আসুন, চিন্তা করতে শিখি


নীচের লেখাটা পুরনো। আশাকরি এখনও প্রাসঙ্গিক। এ বিষয়গুলো নিয়ে নানা ভাবে লিখেছি, আরো লিখব বলে এখানে আবার শেয়ার করলাম। কেউ একজন প্রশ্ন করেছিল 'গণতন্ত্র ও নাগরিকতা কি ধ্রুব কিছু?' । এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এই লেখা।

কিন্তু লেখাটা উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মতো অপচয় হয়েছে। আমাদের দেশে এক ধরণের ভূয়া ইসলামিস্ট আছে যাদের সাধনা হচ্ছে সেকুলার মহলে স্বীকৃতি পাওয়া। তারা এমন ভাবে প্রশ্ন তোলে যাতে মনে হয় তারা বুঝি আসলেই এই প্রশ্নের মীমাংসা চায়। অথচ এটা কিন্তু আসলেই ভাল প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ঘুরিয়ে ভাত খাওয়ার মতো অবস্থা। স্মার্টগিরি ফলানো আর কি!! ফেইসবুকে কিছু একটা জিজ্ঞাসা করলাম -- ব্যস। অতোদূর।

এই প্রশ্নের নিহিতার্থ জিজ্ঞাসা হচ্ছে ইসলাম কি পাশ্চাত্য লিবারেলিজম ও গণতন্ত্র সমর্থন করে? যারা এপোলোজেটিক, অর্থাৎ পাশ্চাত্যের চোখে ভাল সাজতে চায়, তারা বলবে হ্যাঁ, অবশ্যই। ইসলামও গণতান্ত্রিক। আমাদের কি 'মজলিসে শূরা' নাই? নারে ভাই, সেটা না। পৃথবীতে কোন সমাজই কোন না কোন ভাবে সমষ্টির ইচ্ছা বা অভিপ্রায় ধারণ করবার পদ্ধতি চর্চা ছাড়া জনগোষ্ঠ হিশাবে টিকে থাকতে পারে না। সেই অভিপ্রায় ধার করবার প্রক্রিয়া আর পাশ্চাত্য গণতন্ত্র এক কথা না। কিন্তু উত্তরটা এতো সাদা, সহজ বা সরল না। কারন নির্বাচনী গণন্ত্রের মধ্য দিয়ে হিটলারের ফ্যাসিস্ট জার্মানি যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি ভারত ও বাংলাদেশের ফ্যাসিজমও তথাকথিত গণতন্ত্র থেকে অভিন্ন কিছু না। তাই গণতন্ত্র মানেই ভাল এই ধর্মীয় বিশ্বাস মাথায় বয়ে বেড়ানোর কোন যুক্তি নাই। এর দ্বারা কি বোঝাচ্ছি, কি ব্যবস্থা কায়েম করছি সেটাই হচ্ছে আসল কথা।

শুনুন। ইসলাম গণতন্ত্রকে কুফরি গণ্য করে। দাঁড়ি। কিন্তু এখানে থামলে চলবে না। বুঝতে হবে, কেন? গণতন্ত্র রাজনৈতিক সাম্যের কথা বলে, কিন্তু অর্থনৈতিক, সামাজিক সাম্য মানে না। এমনকি সাংস্কৃতিক সাম্যও মানে না। তদুপরি আমাদের মেনে নিতে হবে পাশ্চাত্যই নাকি সভ্যতার একমাত্র আদর্শ। সেটা কেমন? গাজার গণহত্যা দেখে সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু তারপরও পাশ্চাত্যে সঙ্গে আমাদের মহব্বত চলতে থাকবে, পাশ্চাত্যকেই সকলের অনুকরণ ও অনুসরণ করতে হবে! এটা কি সম্ভব?

গণতন্ত্র কুফরি কেন? কারন গণতন্ত্র সাম্যের কথা বলে বটে, কিন্তু আসলে সেটা যে শুধু রাজনৈতিক সাম্যের মধ্যে সংকীর্ণ সেই সত্য পাশ্চাত্য লুকায়, আড়াল করে, গোপন রাখে। ইসলামের চোখে এটা 'কুফরি' -- অর্থাৎ সত্য জেনেও সেটা লুকানো।

আমার ভোট আর কোটিপতির ভোট একটা। এমনকি গণতন্ত্রে সর্বহারারও একটা ভোট আছে। কিন্ত এই ভোট ও রাজনৈতিক সাম্য ছাড়া গণতন্ত্র একটি অসম ব্যবস্থা। অতএব ইসলামের চোখে গণতন্ত্র ধ্রুব কিছু হতে পারে না। নাগরিকতা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে স্বীকৃত রাজনৈতিক অধিকার। কিন্তু অর্থনৈতিক অধিকার না। তাহলে ইসলাম তা মানবে কেন? ইসলামে 'রিজিক' বা জীবন ধারণ ব্যবস্থা এমনই পবিত্র যে কারও রিজিক হরণ করবার অধিকার আল্লা কাউকে দেন নি। হায়াত-মওতের মতো সেটা একমাত্র আল্লার হাতেই ন্যস্ত।

বাংলাদেশে ভোটের অধিকারও নাই। রিজিক তো দূরের কথা। অন্যদিকে কৌতুকের বিষয় হচ্ছে ভোটকেই এই দেশে গণতন্ত্র বলা হয়। চমৎকার!!

তাহলে গণতন্ত্র ও নাগরিকতা কি ধ্রুব কিছু? তার সাফ সাফ উত্তর হচ্ছে না। কিন্তু কেউ কেউ যেহেতু সেকুলারদের দলে কাক হয়েও ময়ুরের পাখা গুঁজে মিশতে চায়, তাই কথাগুলো খামাখা ঘুরিয়ে বলার চেষ্টা দেখে কৌতুক বোধ করি।

না ইসলামে পাশ্চাত্যের লিবারেলিজম, গণতন্ত্র ও নাগরিকতার কোন স্থান নাই। না থাকার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। ইসলাম পাশ্চাত্যের সমালোচনা নিশ্চয়ই মার্কসের ভাষায় করবে না, যদিও মজলুমের পক্ষের যে কোন রাজনীতি ও দর্শনের সঙ্গে ইসলামের আত্মীয়তা আছে, কিন্তু ইসলামের নিজস্ব পরিভাষা রয়েছে।

আমরা যদি আসলেই মার্কসের খাঁটি ছাত্র হয়ে থাকি তাহলে আমাদের কাজ সেই পরিভাষা গুলোর গভীর দার্শনিক মর্ম বা তাৎপর্য মজলুম জনগণকে বোঝানো। যেমন। কেন ইসলাম গণতন্ত্রকে কুফরি মনে করে? কারন গণতন্ত্রীরা সত্য জেনেও সত্য লুকায়। সত্য জেনেও লুকানো -- একেই ইসলাম 'কুফরি' জ্ঞান করে। সত্য জানার পর তা আর লুকানো যাবে না। সত্যকে প্রকাশ করতে দিতে হবে।

সেকুলার বলি ইসলামপন্থি বলি বাংলাদেশে গণতন্ত্র কায়েমের প্রশ্ন যে একই সঙ্গে ইসলাম প্রশ্ন মীমাংসার বিষয় সেটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নাই। অর্থাৎ এই সকল গুরুতর বিষয় স্পষ্ট ও স্বচ্ছ ভাবে তুলে ধরা এবং আমাদের চিন্তার জগতকে নাড়িয়ে দিতে ভয় না পাওয়া আমাদের কাজ। কার্ল মার্কস এবং বিপ্লবী রাজনীতির ইতিহাস থেকে আমরা এটাই শিখেছি।

এখন ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে সেখানে ইসলামিক দলগুলো প্রান্তিক করে রাখা হয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতে তারা কার্যত অনুপস্থিত। কিছু গণতন্ত্রবাদী ভোটব্যবসায়ী আছে, বলা বাহুল্য তারা 'কুফরি'তে আকন্ঠ নিমজ্জমান। এর পরিণতি খুব ভালো হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু এই সংকটের সমাধান আমাদেরই করতে হবে।

চিন্তা করতে শিখুন। ফিলিস্তিনের তরুনরা যদি দুনিয়া কাঁপিয়ে দিতে পারে, বাংলাদেশের তরুণরাও পারবে।

আল্লা আমাদের শুধু কোরান শরিফ দেন নি, বুদ্ধি, বিবেক, বৃত্তি ও কল্পনা শক্তিও দিয়েছে। ব্যবহার করতে শিখুন।

এখন পুরানা লেখাটা পড়ুন। আপনাদের আন্তরিক মন্তব্য আশা করছি। যিনি প্রশ্ন করেছিলেন তিনি গুরুত্বহীন হওয়ায় এখান নাম কেটে দিয়েছি। পড়তে সুবিধা হবে।

.....................................

‘গণতন্ত্র এবং নাগরিকতা ধ্রুব কিছু?’

অবশ্যই না। গণতন্ত্র রাষ্ট্রের একটি ধরনও বটে। রাষ্ট্র ধ্রুব কিছু নয়। রাষ্ট্র না থাকলে গণতন্ত্রও থাকবে না। রাষ্ট্র বা রাষ্ট্র ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা কিম্বা বিদ্যমান রাষ্ট্র ক্ষমতার বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষমতা বা গণশক্তির বিকাশ শুধু মতাদর্শ কিম্বা ‘সর্ব উদার সমাজ’ নিয়ে আলোচনা না।

নাগরিকতা? না, সেটাও ধ্রুব কিছু নয়। গণতন্ত্র ও নাগরিকতা সম্পর্কে এই ধরনের বক্তব্য আমাকে বিস্মিত করেছে। এইসব নিয়ে বিস্তর লিখেছি। অনেকেই পড়েছেন, আশা করি। তারপরও প্রশ্ন তুলছেন? কটাক্ষ করে বলেছেন, আমার ইমান ‘খড়কুটা’র ইমান। বাংলাদেশে জায়নবাদের বিরুদ্ধে ইনি নাকি সাড়া দিতে চান, কিন্তু আমার খড়কুটা ইমানের জন্য নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন।

পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক ও তার ওপর গড়ে ওঠা ব্যবস্থা সমাজকে মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলে । এক দিক সামাজিক পরিমণ্ডল বা সমাজ (civil society) , বিপরীতে রাজনৈতিক পরিমণ্ডল (political society) বা রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডল। সমাজে নানান পরিচয় থাকলেও রাষ্ট্রের চোখে, সাংবিধানিক অধিকারের জোরে, আইনের চোখে অন্যের সঙ্গে সম্পত্তি, আর্থিক সুযোগ সুবিধা এবং অন্যান্য সামাজিক বা ধর্মীয় পরিচয়ের পার্থক্য থাকলেও রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে সকলে সমান – এই ধারণার ভিত্তিতেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। বিভিন রাষ্ট্রে এই ধারণার বাস্তবায়নে মাত্রাভেদ আছে।

সর্বহারা থেকে ধনি -- এই ব্যবস্থায় প্রত্যেকেই প্রাক-পুঁজিতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক থেকে বিযুক্ত হয়ে যায় – পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক প্রাকৃতিক সম্পর্ক নয়। বিযুক্তির কারনে মানুষ নিজেকে ‘ব্যক্তি’ হিসাবে সমাজে হাজির দেখে। ফলে ‘ব্যক্তি’ হিসাবে নিজেকে জানা, বোঝা, উপলব্ধি করা ঐতিহাসিক কারনেই অনিবার্য হয়ে ওঠে। যার কারনে ব্যক্তিতন্ত্রই এই কালে নতুন ধর্ম হয়ে ওঠে। নিজেকে কেউ সেকুলার, নাস্তিক, কিম্বা অতিশয় ধার্মিক বা ইমানদার ভাবলেও ‘বিশ্বাস’, ‘অবিশ্বাস’, ‘ইমান’ ইত্যাদি ব্যক্তিবাদ বা ব্যক্তিতন্ত্রের জায়গা থেকেই তৈরি হয়। এটাই স্বাভাবিক। যে কারনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সব ব্যক্তির চিন্তা ব্যক্তিগত বিশ্বাসের অধিক কিছু হয়ে উঠতে পারে না।

বলাবাহুল্য ইসলামে ‘ঈমান’ কথাটার অর্থ আদৌ ব্যাক্তিগত বিশ্বাস মাত্র কিনা সেটা একালে – পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার এই কালে -- খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসাবে হাজির হয়েছে। সেকুলার কি ধার্মিক -- স্রেফ ব্যক্তিগত বিশ্বাস দিয়ে কেউই দুনিয়া বদল করতে পারে না। বদল করা যায় না। ইতিহাসের অভিমুখ শনাক্ত করবার ক্ষমতাও অর্জন করা চাই।

পুঁজিবাদ নিছকই একটা আদর্শ না, তাকে কোন ষড়যন্ত্র টিকিয়ে রাখে না, মানুষের ইচ্ছা, বিশ্বাস, অবিশ্বাস ইত্যদির বাইরে নৈর্ব্যক্তিক ও ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া হিসাবে পুঁজি হাজির। মুখে যে যাই বলুক --এ কালে পুঁজিই ‘আল্লাহ’। পুঁজির আনুগত্য না মানলে ভাত কাপড় বাসস্থান জোটে না। এই চরম কুফরি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা আমি বারবার বলছি। পুঁজি প্রাক-পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ককে আমাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার তোয়াক্কা না করে মোমের মতো গলিয়ে দেয়। সব সম্পর্ক আমাদের নতুন করে নির্মাণ করা ছাড়া উপায় থাকে না। পুঁজি মানবেতিহাসের যে সকল মুল্যবান অভিজ্ঞতাকে ভুলিয়ে দিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে নতুন নির্মানের ভিত্তির জন্য সেই সকল ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অন্বেষণ চালাতে হবে আমাদের। স্মৃতিচ্যুত হওয়া যাবে না। আরও অনেক অভিজ্ঞতার প্রত্যাবর্তন সহ ধর্মীয় অভিজ্ঞতা নতুন রূপ নিয়ে ফিরে আসে।

গণতন্ত্র ও নাগরিকতা দুটোই পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা উদ্ভবের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক রাষ্ট্রের রূপ নিয়ে ঐতিহাসিক ভাবে হাজির। এর সঙ্গে গড়ে উঠেছে আইন-আদালত, সামরিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, র‍্যাব, শিক্ষা ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, মতাদর্শ সহ বলপ্রয়োগের প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ নানান রূপ। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার অর্থ আদতে পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই। তাই না?

কিন্তু শুরু করা যায় কোথা থেকে? সেই জন্যই প্রশ্ন ওঠে পাল্টা ক্ষমতা নির্মাণের। বিদ্যমান ক্ষমতার ধারক বাহকরা যাই বলুক, জনগণ লড়ে। দেশকালপাত্র ভেদে তার পতাকার রং এক রকম থাকে না। পতাকার রং দেখে সেই লড়াইকে বিচার করা নিজ নিজ মতান্ধ বিশ্বাসের জায়গা থেকে গ্রহণ/নাকচের অধিক কিছু হয় না। সেকুলার ও ধর্মবাদী উভয় পক্ষই যা সাধারণত করে থাকে। লড়াইয়ের মর্ম বোঝা ও তার সাধারন অভিমুখ শনাক্ত করাই এ ক্ষেত্রে জরুরী কর্তব্য।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান জালিম রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই ও পাল্টা ক্ষমতা তৈরির রাজনীতি এ কারনেই আমি সমর্থন করি। কারো পতাকার রং কিম্বা জোব্বাটুপি আমাকে বিভ্রান্ত করে না। বিদ্যমান ক্ষমতার বিপরীতে পাল্টা ক্ষমতা তৈরির প্রক্রিয়া বা ‘গণশক্তি’ গঠনের এটাই পথ। আর কোন শর্টকাট পথ নাই। আর ‘জনগণের গণতন্ত্র’ গণশক্তিরই আরেক নাম। তাহলে বাংলাদেশে প্রাথমিক কর্তব্য হচ্ছে গণশক্তির বিকাশ সাধন ও বাংলাদেশে রাষ্ট্রশক্তি হিসাবে তার পরিগঠন।

না। সেটা ‘উদার গণতন্ত্র’ দিয়ে সম্ভব না। আলবৎ। কিন্তু উদার গণতন্ত্র ও জনগণের গণতন্ত্র বা জনগণতন্ত্র – এক কথা নয়। বিদ্যমান জালিম রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জণগণতান্ত্রিক শক্তি লড়ে। তাকে চেনা যায় মজলুমের প্রতি জালিমের বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বানে। উদার গণতন্ত্র জালিম ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখে, জনগণকে বিভক্ত রাখাই তার নীতি। এগুলা মীমাংসিত পুরানা তর্ক। যে কারনে উদার গণতন্ত্র ‘কুফরি’ ছাড়া আর কিছু না। কারন উদার গণতন্ত্রীরা সত্য লুকায়।

জায়নবাদ বা যে কোন ধরণের জাতিবাদী আত্মপরিচয়ের রাজনীতি ও তার বিপদ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে তার বিরুদ্ধে সংগ্রামের ডাক শুনে যারা বলছেন, তারা লড়তে চান, কিন্তু ‘খড়কুটা’র ওপর ইমান রেখে তারা লড়বেন না – তো অসুবিধা কি? আপনার হাতে ইমানের ইঁটপাথরের দিয়ে তৈয়ারি রাজনীতি থাকলে তাই দিয়েই লড়ুন। ধর্মবাদী কিম্বা সেকুলার –লড়াইয়ের নামে কোন না কোন না প্রকার জাতিবাদী বা জাতীয়তাবাদী আত্মপরিচয়ের খাপে ঢুকে নিজের ‘অপর’-কে কচুকাটা বা নিশ্চিহ্ন করার রাজনীতি সম্পর্কে আপনি হুঁশিয়ার কিনা সেটাই আমার দেখার বিষয়।

আর যারা আসলেই লড়বেন বা লড়েন তারা আমার কথায় নিস্তেজ হবেন কেন? যারা লড়াকু সংগ্রামের ময়দানে তাদের চিনতে আমার ভুল হবে না।

আবারও বলি, পতাকার রঙ দেখে আমি মজলুমের পক্ষে দাঁড়াই না, মজলুম বলেই তার

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।