মন কি তুমি চিরজীবি, মন কি তুমি চিরজীবী
ভেবেছো এই দিন কি এমনি যাবে
দেহ পিঞ্জর (যেদিন) করে ভঙ্গ প্রাণ বিহঙ্গ পালাইবে।।
দশাননের দশা স্মরণ করেছে সেই ত্রেতাকালে
মনীন্দ্র যার জ্ঞাতি তাহার, কতো অশ্ব অশ্বশালে
কত অভয়া দিত অভয় ব্রহ্মা আদি ছিল সহায়
করেছিল ত্রিলোক বিজয় কালে ধ্বংস সবান্ধবে।।
দুর্যোধন দুঃশাসন একশত ভ্রাতা যার
কোথায় বা সেই অভিমন্যু স্বয়ং মাতুল গোবিন্দ যার
কোথা বা সেই পুরু বংশ, সবংশে সে হয়েছে ধ্বংস
কালে ধ্বংস হতেই হবে।।
পিতামাতা ভগ্নিভ্রাতা দারাপুত্র পরিবার
যাবার বেলায় আর কেউ নাই সাথে
সঙ্গে কেউ আর নাই তোমার
পড়বি যমের কুশাসনে, পড়বি যমের কুতাড়নে
সেদিন এই গোবিন্দ বিনে কে তোরে আর ত্বরাইবে।।
গোঁসাই মোহন বলে ব্রজনাথরে ভবে গুরুর ভক্তই ধন্য
মনুষ্য গণ সার পদার্থ দেবলোক যারে করে মান্য
মলে গুরু শিষ্যের একই আত্মা, তাই হয়ে যায় পরমাত্মা
তোমার আমার একই কর্তা, তুমিই আমায় পারে লবে।।
গুরু পদে ডুবে থাকরে আমার মন
গুরু পদে না ডুবিলে জন্ম যাবে অকারন।।
গুরু শিষ্য এমনি ধারা
চাঁদের কোলে থাকে তারা
আয়নাতে লাগায়ে পারা
দেখে ত্রিভূবন।।
শিষ্য যদি হয় কায়েমি
কর্নে দেয় তার মন্ত্র খানি
নিজ নামে হয় চক্ষুদানী
নইলে অন্ধ দুই নয়ন।।
ঐ দেখা যায় আনকা নহর
অচিন মানুষ অচিন শহর
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর
জনম গেল অকারন।।
(আরো পড়ূন)
গুরুবস্তু চিনে নে না[১]
অপারের কাণ্ডারি গুরু
গুরু বিনে কূল কেউ পাবে না।।
হেলায় হেলায় দিন গেলো
মহাকালে ঘিরে এলো
আর কখন কি হবে বলো
রংমহলে পড়লে হানা।।
কি কার্য করিবে বলে
এ ভবে আসিয়া ছিলে
কি ছার মায়ায় রইলি ভুলে
সে কথা মনে প’ল না [১]।।
(ঘরে) এখন বহিছে পবন
হতে পারে কিছু সাধন
সিরাজ সাঁই কয় শোন অবোধ লালন
এবার গেলে আর হবে না।।
মুর্শিদের মহৎ গুন নেনা বুঝে
যার কদম বিনে ধরন করম মিছে।।
যতসব কলেমা কালাম
ধুঁড়িলে মেলে তামাম কোরান মিছে
তবে কেন পড়া ফাজেল মুর্শিদ ভজে।।
মুর্শিদ যার আছে নিহার
ধরিতে পারে অধর সেই অনাসে
মুর্শিদ খোদা ভাবলে জুদা পড়বি প্যাঁচে।।
আলাদা বস্তু কী ভেদে
কিবা সেই ভেদ মুর্শিদে জগৎ মাঝে
সিরাজ সাঁই কয়
দেখরে লালন আক্কেল খুঁজে।।
(আরো পড়ূন)
নাম সাধন বিফল বরখজ বিহনে
এখানে সেখানে বরজখ
মূল অন্বেষণ দেখ মনে ।।
বরজখ ঠিক না হয় যদি
ভুলায় তারে শয়তান গিধি
ধরিয়ে রূপ নানাবিধি
চিনবি কি রূপ-প্রমাণে।।
চার ভেঙ্গে দুই হল পাকা
এই দুই বরজখ লেখা
তাতে হল আর এক ধোঁকা
দুই দিক ঠিক রাখা যায় কেমনে।।
নৌকা ঠিক নাই বিনা পাড়ায়
নিরাকারে মন কি দাঁড়ায়
লালন মিছে ঘুরে দাঁড়ায়
অধর ধরতে চায় বরজখ বিনে।।
(আরো পড়ূন)
কে যাবি গৌর প্রেমের ঘাটে,
ধাক্কায় যেন যাসনে চটে ফেটে।।
প্রেম নদীর তুফান ভারি,ধাক্কা লাগে ব্রহ্মপুরী,
কর্মযোগে ধর্ম তারই,কারো বেঁচে ওঠে।।
চতুরলী থাকলে বল,প্রেম বিচ্ছেদে বাধবে কলহ,
হারায়ে শেষে কুলে,কাঁদাকাঁটি পথে ঘাটে।।
আগে দুঃখ পরে সুখ,স’য়ে ব’য়ে যদি কেউ রয়
লালন বলে প্রেম পরশ পায়,সামান্য তা কি ঘাটে।।
(আরো পড়ূন)
বিষামৃতে আছের মাখাজোখা,
কেউ জানে না কেউ শোনেনা
যায়না জীবের দিলে ধোঁকা।।
হিংসা নিন্দা তম গেলে
আলো হয় তার হৃদকমলে,
অধমে উত্তম মিলে
গুরু যারে হয় সখা।।
মায়ের যেমন শিশু ছেলে
দুগ্ধ খায় তার দুগ্ধ মিলে,
আবার সে ধারেতে জোঁক লাগিলে
রক্ত নদী পায় দেখা।।
গাভীর ভাণ্ডে গোরচনা
গাভী তাহার ভেদ জানেনা,
সিরাজ সাঁই কয় লালন কানা
তেমনই তুই একটি বোকা।
জানগা মানুষের করণ কিসে হয়
ভুল না মন বৈদিক ভোলে
অনুরাগের ঘরে বয়।।
ভাটি স্রোত যার বহে উজান
তাইতে কি হয় মানুষের করণ,
পরশন না হলে রে মন
দর্শনে কি হয়।।
টলাটল করণ যাহার
স্পর্শগুণ কৈ মিলে তাহার,
গুরু শিষ্য যুগযুগান্তর
ফাঁকে ফাঁকে রয়।।
লোহা সোনা পরশ স্পর্শে
সেহি করণ তেমনই সে,
লালন বলে হলে দিশে
জঠর জ্বালা যায়।।
(আরো পড়ূন)
মেরাজের কথা সুধাব কারে।আদমতনে নিরাকারে মিললে কি করে,
নবী কি ছাড়ল আদমতন,কিবা আদমতন হল নিরঞ্জন,
কে বলিবে সেই অন্বেষণ,এই অধীনেরে,
নয়নে নয়ন বুকে,উভয় মিলে হইয়ে কৌতুক।।
তবে দেখল না সাঁইয়ের,নবীর নজরে,
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার,বসে জ্ঞান দ্বারা।।
(আরো পড়ূন)
মন তোমার হলনা দিশে,
এবার মনুষের করণ হবে কিসে।।
কখন আসবে যমের চেলা,ভেঙ্গে যাবে ভবের খেলা,
সে দিন হিসাব দিতে বিষম লেঠা,বাধবে শেষে।।
উজান ভেটেন দুটি পথ,ভক্তি মুক্তির করণ সে-ত,
তাতে হয় না জ্বরামৃত যমের ঘর সে।।
যে পরশে পরম হবি,সে করণ আর কবে জানবি,
সিরাজ সাই লালন রৈলি ফাকে বসে।।
(আরো পড়ূন)
তুমি কার আজ কে বা তোমার এ সংসারে,
মিছে মায়ায় মাজিয়ে মন কি করবে।।
এত পীরিত দন্ত জিহৃায়,কায়দা পেলে সেও সাজা দেয়,
সল্পেতে সব জানিতে হয় ভাব নগরে।।
সময়ে সকলে সখা,অসময় কেউ না দেয় দেখা,
যার পাপে সে ঘোরে একা,চার যুগেরে।।
আপনি যখন নয় আপনার,কারে বল আমার আমার,
সিরাজ সাই কয় লালন তোমার,জ্ঞান নাহিরে।।
(আরো পড়ূন)
এমন দিন কি হবেরে আর,
খোদা সেই করে গেল,রাছুল রূপে অবতার।।
আদমের রুহু সেই,কেতাবে শুনিলাম তাই,
নিষ্ঠা যার হলরে ভাই,মানুষ মুরশিদ করিলে সার।।
খোদ ছরাতে পয়দা আদম ,জানা যায় অতি মরম
আকার নাই তার ছুরাত কেমন,লোকে বলে তাও আবার।।
আহাম্মদের নাম লিখিতে,মিম নফি কয় তার কিসেতে,
সিরাজ সাই কয় লালন তা’তে,কিঞ্চিৎ নজির দেখা যায়।।
(আরো পড়ূন)
একি আছমানি চোর ভবের শহর লুঠছে সদায়
আসা যাওয়া কেমন রাহা,কে দেখেছে বল আমায়।।
শহর বেড়ে অগাধ দ’রে,মাঝখানে তার ভাব মন্দিরে,
সে নিগুম যায়গা তার,পবন দ্বারে চৌকী ফেরে।।
এমন ঘরে চোর আসে যায়
এক শহরে চব্বিশ জেলা,ডাক ছাড়ে কামান দু-বেলা
বলিয়ে জয় জয়,ধন্য চোরের এঘাট মারে,রাখেনা কাহার ভয়
মন বুদ্ধির অগোচর চোরা,আজ বল্লে কি পাবি তোরা,
আমার কথায়,লালন বলে ভাবুক হলে,চোরের ধাক্কা লাগে গায়।।
(আরো পড়ূন)
দেল দরিয়ায় ডুবে দেখ না অতি অজান খবর যাবে জানা
আলখানার শহর ভারি,তাহে আজব কারিগরী।।
বোবায় কথা কয়,কালায় শুনতে পায়,
আধেলাতে পরখ করছে সোনা।।
ত্রিবেনীর ঐ পিছল ঘাটে,বিনা হাওয়ায় মৌজা ছোটে,
ডওরায় পানি নাই,ভিটা ডোবে তাই।।
শুনলে কি পাবি এ কারখানা,
কাবার যোগ্য নয় সে কথা,সাগরে ভাসে জগৎ মাতা,
লালন বলে উদরে,পিতা জন্মে,পত্নীর দুগ্ধ খেল না।।
(আরো পড়ূন)
কাশী মক্কায় যাবি চলবে যাই,
দোটানাতে ঘুরলে পথে,সন্ধ্যাবেলা উপায় নাই।।
মক্কাতে ধাক্কা খেয়ে,যেতে চাও কাশী স্থানে,
এমনি মত কাল কাটালে,ঠিক নামালে কোথা ভাই।।
নৈবেদ্য পাকা কলা,দেখে মন ভোলে ভোলা,
শীরনীর বেলা দরগাতলা,তাও দেখে মন খাবলায়।।
চুল পেকে হলে বুড়ো,পেলে না পথের মুড়ো,
লালন বলে সন্ধি জেনে,না পেলে কূল নদী ঠাঁই।।
(আরো পড়ূন)
আমার ঘরের চাবি পরের হাতে,
কেমনে খুলিয়ে সে ধন দেখাব চোখেতে।।
আপন ঘরে বোঝাই সোনা,পরে করে লেনা-দেনা,
আখের হলাম জন্ম কানা,না পাই দেখিতে।।
রাজী হলে দারোয়ানী,দ্বার ছেড়ে দিবেন তিনি,
তারে বা কৈ চিনি শুনি,বেড়াই কুপথে।।
এই মানুষে মানুষ রতন,মানুষের হল না যতন,
লালন বলে পেয়ে ধন,পারলাম না চিনিতে।।
(আরো পড়ূন)
বলিরে মানুষ মানুষ এই জগতে
কি বস্তু কেমন আকার না পাই দেখিতে।।
যে তারে হয়ঘর খান,আগমে আছে রতন,
ঘরের মাঝে কোন জন,হয় তা চিনতে।।
এই মানুষ না যায় চিনা,কি বস্তু কেমন জনা,
নিরাকার নিরঞ্জনা,যাবে চিন্তে।।
মূল মানুষ এই মানুষে,
ছাড়া ছাড়ি কত সে সিরাজ সাঁই কয় লালন বেড়ায়,
বোঝ সত্য অন্তে।।
(আরো পড়ূন)
আজ আমি দেহের কথা বলি শোনরে মন
দেহের উত্তর দিকে আছে বেশি,দক্ষিণেতে আছে কম।।
দেহের তত্ত্ব না জানিলে,খবর পাবি কোনখানে,লাল জরদ ছিয়া ছফেদ,
দেহের বায়ান্ন বাজার এই চারি কোণ।।
আগে খুঁজে ধর তারে,নাসিকাতে চলে ফেরে,
নাভি পদ্মর মূল দুয়ারে,বসে আছে সর্বক্ষণ।।
আঠার মোকামে মানুষ,যে না জানে সেইত বেহুশ,
লালন বলে যে করে হুশ,আদ্য মোকাম তার আসন।।
(আরো পড়ূন)
ঐরূপ তিলে জপ মন সুতে,
ভ্রমে ভুল নারে অন্য ভোলাতে।।
গুরুরূপ যার ধিয়ানে রয়,কি করবে তার শমন রায়,
নেচে-গেয়ে ভব পারে যায়, গুরুর চরণে তরিতে।।
উপর বারি সদরওয়ালা,স্বরূপে করছে খেলা,
স্বরূপ গুরু স্বরূপ চেনা আর কে আছে জগতে।।
সামনে তরঙ্গ ভারি;গুরু বিনে নাই কাণ্ডারী,
লালন বলে ভাসাও তরি যা করে সাই কৃপাতে।।
(আরো পড়ূন)
কার জন্য ঘুরিস ক্ষেপা দেশ-বিদেশে,
আপন ঘর খুঁজলে রতন,পাও আনা’শো।।
দৌড়াদৌড়ী দিল্লী লহোর,আপনার কোলে রয়ঘোর,
নিরূপ আলেক সাই মোর,আত্মা রূপ সে।।
যে লীলা ব্রহ্মান্ডের পর;সেই লীলা ভাণ্ড মাঝার,
ঢাকা যমন চন্দ্রের আকার,মেঘের আশে।।
আপনার আপনি চেনা,সেই বটে উপাসনা,
লালন কয় আলেক বিনা,যার হয় দিশে।।
(আরো পড়ূন)
ধন্য ধন্য বলি তারে,
দেখ যে বেঁধেছে ঘর শূন্যে পোস্তা করে।।
ঘরে মাত্র একটি খুঁটি;তাহার গোড়ায় নাই মাটি,
কিসে ঘন থাকে খাঁটি,ঝড় তুফান হলে পরে।।
আদি মূল কুঠরী নয়টা,তার উপরে চিলেকোঠা,
বসে এক রসিক বেটা একা একেশ্বরে।।
নিচে উপর সারি সারি,সাড়ে নয় দরজা তারই,
লালন কয় যেতে পারি,কোন দরজা খুলে ঘরে।।
(আরো পড়ূন)
পেড়োয় ভূত যে জনা হয়,
মুক্তি তার কোন দেশে,ফয়তা হয়।।
দিল্লীর ভূত সেরে যায় গায়ার দরগায়,
মক্কায় শুনি শয়তান থাকে,ভূত হয় না কি পেড়োর মাঝে,সেও
কথা পাগলে বোঝে,এই দুনিয়ায়।।
মোরদার নামে ফয়তা দিলে,মোরদা কি তা পায় সেখানে,
তবে কেন পিতা পুত্রে,দোজখে যায়,
মরার আগে মনে পরে,আপনার ফয়তা আপনি করে,
তবে অখেঁর হতে পারে,লালন তাই কয়।
(আরো পড়ূন)
জান গা পদ্ম নিরূপণ।
কোথায় জীবের স্থিতি
কোন পদ্মে গুরুর আসন।।
অধোপদ্ম উর্ধ্ব পদ্ম
লীলা নৃত্যের এ সরহদ্দ
যে পদ্মে সাধক বর্ত
সে পদ্ম কেমন বরণ।।
আড়া পদ্মের কুড়া ধরে
ভৃঙ্গরতি চলে ফেরে
সে পদ্ম কোন পদ্ম পরে
বিকশিত হয় কখন।।
গুরু মুখের পদ্ম বাক্য
হৃদয় যার হয়েছে ঐক্য
জানিবে সে সকল পক্ষ
কহে দীনহীন লালন।।
(আরো পড়ূন)
আছেরে ভাবের গোল আছমানে তার মহাজন কোথা,
কে জানে কারে সুধাই সে কথা।।
জমিনে মেওয়া ফলে,আছমানে বরিষণ হলে,
কামনা কোন কালে,তার লতা।।
রবি শশী সৃষ্টির কারণ,সেই গেলরে নেগাবান,দুজনে যে যথা,
ধন্য বলি ধন্য কারবার,দেখলাম না তার বাড়ী ঘর।।
লালন কয় জন্ম আমার,বৃথা।।
(আরো পড়ূন)
হীরা লাল জহরের কুটী
আছে এই দেহে দেখরে মন হয়ে খাঁটি।।
যমন গাভীর ভাণ্ডে গোরচনা,গাভী তা জানে না,
হসনে যেন তেমনি বুনো পশুটি।।
যমন সাপের মাথায় ফাণী,ভেক খায় ধরে তখনি,
মেওয়া ছেড়ে খাসনে মাটি।।
দিয়ে তাই কেড়ে নিতে,দেরী নাই সত্য বটে,
লালন বলে খোজ তার,ছোড়ান কাটি।।
(আরো পড়ূন)
এমন মানব জনম আর হবে না
দিন থাকতে মানুষ রতন চিনে নেনা।।
দেবের দুর্লভ তোরে,মানব সৃষ্টি করেছে রে,
এবার ভুললে কতই ফেরে,শেষে কাঁদলে ছাড়বে।।
চোর আশির মধ্যে যদি,পড় হারে মন বিবাদী,
হারাবি স্বর্ণ নিধি,শেষে পাবি যাতনা।।
সেবা পূজা ভক্তির স্মরণ,মানুষের এরূপ করণ,
লালন বলে পশুর ধরন,শুধু পেট সার কোরোনা।।
(আরো পড়ূন)
সবে বলে লালন ফকির হিন্দু কি যবন,
কি বলিব আমার আমি না জানি সন্ধান।।
একই ঘাটে আসা যাওয়া,এক পাটনী দিচ্ছে খেওয়া,
কেউ খায়না কারো ছোঁয়া,বিভিন্ন জল কেবা পান।।
বেদ পুরানে শুনিতে পাই,হিন্দুর হরি যবনের সাঁই,
তাওত আমি বুঝতে নারি,দুই রূপ সৃষ্টি কি প্রমাণ।।বিবিদের
নাই মুসলমানী,পৈতা যার নাই সেওত বাওনী,
বোঝরে ভাই দিব্য জ্ঞানী,লালন তমনি জাতএক জনা।।
(আরো পড়ূন)
শীরণী খাওয়ার লোভ যার আছে,
সে কি চেনে মানুষ রতন,দরগাতলায় মন মজেছে।।
সাধুর হাটে সে যদি যায়,আট বসেনা কোন কথায়,
মন থাকে তার দড়গাতলায়,তার বুদ্ধি পেচোয় পেয়েছে।।
গড়ার ভাস্করে,মলে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে,
আবার গুরু বলে তারে,এমন পাগল কে দেখেছে।।
মাটির পুতুর দেখে নাচায়,এক বার মারে একবার বাঁচায়,
সাঁই স্কয়ং হতে চায়,লালন বলে তার সকল মিছে।।
(আরো পড়ূন)
মরি হায় এ কি ভাব তিনে এক জোড়া
তিনের বশত ত্রিভুবনে,মিলনের এক গোড়া।।
নর নারায়ণ পশু,জীবাদী,দুয়েতে এক মিলন জোড়া,
তারা কোন যুগের দাঁড়া।।
তিন মহাজন বসে তিন ঘরে,তিনজনার মন বাঁধা আছে,আধা নেহারে,
আধা মানুষ ধরবি যদি,ভোগে দেখি বিধির বেড়া।।
তিন জনা সাত পান্তির উপরে,আধা পান্তি আছে ধরা,জানগে যা তারে,
ফকির লালন বলে সেই ছলে মিলবে সেই পথের দাঁড়া।।
(আরো পড়ূন)
কুদরতের সীমা কে জানে
আপনি আপন জেকের,বসিয়ে আল জবানে।।
আল জবানে খবর হলে,তারই কিছু নজির মেলে,
নইলে ফাকড়া কথা বলে;উড়িয়ে দিবে সবজনে।।
খোদাকে চিনে খোদা চিনি,খোদ খোদ বলেছে আপনি,
মান আরাফা নাফছাহু বাণী,বোঝ তার কি মানে।।
যে বলেরে আমি,সে আমি কি আমিই আমি,
লালন বলে কেবা আমি,আমার আমি চিনিনে।।
(আরো পড়ূন)
আজ করেছে সাঁহ্মাণ্ডে যে রূপ নীলে
নরেকারে ভেসেছিলে,যে রূপ হালে।।
নরেকারের গম্ভু ভারি,আমি কি তা বুঝতে পারি,
তারই কিষ্ণিৎ প্রমাণ শুনি;শুকো ফুলে।।
অধিক জানি,নীরসে সরকারে,
ডিম্বরূপ হয়,তার সৃষ্টি রাছুলে।।
আত্মতত্ত্বে আপনি ফানা,কি করিব পড়াশুনা,
লালন বলে যাবে জানা,আপনারে চিনিলে।।
(আরো পড়ূন)
রোজ কেয়ামত হচ্ছে ভবে বোঝ সবে
খোদা মানুষ দ্বারা সকল করায়,নয়ন কুললে দেখতে পাবে।।
খোদা দলিলে ছেফাত,হিসাব করবে,রোজ যে যমন করিবে,
দিনে দিনে বিচার হচ্ছে,যত দিন সংসার থাকিবে।।
খোদার সংসার যত রয়েছে,বাদশার তাবেদারী লিখে,
আইন করছে আইন বিচার,হচ্ছে আইন যে ভাবে।।
বিচার বেলায়েত জেলখানাতে,হচ্ছে বিচার গাঁয়ে বাড়ীতে,
লালন কহিছে আদি নেকী বদি,সব এইখানেই ফ’লে যাবে।।
(আরো পড়ূন)
মনের ভাব বুঝে নবী মর্ম খুলেছে
কেউ ঢাকা দিল্লি হাতড়ে ফেরে,কেউ দেখে কাছে।।
ছফিনায় সরার কথা,জানইলে যা তথা,
ছিনায় ছিনায় ভেত পুসিদায়,বলিয়া গিয়াছে।।
ছিনা আর ছফিনার মানি,ফাঁকা ফাঁকি দিন রজনী,
কেউ,দেখে মত্ত কেউ,আকাশ ধেয়েছে।।
নবুয়তে নিরাকার ধরি,বেলায়েতে বরজখ ধিয়ায়,
লালন পল পূর্ণ ধোকায়,এ ভব মাঝে।।
(আরো পড়ূন)
কুলের বৌ হলাম ভারি,হলাম নাড়ী নাড়ার সাথে
নাড়ার সাথে হয়ে নাড়ী,পরনে পরেছি ডুরি।।
দিবনা আঁচির কড়ি,বেড়াব চৈতন্য পথে
ভাবের নাড়ী ভাবের নাড়া,কুল মজান জগৎ জোড়া।।
করণ তাহার দৃষ্টি ছাড়া,বিধির ফাঁড়া কাটবে যা’তে
আসতে নাড়া যেতে নাড়া,কেবল দুদিন হুড়া জড়া,
লালন কয় আসলে গোড়া,জেনে হয় মাথা মোড়াতে।
(আরো পড়ূন)
আছে যার মনের মানুষ মনে তোলা
অতি নির্জনে বসে দেখছে খেলা।।
কাছে রয় ডাকে তারে,কেন উচ্চেঃস্বরে কোন পাগলা,
যে যা বোঝে,তাই সে বুঝে থাকরে ভোলা।।
যথা যার ব্যথা সে হাত সেই খানে হতে ডলা মলা,
তেমনি জান মনের মানুষ,মনে তোলা।।
দেখে সে রূপ করিয়া চুপ,থাক নিরালা,
লালন ভেড়োর লোক জানান,মুখে হরি হরি বলা।
(আরো পড়ূন)
কি কালাম পাঠালেন আমার সাঁই দয়াময়
এক এক দেশে এক এক বাণী,কয় খোদা পাঠায়।।
যদি একই খোদার হয় রচনা,তা’তে ভিন্ন থাকে না,
মানুষের সকল রচনা,তাইতে ভিন্ন হয়।।
এক যুগে যা পাঠায় কালাম,অন্য যুগে হয় কেন হারাম,
এমনি দেখি ভিন্ন তামাম, ভিন্ন দেখা।।
এক এক দেশের এক এক বাণী,পাঠান কি সাঁই গুণমনি
মানুষের রচিত জানি,লালন ফকির কয়।।
(আরো পড়ূন)
যদি রূপ নগরে যাবি। অনুরাগের ঘরে মারগা চাবি
শোনরে ও মন তোরে বলি,তুই আমারে ডুবাইলি।।
পরের ধনে লোভ করিলি,সে ধন তুই আর কয়দিন খাবি
নিরঞ্জন সেই নির-নিরাকার,নাইকো রে তার আকার সাকার,বিন।।
বীজে জন্ম গো তাঁর,দেখতে চাইলে দেখতে পাবি
লালন সা ফকিরে বলে,গাছ রয়েছে অগাধ জলে
ফুল ফলে ঢেউ খেলিছে,ঘরে ঢুড়লে জানতে পাবি।।
(আরো পড়ূন)
গুরুর দয়া যারে হয় সেই জানে,
যে রূপে সঁই খেলছে খেলা, এই দেহ ভুবনে।।
শহরে সহস্র পাড়া,তিন গলি তার এক মহড়া,
আলেফ সওয়ার পবন ঘোড়া,ফিরতেছে সেইখানে।।
জলের বিম্ব আলের উপর,অখন্ড প্রলয় মাঝার,
বিন্দুতে হয় সিন্ধু আকার,বয় ধারা ত্রিগুণে।।
হাতের কাছে আলেক শহর,বিরন্দের এর খেলছে নহর,
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর,সদায় ঘোর মন।।
(আরো পড়ূন)
আমি কোন সাধনে পাইগো তারে
মন অহোনিশি চায়গো যারে।।
দান ব্রত স্তব যজ্ঞ যত,তাতে গুরু হয়না রত,
সাধু শাস্ত্রে কয় সদাত,কোনটি জানি সত্য করে।।
পঞ্চপ্রকার মুক্তির বিধি,অষ্টাদশ প্রকারে সিদ্ধি,
এ সকল হেতু ভক্তি,তা’তে বশ নয় সাঁইজী মেরে।।
ঠিক পড়েনা প্রবত্তের ঘর,সাধন সিদ্ধি হয় কি প্রকার,
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার,নজর হয়না কোলের ঘোরে।।
(আরো পড়ূন)
এই মানুষে সেই মানুষ আছে
কত মুনি ঋষি চার যুগ ধরে,বেড়াচ্ছে খুঁজে।।
জলে যমন চাঁদ দেখা যায়,ধরতে গেলে হাতে কে পায়,
আলেক মানুষ তমনি সদায়,আলোগে বসে।।
অচিন দলে বসতি ঘর, দ্বিদল পদ্মে বারাম তাঁর,
দল নিরূপণ হবে যাহার,সে রূপ দেখবে অনাসে।।
আমার হল ভ্রান্ত মন,বাইরে খুজিঁ ঘরের ধন,
সিরাজ সাঁই কয় ঘুরবি লালন আত্ম তত্ত্ব না খুঁজে।।
(আরো পড়ূন)
মন তো আপন বলতে কে আছে,
কার কাঁদায় কাঁদ মিছে।।
থাক সে ভবের ভাই বেরাদার,প্রাণ পাখি সে নয় আপনার,
পরের মায়ায় মজিয়ে এবার প্রাপ্ত ধন হারাই পিছে।। সারানিশি
দেখ মনরায়, নানা পক্ষী এক বৃক্ষে রয়,
যাবার বেলা কে কারে কয়,দেহমন তমনি সে যে যায়।।মিছে
মায়ায় মদ খেওনা, প্রাপ্ত পথ ভুলে যেওনা,
এবার গেলে আর হবেনা,পড়বি কয় যুগের পেচে।।
আসতে একা আলিরে মন,যেতে একা যাবি তমন,
সিরাজ সাঁই বলেরে লালন,কার দুঃখে কাঁদ মিছে।
(আরো পড়ূন)
সে ধন কি পড়লে মেলে?
হরি ভক্তের অধীন কালে কালে।।
ভক্ত বড় পণ্ডিত নয়
প্রমাণ তার প্রহলাদকে কয়,
যারে আপনি কৃষ্ণ গোঁসাই
অগ্নিকুণ্ডে বাঁচাইলে।।
বনের একটা পশু বৈ নয়,
ভক্ত হনুমান তারে কয়,
কৃষ্ণরূপ সে রামরূপ ধরায়
কেবল শুধু ভক্তির বলে।।
অভক্তে সে দেয়না দেখা
কেবল শুধু ভক্তের সখা,
লালন ভেড়োর স্বভাব বাঁকা
অধর চাঁদকে রইল ভুলে।।
(আরো পড়ূন)
থাক না মন একান্ত হয়ে
গুরুগোঁসাইয়ের রাগ লয়ে।।
চাতকের প্রাণ যদি যায়
তবু কি অন্যজল খায়
উর্দ্ধমুখে থাকে সদায়
নবঘন জল চেয়ে
তেমনি মত হলে সাধন
সিদ্ধি হবে এই দেহে।।
এক নিরিখ দেখ ধনী
সূর্যগত কমলিনী,
দিনে বিকশিত তেমনি
নিশীথে মুদিত রহে।
তেমনি জান ভক্ত লক্ষণ
একরূপে বাঁধে হিয়ে।।
বহুবেদ পড়াশুনা
শূন্য সে পায় রে মনা
সদাশিব যোগী সে-না
কিঞ্চৎ ধ্যান করিয়ে
সে শ্মশানে মশানে ফেরে
সেহি কিঞ্চিতের লাগিয়ে।।
গুরু ছেড়ে গৌর ভজে
সে জীব নরকে,মজে,
দেখনা মন পুঁথি-পাঁজি
সত্য কি মিথ্যা কহে
মন তোরে বুঝাব কত
লালন কয় দিন যায় বয়ে।।
(আরো পড়ূন)
সকলি কপালে করে
কপালের নাম গোপাল চন্দ্র
কপালের নাম গুয়ে গবরে।।
যদি থাকে এই কপালে
রত্ন এনে দেয় গোপালে,
কপাল বিমতি হলে
দুর্বাবনে বাঘে মরে।।
কেউ রাজা কেউ ভিখারী
কপালে হয় সবারই
মনের ফেরে বুঝতে নারি
খেটে মরি অনাকারে।।
যার যেমন মনের করুণা
তেমন ফল পেয়েছে সে-না
লালন বলে ভাবলে হয়না
বিধির কলম আর কি ফিরে।
(আরো পড়ূন)
জাননারে মন,বাজী হারলে তখন
লজ্জায় মরণ, শেষে-রে আর কাঁদিলে কি হয়।।
খেলা খেল মন খেলারু,ভাবিয়া শ্রীগুরু,
আবোপথে যেন মারা নাহি যায়।।
এ দেশেতে যত জুয়াচোরের খেলা,
টোটকা দিয়ে ফটকায় ফেলেরে মন ভোলা,
তাই বলি তোমারই,খেলা খেল হুসিয়ারী,
নয়নে নয়নে বাঁধিয়ে সদায়।।
চোরের সঙ্গে মন খাটেনা ধর্ম দাঁড়া,
হাতের অস্ত্র কভু কোরোনা হাত ছাড়া,
অনুরাগের অস্ত্র ধরে,দুষ্ট দমন করে,
স্বদেশে গমন কররে ত্ববায়।।
চুয়ানী বাঁধিয়ে খেলে সেবা জনা,সাধ্য কি তার অঙ্গে দেয়রে হানা,
লালন বলে আমি,তিন তের না জানি,
বাজী সেরে যাওয়া,ভার হলো আমার।।
(আরো পড়ূন)
আগে কপাট মার কামের ঘরে
মানুষ ঝলক দিবে রূপ নিহারে।।
হাওয়া ধর অগ্নি স্থির কর,যা’তে মরিয়ে বাঁচিতে পার,
মরণের আগে মর,দেখে শমন থাক ফিরে।।
বারে বারে করিরে মানা,লীলার দেশে আর যেও না,
রেখো তেজের ঘর তেজিয়ানা,সাধ উর্ধ্ব চাঁদ ধরে।।
জাননা মন পারাহীন দর্পণ,কেমনে রূপ হয় দরশন,
অতি বিনয় করে কয় লালন,থেক হুসারে।।
(আরো পড়ূন)
চাঁদ আছ সেই চাদেঁ ঘেরা
কেমন করে সে চাঁদদেখবি গো তোরা।।
রূপের গাছে চাঁদ ফল ধরেছে তায়,
থেকে থেকে চাঁদে ঝলক দেখা যায়।।
একবার দৃষ্টি করে দেখি,ঠিক থাকে না আঁখি,
রূপের কিরণে চমকে পারা।।
লক্ষ লক্ষ চাঁদ করেছে শোভা,
তাহার মাঝে অধর চাঁদেরই আভা।।
চাঁদের বাজার দেখে চাঁদ ঘুরানী লেগে,
দেখিস দেখিস পাছে হবি জ্ঞান হারা।।
আলেক নামে শহর আজব কুদরতি,
রাতে উদয় বানু দিবসে বাতি।।
যে জন আলোর খবর জানে,দৃষ্টি হয় নয়নে,
লালন বলে সে চাঁদ দেখিছে তারা।।
(আরো পড়ূন)
চাঁদ ধরা ফাঁদ জাননা মন
লেহাজ নাই তোমার নাচানাচি সার
একবারে ঝাঁপ দিয়ে ধরতে চাও গগন
সামর্থ রসে তার গম্ভু পাবে কে
কেবল প্রেম রসের রসিক সে
সে প্রেম কেমন কর নিরূপন
প্রেমের সন্ধি জেনে থাক চেতন
ভক্তি পাত্র আগে কররে নির্ণয়
মুক্তিদাতা এসে যথা বারাম দেয়
নইলে হবে না,প্রেম উপাসনা
মিছে জল বাড়িয়া হবে মরণ।।
মুক্তি আছে নয়নের অজান
ভক্তিপাত্র সিঁড়িদেখ বর্তমান
মুখে দীন দীন বল সিঁড়ি ধরে চল
সিঁড়ি ছাড়লে ফাঁকে পড়বি লালন।।
(শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ১৫ এপ্রিল ২০১৮)
(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৫১)
(আরো পড়ূন)
চাঁদ বলে চাঁদ কাঁদে কেনে
আমার গৌর চাঁদে চাঁদ ঘেরা সেই আবরণে।।
গৌর চাঁদে শ্যাম চাঁদেরই আভা,
কোটি চন্দ্র জিনি তার শোভা।।
রূপে মণির মন হরে আকর্ষণ করে,ক্ষুধা শান্ত হয় প্রেম বরিষণে
গোলকেরই চাঁদ,নদীয়ার চাঁদ সেই পূর্ণ চাঁদ।।
আর কি আছে চাঁদ,বিনা গৌর চাঁদ,
আমার সেই ভাবনা সদায় মনে।।
গৌর চাঁদে ফাঁদ পরিয়াছি গলে,
আবার শুনি আছে পরম চাঁদ বলে।।
থাক সে চাঁদের গুণ,কয় ফকির লালন,
আমার নাই উপায় চাঁদ গ্যর বিনে।।
(আরো পড়ূন)
তারে কি করে ভুলতে পারি আমার এই মনে
যে দিকে ঘুরি সেই দিকে হেরি,ঐ রূপের মাধুরী দুই নয়নে।।
দেবের দেব শিব ভোলা,তার গুরু ঐ চিকন কালা
যে চরনের আশায়,শিব শ্মশানবাসী হয়।।
দেবের দেব শিব পঞ্চাননে,
সাধে কি মজেছে রাধে,ঐ কালার প্রেম ফাদে।।
সে ভাব তোরা কি জানবি,বললে কি পারবি
লালন বলে শ্যামের প্রেমিরা জানে।।
(আরো পড়ূন)
জীব মরে জীব যায় কোন সংসারে
জীবের গতি মুক্তি কে করে।।
রাম নারায়ণ গৌর হরি,ঈশ্বর গণ্য যদি করি,
তারা হলেন গর্ভধারী,জীবের ভার তখন দেয় কারে।।
যাতে তারে ঈশ্বর বলা,বুদ্ধি নাই তার অর্ধ তোলা
ঈশ্বরের কেন জম জালা,তাই ভাবি মনের দ্বারে।।
ত্রিভুবনের মূলাধার সাঁই,জন্ম মৃত্যু তার কিছুই নাই,
লালন বলে জানে সবাই,ঘোর ধাঁধায় ঘোরে।
কারে সুধার রে মর্ম কথা,কে বলবে আমার,
আকার কি নিরাকার,সেই দয়াময়।।
যখন সাঁই নিরাকারে ভেসেছিলে ডিম্ব ভরে,
কি রূপ ছিল তার মাঝারে,শেষে কিরূপ হয়।।
সেতার রূপ ছিল যখন,গহনা রূপ পাক পাঞ্জাতন,
আকার নিরাকার তখন,কি রূপ গণ্য হয়।।
জগতপতি হবে বাহানে বরকতকে মা বনলে কেনে,
তার পতি কি নয় সে জনে,লালন ভাবে তাই।।
(আরো পড়ূন)
ভক্তের দ্বারা বাঁধা আছেন সাঁই,
হিন্দু কি যবন বলে,তাঁর জাতের বিচার নাই।।
শৃদ্ধ ভক্তি মতোয়ারা ভক্ত কবীর জেতে জোলা,
ধরেছে সে ব্রজের কালা,দিয়া সর্বস্ব ধন তায়।।
মুচিরাম সে ভবের পরে ভক্তির বল সেই করে,
ত্রাসে ঘন্টা স্বর্গে বাজে,সাধু শাস্ত্রে শুনতে পাই।।
এক চাঁদে হয় জগতে আলো,এক বীজে সব জন্ম হল,
লালন বলে মিছে কলহ,ভবে শুনতে পাই।।
(আরো পড়ূন)
মানুষ আছে সেই মানুষ মিশে,
যোগীন্যাসী চার যুগ ভরে বেড়াচ্ছে খুঁজে।।
জলে যখন চাঁদ দেখা যায়, ধরতে গেলে হাতে কে পায়,
তমনি আলেক মানুষ আলোগে রয়,আলোকে মিশে।।
অচিন দলে বসতি যার,দেখবে সে আনাসে।।
আমার হল হল বিভ্রান্ত মন,বাইরে খুঁজি ঘরেরই ধন,
সিরাজ সাঁই কয় ওরে লালন,দেখ আত্ম তত্ত্বে বসে।।
(আরো পড়ূন)
পাগল দেওয়ানের কি ধন দিয়া পাই,
আছে কি ধন আমার,সদায় মনে ভাবি তাই।।
দেহ মন ধন দিতে হয়,সেও ধন তাঁরই আমার ত নয়,
আমি মুটে মোট চালাই,ভেবে দেখি।।
আমি বণিক তাও আমার হিসাব নাই,
নাগলা বেটার পাগলা খিজি,নয় সামান্য ধনে রাজি।।
কোন ভাবে কোন ভাব মিশাই,পাগলার ভাব না জেনে,
যদি যাই সামনে, পাগল হয় কি সঙ্গে মাখলে ছাঁই।।
পাগল ভেবে পাগল হলাম,সেই পাগল কৈ সরল হলাম,
আপন পরত ভুলে নাই, অধীন লালন বলে,
আপনার আপনি ভুলে, ঘটে প্রেম পাগলের এমনি বাই।।
(আরো পড়ূন)
পুলসিরাতের কথা কিছু ভাবিও মনে
পার হতে অবশ্যই একদিন হবে সেখানে।।
সে পথ ত্রিভঙ্গ বাঁকা
তাতে হীরা ধার চোখা,
ঈমান আমান হলে পাকা
তরবি সেই দিনে।।
বলব কি সেই পারের দুষ্কর
চক্ষু হবে ঘোর অন্ধকার,
কেউ দেখবেনা কারো আকার
কে যাবে কেমন।।
ফাতেমা নবীর করণ
তাঁর দাওন ভরসা তখন,
এখন মেয়ের দোষ দাও লালন
দেখলে সামনে।।
(আরো পড়ূন)
চিনি হওয়া মজা কি খাওয়া মজা
দেখ দেখি মন কোনটি সোজা
আদি এসব মুক্তি সাধা
তারাও হয়ে রয় যমের প্রজা।।
নির্বান মুক্তি সাধা সেতো
জানা যায় সেও চিনি মত
মুক্তি কি চিনি খাওয়া
চিনিতে চিনি খায়
তাতে কী জানা যায়
সুখদুঃখ বোঝা ৷৷
সমঝে ভবে কর সাধন
যাতে মিলে গুরুর চরণ,
অটল ধ্বজা
সিরাজ সাঁই কয়
অবোধ হলে কি হয়
শোনরে লালন ছাড় জল সেঁচা।।
(আরো পড়ূন)
মন বিবাগী বাগ মানেনারে
যাতে অপমৃত্যু হবে সদায় করে।।
কিসে হবে আমার ভজন সাধন,মন হলনা মনের মতন,
দেখে শিমুল ফুল,সদায় ব্যাকুল,
মনকে বুজাইতে নারি জনম ভরে।।
মনের গুণে কেহ মহাজন হয়,
ঠাকুর হয়ে কেহ নিত্যপূজা খায়, আমার এই মনতে,
আমায় করল হত,দুকূল হারালাম মনে ফেরে।।
মন কি মনাই তারে হাতে পালাম না কিরূপ তার করি সাধনা,
লালন বলে আমি হলাম পাতাল গামী,
কি করিতে এসে গেলাম কি করে।।
(আরো পড়ূন)
নূরের ভেদ বিচার জানা উচিত এবার
নবীজী আর নরিূপ খোদার নূর কি প্রকার।।
নবীর যেন আকার ছিল,তাতে নূর চোয়ায় বল,
কি প্রকার নূর চোয়ায় খোদার।।
আকার বলিতে খোদা,সরাতে নিষেধ সদা,
আকার বিনা নূর চোয়ান,প্রমাণ কি তার।।
জাত এলাহি ছিল সুতে,কি রূপে এল ছেফাতে;
লালন বলে নূর চিনিলে ঘোচে আঁধার।।
(আরো পড়ূন)
মেরে সাঁইর আজব কুদরতি,তা কেউ বুঝতে পারে
আপনি রাজা আপনি প্রজা ভবেতে পরে।।
আহাদ রূপ লুকায় হাদি,আহাম্মদী রূপ ধরে,
এ মর্ম না জেনে বান্দা, জেনে বান্দা, পড়বি ফেরে।।
বাজীকর পুতলা নাচায়,কথা কওয়ায় আপনি তারে,
জীব দেহ সাই চালায় ফেরায়, সেই প্রকারে।।
আপনারে চিনবে যে পড়বে সে ভেদের ঘরে,
লালন কয় না জেনে তাও বেড়াও ঘুরে।।
(আরো পড়ূন)
না দেখলে লেহাজ করে,মুখে পড়লে কি হয়
মনের ঘোরে কেশের আছে পাহাড় লুকায়।।
আহাদ নামেতে দেখি,মিম হরফটি করে নফি,
মিম গেলে সে কি হয় দেখ,পড়ুয়া সবায়।।
আহাদ আর আহাম্মদে,একা এক সে মর্ম যে পায়,
আকার ছেড়ে নিরাকারে ছেজদা কি দেয়।।
জানাতে ভজনা কথা, তাইতে অলিরূপ হয় খোদা,
লালন গেল ঘোলায় পড়ে,দাহারিয়ারই ন্যায়।।
(আরো পড়ূন)
আপন মনের বাঘে যারে খায়
কোন খানে পালালে বাঁচে যায়।।
বন্ধ ছন্দ করিরে এটে,ফস্ করে যায় সকলই কেটে,
অমনি সে গর্জিয়ে উঠে মন পাখীরে হানা দেয়।।
মরার আগে যে মরতে পারে,কোন বাঘে কি করতে পারে,
মরা কিসে আবার মরে,মরিলে সে অমর হয়।।
মরার আগে জীয়ন্তে মরা,গুরু প্রতি মন নঙ্গর করা,
লালন সে পতঙ্গ ধারা,আপনি দেখে মরতে যায়।
(আরো পড়ূন)
ভাবের উদয় যে দিন হবে
এসে হৃদকলে রূপ ঝলক দিবে।।
ভাব শূন্য হইলে হৃদয়, বেদ পড়িলে কি ফল হয়,
ভাবের ভাবি থাকলে সদায়; গুপ্ত ব্যক্ত ভাব সব জানা যাবে।।
শতদল সহস্রদল,একরূপে করছে আলো;
সে রূপে যে নয়ন দিল,মহা কাল শমন তার কি করিবে।।
অদৃষ্ট ভাবনা করা,আঁধার ঘরে সর্প ধরা,
লালন বলে রসিক যারা,ভাবের বাতি জ্বেলে নিত্যধামে যাবে।
(আরো পড়ূন)
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে
লালন বলে জাতের বিচার হলো না জনম ভরে।।
সুন্নত দিলে হয় মুসলমান,নারী লোকের কি হয় বিধান বামন,
চিনি পৈতা প্রমাণ,বামনি চিনি কিসেরে।।
কেউ মালা কেউ তছবি গলে,তাইতে কি জাত ভিন্ন বলে,
আসা কিংবা যাবার কালে,জাতি তখন রয় কারে,
মিছা কেবল জাতের কথা,ঝগড়া করি যথা তথা,
লালন বলে জেতের কথা ডুবাইয়াছি সাধ বাজারে।
(আরো পড়ূন)
কেন মলিরে মন,ঝাঁপ দিয়ে তোর বাবার পুকুরে।।
কামে চিত পাগল পাই তোরে।।
কেনরে মন এমন হলি,যাতে জন্ম তাইতে মলি,
ঘুরতে হবে লক্ষ গলি,হাতে পায় বেড়ী সার করে।।
দীপের আলো দেখেরে মন,উড়ে পড়ে পতঙ্গণগ,
অবশেষে হারায় জীবন,মন আমার তাই করলি হারে।।
সিরাজ সা দরবেশে তাই কয়,শক্তিরূপে ত্রজিগত ময়,
লালন কেবল ঘোরে সদায়,আত্ম তত্ত্ব না সেরে।
(আরো পড়ূন)
সামান্য জ্ঞানেতে মন তাই পারবি রে
বিষজুদা করিয়া সুধা রসিক জনা পান করে।।
কত জনা সুধার আশায়,হাত দিতে যায় ফণীর মাথায়,
বিষের আতোষ লেগে গায়,মরণ দশা ঘটে রে।।
দেখা দেখি মন কি ভাব,সুধা খেয়ে অমর হব,
পার যদি ভালই ভাল,নৈলে লেঠা বাধবে রে।।
অহি মুন্ডে উভয় যদি,হিংসা ছেড়ে হয় পিরিতী,
লালন কয় অমূল্য নিধি,সেধে অমর হয় সে রে।।
(আরো পড়ূন)
কোন দেশে যাবি মনা চল দেখি যাই
কোথায় পীর হও তুমি রে
তীর্থে যাবি সেখানে কি
পাপী নাই রে।।
সঙ্গে শোলজন বাদী সঙ্গে আছে সকল
অহর্নিশি তার করছে রে গোল
যথা যাবি তথায় পাগল
করবে তোরে রে ।।
নারী ছেড়ে জঙ্গলে যায়
স্বপ্ন দোষ কি হয়না তথায়
মনের বাঘে যাহারে খায়
তখন আর কে ঠেকায় রে।।
ভীমের বারো বসে তেরো
তাই তও সদাই শুনে ফের
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোরও
বুদ্ধি নাই রে।।
(আরো পড়ূন)
পাপ ধর্ম যদি পূর্বে লেখা যায়
কর্মের লিখন কাজ করিলে;দোষ গুণ তার কি হয়।।
গুনতে পাই সাধু সংস্কার,পূর্বে যদি না থাকে কার,তার কি আশায়।।
বাদশার আজ্ঞায় দিলে ফাঁদি,ফাসিদার কি হয় গো দোয়ী,জীব
করায় সব নরকবাসী খোদ কি দয়াময়
কর্মের দোষ কি কাজকে দোষাই,
কোন কথাটি গেরো দেই ভাই,
লালন বলে আমার বোধ নাই,বললে কি তাই হয়।
(আরো পড়ূন)
মধুর দেলরিয়ায় ডুবিয়া কর ফকিরী
কর ফকিরী ছাড় ফিকিরী,হবে আখেরী।।
খোদার ত্তত্ত্ব বান্দার দেল যথা, বলেছে কোরানে খোদে খোদে কার্তা,
আজাজিলের পর,হল খাতাদার,মন না ডুবিলি গভিরী।।
জানতে হয় সে দেলের চৌদ্দ ঘর,১৮ মোকাম চারেতে প্রচার,
লা-মোকাম তাহার উপর নিজে আসন সেই পুরী।।
দেল দরিয়ার ডুবারু যে হয়,আলখানার ভেদ সেহি জনিতে পায়,
আলে আজব কল,দ্বিদলে বারাম,
ফকির লালন খোজে বাহিরি।।
(আরো পড়ূন)
চাঁদ বদনে বলে গোসাঁই।। বান্দার এক দমের ভরসা নাই
হিন্দু কি যবনের বালা, পথের পথিক চিনে ধর এই বেলা,
পিছে কাল শমন,ফিরছে সর্বক্ষন,কোন দিন বিপদ ঘটাবে ভাই।।
আমার বিষয় আমার বাড়ী ঘর,
এই বলে দিন বষয় খাবি সে ধন হারাবি, গেল গো আমার,
শেষে কাঁদলে ত ছাড়বে না ভাই।।
নিকটে থাকিতে সেহি ধন, বিষয় চঞ্চলাতে চিনলিনারে,
ফকির লালন কয়, সে ধনকোথায় রয়,
আখের খালি হাতে যায় সবায়।
(আরো পড়ূন)
কোথায় হে দয়াল কাণ্ডারী
এ ভবতরঙ্গে আমার,কিনারায় লাগাও তরী।।
তুমি হও করুণাসিন্ধু,অধম জনার বন্ধু,
দাও হে আমায় পদারবিন্দ, যা’তে তুফান তরীতে পারি।।
পাপী যাদি না তরাবে,অধম তারণ নাম কে লবে,
জীবের দ্বারা ইহাই হবে, নামের ভেরম ভেরম যাবে তোমাই।।
ডুবাও ভাসাও হাতটি তোমার,এ ভবে আর কেউ নাই আমার,
লালন বলে দোহাই তোমার,চরণে ঠাঁই দাও তরি।
(আরো পড়ূন)
করিয়ে বিবির নিহার রাছুল আমার কৈ ভুলেছে রব্বানা
জাত ছেফাতে দোস্তি করে,কেউ কারেও ভুলতে পারেনা।।
খুঁজে তার মর্ম কথা পাবি কোথা,চৌদ্দ নেকা কৈ করেছে,
চৌদ্দ ভুবনের পাত,চৌদ্দ বিবি,করেছে তার দেখ নমুনা।।
ছেফাতে এসে নবী,তিনটি বিবি সু-সন্তানের মা হয়েছে,
আলেফ লাম মিমে দেখনা,
ও দীন কানা,তিনি নবী সল্লো আলা।।
আদার বেপারী হয়ে,জাহাজ লয়ে,সাত সমুদ্রের খবর লেনা,
লালন কয় করে করণ,দেখনা নবী ছৈয়েদেনা।।
(আরো পড়ূন)
মানুষে আছে সেই মানুষ মিশে।।
যোগীন্যাসী চার যুগ ভরে বেড়াচ্ছে খুঁজে।।
জলে যমন চাঁদ দেখা যায়,ধরতে গেলে হাতে কে পায়,
তমনি আলেক মানুষ আলোগে রয়,আলোকে মিশে।।
অচিন দলে বসতি যার, দেখবে সে আনাসে।।
আমার হল হল বিভ্রান্ত মন,বাইরে খুঁজি ঘরেরই ধন,
সিরাজ সাঁই ওরে লালন,দেখ আত্ম তত্ত্বে বসে।
(আরো পড়ূন)
কে বুঝিতে পারে তাহার কুদরতি।।
আপনি ঘুমায় আপনি জাগে,আপনি লোটে সম্পত্তি।।
গগনের চাঁদ গগনে রয় ঘটে পটে হয় জ্যোতির্ময়,
তেমনি খোদা খোদ রূপের রয়,অনন্তরূপ আকৃতি।।
নিরাকার সে বেট,খোদা অনেকে তাই ভাবে সদা,
আহম্মদ কদে কেবা করিল সৃষ্টির স্থিতি।।
আদম কালেব মাঝে,অহোনিশি কে বিরাজে
লালন বলে তাই না বুঝে,আজাজীলের দুর্গতি।
(আরো পড়ূন)
খাকি আদমের ভেদ পশু কি বোঝে।।
আদমের কালেবে খোদা,খোদে বিরাজে।।
আদম শরীরে আমার ভাসয় বলিছে অধর সাঁই নিজে,
নৈলে কি আদমকে ছেজদা ফেরেস্তায় সাজে।।
শুনি আজাজীল খাসতন,খাকে আদম তন গঠন,
গঠেছে সেই আজাজীল,খবিছ আদম তন না ভজে।।
আব আতষ খাক বাদে,ঘর,গঠল জান মালেক মোক্তার,
কোন চিজে,লালন বলে এ ভেদ সব জানে যে সে?
(আরো পড়ূন)
চিনি হওয়া মজা কি খাওয়া মজা,দেখ দেখিমন কোনটা মজা।
সালোক্য সামিপ্য সা সাষ্ট রূপ্য মুক্তি আদি এসব মুক্তি পায়
তারাও হয়ে রয় জমের প্রজা।।
নির্বান মুক্তি সেধে যেত,জানা যায় সে চিনির মত,
মুক্তি হওয়া চিনি,কি খাওয়া চিনি,
কিবারে তাতে যায়,দুখ সুখ বোঝা।।
সমঝে ভবে কর সাধন,যাতে মিলে গুরুর চরণ,
অটল ধ্বজা,সিরাজ সাঁই কয় কারণ,
শোনরে অবোধ লালন ছাড় জল সেচা।
(আরো পড়ূন)
দেখলাম কি কুদরতি ময়।।
বিনা বীজে আজগবী গাছ, চাঁদ ধরেছে তায়।।
নাই সে গাছের আগা গোড়া, শূন্য ভরে আছে খাড়া,
ফুল ধরে তার ফলটি ছাড়া, দেখে ধাঁধা হয়।।
বলব কি সেই গাছের কথা, ফুলে মধু ফলে সুধা,
সৌরভেবে হরে ক্ষুধা দরিদ্রতা যায়।।
জানলে গাছের অর্থ বাণী, চেতনা বটে সেহি ধনি,
গুরু বলে তারে মানি, অধীন লালন কয়।।
(আরো পড়ূন)
দেখনারে মন দিব্য নজরে।।
চার চাঁদ দিচ্ছে ঝলক মণি কোঠার ঘরে।।
হলে সেই চাঁদের সাধন, অধর চাঁদ পায় দরশন,
চাঁদেতে চাদেঁর আসন, রেখেছে ফিকিরে।।
চাঁদে চাঁদ ঢাকা দেওয়া, চাঁদে দেয় চাঁদে খেওয়া,
জমিনেতে ফলছে মেওয়া, চাঁদের সুধা ঝরে।।
নয়ন চাঁদ প্রসন্ন যার, সকল চাঁদ হয়গো নেহার,
লালন বলে বিপদ আমার, গুরু চাঁদ ভুলে রে।।
(আরো পড়ূন)
দেখনারে দিন রজনী কোথা হতে হয়।।
কোন পাকে দিন আসে ঘুরে, কোন পাকে রজনী যায়।।
রাত্রি দিনের খবর নাইরে যার; কিসের একটা উপাসনা তার,
নাম গোয়ালা কাজি ভক্ষণ, ফকিরী তার তেমনি প্রায়।।
কয় দমে দিন চানাচ্ছে বারি, কয় দমে রজনী আখেরী,
আন ঘরের নিকাশ করে, যে জানে সে মহাশয়।।
সামান্য কি যাবে জানা, কারিগরের কি গুণপনা,
লালন বলে তিনটি তারে, অনন্ত রূপ কল খাটায়।।
(আরো পড়ূন)
যে পথে সাঁই চলে ফেরে।।
তার খবর কে করে।।
সে পথে সদায়, বিষয় কাল নাগিনীর ভয়
যদি কেউ আজগৈবী যায়, অমনি উঠে ছোঁ মারে,
পলকভরে বিষ ধেয়ে তার,ওঠে ব্রহ্ম অন্দরে।।
যে জানে উল্টা মন্ত্র, খাটিয়ে সেহিতন্ত্র, গুরুরূপে করে জোর;
বিষ ধরে সাধন করে, তার করণ রিতী সাঁই দরদী, দরশন দিবে তারে।
সেহি যে অধর ধরা, যদি কেহ চাহে তারা,
চৈতন্য শুনিন যারা, গুণ শিখে তাকে ধরে,
সামান্যে কি পারবে যেতে, সেই কো-কাপের ভিতরে।।
ভয় পেয়ে জন্মাবধি, সে পথে, না যায় যদি,
হবেনা সাধন সিদ্ধি, তাও শুনে মন ঝোরে,
লালন বলে যা করে সাঁই, থাকতে হয় সেই পথ ধরে।।
(আরো পড়ূন)
ভজনের নিগূঢ় কথা যাতে আছে
ব্রহ্মার [১] বেদ ছাড়া ভেদ বিধান সে-যে।।
চার বেদে দিক নিরূপণ
অষ্ট বেদে বস্তুর কারণ
রসিক হলে জানে সেজন
আর ঠাঁই মিছে।।
অপরূপ সেই বেদ দেখি
পাঠক তার অষ্ট সখি
ষড়ত্ত্ত্ব অনুরাগী
সে জেনেছে।।
মুক্তিরাগ [২] নাস্তি কর
ভক্তি পদ শিরে ধর
শক্তি সার তন্ত্র পড়
ঘোর যায় ঘুচে।।
সাঁইর ভজন হেতু শূন্য
ঐ বেদে করি গণ্য
লালন কয় ধন্য ধন্য
যে তা খোঁজে।।
[১][২] পাণ্ডুলিপিতে এই শব্দগুলো অস্পষ্ট
শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ৪ এপ্রিল ২০১৮
(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৪৬)
(আরো পড়ূন)আপনার আপনিরে মননা জান ঠিকানা।।
পরের অন্তর কোটি সমুদ্দুর, কিসে যায়রে জানা।।
কেশের আড়েতে যৈছে, পাহাড় লুকায়ে আছে, দরশন হলনা,
হেট নয়ন যার নিকটে তার সিদ্ধি হয় কামনা।।
আত্মা ও পরম ঈশ্বর, গুর রূপে অটল বিহার,
দ্বিদল বারামখানা, শতদল সহস্র দলে, সাঁইর অনন্ত করুণা।।
সিরাজ সাঁই-এরহকের বচন, গুরুপদে ডুবে লালন,
আত্মার ভেদ জানারে না,
জীবআত্মা পরম আত্মা, ভিন্ন ভেদ জেননা।।
(আরো পড়ূন)
কারে আর সুধাই কথা।।
কোন সাধনে পাব তারে,যে আমার জীবন দাতা।।
শুনতে পাই পাপী ধার্মিক সবে ইল্লিন ও সিজ্জিনে রবে,
সেথায় জান সব কয়েদ রবে,অটল প্রাপ্তির কোন ক্ষমতা।।
ইল্লিন সিজ্জিন সুখ দুঃখের ঠাঁই,
কোন খানে রেখেছেন গোসাই।।
হেথায় কেন সুখ দুঃখ পাই,কোথাকার ভোগ কোথা।।
যথাকার পাপ তথায় ভুগি,শিশু কেন হয় গো রোগী,
লালন বলে দেখি,কখন শিশুর গোনা খাতা।।
(আরো পড়ূন)
কি শোভা করেছে সাঁই রংমহলে।।
অজান রূপে দিচ্ছে ঝলক, দেখে নয়ন যায়গো ভুলে।।
লাল জরদ, ছণি, মণি, বলব কি তার রূপ রাখানি,
দেখতে যেমন পরশমণি,দেখে নয়নযায়গো ভুলে।।
জলের মধ্যে কলের কোঠা,সপ্ত তালায় আয়না আটা,
তার ভিতরে রূপের ছটা, মেঘেতে বিজলী খেলে।।
অনুরাগ যার বাঁধা হৃদয়, তারই সে রূপ চোখে উদয়,
লালন বলে শমনের দায়, এড়াইবে অবহেলে।।
(আরো পড়ূন)
কাছের মানুষ ডাকছ কেন শোর করে।।
তুই যেখানে সেও সেখানে, খুঁজে বেড়াও কারেরে।।
বিজলী চটকের ন্যায়, থেকে ঝলক দেয়, রংমহাল ঘরে,
তাঁর পাশাপাশি অহোনিশি, থাকতে দিশে হয় নারে।।
হাতের কাছে যারে পাও, ঢাকা দিল্লী খুঁজতে যাও,
কোন অনুসারে, এমনও কি বুদ্ধিনাশা, তুই হলি সংসারে রে।।
ঘরের মধ্যে ঘরখানা, খোঁজরে মন সেই খানা কে বিরাজ করে,
সিরাজ সাঁই কয়, দেখরে লালন, সে কিরূপ তুই কিরূপ রে।।
(আরো পড়ূন)
মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার।।
সর্ব সাধন সিদ্ধ হয় তার।।
নদী কিংবা বিল বাওড় খাল,
সর্ব স্থানে একই রে জল,
একা মোর সাঁই, ফেরে সর্বদাই,
মানুষের মিশে হয় বেদান্তর।।
নিরাকারে জ্যোতির্ময় যে,
আকার সাকার রূপ ধরে সে,
যে জন দিব্যজ্ঞানী হয়, সেহি জানতে পায়,
কলি যুগে হয় মানুষ অবতার।।
বহু তর্কে দিন বেয়ে যায়,
বিশ্বাসে ধন নিকটে পায়,
সিরাজ সাঁই ডেকে, বলে লালনকে
কুতর্কের দোকান খুলিস নারে আর ।।
(আরো পড়ূন)
নাপাকে পাক হয় কেমনে।।
জন্ম বীজ যার নাপাক কয় মৌলভী গণে।।
কেতাবে খবর জানা যায়, নাপাক জলে জান পয়দা হয়,
ধুলে কি তা পাক করা যায়, আসল নাপাক যেখানে।।
মানুষের বীজে হয়না ঘোড়া, ঘোড়ার বীজে হয়না ভেড়া,
যে বীজ সেই গাছ মূলূক জোড়া, দেখিতে পাই নয়নে।।
ভিতরে লালসের থলি, উপরে জাল ঢালা-ঢালি,
লালন বলে মন মুছল্লি কিসে তোর হয়না মনে।।
(আরো পড়ূন)
আর কি হবে এমন জনম
বসব সাধুর মেলে।।
হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়
ঘিরে নিল কালে।।
মানবদলেরই আশায়
কত দেব দেবতা বাঞ্জিত হয়
হেন জনম দীন- দয়াময়
দিয়েছে কোন ফলে।।
কত কত লক্ষ যোনি
ভ্রমন করেছ তুমি
মানব কুলে মন রে তুমি
এসে কী করিলে।।
ভুলো না রে মন রসনা
সমঝে কর বেচাকেনা
লালন বলে কুল পাবা না
এবার ঠকে গেলে।।
আশাসিন্ধুতীরে বসে আছি সদায়
সাধুর যুগল চরণধুলি
লাগবে কি এই পাপীর গায়।।
ভালোর ভাগী অনেক জনা
মন্দের ভাগী কেউতো হয় না
কেবল সাধু দয়াবান, সবারই সমান
তাইতো দোহাই দেই তোমায়।।
সাধু না লইবে তারে
তুমি জানাও মহিমা, কর পাপ ক্ষমা
এই পাপীর হও সদায়।।
দিনের দিন ফুরায়ে এলো
মহাকালে ঘিরে নিলো
বলে মূঢ় লালন, হীন হয়েছি ভজন
না জানি মোর ভাগ্যে কি হয়।।
(আরো পড়ূন)
আর কি বসবো এমন সাধুর সাধবাজারে
না জানি কোন সময় কি দশা ঘটে আমারে।।
সাধুর বাজারে কি আনন্দময়
অমাবস্যায় পুর্ন-চন্দ্র উদয়
আছে ভক্তির নয়ন যার, সে চাঁদ দৃষ্ট তার
ভব বন্ধন জ্বালা যায় গো দূরে।।
দেবের দুর্লভ পদ সে
সাধু নামটি যাহার শস্ত্রে ভাসে
(আছে) পতিত পাবনী গঙ্গাজননী
সেও তো সাধুর চরন বাঞ্জা করে।।
দাসের দাস তার দাস যোগ্য নয়
কি ভাগ্যেতে এলাম সাধুর সাধ-সভায়
লালন বলে মোর, ভক্তিহীন অন্তর
আবার বুঝি পড়ি কদাচারে।।
(আরো পড়ূন)
পাপীর ভাগ্যে এমন দিন কি আর হবে রে
দেখ দেখ মনরায় হইয়াছে উদয়
কি আনন্দময় এই সাধ বাজারে।।
সাধু গুরুর যে মহিমা
বেদে দিতে নারে সিমা,
হেন পদে যার নিষ্ঠা নাহি হয় তার
না জানি কপালে কি আছেরে।।
সাধুর বাতাসে রে মন
বনে কাষ্ঠ হয়রে চন্দন,
হেন সাধ সভায় এনে মন আমায়
আবার যেন ফেরে ফেলিস না রে।।
যথারে সাধুর বাজার
তথা সাঁইর বারাম নিরন্তর,
লালন বলে মন খোঁজ কী আর ধন
সাধু সঙ্গ রঙ্গে দেশ করো রে।।
সাধুসঙ্গ কর তত্ত্ব জেনে।
সাধন হবে না অনুমানে।।
সাধুসঙ্গ কর রে মন
অনর্থ হবে বিবর্তন
ব্রহ্মজ্ঞান ইন্দ্রিয় দমন
হবে রে সঙ্গগুণে।।
নবদ্বীপে পঞ্চতত্ত্ব
ও তার স্বরূপে রূপ আছে বত্ত্ব
ভজিনে যদি হয় গো সত্য
গুরু ধরে নেও গে জেনে।।
আদ্য যদি সঙ্গ করে কোন ভাগ্যবানে
সেই তো দেখছে লীলা বর্তমানে
সিরাজ সাঁই কয় লালন যাস নে অনুমানে
সেই শ্রীবাস অঙ্গনে।।
(আরো পড়ূন)
কুলের বউ হয়ে মন [১] আর কতদিন থাকবি ঘরে
যাওনা চলে ঘোমটা ফেলে সাধবাজারে।।
কুলের ভয়ে মান হারাবি
কুল নিবি কি সঙ্গে করে
(ও রে) পস্তাবি শ্মশানে যেদিন
ফেলবে তোরে।।
দিসনে আটির কড়ি [২]
নেড়া নেড়ি হও যে রে
তুই থাকবি ভাল পরকাল
যাবে দূরে।।
কুলের গৌরব যার হয়
গুরু সদয় হয় না তারে
লালন বেড়ায় কুলের চড়ায়
কুলের ফেরে।। [৩]
(আরো পড়ূন)
মনের হল মতি মন্দ।।
তাইতো রইলাম আমি জন্ম অন্ধ।।
ভব রঙ্গে থাকি মজে
ভাব দাঁড়ায় না হৃদয় মাঝে
গুরুর দয়া হবে কিসে
দেখে ভক্তিহীন পশুর ছন্দ।।
ত্যজিয়ে রে সুধা রতন[১]
গরল খেয়ে ঘটায় মরন,
(আমি) মানিনে সাধু গুরুর বচন,
মূল হারাইয়ে শেষ হইরে ধন্দ।।
বালক বৃন্ধ সকলে কয়,
সাধু চিত্ত আনন্দময়,
লালন বলে আমার সদায়,
যায় না মনের নিরানন্দ।।
(আরো পড়ূন)
মনেরে বোঝাব কত
যে পথে মরন ফাঁসী
সেই পথে মন সদায় রত।।
যে জল লবন জন্মায়
সেই জলেই লবন গলে যায়
তেমনি আমার মন মনরায়
একা একা হচ্ছে হত।।
চারের লোভে মৎস্য গিয়ে
চারেতে পড়ে ঝাপিয়ে
অমনি আমার মন ভেয়ে
মরন ফাঁসী নিচ্ছে সে ত ।।
সিরাজ সাঁই দরবেশের বাণী
বুঝবি লালন দিনই দিনই
ভক্তিহারা ভাবুক যিনি
সেকি পানে গুরু পদ।।
সমুদ্রের কিনারে থেকে জল বিনে চাতকী মলো
ওরে বিধি হারে বিধি
তোর মনে কি ইহাই ছিল।।
নবঘন বিনে বারি
খায় না চাতক অন্য বারি
চাতকের প্রতিজ্ঞা ভারি
যায় যাবে প্রান সেও ভাল।।
চাতক থাকে মেঘের আশে
মেঘ বরিষে অন্য দেশে
বল চাতক বাঁচে কিসে
ওষ্ঠাগত প্রান আকুল।।
লালন ফকির বলছে রে মন
হলো না মোর ভজন সাধন
ভুলে সিরাজ সাঁইজির চরন
মানব জনম বৃথাই গেল।।
(আরো পড়ূন)
বিনা পাকালে গড়িয়ে কাঁচি করছো নাচানাচি।
ভেবেছ কামার বেটায় ফাঁকিতে ফেলেছে।।
জানা যাবে এসব নাচন
কাচিতে কাটবে না যখন কারে করবি দোষি
বোঁচা অস্ত্র টেনে কেবল
মরছো মিছামিছি।।
পাগলের গো-বধ আনন্দ
মন তোমার আজ সেহি ছন্দ দেখে ধন্দ আছি;
নিজ মরন পাগলে বোঝে
তাও তোমার নাই বুঝি।।
জানা গেলে এসব নীলে
আপন ফাঁকে আপনি প’লে তাও তো মহাখুশি’
লালন বলে সঙ্গ গুনে
জ্ঞান হলো নৈরাশী।।
(আরো পড়ূন)
ফেরব ছেড়ে করো ফকিরি।
দিন তোমার হেলায় হেলায় হল আখেরি।।
ফেরের ফকিরের ধারা
দরগা নিশান ঝাণ্ডাগাড়া
গলায় বাঁধে হড়ামড়া
শিরনি খাওয়ার ফিকিরি।।
আসল ফকিরি মতে
বাহ্য আলাপ নাহি তাতে
চলে শুদ্ধ সহজ পথে
অবোধের চটক ভারি।।
নাম-গোয়ালা কাজি ভক্ষন
তোমার দেখি তেমনি লক্ষন
সিরাজ সাঁই কয় অবোধ লালন
কর সাধুর খাতায় জুয়াচুরি।।
(আরো পড়ূন)
না হলে মন সরলা
কি ধন মেলে কোথায় ঢুঁড়ে।
হাতে হাতে বেড়াও কেবল
তওবা পড়ে।।
মুখে যে পড়ে কালাম, তারি সুনাম
হুজুর বাড়ে;
ও যার মন খাঁটি নয় বাঁধলে কী হয়
বনে কুঁড়ে।।
মক্কা মদিনা যাবি, ধাক্কা খাবি
মন না মুড়ে;
হাজি না পাড়ানোর লভ্য কাবল
জগৎ জুড়ে।।
মন যার হয়েছে খাঁটি, মুখে যদি
গলদ পড়ে;
তাতে খোদা নারাজ নয় রে
লালন ভেরে।।
(আরো পড়ূন)
বসত বাড়ীর ঝগড়া কেজে
আমার ত কই মিটল না।।
কার গোহালে কে ধুয়া দেয়
সব দেখি তা-নানা।।
ঘরের চোরে ঘর মারে যার
বশতের সুখ হয় কিসে তার
ভূতের কীর্ক্তি যমন প্রকার
এমন তার বসতখানা।।
দেখে শুনে আত্ম কলহ
কর্ত্তাব্যক্তি হত হল
সাক্ষাতে ধন চোরে গেল
এ লজ্জাত যাবে না।।
সবজয় হাকিমের তরে
আরজি করি বারে বারে
লালন বলে আমার পানে
একবার ফিরে চাইলেন।।
(আরো পড়ূন)
মনেরে বোঝাই কিসে
ভব যাতনায় জ্ঞান চক্ষু আঁধার
ঘিরলরে যেমন রাহুতে এসে।।
যেমন বনে আগুন লাগে দেখে সর্ব লোকে
মন আগুন কে দেখে মন-কোঠা ভাসে।।
এ সংসারে বিধি বড় বল ধরে
কর্ম ফাঁদে বেঁধে মারিছে আমারে
কা’রে সুধাই এ সব কথা কে ঘুচাবে ব্যাথা
মন আগুনে মন দগ্ধ হ’তেছে।।
ভবে আসা আমার মিথ্যা আসা হল
অসার ভাবিয়া সকলই ফুরাল
পর্বে যে সুকৃতি ছিল পেলাম তার ফল
আবার যেন আমার কী হবে শেষে।।
গনে আনি দেওয়া হয়ে যায় রে কুয়ো
তেমনি হল আমার সকল কার্য ভুয়ো
লালন ফকির সদয়ে দিচ্ছে গুরুর দোহাই
আর যেন না আসি এমন দেশে।।
(আরো পড়ূন)
তিন পোড়াতে খাঁটি হলে না।
না জানি কপালে তোমার কী আছে তাও বুঝলাম না।।
লোহা জব্দ কামারশালে
যে পর্যন্ত থাকে জ্বালে
যায় না স্বভাব তা মারিলে
তেমনি মন তুই একজনা।।
অনুমানে জানা গেল
চুরাশি ফের পড়িল
আর কবে কী করবি বল
রংমহলে প’লো হানা
দেব-দেবতার বাসনা হয়।।
মানবজনম লওয়ার আশায়
লালন কয় সেই মানুষ হয়ে
মানুষের করণ করলে না।।
(আরো পড়ূন)
চিরদিন জল ছেঁচিয়ে জল
ছারে না এ ভাঙ্গা নায়।
একমালা জল ছেঁচতে গেলে
তিন মালা জোগায় তলায়।।
আগা নায়ে মন-মনুরায়
বসে বসে চুমুক খেলা।।
আমার দশা তলা ফাঁসা
জল ছেঁচি আর গুধরি গলায়।।
ছুতোর বেট্যার কারসাজিতে
জনম-তরীর ছাদ মারা নাই
নৌকার আশেপাশে কাষ্ঠ সরল
মেজেল কাঠ গড়েছে তলায়।।
মহাজনের অমূলয ধন
মারা গেল ডাকনি জোলায়
লালন বলে মোর কপালে
কী হবে হিসাবের বেলায়।।
(আরো পড়ূন)
কোন কুলেতে যাবি মনরায়।
গুরুকুল ধরতে গেলে লোককুল ছাড়তে হয়।।
দুকুল ঠিক রয় না গাঙে
এক কুল গড়ে আর এক কুল ভাঙ্গে
তমনি যেন সাধুর সঙ্গে
বেদবিধির কুল দূরে রয়।।
রোজা-পূজা জাতের আচার
মন যদি চায় কর এবার
বেজাতের কাজ বেদান্তর
মায়াবাদীর কার্য নয়।।
ভেবে বুঝে এক কূল ধর
দোটানায় কেন ঘুরে মর
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোর
ফুঁ ফুরাবে কোন সময়।।
(আরো পড়ূন)
কতদিন আর রইবি রঙ্গে।
বাড়িতেছে বেলা ধর এই বেলা
যদি বাঁচতে চাও তরঙ্গে।।
নিক্টে বিক্টে বেশেতে শমন
দাঁড়াইয়া আছে হরিতে জীবন
মানিবে না কারে, কেশে ধরে তোরে
লয়ে যাবে সে জন আপন সঙ্গে।।
দ্বারা-সূত-আদি যত প্রিয়জন
বক্ষমাঝে যাদের রাখ সর্বক্ষন
আমার আমার, বল বারেবার
তখনি হেরিবে না কেহ অপাঙ্গে।।
অতএব শোন থাকিতে জীবন
কর অন্বেষন পতিতপাবন
সিরাজ সাঁই কয় লালন, অধ্ম তারন
বাঁচো এখন পাপ আতঙ্কে।।
(আরো পড়ূন)
আপন মনের গুনে সকলি হয়।
ও সে পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর পায়।।
নামটি রামদাস বলে
জাতে সে মুচির ছেলে
গঙ্গামায়ের এমনি লীলে
(এলো) চাম-কাটুয়ায়।।
জাতে সে জোলা কুবীর
উড়িষ্যায় তাহার জাহির
বারো জাত তাহার হাঁড়ির
তুড়ানি খায়।।
না বুঝে ঘর ছেড়ে
জঙ্গলে বাঁধে কুঁড়ে
লালন কয় রিপু ছেড়ে
যাবি কোথায়।।
(আরো পড়ূন)
আপন মনে যার গরল মিশে
যেখানে যায় সুধার আশে তলায় গরল দেখে।।
মনের গরল যাবে যখন
সুধাময় সব দেখবে তখন
পরশিলে এড়ায় শমন
নইলে পড়বি পাকে।।
কীর্তিকর্মার কীর্তি ইঠাঁই
যে যা ভাবে তাই দেখতে পায়
গরল বলে কারে দোষাই
ঠিক পড়ে না ঠিকে।।
রামদাস মুচির মন সরলে
চামের কৌটায় গঙ্গা মিলে
সিরাজ সাঁই কয় লালনের
তা কি ঘটবে তোকে।।
(আরো পড়ূন)
মূল হারালম লাফ করতে এসে
দিয়ে ভাঙ্গা নায় বোঝায় ঠেসে।।
জন্মভাঙ্গা ডিঙ্গে আমার
ভল ফুরালো জল ছেঁচে।।
গলুই ভাঙ্গা জলুই খসা
বরাবরি এমনি দশা
গাবকালিতে যায় না কসা
কী করি তার নাই দিশে।।
কত ছুতোর ডেকো আনি
সারতে এই ভাঙ্গা তরনি
এক জাগায় খোঁচ গড়তে অমনি
আর এক জাগায় যায় ফেঁসে।।
যেন ছুতোরের নৌকা গঠন
তারে যদি পেতাম এখন
লালন বলে মনের মত্ন
সারতাম নৌকা তার কাছে।।
(আরো পড়ূন)
মনের মানুষ চিনলাম না রে.
পেতাম যদি মনের মানুষ
সাধিতাম তার চরন ধরে।।
সাধুর হাটে কাচারি হয়
অধ মুণ্ডে ঘুরে বেড়ায়
ছয়জনা মিশতে না দেয়
মনের মানুষ ধরি কী করে।।
আরজ আমার সাধুর হাটে
মানুষ হয়ে মানুষ কাটে
তাহার বাস কাহার নিকটে
সৃষ্টি করলে কী প্রকারে।।
লালন বলে ভেবে দেখি
কেবল তোমার ফাঁকাফাঁকি
চাতুরী ছুড়েছ নাকি
আছি তোমার আশা করে।।
(আরো পড়ূন)
মনেরে বুঝাতে আমার দিন হল আখেরি।
বোঝে না মন আপন মরন একি অবিচারী।।
ফাঁদ পাতিলাম শিকার বলে
সে ফাঁদ বাঁধিল আপন গলে
এ লজ্জা কি যাবে ধুলে
এই ভবের কাচারি।।
পর ধরতে যাই লোভ দেখায়ে
আপনি লোভে পড়ি যেয়ে
হাতের মামলা হারায়ে
শেষে কেঁদে ফিরি।।
ছা’য়ের জন্যে আনিলাম আধার
আধারে ছা’ খেল এবার
লালন বলে বুঝলাম আমার
ভগ্নদশা ভারি।।
(আরো পড়ূন)
মনের ভেদ মন জানে না একি কারখানা।
এ মনে ও মন করছে ওজন কোথা সেই মনের থানা।।
মন দিয়ে মন ওজন সই হয়
দুই মনে এক লেখে খাতায়
তাইবি ধরে যোগসাধনে
কর গো মনের ঠিকানা।।
মন এসে মন হরন করে
লোকে ঘুম যায় বলে তারে
কত আনকা নহর, আনকা শহর
ভ্রমিয়ে দেখায় তৎক্ষনা।।
সদাই সে মন বাইরে বেড়ায়
বদ্ধ সে তো রয় না আড়ায়
লালন ভনে সন্ধি জেনে
কর গা মনের ঠিকানা।।
(আরো পড়ূন)
মনের নেংটি [১] এঁটে কর রে ফকিরি।
আমানতের ঘরে মনা হয় না যেন চুরি।।
এ দেশেতে দেখি রে ভাই
ডাকিনী যোগিনীর ভয়
দিনেতে মানুষ ধরে খায়
থেকো হুঁশিয়ারি।।
বারে বারে বলি রে মন
কর রে আত্মসাধন
আকার্ষনে দুষ্টদমন
করো[২] ধরি ধরি।।
কাজে দেখি দড়বড়ে
নেংটি তোমার নড়বড়ে
খাটবে না লালন ভেড়ে
টাকশালে চাতুরী।।
(আরো পড়ূন)
মন র’লো সেই রিপুর বশে রাত্রিদিনে।
মনের গেল না স্বভাব, কিসে মেলে ভাব সাধুর সনে।।
আমি বলি শ্রীচরন
মনে যদি হয় কখন
অমনি উঠে হয়, দুষ্ট সে সময়
ধরে যেদক টানে।।
নিজগুনে যা করেন সাঁই
তা বিনে আর ভরসা নাই
তুমি জান মোর, মনের ভক্তির জোর
যেরূপ মনে।।
দিনে দিনে দিন ফুরালো
রঙমহল অন্ধকার হ’ল
লালন বলে , হায় কী হবে
উপায় তো দেখি নে।।
(আরো পড়ূন)
অসার ভেবে সার দিন গেল আমার
সার বস্তধন এবার হলাম রে হারা
হাওয়া বন্ধ হলে সব যাবে বিফলে
দেখে শুনে লালস গেল না মারা।।
গুরু যার সহায় আছে সংসারে
লোভে সাঙ্গ দিয়ে সেহি যাবে সেরে
অঘাটায় মরন হল আমারে
জানলাম না গুরুর করন কী ধারা।।
মহতে কয় থাকলে পূর্ব সুকৃতি
দেখিতে শুনিতে হয় গুরুপদে মতি
সে সুকৃতি আমার থাকতো যদি
তবে কঈ আর আমি হতাম পামরা।।
সময় ছাড়িয়ে জানিলাম এখন
গুরু কৃপা বিনে বৃথা এ জীবন
বিনয় করে কয় ফকির লালন
আর কি আমি পাব অধরা।।
(আরো পড়ূন)
দেখনা মন ঝাকমারি এই দুনিয়দারী
পড়িয়ে কপনি-ধ্বজা কি মজা উড়ালে ফকিরী।।
বড় দরদের ভাই বন্ধুজনা
সাথের সাথী কেউ হবে না মন তোমারি
সেদিন খালি হাতে একা পথে
বিদায় করে দেবে তোরি।।
যা কর তা কররে মন
শেষের কথা রেখ স্মরন বরাবরই
ও তোর পিছে পিছে ফিরছে শমন
কোনদিন হাতে দিবে ডুরি।।
বড়ো আশার বাসা এঘর
পড়ে রবে কোথায় রে কার ঠিক নাই তারই,
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় লালন ভেড়ো,
(তুই) করিস রে কার[১]এন্তেজারী।।
(আরো পড়ূন)
মনের মনে হোলনা একদিনে
(আমি) ছিলাম কোথায় এলাম হেথায়
যাব কার সনে।।
আমার বাড়ী আমারই ঘর,
বলা কেবল ঝাকমারী সার,
পলকে সব হবে সংহার-
হবে কোন দিনে।।
পাকা দালান কোঠা দিব
মহাসুখে বাস করিব,
ভাবলাম না কোন দিকে যাব-
যাব শ্মশানে।।
কি করিতে কিবা করি,
পাপে বোঝাই হইল তরি,
লালন কয় তরঙ্গ ভারী
দাখি সামনে।।
(আরো পড়ূন)
মন আমার কিছার গৌরব করছ ভবে
দেখনা রে সব হাওয়ার খেলা
বন্ধ হৈতে দের কি হবে।।
থাকতে ঘরে হাওয়াখানা,
মওলা বলে ডাক রসনা,
মহাকাল বসেছে সিনায়[১]
কখন যেন কু ঘটাবে।।
বন্ধ হলে এই হাওয়াটি,
মাটির দেহ হবে মাটি,
দেখে শুনে হও মন খাঁটি;
কে তোরে কতই বুঝাবে।।
ভবে আসার অগ্রেরে মন,
বলেছিলে করব সাধন,
লালন বলে সেকথা মন,
ভুলেছ এই ভবার্ণবে[২]।।
(আরো পড়ূন)
বাকির কাগজ গেল হুজুরে
কোন দিন জানি আসবে শমন সাধের অন্তঃপুরে[১]।।
যখন ভিটায় হও বসতি
দিয়াছিলে খাস কবুলতি
হরদমে নাম রাখবে স্মৃতি[২]
এখন ভুলেছো তারে।।
আইন মাফিক নিরিখ দে না
তাও দেখি তোর ইতরপনা,
যাবে রে মন যাবে জানা
জানা যাবে আখেরে।।
সুখ পেলে হও সুখে ভোলা ,
দুঃখ পেলে হও দুঃখ উতলা,
লালন কয় সাধনের খেলা
কীসে যুত ধরে।।
(আরো পড়ূন)
একবার চাঁদ বদনে বল গো সাঁই
বান্দার এক দমের ভরসা নাই
হিন্দু কি যবনের বালা,
পথের পথিক চিনে ধর এই বেলা,
পিছে কাল শমন, আসছে সর্বক্ষন,
কোন দিন বিপদ ঘটাবে ভাই।।
আমার বিষয় আমার বাড়ী ঘর,
সদাই এই ভাবে দিন গেল রে আমার,
বিষয় বিষ খাবা সে ধন হারাবা
শেসে কাঁদলে কি আর সারে ভাই।।
নিকটে থাকিতে সেহি ধন,
বিষয় চঞ্চলতাতে খুঁজলিনে রে মন
ফকির লালন কয়, সে ধন কোথায় রয়,
আখেরে খালি হাতে যাই সবাই।।
(আরো পড়ূন)
ভুলব না ভুলব না বলি
কাজের বেলায় ঠিক থাকে না।।
আমি বলি ভুলব নারে স্বভাব ছাড়ে না মোরে
কটাক্ষে মন পাগল করে
দিব্য জ্ঞানে দিয়ে হানা।।
সঙ্গ গুনে রঙ্গ ধরে জানিলাম কার্য অনুসারে
কুসঙ্গে সম্বন্ধ হয়ে সুমতি মোর গেল ছেড়ে
খাবি খাই অপাত্রে পড়ে
এ লজ্জা ধুলেও যায় না।।
যে চোরের দায়ে দেশান্তরী সেহি চোর দেখি সঙ্গধারী
মদন রাজার ডংকা ভারি কাম জ্বালা দেয় অন্তর পূরি
ভুলে যায় মোর মন-কাণ্ডারি
কি করিবে গুনিজনা।।
রঙ্গে মেতে সঙ্গ সাজিয়ে বসে আছি মগ্ন হয়ে
সু-সখারে সঙ্গ করে জানতাম যদি সু-সঙ্গেরে
লালন বলে তবে কিরে
ছেঁচড়ে মারে মালখানা।।
(আরো পড়ূন)
এমন মানব জনম আর কি হবে
মন যা কর ত্বরায় করো এই ভবে।।
অনন্তরূপ সৃষ্টি করলেন সাঁই
শুনি মানবের উওর[১] কিছুই নাই
দেব দেবতাগন করে আরাধন জন্ম নিতে মানবে।।
কতো ভাগ্যের ফলে না জাণী (মন রে)
পেয়েছ এই মানব তরনী
বেয়ে যাও ত্বরায় তরী সু-ধারায় যেন ভারা না ডোবে।।
এই মানুষে হবে মাধুর্য ভজন
তাইতে মানুষ-রূপ গঠলেন নিরঞ্জন
এবার ঠকিলে আর না কিনার লালন কয় কাতর ভাবে।।
(আরো পড়ূন)
মনরতি সে রিপুর বশে রাত্রি দিনে
মনের গেলো না স্বভাব কিসে মেলে ভাব
সাধুর সনে।।
নিজ গুনে যা করে সাঁই
তা বিনে আর ভরসা নাই
জানা মোর মনের ভক্তির জোর
যে রূপ মনে।।
বলি সে শ্রী চরন
যদি মনে হয় কখন
তেম্নি উঠে হয় দুষ্ট সে সময়
বৈদিক টানে।।
দিনে দিনে ফুরায়ে গেলো
রংমহল অন্ধকার হোল
লালন বলে হায় কি করি উপায়
পথ দেখি নে।।
(আরো পড়ূন)
বল কারে খুঁজিস ক্ষেপা দেশ বিদেশে
আপন ঘর খুজলে রতন পায় অনাসে।।
দোড়াদৌড়া দিল্লি লাহোর
আপন কোলে রয় ঘোর
নিরূপ আলেক সাঁই মোর
ৰআত্মারূপ সে।।
যে লীলা ব্রহ্মাণ্ডের পর
যে লীলা ভাণ্ড মাঝার
ডাকা যমন চন্দ্র আকার
মেঘের পাশে।।
আপনাকে আপনি চেনা
সেই নবটে উপসনা
লালন কয় আলেক বেনা
হয় তার দিশে।।
(আরো পড়ূন)
মন তুই করলি একি ইতরপানা
দুগ্ধেতে যেমনরে তোর মিশল চনা।।
শুদ্ধরাগে থাকতে যদি
হাতে পেতে অটল নিধি
বলি মন তাই নিরবধি
বাগ মানে না।।
কি বৈদিকে ঘিরলো হৃদয়
হলনা সু-রাগের উদয়
নয়ন থাকিতে সদায়
হলি রে কানা।।
বাপের ধন খেল সাপে
জ্ঞান চক্ষু নাই দেখবি কারে
লালন বলে হিসাব কালে
যাবে জানা।।
(আরো পড়ূন)
ফকিরী করবি ক্ষেপা কোন রাগে
হিন্দু মুসলমান দুই জনা রয় দূই ভাগে।।
বেহেস্তের আশায় মমিনগন
হিন্দুদের স্বর্গেতে মন
টল কি অটল মোকাম সেহ
লেহাজ করে জান আগে।।
ফকিরী সাধন করে
খোলাসা রয় হুজুরে
বেহেস্ত-সুখ ফাটক সমান
শরায় ভাল তাই দেখে।।
অটল প্রাপ্তি কিসে হয়
মুরশিদের ঠাঁই জানা রয়
সিরাজ সাঁই কয় লালন ভেড়ো
ভুগিস না ভবের ভোগে ।।
(আরো পড়ূন)
আমি কি দোষ দেব কারে রে
আপন মনের দষে প’লেম
সুবুদ্ধি স্বভাব গেলো।।
কাকের স্বভাব মনের হোল
ত্যাজিয়ে অমৃত ফল
মাকাল ফলে মন মজিলো রে।।
যে আশায় ভবে আশা
ভাঙিল সে আশায় বাসা
ঘটালো একী দুর্দশা
ঠাকুর গড়তে বান্দর হোল রে।।
গুরুবস্তু চিনলি নে মন
অসিময়ে কি করবি তখন
বিনয় করে বলছে লালন
যজ্ঞের ঘৃত কুত্তায় খেলো রে।।
(আরো পড়ূন)
চাতক স্বভাব না হলে
অমৃত মেঘের বারি
(শুধু) কথায় কি মেলে।।
মেঘে কতো দেয় গো ফাঁকি
তবু চাতক মেঘের ভোগী
তেমনি নিরিখ রাখলে আঁখী
(তারে) সাধক বলে।।
চাতকেরো এমনি ধারা
তেষ্টায় জীবন যায় গো মারা
(তবু) অন্য বারি খায় তারা
মেঘের জল পেলে।।
মন হয়েছে পবন গতি
উড়ে বেড়ায় দিবা রাত্রি
(ফকির) লালন বলে গুরুর প্রতি
রয়না সুহালে।।
(আরো পড়ূন)
তুমি তো গুরু স্বরূপের অধীন।
আমি ছিলাম সুখে উর্ধ্ব দেশে
অধে এনে করলে আমায় হীন।।
তুমি মাতা তুমি পিতা
তুমি হও জ্ঞানদাতা
তুমি চক্ষু দান দিয়ে
দেখাও আমায় শুভদিন।।
আমি গুরুর করবো ভজন
তাতে বাদী হলো ছয়জন
ও সেই দশে-ছয়ে ষোলআনা
হলো না মোর সেইদিন।।
ভক্তি নইলে কি মন
গুরুচরন হয় শরন
অধীন লালন ভেবে কয়
কেমনে শুধিব গুরুঋন।।
(আরো পড়ূন)
না জেনে করন কারন কথায় কী হয়।
কথায় যদি ফলে কৃষি তবে বীজ কেনে রোপে।।
গুরু বললে কি মুখ মিষ্টি হয়
দীপ না জ্বললে কি আধাঁর যায়
অমনি জানো হরি বলায়
হরি কি পাবে।।
রাজায় পৌরুষ করে
জমির কর সে বাচেঁ না রে
সেই কি তোর একবারই কার্য রে
পৌরুষে জানাবে।।
গুরু ধর খোদকে চেন
সাঁইর আইন আমলে আনো
লালন বলে তবে মন
সাঁই তোরে নিবে।।
(আরো পড়ূন)
যাতে যায় শমন যন্তনা ভ্রমে ভুলো না ।[১]
গুরুর শীতল চরন ভুল না।।
বেদ বৈদিকের ভোলে ভুলি
গুরু ছেড়ে গৌর বলি
মনের ভ্রম এ সকলি
শেষে যাবে রে জানা।।
চৈতন্য আজব সুরে
থেকে নিকট দেখায় দূরে
গুরুরূপ আশ্রিত করে
কর রূপের ঠিকানা।।
জগৎ জীবের দ্বারায়
নিজরূপ সম্বব তো নয়
লালন বলে তাইতো গো সাঁই
দেখায় স্বরূপে রূপ-নিশানা।।
(আরো পড়ূন)
মলে গুরু প্রাপ্ত হবো সেতো কথার কথা
জীবন থাকিতে যারে না দেখিলাম হেথা।।
সেবা মূল কারন তারই
না পেয়ে কার সেবা করি
আন্দাজি হাতড়িয়ে ফিরি
কথার লতা।।
সাধন জোরে এ ভবে যার
সে রূপ চক্ষে হবে নেহার
তারি বটে সেরূপ আকার
মেলে যথা-তথা।।
ভজে পাই কি পেয়ে ভজি
কি ভজনে হয় যে রাজি
সিরাজ সাঁই কয় কি আন্ন্দাজি
লালন মুড়ায় মাথা।।
(আরো পড়ূন)
গুরু পদে ডুবে থাকরে আমার মন
গুরু পদে না ডুবিলে জন্ম যাবে অকারন।।
গুরু শিষ্য এমনি ধারা
চাঁদের কোলে থাকে তারা
আয়নাতে লাগায়ে পারা
দেখে ত্রিভূবন।।
শিষ্য যদি হয় কায়েমি
কর্নে দেয় তার মন্ত্র খানি
নিজ নামে হয় চক্ষুদানী
নইলে অন্ধ দুই নয়ন।।
ঐ দেখা যায় আনকা নহর
অচিন মানুষ অচিন শহর
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর
জনম গেল অকারন।।
(আরো পড়ূন)
আমার মনের বাসনা
আশা পূর্ন হল না[১]।
বাঞ্ছা ছিল যুঘল পদে,
সাধ মিটার ঐ পদ সেধে,
বিধি বৈমুখ হল তা’তে
দিল সংসার যাতনা।।
বিধি[২] হয় সংসারের রাজা,
আমায় করে রাখলেন প্রজা,
কর না দিলে দেয় গো সাজা,
কারো দোহাই মানে না।।
পড়ে গেলাম বিধির বামে,
ভুল হল মোর মূল সাধনে,
লালনে বলে এ তুফানে[৩]
ঘুচাও যন্তনা।।
(আরো পড়ূন)
কারে বলবো আমার মনের বেদনা
এমন ব্যথিত মেলে না।।
যে দুঃখে আমারো মন
আছে সদাই উচাটন বললে সারে না।।
গুরু বিনে আর না দেখি কিনার
তারে আমি ভজলাম না।।
অনাথের নাথ যে জন আমার
সে আছে কোন অচিন শহর
তারে চিনলাম না।
কি করি কি হয় দিনের দিন যায়
কবে পুরবে মনের বাসনা।।
অন্য ধনের নয়রে দুখী
মন বলে আজ হৃদয় রাখি
শ্রীচরনখানা।
লালন বলে মোর পাপের নাহি ওর
আশা তাইতে পূর্ন হোল না।।
(আরো পড়ূন)
গুরু বিনে কী ধন আছে
কি ধন খুঁজিস ক্ষেপা কার কাছে
বিষয় ধনের ভ্রসা নাই
ধন বলিতে গুরু গোঁসাই
যে ধনের দিয়ে দোহাই,
ভব তুফান যাবে বেঁচে।।
পুত্র পরিবার ভবের ভূষন
ভুলিয়াছে ভবের ভূবন
মায়ায় ভুলে অবোধ মন
গুরু ধঙ্কে ভাবিলি মিছে।।
কী ধনে কী গুনপনা
অন্তীমকালে যাবে জানা
গুরুধন অমূল্য ধন রে
কু-মনে বুঝলি না হারে
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোরে
নিশ্চয় পেঁচোয় পেয়েছে।।
কিসে পাবি ত্রাণ সংকটে ঐ নদীর তটে
গুরু চরণতরী তারণ করবে অকপটে।।
নদির মাঝে মাঝে আসে জ্ঞান
প্রাণে ডাকো ভক্তির বান
হয়ো নারে অজ্ঞান
রবি যে বসল পাটে।।
রিপু ছয়টা কর বশ
ছাড় বৃথা রঙ্গ রস
কাজেতে হইলে অলস
পড়ে রবি পার ঘাটে।।
দেহ ব্যাধির সিদ্ধির
পদ্মপত্রে যথা নীর
জীবন তথা হয় অস্থির
কোন সময় কিবা ঘটে।।
সিরাজ সাঁই বলেরে লালন
বৈদিকে ভুলনা মন
একনিষ্ঠ মন কর সাধন
বিকার তোমার যাবে ছুটে।।
(আরো পড়ূন)
আর আমার কেউ নাই গুরু তুমি বিনে
অযতনে ডুবল ভরা
তরাও গুরু নিজগুনে।।
সাধের একখান তরি ছিল
অযতনে বিনাশিল
বান সকল ছাড়িয়ে গেল
জল চুয়ার রাত্র দিনে।।
সময়ে গাব দিতাম যদি বাইতাম তরী জন্মদিনে
আমার এই দেহ তরী আদরিত মহাজনে।।
লয়ে এলাম ষোল আনা ব্যাপার করিব দুনা
আসলে পল ঊনা (এখন)নিকাশ দিতে টানাটনি।।
কি যেন খাওয়াল নেশা নষ্ট হল সকল দিশা
সময়ে জাগিলে পরে ঘর ত চুরি যায় নে।।
ষোল আনা বোঝাই করে পাঠায়ে দেয় ঠক-বাজারে
কারবার সব চোরে কিছু আমি টের পেলাম নে
সিরাজ সাঁই বলেরে লালন রংপুর দোকান দিলি কেনে।।
(আরো পড়ূন)
গুরু পদে নিষ্ঠা মন যার হবে
অমূল্য ধন হাতে সেহি পাবে।।
গুরু যার হয় কাণ্ডারি
চালায় সে অচলা তরী
ভবে তুফান বলে ভয় কি তারি
নেচে গেয়ে ভব পারে যাবে।।
আগমে নিগমে তাই কয়
গুরুরূপে দীন দয়াময়
অসময়ের সখা সে হয়
অধীন হয়ে যে তারে ভজিবে।।
গুরুকে মনুষ্য জ্ঞান যার
অধপাতে গতি হয় তার
ফকির লালন বলে তাই আজ আমার
ঘটল বুঝি মনের কুস্বভাবে।।
(আরো পড়ূন)
রাখিলেন সাঁই কূপজল ক’রে
আন্ধেলা পুকুরে
কবে হবে সজল বরষা রেখেছি (মন) সেই ভরসা
আমার এই ভগ্নদশা ঘুচবে কতদিন পরে
এবার যদি না পাই চরন আবার কি পড়ি ফেরে।।
নদীর জল কূপজল হয় বিল-বাওড়ে পড়িয়ে রয়
সাধ্য কি সে গঙ্গাতে যায় গঙ্গা না এলে পরে,
জীবের তেমনি ভজন বৃথা তোমার দয়া নাই যারে।।
যন্তর পড়িয়ে অন্তর রয় যদি লক্ষ বৎসর
যন্ত্রী বিহনে যন্তর কভু না বাজতে পারে।
(গুরু) তুমি যন্ত্রী আমি যন্ত্র সু-বোল বলাও মোরে।।
শাস্ত্রে শুনেছি খাঁটি পতিতপাবন নামটি
পতিত না তরাও যদি কে ডাকিবে আর নাম ধরে।
অধীন লালন বলে, তরাও গো সাঁই এ ভব-কারাগারে।।
(আরো পড়ূন)
যারে ভাবলে পাপীর পাপ হরে
দিবানিশি ডাক মন তারে।
গুরুর নাম সুধাসিন্ধু
পান কর তাহাতে বিন্দু
সখা হবে দীনবন্ধু
তৃষ্ণ-ক্ষুধা রবে না রে।।
যে নাম প্রহ্লাদ হৃদয়ে করে
অগ্নির কুণ্ডে প্রবেশ করে
কৃষ্ণ নরসিংহ রূপ ধারন করে
হিরণ্যকশিপুরে মারে।।
ভাবলি না শেষের ভাবনা
মহাজনের ধন ষোলআনা
লালন বলে মন-রসনা
একদিনও তা ভাবলি না রে।।
(আরো পড়ূন)
গুরুপদে মতি আমার কই হলো
আজ হবে কাল হবে বলে,
কথায় কথায় দিন গেল
ইন্দ্রিয়াদি সব বিবাদী সতত বাধায় কলহ
(তারা) কারো কেউ শোনে না উপায় কি করি বল।।
যেরূপ দেখি তাইতে আঁখি হয়ে যায়রে বে-ভুলো
দীপের আলো দেখে যেমন পতঙ্গ পুরে ম’লো।।
কি করিতে এসে ভবে কি কার্য করি বল
লালন বলে যজ্ঞের ঘৃত সকলি কুত্তায় খেল।।
(আরো পড়ূন)
সামান্যে কি সে ধন পাবে
দ্বীনের অধীনে হয়ে চরন সাধিতে হবে।।
গুরু পদে কি না হল
কত বাদশা বাদশাহি ছাড়িল
কত কুলবতীর কুল গেল
কালারে ভেবে।।
গুরু পদে কতজনা
বিনামূল্যে হয়ে কেনা
করে গুরুর দাস্যপনা
সে ধনের লোভে।।
কত যোগী মুনি ঋষি
যুগ যুগান্তর বনবাসী
পাবে বলে কালশশী
বসেছে স্তবে।।
গুরুপদে যাহার আশা
অন্য ধনে নাই লালশা
লালন ভেড়োর বুদ্বি নাশা
ম’ল ধোঁয়াশা[১] ভেবে।।
(আরো পড়ূন)
(হায় রে) কেন ডুবলি না মন, মন রে, গুরুর চরনে
এসে কাল শম্ন বাঁধিবে কোন দিনে
নিদ্রাবশে নিশি গেল
বৃথা কাজে দিন ফুরালে চেয়ে দেখলিনে (ও মন)
এবার গেলে আর হবে না পড়বি কুক্ষনে।।
আমার পুত্র আমার দারা
সঙ্গে কেউ যাবে না তারা যেতে শ্মশানে (ও মন)
আসতে একা যেতে একা তা কি জানিস নে।।
এখও তোর আছে সময়
সাধলে কিছু ফল পাওয়া যায় যদি লয় মনে (ও মন)
সিরাজ সাঁই বলেরে লালান ভ্রমে ভুলিস নে।।
(আরো পড়ূন)
গুরুবস্ত চিনে নে না[১]
অপারের কাণ্ডারি গুরু
তা বিনে কূল কেউ পাবে না।।
হেলায় হেলায় দিন গেলো
মহাকালে ঘিরে এলো
আর কখন কি হবে বলো
রংমহলে পড়লে হানা।।
কি কার্য করিবে বলে
এ ভবে আসিয়া ছিলে
কি ছার মায়ায় রইলি ভুলে
সে কথা মনে প’ল না[১]।।
(ঘরে) এখন বহিছে পবন
হতে পারে কিছু সাধন
সিরাজ সাঁই কয় শোন অবোধ লালন
এবার গেলে আর হবে না।।
(আরো পড়ূন)
গুরু পদে ডুবে থাকরে আমার মন
গুরু পদে না ডুবিলে
জনম যাবে অকারণ ॥
গুরু শিষ্য এমনি ধারা
চাঁদের কোলে থাকে তারা
আয়নাতে লাগায়ে পারা
দেখে ত্রিভুবন ॥
শিষ্য যদি হয় কায়েমি
কর্ণে দেয় তার মন্ত্র খানি
নিজ নামে হয় চক্ষুদানী
নইলে অন্ধ দুই নয়ন ॥
ঐ দেখা যায় আনকা নহর
অচিন মানুষ অচিন শহর
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর
জনম গেল অকারণ ॥
(আরো পড়ূন)
কি হবে আমার গতি
কতই জেনে কতই শুনে
ঠিক পড়ে না কোনো প্রতি ॥
মুচির কৌটায় গঙ্গা এল
কলার ডেগো সর্প হলো
এ সকলই ভক্তির বল
আমার নাইকো কোনই শক্তি ॥
যাত্রা ভঙ্গ যে নাম শুনে
বনের পশু হনুমানে
নিষ্ঠা গুণ যার রামচরণে
সাধুর খাতায় তার সুখ্যাতি ॥
মেঘ পানে চাতকের ধিয়ান
অন্য বারী করে না পান
লালন কয় জগতে প্রমাণ
ভক্তির শ্রেষ্ঠ সেহি ভক্তি ॥
(আরো পড়ূন)