চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা

ঠাহর নাই গো মন বেপারী

ঠাহর নাই গো মন বেপারী
ত্রিধারায় ডুবে বুঝি আমার তরী ।।

যেমনি দাঁড়ি মাল্লা বেয়াড়া
তেমনি মাঝি দিশেহারা
কোনদিকে যে বাইলো তারা
     পাড়ি দেওয়া কঠিন হইল ভারি ।।

একটি নদীর তিনটি ধারা
সেই নদীতে নাই কূল কিনারা
বেগে তুফান বয় দেখে লাগে ভয়
     ডিঙ্গি বাঁচার উপায় কি করি ।।

কোথায় আছ দয়াল হরি
আপনি এসে হও কাণ্ডারি
স্মরণ করি ভাসাই তরী
     লালন কয় বিপাকে না পড়ি ।।

 

(আরো পড়ূন)

আজব  রং ফকিরি সাধা

আজব রং ফকিরি সাধা সোহাগিনী সাঁই
ও তার চুপিসারি ফকিরি ভেক কে বুঝিবে রাই।।

সর্বকেশী মুখে দাঁড়ি
পরণে তার চুড়ি শাড়ি
কোথা হতে এল সিঁড়ি
     জানতে উচিত তাই।।

ফকিরি গোরের মাঝার
দেখ হে করিয়া বিচার
ও সে সাধা সোহাগী সবার
     আধ ঘর শুনতে পাই।।

সাধা সোহাগিনীর ভাবে
প্রকৃতি হইতে হবে
সাঁই লালন কয়, মন পাবি তবে
     ভাব সমুদ্রে ঠাঁই।।

________________________________________

লালন ফকিরঃ কবি ও কাব্য, পৃ. ১৪০-৪১
লালন-গীতিকা, পৃ. ৩০৫-০৬

 

(আরো পড়ূন)

মেয়ে গঙ্গা যমুনা সরস্বতী/

মেয়ে গঙ্গা যমুনা সরস্বতী রে
মাসে মাসে জোয়ার আসে ত্রিবেণির সংহতিরে

যখন নদী হয় উতলা তিন জন মেয়ের লীলা খেলা
একজন কালা একজন ধলা একজন লাল মতি
সেই নদীতে চান করিলে রং হয় গৌর মতিরে।।

মেয়ের গুণ কে বলতে পারে কিঞ্চিত জানে মহেশ্বরে
একজন শিরে একজন বুকে ধরে পশু পতি
রসিক মেয়ে থাকলে ঘরে রসের জগৎ দেখে রে।।

জ্ঞান নয়নে দেখ চেযে পুরুষ নয় সকলই মেয়ে
সাক্ষী তাহার গোপীর মেয়ে গোকুলে বসতি
সতী হয়ে ধর্ম রাখে লয়ে উপপতি রে।।

এবার মলে মেয়ে হব কালারে নারী বানাব
মহৎ গুন চেয়ে নেব সাধনের রীতি নীতি
গোঁসাই হাওড়ে বলে রাখব না আর বংশে দিতে বাতিরে।।

 

(আরো পড়ূন)

সাঁই দরবেশ যারা

সাঁই দরবেশ যারা
আপনারে ফানা করে অধরে মিশায় তারা।।

মন যদি আজ হও রে ফকির
নাও জেনে সেই ফানার ফিকির
     সে কেমন ধারা
ফানার ফিকির না জানিলে
     ভস্মমাখা হয় মশকরা।।

কূপজলে সে গঙ্গাজল
পড়িলে হয় রে মিশাল
     উভয় একধারা
তেমনি জেনো ফানার করণ
      রূপে রূপ মিলন করা।।

মুরশিদরূপে আর আলেক নূরি
এক মনে কেমনে করি
      দুইরূপ নিহারা
লালন বলে রূপসাধনে
      হোসনে যেন জ্ঞানহারা।।

(শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ১৫ এপ্রিল ২০১৮)

(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৫১)

 

(আরো পড়ূন)

মানুষ ধরো নিহারে রে

মানুষ ধরো নিহারে রে
ওরে মন নাও গে যোগাযোগ করে।।

নিহারায় চেহারা বন্দী করো রে করো একান্তি
সাড়ে চব্বিশ জেলায় খাটাও পাত্তি
পালাবে সে কোন শহরে রে
ত্বরায় মন দারোগা হয়ে
      করো রাজবন্দী স্বরূপ সঙ্গীরে।।

স্বরূপে আসন যাহার পবন হেলালে নেহার
লক্ষণ করে দেখো এবার
দিব্যচক্ষু প্রকাশ করে
দু পক্ষে খেলছে যে না
      নরনারী রূপ ধরে।।

অমাবস্যা পূর্ণমাসী তাহে নহর যোগ প্রকাশি
ইন্দ্রিয়ফাঁদ বাইশজন আদি [১]
সে যোগের বাঞ্ছায় আছে রে
সিরাজ সাঁই বলে রে লালন
মানুষ সাধো প্রমাণ রে।।

[১] এই বাক্যটি খাতায় কিছুটা অস্পষ্ট

(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৪৮)

শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ৪ এপ্রিল ২০১৮]

(আরো পড়ূন)

কোন সাধনে শমন জ্বালা যায়

কোন সাধনে শমনজ্বালা যায়।
ধর্মাধর্ম বেদের মর্ম শমনের অধিকারে রয়।।

দান যজ্ঞ স্তব ব্রত করে
পুণ্যের ফল সে পেতে পারে
সে ফল ফুরায়ে গেলে
   আবার ঘুরে ফিরতে হয়।।

নির্বান মুক্তি সেধে সে তো
লয় হবে পশুর মত
সাধক করে এমন তত্ত্ব
   মুখে কেবা সাধতে চায়।।

পথের গোলমালে পড়ে
মূল হারালাম নদীর জলে
লালন বলে কেশে ধরে
   লাগাও গুরু কিনারায়।।

(আরো পড়ূন)

না জেনে করন কারন কথায় কী হবে

না জেনে করন কারন কথায় কী হবে।
কথায় যদি ফলে কৃষি তবে বীজ কেনে রোপে।।

মিষ্টি বললে কি মুখ মিষ্টি হয়
দীপ না জ্বললে কি আধাঁর যায়
অমনি জানো হরি বলায়
   হরি কি পাবে।।

রাজায় পৌরুষ করে
জমির কর সে বাঁচায় না রে
সেই কি তোর একবারই কার্য রে
   পৌরুষে জানাবে।।

গুরু ধর খোদকে চেন
সাঁইর আইন আমলে আনো
লালন বলে তবে মন
   সাঁই তোরে নিবে।।

(আরো পড়ূন)

আগে গুরুরতি করো সাধনা

আগে গুরুরতি করো সাধনা।
ভববন্ধন কেটে যাবে আসা-যাওয়া রবেনা।।

প্রবর্তের গুরু চেন
পঞ্চতত্ত্বের খবর জান
নামে রুচি হলে জীবনে কেন
     দয়া হবে না।।

প্রবর্তের কাজ না সারিতে
চাও যদি মন সাধু হতে
ঠেকবি যেয়ে মেয়ের হাতে
     লম্ফতে আর  সারবে না।।

প্রবর্তের কাজ আগে সার
মেয়ে হয়ে মেয়ে ধর
সাধনদেশে নিশান গাড়
     রবে ষোল আনা।

রেখ শ্রীগুরুতে রতি
ভজনপথে রেখ মতি
আধাঁর ঘরে জ্বলবে বাতি
     অন্ধকার রবে না।।

মেয়ে হয়ে মেয়ের বেশে
ভক্তিসাধন কর বসে
আদি চন্দ্র রাখ কষে
     কখনো তারে ছেড় না।।

ডুব গিয়ে প্রেমানন্দে
সুধা পাবে দণ্ডে দণ্ডে
লালন কয় জীবের পাপখণ্ডে
     আমার মুক্তি হলো না।।

(আরো পড়ূন)

জানগা নূরের খবর,যাতে নিরঞ্জন ঘেরা

জানগা নূরের খবর
     যাতে নিরঞ্জন ঘেরা
  নূর সাধিলে নিরঞ্জনকে
     যাবে রে ধরা।।

নূরে নবীর জন্ম হয়
সে নূর গঠলেন অটলময়, কাঙ্গুরা
নূরের হিল্লোলে বর্ত 
   নূর-জোহরা।।

নূরের শ্রেষ্ঠ নূর
জানে স-চতুর জীব যারা,
নূর গঠিছে নূর মহম্মদ
   খাকের পিঞ্জরা।।

যে দিন নিভিবে নূরের বাতি
ঘিরবে এসে কাল দূতি, চৌমহলা,
লালন বলে রবে
    খাকের পিঞ্জরা।।

 

(আরো পড়ূন)

দেখবি যদি সে চাঁদেরে

।। দেখবি যদি সে চাঁদেরে ।।

দেখবি যদি সে চাঁদেরে
  যা যা কারণ-সমুদ্রের পারে।।

কারুণ্য তারুণ্য আড়ি
যে জন দিতে পারে পাড়ি
সে বটে সাধক
   এড়ায় ভবরোগ
       বসত হবে তাহার অমর নগরে।।

এক নদীর তিন বইছে ধারা
নাইকো নদীর কুল কিনারা
   বেগে তুফান ধায়
      দেখে লাগে ভয়
পার হবে যদি সাজাও প্রেমের তরী রে।।

যাসনা রে সামান্য নৌকায়
সে নদী বিষম তড়পায় [১]
  গেলে প্রাণে হবি নাশ, থাকবে অপযশ,ভবের পরে।।

মায়ার গেরুফি কাঠ
ত্বরায় প্রেম তরিতে চড়
সামনে কারণ-সমুদ্দুর
   পার হয় হুজুর
        যা-রে লালন শুধু গুরুবাক্য ধরে।। [২]

... ... ... ...

কথান্তর

বিভিন্ন সংকলনে এ গানের কথান্তর আছে

যেমন

[১] সে নদীর বিষয় তর্কায়...

 

[২] দেখবি যদি সে চাঁদেরে
যা, যা কারণ সমুদ্দুরের পারে।।
তারুণ্য কারুণ্য আড়ি
যেজন দিতে পারে পাড়ি
সেই বটে সাধক
এড়ায় ভবরোগ
বসত হবে তার অমর-নগরে।।

যাস রে সামান্য নৌকায়
সে নদীর বিষম গুড়খায়
গেলে প্রাণ হবি নাশ
থাকবি অপযশ
যদি সাজাও প্রেমের তরী রে।।

কারণ সমুদ্দুর পারে
গেলে পায় অধর চাঁদেরে
কারণ সমুদ্দুর
পার হয়ে গুরুর
যারে লালন সৎগুরুর বাক্‌ ধরে।।

–লালন গীতিকা, পৃ. ৬০-৬১

 

(আরো পড়ূন)

মন চোরারে ধরবি যদি

মন-চোরারে ধরবি যদি মন
     ফাঁদ পাতো আজ ত্রিপিনে
অমাবস্যা পূর্ণিমাতে
    বারামখানা সেইখানে।।

ত্রিপিনে তিন ধারা বয়
তার ধারা চিনে ধরতে পারলে হয়
কোন ধারায় তার সদাই বিহার
     হচ্ছে ভাবের ভুবনে।।

সামান্যে কি যায় তারে ধরা
আট পহর দিতে হয় পাহারা
কখন সে ধারায় মেশে
     কখন রয় নির্জনে।।

 শুক্লপক্ষে ব্রহ্মাণ্ডে গমন
কৃষ্ণপক্ষে যায় নিজ ভুবন
লালন বলে সেরূপ লীলে
     দিব্যজ্ঞানী সেই জানে।

 

 

 

(আরো পড়ূন)

ডুবে দেখ দেখি মন কিরূপ লীলাময়

ডুবে দেখ দেখি মন কিরূপ লীলাময়,
যাঁরে আকাশ পাতালে খুঁজি
     এই দেহে সে রয়।।

শুনতে পাই চার কারের আগে,আশ্রয় করে ছিল রাগে,
এ বেশে অটলরূপ ঝেঁপে
     মানব লীলা জগতে দেখায়।।

লামে আলিফ লুকায় যেমন
মানুষে সাঁই আছে তেমন,
তা নইলে কি সব নূরীতন
     আদমকে সেজদা জানায়।।

আহাদে আহম্মদ হল
আদমে যে জন্ম নিল,
লালন মহা ঘোরে প'ল
     লীলার অন্ত না পাওয়ায়।।

 

(আরো পড়ূন)

যে সাধন জোরে কেটে যায় কর্মফাঁসী

যে সাধন জোরে কেটে যায় কর্মফাঁসী
জানবি সে সাধনের কথা হও গুরুর দাসী।।

স্ত্রীলিঙ্গ পুংলিঙ্গ আর
নপুংসকে শাসিত কর
আছে যে লিঙ্গ ব্রহ্মাণ্ডের উপর
     তারে কর প্রকাশি।।

মারে মৎস্য না ছোঁয় পানি
রসিকের অমনি করণী
আকর্ষণে আনে টানি
     ক্ষীরোদ শশী।।

কারণ সমুদ্রের পারে
গেলে পায় অধর চাঁদেরে
লালন বলে নইলে ঘুরে
     মরবি চৌরাশি।।

শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ৪ এপ্রিল ২০১৮
(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৪৭)

 

(আরো পড়ূন)

মানুষের করণ,সে কি রে সাধারণ,জানে রসিক যারা

মানুষের করণ,সে কি রে সাধারণ,জানে রসিক যারা,
  টলে জীব বেবাগই,অটল ঈশ্বর রাগী।।

সেও রাগ লিখলেন বৈদিক রাগেরই ধারা,
  ফুলের ছন্দি ঘরে,বিন্দু পড়ে ঝড়ে।।

আর কি রসিক ভাই হাতে পায় তারে,যে জন নীরে ক্ষীর মিশায়,
  সে পড়ে দুর্দশায়,না মিশালে হেম অঙ্গ বিফল পারা।।

বানে বান ক্ষেপনা,বিষের উপার্জনা,
  অধোপথে গতি উভয় শেষখানা,পঞ্চবানের ছিলে,

প্রেমাস্ত্রে কাটিলে,তবে হবে মানুষের করণ করা,
  রসিক শেখরে,সে মানুষ বাস করে।।

হেতুশূন্য করণ সেই মানুষের দ্বারে,নিহেতু বিশ্বাসে,
  মিলে সে মানুষে,লালন ফকির হেতু কামে যায় মারা।।

 

(আরো পড়ূন)

এ বড় আজব কুদরতি

এ বড় আজব কুদরতি
আঠার মোকামের মধ্যে
      জ্বলছে একটা রূপের বাতি।।

কিবা রে কুদরতি খেলা
জলের মধ্যে অগ্নি জ্বালা
খবর জানতে হয় নিরালা
     নীরে ক্ষীরে আছে জ্যোতি।।

চুনি মনি লাল জহরে
সে বাতি রেখেছে ঘিরে,
তিন সময় তিন যোগ সে ঘরে,
     যে জানে সে মহারথী।।

থাকতে বাতি উজালাময়
দেখতে যার বাসনা হৃদয়
লালন কয়, কখন কোন সময়
             অন্ধকার হবে বসতি।।

............।

ভিন্নপাঠ

চুনি মণি লাল জহরা
সেই বাতি রয়েছে ঘেরা
তিন সময় তিন যোগ ধরা
যে জানে সে মহারতি।।
বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃ. ৪২-৩২;
হারামনি, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪০-৪১

ছনি মণি লাল জহরে
সেই বাতি রেখেছে ঘিরে
তিন সময় তিন যোগে ধরে
যে জানে সেই মহারথী।।
লালন-গীতিকা, পৃ. ৮৫


 

(আরো পড়ূন)

ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফাঁদ পেতে

ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফাঁদ পেতে।।
সে কি সামান্য চোরা, ধরবি কোনা কাঞ্চিতে।।

পাতালে চোরের বহর
দেখায় আছমানে নহর,
তিন তারে হচ্ছে খবর
     শুভাশুভ যোগমতে।।

কেবা চোর কেবা সে না
কে করে ঠিক ঠিকানা,
হাওয়া তার লেনাদেনা
      হাওয়া মূলাধার তাতে।।

চোর ধরে রাখবি যদি
হৃদ গারদ কর গে খাটিঁ
লালন কয় খুঁটিনাটি
      থাকতে কি চোর দেয় ছুঁতে।।

 

(আরো পড়ূন)

সূর্যের সুসঙ্গে কমল

সূর্যের সুসঙ্গে কমল
কেমনে হয় প্রেমযুগল
জানিসনে মন হলি কেবল
     কামাবেশে মাতোয়ারা
নীচে পদ্মে চরকবাণে
     যুগল মিলন চাঁদ চকোরা॥

স্ত্রীলিঙ্গ পুংলিঙ্গ নাহি
নাহি রে নপুংসক সেহি
যে লিঙ্গ ব্রহ্মাণ্ডের উপর
     কি দিব তুলনা তাহার
রসিক জানা জানছে এবার
     অরসিকে চমৎকারা॥

সামর্থারে পূর্ণ জেনে
বসে আছো সেই গুমানে
যে রতিতে জন্মে মতি
সে রতির কেমন আকৃতি
যারে বলে সুধার পতি
     স্ত্রীলোকেরই সেই নিহারা॥

শোণিত শুক্র চম্পাকলি
কোন স্বরূপ কাহারে বলি
ভৃঙ্গ রূপে করো নিরূপন
চম্পাকলি অলি যে জন
ভাবানুসারে কহে লালন
     কিসে তারে যাবে ধরা॥

 

(আরো পড়ূন)

ধররে অধর চাঁদেরে

ধর রে অধর চাঁদেরে অধরে অধর দিয়ে
ক্ষীরোদ মৈথুনের ধারা
ধর রে রসিক নাগরা
যে রসেতে অধর ধরা
     থেকরে সচেতন হয়ে।।

অরসিকের ভোলে ভুলে
ডুবিস নে কু-নদীর জলে
কারণবারির মধ্যস্থলে
     ফুটেছে ফুল অচিন দলে
চাঁদ-চকোরা তাহে খেলে
     প্রেমবাণে প্রকাশিয়ে।।

নিত্য ভেবে নিত্য থাকো
লীলার বাসে যেও না কো
সেই দেশেতে মহাপ্রলয়
মায়েতে পুত্র ধরে খায়
ভেবে বুঝে দেখ মনুরায়
     সে দেশে তোর কাজ কি যেয়ে।।

পঞ্চবাণের ছিলে কেটে
প্রেম যাচো স্বরূপের হাটে
সিরাজ সাঁই বলে রে লালন
বৈদিক বাণে করিস নে রণ
বাণ হারায়ে পড়বি যখন
     রণ-খোলাতে হুবড়ি খেয়ে।।

 

(আরো পড়ূন)

সে চাঁদ লক্ষ যোজন ফাঁকে রয়

হীরা মানিক জহুরা কোটিময়
সে চাঁদ লক্ষ যোজন ফাঁকে রয়
     কোটি কোটি চন্দ্র কোটিময়।।

ঊনকোটি দেবতা সঙ্গে আছে গাঁথা
ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব নারায়ণ জয় জয় জয়
সে চাঁদ পাতালে উদয় ভূমণ্ডলে
     সে চাঁদ মহেন্দ্র যোগে দেখা যায়।।।।


ষড়চক্র পরে আছে তার আদি বিধান
পূর্ণ করে ষোলকলা ভেদ করে সপ্ততালা
তার ওপরে বসে কালা মধু করে পান।
যে জন শুদ্ধ সাধক হয়  সে চাঁদ দেখিতে পায়
সে জন মৃণাল ধরে উজান ধায়।।

নবলক্ষ ধেণু চরায় যে রাখালে
ভাণ্ড ভেঙ্গে ননী খায় সেই গোপালে।
চাঁদের খবর সেই জানে
চাঁদ ধরেছে বৃন্দাবনে  শ্রীরাধার কমলে।
লালনের ফকিরি করা নয় ফিকিরি
দরবেশ সিরাজ সাঁই  যদি ছায়া দেয়।।

 

(আরো পড়ূন)

জান গে সেই রাগের করণ

জান গে সেই রাগের করণ
যাতে কৃষ্ণবরণ হলো গৌরবরণ।।

শতকোটি গোপী সঙ্গে
কৃষ্ণপ্রেম রসরঙ্গে।
সে যে টলের কার্য নয় অটল না বলয়
     সে আর কেমন।।

রাধাতে যে ভাব কৃষ্ণের
জানে না তা গোপীগণে।
সে ভাব না জেনে
     সে সঙ্গ কেমনে পাবে কোনজন।।

শম্ভুরসের উপাসনা
না জানিলে রসিক হয়না।
লালন বলে সে যে নিগূঢ় করণ ব্রজে
     অকৈতব ধন।।

 

(আরো পড়ূন)

বিষম রাগের করণ করা

বিষম রাগের করণ করা
চন্দ্রকান্ত যোগ মাসান্তে
     জানে কেবল রসিক যারা ॥

ফণির মুখে হস্ত দিয়ে
বসে আছে রসিক নির্ভয় হয়ে
হুতাশন শীতল করিয়ে
     অনলেতে দিচ্ছি পারা ॥

যোগমায়া রূপ যোগের স্থিতি
দ্বিদলে হয় তার বসতি
জান যদি কোন ব্যক্তি
     হও তবে জ্যান্তে মরা ॥

সিরাজ সাঁই দরবেশে বলে
লালন থাক গা ডুবে সিন্দুজলে
তাতে অঙ্গ শীতল হলে
(হবি) চন্দ্রভেদী  রসিক তোরা ॥

 

[ভাব-সঙ্গীত,পৃ-১৫২, গান নং ৪১৫]

 

(আরো পড়ূন)