মে দিবসের কাব্য অথবা মাও জে দং সম্পর্কে একটি নোট


‘হে শ্রম

হে পুরুষ ও নারী শ্রম

হে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রম

এমনকি হে শিশু ও বালকদের শ্রম

আমার কবিতা তোমাদের ইতিহাস

আমি শ্রম ও শ্রমিকতার কবি…’

অকস্মাৎ রফতানিমুখী নারীশ্রমিক (১৯৮৫)

পহেলা মে বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসকে সামনে রেখে এই লেখাটি লিখছি প্রথমত, বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রতি সংহতি জানাবার জন্য। দ্বিতীয়ত, নিছকই ‘দিবস’ হিসেবে যারা পালন করেন তাদের কষে নিন্দা করবার বাসনায়; না, নিন্দা জানাচ্ছি এতটুকুই যথেষ্ট, এর বেশি কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।

বাংলাদেশের শ্রমিক কথাটি যখন বলি, তখন দেশের অভ্যন্তরে যারা রক্ত ও ঘাম দিয়ে উৎপাদনে নিয়োজিত তাদের কথা তো অবশ্যই বলি, কিন্তু একই সঙ্গে গোলকায়নের এই যুগে অভিবাসী শ্রমিকদেরও একই নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করছি। বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে এরাই টিকিয়ে রেখেছেন।

এখন আমার চোখে ভাসছে বিশেষভাবে পোশাক কারখানার লাখ লাখ শ্রমিক, প্রত্যুষে ছোট ছোট মেয়ে ও কিশোরীদের ঢাকার পথ ধরে হল্লা করতে করতে যাবার দৃশ্য। এই ছবি আশির দশকে আমার বুকে এমনভাবে বিঁধে গিয়েছিল যে, আমি একটি কবিতা লিখেছিলাম : ‘অকস্মাৎ রফতানিমুখী নারী মেশিন।’ কবিতাটি লেখার পেছনে এই ভাবনা কাজ করেছিল যে, কবিতার পক্ষে তথাকথিত ‘উন্নয়ন’ নামক ব্যাপারের সমালোচনা বা পর্যালোচনা আদৌ সম্ভব কিনা। ফলে কবিতাটি ছিল একদিকে রফতানিমুখী পোশাক তৈরি কারখানার কিশোরী শ্রমিকদের প্রতি নিবেদিত, কিন্তু মূলত রফতানিমুখী উন্নয়ন নীতি আমাদের কী দুর্দশায় ফেলবে এবং তার পরিণতি কী হতে যাচ্ছে তারই একটি আগাম বয়ান। কিন্তু ওর মধ্যেও তো কুয়াশা ভেদ করে সকাল আসে – সেই আশাও ছিল। আজ যখন পঁচিশ বছর পর পেছনে তাকাই তখন আবারও বলতে ইচ্ছে :

‘তোমরা এখন শ্রম

তোমরা এখন আমুন্ডুনখাগ্র নারীমেশিন

তোমরা এখন সেলাইকল ও মোটরচালিত সুঁই

তোমরা এখন রফতানিমুখী মুনাফা

তোমরা এখন আপদমস্তক ঘাম ও মেহনতের যন্ত্র

শ্রম ও শ্রমের জিনিসপত্র রক্তমাংসহীন মেহনত

নির্মানবিক শ্রম।’

এরপর আজ ২০১০ সালের মে দিবসে নতুন কী আর বলার আছে?

শ্রম বা শ্রমিকতার উদযাপন পহেলা মে নামক তারিখে খচিত আছে, জানি – কিন্তু এখন সেটা নিছকই অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে, কোন মূল্য আর অবশিষ্ট আছে কিনা সন্দেহ। পহেলা মে শুধুই একটা দিবস। এর অন্য কী আর তাৎপর্য আছে? তবু শ্রম, শ্রমিকতা এবং শ্রমিককে ভুলি কি করে? পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিপ্লবী রাজনীতির যে প্রচলিত তত্ত্ব তার অনুমান শ্রম, শ্রমিকতা ও শ্রমিককে ঘিরে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল আর চীন পথ ধরলো পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে – তখন ধারণাগুলোর মুখোমুখি হবার সাহস আমরা করিনি। সেই হিম্মত কি আমরা অর্জন করেছি? প্রতিপক্ষ অবশ্য অনায়াসেই ধারণাগুলোকে বাতিল গণ্য করা শুরু করলো। মার্কস, লেনিন বা মাও জে দং দ্রুত প্রাচীন ইতিহাসে পরিণত হয়ে গেলেন। বামপন্থা নামে বুর্জোয় নির্বাচনী রাজনীতির মধ্যে একটি রাজনৈতিক ধারা স্থিতিস্থাপকতার দোষে টিকে আছে বটে, শহুরে মধ্যবিত্তের দাবি তাদের দল শ্রমিক, কৃষক নিপীড়িত শ্রেণীর পক্ষে। কিন্তু শোষক ও শাসক শ্রেণীর রাজনীতি থেকে তাদের রাজনীতি আলাদা করবার উপায় নেই। অধিকাংশই আওয়ামী রাজনীতির পরিমন্ডলে আওয়ামী পরিবার হয়েই রয়েছেন। আওয়ামী লীগ নিজেও এই ধারাকে সামাজিক ন্যুইসেন্সের বেশি অধিক মর্যাদা দিতে নারাজ।

বাংলাদেশে লেনিনের শিক্ষা আশ্রয় করে তাৎপর্যপূর্ণ শ্রমিক রাজনীতি গড়ে উঠলেও তার কো-বৈপ্লবিক অভিপ্রকাশ ঘটেনি। সমাজতাত্ত্বিক দিক থেকে এর তাৎপর্য গবেষণার বিষয়। কিন্তু বুর্জোয়া গণমাধ্যমের ক্রমাগত অপপ্রচার এবং নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে আইনবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে মাওবাদ নিশ্চিহ্ন না হওয়াটা বাংলাদেশের বিপ্লবী রাজনীতির জন্য সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। সেই কারণে দার্শনিক অর্থে শ্রমিক শ্রেণীর রাজনীতি যারা করেন তাদের মধ্যে মাওবাদীদের প্রসঙ্গ আলাদাভাবে বিচারের দাবি রাখে। এখানে সেই প্রসঙ্গ আলোচনার সুযোগ নেই। তবে মে দিবসকে সামনে রেখে রাজনৈতিক-দার্শনিক অবস্থানে দাঁড়িয়ে কয়েকটি কথা বলে এই নোটটি শেষ করবো।

মাওয়ের চিন্তা শিল্পোন্নত দেশে গড়ে ওঠেনি। গড়ে উঠেছে জঙ্গি কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। লেনিন যদি পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার দুর্বল জায়গা শনাক্ত করে সাম্রাজ্যবাদকে আঘাত হানবার বিদ্যা শিখিয়ে থাকেন, মাও তারও চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে বললেন, শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লবের ধারণাটা দার্শনিক অর্থে সঠিক, কিন্তু নতুন সমাজ তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। তার ‘জনগণতান্ত্রিক’ বা ‘নয়া গণতান্ত্রিক’ বিপ্লবের ধারণা আমরা আরো ঘনিষ্ঠভাবে বিচার করে দেখতে পারি। নতুন সমাজের চিন্তা পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে তৈরি হয়ে থাকা চিন্তা দিয়ে সম্ভব নয়। কিন্তু কিভাবে সেই নতুন মানুষের জন্ম দেয়া সম্ভব? কিভাবে জনগণের মধ্যে নতুন চিন্তার জন্ম দেয়া যায়? মাও বিপ্লবী রাজনীতির জন্য এই দিক থেকে নতুন প্রশ্ন তুললেন।

সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ এবং সংশোধনবাদীদের বিরুদ্ধে জনগণকে একত্র করবার বিদ্যা ও কাজ করবার পদ্ধতি প্রয়োজন আছে, বলাই বাহুল্য। ইতিহাসের গতিপ্রক্রিয়া ও অভিমুখ সম্পর্কে অগ্রসর চিন্তা ও এই মুহূর্তের কাজ শনাক্ত করতে যারা সক্ষম সেই শ্রেণীসচেতন ‘শ্রমিক’ বা সোজা কথায় বিপ্লবী গ্রুপ, গোষ্ঠী, দল বা যে নামেই তাদের আমরা ডাকি না কেন তাদের আবির্ভাব জরুরি। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার মধ্যে বিদ্যমান বাস্তবতাকে মনে রেখে তারা এখনকার কর্তব্য নির্ধারণ করতে সক্ষম। এককথায় মাও জে দংয়ের এ চিন্তা ‘গণলাইন’ বলে পরিচিত। এই গণলাইনকে হতে হবে গণশক্তি উদ্বোধনের প্রক্রিয়া, সৈনিকতা ও সামরিকতা থেকে তাকে কোনভাবেই বিচ্ছিন্ন ভাবা যাবে না।

কিন্তু আমি যতটুকু মাও জে দংকে বুঝেছি, তার কাছে সেটাও যথেষ্ট নয়। বিপ্লব হচ্ছে এমন একটা ব্যাপার যার প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রক্রিয়ার মধ্যে ‘নতুন মানুষ’ গড়ার বিষয়টিই হতে হবে মুখ্য। এ ধারণাও নতুন। পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেসব খাদক ও ভোক্তা তৈরি করে সেই মানুষদের নিয়ে তো আর সমাজতন্ত্র হবে না। তাদের বদলাবার পথ কি? গণলাইনের প্রয়োজনীয়তা এ কারণেও বোঝা যায়। বিপ্লবী গণলাইন হচ্ছে নতুন মানুষ গড়ার প্রক্রিয়াও বটে। নতুন মানুষ গড়া। খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। মাও জে দং নতুন বৈপ্লবিক ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।

এ ধারণা থেকে দেখলে আমরা বুঝব, ক্ষমতাসীন শাসক ও শোষক শ্রেণীকে বিপ্লবী কায়দায় উৎখাত করে সেখানে শ্রমিক শ্রেণীর ক্ষমতারোহণ বিপ্লবী প্রক্রিয়ার একটি মুহূর্ত মাত্র। জনগণ সচেতন হয়ে উঠলে শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান, নতুন সংবিধান সভা আহবান, নতুন ধরনের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সংবিধান প্রণয়ন ইত্যাদি ব্যাপার তো থাকবেই। ঘটবেও বটে। কিন্তু মাও জে দং শেখালেন বৈপ্লবিক কায়দায় ক্ষমতাসীনদের উৎখাত করা ও গণমানুষের ক্ষমতা দখলকে দেখতে হবে দীর্ঘস্থায়ী বিপ্লবী প্রক্রিয়ার মুহূর্ত হিসেবে বিপ্লবের শেষ লক্ষ্যবস্ত্ত শুধু রাজনৈতিক ‘বিপ্লব’ নয়। হতে পারে না। এ প্রক্রিয়া নিরন্তর। এমনকি যারা বিপ্লব সংগঠিত করেছে তাদেরও ক্রমাগত নিজেদের ভেতরে বিপ্লবী চেতনা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সংগ্রাম চালাতে হবে। সে ক্ষেত্রে ‘পার্টি’ নয়, বরং জনগণই বিপ্লবী প্রক্রিয়ার মূল ক্ষেত্র। জনগণের মধ্যে থাকা এবং জনগণ থেকে শিক্ষা লাভ করা মাওবাদী রাজনীতির খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক। পার্টিকে কোনভাবেই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে সামরিক লাইন চর্চার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা- জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া নয়। লেনিন পার্টিকে জনগণের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন বলে যে সমালোচনা আমরা শুনি, মাও জে দংয়ের বিরুদ্ধে সমালোচনা হলো তিনি জনগণকে পার্টির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে তোলাকেও বৈপ্লবিক প্রক্রিয়া অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে দরকারি মনে করেছিলেন। এই সমালোচনাগুলো কতটুকু সঠিক তা বিচার করার অবসর আমরা এখানে পাব না। তবে বিপ্লব বলতে আমরা যদি একটি রাজনৈতিক ঘটনা মাত্র বুঝি এবং বিপ্লবের ফল বলতে শ্রমিক শ্রেণীর পার্টিকে ক্ষমতায় যাওয়া বুঝি তাহলে মাও জে দংকে অনুধাবন বা মাওবাদ বোঝা কোনটাই সহজ হবে বলে মনে হয় না। বিপ্লবী রাজনীতিতে মাও জং দয়ের অন্যান্য অসামান্য অবদান ছাড়িয়ে একালে যে কয়েকটি দিক ক্রমাগত উজ্জ্বল হয়ে উঠছে তার মধ্যে রয়েছে এক. গণলাইনের রাজনৈতিক দার্শনিক ও সামরিক তাৎপর্য এবং দুই. বিপ্লবী প্রক্রিয়ার চর্চার মধ্য দিয়ে ‘নতুন মানুষ’ তৈরি করা।

বিপ্লবী রাজনীতির সঠিকতা বিচারের জন্য সব সময়ই ‘গণলাইন’ অনুসরণের তাগিদ এবং বিদ্যমান ব্যবস্থাকে বৈষয়িকভাবে বদলানো বা রূপান্তরের সঙ্গে একই নিঃশ্বাসে ‘নতুন মানুষ’ তৈরি বা মানুষের রূপান্তর ঘটাবার কর্তব্য নির্ধারণ খুবই জরুরি ধারণা। বিপ্লবী রাজনীতিতে ‘নতুন মানুষ’ তৈরির ব্যাপারটি মাও জে দংয়ের নতুন সংযোজন। শোষক ও শাসক শ্রেণীর ক্রমাগত হামলার মুখে নিরন্তর যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পরেও যে কারণে মাওবাদ বারবারই ভস্ম থেকে ডানা ছড়িয়ে আবার আকাশে উদিত হয়, তার অন্যতম কারণ ‘গণলাইন’। পরিস্থিতি ভেদে বহু মাওবাদী দল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ধারণাটি একদিকে গভীর দার্শনিক তাৎপর্যে সমৃদ্ধ অথচ অতিশয় সহজ ও সরল। বিপ্লব করতে হলে মানুষের মধ্যে যেতে হবে, তাদের বাস্তব জগৎ ও মনোজগতে বাস করার মধ্য দিয়েই তাদের বিপ্লবী পথে অনুপ্রাণিত করতে হবে। আর এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক ও সামরিক লাইন নির্ণয়ের – ‘নতুন মানুষ’ গড়ে তুলবার শর্ত।

নেপালে মাওবাদের যে শক্তি আমরা দেখছি তার মাত্রা মাও জে দংয়ের গণলাইন অনুসরণের মাত্রা দিয়ে অতি অনায়াসেই বিচার করা সম্ভব। আজ ভারতের শাসক শ্রেণী বলছে, মাওবাদীরাই ভারতের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি। ঠিক। শুধু ভারতে নয় – পুরো দক্ষিণ এশিয়ায়। অরুন্ধতী রায় সম্প্রতি মাওবাদীদের সঙ্গে কয়েক দিন থেকেছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, ভারতে মাওবাদ মানে আদিবাসীদের লড়াই, কিংবা আদিবাসীদের লড়াই মানে মাওবাদ। গণলাইন কথাটিরই একটি কংক্রিট ব্যাখ্যা তার এ ব্যাখ্যায় ফুটে উঠেছে। আদিবাসী, নীচু বর্ণের মানুষ, নারী বা নিপীড়িত জনগণের চেতনার সঙ্গে একাত্ম হয়ে তাদের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য লড়াইয়ের নীতি ও কৌশল অনুসরণ করার ফলে মাওবাদকে অরুন্ধতী রায়ের কাছে আদিবাসীদের ন্যায্য লড়াই বলেই প্রতিভাত হয়েছে। সামরিক লাইন সম্পর্কে তার মন্তব্য ছিল কাকে শান্তি আর কাকে সহিংসতা বলব সেই সীমারেখা নির্ণয় করা কঠিন। যেখানে পুরো ব্যবস্থাটাই সহিংসতার ওপর দাঁড়ানো সেখানে ‘শান্তি’র কথা বলা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও দুনিয়াব্যাপী সহিংসতাকেই সমর্থন করা নয় কি? রাষ্ট্র নিজেই যেখানে জঙ্গি এবং দুনিয়াব্যাপী যেখানে অনন্ত যুদ্ধ বা ‘জঙ্গ’-এর কথাই সারাক্ষণ বলা হচ্ছে – সেখানে নিপীড়িতদের বিদ্রোহকে জঙ্গিবাদ বলা খোদ জঙ্গিবাদের পক্ষেই অবস্থান নেওয়া হয়ে যায়।

অরুন্ধতী আগে ভাবতেন যুদ্ধ নারীর জন্য নীপিড়নমূলক। কিন্তু মাওবাদীদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে তিনি বুঝলেন, বিপ্লবী যুদ্ধ নারীকে বরং নতুন মুক্তির স্বাদ দেয়। বিপ্লবী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই নতুন মানুষ তৈরির প্রক্রিয়ার কথাই তো অরুন্ধতীর বয়ানে শুনলাম।

গণলাইন ও নতুন মানুষ তৈরির প্রক্রিয়া – মে দিবসে এ দুটো ধারণা যদি ধরতে পারি তাহলে শ্রমিক শ্রেণী বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবে। নিশ্চয়ই। আমরাও।

১৪ বৈশাখ ১৪১৬। ২৭ এপ্রিল ২০১০। শ্যামলী


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।