৯. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ


ইংরেজি ‘হার্ড’ (Herd) কথাটার মানে 'পশুর পাল'। এখান থেকে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ (Herd Immunity) কথাটার জন্ম। অর্থাৎ পুরা পশুর পালের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির চেষ্টা করা। করোনাভাইরাস জাতীয় সংক্রমণের ক্ষেত্রে 'পাল' মানে পশুর পাল না, মানুষের পাল। জনগোষ্ঠি। ‘হার্ড ইমিউনিটি’র মানে পালের , অর্থাৎ জনগোষ্ঠির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন যাতে কোভিড-১৯ আমাদের কাবু করতে না পারে।

কিভাবে আমরা ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করি? দুই ভাবে সেটা সম্ভব। একটি হচ্ছে রোগ প্রতিষেধক টিকা-ভ্যাক্সিন দেওয়া, অর্থাৎ কৃত্রিম ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা। অন্যটি হচ্ছে প্রাকৃতিক ভাবে অর্জন। সংক্রমিত হলে শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে। করোনাভাইরাসের কোন ভ্যাক্সিন নাই, অতএব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনের একটাই পথ, সংক্রমণ।

দেখা যাচ্ছে সংক্রমণ ঘটতে দেওয়া মহামারী মোকাবিলার একটা পথ হতে পারে। এতে অনেকে বিস্মিত হতে পারেন। কিন্তু বিস্ময়ের কিছু নাই। এটা অবৈজ্ঞানিক কিছু নয়। কিন্তু স্বাস্থ্য সেবার ওপর চাপ যেন না পড়ে তার জন্য মহামারী দ্রুত ছড়াতে দেওয়া যাবে না। তাই সংক্রমণ ঘটতে দিতে হবে আস্তে আস্তে, দেরি করিয়ে (delay)। নীতিগত তর্ক চিকিৎসাশাস্ত্র কিম্বা রোগবিস্তারবিদ্যা থেকে আলাদা। দেরি করিয়ে আস্তে আস্তে সংক্রমন ঘটতে দেওয়া জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে দক্ষ ভাবে ব্যবহারের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত। যাদের নিবিড় পরিচর্যার দরকার, তারা যেন জরুরি সেবা পেতে পারে। তাই সেই শুরু থেকেই রোগ দ্রুত যেন না ছড়ায় সেই ব্যবস্থা করা হয়। ছোঁয়াছুয়ি এড়ানো, সঙ্গরোধ, সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে ভাল করে হাত ধোয়া ইত্যাদি এই জন্যই এতো জরুরী; শুধু আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত ভাবে রক্ষা করার জন্য না, যাদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দরকার, তারা যেন সেটা পেতে পারে সেটা নিশ্চিত করা সকলেরই সামাজিক দায়িত্ব। মহামারী হঠাৎ যেন আমাদের সবকিছু তছনছ করে না দিয়ে যায় সে ব্যাপারে সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে। জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার যা সুবিধাটুকু রয়েছে আমরা যেন তা দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারি।

তাই একটি ছোঁয়াচে রোগের যখন কোন ভ্যাক্সিন নাই, আবিষ্কৃত হয় নি, তখন সেই জনগোষ্ঠির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করবার উদ্দেশ্যে মহামারীকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে আস্তে আস্তে সারা দেশে দেরিতে ছড়িয়ে পড়তে দেওয়া মহামারী মোকাবিলার একটা পদ্ধতি হতে পারে। কিন্তু সবাইকে আক্রান্ত করতে দেওয়া বা করা না। বরং অধিকাংশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নাই তাদের রক্ষা করা কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলার একটি পদ্ধতি। এই ক্ষেত্রে ডাক্তারি অনুমান হচ্ছে মানুষ আক্রান্ত হোক, ঠিক আছে। কিন্তু একবার আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠলে সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। সে আর দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয় না।

চিকিৎসা শাস্ত্র এবং রোগবিস্তার বিদ্যা (epidemiology) দাবি করে, মোটামুটি শতকরা ৬০জনের বেশী রোগী যদি আক্রান্ত হয় তাহলে পুরা পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। এর দ্বারা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নাই, তারাও হয়তো বেঁচে যেতে পারে। ধীরে ধীরে মহামারীর বিস্তারে একসময় জনগোষ্ঠির ষাটভাগের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠলে পুরা পালের বা ‘হার্ড’-এর মধ্যে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। ‘হার্ড ইমিউনিটি’ কিম্বা পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনের তত্ত্ব এই জন্য জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা পরিকল্পনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কেউ একবার আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠলে এরপর সে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয় না, অন্য কাউকে আক্রান্তও করে না, ফলে পুরো সমাজে ইমিউনিটি ডেভেলপ করে। মহামারীকে নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখা এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। হঠাৎ সব কিছু তছনছ করতে দেওয়া নয়। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের মধ্য দিয়ে জনগণকে মাহামারীর হাত থেকে রক্ষা করাই এখানে মূল উদ্দেশ্য।

তাহলে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জন মহামারি মোকাবিলা করার একটা পদ্ধতি হতে পারে। এটা আমরা বাংলাদেশে কেউই জানি না। এ নিয়ে কোন আলোচনা আমার চোখে পড়ে নি। এই পদ্ধতি কতোটা মানবাধিকার-সম্মত সেই তর্ক হতেই পারে, সেই তর্ক আমরা পরে সঠিক সময়ে করব। কিন্তু এখন কাজ হচ্ছে বেঁচে থাকা। যেখানে আর কোন উপায় নাই, সেই উপায়হীনতার সমুদ্রে আমাদের হাতপা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না।

এই আলোচনাগুলো করতে বাধ্য হচ্ছি, কারণ জনস্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের আলোচনার স্তর এবং মান খুবই দুর্বল। মহামারীর মাত্রা যদি প্রবল হয় এবং কোন দেশ যদি তা ঠেকানোর সামর্থ নাই বলে মনে করে তাহলে মহামারী মোকাবিলার এই ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা পুরা পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন নীতি অনুসরণ করা হয়। এই নীতি অসিদ্ধ কিছু নয়, এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে।

আবারও বলি, পুরা পালের বা জনগোষ্ঠির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল হলেও মহামারী নিয়ন্ত্রণ করবার কারনে আস্তে আস্তে ছড়ালে অধিক সংখ্যক লোক এক সঙ্গে সেবা নিতে আসে না। স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়ে না। কিছুটা হলেও সেবাগ্রহিতাদের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হয়। এর রাজনৈতিক সুবিধাও আছে। যারা মারা যায়, মানুষ ভাবে, যাক তারা সেবা তো পেয়েছে, সরকার বাঁচাবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাঁচে নি, বাঁচামরা আল্লার ইচ্ছা।

ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কেউ একবার আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠলে সাধারণত এরপর তাকে ভাইরাস দ্বিতীয়বার আক্রান্ত করে না। পুরো সমাজে ইমিউনিটি ডেভেলপ করার আরেকটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য রয়েছে। সেটা হোল, দ্বিতীয়বার মহামারির প্রাদুর্ভাব রুদ্ধ করা।

বরিস জনসনও কোভিড-১৯ মোকাবিলার নীতি হিশাবে হার্ড ইমিউনিটি বা পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবার নীতি গ্রহণ করেছেন। করোনাভাইরাসকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা না করে হার্ড (herd) ইমিউনিটি স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেছেন।

আজ Bloomberg ওয়েবসাইটে দেখলাম তারা লিখছে, “বরিস জনসনের সরকার ঠিক মুখ ফুটে বলেনি বটে, তবে করোনাভাইরাস মোকাবিলার তার সরকারের পরিকল্পনা পরিষ্কার। অসুখের বিস্তার আস্তে আস্তে ঘটুক, একে রোখার দরকার নাই। অধিকাংশ মানুষই আক্রান্ত হবে, অনেকের অবস্থা হবে খুবই খারাপ, কিন্তু অধিকাংশই সেরে উঠবে” (Hutton, 2020)।

একজন সাংবাদিকদের ভাষ্য হচ্ছে, বৃটিশ সরকারের নীতি হোল, “পুরা জনগোষ্ঠির মধ্যে ভাইরাসকে পার হতে দেওয়া যাতে আমাদের হার্ড ইমিউনিটি গড়ে ওঠে। তবে তার গতি এতো ধীরে হতে হবে যাতে যারা ভীষণ ভাবে আক্রান্ত তারা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা নিতে পারে। পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর যেন অতিরিক্ত চাপ না পড়ে যেন একসঙ্গে অধিক সংখ্যায় রোগীঢ় সেবা দিতে গিয়ে ভেঙে না পড়ে” (Arrizabalaga, 2020)।

মারী মোকাবিলার কৌশল পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরির কৌশল। ইংলণ্ডের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্যাট্রিক ভালান্স কোভিড-১৯ সম্পর্কে বলছেন, “একে পুরাপুরি দমন করা যায় না, একে পুরাপুরি দমন করা উচিতও নয়। তাহলে বছরের শেষে এটা আবার ফিরে আসবে, শীতের সময় ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের জন্য কঠিন সময়। সেটা আরেক দুর্দশা তৈরি করবে”। এই জন্য বরিস জনসনকে আগেভাগেই বলতে হয়েছে ‘করোনাভাইরাসে অনেকেই তাদের প্রিয় মানুষকে হারাবেন” ( Heather Stewart, Kate Proctor and Haroon Siddique, 2020)।

সুইডেনও হার্ড ইমউনিটি অর্জন নীতি গ্রহন করেছে। তারা কোভিড-১৯ মারীতে বিশেষ উদ্বিগ্ন নয়। সরকারের শিথিলতা এবং নিরুদ্বেগ নীতিকে অনেক চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী সমালোচনা করছেন। তাঁদের কাছে এই শিথিলতা হঠকারী। কিন্তু এই নীতির পক্ষে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা মনে করেন পুরা পালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনের নীতি সঠিক। তাদের যুক্তি হচ্ছে সরকারের নিরুদ্বেগ নীতির চেয়েও যারা অতি মাত্রায় উদ্বিগ্ন হয়ে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শ করছেন তাঁরাই বরং ক্ষতি করছেন। সমালোচনার একটি বড় কারণ হচ্ছে সুইডেনে সংক্রমণ ছড়ানোর ধরণটা এখনও অসম, খুব একটা ছড়ায় নি। তাই হার্ড ইমিউনিটি অর্জন কতোটা সফল হচ্ছে তর্কটা সেখান থেকেই শুরু। কিন্তু সংক্রমণ ছড়াবেই। এতে সন্দেহ নাই। তর্কটা তাহলে সংক্রমণ ছড়াবার গতি নিয়ে। তর্ক থাকলেও অধিকাংশই হার্ড ইমিউনিটি অর্জন নীতির পক্ষে। সংক্রমণ মোকাবিলায় লক ডাউন জাতীয় কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার পেছনে সুইডেনের যুক্তি রয়েছে। সামগ্রিক ভাবে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টির যুক্তি তো আছেই, অন্য যুক্তিও রয়েছে। যেমন স্কুল খোলা রাখা জরুরি যেন বাবা মায়েরা কাজে যেতে পারে। বিশেষত যারা স্বাস্থ্য, পরিবহন ও খাদ্য ব্যবস্থায় সঙ্গে যুক্ত। বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণের মারাত্মক রূপ নেবার উদাহরণ নাই বললেই চলে। দীর্ঘস্থায়ী লিক-ডাউনের অর্থনৈতিক ফল আরও ক্ষতিকর। কারণ এতে অর্থনীতি শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে ( (Henriksson, 2020)।

আগেই বলেছি, ১০০ জনের মধ্যে ৬০ জন আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে গড়ে ওঠে। তবে এই নীতি কার্যকর করতে চাইলে সঙ্গরোধ বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ঘন ঘন হাত ধোয়া জরুরী। কারন এই নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে একসঙ্গে দ্রুত বেগে মহামারী ছড়াতে না দেওয়া। স্বাস্থসেবার ওপর চাপ কমানো, যেন যাদের নিবিড় স্বাস্থ্য পরিচর্যা দরকার তারা সেই সেবা পেতে পারে।

কিন্তু শেষাবধি সমাজকে সেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হয় যার ফলে বৃদ্ধ, উচ্চরক্তচাপের রোগী, ডায়াবেটিসে আক্রান্তসহ যারা কঠিন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন – বিশেষত রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা যাদের নাই বা কম , তারা শেষাবধি 'বর্জ্য' হিশাবেই সমাজে পরিত্যক্ত হয়। কোভিড-১৯ তাদের অনেককেই সঙ্গে নিয়ে যায়।

ইংলন্ড কিম্বা সুইডেনের সঙ্গে আমাদের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে সেখানে সরকার প্রধান তথ্য লুকায় না, সরকার জানে এই মহামারীতে অনেকে তাদের প্রিয়জন হারাবেন। এই কঠিন কথাটিও জনপ্রিয়তা হারাবার ভয়ে জনগণকে বলতে তারা দ্বিধা করেন না। কারন তথ্যে অস্পষ্টতা রাখা, কিম্বা তথ্য লুকানো এই ক্ষেত্রে ক্রিমিনাল অপরাধের মতো। তার জন্য এই সরকার এবং তার মন্ত্রী পরিষদকে জবাবদিহি করতে হবে। তথ্য জানানো এবং জনগণকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের জন্য মানসিক ও সামাজিক ভাবে তৈরি থাকতে বলা মূলত কোভিড-১৯-এর মতো বৈশ্বিক মারী মোকাবিলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। সেই বিচারে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার আগামি দিনে ক্রিমিনাল শাসক হিশাবে বিবেচিত হবে।

মহামারী সরকারের কোন দোষ নয়। কিন্তু যে সরকার তথ্য লুকায়, জনগণকে বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করে না, সেই সরকার মহামারীর দোসর। সেই সরকার কোভিড-১৯ মহামারীতে প্রতিটা মৃত্যুর জন্য দায়ী।

(রেফারেন্স কমেন্ট বাক্সে দেখুন)

 


ছাপবার জন্য এখানে ক্লিক করুন



৫০০০ বর্ণের অধিক মন্তব্যে ব্যবহার করবেন না।