না জানি ভাব কেমন ধারা। না জানিয়ে পাড়ি ধরে মাঝ-দরিয়ায় ডুবল ভারা।। হরনাল করনাল মৃণালে শুকনালে সু-ধারায় চলে বিনা সাধনে এসে রণে পুজি-পাট্টা হলাম হারা।। সেই নদীর ত্রিধারা কোন ধারে তার কপাট মারা কোন ধারে তার সহজ মানুষ সদাই করে চলাফেরা।। অবোধ লালন বিনয় করে এ কথা আর বলবো কারে রূপদর্শন দর্পণের ঘরে হ’লাম আমি পার হারা।।
যে যেমনে বাঞ্ছা করে তার কাছে সে উদয় হয়
মন ছাড়া কি মনের মানুষ রয়, রয় গো ।।
মনের মানুষ মনোহরা
রসময় রূপ রসে ভরা,
দেখলে হবি আত্মহারা
অধরাকে ধরা দায়
মন ছাড়া কি মনের মানুষ রয়, রয় গো।।
বিশুদ্ধ মানুষের করণ
চন্ডী-রজকীনির মরণ
তাদের এক মরনে দুইজন মরন
আত্মায় আত্মায মিশে রয়
মন ছাড়া কি মনের মানুষ রয়, রয় গো।।
গোঁসাই মাতান চাঁদে ভণে
মানুষ ধরা মানুষ বিনে
আমি পাবো কি আর এই জীবনে
সেই মানুষ, সেই রসময়,
মন ছাড়া কি মনের মানুষ রয়, রয় গো।।
(আরো পড়ূন)
রাধার গুণ কত
নন্দলাল তা জানে না
কিঞ্চিৎ জানলে তো
লম্পট ভাব থাকত না।
করে সে পীরিতি
নাই তার সুরীতি
কুরীতি ছলনা
বলে তাই সত্য দেখি
অন্য ভাব না।
যদি মন দিলে রাধারে
তবে শ্যাম কু-বুজারে
স্পর্শ করতো না।
এক মন কয় জায়গায় বেচে
তাও তো জানলাম না।
চন্দ্রাবলীর সনে মত্ত
কোন রসরঙ্গ
ভেবে দেখ না।
তেমনি অনন্ত ভ্রান্ত
শ্যামের যায় জানা।
জানলে প্রেম গোকুলে
নয় তো ক্যাঁথা গলে
নদেয় আসতো না।
অধীন লালন কয়
কর এ বিবেচনা।.
মন তুই করলি একি ইতরপনা
দুগ্ধেতে যেমন রে তোর
মিশলো চোনা।।
শুদ্ধ রাগে থাকতে যদি
হাতে পেতে অটলনিধি
বলি মন তাই নিরবধি
বাগ মানে না।।
কী বৈদিকে ঘিরলো হৃদয়
হ’ল না সুরাগের উদয়
নয়ন থাকিতে সদাই
হ’লি কানা।।
বাপের ধন তোর খেল সর্পে
জ্ঞানচক্ষু নাই দেখবি কবে
লালন বলে হিসাবকালে
যাবে জানা।।
আমি কি তাই জানলে সাধন সিদ্ধি হয়।
‘আমি’ শব্দের অর্থ ভারি
আমি সে তো আমি নয় ॥
অনন্ত শহর-বাজারে
আমি আমি শব্দ করে
আমি কি তাই চিনলে পরে
বেদ পড়ি পাগলের প্রায় ॥
নাহি ছিল স্বর্গ-মর্ত্য
তখন কেবল আমি সত্য
পরেতে হইলে বর্ত
'আমি 'হইতে 'তুমি' কার ॥
মনসু হাল্লাজ ফকীর সে তো
জেনেছিল আমি সত্য
সেই পেল সাঁইয়ের আইন মত
শরায় কি তার মর্ম পায় ॥
কুম বে-ইজনী, কুম বে-ইজনিল্লা
সাঁইর হুকুম দুই আমি হেল্লা
লালন বলে, এ ভেদ খোলা
আছে রে মুরশিদের ঠাঁয় ॥
(আরো পড়ূন)