- মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
- আমাদের এখনকার সংকট
- আওয়ামি লিগের ইতিহাসও পারিবারিক ইতিহাসে পর্যবসিত হয়েছে...
- বাংলাদেশে 'নিউকনি' সিপাই
- রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি
- রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র
- গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য
- মোদীর ভারত এবং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য বদল
- দেখলেই গুলি?
- আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
ভাসানী, রবুবিয়াত ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের উদয়, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং উপমহাদেশের জনগনের লড়াই সংগ্রাম থেকে যেভাবে মুছে ফেলা হয়েছে সে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বাংলাদেশে নতুন রাজনীতির পুনর্গঠনের প্রশ্ন মওলানা ভাসানীকে নতুন ভাবে জানা, পড়া ও চর্চায় নিয়ে যাবার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লেখাগুলোর পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গঠনের গলদ, গণতন্ত্র ও এখনকার কর্তব্য
বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, আইন ও বিচারব্যবস্থার গোড়ার গলদ হচ্ছে শুরু থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা ও গঠন করা যায় নি। মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু ও সংঘটিত হয়েছিল একাত্তরের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে -- যার ঘোষিত ও লিখিত মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফ কায়েম ও চর্চার উপযোগী গণমানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু ডান কি বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ধারা মুক্তিযুদ্ধ ও গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গণশক্তির বিকাশ ও বিজয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অসমাপ্ত যুদ্ধ সম্পন্ন করতে পারে, এটাই এখনকার রাজনৈতিক কাজ। এদেশের সকল মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, লোকায়ত জ্ঞান ও ভাবুকতা সবই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে গড়ে ওঠার আন্তরিক ও ঐতিহাসিক উপাদান। কিন্তু গণ ঐক্য ও গণশক্তি বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ধর্মের নামে, ধর্ম বিরোধিতার নামে কিম্বা বাস্তবতা বিবর্জিত নানান আসামানি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও আশু রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও কর্তব্য পূরণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে তারাই -- ডান কিম্বা বাম -- জনগণের শত্রু।
- চতুর্থ সংশোধনীতে হারানো ক্ষমতা সামরিক আইনে ফিরে পাওয়ার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছে আদালত
- আইনের শাসনের তামাশা ও বাকশাল ‘দর্শনের’ জের
- আদালত অবমাননার বিচার ও দণ্ড প্রসঙ্গ
- ‘কমিউনিস্ট’দের রিমান্ড সমস্যা
- হাসিনার কনস্টিটিউশন সংশোধন: আসলে কি হতে যাচ্ছে?
- সংজ্ঞাহীন অবারিত এখতিয়ার বন্ধ হবে কবে?
- ছয় বছরেও চূড়ান্ত হয় নাই আদালত অবমাননা আইন
বাংলার ভাবসম্পদ
লালন ও ভাবান্দোলন
চিনিয়ে দেওয়া, ধরিয়ে দেওয়া
এক
আগের লেখা বাংলায় অনুবাদ সম্পর্কে নোক্তা দিয়ে শেষ করেছিলাম। বলেছিলাম দর্শনের আলোচনা কিছুটা ফলপ্রসূ হতে পারে যদি আমাদের প্রাথমিক সাধনা হয় বাংলা ভাষার স্বভাবের মধ্যে থেকে সেই ভাষার বাইরের ধ্যানধারণা কতোটা আত্মস্থ করা সম্ভব সেই দিকে আমরা মনোযোগ দিতে পারি। স্বভাব বলতে আমরা প্রমিত বাংলার নিয়ম বা বিধিবিধানের কথা বলছিনা। ভাষার মধ্যে সবসময়ই ভাঙাগড়া চলছে। একটা ‘নিয়ম’ যদি দাঁড়িয়ে যায় তবে তার পেছনে বিস্তর ইতিহাস থাকে। সেই ইতিহাস নিয়মের ইতিহাস নয়, নিয়ম ভাঙাগড়ার ইতিহাস। অর্থাৎ নিয়ম কেউ আইন করে বেঁধে দেয় না, নিয়ম বা বিধিবিধান হিসাবে যা দাঁড়িয়ে যায় তার অন্দরে একটা লম্বা সময়ের ইতি
আমরা ‘বিষয়বিদ্যা’ গড়ে ওঠার গোড়ার ইতিহাস সম্পর্কে কিছু ধারণা দেবার চেষ্টা করছি। প্রকৃতি বিজ্ঞানের পদ্ধতি ও প্রকরণের দ্বারা বিষয়বিদ্যা অনুপ্রাণিত, কিন্তু বিজ্ঞানের অধীনস্থ না থেকে চিন্তা নিজের সার্বভৌম ক্ষেত্র আবিষ্কার করার মধ্য দিয়ে কিভাবে বিজ্ঞানের বিজ্ঞান হয়ে ঊঠল -- বিষয়বিদ্যার এই হয়ে ওঠার ইতিহাসটাই আমরা বুঝবার চেষ্টা করছি। করছি এমন ভাবে যাতে বিদ্যায় দিগগজ না হয়েও পাশ্চাত্য দর্শন সম্পর্কে কিঞ্চিত আগ্রহীরা কিছুটা ধারণা অর্জন করতে পারেন।
দর্শন, ভাবুকতা, চিন্তা ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের সাধারণ অনুমান হচ্ছে মানুষ যেসকল বিষয় নিয়ে ভাবে, চিন্তা করে সেই সকল বিষয় বুঝি পরস্পর থেকে একদমই আলাদা। যেমন, বিজ্ঞান, ধর্মশাস্ত্র, শিল্পকলা
ফ্রানৎজ ব্রেনতানো (১৮৩৮ – ১৯১৭) মনোবিদ্যায় অবদানের জন্য স্বনামে খ্যাত। তবে দার্শনিকদের কাছে তাঁর খ্যাতি অন্তত দুইজন বিখ্যাত ব্যাক্তির কারণে। একজন মনোবিদ সিগমুন্ড ফ্রয়েড আর অন্যজন বিষয়বিদ্যার গোড়াপত্তনকারী দার্শনিক এডমুন্ড হুসার্ল। দুজনেই ব্রেনতানোর ছাত্র ছিলেন। দুইজনের ওপর ব্রেনতানোর প্রভাব গভীর। চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দেবার ক্ষেত্রে ব্রেনতানো ছিলেন নির্ধারক -- হুসার্লের ক্ষেত্রে একথা অনায়াসেই বলা যায়।
তাঁর গড়ে ওঠা রোমান ক্যাথলিক যাজক হিসাবে, অভিষিক্ত হন ১৮৬৪ সালে। উরজবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসাবে যোগ দেন ১৮৭২ সালে। ক্যাথলিক চার্চের নিয়মানুযায়ী পোপ কোন ভুল করতে পারেন না। যীশুর অনুসারীদের রাখাল ও শিক্ষক হিসাবে পো
ফ্রানৎজ ব্রেনতানোর (১৮১৩ – ১৯১৭) ‘প্রত্যক্ষ বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মনোবিদ্যা (Psychology from an Empirical Standpoint) বইটি নানান কারনে চিন্তার ইতিহাসে -- বিশেষত মনোবিদ্যা ও দর্শনে -- ধ্রুপদী কাজ হিসাবে স্বীকৃত। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারনের মধ্যে একটি হচ্ছে বইটি একজন গণিতের ছাত্রকে দর্শনে আগ্রহী করে তুলেছিল। এই তরুণের নাম এডমুন্ড হুসার্ল। এই আগ্রহ ঘটেছিল বলেই এডমুন্ড হুসার্ল বিষয়বিদ্যার গোড়ার কাজগুলো করতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তিনি দর্শনের জগতে বিষয়বিদ্যার প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে খ্যাত।
ব্রেনতানোর পড়াবার ধরণ তরুণদের দারুন অনুপ্রাণিত করতে পারত। বিশেষত তিনি নতুন নতুন প্রশ্ন তুলতে পারতেন, আর সেই প্রশ্নগুলো ছাত্রদের ভাবতে বাধ্য ক
এ আলোচনা আমরা শুরু করেছিলাম বিষয়বিদ্যার ‘শুরুর তিন’ নিয়ে। আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে গোড়ার এই তিন ধারনা বা বিষয় পরিচ্ছিন্ন থাকলে বিষয়বিদ্যা কিভাবে দর্শনকে আমূল বদলে দিয়েছে তা খানিক আমরা অনুমান করতে পারব। এই তিনটি বিষয়ের ওপর গবেষণা ও পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়বিদ্যা মনোবিদ্যার ভূগোল হেঁটে এসে দর্শনের দেশে প্রবেশ করেছে। বিষয়বিদ্যার আগে দার্শনিক চিন্তার যে ধরণ আমরা দেখি সেই ধরণও বদলে গিয়েছে। তার পরিণতি হিসাবে মার্টিন হেইডেগারের আবির্ভাব এবং তার সর্বব্যাপী প্রভাব – পক্ষে বা বিপক্ষে – খোদ দর্শনের ভূগোল, জগত ও দিগন্তকেই বদলে দিয়েছে বলা যায়। ফলে বিষয়বিদ্যা এবং বিষয়বিদ্যা হয়ে মার্টিন হেইডেগারের দর্শনের পর্যালোচনা ছাড়া পাশ্চাত্য
এই পর্ব থেকে আমরা ইনটেনশেনালিটির অনুবাদ হিসাবে ‘বিষয়নিষ্ঠা’ ব্যবহার করব, ‘মনোবৃত্তি’ না; মনস্তত্ত্ব বা মনোবিজ্ঞানের পরিমণ্ডলে সীমিত ও সংকীর্ণ অর্থে এর যে ব্যবহার তা দর্শনের পরিমণ্ডলে বয়ে নিয়ে যাবার দরকার নাই। অনাবশ্যক। হেইডেগার দেখাতে চেয়েছেন, “বিষয়নিষ্ঠা মানে ইন্দ্রিয়পরায়নতা বা উপলব্ধিতে নাই এমন কিছুকে অভিজ্ঞতায় যুক্ত করা নয়, যা সহজ ও স্বাভাবিক ইন্দ্রিয়পরায়ন নিষ্ঠার পাশে অতিরিক্ত উপলব্ধি হিশাবে অনেক সময় হাজির হয়ে যায়। অর্থাৎ ব্যাপারটা এমন নয় যে আমাদের বিশেষ ভাবে বিষয়ের প্রতি নিষ্ঠ বা সচেতন ভাবে সম্বন্ধযুক্ত হতে হয়। আসলে দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেভাবে বেঁচে থাকি, জীবনের চতুর্দিকে নানান কিছুর মধ্যে নানান ভাবে সম্প
ইনটেনশেনালিটি বা ‘বিষয়নিষ্ঠা’ বলতে বিষয়বিদ্যা কী বোঝে তা বোঝাতে বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের। এই বাধা ধারনাটিকে আরও বিশদ করবার জন্য আমাদের খুবই কাজে আসে। পুরানা শব্দ ও ধারনাকে নতুন করে ব্যবহার করতে গেলে পুরানা বোঝা বয়ে বড়ানোর দায় চিন্তার ঘাড়ে ভর করে থাকে; সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। পাশাপাশি আমরা ধারণাটিকে বাংলাভাষায় আত্মস্থ করে নেবার চেষ্টা করছি। সেটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও দরকারী। ওর ফলে কোন অপরিচ্ছন্নতা যদি তৈরী হয় তবে তাকে সাফ করে তোলার মধ্য দিয়েই আমরা এগুবো। আক্ষরিকতা থেকে ভাবে প্রবেশ করবার কর্তব্য আছে আমাদের। আমরা মানি যে পাশ্চাত্য শব্দ, শব্দবন্ধ বা ধারণাকে আত্মস্থ করা স্রেফ অনুবাদ করার ব্যাপার না; পরিভাষা বানানো বা ভাষান্তর জাতীয় ব্যাপার
মনোবৃত্তি থেকে বিষয়নিষ্ঠা এবং বিষয়নিষ্ঠা থেকে ভাব। ইনটেনশেনালিটিকে বাংলায় আত্মস্থ করতে গিয়ে আমরা পেঁয়াজের খোসার মতো শব্দটিকে খুলছি, যেন শব্দের ভাঁজগুলো ধরা যায়, আর বাংলায় ওর অর্থভেদ হয়। আমরা বলেছি, ‘ভাব’ কথাটা আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করব। কারন আমরা এখনও জানি না বিষয়বিদ্যাকে আত্মস্থ করবার ক্ষেত্রে বাংলাভাষা ও ভাবুকতার গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ও ধারণা কতোটা কিভাবে কাজে লাগে। পাশ্চাত্য দর্শন পড়া, বিচার করা ও বোঝার জন্য শুধু নয়, একই সঙ্গে কাজে লাগে ঠিক কোথায় বাংলা ভাষা ও ভাবুকতার ‘ভাব’ কথাটার সঙ্গে ‘জ্ঞানতত্ত্ব’ কিম্বা ‘দর্শন’ সংক্রান্ত ধারণার অর্থভেদ ঘটে। সেই ভেদ সকলের প্রত্যয় ও বিভক্তির চিহ্ন
বিষয়বিদ্যা ইনটেনশেনালিটি বা বিষয়নিষ্ঠাকে যেভাবে বিচার করে তার সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে শব্দটিকে আমরা যেভাবে বুঝি সেভাবে বুঝলে চলবে না। এ কথা আমরা অনেকবার বলেছি। হেইডেগারও এই দিকটা বারবার হুঁশিয়ার করে দিতে ভুল করেন নি। বিষয়নিষ্ঠার দ্বারা ইচ্ছা, সংকল্প বা কোন কিছুর প্রতি বাসনা জ্ঞাপন বোঝানো হয় না। হেইডেগার এটাও বারবার সতর্ক করতে চেষ্টা করেছেন, যে বিষয়বিদ্যা ঠিক কিভাবে ধারণাটিকে বোঝে সেটা হঠাৎ বুঝে ওঠাও কঠিন। বেশ কয়েক বার ও কয়েক স্তরে চেষ্টার দরকার হয়। আমরাও বাংলায় অনুবাদের ক্ষেত্রে ইনটেনশেনালিটির অনুবাদ হিসাবে নানান পরিভাষা ব্যবহার করেছিঃ মনোবৃত্তি, বিষয়নিষ্ঠা, ভাব – ইত্যাদি। পরীক্ষামূলক ভাবে। বাংলাভাষায় বিষয়বিদ্যার প্রকল্প আত্মস্থ করতে
আগের কিস্তির আলোচনায় আশা করি আমরা বুঝেছি যে উপলব্ধিকে আমরা এখন ঠিক যেভাবে বুঝে থাকি সেভাবে বুঝলে চলবে না। আমাদের এখনকার বোঝাবুঝির একটা সংকীর্ণ জায়গা আছে। উপলব্ধি ব্যাপারটাকে বুঝবার সেই সংকীর্ণ জায়গা পরিহার করে বা প্রচলিত জ্ঞানতাত্ত্বিক পদ্ধতির সংকীর্ণ গলি থেকে বিষয়বিদ্যা বেরিয়ে আসতে চায়। যা হাজির রয়েছে বা সহজ ও স্বাভাবিক ভাবে যে বিষয় সামনে হাজির হয় সেই সহজ ও স্বাভাবিক আছেময়তাকে বিষয়বিদ্যা আমলে নিতে চায়। কোন প্রকার জ্ঞানতাত্ত্বিক আঁকা বাঁকা পথে বা ঘুরপথে হারিয়ে যেতে চায় না। এর মানে এই নয় যে বিষয়বিদ্যা জ্ঞানতত্ত্ব বা প্রাচীন দার্শনিক চিন্তা কিম্বা তার ইতিহাসকে অস্বীকার করে; না, সেটা তার উদ্দেশ্য নয়, বরং কোন কিছু যখন আমাদের মধ্যে বিষয় হয়ে হ
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য
ব্যাক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য প্রথম প্রকাশ। এছাড়াও আরো দুটি কবিতার বই নতুন করে সংস্করণ করা হয়েছে। (১) অসময়ের নোট বই। (২) কবিতার বোনের সঙ্গে আবার। সাহিত্য ও কবিতা পাঠক প্রেমিকদের ধন্যবাদ।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকাশক ফরহাদ মজহারের বই প্রকাশ করেছেন। আগ্রহী পাঠকদের সুবিধার জন্য এখানে কয়েকটি বইয়ের পরিচিতি দেওয়া হোল।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সহযোগী গণমাধ্যম নিপাত যাক
সম্প্রতি ফরহাদ মজহারের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিকৃতি ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ক্যাডার একটি ক্ষুদ্র সাংবাদিক গোষ্ঠি মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে ও থানায় জিডি দায়ের করে। বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাসহ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ফরহাদ মজহারের নিরাপোষ লড়াই কারোরই অজানা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে ফরহাদ মজহারকে রাষ্ট্রীয় ভাবে দমন, পীড়ন ও নির্যাতনের জন্য এই গোষ্ঠি তাদের সকল শক্তি নির্লজ্জ ভাবে নিয়োগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এদের সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জিঘাংসার যে-চেহারা ফুটে উঠেছে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য চিরকাল কলংক হয়ে থাকবে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মীসহ সকল স্তরের পেশার মানুষ এক্ত্রিত হয়ে 'আক্রান্ত গণমাধ্যম ও সংকটের আবর্তে দেশ' শিরোনামে একটি গোলটেবিলে একত্রিত হয়। তাঁরা সাংবাদিকতার নামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সহিংসতার নিন্দা জানান। এখানে সেই প্রতিবাদ সভার কিছু ছবি ও উপস্থিত নাগরিকদের বক্তব্য হাজির করা হচ্ছে। এ সভার মূল লক্ষ ছিল মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা এবং চিন্তার স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ-এলবামে প্রবেশের জন্য ওপরের ছবির ওপর ক্লিক করুন; বক্তব্যের জন্য খোলা-এলবামে প্রত্যেক বক্তার ছবির ওপর ক্লিক করুন। ট্রান্সক্রিপশান সময় সাপেক্ষ বলে ধীরে ধীরে তোলা হচ্ছে। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়তে হলে দয়া করে নীচের সংযোগচিহ্নে যান
আমার দেশ: গোলটেবিল বৈঠকে ফরহাদ মজহারের পাশে বিশিষ্টজনরা : প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই সঙ্কট মোকাবিলায় একমাত্র সমাধান : আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন
চিন্তার সাম্প্রতিক সংখ্যা
পুরানো 'সন্ত্রাস' সংখ্যা। বছর ১৪ সংখ্যা ১, নভেম্বর ২০০৫ / অগ্রহায়ন ১৪১২। সম্পাদকীয়। দেরিদা, হাবারমাস এবং সন্ত্রাসকালে দর্শন -- জিওভান্না বোরাদরির সঙ্গে আলাপ। সন্ত্রাস, আইন ও ইনসাফ। বলপ্রয়োগ বিচার। সন্ত্রাসবাদের হকিকত। আধুনিকতায় ক্ষমতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের পুনর্গঠন। বিশ্ববাণিজ্য চুক্তির সন্ত্রাসঃ হংকং সভা। বীজ ও নারী বিপন্ন যমজ। মান্দিদের জীবন। নাখোজাবাদ বুলেটিন। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ৪র্থ সার্ক পিপলস ফোরাম। স্পেকট্রাম গার্মেণ্ট ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ড।
চিন্তা পুরানা সংখ্যা
পাক্ষিক চিন্তার পুরানো কয়েকটি সংখ্যা। এর বেশ কয়েকটি এখনও পেতে পারেন। যোগাযোগ করুন, পাক্ষিক চিন্তা, ২২/১৩ খিলজি রোড, মহাম্মদপুর, ব্লক-২। শ্যামলী। ঢাকা-১২০৭।
ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
- ১. দর্শনের ভাষা বা বুদ্ধির ভাষায় কথা বলার গুরুত্ব
- ২. পর্যালোচনা মানে সমালোচন বা বিরোধিতা নয়
- ৩. ধর্মে কি কোন চিন্তা নাই
- ৪. উপলব্ধি, বুদ্ধি ও সংবেদনা
- ৫. নফি ও এজবাত
- ৬. ধর্মবিরোধীদের কবল থেকে মার্কসকে উদ্ধার একালে জরুরী
- ৭. হজরত সোলায়মান ও ফয়েরবাখ
- ৮. দ্বান্দ্বিক চিন্তার পর্যালোচনা
- ৯. মানুষের নিজের কাছ থেকে নিজের বিযুক্তি
- ১০. ধর্মের প্রতি তত্ত্বীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সীমাবদ্ধতা
সক্রিয় ও সজীব চিন্তার স্বভাব ও গৌরব উপলব্ধির জন্য ধর্মের পর্যালোচনা যে কোন জনগোষ্ঠির আত্মবিকাশের জন্য জরুরী। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে নিজেদের গাঠনিক ভিত্তির গোড়ার চিন্তার প্রতি সজাগ ও সতর্কতা ছাড়া কোন জনগোষ্ঠির পক্ষেই বিশ্বে শক্তিশালী ভাবে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন চর্চা সে কারনে কোন আসমানি ব্যাপার নয়। একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে চিন্তার বিকাশের মাত্রা ও গভীরতা দিয়ে সেই জনগোষ্ঠির সীমা ও সম্ভাবনা বোঝা যায়।
দর্শনের দিক থেকে ধর্মভাবনা মানুষের চেতনা বা চিন্তারই বিশেষ রূপ। এই বিশেষ রূপের বিচার ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচার দিয়ে নিষ্পন্ন হয় না, তার বিষয় ও পদ্ধতি আলাদা। ধর্মের আর্থ-সামাজিক বা রাজনৈতিক বিচারের গুরুত্ব আছে বটে, কিন্তু সেটা দার্শনিক বিচার নয়। সক্রিয় ও সজীব চিন্তা ধর্মভাবনায় নিজেকে যে রূপে হাজির দেখে দর্শনের স্তরে একই রূপে হাজির না দেখলেও এই দাবি জানাতে কুন্ঠিত হয় না যে “দর্শনের বিষয় সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে ধর্মেরই বিষয় – উভয় ক্ষেত্রে সেটা হোল, সত্য। কথাটা এই চূড়ান্ত অর্থে যে আল্লাহ এবং একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সত্য। তাই উভয়েই প্রকৃতি ও মানুষের এই সীমিত জগতকে পরস্পরের সম্পর্ক এবং তাদের সত্য আল্লার সত্যে বিচার করে”। কথাটি জর্মন দার্শনিক গেঅর্গ ভিলহেল্ম হেগেলের (১৭৭০-১৮৭১)। সত্য বলতে হেগেল কি বুঝতেন এই ঘোষণায় তা আমরা আন্দাজ করতে পারি। আল্লার সত্য নির্ণয়ের আকুতির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতি ও মানুষের সীমিত জগতের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মানুষের সম্ভাবনা বিচার করে -- আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক, নীতি-নৈতিকতা ও রাষ্ট্র হেগেল কিভাবে বিচার করেছেন তার ইঙ্গিতও এই অল্প কথার মধ্যে আমরা টের পাই।
সত্য শুধু বিশুদ্ধ বুদ্ধির নির্ণয় নয়, বরং মানুষ তার ইন্দ্রিয়পরায়ণ তৎপরতার পরিমণ্ডলে যে সত্য 'উপলব্ধি' করে সেখানেও চিন্তা বা বুদ্ধির কারবার হাজির থাকে, তবে আত্মসচেতন চিন্তা হিসাবে নয়। সে কারণেই একে আমরা কাঁচা ইন্দ্রিয়োপলব্ধি বলি, বুদ্ধি যে কাঁচামাল থেকে জ্ঞান উৎপাদন করে। ইন্দ্রিয়োপ্লব্ধির সত্য বুদ্ধি তার নিজের স্বরূপে কিম্বা নিজের পরিমণ্ডলে কিভাবে প্রকাশ করবে হেগেলের দর্শনের সেটাই ছিল প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে সকল বৃত্তির সামষ্টিক উদ্যোগ বা প্রণোদনা থেকে মানুষ যে সিদ্ধান্তে পৌঁছায়, বুদ্ধি সেই সত্য নিজের স্বরূপে আদৌ ধারণ বা প্রকাশ করতে পারে কিনা সেটা দর্শনে এখনও বড়সড় তর্ক হয়ে রয়েছে। ধর্মের পর্যালোচনা সেই তর্ককে সক্রিয় ও সজীব চিন্তার নিজের সমস্যা হিসাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। যে কারণে 'ধর্মের পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ইসলাম' নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের এই কালে ইসলামের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষ ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর প্রাবল্য মোকাবিলা করতে হলে দর্শনের দিগন্ত থেকে ইসলামের রাজনৈতিক-দার্শনিক প্রস্তাবনাকে নতুন করে বিচারের দরকার আছে। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই কালে সামগ্রিক ভাবে চিন্তার যে সংকট তা মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলাম আদৌ কোন অবদান রাখতে সক্ষম কিনা সেটা দর্শনের নিজেরই অন্বেষণের বিষয়। সেই অনুসন্ধানের তাগিদ থেকে এই লেখা।
পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রকট লড়াই জারি রয়েছে। বলাবাহুল্য, এই আলোচনা সেই বাস্তবতার বাইরে নয়। পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠি, সম্প্রদায়, শ্রেণি এবং বিভিন্ন শারিরীক চিহ্নে ও শারিরীক বাসনায় বিভক্ত জগতে সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের লড়াইও নানা কারনে অনিবার্য বটে, কিন্তু ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার লড়াই আর বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় মানুষের চিন্তার সংকট মীমাংসার ক্ষেত্রে ইসলামের সম্ভাব্য অবদান বিচার সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্য নাজিল হয় নি, ফলে তা মানুষের চিন্তার ইতিহাস ও দর্শনেরও বিষয়। এই অনুমান থেকে লেখাগুলো পাঠ করলে পাঠক উপকৃত হবেন আশা করি।
- See more at: http://chintaa.com/index.php/network/index/bangla#sthash.OYNrOjTu.dpuf