রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বনাম ব্যক্তির প্রতিরোধ
কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাবার পর মাহমুদুর রহমান কথা বললেন।
মঙ্গলবার ( ৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মাহমুদুর রহমান প্রথম সংবাদ সম্মেলন করলেন। দীর্ঘকাল ক্ষমতাসীনদের অন্যায় নির্যাতনের শিকার দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের কথা শুনতে সাংবাদিকরা আগ্রহী ছিলেন। তাঁর কথা কতোটা সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করবে বা করলেও অবিকৃত ভাবে করবে কিনা সে সম্পর্কে মাহমুদুর রহমান নিজেও সন্দিহান ছিলেন। তবে তিনি কী বলতে চান সাংবাদিকদের তা জানার আগ্রহ ছিলো। গণমাধ্যমের বর্তমান ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর কথা বিশেষ প্রচারিত না হওয়াই স্বাভাবিক। তবে উপস্থিত পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তরুণ সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ মনে করে মাহমুদুর রহমানের বাক ব্যক্তি স্বাধীনতা ক্ষমতাসীনরা যতোই হরণ করুক, তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির একজন নির্ধারক ব্যাক্তিত্ব। ফলে তিনি এখন কি বলছেন তার গুরুত্ব রয়েছে। তাই তাঁর কথার মধ্য দিয়ে এখনকার চিন্তা ভাবনা বোঝা যায় কিনা সেটা জানার আগ্রহ ছিল অনেকেরই।
মাহমুদুর রহমান কোন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নি। তার সামনে রাখা মাইক কাছে টেনে নিয়ে তিনি খুবই স্বাভাবিক আলাপী ভঙ্গীতে প্রথমেই সাংবাদিকরা কেমন আছেন জানতে চান। তারপর প্রায় ১৮ মিনিট তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হাজির করেন। তিনি মূলত সরকার ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতন এবং বিচার বিভাগের অবিচার ঙ্কিভাবে একজন ব্যাক্তিকে অধিকারহারা মানুষে পর্যবসিত করে সেই দিক্টি তুলে ধরেছেন।
আমরা তাঁর পুরা বক্তব্যের ট্রান্সক্রিপট এখানে দিচ্ছি, যাতে পাঠক নিজের মতো করে পড়তে ও বুঝতে পারেন। মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে আমাদের বিশেষ আগ্রহের কারণ হচ্ছে তাঁকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন সরকার ও রাষ্ট্রের আচরণ বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কংক্রিট চরিত্র বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক। বিচারবিভাগের ভূমিকা এবং উচ্চ আদালতের রায়ের সঙ্গে নাগরিক ও মানবিক অধিকারের সাংঘর্ষিক দিক উদাম হয়ে পড়া, আইন শৃংখলা বাহিনীর চরিত্র ইত্যাদি নানান দিক থেকে মাহমুদুর রহমান দেশে ও বিদেশে মানবাধিকার কর্মীদের খুবই আগ্রহের বিষয়। এর সঙ্গে গণমাধ্যমের ভূমিকাও খুবই প্রাসঙ্গিক।
দ্বিতীয়ত মাহমুদুর রহমান একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং তার সমর্থক শ্রেণি ও গোষ্ঠির বিরুদ্ধে লড়ছেন। যার সঙ্গে যুক্ত দিল্লীর আগ্রাসন ও আধিপত্য। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে তার সাহসী ভূমিকা বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি তাঁর এই শক্তিকে কিভাবে গঠনমূলক ভাবে কাজে লাগান সেই দিকে অনেকের নজর থাকা খুবই স্বাভাবিক। তার পক্ষ বিপক্ষের সকলেই গভীর মনোযোগের সঙ্গে সেই দিকে নজরে রাখছে। ইতোমধ্যে আইনী লড়াইয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
দীর্ঘ কারাবাসের পর কারাগার জামিন পেয়ে তাঁর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। এর মধ্য দিয়ে আমরা তাঁকেও বুঝতে চাই। তাঁর লড়াইয়ের বয়ান, নীতি ও কৌশল বাংলাদেশের ফ্যসিবাদ বিরোধী লড়াইকে নানান দিক থেকে প্রভাবিত করবে। একে শক্তিশালী করবার সমস্ত সম্ভাবনা সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ভাবে হাজির। মাহমুদুর রহমান তাকে আমলে নিয়ে কি ভূমিকা রাখেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারনেই তিনি ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে সরব। তাঁর বিখ্যাত একটি উক্তি হচ্ছে, ‘মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নাই’। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সেটা তাঁর নির্বাহী আদেশ দিয়ে আমাদের কাছে কথাটির তাৎপর্য নতুন ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এবারও মাহমুদুর তাঁর কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন।
বাংলাদেশের যে কোন বৈপ্লবিক রূপান্তরে ইসলামের ভূমিকা থাকবে, কিন্তু তার চরিত্র কী হবে সেটা স্পষ্ট হয়েছে এখনই দাবি করা যাবে না। মাহমুদুর রহমান সেই দিক থেকেও আগ্রহের কারন। তাঁর বক্তব্যে এবং কর্মতৎপরতায় তিনি সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কথা বলেন, সেখানে ইসলামের ভূমিকা অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু সেটা নিছকই ইসলামপন্থা নয়। ইসলাম তাঁর কাছে নেহায়েত ধর্মতত্ত্ব নয়, সেটাও পরিষ্কার। কারন ইসলাম একই সঙ্গে ইহলৌকিক ইতিহাসও বটে, বিশেষত এই উপমহাদেশের ইতিহাস। ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদৌ পরিস্ফুট হবে কিনা কিম্বা কিভাবে হবে ইত্যাদি বর্তমানে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিতর্ক। সঙ্গত ভাবেই বাংলাদেশের তরুণ ভাবুকদের সেটা পর্যালোচনার বিষয়। ‘চিন্তা’ পত্রিকার জন্য এই দিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর তাঁর প্রথম সাংবাদিক সম্মলনের বক্তব্য আমরা এখানে হুবহু পেশ করছি। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্রও তিনি সাংবাদিকদের বিতরন করেছেন। আমরা সেই দলিলগুলোও যুক্ত করছি।
বোঝা ও পর্যালোচনার দায় পাঠকদের।
১. মাহমুদুর রহমানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত ডাক্তারি কাগজপত্র
৩. ইউকে ভিসা
... ... ... ... ...
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমানের বক্তব্য
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম।উপস্থিত সাংবাদিক বৃন্দ। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা সবাই। আমি ভাল আছি। আপনারা অবগত আছেন যে কাশিমপুর থেকে নভেম্বররের ২৩ তারিখে আমার বড় জেলে স্থানান্তর হয়েছে। ৫৪ হাজার বর্গ মাইলের বড় জেল। আমি এই পর্যন্ত আপনাদের কাছে কোন বক্তব্য দেইনি। অনেক সংবাদ কর্মী আমার ইন্টারভিউ করতে চেয়েছেন। দেশ বিদেশী মিডিয়া ইন্টারভিউ করতে চেয়েছেন। আমি চেয়েছিলাম আপনাদের সবাইকে আমার বক্তব্য একসঙ্গে জানাবো। যাতে করে বাংলাদেশের জনগণ আমার বক্তব্য জানতে পারে। একটি পত্রিকা বা একটি রেডিওতে আমি ইন্টার ভিউ দিতে চাইনি।
তার পরে প্রায় আড়াই মাস কেটে গেছে। আমি আড়াই মাস বিলম্ব করেছি আপনাদেরকে আমার বক্তব্য জানানোর জন্য। তার প্রধান কারণ ছিল দুটো একটা আমার অসুস্থতা। আপনারা অবগত আছেন যে বর্তমান সরকারের ৮ বছরে আমি ৫ বছর জেলে ছিলাম। তার মধ্যে বিগত ৪ বছরএকটানা। আমার বয়স ৬৩ বছর। এই বয়সে ৪ বছর জেলে থাকার ফলে যে সব ধরণের রোগ হওয়া্র কথা সেগুলি সবই আমার হয়েছে। তার পরে রিমান্ডে নির্যাতন। রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে কিছু অতিরিক্ত রোগ যোগ হয়েছে।
এই কারণে আপনারা জানেন যে সর্ব প্রথম কাশিমপুর থেকে বের হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। আপনাদেরকে আমি কিছু নথিপত্র দেব।যেগুলো আমার আজকের বক্তবের সাথে প্রাসঙ্গিক হবে। সেইগুলি আপনারা যখন রিপোর্ট তৈরি করবেন তখন এই নথিপত্র গুলো আপনাদের রিপোর্ট করতে সহায়তা করবে। ইউনাইটেড হাসপাতাল আমার যে কেইস সামারি করলো সেখানে অনেক অসুখের পাশাপাশি প্রধানত তারা যেটা বলল, সেটা হোল:
During hospital stay, he was reviewed by Cardiologist, Neuromedicine, Orthopedic Surgeon, Neuro Surgeon and Urologist. Expert Neurosurgical opinion was to go for urgent surgical intervention and preferably i abroad.
অর্থাৎ আমার নিউরো সার্জারির জন্য অপারেশন করতে বললো। এবং এই অপারেশনটা যেহেতু জটিল তারা বললো যে বিদেশে গিয়ে করাই বাঞ্ছনীয়। আপনারা জানেন যখন আমি মুক্তি পাই একটা বেইল ছিল। সেই বেলের একটা শর্ত ছিল, সেটা হলো আমার পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। সেই শর্ত অনুযায়ী আমরা তখন আপিল বিভাগের কাছে ফিরে গেলাম। আপিল বিভাগ যেহেতু আমার পাসপোর্ট জমা নিয়েছেন। আপিল বিভাগকে জানালাম আমার যেহেতু চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে, আমার পাসপোর্টটি ফেরত দিন। আপিল বিভাগ বললেন তারা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের রিপোর্টটাকে ঠিক বিশ্বস্ত মনে করতে পারছেন না। এই জন্যে মাননীয় আপিল বিভাগ ঢাকা মেডিকেল কলেজের তিন বিভাগীয় প্রধানের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে দিলেন। সেই মেডিকেল বোর্ড আমাকে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিল। সেই রিপোর্টে ইউনাইটেড হাসপাতালে যে কথাগুলি বলেছিল সেই কথাগুলিই তারা মেডিকেল টার্মে বললো । তার কি বলল? তারা বলল:
Diagnosis- Cervical spondylosis with right radiculopathy with right shoulder adhesive capsulitis with right lumbago-sciatica।
The patient may be evaluated for option of surgical intervention by other specialists in an advanced center.
নির্যাতনের ফলে প্রধানত আমার যা হয়েছে তাতে আমার ডান হাত আমি উঠাতে পারিনা। গত তিন বছর ধরে চিকিৎসা না হওয়ার কারণে আমার ডান হাতটা আটকে গেছে। এর সঙ্গে ঘাড়ের হাড় ক্ষয় হয়েছে, কোমরের হাড় ক্ষয় হয়েছে। এই কারণে তারা বললো রোগীকে বিদেশে গিয়ে কোন হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর জন্য। তারা বললেন।
The patient may be evaluated for option of surgical intervention by other specialists in an advanced center.
এই রি্পোর্টের ভিত্তি করে মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট আমার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিলেন। প্রধানত ৪ টি শর্ত সাপেক্ষে।
১. প্রধান শর্ত দিলেন আমি কেবল মাত্র ইউকে ৩০ দিন অবস্থান করতে পারবো, শুধুমাত্র চিকিৎসা গ্রহনের জন্য।
২. দ্বিতীয় শর্ত তারা বললেন আমি বিদেশে গিয়ে আমি রাজনৈতিক কোন কর্মকাণ্ড করতে পারবো না।
৩. তিন নাম্বার তারা বললেন চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরে আসার পরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাকে আদালতের কাছে পাসপোর্ট জমা/ফেরত দিতে হবে।
৪. চতুর্থ শর্ত, যে মামলাতে আমাকে জামিন দেয়া হয়েছে সেই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আর পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেয়া হবে না।
আমাকে বলা হল আমি কেবল ইউকেতে যেতে পারবো। ইউকেতে গিয়ে আমি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারবো না। এবং পাসপোর্ট যে আবার আমি জমা দেব মামলা নিষ্পত্তি না পর্যন্ত পাসপের্ট ফেরত পাবনা।
আপনাদের যাদের কাছে পাসপোর্ট আছে তারা জানেন পাসপোর্টে লিখা থাকে ইজরাইল ছাড়া সকল দেশের জন্যই বাংলাদেশের নাগরিকদের পাসপোর্ট প্রযোজ্য । শুধু আমার ক্ষেত্রে সুপ্রিমটকোর্ট যে রায় দিলেন তার অর্থ হচ্ছে শুধু নিজের জন্যই পাসপোর্ট। এটা গেল এক নম্বর। দুইনম্বর হলো সংবিধান অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা নাগরিক অধিকার। সুপ্রিমকোর্টের আদেশ অনুযায়ী আমার কিন্তু নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হলো । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান যদি দেখি মৌলিক অধিকারের ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ এই ৫ টি মৌলিক অধিকার আমার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশে আমার প্রতি যে নির্যাতন করা হয়েছে, আর কারো প্রতি এভাবে হয় নি যেটা সাংবিধানিক সাথে সাংঘর্ষিক। ৩৬ নাম্বারে বলা হয়েছে চলাফেরার স্বাধীনতা । আমার চলাফেরার স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। এটা মৌলিক অধিকার পরিপন্থী । ৩৭ নাম্বরে বলা হয়েছে সমাবেশের স্বাধীনতা। যখনই আমাকে বলা হচ্ছে আমি কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবো না। তার মানে আমার সমাবেশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। ৩৮ নাম্বারে বলা হয়েছে সংগঠনিক স্বাধীনতা এটাও সমাবেশের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। ৩৯ নাম্বার অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা । আপনারা জানেন আমার দেশ প্রেস আজ চার বছর ধরে পুলিশের দখল দারিত্বে তার মানে আমার বাক স্বাধীনতা এবং চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতাও কেড়ে নেয়া হয়েছে। ৪০ নাম্বারে পেশা ও বৃত্তির স্বাধীনতা । বাংলাদেশের সকল নাগরিক আইন অনুযায়ী একটা পেশায় অংশগ্রহন করতে পারবেন। আমার এবং আমার প্রেসের সাংবাদিকদের দুর্ভাগ্য আমি বাংলাদেশের সেই পেশার অধিকার থেকে বঞ্চিত।
আপনারা জানেন ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম। গ্রেফতার যে বছর হই সে বছর২১ একুশে ফেব্রুয়ারি বই মেলায় আমার যে বইটি প্রকাশিত হয়েছি। সে বই টি প্রকাশিত হয়েছিল সে বইটির নাম মুসলমানের মানব অধিকার থাকতে নেই। মুসলমানের যে মানবাধিকার থাকতে নেই সেটা বিশ্বের দিকে তাকালেই আমরা দেখতে পাবো । আমেরিকায় দেখতে পাচ্ছি মুসলমানেদের ভিসা দেয়া হচ্ছে না্। এবং সেখানে বলে দেয়া হচ্ছে আপোসে অন্য ধর্মের জন্য এটা প্রযোজ্য হবে না। আমার ক্ষেত্রে দেখুন সুপ্রিকোর্টের আদেশ অনুযায়ী আমার নাগরিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। অনুযায়ী আমার মানবাধিকার খর্ব করা হয়েছে। রাষ্ট আমার নাগরিক খর্ব করেছে।আমাকে যখন বলা হয়েছে চিকিৎসার জন্য শুধু ইউকেতে যেতে পারবো। সেই অনুযায়ী ইউকেতে যখন ভিসার জন্য আবেদন করলাম। ইউকে সরকার আমাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছে। তার মানে আমার চিকিৎসার জন্য ইউকেতে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তার মানে আমার চিকিৎসার অধিকারও নেই। আমার মত অধিকারহীন মানুষ মনে হয় বাংলাদেশে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় আর কেউ নেই। এটা হলো বাস্তবতা। যুক্তরাজ্য কেন ভিসা দেয়নি খুব ইন্টরেষ্টিং । ১৯৮৬ সালে আমি প্রথম যুক্তরাজ্যে যাই। সর্বশেষ ২০১২ সালে গিয়ে ছিলাম চিকিৎসার জন্যে। যুক্তারাজ্যে এই ৮৬ সাল থেকে আমার ৫ বছরের ভিসা প্রত্যেক বার রিনিও করা হয়।তার মানে গত ৩০ বছরে ধরে ৫ বছরের ভিসা রিনিও করা আছে। এর পর থেকে প্রতিবারই পাঁচ বছরের জন্য আমার ভিসা নবায়ন করা হয়।
আমার চোয়ালের অপারেশনের জন্য যুক্তরাজ্য গিয়েছিলাম। সেই যুক্তরাজ্য আমাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করলো।
মানবিক কারণেও আমাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করলো। তার মানে হচ্ছে মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশের ইসলামের পক্ষের শক্তি । মুসলমানের পক্ষের শক্তি। কাজেই বাংলাদেশে বা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাহমুদুর রহমানের কোন মানবাধিকার থাকতে পা্রে না। কাজেই ২০১৩ সালে যে বইটি লিখেছিলাম মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নেই। আমি খবর পেয়েছি এবছরও আমার প্রকাশক একুশে বই মেলায় বইটি বিক্রি করছে। ঐ বইতে যা লিখে ছিলাম তা আমাদের নিয়ে প্রমাণ হলো।
আপনারা চিন্তা করে দেখুন আমি যদি ইসলামের বিরুদ্ধের শক্র হতাম তা হলে আমাকে ভিসা চাইতে হতো না।পশ্চিমা বিশ্ব আমাকে ডেকে নিয়ে ভিসা দিত।এর উদাহরন অজস্র। এখানে আপনি যদি ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাহলে বাংলাদেশে আপনি নিরাপদ, ইসলামের বিরুদ্ধে আপনি কথা বললে তাহলে আপনি পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আদরনীয় ব্যাক্তি। আপনাকে আদর করে ডেকে নিয়ে যাবে। আমি কারো ব্যক্তিগত নাম উল্লেখ করতে চাই না। এর প্রমান সাংবাদিকদের কাছে ভু্রি ভুরি আছে। আপনি আজকে ইসলামের বিরুদ্ধে একটা পোষ্ট দিবেন, আগামীকাল ভিসা চাবেন তাহলে ভিসা পেয়ে যাবেন। সবচেয়ে সহজ উপায় ভিসা পাওয়া এবং পেসিডেন্ট ট্রাম্প আসার পরে সারা দেশের অবস্থা কি হচ্ছে সেটা আপনারা দেখতে পারছেন। এবং ইউএস এর সঙ্গে আপনারা জানেন ইউকের একটা সখতা রয়েছে।এবং প্রথম রাষ্ট্র সরকার প্রধান করা হিসাবে যুক্তরাজের প্রধান মন্ত্রী থেরেসা মে হোয়াইট হাউস ঘুরে এসেছেন প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে ট্রাম্পের, তবে সেই যুক্তরাজই আমাকে যে ভিসা দেয়নি এতে আমি দুঃখিত হয়েছি কিন্তু অবাক হইনি এটা আমার কাছে প্রত্যাশিত ছিলনা। আমি ভেবে ছিলাম যুক্তরাজ্য সম্ভবত আমাকে ভিসা দিবে না।
এখন আমরা আসি বাংলাদেশের অবস্থানে
আপনাদের মনে আছে যে আমি যখন আমার দেশ প্রত্রিকা অফিসে গৃহবন্দি ছিলাম পোশাকধারী এবং বিনা পোশাকধারী পুলিশের দ্বারা আমি ২৪ ঘন্টা অফিসে ঘেরও অবস্থায় যখন ছিলাম। তখন সেখান থেকে আপনাদের মাধ্যমে আমি স্বাংকৃতিক বিপ্লবের কথা বলেছিলাম আজ থেকে ৪ বছর আগে। আজকে আমি দেখতে পারছি এমন কি তথাকথিত স্যেকুলাররাও ভারতীয় টিভির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, ভারতীয় সিনেমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। আমি কিন্তু সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ডাক দিয়ে এই স্বকীয়তাকে উঠিয়ে আনতে বলেছিলাম। যে বাংলাদেশের একটা আলাদা আইডেনটিটি থাকবে আলাদা আইডেনটিটি অনুযায়ী আমাদের আলাদা ও নিজস্ব বাংলাদেশের সংস্কৃতি থাকবে। সেই সংস্কৃতি আমাদের জন্য ইউনিক সংস্কৃতি হবে। আমরা কোনো বৃহৎ রাষ্ট্রের সংস্কৃতির সধারক বাহক হব না। এটাই আমার ডাকের প্রধান কারণ এবং আমি গণতন্ত্রের জন্য বাক স্বাধীনতার জন্য আমিকরেছিলাম। সেই গণতন্ত্র বাকস্বাধীনতার অবস্থা বিগত ৪বছরে কোথায় গেছে সেটা আপনারা ভাল করে যানেন। বাংলাদেশে মিডিয়া সেলফ সেন্সরশিপ করছে। এবং আপনার হয়তো আমার সাথে একমত হবেন যতধরনের সেন্সরশিপ আছে তার মধ্যে সেলফ সেন্সরশিপ অর্থাৎ সাংবাদিক ভাই বোনের যেটা নিজেরাই করেন সেটা সবচাইতে ভয়াবহ সব চাইতে অবমাননার। আপনারা স্বীকার করবেন। বাংলাদেশে কিন্তু আজ তাই চলছে।
আমি আজ আপনাদের মাধ্যে একটি বক্তব্য দিচ্ছি, আমি নিশ্চিত নই যে বক্তব্যের কতটা প্রকাশিত হবে বাংলাদেশের বর্তমান নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াতে। কিংবা কতটা অবিকৃত ভাবে আমার বক্তব্য প্রকাশিত হবে সেটা আমি খুব একটা নিশ্চিত নই। কিন্ত আজ আমার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা এবং আমার পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনাদেরকে অবহিত করা।
বাকস্বাধীনতার অবস্থা আমরা যদি দেখি বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ এর পহেলো জানুয়ারি থেকে ২০১৭ এর ফেব্রুয়ারির ৩ তিন তারিখ পর্যন্ত কতজন সাংবাদিক নিহত হয়েছে আপনারা জানেন? ১৫জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে। আটক হয়েছে ৮৮৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৬ জন সাংবাদিক এবং মামলা হয়েছে ২০০ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। আমার বিরুদ্ধে ৮১টা মামলা হয়েছে সেটা আপনারা ভাল করে জানেন এবং সেই মামলার মধ্যে আছে রাষ্ট্রদ্রোহ থেকে শুরু করে মানহানী গাড়ী পুড়ানো। আমি না কি রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িও পুড়িয়েছি।এই রকম মামলাও ৭-৮টা আছে। এই হল বর্তমান বাকস্বাধীনতার বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবস্থা। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবস্থা আমি ৪বছর জেলে ছিলাম আপনারা আমার চেয়ে আরো ভাল জানেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এখন কোথায় গেছে। এবং সেই স্বাধীনতা উদ্ধারের জন্য আমাদের জনগণকে কি কি ত্যাগ করতে হবে সেটা বিবেচনা করার সময় এসেছে।
শুধু আপনাদেরকে বলে রাখি যে আদর্শ বুকে নিয়ে আমি গ্রেপ্তার হয়েছিলাম ৪বছর আগে আমি সেই আদর্শই এখন অটল আছি। সেই আদর্শের জন্য লড়াই করার মত হাতিয়ার আমার কাছে নাই। কারণ আমার পত্রিকার প্রেস এখন পুলিশের অবৈধ দখলদারিত্বে আছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখে মাত্র ৫দিন আগে আমি নিম্ন আদালতে একটা মামলা করেছি। মামলায় আমি বাদি। আমি বলেছি এই প্রেস আমার কাজেই এই প্রেস আমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক আমি আশা করি আদালত এই ব্যাপারে আইনগত সিদ্ধান্ত আমাকে দেবে এবং আমাদের প্রেস ফিরে আসবে। আমাদের কর্মস্থিত সাংবাদিক সংবাদকর্মীরা আবার প্রেসে কাজ করতে পারবে। এর জন্য আমি প্রস্তত আছি, আর যেটা আমি এখন বলতে পারি লেখালেখি করতে পারি। কিন্তু লেখালেখির সমস্যা হচ্ছে লেখালেখি আমি করছি, ৪বছর ধরে লিখছি আমি জেলখানায় বসেও লিখতাম অবশ্য লিখতাম। কিন্তু কোথায় ছাপাবো? বাংলাদেশের কোন পত্রিকার মাহমুদুর রহমানের লেখা ছাপানোর সাহস নাই। এবং অনলাইনে ছাপানোর কোন সুযোগ নাই। আমার দেশ অনলাইন আপনারা জানেন সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। ৩৫টা অনলাইন একদিনে বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন জেলে। এর মধ্যে আমার দেশ অনলাইনও আছে।এর জন্য সাংবাদকরা অনেক আন্দোলন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো আন্দোলন করে এখন কোন কাজ হয় না। এবং এটি ইতিহাসের শিক্ষা কোনো ফ্যাসিবাদি সরকারের সময় আন্দোলনে কোনো কাজ হয় না। কারণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ফ্যাসিবাদ রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে নিপীড়নের মাধ্যেমে আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত তাই হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ লাঠিপিঠা হচ্ছে পুলিশ গুলি করছে এর মধ্যে কোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার কোনো পরিবেশ হচ্ছে না।
তবু আমি লিখে যাচ্ছি, আমি বর্তমানে ইতিহাস রচনা করে যাচ্ছি।কোনো একদিন হয়তো এটা ছাপা -হবে। কোনো একদিন বাংলাদেশের জনগণ জানবেন যে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে---সেটার জন্যই আমি লিখে যাচ্ছি এবং আমি হয়তো কোন একসময় ছাপাবো। বর্তমানে আমার কোনে কর্মক্ষেত্র নেই আমার বাসায় আমার কর্মক্ষেত্র সেখানেই আমি থাকি এবং আমি অসুস্থ্। আপনাদেরকে আমি বর্ণনা দিলাম আমার অসুখের বর্ণনা দিলাম। হয়তো এই মুহূর্তে আমি মৃত্যপথের যাত্রী নই। আল্লাহ জানেন, আয়ু আল্লাহ জানেন। আমার যে শারিরীক অবস্থা তাতে আমি পূর্ণভাবে কর্ম ক্ষমতায় নাই। দুইপাতা লিখলে পরে আমার হাত ব্যাথ্যা হয়ে যায় হাত তখন আর চলতে চায় না তখন বিশ্রাম নিতে হয়। তারপরে আবার লিখতে হয়। আপনারা দোয়া করবেন যাতে করে যে লড়াইর জন্য যে আদর্শের জন্যে আমি বর্তমান সরকারের নিপিড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলাম যাতে আমার এই আওয়াজ সহায়ক হয়ে থাকে। আদর্শবিচ্যূত যেন আমি না হই। আমি যে ইসলামের পক্ষে ছিলাম সেই ইসলামের পক্ষে যেন আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকতে পারি। আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রশ্ন: সাংবাদিক জুনায়েত হোসেন
আপনাকে যে পরীক্ষানিরীক্ষা থেকে আপনার অপারেশান লাগলে আপনাকে বেশিদিন থাকতে হবে কিনা, সেই ক্ষেত্রে আদালতের অবস্থান আপনার আইনজীবি জানতে চেয়েছিলেন কি না?
উত্তর: আমার আইনজীবি সবকিছুই বলেছেন এবং আমারআইনজীবির কথা শুনে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট তাদের ডিসিসন অনুযায়ী রায় দিয়েছেন এবং তাদের সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন নেই আর এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে করে আমি তো বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করতে পারছি না। তার মানে আমাকে বিনা চিকিৎসাতেই থাকতে হবে।
ইউকে সরকারের ধারণা হয়েছে তারা যে ইসলামের পক্ষে লিখার জন্য ভিসা দেয় কি না তারা তো বলতে পারে না। তারা যে কারণ দেখিয়েছে তা খুব হাস্যকর। তারা বলেছে তাদের কাছে মনে হয় আমি হয়তো ইউকে-তে গিয়ে আর ফিরবো না এরকম তাদের কাছে মনে হয়েছে। আমার বয়স ৬৩ বছর, ৬৩ বছর বয়সে আমি বিদেশে গিয়ে ফিরবো না এরকম চিন্তা করাটা হাস্যকর এই কারনে বলতেছি যে ২০১২ সালে আমি ইউকে-তে গিয়েছিলাম চিকিৎসা করার জন্য। লন্ডন ড্রিম হসপিটালে আমার অপারেশন হয়েছিল এবং ৭দিনের মধ্যে আমি ফেরত চলে এসেছিলাম। ২০১২ সালে আমি কিন্তু নিপিড়নের মধ্যে ছিলাম। ২০১১ পর্যন্ত ১ বছর জেল খেটেছি ৫০টা মামলা তখন দায়ের হয়ে গিয়েছে। আমার যদি থাকার ইচ্ছা থাকত,তাহলে ২০১২ সালে আমি থেকে যেতে পারতাম। কিন্তু বাংলাদেশে লড়াই না করে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে ইউকে-কেতে এসাইলেম নেয়ার ইচ্ছা আমার কোনদিন ছিল না; এরকম দুর্মতি যেন আমার না হয়, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
না অন্য কোনো দেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে ইউকে-ছাড়া আর অন্য কোথাও যেতে পারবো না। নতুন করে আবেদন আরো জটিল কারণ রিভিউর মাধ্যমে দিয়ে ছিলাম আবার হয়তো রিভিউর জন্য যাওয়া যেতে পারে কিন্তু রিভিউ করে গেলে পরে কিন্তু আমি যে দেশের ভিসা চাইবো তারা যে আমাকে ভিসা দিবে তার কোনো গেরান্টি নেই। কারণ মাহমুদুর রহমান যে ইসলামের পক্ষে এই পরিচয় তো মাহমুদর রহমানের মুছে যাবে না,এই পরিচয় তো থেকে যাচ্ছে। এবং মাহমুদুর রহমারে যে পর্যন্ত কোন পরিবর্তন হয় নাই – চার বছর এত জুলুম নির্যাতনের পরেও সে কথা আমার বক্তব্য থেকে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। কাজেই এই মহুর্তে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশে থেকে যতটুকু চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব ততটুকু চিকিৎসা নিবো, বাকিটা আল্লাহ’র উপরে; আল্লাহ যা চান তাই হবে।
আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনারা যে আমার ডাকে এখানে এসেছেন আমার বক্তব্য ধৈর্য ধরে শুনেছেন। আমরা আশা করি সংবাদকর্মীরা উপস্থিত আছেন তারা আমার যে বক্তব্য এটা যথাযথ ভাবে আপনারা প্রকাশ করবেন।
আল্লাহ হাফেজ।