নদী থেকে সমুদ্র...
From River to the Sea
Palestine WILL be FREE
সারা দুনিয়ায় ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলমান কিম্বা পরিচয় নির্বিশেষে সকলেই একদা মুক্ত হবে। জায়নিস্ট রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তির বিরুদ্ধে সারা দুনিয়ার জনগণের এই রণধ্বণি নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত ঘোষণা করছে।
সমুদ্রের পরিবেশ ও বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ আন্দোলনের জন্য পরিবেশবাদীদের কাছে সম্ভবত প্রাক্তন মার্কিন সেনা সদ্য Ken O' Keefe অপরিচিত নন। তবে ২০১০ সালে হামাস সম্পর্কে তার একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার ভাইরাল হয়েছিল।
হামাস কি সন্ত্রাসী?
যদি ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার থাকে তাহলে হামাসও প্যালেস্টাইনের জনগণের আত্মরক্ষা ও প্রতিরোধের যথার্থ প্রতিনিধি? ইসরাইল দাবি করে তার আত্মরক্ষার অধিকার আছে। তাহলে কি প্যালেস্টাইনের জনগণের আত্মরক্ষার কোন অধিকার নাই? হামাস কি প্যালেস্টাইনের জনগণের প্রতিরোধ ও আত্মরক্ষার প্রকাশ নয়? এই তর্ক নতুন হাজির হয়েছে আবার। ফলে প্রাক্তন মার্কিন মেরিন ও’ কিফের এই পুরানা সাক্ষাৎকারও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সাক্ষাৎকারে ও’ কিফ বলছেন, “ আমি একদম একশ ভাগ এক বিন্দু ছাড় না দিয়ে বলব আমি অবশ্যই সশস্ত্র প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করতাম যদি আমি প্যালেস্টাইন, ইরাক কিম্বা আফাগানিস্তানের নাগরিক হতাম; অথবা যদি আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের নাগরিক থাকতাম, আর সাত সমুদ্র বিশাল ভূখণ্ড পার হয়ে এসে কেউ আমার দেশে এসে আমার জমি দখল করছে, লুট করছে এবং আমার পরিবারকে হত্য করছে। আমি অবশ্যই তখন আমা্র পরিবারকে (এখন হামাস যেভাবে রক্ষা করছে) সেই একই ভাবে রক্ষা করতাম। অতএব আমি আত্মরক্ষার অধিকার কোন প্রকার ছাড় না দিয়ে একশ ভাগ সমর্থন করি। এ ব্যাপারে আমার কোন দোনামোনা ভাব নাই”। তাঁর সাক্ষাৎকার ভাইরাল হবার কারন একজন প্রাক্তন মার্কিন সৈনিক কোন রাখঢাক না করে কথা বলছেন।
তিনি জোর দিয়ে বলছেন, “আমি সেইসব বিব্রত লোকগুলির লম্বা লিস্টিতে নাম লেখাতাম না যারা সন্ত্রাস বা সহিংসতার নিন্দা করে, কিন্তু ভুলে যায় যে পৃথিবী নামক গ্রহে সবচেয়ে বড় টেররিস্ট হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র”।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কিন্তু হামাস তো রাষ্ট্র হিশাবে ইসরাইলের টিকে থাকার অধিকার স্বীকার করে না।
তাঁর উত্তর হোল, “ আপনার প্রশ্ন শুনে কি মনে হচ্ছে জানেন? মনে হচ্ছে আফ্রিকান ন্যশনাল কংগ্রেসের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা বর্ণ ও জাতি বৈষম্যবাদি (এপারথেইড ) রাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকাকে কেন স্বীকৃতি দিতে কেন অস্বীকার করছেন সেটাই বুঝি জিজ্ঞাসা করছেন। ম্যান্ডেলা বর্ণ ও জাতিবৈষম্য কেন মেনে নিলেন না তাই না?”। এই প্রশ্ন যারা করে তারা আদতে জায়নিস্ট রাষ্ট্র এবং একটি এপারথেড রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখার পক্ষে যুক্তি দেয়। অথচ মূল কথা হচ্ছে ইসরায়েলের অধিকার কেউই অস্বীকার করে না। কিন্তু এপারথেড রাষ্ট্র ইসরায়েল টিকিয়ে রাখার যুক্তি কি? প্যালেস্টানই সকল ফিলিস্তিনী নাগরিকদের রাষ্ট্র।তার মধ্যে ইহুদিওরাও অন্তর্গত।
কেন্ ও'কিফ তাই বলছে, আমি বলব ইসরায়েল যদি আদৌ শান্তিপূর্ণ বিশ্বের অকৃত্রিম অংশীদার হয়ে থাকে তাহলে তাকে ‘জায়নিজম’ নামক পুরা মতাদর্শকে অবশ্যই আগে ধ্বংস করতে হবে। ‘জায়নিজম’ হচ্ছে কেউ ইহুদি নয় বলে হীন জ্ঞান করা, অমানুষ মনে করা, যারা জন্তু-জানোয়ার মাত্র। যাদের বোমা ফেলে যুদ্ধ ঘোষণা করে, পানি, খাদ্য, ওষুধ বন্ধ করে দিয়ে সম্পূর্ণ নির্বংশ করা যায়। যারা ইহুদি না তাদের পবিত্র জেরুজালেমের থাকার কোন অধিকার নাই। জায়নবাদীদের এই দাবি হোল আসল সমস্যা।
ও’ কিফ বলেন: “যদি ইসরাইল ফিলিস্তিনীসহ সকল মানুষের অধিকার স্বীকার করে তাহলে আমি অবশ্যই হামাসের চার্টার চ্যালেঞ্জ করব। এবং ইসরাইলকে স্বীকার করে নেব। কিন্তু তার আগে আমি নেলসন ম্যান্ডেলার অবস্থান এবং এপারথেড রাষ্ট্র ইসরাইলের অস্তিত্ব অস্বীকার করার মধ্যে কোন ফারাক দেখি না”।
From River to the Sea, Palestine WILL be FREE – এই রণধ্বনির মানেও তাই।
(১০ নভেম্বর ২০২৩)