পুনর্মুদ্রণ: ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চের যাত্রী
তাঁর পথরেখা
গোখরোর মধ্যে একপ্রজাতির সাপ আছে, যখন কোন সংকটের মুখে পড়ে, একেবারে ল্যাজের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ায়। আমি মনে করি, ফারাক্কা আমাদের জাতীয় জীবনে এমন একটা সংকট, যা মোকাবেলার প্রশ্নে গোটা জাতির সমগ্র জনগোষ্ঠীর শিরদাঁড়ার উপর সোজা দাঁড়াবার কথা। ফারাক্কার ক্ষয়ক্ষতি কতো সে প্রসঙ্গে কিছু বলে লাভ নেই। ফারাক্কার-কারবালা যে দেশটি তৈরি করেছে, সে দেশের অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিল্পী-সাহিত্যিক, এমনকি অঞ্চল বিশেষের রাজনীতিকও ফারাক্কার বিধ্বংসী প্রতিক্রিয়ার কথা বলছেন।
এতবড় একটা সংকটের মুখে আমাদের জাতি কেমন করে গত তিরিশ বছর সময় চুপ করে আছে, সেটাই আশ্চার্য্যের। যে দেশটি লক্ষলক্ষ সন্তানের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে, সে একই দেশের জনগণ বিনা প্রতিবাদে এই ফারাক্কার মতো একটা ঘটনার মুখোমুখি দাঁড়িয়েও এই মানবসৃষ্ট প্রবল অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্রনির্ঘোষে ফেটে পড়তে পারছে না--সেটাই হচ্ছে একটা আশ্চর্যের বিষয়।
ফারাক্কাকে নিয়ে হৈ চৈ, বড় একটা কম হয় নাই। সেই ২০ বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে ৪১ দিন ব্যাপী ফিডার ক্যানেল দিয়ে পানি চালানোর যে সিদ্ধান্ত ভারত গ্রহণ করলো এবং আমরা করতে দিলাম, তার মেয়াদ এখনও ফুরলো না। কবে ফুরাবে, কেউ জানে না। আমার মনে হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর পক্ষে যদি সম্ভব হতো, তারা ফারাক্কা প্রশ্ন সম্পূর্ণভাবে ধামাচাপা দিয়ে যেতেন। কিন্তু এটা সম্ভব হচ্ছে না। দেশের অর্ধাংশের জীবন-মরণ ফারাক্কার সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আমি মনে করি, যতদিন ফারাক্কার একটা সম্মানজনক মীমাংসা না-সম্ভব হচ্ছে, আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতের সুস্থ এবং স্বাভাবিক সম্পর্ক ততদিন সম্ভব নয়। কারণ ভারত ঠান্ডা মাথায় যে কাজটি করে যাচ্ছে, তা হিরোশিমা ও নাগাসাকির উপর আনবিক বোমা বর্ষণের চাইতে কম নিষ্ঠুর কর্ম নয়। তার প্রলয়ঙ্করী প্রতিক্রিয়াসমূহ একসঙ্গে চোখের সামনে দেখতে পারছি না বলে আমাদের জাতির অধিকাংশ মানুষ চোখ বুঁজে এই জুলুম সহ্য করে যাচ্ছি।
আমাদের দেশের শিক্ষিত ও কৃতবিদ্য লোকদের অধিকাংশের মনের মধ্যে একটি চিন্তা কাজ করা বিচিত্র নয়, ভারত বৃহৎ দেশ, তার সামরিক শক্তি অপরিমেয়, শিল্পবিজ্ঞানে অনেকদূর অগ্রসর--সুতরাং এ শক্তিধর প্রতিবেশীকে ঘাঁটানো উচিত হবে না। তাদের প্রয়োজন পূরণের পর যতটুকু পানি ছড়ে, ততটুকুতেই আমাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিত। আর একেবারে ৫৪ টি নদীর পানিই যদি ভারত বন্ধ করে দেয়, আমরা দুর্বল দেশ-আমাদের কী করার আছে! আমরা হৈ চৈ চেল্লাফাল্লা করতে পারি, কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বৃহৎ শক্তিশালী দেশ--ভারতের বৈরী অবস্থান গ্রহণ করে, কে আমাদের সাহায্য করতে ছুটে আসবে! এটাও একটা যুক্তি, তবে পরাজিত ও মৃত মানুষের যুক্তি।
আমরা যদি ভারতের একটি রাজ্য হতাম, ভারত কস্মিনকালেও আমাদের দেশটিকে মরুভূমি করার এমন এক সর্বনাশা দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারতো না। কাবেরী নদীর পানির হিস্যার দাবিতে এইতো সেদিন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা ১৫ দিনব্যাপী অনশন ধর্মঘট পালন করলেন। আমরা যদি ভারতের ভেতরের একটা রাজ্য হতাম, আজ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, তিনি যে দলেরই হোন না কেন, তাঁকে এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো। ভাগ্য ভালো, তারা বেঁচে গেছেন।
তারা দায়িত্ব ফাঁকি দেবার একটা অছিলা পেয়ে গেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, আমার কাজতো আমি করেছি, বিষয়টি জাতিসংঘ অব্দি টেনে নিয়ে গেছি, বিশ্বের রাষ্ট্র প্রধানদের জানিয়েছি। একটি ক্ষুদ্র দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এর বেশি আমি আর কী করতে পারি। আমার দলতো শুরু থেকেই ভারতের এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার প্রতিবাদ করে আসছে। সুতরাং, আমার এই সৎকর্মের জন্য আগামী নির্বাচনেও আপনারা আমার দলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আমি যতদিন বেঁচে আছি, পানির দাবি ছাড়বো না। জনগণ পানি পাবে--যদি কপালে থাকে!
............................
মওলানা ভাসানীর হাতে কোনো রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছিল না। তিনি একজন সাধারণ মানুষ হিশাবে সাধারণ মানুষকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, শিশুর যেমন মায়ের দুধে অধিকার, পানির উপর তোমাদেরও তেমনি দাবি রয়েছে। তোমরা জাগ্রত হও-উত্থিত হও-তোমাদের দাবি থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা কারো নেই। আলো, বাতাস, জল, মাটি এগুলি মানুষের প্রকৃতিদত্ত এজমালি সম্পদ, সকলে মিলে মিশে ভোগ করা যায়, কিন্তু কেউ কাউকে বঞ্চিত করতে পারে না। ভারত তোমাদের সেই প্রকৃতিদত্ত শাশ্বত অধিকার হরণ করেছে, সুতরাং, ভারত ও তার শাসকেরা অপরাধী। বিশ্ববিবেক এক সময়ে না একসময়ে তোমাদের ডাকে সাড়া দেবে।
.........................
বাস্তবেও আমাদের সরকারগুলো ফারাক্কা প্রশ্নে এই ধরি মাছ না ছুঁই পানি জাতীয় একটা নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছে। ৮০-এর দশকে মরহুম জিয়াউর রহমান যখন ফারাক্কা প্রশ্ন জাতিসংঘে উত্থাপন করলেন সে সময়টার কথাও উল্লেখ করতে চাই। তিনি জাতিসংঘে ফারাক্কার প্রশ্ন উত্থাপন করে পৃথিবীর মানুষের সামনে ফারাক্কার ভয়াবহতার কথা শুধু জানালেন, বেশি কিছু করতে পারলেন না। তারপর এরশাদ রাজত্বের সময়, ফারাক্কার প্রশ্নে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার চালানো হয়েছে, এখানে ভারত বিরোধী মনোভাব তৈরি করে নিজের সরকারের আখের গোছাতে তৎপর ছিলেন এঁরা। কিন্তু ফারাক্কার পানির দাবি একচুলও সামনে ঠেলে নিয়ে যেতে পারেননি। বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৩ সনে জাতিসংঘে আবার ফারাক্কার দাবি উত্থাপন করে আমাদের পানি পাবার পথ প্রশস্ত করতে পেরেছেন, একথা আমি বিশ্বাস করি না।
প্রধানমন্ত্রীর চাইতে বিরোধীদলীয় নেত্রী ফারাক্কা প্রশ্নে যে কথা বলছেন, সেগুলো আরও মজার। শেখ হাসিনা বলছেন, ভারত থেকে যদি পানি আনতে হয়, অত হৈ চৈ, তর্জন-গর্জন করে কোনো লাভ হবে না। তুমি যতই চিৎকার করবে, ভারত তত কঠিন মনোভাব গ্রহণ করবে। ভারত যদি না চায় আমরা কোনোদিন পানি পাবো না। আমাদের প্রথম কাজ হবে ভারতকে সস্তুষ্ট রাখা। আমার দল ক্ষমতায় গেলে ভারতকে সন্তুষ্ট করে এত পানি নিয়ে আসবো উত্তরবঙ্গ, যেখানে মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে ছোটখাটো একটা বঙ্গোপসাগর সৃষ্টি করতে পারি। বিরোধী দলীয় নেত্রীর এতো সুন্দর মনোবাসনা, একে হাস্যকর বলবো সে ক্ষমতা আমার কোথায়। সবিনয়ে তাঁকে ভেবে দেখতে বলতে পারি, মাননীয়াসু, ভারতের বর্তমান শাসক কিংবা আগামীতে যারা শাসক হবে, তাদের কাছে আপনি কী কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার চাইতেও অধিক দাবি আব্দার খাটাতে পারেন? জয়ললিতা অনশন ধর্মঘট করেছিলেন, তাঁর মেদ কমেছে, এটা নগদ লাভ। পানি পাওয়া যাওয়া নাই। আপনি কোন যুক্তিতে বলেন, ভারতকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে পানি নিয়ে আনতে পারবেন। আপনার মরহুম আব্বা-জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমান বেঁচে থাকলে, আমি বিশ্বাস করি, এতদিনে তিনি পানির দাবিতে ভারতের বিরুদ্ধে একটা আস্ত যুদ্ধই ঘোষণা করে দিতেন।
মোটকথা সরকারী দল এবং সঙ্গে বিরোধী দল যে দৃষ্টিকোণ থেকে ফারাক্কার বিষয়টি দেখছেন, তার সঙ্গে ভারতের পানি প্রত্যাহার প্রশ্নটিও তারা মিলিয়ে দেখছেন। অর্থাৎ তারা যে প্রশ্নটি প্রমাণ করতে চাইছেন, তাহলো গঙ্গার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার আছে। ভারত যদি সে অধিকার স্বীকার করে না নেয়, তাহলে আমাদের পানি পাবার কোনো পথ খোলা থাকে না। কোনো দুর্বল দেশ প্রবল দেশের বিরুদ্ধে নৈতিক দাবি উত্থাপন করে কখন জয়যুক্ত হতে পেরেছে!
আমি বিষয়টি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে উত্থাপন করতে চাই। সেটা হলো আমদের দেশ এবং আমাদের জনগণের নৈতিক অধিকারের দিক। ভারতবর্ষ যে কারণে তার নিজস্ব সীমানার ভেতর একটি রাজ্যের পানির অধিকার হরণ করতে পারে না, সে একই যুক্তিতে বাংলাদেশের পানি আটক করে রাখার অধিকার তার থাকা উচিত নয়। প্রশ্নটি নৈতিক ও মানবিক। তারপরও ভারত পানি আটক করে আমাদের জনগণের নরক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে--এটা একটা অপরাধ। আমাদের জনগণের দৃষ্টিতে ভারত একটি অপরাধী দেশ। এই জনগণ ভারতীয় জনগণের কোনো ক্ষতি করেনি। তথাপি ভারতীয় শাসকেরা এখানে একটি মরুভূমি সৃষ্টি করছে। অনেক নদনদীর গতিপথ রুদ্ধ করেছে। গাছপালা এবং প্রাণীকুলের টিকে থাকার বিপক্ষে অসহ্য পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। নদনদীর লবণাক্ততা বৃদ্ধি করেছে এবং বাংলাদেশের সকল অঞ্চলে পছন্দমতো স্থানে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বন্যা সৃষ্টির কৃৎকৌশল করায়ত্ব করে চুপ করে বসে আছে। আমাদের জনগণ কোনো কারণে ভারতীয় শাসকদের মর্জি মোতাবেক চলতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে, ভারত পারমাণবি মারণাস্ত্রের চাইতে মারত্মক এ অস্ত্রগুলো প্রয়োগ করে আমাদের উত্থান শক্তি চিরতরে রহিত করে দেবে।
এখন আমাদের সরকারী দল এবং বিরোধীদলের ফারাক্কানীতির বিষয়ে আসতে চাই। ফারাক্কা ইস্যুর ভয়াবহতা নিয়ে বলার কিছু নাই--সকলেই জানেন। সরকারী দল ও বিরোদী দল ফারাক্কা প্রশ্নে আমাদের জনগণের কাছে ও বিদেশে যে সমস্ত বক্তব্য রাখছেন, তার মধ্যে তীব্রতা-গভীরতা, জনগণের হাহাকার, কষ্ট, দুঃখ, বেদনার প্রতিফলন ঘটেছে কী--এটাই আমার প্রশ্ন। এ পর্যন্ত ফারাক্কাকে তারা পাতানো খেলা হিশাবে চালিয়ে আসছে। শেখ মুজিব সপরিবারে নিহত হবার পর থেকে প্রতিষ্ঠিত সবকয়টি সরকারই বলেছে, ফারাক্কা প্রশ্নে ভাতের বিরোধীতা করছি, সেজন্য আমাদের ভোট দাও। জনগণ সমর্থন করুক বা না করুক সেজন্য তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে কোনো বাধা হয় নাই। কিন্তু ফারাক্কার লড়াইটা করার জন্য না প্রশানিক স্তরে, না জনগণের স্তরে এমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় নাই, যাতে করে গোটা জাতি এককাট্টা হয়ে একশরীরের মতো ভারতীয় চক্রান্তের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে পারতো। স্বাধীনতার জন্য জাতি একবার যুদ্ধ করেছে। স্বাধীনতা হচ্ছে মানুষের মানুষী অস্তিত্বের স্বীকৃতি। কিন্তু ফারাক্কা চালু থাকলে জৈবিকভাবে আমাদের জাতির অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। একটা নিরীহ কুকুর, একটা বেড়ালকে আক্রমণ করলেও সে প্রাণীটি আত্মরক্ষার তাগিদে ফুঁসে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশের ১২ কোটি মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফারাক্কার চিতায় সর্বাংশে দগ্ধ হবার ছবিটি দেখছে। মুক্তিযুদ্ধের মতো আরেকটি যুদ্ধ করে পানির উপর তাদের হিস্যার দাবি প্রতিষ্ঠিত করার কথা চিন্তাও করতে পারছে না। এর প্রধান কারণ এই নয় যে, আমাদের জাতি লড়াকু নয়, লড়াই করার স্পৃহা ও স্পর্ধা আমাদের জনগণের নেই। নেতিবাচক রাজনীতিই আমাদের জনগণের মন থেকে স্বাভাবিক অধিকারবোধটুকু হরণ করে নিয়েছে। যাদের ফসল নষ্ট হচ্ছে, যাদের জমিতে খরা আক্রমণ হচ্ছে, যে জমিতে লবণাক্ততা ঢুকছে, যে মাঝি জীবিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যে চাষী ঘরে ফসল তুলতে পারছে না, যে জেলে নিরুপায় বুকে হাত দিয়ে বসে আছে, ভারতীয় জলজল্লাদদের বিরুদ্ধে লড়াই করার ডাক দিলে, একবার নয় বারবার এ জনগণ ছুটে আসবে। ১৯৭৬ সালে এ জাতির পিতামহ বিশ্বপ্রতীম প্রাণপুরুষ মওলানা ভাসানী ডাক দিয়ে এ সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন।
মওলানা ভাসানীর হাতে কোনো রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছিল না। তিনি একজন সাধারণ মানুষ হিশাবে সাধারণ মানুষকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, শিশুর যেমন মায়ের দুধে অধিকার, পানির উপর তোমাদেরও তেমনি দাবি রয়েছে। তোমরা জাগ্রত হও-উত্থিত হও-তোমাদের দাবি থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা কারো নেই। আলো, বাতাস, জল, মাটি এগুলি মানুষের প্রকৃতিদত্ত এজমালি সম্পদ, সকলে মিলে মিশে ভোগ করা যায়, কিন্তু কেউ কাউকে বঞ্চিত করতে পারে না। ভারত তোমাদের সেই প্রকৃতিদত্ত শাশ্বত অধিকার হরণ করেছে, সুতরাং, ভারত ও তার শাসকেরা অপরাধী। বিশ্ববিবেক এক সময়ে না একসময়ে তোমাদের ডাকে সাড়া দেবে।
মওলানা ভাসানীর বলিষ্ঠ, ঋজু-মানবতার সেই আহবানকে আবার স্মরণ করি। আবার সালাম করি। আমাদের জাতির উত্থিত হবার শক্তি আছে। জাতির উত্থান শক্তি নষ্ট করে যে নষ্ট রাজনীতি দুষ্টক্ষতের মতো জনগণের শরীরে আশ্রয় করে টিকে থাকতে চেষ্টা করছে তার প্রতি ঘৃণা ও নিন্দা জানিয়ে এই রচনার ইতি টানছি।
১০/০৫/১৯৯৪ ইং
* সাপ্তাহিক ‘রাষ্ট্র’র তৃতীয় বর্ষের তের তম সংখ্যায় ১৯৯৪ সালে মহাত্মা আহমদ ছফা’র এই লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। আজ ১৬ মে চৌত্রিশতম ফারাক্কা দিবসে চিন্তা’র পাঠকের জন্য লেখাটি আমরা আবার তুলে দিলাম। আগের বানানরীতি বদল করা হয় নাই। গ্রন্থনা : শাহাদাৎ তৈয়ব