১১. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ


 “ভূয়া যুক্তিরকায়দা সবসময় একই রকম। সন্ত্রাসের অজুহাতে বলা হয়েছিল স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে স্বাধীনতা দমন করতে হবে, এখন বলা হচ্ছে জীবন রক্ষা করতে চাইলে আমাদের জীবনযাপন বিসর্জন দিতে হবে” – জর্জিও আগামবেন

.......................................

জর্জিও আগামবেনের লেখা কেন্দ্র করে দার্শনিক মহলে যে তর্ক উঠেছে তার অধিকাংশই অযৌক্তিক। এমনকি জাক দেরিদার বন্ধু জাঁ-লুক ন্যন্সির আপত্তিও। ন্যন্সি জর্জিওকে বন্ধু দাবি করেছেন। হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশান সম্পর্কে জর্জিও তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে কি বলেছেন সেটা প্রকাশ্যে এনে জাঁ-লুক ন্যান্সির যুক্তি প্রতিষ্ঠা করাটাও আমার ভাল লাগে নি।

ন্যন্সিকে হার্ট ট্রান্সপ্লেন্টেশানের পরামর্শ দিয়েছিল ডাক্তার, বন্ধু হিশাবে জর্জিওকে সেই পরামর্শ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি ন্যান্সিকে সার্জারি করতে নিষেধ করেন। ন্যান্সি বলছেন, যদি আগামবেনের কথা আমি শুনতাম, তাহলে এতদিন আমি বেঁচে থাকতাম না।

গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক তর্ককে ন্যান্সি একটা চোরাগলিতে ঢুকিয়ে দিলেন। জা-লুক ন্যান্সিকে আগামবেন আসলে কি বলেছেন আমরা জানি না। আগামবেন ডাক্তার নন। হার্ট ট্রান্সপ্লেন্টেশান সম্পর্কে ডাক্তারি পরামর্শ দেওয়া আগামবেনের কাজ নয়। তাহলে তর্কটা নির্ঘাত ছিল দার্শনিক কিম্বা নীতিনৈতিকতার। ধরুন আপনার হৃদপিণ্ড নষ্ট হলে অন্যের হৃদপিণ্ড দিয়ে বেঁচে থাকা কতোটুকু নৈতিক? এটা বিজ্ঞানের জিজ্ঞাসা নয়। জানিনা আগামবেন আসলে কি বলেছিলেন। আগামবেন আক্ষেপ করে লিখেছিলেন, ‘এ কেমন সমাজ যেখানে বেঁচে থাকা ছাড়া মানুষের আর কোন মূল্য নাই’!

মানে এই নয় যে মানুষকে বাঁচানো ঠিক না। অবশ্যই বাঁচাতে হবে। কিন্তু মহামারি রীতিমতো সামরিক কায়দায় মোকাবেলা করতে গিয়ে মানুষ যেভাবে নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে, এই মানুষ উদ্ধার পাবে কিভাবে?

অনেকেই অবশ্য কূটতর্ক করছেন। যেমন, আগামবেনের কথা শুনলে ইটালির মানুষ বাঁচানো যাবে না। কূটতর্কের ফায়দা সামান্য। আগামবেন যে প্রশ্ন তুলতে চাইছেন, যে জিজ্ঞাসা আমাদের মধ্যে জারি রাখার জন্য অপ্রিয় হলেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সেই অস্বস্তিকর প্রশ্ন থামিয়ে দেবার জন্যই কুটতর্ক করা। প্রকারান্তরে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের পক্ষাবলম্বন করা, কোভিড-১৯ মোকাবিলার ধরণ কিভাবে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের পারাডাইমের সঙ্গে যুক্ত তাকে অস্বীকার করা। নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির আরও শক্তিশালী কাঠামো গড়ে তোলার প্রক্রিয়ার প্রতি অন্ধ থাকা। তারপরও ন্যান্সি সহ অনেকের তর্কে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চেষ্টা হচ্ছে এই তর্ক থেকে বাংলাদেশের জন্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো চিহ্নিত করা এবং শেখার কিছু থাকলে শিখে ফেলা।

আগে আমরা কোভিড-১৯ প্রসঙ্গে আগামবেনের ছোট লেখাটা মোটামুটি পড়ার চেষ্টা করব। আগামবেনের অভিযোগ হচ্ছে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের কথা যদি সত্য হয়, তাহলে সরকার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সামাল দেবার নামে যেসকল আইনকানুন বিধিবিধান জারি করছে সেটা ‘বাড়াবাড়ি’, কথিত বাস্তবতার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। ফলে এক ধরণের সামরিকায়ন ঘটেছে এবং সামরিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।

সরকার বাড়াবাড়ি কেন করছে? তার দুইটা কারন থাকতে পারে। একটি কারন হচ্ছে একালে সরকার পরিচালনার স্বাভাবিক প্রবণতাই জরুরি অবস্থা নামক পারাডাইম দ্বারা পরিচালিত হয়। নজরদারি নিয়ন্ত্রণ সামরিকায়ন বা জরুরি অবস্থার পারাডাইম চর্চার কারণে মানুষকে জৈবিক পদার্থে পর্যবসিত করাই এখনকার শাসন ব্যবস্থার মৌলিক বৈশিষ্ট্য। জনগণও নিজেকে মনুষ্যগুণ সম্পন্ন কোন সত্তা না, বরং শাসিতের দ্বারা শাসিত হবার জন্য নিজেদের জৈবিক পদার্থই গণ্য করে। আতংক উৎপাদন ও বাড়াবাড়ির মতলবও তাই। জনগণ যেন তাদের জীবের জীবন বাঁচানোকেই জীবনের প্রধান, এমনকি একমাত্র উদ্দেশ্য গণ্য করে। একেই স্বাভাবিক বলে মানে। স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলার নামে সেটাই আসলে ঘটছে।

এর আগে ইসলামি সন্ত্রাস দমনকে অজুহাত হিশাবে খাড়া করা হয়েছিল, দেশে দেশে সংবিধান ও আইন বদলিয়ে নতুন আইন জারি করে সন্ত্রাস দমনের নামে নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। মানুষকে জৈবিক পদার্থে পর্যবসিত করা হয়েছে। তখন নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে, জীব জীবনের প্রয়োজন মেটানো ছাড়া মানুষের আর কোন স্বাধীন ইচ্ছা, অভিপ্রায়, কামনা, বাসনা নাই। ইসলামি সন্ত্রাসের ভয় দেখিয়ে আগে যে কাজ হয়েছিল এখন আর তা হয় না। সেটা আর এখন পুরাপুরি কাজ করছে না। এখন নতুন কিছু ‘আবিষ্কার’ করতে হবে।

মহামারীর আতংক নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ এবং মানুষকে প্রাণভয়ে যারপরনাই ভীত করা এই অর্থেই নতুন ‘আবিষ্কার’। আগামবেন বলছেন না এটা কোন ষড়যন্ত্র, কিম্বা এটাও বলছেন না যে মহামারী সিরিয়াস কিছু না। দার্শনিক হিশাবে তাঁর কাজ হচ্ছে আমরা নতুন যে ফাঁদে পড়তে যাচ্ছি তা দেখিয়ে দেওয়া। মহামারীর নামে, জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষার ছুতা দিয়ে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার ও কারিগরিগুলি আরও নিখুঁত হবে এখন। সেই জন্যই যারপরনাই আতংক বা ভীতি তৈরি করা হয়েছে।। প্রতিটি ব্যক্তিকে ভীত ও সন্ত্রস্ত করে তোলার মধ্যে দিয়ে এমন একটি অবস্থা তৈরি করা হচ্ছে যাতে সেটা আর ব্যক্তির পর্যায়ে না থেকে সামষ্টিক বা সামাজিক আতংকে পরিণত হয়। আর সেই আতংকের ওপর বসে পুলিশ, মিলিটারি, বিচার বিভাগ ও দমন পীড়ন ব্যবস্থাও আরও জোরদার হবে। আধুনিক কালের শাসনের ধরণই হচ্ছে মানুষকে কীটপতঙ্গে পর্যবসিত করা।

আগামবেন অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য ও জননিরাপত্তার অজুহাতে সরকার যে সকল আইনী ডিক্রি তৎক্ষণাৎ অনুমোদন দিয়েছে তা আসলে পৌর এলাকা সামরিকীকরণেরই একটি ধরণ। যেখানে একজন মাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে সেই এলাকা সামরিক বা পুলিশী কায়দায় ঘিরে ফেলা হচ্ছে, পৌর এলাকার সামরিকীকরণ ঘটেছে। করোনা টেস্ট যার ক্ষেত্রে পজিটিভ তার সংক্রমণ কোথা থেকে কিভাবে ঘটল সেটা কিন্তু অজানা। যেসব পৌর এলাকায় কাউকে সংক্রমিত পাওয়া যায় নি, সেখানে করোনা সংক্রমিত কোন দেশ থেকে কেউ প্রত্যাবর্তন করলে সেই এলাকাও সামারিক বা পুলিশী নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে নিয়ে আসা হচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে সারাদেশেরই সামরিকীকরণ ঘটবে। স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে অনিশ্চিত ও অস্পষ্ট অবস্থা সত্ত্বেও আতংকিত করা মূলত সামরিকায়নেরই উসিলা মাত্র, একে একে পৌর এলাকাগুলো থেকে শুরু করে অচিরে সারা দেশ পুলিশি ও মিলিটারি নজরদারি গ্রাস করবে।

ইটালির অভিজ্ঞতা থেকে আগামবেন পৌর এলাকার সামরিকায়ন যেভাবে মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা হরণ করছে তার চরিত্র বোঝার জন্য একটা সংক্ষিপ্ত তালিকাও দিয়েছেন:

১. সরকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ঘোষণা দিলে কোন ব্যক্তির সেই এলাকা ছেড়ে যাওয়া নিষেধ।

২. সরকার কোন এলাকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ঘোষণা দিলে বাইরের কোন ব্যক্তির সেই এলাকায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা।

৪. সকল প্রকার উদ্যোগ, অনুষ্ঠান কিম্বা সকল প্রকার সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধ। হোক তা সরকারি, বেসরকারি, ঘরে, বাইরে, ধর্মস্থানে, শপিং মল, খেলার মাঠ, নাট্যমঞ্চ ইত্যাদি যে কোন জায়গায়, যেখানে মানুষ সাধারণত একত্রিত হয়। মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলামেশা সরকারী নিষেধে বন্ধ করে দেওয়া

৫. কিন্ডারগার্ডেন, শিশু সেবা কেন্দ্র, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি সব বন্ধ, ডিজিটাল যুগে কেউ চাইলে মানুষের সঙ্গে মানুষের সাক্ষাৎ সম্পর্কের মধ্যে নয় ইন্টারনেটে দূরে থেকে লেখাপড়া করতে হবে।

৬. জনগণের জন্য সাধারণত যেসব জায়গাগুলো উন্মুক্ত, যেমন, মিউজিয়াম কিম্বা দর্শনীয় স্থান সেই জায়গাগুলোও বন্ধ থাকবে। আগামবেন ২২ জানুয়ারি ২০০৪ সালে ইটালিতে যে নির্বাহী আদেশ জারি হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে Code of Cultural & Landscape Heritage-এর ১০১ অনুচ্ছেদের কথা বলছেন। আমি উল্লেখ করছি যেন আমাদের দেশের পরিস্থিতির আলোচনার সময় একই ভাবে আইন নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি। আমরাও একটি তালিকা বানাতে পারি।

মহামারি মোকাবিলা করতে হবে। সেটা তর্কের বিষয় নয়। আগামনের দার্শনিক পর্যালোচনা আমাদের যেন আবার অতি মাত্রায় বুদ্ধিমান না করে। যেমন ইতোমধ্যেই পাশ্চাত্যে অনেকের লেখায় দেখছি প্রশ্ন উঠছে তাহলে মহামারি মোকাবিলার কোন উদ্যোগই কি আমরা নেব না? আগামবেন কি তাই চান? আশা করি এই প্রকার স্টুপিড প্রশ্ন বাংলাদেশে কেউ করবেন না।

একটি সাক্ষাৎকারে আগামবেন ভাল কথা বলেছেন। “আমি ভাইরাস বিশেষজ্ঞ নই, ডাক্তারও না। যে লেখা নিয়ে তর্ক সেখানে আমি শুধু ইতালির ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের কথাই হুবহু উদ্ধৃত করে আমার উদ্বেগের কথা বলেছি। মহামারী নিয়ে বিজ্ঞানীদের বাহাসে নাক গলাবার ইচ্ছা নাই আমার। এ পরিস্থিতি থেকে যে গুরুতর নৈতিক ও রাজনৈতিক পরিণতি নির্গত হচ্ছে সেটাই আমার আগ্রহের বিষয়” ।

মার্চের ২৪ তারিখে দেওয়া নতুন সাক্ষাতকারে তিনি তার অবস্থান বদল করেন নি। যাঁরা বলছেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি অপ্রতুল তথ্যের ভিত্তিতে লিখেছেন বলে তাঁর তত্ত্বে দোষ ঘটেছে, মহামারির প্রকটতা বৃদ্ধিতে তত্ত্বের দুর্বলতা ধরা পড়েছে – তাঁরা ঠিক বলছেন না। কিম্বা যাঁরা তাঁর তত্ত্বের ফাঁক হিশাবে দাবি করছেন মহামারি বা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিপর্যয় জনিত ‘জরুরি অবস্থা’ আর রাজনৈতিক ‘জরুরি অবস্থা’ এক নয়। তাঁরাও ঠিক বলছেন না। কারণ তর্কটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কিম্বা রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার মধ্যে বিশেষ ফারাক করেন না। উভয়ই রাজনীতি। উভয়ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির কলাকৌশলে মানুষকে জৈব পদার্থে পর্যবসিত করাবার বিপদ নিয়ে পর্যালোচনা। মোকাবিলার ধরণের মধ্যে নিহিত ‘গুরুতর নৈতিক ও রাজনৈতিক পরিণতি’ পর্যালোচনা করাই আগামবেনের বিষয়। দার্শনিকের কাজ।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার ফারাক আগামবেনের তত্ত্বে নাই, যে কারণে সর্বব্যাপী আধুনিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে তার তত্ত্ব শক্তিশালী। কোন অজুহাতে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আধুনিক রাষ্ট্রের নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের শক্তিশালী ব্যবস্থা বিভিন্ন ভাবে গড়ে উঠেছে তার একটা সামগ্রিক দিক আছে। নতুন বাস্তবতায় তার নতুন রূপও আছে। আগামিতে বিশ্বমন্দা ঘটা অবশ্যম্ভাবী। সারা দুনিয়ার মানুষ অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে নির্ঘাত হাবুডুবু খাবে। এর বিরুদ্ধে জনগণের বিদ্রোহ এবং বিশ্ব ব্যবস্থা বদলের জন্য বৈপ্লবিক লড়াই সামনে আসছে। আসতে বাধ্য। এতোকাল ‘ইসলামি সন্ত্রাস’ বলে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা গিয়েছে, সেটা আর আগের মতো কাজ করছে না। এখন পুনরায় পোক্ত করার চেষ্টা চলছে মহামারি মোকাবিলার নামে। আরও কঠোর বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি ব্যবস্থা ছাড়া দুনিয়ার কোন শাসকই তাদের বাদশাহী টিকিয়ে রাখতে পারবে না।

সমাজে আমাদের যার যার কাজ ও ভূমিকার জায়গায় দাঁড়িয়েই আমরা কথা বলি। সাক্ষাৎকারে আগামবেন জোর দিয়ে বলছেন, “ভাইরাস বিশেষজ্ঞের দুষমণ হচ্ছে ভাইরাস, ডাক্তারের কাজ হচ্ছে রোগীকে রোগমুক্ত করা, সরকারের কাজ হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ-নজরদারি মজবুত করা। ইউরোপে এর আগে আরও কঠিন মহামারী হয়েছে, কিন্তু কেউই এখনকার ইটালি বা ফ্রান্সের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণার কথা ভাবে নি। সংক্রমন একশত মানুষের মধ্যে একজনের চেয়ে কম মানুষে ছড়িয়েছে। ভাবুন, যদি আরও কঠিন স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটে? তাহলে কি হবে? দেশকে সংক্রামক রোগীদের দেশে পরিণত করা কোন সমাধান না, এমন এক দেশ যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষ অপর মানুষকে ছোঁয়াচে রোগী বলে ঠাওরায়”।

তাই নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের খাঁচায় বন্দী হয়ে আমরা স্রেফ ল্যাংটা জীব হয়ে জীবিত থাকতে চাই কিনা, এটাই একালে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক-রাজনৈতিক জিজ্ঞাসা। আগামবেনের তত্ত্বের পর্যালোচনা করতে আমরা তাই বাধ্য হয়েছি। বাংলাদেশে আমাদের জন্য বিদ্যমান রাজনৈতিক বাস্তবতার কারনেও জরুরি হয়ে উঠেছিল।


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।