বিচারপতির বক্তব্যে বিতর্ক
বিচার বিশ্লেষণ করে মানুষের মঙ্গলের জন্য সংসদে আইন প্রণয়ন করুন
বিতর্কের ঝড় বইছে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর একটি বক্তব্য নিয়ে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার আয়োজিত ‘সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক সহিংসতা : রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনায় বিশেষ অতিথি এই বিচারকের মানুষের অধিকার, আইন প্রণয়নে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলের করণীয় নিয়ে রাখা বক্তব্য ঘিরে আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলামের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি মোড় নিতে থাকে। প্রতিমন্ত্রী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললে আইন মন্ত্রণালয়, জুডিশিয়ারি বিভাগের
সিনিয়র বিচারপতি, সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা একেক জন একেক বক্তব্য রেখে পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করেন। প্রশ্ন ওঠে আইন মন্ত্রণালয় দুই ভাগের। কোপেনহেগেন থেকে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী জর্বরি তলবে আইনমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রীকে কার্যালয়ে ডেকে নেন। উষ্মাও প্রকাশ করেন বাড়তি কথা বলার জন্য। কিন্ত বিচারপতি নজর্বল কি বলেছিলেন অধিকার আয়োজিত আলোচনা সভায় দেশ ও দেশের বাইরে ব্যাপক মানুষের কৌতূহল সেদিকেই। পাঠকের কৌতূহল বিবেচনায় সেদিনের বক্তৃতার বিস্তারিত প্রকাশিত হলো-
কিছুদিন আগেই অধিকার সম্পর্কে জানতে পেরেছি। অধিকার সত্যিই মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করে। সিটিং বিচারপতি হিসেবে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া আমাদের জন্য সমীচীন নয়। যে কোন পলিটিক্যাল পার্টির জন্য তা প্রত্যাশিত নয়, তবে মানুষের অধিকার, গণমানুষের অধিকার, রাইটস অব দ্য সিটিজেনস অব দ্য কান্ট্রি-র জন্য অবশ্যই আমরা কনসার্ন। জুডিশিয়ারি প্রাইমারি কনসার্ন, মেইনলি দ্য হাইয়েস্ট জুডিশিয়ারি, ইজ প্রাইমারি রেসপনসিবলিটি টু দ্য ইন্টারেস্ট অব দ্য সিটিজেন টু সেফগার্ড দেয়ার ফান্ডামেন্টাল রাইটস। শুধু এই একটি কারণে অধিকারের আমন্ত্রণে আমি আজকের অনুষ্ঠানে এসেছি কোন পলিটিক্যাল বক্তব্য রাখার জন্য নয়, শুধু মানুষের অধিকার নিয়ে আলোচনা করার জন্য। অধিকার, মানুষের অধিকার, মানুষের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার যে অধিকার, বাঁচার অধিকার, সম্পত্তি রৰার অধিকার, বিভিন্ন রকমের অধিকার আছে। সেই অধিকারগুলোকে সম্মিলিতভাবে নিরাপত্তা বিধান এবং তার সুন্দর চলার গতি রৰা করা যে কোন সরকারের মৌলিক দায়িত্ব। অর্থাৎ সরকার তার দেশের জনসাধারণের অধিকারগুলো রৰা করবে সুন্দরভাবে। সাবলীলভাবে চলার পথ সুগম করবে। একটা সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব। বাষট্টি বছর বয়সে এসে আমার মনে হয়, আমাদের দেশে যুগে যুগে সময়ে সময়ে সরকার এসেছে, সরকার আসবে সরকার যাবে, মৌলিক যে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার হয় সেই উদ্দেশ্য থেকে একটু দূরে থাকে প্রতিটি সরকার। অর্থাৎ জনগণের সুন্দর এবং সাবলীল চলার পথ সুগম করার যে উদ্দেশ্য এটা না দেখে তারা চলে যান তাদের নিজেদের সুন্দর চলার পথ সৃষ্টি করার জন্য। ব্যত্যয় ঘটে এখানেই। আর এজন্য অধিকারের মতো সংস্থা জন্ম লাভ করে, প্রয়োজন হয়।
যে কোন সরকার একটা বিষয় বুঝতে ভুল করে। সেটা হলো কনস্ট্রাকটিভ ক্রিটিসিজম বা গঠনমূলক সমালোচনা। এই গঠনমূলক সমালোচনা যে প্রতিটি সরকারের জন্য একটা নিয়ামক শক্তি এটা তারা বুঝতে ভুল করে। তারা মনে করে, সমালোচনা মানেই তাদের ৰতি করে ফেলা। অথচ গভীরভাবে যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে কি পাবো, একজন মানুষের সমালোচনা করলে সে যেমন নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায়, ঠিক সরকারের বেলায়ও তেমনি। সমালোচনা যদি সহজভাবে গ্রহণ করা হয় তার নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায়, আর সংশোধিত উপায়ে যদি সরকার চালু থাকে তাহলে তারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে সৰম হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে সৰম হলে পাঁচ বছরের জন্য যারা আসেন, তারা আবার পাঁচ বছরের জন্য ৰমতায় আসতে পারেন। বেনিফিট কি হলো- সমালোচনাকে সহ্য করা, সমালোচনার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করা এই কাজটি করলে পরে নিজেরাই উপকৃত হয়। এটা বুঝতে আমরা ভুল করি। আমরা যখন থেকে বুঝতে পেরেছি সরকার সম্বন্ধে আমাদের উপলব্ধি লাভ করেছি তখন থেকেই দেখছি প্রতিটি সরকার ক্রিটিসিজম শুনলেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। অথচ এই ক্রিটিসিজম যে তাদের উপকারের জন্য হয় তা তারা বুঝতে ভুল করে। যে কোন দেশের সভ্য সমাজের জুডিশিয়ারি, তার মিডিয়া, তার পার্লামেন্ট এই তিনটাই সরকারের প্রাইমারি সহযোগিতার দায়িত্ব পালন করে। সরকার যখন চলার পথে পথভ্রষ্ট হয়, স্খলন ঘটে, এই স্খলনটা সমালোচনার মাধ্যমে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়। আর দেখিয়ে দেয়া যখন হয় তখন পা সরিয়ে সঠিক পথে আসার সুযোগ পান। যেহেতু তাদের সহ্য করার ৰমতা নেই তার কারণের শুনলে পরে এদের পিছনে লেগে যায়। সমালোচকদের পিছনে লেগে যায়। কি মিডিয়া, কি জুডিশিয়ারি। পার্লামেন্টে তো সবসময় সরকারের মেজরিটি থাকে। আর আজ-কাল পার্লামেন্টে তেমন একটা সমালোচনা হয় না। যেভাবে পার্লামেন্ট চলার কথা ছিল আমাদের দেশে সেভাবে চলছে না। এটা বাস্তবতা। বাকি রইলো দু’টা, মিডিয়া ও জুডিশিয়ারি। জুডিশিয়ারিরা হাইয়েস্ট কোর্টে, ওনারা শপথ নিয়ে বিচারের আসনে বসেন। প্রত্যেক বিচারপতির সামনে দু’টা পৰ থাকে। তারা বিচার করেন। নিজের বিবেক অনুযায়ী এবং আইন অনুযায়ী। ন্যাচারালি রায়টা একটা পক্ষের বিপক্ষে যায়। আবার একটা পক্ষের পক্ষে যায়। যার বিপৰে গেল তিনি ক্ষেপে গেলেন, বলেন আমার বিপক্ষে রায় দিয়েছে। এটা যে কোন সরকারের বেলায় আমরা শুনছি। রায় যখন সরকারের বিপক্ষে যায় তখন মনে করে এই বিচারক আমার দলের বিপক্ষে কাজ করে। এই চিন্তা থেকে সব সরকারকে সরে আসতে হবে। তাদেরকে বুঝতে হবে এরা বিচারক। তারা বিচার করেন। পৰেও যেতে পারে বিপৰেও যেতে পারে। একজন সাংবাদিক যখন সঠিক ও সত্য কথাটা তুলে ধরে খবরের কাগজে এটা তার পৰেও যেতে পারে বিপৰেও যেতে পারে। আর বিপৰে যদি যায় তাতে রাগ করার তো কিছু নাই। আর রাগ করি বলেই, আমাদের এই বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। আমাদের দেশে বিশেষ করে জুডিশিয়ারির সামনে দু’টা জিনিস খুব ডিস্টার্বিং ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে। আমি যেটুকু পেয়েছি। একটা হলো প্রসেস অব রিমান্ড। আসামিদের ইনভেস্টিগেশনের জন্য পুলিশ রিমান্ড। আরেকটা হলো এক্সট্রা জুডিশিয়ারি কিলিং। এই দু’টা ফ্যাক্টর আমি মনে করি জুডিশিয়ারির কাছে ডিস্টার্বিং ফ্যাক্টর। কেমন ডিস্টার্বিং ফ্যাক্টর, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ওথ নিয়ে বসে আছেন। বিশেষ করে টু প্রটেক্ট রাইটস অব দ্য সিটিজেন। রাইটস অফ দ্য সিটিজেন যখন ওথ নেয় এদের সামনে যখন এসব ঘটনা ঘটে তখন কিন্তু অবশ্যই তাদেরকে ডিস্টার্ব করে। মানসিকভাবে অবশ্যই আঘাত করে। আর তখনই পথ খুঁজতে হয় কিভাবে এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। আমি খুব কেয়ারফুলি সেকশন ১৬৭টা পড়েছি। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় কোথাও রিপ্রেশন বা অপ্রেশানের কোন সুযোগ নেই। কিন্তু এই ধারার অধীনে বাই মিসইন্টারপ্রিটিশন অব ’ল এই ধারার অধীনে মানুষ হয়রানি হয়। আমি বলবো এই ধারাটার ভিতরে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স মেইনটেন করার জন্য। আমার মনে হয় অ্যামেন্ডমেন্টের দরকার আছে। ওই ধারাটা রিমুভ করার কথা বলছি না। আমি বলছি এটাতে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের জন্য। সামথিং শুড বি অ্যাডেড বাই দ্য পার্লামেন্ট। যেখানে একটা শব্দ, একটা কমা বসানোর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডিবেট হয়। আমি সেই পার্লামেন্টের কথা বলছি। আমি এই পার্লামেন্টের কথা বলি নাই যে পার্লামেন্টে কেরানী সাহেবরা যা পাঠিয়ে দেয় আর সবাই হু হু করে তাই পাস করে দেয়। আমি এই পার্লামেন্টের কথা বলি নাই। আমি সেই পার্লামেন্টের কথা বলছি, যে পার্লামেন্ট আইন তৈরি করার আগে শত বার হাজার বার চিন্তা-ভাবনা করে কোথায় কমা হবে, কোথায় একটা ওয়ার্ড চেঞ্জ হবে, এটা নিয়ে দিনের পর দিন ডিবেট করে। ওই পার্লামেন্টে এই অ্যামেন্ডমেন্টটা দরকার। কারও কলমের খোঁচায় এটা অ্যামেন্ডমেন্ট করলে তা মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। তার সঙ্গে আমার মনের কথা বলি কারণ প্রস্তাব বলাটা ঠিক হবে না। ১৬৭ ধারায় এটা দরকার। আরেকটা- এঙট্রা জুডিশিয়ারি কিলিং। একটা লোক খুন করলো বা একটা লোক এমন অপরাধ করলো যে তার জন্য মৃত্যুদণ্ড নির্ধারিত করা আছে। তার ট্রায়াল কোর্টে বিচার হয়। হাই কোর্টে আপিল হয়। তার পর যদি পাওয়া যায় যে, লোকটি মৃত্যুদণ্ডের জন্য অপরাধী তাকে অবশ্যই ফাঁসি দেয়া যায়। এ আইন আমাদের দেশে আছে। কিন্তু গুটি কয়েক ল’এনফোর্সিং এজেন্সির মেম্বার তারা কাউকে ধরে নিয়ে বলবেন- ও খুব অপরাধী কাজেই তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত ওদের কাছে দেয়া এটা সুইসাইডাল বা আত্মঘাতের সামিল। জাতির জন্য আত্মঘাতী। সমাজের জন্য। সরকারের জন্য। কি কারণে? আমরা কেউ কিন্তু মানুষ হিসেবে ত্র্বটির ঊর্ধ্বে কেউ নেই। ছোট, বড়, মাঝারি যে যেখানে আছি। সুতরাং দু’-পাঁচজন লোকের ওপরে একটা মানুষের জীবন নিয়ে নেয়ার ৰমতা ছেড়ে দেয়া এর চেয়ে বড় রিস্ক আর হতে পারে না। যার কারণে এক্সট্রা জুডিশিয়ারি কিলিং মাস্ট বি স্টপ। আর সত্যি সত্যি এঙট্রিম টেররিস্ট যদি কেউ থাকে, এমন কোন লোক যার কারণে একটা জনপদ অশান্তিতে ভুগছে, তাদের কারণে ওখানে শান্তি নেই অশান্তি বিরাজ করছে তার জন্য আইন সম্মত যে পন্থা আছে তাকে গ্রেপ্তার করা। কিন্তু কারও ওপর মেরে ফেলার দায়িত্ব সে যত বড় লোক হোক না কেন উচিত হবে না।
এই হলো আমার দ্বিতীয় অনুধাবন। তৃতীয় অনুধাবন হলো- পার্লামেন্টের ব্যাপারে। ডেমোক্রেটিক সোসাইটিতে বিশেষ করে পর্লামেন্টের সুবিধা যেখানে আছে। সেখানে এই পার্লামেন্ট, আইন সভা, এটা নতুন গাড়ি-বাড়ি কেনার জন্য না। মানুষের মঙ্গলের জন্য আইন প্রণয়ন করবেন তারা। এখানে যারা যাবেন তারা আইন সম্পর্কে অবগত হয়ে যাবেন। আইন কিভাবে তৈরি হয়, কোন আইন মানুষের মঙ্গল বয়ে আনে সেটা জানা দরকার। কাজেই একটা আইন প্রণয়ন করতে গেলে, সেটা পার্লামেন্টে এলে হু হু করে পাস করে দেবেন এ কাজটা হবে না। আইনটা পেশ করেন বিল আকারে, ড্রাফট সবসময় আসে এখানে সেটা বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে; ডিবেট করতে হবে। আর এই ডিবেটের মাধ্যমে দিনের পর দিন প্রয়োজন হলে মাসের পর মাস ডিবেট করে একটা আইন প্রস্তুত করতে হবে। এক সিটিংয়ে তিনটা আইন পাস করে দিলাম, এই আইন আমাদের জন্য কোন মঙ্গল হবে না, হচ্ছেও না। বাস্তবতা আমরা তাই দেখছি। সুতরাং পার্লামেন্টটাকে একটা সত্যিকারের পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। সত্যিকারের পার্লামেন্ট হিসেবে এটাকে গড়ে উঠতে হবে। আর ওইটা যখন হবে তখন দেশের জন্য ‘অধিকার’ যা চায় তা ওখান থেকে অনেকটা তৈরি হয়ে আসবে। যেহেতু আমাদের নাই, আমরা যেহেতু দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছু করি, যার কারণে আমাদের দলের একটা আইন আসছে ভাল হলো না ওইটা দরকার নেই ‘পাস পাস পাস’। পড়েও দেখেনি। এমনও ঘটনা ঘটছে দেশে আইন তৈরি হয়েছে পার্লামেন্টের সব মেম্বার পড়েও দেখেনি সেটা কি। তারা আইনসভার সদস্য। আইন তৈরি করছে কাদের জন্য। দুঃখ আর কাকে বলবেন। আমি বলছি, আর কিছু না-দেশের মঙ্গল যদি কেউ চায় তাহলে এই তিনটা জিনিস খেয়াল করতে হবে। এই তিনটা জিনিস সম্পর্কে ভেবেচিন্তে দেখতে হবে। আমি যা চিন্তা করছি, আমি যা বললাম যদি তা কারেক্ট না হয় আরও ভাল ভাবে, আরও সুন্দরভাবে দেখতে হবে। রিমান্ড, এক্সট্রা জুডিশিয়ারি কিলিং এবং পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাকটিভিটিস- এই তিনটা জিনিস নিয়ে আপনারা একটু চিন্তা-ভাবনা কর্বন। থামেন। দেশটা ধাবিত হচ্ছে গর্তের দিকে। সারা পৃথিবীর সমস্ত জাতি উপরের দিকে উঠতে চায় আর আমরা গর্তের দিকে যাওয়ার চেষ্টায় আছি। এটা থেকে রৰা করার জন্য আমরা বলবো- থামুন, ক্রস ফায়ার নো ফারদার। এখানে থামুন, থেমে আপনারা একটু চিন্তা কর্বন। তিনটা জিনিস একটু খেয়াল কর্বন বিশেষ করে আমাদের দেশের জন্য। একটি সমাধানে আসুন। আমার প্রস্তাব আপনারা নাকচ করে দেন, কিন্তু তার চেয়ে আরেকটি ভাল প্রস্তাব আপনারা নিয়ে আসুন। এই আমার আহবান আপনাদের কাছে। আর অধিকারের বেলায়, আমি বলবো অধিকারের মতো সংগঠন যত বেশি থাকবে এ দেশের জন্য ততই মঙ্গল। তবে আরেকটি জিনিস আমি বলবো আপনাদেরকে- পলিটিক্যাল বায়াসনেস। এটা থেকে আপনার দূরে সরে থাকুন। কোন পলিটিক্যাল চিন্তাভাবনা থেকে আপনারা অধিকার আদায় করতে পারবেন না। যদি মনে করেন অধিকারের মাধ্যমে একজন ভাল উকিল হওয়ার চেষ্টা করি, আমার একটা দল আছে, ওই দলের জন্য আমি কাজ করি তাহলে অধিকার আদায় হবে না। জুডিশিয়ারিদের যেমন কোন পলিটিক্যাল পার্টি নেই তেমনি সাংবাদিকদের কোন পলিটিক্যাল পার্টি থাকা উচিত নয়। পলিটিক্যাল অ্যাঙ্গেল থেকে কোন সংবাদ দেয়া উচিত নয়। তারা কি করবেন- ঠিক জুডিশিয়ারি যেমন নিরপেৰ দৃষ্টিকোণ থেকে একটা বিচার করে। সাংবাদিক ভাইয়েরা, আপনার যেদিন দলীয় লেজুড়বৃত্তি থেকে সরে আসবেন সেদিন আপনাদের সম্মান বাড়বে আর বাড়বে। কেউ আপনাদের অসম্মান করতে পারবে না। আপনাদের নিজেদের স্বার্থে নিজেদের পলিটিক্যাল লেজুড়বৃত্তি থেকে সরে আসা উচিত। তাহলে কেউ আপনাদের অশ্রদ্ধা করবে না। কেবলমাত্র আপনারা শ্রদ্ধার পাত্র হবেন। জুডিশিয়ারিও তাই। পার্লামেন্টের সদস্য কত বড় একটা দায়িত্ব। যেহেতু দলীয় হয়ে আসছেন তাই বলে দলের ভুল সিদ্ধান্ত সাপোর্ট করতে হবে তা নয়।
মানবজমিনের সৌজন্যে: