ইসরায়ের পক্ষে ভেটো: যুক্তরাষ্ট্র


আজ ১০ ডিসেম্বর ২০২৩। পঁচাত্তর বছর আগে এই দিনে সার্বজনীন মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক সনদটি (Universal Declaration of Human Rights) প্যারিসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ঘোষিত হয়। কিন্তু মানবাধিকারের কি দুর্দশা সেটা গাজাকে কিভাবে সবার চোখের সামনে প্রকাশ্যে ধ্বংস করা হচ্ছে তাতে স্পষ্ট। অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবি তোলার দিন আজ। বাংলাদেশেও যা কিছু জয় করবার তা জনগণকেই লড়ে আদায় করে নিতে হবে।

আজ মানধিকার দিবসে শিক্ষণীয় কি? পরাশক্তি আমাদের মানবাধিকার রক্ষা করবে এবং একের পর এক স্যাংকশন দিয়ে বিরোধী দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এই উদ্ভট, অ-রাজনৈতিক, গণবিরোধী এবং কাপুরোষচিত চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়ার দিন। কিন্তু মানবাধিকারের কথাই আমাদের বলতে হবে, মানুষের অধিকার কায়েমের দাবি তুলেই আমরা সারা দুনিয়ার জনগণের সঙ্গে একাত্ম হতে পারব।

একালে স্থানীয় কোন লড়াই নাই। সব সংগ্রামই একই সঙ্গে স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক। বাংলাদেশ ব্যতিক্রম নয়।

পরাশক্তি নয়, গণশক্তির ওপর ভরসা করুন। এটাই পথ।

সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার পঁচাত্তর বছরে আমরা কি অগ্রসর হয়েছি? না। এই মূহূর্তে গাজায় নির্বিচারে বোমা বর্ষিত হচ্ছে। অথচ সকলের জন্য মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি, আইন ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আছে বলে আমরা জানি। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলা এবং স্থল অভিযানে নিহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, নারী এবং শিশু। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, গাজার ৩৬ শতাংশ পরিবারই খাদ্যাভাবে মারাত্মক ক্ষুধার হুমকিতে পড়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, "গাজা উপত্যকায় যাওয়ার মতো কোনো নিরাপদ জায়গা নেই"।

সারা দুনিয়ার সকলেরই চোখের সামনে ইজরায়েল গাজায় বলে কয়ে গণহত্যা (Genocide) চালাচ্ছে। একটি জনগোষ্ঠিকে ঘোষণা দিয়ে নির্বংশ করার প্রক্রিয়া (ethnic Cleansing) চলছে। কারন তারা নাকি ‘মানুষ’ না। মানুষের চেহারাধারী 'পশু' । হিউম্যান এনিম্যাল। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট তাই ঘোষণা করে দিয়েছেন, "আমরা মানব পশুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি"। ইজরায়েলের আত্মরক্ষার জন্য পশুহত্যা বিধেয়। ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, কিন্তু প্যালেস্টাইনের নাই।

অক্টোবারের সাত তারিখের পর ৯ ডিসেম্বরে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে ১৭, ৪৮৭ জন ফিলিস্তিনীকে হত্যা করা হয়েছে। গাজাকে ধূলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজা আর আবাসযোগ্য নয়।

এদিকে শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রস্তাব দিয়েছিল। ভোটে পরিষদের ১৫ সদস্যদেশের ১৩টিই সমর্থন জানায়। কিন্তু প্রস্তাবের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দেয়। এই হোল আন্তর্জাতিক বাস্তবতা।

আমাদের কি খবর? আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে সকল বিরোধী দল। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে জামায়াত ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল শরিক দল ও সমমনা জোটগুলোও একই কর্মসূচি পালন করছে। আমরা তাদের সমর্থন এবং সংহতি জানাই।

কিন্তু কোন পরাশক্তি নয়, গণশক্তির ওপর ভরসা করতে বলি।

সম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক

সেটলার কলোনিয়াল জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইজরায়েল নিপাত যাক।

আমাদের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসুক।

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।