে পারে। এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় নারীরা নারীদের কাছ থেকে নারী বিদ্বেষী আচরণ পছন্দ করেন না। এই নামের আড়ালে যেহেতু দুইজন নারী রয়েছেন তাহলে কি এই বিদ্বেষ সামাজিকভাবে মিসোজিনির রূপ নেবে? এটাই আশংকার।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোতে এই সম্ভাবনা মোটেই উড়িয়ে দেয়া যায় না।

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।