চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা

অমৃত মেঘের বারি

চাতক স্বভাব না হলে
অমৃত মেঘের বারি
      কথায় কি মেলে।।

মেঘে কতো করে ফাঁকি
তবু চাতক মেঘের ভোগী
তেমনি নিরিখ রাখলে আঁখী
      সাধক বলে।।

চাতকেরো এমনি ধারা
তেষ্টায় জীবন যায় রে মারা
অন্য বারি খায় না তারা
      মেঘের জল বিনে।।

মন হয়েছে পবন গতি
উড়ে বেড়ায় দিবারাতি
(ফকির) লালন বলে গুরু প্রীতি
      রয়না সুহালে।।

(শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়:১৭ এপ্রিল ২০১৮)

(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৫৩)

 

(আরো পড়ূন)

মলে গুরু প্রাপ্ত হবো সেতো কথার কথা

মলে গুরু প্রাপ্ত হবো সেতো কথার কথা
জীবন থাকিতে যারে না দেখিলাম হেথা।।

সেবা মূল কারন তারই
না পেয়ে কার সেবা করি
আন্দাজি হাতড়িয়ে ফিরি
   কথার লতা।।

সাধন  জোরে এ ভবে যার
সে রূপ চক্ষে হবে নেহার
তারি বটে সেরূপ আকার
   মেলে যথা-তথা।।

ভজে পাই কি পেয়ে ভজি
কি ভজনে হয় যে রাজি
সিরাজ সাঁই কয় কি আন্ন্দাজি
   লালন মুড়ায় মাথা।।

 

(আরো পড়ূন)

আমার মনের বাসনা

আমার মনের বাসনা
   আশা পূর্ন হল না[১]।

বাঞ্ছা ছিল যুঘল পদে,
সাধ মিটার ঐ পদ সেধে,
বিধি বৈমুখ হল তা’তে
   দিল সংসার যাতনা।।

বিধি[২] হয় সংসারের রাজা,
আমায় করে রাখলেন প্রজা,
কর না দিলে দেয় গো সাজা,
   কারো দোহাই মানে না।।

পড়ে গেলাম বিধির বামে,
ভুল হল মোর মূল সাধনে,
লালনে বলে এ তুফানে[৩]
   ঘুচাও যন্তনা।।

(আরো পড়ূন)

হতে চাও হুজরের দাসী

হতে চাও হুজরের দাসী
মনে গিল্লাত পোরা রাশি রাশি

না জানি সেবা সাধনা
না জানো প্রেম উপসনা
সদাই দেখি ইতরপনা
   প্রভু রাজী হবে কিসি?

কেশপাশে বেশ করলে কি হয়
রসবোধ না যদি রয়
রসবতি কে তারে কয়
   কেবল মুখে কাষ্ঠ হাসি।।

কৃষ্ণপদে গোপী সুজন
করেছিল দাস্য সেবন
লালন বলে তাই কিরে মন
   পারবি ছেড়ে সুখবিলাসী।।

 

(আরো পড়ূন)

কারে বলবো আমার মনের বেদনা

কারে বলবো আমার মনের বেদনা
এমন ব্যথিত মেলে না।।

যে দুঃখে আমারো মন
আছে সদাই উচাটন বললে সারে না।।
গুরু বিনে আর   না দেখি কিনার
   তারে আমি ভজলাম না।।

অনাথের নাথ যে জন আমার
সে আছে কোন অচিন শহর
   তারে চিনলাম না।
কি করি কি হয় দিনের দিন যায়
   কবে পুরবে মনের বাসনা।।

অন্য ধনের নয়রে দুখী
মন বলে আজ হৃদয় রাখি
   শ্রীচরনখানা।
লালন বলে মোর পাপের নাহি ওর
   আশা তাইতে পূর্ন হোল না।।

(আরো পড়ূন)

গুরু বিনে কী ধন আছে

গুরু বিনে কী ধন আছে
কি ধন খুঁজিস ক্ষেপা কার কাছে

বিষয় ধনের ভ্রসা নাই
ধন বলিতে গুরু গোঁসাই
যে ধনের  দিয়ে দোহাই,
   ভব তুফান যাবে বেঁচে।।

পুত্র পরিবার ভবের ভূষন
ভুলিয়াছে ভবের ভূবন
মায়ায় ভুলে অবোধ মন
   গুরু ধঙ্কে ভাবিলি মিছে।।

কী ধনে কী গুনপনা
অন্তীমকালে যাবে জানা
গুরুধন এখন চিনলে না
   নিদানে পস্তাবে পাছে।।

গুরুধন অমূল্য ধন রে
কু-মনে বুঝলি না হারে
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোরে
   নিশ্চয় পেঁচোয় পেয়েছে।।

(আরো পড়ূন)

আর আমার কেউ নাই গুরু তুমি বিনে

আর আমার কেউ নাই গুরু তুমি বিনে
অযতনে ডুবল ভরা
   তরাও গুরু নিজগুনে।।

সাধের একখান তরি ছিল
অযতনে বিনাশিল
বান সকল ছাড়িয়ে গেল
   জল চুয়ার রাত্র দিনে।।

সময়ে গাব দিতাম যদি  বাইতাম তরী জন্মদিনে
আমার এই দেহ তরী  আদরিত মহাজনে।।

লয়ে এলাম ষোল আনা  ব্যাপার করিব দুনা
আসলে পল ঊনা   (এখন)নিকাশ দিতে টানাটনি।।

 কি যেন খাওয়াল নেশা  নষ্ট হল সকল দিশা
সময়ে জাগিলে পরে  ঘর ত চুরি যায় নে।।

ষোল আনা বোঝাই করে   পাঠায়ে দেয় ঠক-বাজারে
কারবার সব চোরে   কিছু আমি টের পেলাম নে

সিরাজ সাঁই বলেরে লালন   রংপুর দোকান দিলি কেনে।।

(আরো পড়ূন)

অসার ভেবে সার দিন গেল আমার

অসার ভেবে সার দিন গেল আমার
সার বস্ত ধন এবার হলাম রে হারা
হাওয়া বন্ধ হলে সব যাবে বিফলে
    দেখে শুনে লালস গেল না মারা।।

গুরু যারে সদয় হয় এই সংসারে
লোভে সঙ্গ দিয়ে সেই যাবে সেরে
অঘটায় আজ মরন আমারে
   জানালাম নারে গুরুর করন কি ধারা।।

মহতে কয় পূবে থাকলে  সুকৃতি
দেখতে শুনতে গুরুর পদে হয় রতি
সে পূন্য আমার থাকতো যদি
   তবে কিরে আমি হতাম পামরা।।

সময় ছাড়িয়ে জানিলাম এখন
গুরুর কৃপা বিনে বৃথা এ জীবন
বিনয় করে কয় অধীন লালন
   (মন রে) আর কি আমি এবার পাবো কিনারে।।

(আরো পড়ূন)

কি মহিমা করলেন গো সাঁই

কি মহিমা করলেন গো সাঁই
   বোঝা গেলো না
মন ভোলা চাঁদ ছলা করে
   বাদী রিপু ছয় জনা।।

যত শত মনে করি
   ভাব দেলে ঘুরে মরি
কোথায় রইলেন দয়াল বারী
    ফিরে কেন চাইলে না।।

করে তোর চরনের আশা
   ঘটলো আমার এ দুর্দশা
সার হোল যাওয়া আসা
   কিনার তো আর পাইলাম না।।

জনম গেল দেশে দেশে
   ভজন সাধন হবে কিসে
লালন তাই ভাবছে বসে
   ভবে হোল যাতনা।।

 

(আরো পড়ূন)

গুরু পদে নিষ্ঠা মন যার হবে

গুরু পদে নিষ্ঠা মন যার হবে
যাবে রে তার সর্বস্ব সার
অমূল্য ধন হাতে সেহি পাবে।।

গুরু যার হয় কাণ্ডারি
চালায় সে অচলা তরী
ভবে তুফান বলে ভয় কি তারি
   নেচে গেয়ে ভব পারে যাবে।।

আগমে নিগমে তাই কয়
গুরুরূপে দীন দয়াময়
অসময়ের সখা সে হয়
   অধীন হয়ে যে তারে ভজিবে।।

গুরুকে মনুষ্য জ্ঞান যার
অধপাতে গতি হয় তার
ফকির লালন বলে তাই আজ আমার
   ঘটল বুঝি মনের কুস্বভাবে।।

(আরো পড়ূন)

রাখিলেন সাঁই কূপজল করে

রাখিলেন সাঁই কূপজল ক’রে
   আন্ধেলা পুকুরে।।

কবে হবে সজল বরষা রেখেছি (মন) সেই ভরসা
আমার এই ভগ্নদশা ঘুচবে কতদিন পরে
এবার যদি না পাই চরন আবার কি পড়ি ফেরে।।

নদীর জল কূপজল হয় বিল-বাওড়ে পড়িয়ে রয়
সাধ্য কি সে গঙ্গাতে যায় গঙ্গা না এলে পরে,
জীবের তেমনি ভজন বৃথা তোমার দয়া নাই যারে।।

যন্তর পড়িয়ে অন্তর রয় যদি লক্ষ বৎসর
যন্ত্রী বিহনে যন্তর কভু না বাজতে পারে।
(গুরু) তুমি যন্ত্রী আমি যন্ত্র সু-বোল বলাও  মোরে।।

শাস্ত্রে শুনেছি  খাঁটি পতিতপাবন নামটি
পতিত না তরাও যদি কে ডাকিবে আর নাম ধরে।
অধীন লালন বলে, তরাও গো সাঁই এ ভব-কারাগারে।।

 

(আরো পড়ূন)

যারে ভাবলে পাপীর পাপ হরে

 যারে ভাবলে পাপীর পাপ হরে
দিবানিশি ডাক  মন তারে।

গুরুর নাম সুধাসিন্ধু
পান কর তাহাতে বিন্দু
সখা হবে দীনবন্ধু
   কৃষ্ণ-ক্ষুধা রবে না রে।।

যে নাম প্রহ্লাদ হৃদয়ে করে
অগ্নির কুণ্ডে প্রবেশ করে
কৃষ্ণ নরসিংহ রূপ ধারন করে
   হিরণ্যকশিপুরে মারে।।

ভাবলি না শেষের ভাবনা
মহাজনের ধন ষোলআনা
লালন বলে মন-রসনা
   একদিনও তা ভাবলি না রে।।

(আরো পড়ূন)

গুরুপদে মতি আমার কই হলো

গুরুপদে মতি আমার কই হলো
আজ হবে কাল হবে বলে,
   কথায় কথায় দিন গেল

ইন্দ্রিয়াদি সব বিবাদী সতত বাধায় কলহ
(তারা) কারো কেউ শোনে না উপায় কি করি বল।।

যেরূপ দেখি তাইতে আঁখি হয়ে যায়রে বে-ভুলো
দীপের আলো দেখে যেমন পতঙ্গ পুরে ম’লো।।

কি করিতে এসে ভবে কি কার্য করি বল
লালন বলে যজ্ঞের ঘৃত সকলি কুত্তায় খেল।।

(আরো পড়ূন)

চাতক বাঁচে কেমনে

চাতক বাঁচে কেমনে
     মেঘের বরিষন বিনে।।

তুমি হে নব জলধর
     চাতকিনী মল এবার,
ঐ নামের ফল সুফল
     এবার রাখ ভুবনে।।

তুমি দাতার শিরোমনি
    আমি চাতক অভাগিনী,
তোমা ভিন্ন আর না জানি
    রাখ চরনে।।

চাতক মলে যাবে যানা
    ঐ নামের গোরব রবে না
জল দিয়ে কর সান্ত্বনা
   অবোধ লালনে।।

(আরো পড়ূন)

চিরদিন দুখের অনলে জ্বলছে আমার

চিরদিন দুখের অনলে জ্বলছে আমার
আমি আর কত দিন জানি    অবলারও এ পরানই
   এজ্বলনে জ্বলবে ওহে দয়েশ্বর।।

দাসী ম’লে ক্ষতি নাই    যাই হে মরে যাই
দয়াল নামের দোষ রবে হে গোঁসাই।।
আমায় দেও হে দুঃখ যদি তবু তোমায় সাধি
    তোমা বিনে দোহাই আর দিব কার।।

ও মেঘ হইয়ে উদয়   লুকালো কোথায়
পিপাসীর প্রান   গেল পিপাসায়।
(আমার) কি দোষের ফলে   এ দশা ঘটালে
    (তুমি) চাও হে নাথ ফিরে চাও হে একবার।।

আমি উড়ি হাওয়ার সাথে  ডুরি তোমার হাথে
তুমি না ওড়ালে কেই বা ওড়ায় হে নাথ।।
ক্ষম অপরাধ দেও হে শীতল পদ
    লালন বলে প্রান বাঁচে নারে আর।।

(আরো পড়ূন)

আমি ঐ চরনের দাসের যোগ্য নই

আমি ঐ চরনের দাসের যোগ্য নই [১]
নইলে মোর দশা কি এমন হয়।।

নিজগুনে পদারবিন্দ
দেন যদি সাঁই দীনবন্ধু
তবে তরি ভব সিন্ধু
(নইলে) আর তো না দেখি উপায়।।

ভাব জানি নে প্রেম জানি নে
দাসী হতে চাই চরনে
ভাব দিয়ে ভাব নিলে পরে
সেই রাঙা চরন পায়।।

অহল্যা পাষানী ছিল
চরন ধুলায় মানব হোল
লালন পথে পড়ে রইল
যা করে সাঁই দয়াময়।।

(আরো পড়ূন)

আমারে কি রাখবেন গুরু চরনদাসী

আমারে কি রাখবেন গুরু চরনদাসী
ইতরপনা কার্য আমার ঘটে অর্হনিশি।।

জঠর যন্ত্রনা পেয়ে
এসেছিলাম কড়ার দিয়ে
সে সকল গিয়েছি ভুলে     ভবেতে আসি।।

চিনলাম না সেই গুরু কী ধন
করলাম না তার সেবাসাধন
ঘুরেতে বুঝি হল ও মন   এবার চুরাশি[১]।।

গুরু রূপ যার বাঁধা হূদয় [২]
শমন বলে তার কিসের ভয়
লালন বলে মন তুই আমায়   করিলি দোষী।।

(আরো পড়ূন)

গুরু দোহাই তোমার মনকে আমার

 গুরু দোহাই তোমার মনকে আমার
     নেওগো  সুপথে
তোমার দয়া বিনে  চরন সাধি
     কী মতে।।

তুমি যারে হও গো সদয়
    সে তোমারে সাধনে পায়
বিবাদী তার স্ববসে রয়
    তোমার কৃপাতে।।

যন্ত্ররেতে যন্ত্রী যেমন
     যে বোল বাজাও বাজে তেমন
তেমনি যন্ত্র আমারি মন
    (বোল) তোমারি হাতে।।

জগাই মাধাই দস্যু ছিল
    তাহে প্রভুর দয়া হোল
লালন পথে পড়ে রইল
    সেহি আশাতে।।

(আরো পড়ূন)