আমি কি তাই জানলে সাধন সিদ্ধি হয়।
‘আমি’ শব্দের অর্থ ভারি
আমি সে তো আমি নয় ॥
অনন্ত শহর-বাজারে
আমি আমি শব্দ করে
আমি কি তাই চিনলে পরে
বেদ পড়ি পাগলের প্রায় ॥
নাহি ছিল স্বর্গ-মর্ত্য
তখন কেবল আমি সত্য
পরেতে হইলে বর্ত
'আমি 'হইতে 'তুমি' কার ॥
মনসু হাল্লাজ ফকীর সে তো
জেনেছিল আমি সত্য
সেই পেল সাঁইয়ের আইন মত
শরায় কি তার মর্ম পায় ॥
কুম বে-ইজনী, কুম বে-ইজনিল্লা
সাঁইর হুকুম দুই আমি হেল্লা
লালন বলে, এ ভেদ খোলা
আছে রে মুরশিদের ঠাঁয় ॥
(আরো পড়ূন)
খাঁচার ভিতর অচিন পাখি
কেমনে আসে যায়।
তারে ধরতে পারলে মনবেড়ি
দিতাম পাখির পায়।।
আটকুঠুরী নয়দরজা আঁটা
মধ্যে মধ্যে ঝরকা কাটা।
তার উপরে সদর কোঠা
আয়নামহল তায়।।
কপালের ফের নইলে কি আর
পাখিটির এমন ব্যবহার।
খাঁচা ভেঙ্গে পাখি আমার
কোন বনে পালায়।।
মন তুই রইলি খাঁচার আশে
খাঁচা যে তোর কাঁচা বাঁশে।
কোন দিন খাঁচা পড়বে খসে
ফকির লালন কেঁদে কয়।।
(আরো পড়ূন)
আপন আপন খবর নাই
গগনের চাঁদ ধরবো বলে
মনে করি তাই ।।
যে গঠেছে এ প্রেমতরী
সেই হয়েছে চরণদাঁড়ি
কোলের ঘোরে চিনতে নারি
মিছে গোল বাঁধাই ।।
আঠারো মোকামে জানা
মহারসের বারামখানা
সে রসের ভিতরে সে-না
(আছে) আলো করে সদাই ।।
না জেনে চাঁদ ধরার বিধি
কথায় কৈটী সাধন সাধি
লালন বলে বাদি ভেদি
বিবাদী সদাই ।।
কেন খুঁজিস মনের মানুষ বনে সদাই
এবার নিজ আত্মরূপে যে আছে
দেখো সেই রূপ দীন দয়াময় ।।
কারে বলি জীবাত্মা
কারে বলি স্বয়ং কর্তা
আবার চোখে লাগে ছটা
ভেল্কি লেগে মানুষ হারায় ।।
বলবো কি তার আজব খেলা
আপনি গুরু আপনি চেলা
পড়ে ভূত-ভুবনের পণ্ডিত যেজন
আত্মতত্ত্বের প্রবর্ত নয় ।।
পরমাত্মাকে রূপ ধরে
জীবাত্মাকে হরণ করে
লোকে বলে যায় রে নিদ্রে
সে যে অভেদ ব্রহ্ম
ভেবে লালন কয় ।।
কে কথা কয় রে দেখা দেয় না
নড়ে চড়ে হাতের কাছ
খুঁজলে জনমভর মেলে না।
খুঁজি তারে আসমান জমি
আমার এ চিনি না আমি
এ কি বিষম ভ্রমে ভ্রমি
আমি কোন জন সে কোন জনা।
রাম কি রহিম সে কোন জন
ক্ষিতি পবন জল হুতাশন
আমি শুধাইলে তার অন্বেষণ
মূর্খ বলে কেউ বলে না।
হাতের কাছে হয়না খবর
কি দেখতে যাও দিল্লি লাহোর
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর
সদাই মনের ভ্রম যায় না।
ক্ষ্যাপা তুই না জেনে তোর আপন খবর যাবি কোথায়
আপন ঘর না বুঝে বাহিরে খুঁজে পড়বি ধাঁধায়।।
আমি সত্য না হইলে
হয় গুরু সত্য কোন কাজে
আমি যেরূপ দেখ না সেরূপ দীন দয়াময়।।
আত্মরূপে সেই অ-ধর
সঙ্গী অংশে কলা তার
ভেদ না জেনে বনে বনে ফিরিলে কি হয়।।
আপনার আপনি না চিনে
ঘুরবি কত ভুবনে
লালন বলে, অন্তিম কালে নাই রে উপায়।।
কোন সাধনে মিলবে রে সেই পরম ধন
ধান্ধাবাজের ধোঁকায় পড়ে আন্দাজে করলি সাধন।।
যদি ভোগ দিলে ভগবান মিলতো আল্লা মিলতো শিন্নিতে
বড় বড় ভোগ সাজায়ে রাজায় পারতো কিনিতে।।
শুনি জাহেরে - বাতেনে মওলা
ভক্ত লয়ে করে খেলা
কোন রূপে সাঁইয়ের নিত্য লীলা
কোন মোকামে দরশন।।
যদি মক্কা গেলে খোদা মিলতো শিব মিলতো কাশিতে
বৃন্দাবনে কৃষ্ণ মিলতো কেউ চাইতো না আসিতে ।।
কোন মোকামে আছে বদ্ধ
কোন বস্তু তার প্রিয় খাদ্য
কেমনে করি আয়োজন।।
মন্দিরেতে মূর্তি গড়ে ধ্যান করে মনে মনে
আকাশেতে দুহাত তুলে সিজদা দিচ্ছে জমিনে
আমি দেখি নাই যাহার মূর্তি
তার সাথে কি হয় পিরিতি?
রাধা বল্লভের এই পাগলা গীতি
বলছে রে পাগল সে জন।
এই বেলা তোর ঘরের খবর জেনে নে রে মন
কেবা জাগে কেবা ঘুমায় কে কারে দেখায় স্বপ্ন।।
শব্দের ঘরে কে বারাম দেয়
নিঃশব্দে কে আছে সদাই
যেদিন হবে মহাপ্রলয়
কে কার করে দমন।।
দেহের গুরু আছে কেবা
শিষ্য হয়ে কে দেয় সেবা
যেদিন তাই জানতে পাবা
কলির ঘোর যাবে তখন।।
যে ঘরামি ঘর বেঁধেছে
কোনখানে সে বসে আছে
সিরাজ সাঁই কয় তাই না খুঁজে
দিন তো বয়ে যায় লালন।।
খুঁজে ধন পাই কী মতে?
পরের হাতে (ঘরের) কলকাঠি।।
শব্দের ঘরে নিঃশব্দের কুঁড়ে
সদায় তারা আছে জুড়ে
দিয়ে জীবের নজরে
ঘোর টাটি।।
আপন ঘরে পরের কারবার
আমি দেখলাম নারে (তার) বাড়ী ঘর
আমি বেহুশ মুটে
কার মোট খাটি।।
থাকতে রতন আপন ঘরে
একি বেহাত আজ আমারে
লালন বলেরে মিছে
ঘর বাটি।।
কোন নামে ডাকিলে তারে হৃদাকাশে উদয় হবে
আপনায় আপনি ফানা হলে সে ভেদ জানা যাবে।।
আরবী ভাষায় বলে আল্লা
ফারসীতে কয় খোদাতা’লা
গড বলেছে যীশুর চ্যালা,
ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভাবে।।
মনের ভাব প্রকাশিতে
ভাষার উদয় এ জগতে
মনাতীত অধরে চিনতে,
ভাষা বাক্য নাহি পাবে।।
আল্লা হরি ভজন পুজন
সকলই মানুষের সৃজন
অনামক অচিনায় বচন
বাগেন্দ্রিয় না সম্ভবে।।
আপনাতে আপনি ফানা
হলে সেই ভেদ যাবে জানা
সিরাজ সাঁই কয় লালন কানা
স্বরূপে রূপ দেখ সংক্ষেপে।।
কি সন্ধানে আমি যাই সেখানে
মনের মানুষ যেখানে
আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি
দিবারাতি নাই সেখানে।।
যেতে পথে কাম নদীতে
পাড়ি দিতে তীর বিনে
(কতো) ধনীর ভাড়া যাচ্ছে মারা
পড়ে নদীর তোর তুফানে।।
রসিক যারা চতুর তারা
তারাই নদীর ধারা চিনে
উজান তরী যাচ্ছে বেয়ে
তারাই স্বরূপ সাধন জানে।।
লালন বলে ম’লাম জ্বলে
ম’লাম আমি নিশি দিনে
মনের মানুষ স্থূলে রেখে
দেখাও স্বরূপ নীলাঞ্জনে।।
মন তুই করলি একি ইতরপানা
দুগ্ধেতে যেমনরে তোর মিশল চনা।।
শুদ্ধরাগে থাকতে যদি
হাতে পেতে অটল নিধি
বলি মন তাই নিরবধি
বাগ মানে না।।
কি বৈদিকে ঘিরলো হৃদয়
হলনা সু-রাগের উদয়
নয়ন থাকিতে সদায়
হলি রে কানা।।
বাপের ধন খেল সাপে
জ্ঞান চক্ষু নাই দেখবি কারে
লালন বলে হিসাব কালে
যাবে জানা।।
স্বরূপেরই ঘরে অটল রূপ বিহারে
চেয়ে দেখ না সখি, দেখনা তোরা,
ফণী মণি জিনি রূপেরই রাখানি
দুইরূপে একরূপ হল যে করা।।
যে জন অনুরাগী হয় রাগের দেশে যায়
রাগের তালা খুলে সে রূপ দেখতে পায়
রাগেরই করণ বিধি বিস্মরণ
নিত্যলীলায় অপার রাগ নিহারা ৷৷
অটল রূপে সাঁই ভেবে দেখ তাই
সে রূপের কভু নিত্যলীলা নাই
যে জন পঞ্চতত্ত্ব যজে লীলারূপে মজে
সে কি জানে অটল রূপ কী ধারা ৷।
আছে রূপের দরজায় শ্রীরূপ মহাশয়
রূপের তালা খোলার চাবি তাঁর হাতে সদাই
যে জন শ্রীরূপগত হবে তালা খোলা পাবে
অধীন লালন বলে অধর ধরবে তাঁরা ৷৷
আছে অটল রূপে সাঁই
ভেবে দেখলাম তাই;
কখন সে রূপে মজে
সেহি জানে রসিক,বাগেরই ধারা।।
লীলা রূপে মজে,সেহি জানে রসিক, রাগেরই ধারা
যে জন অনুরাগী হয় রাগের দেশে যায়
রাগের তালা খুলে সে রূপ দেখতে পায়
অনুরাগেই করণ,বিধি বিস্মরণ
লীলা নিত্যপুর,সেই রাগেরই খেলা।।
আছে রূপের দরজায় শ্রীরূপ মহাশয়,
রাগের তালা চাবি তার হাতে সদায়,
যে জন স্বরূপ গত হবে,তালা চাবি পাবে,
লালন বলে অধর ধরেছে তা’রা।।
(আরো পড়ূন)
কি করি কোন পথে যাই মনে কিছু ঠিক পড়ে না,
দোটানাতে ভাবছি বসে এই ভাবনা।।
কেউ বলে মক্কায় যেয়ে হজ করিলে যাবে গুনাহ
কেউ বলে মানুষ ভজে মানুষ হ না।।
কেউ বলে পড়লে কালাম, পায় সে আরাম, বেহেশতখানা
কেউ বলে সেই সুখের ঠাই, কভু কারো কায়েম রয়না।।
কেউ বলে মুরশিদের ঠাঁই, খুঁজিলে পাই আদি ঠিকানা,
লালন ভেড়ো তাই না বুঝে,হয় দো-টানা।।
(আরো পড়ূন)
আপন খবর যদি হয়,
যার অন্ত নাই তার খবর কে পায়।।
আত্মারূপে ফেরা,ভণ্ডে করে সেবা,দেখ দেখ যে-বাহয় মহাশয়।।
কে বা চালায় কে বা চলে,কেবা জাগে ধড়ে,কে বা ঘুমায়।। অন্য
আনমনা ছাড়,আত্ম তত্ত্ব ধোড় তীর্থ,লালন ব্রতের র্কায্য নয়।।
(আরো পড়ূন)
লন্ঠনে রূপের বাতি জ্বলছেরে সদায়।
দেখনারে দেখতে যার বাসনা হৃদয়।।
রতির গিরে ফসকা মারা
শুধুই কথার ব্যবসা করা,
তার কি হয় সে রূপ নেহারা
মিছে গোল বাঁধায়।।
যেদিন বাতি নিবে যাবে
ভবের শহর আঁধার হবে
সুখপাখী পালাইবে
ছেড়ে সুখালয়।।
সিরাজ সাঁই বলেরে লালন
স্বরূপ রূপে দিলে নয়ন
হবে রূপের রূপ দরশন
পড়িসনে ধাঁধায়।
(আরো পড়ূন)
আপন আপন খবর নাই।।
গগণের চাঁদ ধরব বলে মনে করি তাই।।
যে গঠেছে প্রেম তরী, সেই হয়েছে চড়নদারি,
কোলের ঘোরে চিনতে নারি, মিছে গোল বাধাই।।
আঠার মোকাম জানা, মহারসের বারাম খানা,
সে রসের ভিতরে সেনা, আলো করে সাঁই।।
(আরো পড়ূন)
সদা সে নিরঞ্জন নীরে ভাসে ।
যে জানে সে নীরের খবর
নীরঘাটায় খুঁজলে তারে পায় অনাসে ।।
বিনা মেঘে নীর বরিষণ
করিতে হয় তার অন্বেষণ
যাতে হ’ল ডিম্বের গঠন
থাকিয়ে অবিম্বু শম্ভুবাসে ।।
যথা নীরের হয় উৎপত্তি
সেই আবেশে জন্মে শক্তি
মিলন হ’ল উভয় রতি
ভাসলে যখন নৈরেকারে এসে ।।
নীরে নিরঞ্জন অবতার
নীরেতে সব করবে সংহার
সিরাজ সাঁই তাই কয় বারে বার
দেখ রে লালন আত্মতত্ত্বে বসে ।
...............
ভিন্নপাঠ
যথা নীরের হয় উদগতি, সেইখানে মেঘ জন্মে সত্যি,
মিলন হল ভৌমরতি, ভাসলে যখন নিরাকারে এসে।।
(আরো পড়ূন)
পাখী কখন জানি উড়ে যায়।।
একটা বদ হাওয়া লেগে খাঁচায়।।
খাঁচার আড়া পড়বে খসে,
আর পাখী দাঁড়াবে কিসে
ঐ ভাবনা ভাবছি বসে
চমকজ্বরা বইছে গায়।।
কারবা খাঁচা কেবা পাখী
কার জন্য মোর ঝুরে আখিঁ
আমার এই খাচায় থাকি
আমারে মজাতে চায়।।
আগে যদি যেতে জানা
জংলা কভু পোষ মানেনা
তবে উহার প্রেম করতাম না
লালন ফকির কেঁদে কয়।।
(আরো পড়ূন)
আমি একদিনও না দেখলাম তারে।।
বাড়ীর কাছে আরশী নগর, এক পড়শী বসত করে।।
গেরাম বেড়া অগাধ পানি; নাই কিনারা নাই তরণী পারে।।
ধরব ধরব মনে করি, কেমনে সেথা যাইরে।।
কি কব পড়শীর কথা, হস্তপদ স্কন্ধ মাথা নাইরে,
ক্ষণে থাকে শূন্য ভরে, ক্ষণে ভাসে নীরে।।
পড়শী যদি আমায় ছুতো, যম যাতনা সকল যেত দূরে,
সে আর লালন একখানে রয়, লক্ষ যোজন ফাঁকরে।।
(আরো পড়ূন)
দেখে শুনে জ্ঞান হোল না
কি করিতে কি করিলাম দুধেতে মিশালাম চনা।।
মদন রাজার ডঙ্কা ভারি
হলাম আজ্ঞাকারী
যার মাটিতে বসত করি
চিরদিন তারে চিনলাম না।।
রাগের আশ্রয় নিলেরে মন
কী করিতে পারে মদন
আমার হোল কামলোভী মন
(হলাম) মদন রাজার গাঁটরি টানা।।
উপর হাকিম এক দীনে
দয়া করবেন নিজ গুনে
দ্বীনের অধীন লালন ভনে
গেল না মনের দো-টানা।।
মন তোরে আজ ধরতে পারতাম হাতে
দেখতাম ওরে মন কি মনা
কেমন করে সদায় আলডেঙাতে[১]।
কি কর মন বে –হাতে আমার
নৈলে কি মন এভাব তোমার
নিইলে গনি তালের শুমার
কোন তালে আমায় নাচাও কোন পথে।।
সদা বল আর ভুলবো না
তিলেকে তো ঠিক থাকে না
দুষ্ট লালন বিষম সেনা
আমার মজালি নানা মতে।।
(আরো পড়ূন)
কি করি কোন পথে যাই
মনে কিছু ঠিক পড়েনা
দোটানাতে ভাবছি বসে ওই ভাবনা।।
কেউ বলে মক্কায় যেয়ে হজ্ব করিয়ে
যাবে গুণাহ
কেউ বলে মানুষ ভজে
মানুষ হ’ না।।
কেউ বলে পড়লে কালাম পায় সে আরাম
ভেস্তখানা,
কেউ বলে ও সুখের ঠাঁই
কায়েম রয় না।।
কেউ বলে মুর্শিদের ঠাঁই
খুঁজিলে পায়আদি ঠিকানা,
লালন ভেড়ো তাই না ভুঝে
হয় দোটানা।।
(আরো পড়ূন)
কোন পথে যাবি মন ঠিক হোল না
করো লাফালাফি সার কাজে শূন্যকার[১]
টাঁকশালে পড়িলে যাবে জানা।।
যেতে চাও মক্কা যদি পাও ধাক্কা
ফিরে দাঁড়াও তৎখনা।।
বলে এতে কার্য্য নাই কাশীধামে যাই
করে সহজ বিবেচনা।।
ক্ষণেক উদাসী ক্ষনেক গৃহবাসী
ক্ষনেক মন হতাভাগা আনমনা।।
বাজায় তিলেকে তিন তাল বাজায় হামে হাল
মনের ঘরে বাঁধায় তা না না।।
একে নিরিখ যার যেতে ভবে পার
সেই তরী টাল খাবে না।।
হারে পাঁচ পায়ের চলন চলিয়ে লালন
(এখন) চৌরাশি করে আনাগোনা।।
(আরো পড়ূন)
আছে ভাবের তালা যেই ঘরে
সেই ঘরে সাঁই বাস করে।।
ভাব দিয়ে খোল ভাবের তালা
দেখবি সেই মানুষের খেলা।
ঘুচে যাবে মনের ঘোলা
থাকলে সে রূপ নিহারে।।
ভাবের ঘরে কি মূরতি
ভাবের লন্ঠন ভাবের বাতি।
ভাবের বিভাব হলে এক রতি
অমনি সে রূপ যায় সরে।।
ভাব নইলে ভক্তিতে কি হয়?
ভেবে বুঝে দেখ মনুরায়।
যার যে ভাব সে জানতে পায়
লালন কয় বিনয় করে।।
(আরো পড়ূন)
আপনারে আপনি চিনি নে
দিনদোনের পর যার নাম অধর
তারে চিনব কেমনে॥
আপনারে চিনতাম যদি
মিলত অটল চরণ নিধি
মানুষের করণ হত সিদ্ধি
শুনি আগাম পুরাণে॥
কর্তারূপের নাই অন্বেষণ
আত্মারে কি হয় নিরূপন
আত্মতত্ত্বে [১] পায় শতধন [২]
সহজ সাধকজনে॥
দিব্যজ্ঞানী যেজন হোল
নিজ তত্ত্বে নিরঞ্জন পেলো
সিরাজ সাঁই কই লালন র’ল
জন্ম অন্ধ নিজ গুণে॥
... ... ... ... ... ... ... ...
পাঠান্তর:
[১] আপ্ততত্ত্ব। অনেকে ছেঁউড়িয়ায় গেয়ে থাকেন। তবে মূল খাতায় আত্মতত্ত্ব
[২] সাধ্যধন। মূল খাতায় বানান রয়েছে 'সাদ্দ'। তবে গাইবার সুবিধার্থে 'শতধন' হয়ে গিয়েছে
লালন-গীতিকা, গান নং ১।
(আরো পড়ূন)