বাংলাদেশে তাকফিরি প্রবণতার একটা পর্যালোচনা দীর্ঘদিন ধরেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বুদ্ধিবৃত্তিক ও ধর্মতাত্ত্বিক কাজ হিসাবে হাজির রয়েছে। বর্তমানে মুফতি এনায়েতুল্লাহ আব্বাসির জনসম্মুখে দেওয়া কিছু বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০২৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘তাওহিদি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি ইসলামের নামে ‘শাতিমে রসুল’ (নবী (সা.) অবমাননাকারী) ও মুরতাদদের (ধর্মদ্রোহী) শাস্তিস্বরূপ ‘কল্লা কেটে দেওয়ার’ এবং ‘নিজ হাতে’ ফাঁসি কার্যকর (আরো পড়ূন)
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস খুবই পুরাতন। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৯-এ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন ও ৯০-এর এরশাদবিরোধী আন্দোলন– সবগুলো পর্বই ‘গণঅভ্যুত্থান’ হিসাবে অভিহিত করা হয়। কোনো দাবি বা লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্মিলিত আন্দোলন এবং আন্দলোনের প্রক্রিয়ায় সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে জনগণের যে সামষ্টিক উত্থান ঘটে তাকেই গণঅভ্যুত্থান বলে। জনগণের এই সামষ্টিক রাজনৈতিক সত্তার জীবন্ত ও মূর্ত রূপই গণতন্ত্র। জনগণই সার্বভৌম – গণঅভ্যুত্থান গণতন্ত্রের এই মৌলিক সত্য প্রতিষ্ঠা করে এবং জনগণের গাঠনিক শক্তি (Constituent Power) হিসাবে হাজির হয়। এ (আরো পড়ূন)
দুই হাজার চব্বিশ সালে ঘটে যাওয়া অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে এসেছি আমরা। পুরানা গণবিরোধী সংবিধান ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করবার জন্য জনগণ অকাতরে শহিদ হয়েছে, অনেকে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং নানাভাবে জুলুমের শিকার হয়েছেন। দুই হাজার পঁচিশে এসে উপদেষ্টা সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র পেশ করেছে। ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থানের নায়ক নন, তিনি তার ফল বা ফলভোগী মাত্র। ছেলে যেমন বাপের নাম দিতে পারে না, তেমনি ড. ইউনূসেরও জুলাই ঘোষণাপত্র পেশ করবার কোনও এখতিয়ার নাই। শুধু তাই নয় ড. ইউনূস পুরানা সংবিধান ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা (আরো পড়ূন)
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের অধিকার, আবাসন, পাঠ্যক্রম, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি সংগঠিত ছাত্র সংসদের প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানচর্চা, নিজেদের নৈতিক বিকাশ, সমাজসেবা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে ১৯২৩ সালে প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (Dhaka University Student Union) গঠিত হয়। তখনকার শিক্ষার্থীরা সান্ধ্য বিদ্যালয়, সাহিত্য-সংস্কৃতি-শরীর চর্চা, খেলাধুলা, বস্তির গরিব শিশুদের পাঠদানসহ নানান সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া রাজনৈতিকভাবে উপনিবেশবিরোধী চেতনা ও আন্দোলনে ডাকসুর ছাত্রনেতাদের অংশগ্রহণ ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির (আরো পড়ূন)
এই লেখাটির প্রথম অংশে ওয়ার অন টেররের বয়ান বিশ্লেষণের মাধ্যমে কিছু প্রাথমিক যুক্তিকাঠামো (logical framework) দাঁড় করানো হয়েছে। এরপর শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে পূর্ববর্তী যুক্তিকাঠামোর সাযুজ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পরিশেষে আছে উদাহরণ আকারে একটি লেখার (ফেসবুক পোস্ট) পর্যালোচনা।
মার্কিন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ’ (War on Terror) একটি ইচ্ছাকৃত নির্বুদ্ধিতা বা উৎকল্পনার ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা কিনা ‘সন্ত্রাস’ এবং ‘যুদ্ধ’-কে পরস্পরবিরোধী ধারণা আকারে দেখাতে সক্ষম। যেখানে ‘জঙ্গ’ জিনিসটা কেবল এক বিশেষ পক্ষের জন্যেই চিরন্তন ন্যায্য, মানে সন্ত্রাসীদের যু (আরো পড়ূন)
বাংলা ভাষার অন্যতম কবি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার। সম্প্রতি বাংলাদেশ একটি বিশেষ কালপর্ব অতিক্রম করছে। শত শত ছাত্র-জনতার রক্তপাতের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে। এই বিশেষ মুহূর্ত নিয়ে দেশ রূপান্তরের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সম্পাদকীয় বিভাগের সাঈদ জুবেরী।
দেশ রূপান্তর: শুভ জন্মদিন ফরহাদ ভাই। দেশের একটা বিশেষ মুহূর্তে (৯ আগস্ট) আমরা আপনার ৭৮তম জন্মদিন পালন করলাম। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা দেশের এই সন্ধিক্ষণকে আপনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। তাই এবারের বাজেটে আশা ছিল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিদেন পক্ষে কিছু ইতিবাচক অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে নেবার কিছু ইচ্ছা বা দিশা এই বাজেটে জনগণ দেখবে। কিন্তু জনগণ যেটা পেলো সেটা হোল অসমর্থিত ও অনির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান দিয়ে পুরনা চিন্তার ধারাবাহিকতা। বাজেট প্রস্তাবনা নিছকই লুটেরা-নিয়ন্ত্রিত টেকনোক্র্যাটিক প্রস্তাবনার অধিক কিছু হয়ে উঠতে পারলো না। অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট নিয়ে আলোচনার দরকার আছে। আমরা গণসার্বভৌমত্ব কায়েমের প্রয়োজনীয়তার আলোকে কয়েকটি প (আরো পড়ূন)
১.
হাসনাত আব্দুল্লাহ’র ফেইসবুক স্ট্যাটাস (২১ মার্চ রাত ১: ৪৪টা) নিয়ে তুলকালাম চলছে কয়েকদিন ধরে। এই স্ট্যাটাস এমন সময় এসেছে যখন প্রধান উপদেষ্টার চিন যাবার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও ভূরাজনৈতিক ইস্যু হিশাবে সামনে রয়েছে এবং প্রবল প্রকট উলঙ্গ ভাবে ভারতীয় গণমাধ্যম সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃংখলা ও সেনা অভ্যুত্থান ঘটাবার জন্য তৎপর রয়েছে। এমনই একটা সময়ে হাসনাত জানিয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে (বা সোহেল তাজকে) সামনে রেখে “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ” বানানো ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনা চলছে এবং সেটা করছে সেনাবাহিনী। হাসনাত জানিয়েছেন তাদেরকে ডেকে নিয়ে গিয়ে একথা বলা হয়।
পর
(আরো পড়ূন)
(এই লেখাটা আমি আর কনটিনিউ করতে পারি নাই। এত বড় ক্যানভাসে কাজ করার ক্ষমতা আমার এখনো হয় নাই—এক প্রবন্ধে আস্ত ছফা রচনাবলীর মোকাবিলা। যে যে পয়েন্ট আমার মাথায় ছিল কিন্তু লেখা হয়ে উঠে নাই সেগুলো বলে রাখছি, কোনো একদিন ফিরব: বাঙালি মুসলমান তত্ত্ব, আশির দশকের ইসলাম ও মার্কস প্রশ্ন, ভারতীয় পুঁজির চরিত্র, জাতিরাষ্ট্র ও পরিবেশবাদী রাষ্ট্রের ধারণা, ছফার স্কুল/কলেজজীবনের কৃষক বিপ্লবের ধারণা, নব্বইয়ের দশকে ছফার পুঁজিতান্ত্রিক বাস্তববাদিতা, হেগেলের রাষ্ট্রচিন্তার প্রভাব, দীনেশচন্দ্র বনাম বঙ্কিম কেচ্ছা (হিন্দুরাষ্ট্রতত্ত্বের বিরোধিতা) ইত্যাদি। এতকিছু বাদ পরা সত্ত্বেও এই লেখায় ছফার অনেকগুলো মৌলিক প্র (আরো পড়ূন)