চিন্তা


চিন্তা ও তৎপরতার পত্রিকা

২০. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

কোভিড-১৯ ভাইরাসকে বলা হচ্ছে ‘নোভেল’, মানে এই ভাইরাস আগে শনাক্ত হয় নি, কিম্বা আগে ছিল না। এর আগে কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বের মানুষ মোকাবিলা করে নি। এই ভাইরাস সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানও অপ্রতুল; বিশেষত সংক্রমণ বিস্তারের চরিত্র এবং সম্ভাব্য চিকিৎসার তথ্য। ফলে মহামারী মোকাবিলার পরিকল্পনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুমানের ওপর নির্ভর করে নির্ণয় করা হয়েছে। অল্প কিছু ধনি দেশ অর্থনীতি, সামরিক শক্তি এবং বিজ্ঞানের ওপর দখলদারির কারনে দরকারি গবেষণা করতে পারছে, তারা প্রতিদিন নিজের এবং অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা যাচাই বাছাই করতে সক্ষম। তারা নতুন তথ্য ও গবেষণার ভিত্তিতে মহামারি মোকাবিলা পরিকল্পনায় অদল-বদল ঘটাচ্ছে, পদ্ধতির সংস্কার করছে কিম্বা বদলাচ্ছে। বিতর্ (আরো পড়ূন)

১৯. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বিল গেইটস নিয়ে আলোচনায় আমরা দেখেছি তিনি কিভাবে মহামারীকে সিরিঞ্জ, শিশি, ভ্যাকসিন, নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের ঘুলঘুলি দিয়ে দেখেন। এই দেখা খণ্ডিত দেখা। অর্থাৎ ভাইরাস যাকে আক্রমণ করে সেই ‘হোস্ট’ বা আক্রান্ত দেহের দিক থেকে দেখা। অথচ ‘হোস্ট’, দেহ বা জীবন সমাজ, পরিবেশ, সংস্কৃতি, রাজনীতি ইত্যাদি কোন কিছু থেকে কোন ভাবেই বিচ্ছিন্ন কোন সত্তা নয়। কিন্তু দেহ, জীবন বা ‘হোস্ট’কে বিল গেইটস তাদের সামগ্রিক জাগতিক সম্পর্ক থেকে আলাদা বা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। 'দেহ'কে আলাদা করে ফেলার পর বিচ্ছিন্ন দেহ এবং সংক্রামক ভাইরাসের ‘হোস্ট’ পুঁজি বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র হিশাবে হাজির হয়। ‘হোস্ট’ কেন্দ্র করে তা (আরো পড়ূন)

১৮. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

ধরুন, আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করলেন যে আপনি আসলেই করোনা মহামারী থেকে বাঁচতে চান। যদিও আমি তা একদমই বিশ্বাস করি না। ধরে নিন আমি গোঁয়ার টাইপের। তবে এইটুকু জানুন, বিশ্বাস না করার পক্ষে আমার বিস্তর কারন রয়েছে।

তবু ধরুন, তর্কের খাতিরে মানলাম যে আপনি আসলেই কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হতে চান না, ইনফ্লুয়েঞ্জা সর্দি-কাশি-মাথাব্যথা ভাল লাগে না। তাছাড়া মরতে নিশ্চয়ই ভয় পান। ঠিক আছে মানলাম। তাহলে সবার আগে নিজের অতি সাধারণ কিছু কাণ্ডজ্ঞান আপনাকে ব্যবহার করতে শিখতে হবে।
সেটা কি রকম?

ধরুন, আপনি কি আসলেই বিশ্বাস করেন যে এই যে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধংদেহী ভাব, তুলকালাম কোভিড-১৯ যুদ্ধাবস্থা, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং, লকডাউন -- আপনাকে ঘরবন্দী, এলাকাব (আরো পড়ূন)

১৭. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বিল গেইটসের প্রবল আগ্রহ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে। মাইক্রোসফটের বিশাল সাফল্য বিচার করলে আমরা তা অনায়াসেই বুঝি। তিনি আমাদের অফিসে যেমন, তেমনি জীবনের অন্দর মহলে নিত্য হাজির রয়েছেন। প্রতিদিন যখন আমরা কম্পিউটার অন করি, মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ বা জানালা দিয়েই আমাদের জগত দেখা এবং নতুন টেকনোলজির জগতে বেঁচে থাকা শুরু হয়। কৃৎকৌশলের নিয়ন্ত্রণে আমরা ইতোমধ্যেই বিল গেইটসের হাতে বাঁধা পড়ে আছি। তবে এখন তিনি মহামারীর অজুহাতে আমাদের দেহের ওপর পুরাপুরি নিয়ন্ত্রণ চান।

শুধু মাইক্রোসফট নিয়ে গেইটস তৃপ্ত না। তিনি আরও আবিষ্কার চান। এবার এমন আবিষ্কার চান যাতে আমাদের শরীর বহুজাতিক কোম্পানির কাছে পুরাপুরি জিম্মি হয়ে পড়ে। গেইটস চাইছেন নতুন ভ্যাক্সিন ও নতুন বীজ আবিষ্কা (আরো পড়ূন)

১৬. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

13 May 2020

এখন চতুর্দিকে যেমন মার মার কাট কাট যুদ্ধের আওয়াজ শুনছি, বিলগেইটসও মনে করেন মহামারির মোকাবিলা রীতিমতো একটা যুদ্ধই বটে। প্রথাগত যুদ্ধে সৈনিকের হাতে থাকে বন্দুক বা মারণাস্ত্র। পার্থক্য হচ্ছে বিল গেইটস সিরিঞ্জ হাতে নেমেছেন। তিনি লড়বেন ভ্যাকসিন আর সিরিঞ্জ নিয়ে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার বলেছেন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার শ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে কার্যকর পথ হচ্ছে শক্তিশালী জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা। শুধু আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য নয়, ধনি গরিব সব দেশের জন্য। কিন্তু বিল গেইটস সেটা চান না। তিনি চান ভ্যাকসিন। তাই মহামারীকে তিনি আর্থ-সামাজিক বৈষম্য, প্রাণ ও পরিবেশের ধ্বংস, খাদ্য চক্রের বিনাশ, জলবায়ু বিপর্যয়, যুদ্ধ বিগ (আরো পড়ূন)

১৫. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

চিনের উহানে নতুন করোনা ভাইরাস (তারিখ) সংক্রমণ দেখা দেবার আগে SARS-CoV-2 নামক কোন ভাইরাস আছে এটা কেউই জানত না। এই নতুন ভাইরাসটির নাম দেওয়া হয় কোভিড-১৯। এখন কোভিড-১৯ সারা দুনিয়াকে আক্রমণ করছে, প্রায় সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। খুব সম্ভবত দুনিয়ার খুব কম মানুষই এর সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবে। বিল গেইটস স্বাস্থ্যকে আগামি দিনে প্রধান বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিশাবে চিহ্নিত করবার পেছনে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তি দিচ্ছিলেন, আগামি দিনে ১ কোটির মতো মানুষ আগের মতো পারমাণবিক বোমায় না, মরবে ভয়ানক সংক্রামক রোগে। কোভিড-১৯-এর মতো ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারীর কথা আজ নয়, অনেক আগে থেকেই বিল গেইটস সহ অনেকেই বলে আসছিলেন। দুনিয়াব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিপর্যয় এবং বিপর্যস্ত স্ব (আরো পড়ূন)

১৪. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

একদিকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে জীবন বাঁচাবার জন্য এলাকা লকড ডাউন করা, মানুষকে ঘরবন্দী বা কোয়ারান্টাইন করবার চেষ্টা, পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ ঘোষণা করা, পুলিশ হঠাৎ ক্ষমতা পেয়ে অভ্যাসবশত নাগরিকদের লাঠিপেটা চর্চা, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের টহল নামানো, অন্যদিকে কথা নাই বার্তা নাই পোশাক ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানগুলোর আকস্মিক ঘোষণা যে ৫ এপ্রিল (রবিবার) থেকে কারখানা খুলে দেওয়া হবে! শ্রমিকদের বৃহৎ একটি অংশ বাড়ি চলে গিয়েছিল। গাড়িঘোড়া নাই, এখন ফিরবে কি করে? পথের মাঝে অল্পকিছু ট্রাক, বাস, মোটর সাইকেল পেয়ে কেউ কেউ ফিরেছে। অধিকাংশই পায়ে হেঁটে, অমানবিক ও অমানুষিক ধকল সহ্য করে শহরে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। প্রথমত চাকুরি হারাবার ভয়, দ্বিতীয়ত বেতন পায় নি তারা, বেতন দরকার। (আরো পড়ূন)

১৩. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

মার্চের তিরিশ তারিখে নিউইয়র্ক টাইমসের একটি খবরের শিরোনাম হচ্ছে এরকম: For Autocrats, and Others, Coronavirus Is a Chance to Grab Even More Power। একনায়কতান্ত্রিক সরকার এমনিতেই অবারিত ক্ষমতা ভোগ করে। করোনাভাইরাসের সুবিধা নিয়ে তারা আরও ক্ষমতা হস্তগত করবে। যারা ইতোমধ্যেই একনায়কতান্ত্রিক শুধু তারা না, অন্যেরাও আরও ক্ষমতা কব্জা করবে। একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতা আরও পোক্ত ও সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি নতুন একনায়কী ক্ষমতা উৎপাদিত হবে। মার্চের ১৩ তারিখ থেকে এই সিরিজটি লিখছি। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা আমাদের উদ্দেশ্য। তার মধ্যে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। আমরা কিভাবে খাঁচায় বন্দী হ (আরো পড়ূন)

১২. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বয়ান চলতেছে।

আপনাদের আর কোন আবেগ থাকতে পারবে না। বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। কেন আপনারা মসজিদে যেতে চান? আপনারা কি জানেন না এতে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াবে?

না জানি না।

যারা এই সব বড় বড় কথা এখন বলছে তাদের হাতে দীর্ঘ সময় ছিল, তারা সাধারণ মানুষকে এই বিশাল কোভিড-১৯ বিপর্যয় সম্পর্কে জানাতে পারত। মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ছোঁয়াচে রোগে ছোঁয়াছুঁয়ির ভয়ংকর বিপদ বোঝাতে পারত। তাদের সংগঠিত করতে পারত। মুসল্লিদের দিয়েই মসজিদের নেতৃত্বে পাড়ায় পাড়ায় সঙ্গরোধ কমিটি করতে পারত। কিন্তু হাতে বিস্তর সময় থাকা সত্ত্বেও তারা জনগণকে একদমই সচেতন করে নি। মহামারী বিপর্যয়ে মানুষ সহায়তা পাবে তার জন্যও নিজেরা কোন প্রস্তুতি গ্রহণ করে নি। এখন মানুষকে দোষারোপ করে (আরো পড়ূন)

১১. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

 “ভূয়া যুক্তিরকায়দা সবসময় একই রকম। সন্ত্রাসের অজুহাতে বলা হয়েছিল স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে স্বাধীনতা দমন করতে হবে, এখন বলা হচ্ছে জীবন রক্ষা করতে চাইলে আমাদের জীবনযাপন বিসর্জন দিতে হবে” – জর্জিও আগামবেন

.......................................

জর্জিও আগামবেনের লেখা কেন্দ্র করে দার্শনিক মহলে যে তর্ক উঠেছে তার অধিকাংশই অযৌক্তিক। এমনকি জাক দেরিদার বন্ধু জাঁ-লুক ন্যন্সির আপত্তিও। ন্যন্সি জর্জিওকে বন্ধু দাবি করেছেন। হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশান সম্পর্কে জর্জিও তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে কি বলেছেন সেটা প্রকাশ্যে এনে জাঁ-লুক ন্যান্সির যুক্তি প্রতিষ্ঠা করাটাও আমার ভাল লাগে নি।

ন্যন্সিকে হার্ট ট্রান্সপ্লেন্টেশানের (আরো পড়ূন)

১০. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

“আমরা সারাবছর সংকট এবং জরুরি অবস্থার মধ্যে বাস করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি যে এখন আর খেয়ালই করতে পারি না যে জীবন স্রেফ একটি বিশুদ্ধ জৈবিক পদার্থে পর্যবসিত। এই অবস্থায় আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবন -- এমনকি মানবিক ও আবেগের জায়গাগুলিও হারিয়ে ফেলেছি। একটি সমাজ যখন সার্বক্ষণিক জরুরি অবস্থার মধ্যে থাকে তাকে আর মুক্ত বলা যায় না। বাস্তবিকই আমরা তথাকথিত ‘নিরাপত্তা’র চিন্তা করতে গিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে কোরবানি দিয়ে দিয়েছি, নিজেদের সেই গজবে নিক্ষেপ করেছি যেখানে সারাক্ষণ ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমাদের বাঁচতে হয়”।

“এ কেমন সমাজ স্রেফ বাঁচা ছাড়া যার আর কোন মূল্য নাই”
--জর্জিও আগামবেন
....... (আরো পড়ূন)

৯. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

ইংরেজি ‘হার্ড’ (Herd) কথাটার মানে 'পশুর পাল'। এখান থেকে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ (Herd Immunity) কথাটার জন্ম। অর্থাৎ পুরা পশুর পালের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির চেষ্টা করা। করোনাভাইরাস জাতীয় সংক্রমণের ক্ষেত্রে 'পাল' মানে পশুর পাল না, মানুষের পাল। জনগোষ্ঠি। ‘হার্ড ইমিউনিটি’র মানে পালের , অর্থাৎ জনগোষ্ঠির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন যাতে কোভিড-১৯ আমাদের কাবু করতে না পারে।

কিভাবে আমরা ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করি? দুই ভাবে সেটা সম্ভব। একটি হচ্ছে রোগ প্রতিষেধক টিকা-ভ্যাক্সিন দেওয়া, অর্থাৎ কৃত্রিম ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা। অন্যটি হচ্ছে প্রাকৃতিক ভাবে অর্জন। সংক্রমিত হলে শরীর রোগ প্রতি (আরো পড়ূন)

৮. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

ভাইরাস অজৈব ও জৈব জগতের মাঝখানে এক অদ্ভূত আমিষ পদার্থ। না জীব না বস্তু। পরাশক্তিগুলোর মধ্যে এই আজব জগতের ওপর আধিপত্য বিস্তারের তীব্র প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই আজব চিজের ওপর বৈজ্ঞানিক, সামরিক ও কৃৎকৌশল্গত আধিপত্য অর্জনের ওপর আগামিতে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে বিশ্বব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক কারা হতে যাচ্ছে তা নির্ভর করে। কোভিড-১৯ সম্পর্কে জৈব মারণাস্ত্রের তর্ক ভাইরাসের আজব বৈশিষ্ট্যের কারণেই রয়েছে। সংক্রমণের বিপর্যয় থেকে সুরক্ষার প্রশ্ন ছাড়াও শুরু থেকেই আমি তাই এর উপর জোর দিচ্ছি। আধিপত্য বিস্তারের ক্ষমতা আমাদের নাই। কিন্তু কেন বারবার হাত ধোবার পরামর্শ দেওয়া হয় সেই বৈজ্ঞানিক কারণ নিদেন পক্ষে জানা কি আমাদের কর্তব্য নয়?

কোভিড-১৯ ছোঁয়াচে, ফলে ছোঁয়াচে রোগ (আরো পড়ূন)

৭. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দ্বারা নির্বাচিত সরকার আছে কি ? যাদের কাছে আপনি মহা বিপর্যয়ের সময় ন্যূনতম দায়িত্ববোধ আশা করতে পারেন? কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ না হয় পরের কথা। না, নাই।

চিনের অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকে দেশকালপাত্র ভেদ বিচার বাদ দিয়ে 'রেজিমেন্টেড রেসপন্স'-এর কথা বলছেন। এতো কঠিন ভাষায় না বললেও অনেকে সরাসরি বলছেন শেখ হাসিনার হাত দৃঢ় করে, তার নিরংকুশ ক্ষমতা ও নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা হোক। কিন্তু তাঁর নিংকুশ ক্ষমতা তো আছেই। নতুন কি ক্ষমতা দেওয়া যায় এখন তা গবেষণা করে বের করতে হবে। যারা 'জরুরি অবস্থা' ঘোষণার কথা বলেছিলেন, তাঁরা কি ভেবে বলেছেন জানি না। হয়তো একই কথা সাংবিধানিক ভাষায় বলতে চেয়েছেন। 'জরুরি অবস্থা' জারি ম (আরো পড়ূন)

৬. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

যারা সরকার তথ্য লুকাচ্ছে বলে আওয়াজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি একমত না। তাদের অভিযোগ মিথ্যা সেটা বলছি না। এখন তথ্য লুকানো হোক বা নাহোক সেটা কোন ইস্যুই না। এটাই হবার কথা। জনগণকে বিকল্প নির্ভরযোগ্য তথ্যের কেন্দ্র তৈরি করতে হবে।

দ্বিতীয়ত সরকারী তথ্যে জনগণের এক তিলও বিশ্বাস নাই। ফলে তথ্য লুকানো হোল নাকি হোল না তাতে কিছুই আসে যায় না। আমাদের বাঁচা আমাদেরই বাঁচতে হবে।

তৃতীয়ত পাশ্চাত্য দেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমরা যা তথ্য পাচ্ছি সেটা সম্পূ্র্ণ তথ্য নয়। এটা বুঝতে পারছি কোভিড-১৯ ভয়ানক একটি ভাইরাস, যার উৎপত্তি কিম্বা উৎপত্তির কারণ সম্পর্কে যারা জানে তারা তথ্য দিচ্ছে না। দেবে না। শুধু দেখছি চিন ক (আরো পড়ূন)

৫. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

'নতুন করোনাভাইরাস কোন কৃত্রিম উপায়ে না, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে' -- এই কথা আমরা কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মারি শুরুর প্রথম দিন থেকেই শুনে আসছি। বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় দেখলাম স্ক্রিপ্স রিসার্চ ইন্সটীটিউটের (The Scripps Research Institute বা সংক্ষেপে Scripps Research) বরাতে একই শিরোনামে একটি খবরও ছাপা হয়েছে।

স্ক্রিপ ইন্সটিটিউট একটি অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। বৈজ্ঞানিক মহলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেউ কেউ দাবি করেছিল উহানের ল্যাবরেটরিতে জেনেটিক কারিগরির মাধ্যমে এই ভাইরাস চিনই তৈরি করেছে। দুর্ঘটনা বশে বেরিয়ে গিয়ে এই মহা বিপদ ঘটেছে। বিজ্ঞানীদের মধ্যে শুরু থেকেই এই মতৈক্য ছিল যে কোভিড-১৯ কোন ল্যাবরেটরিতে তৈরি ভ (আরো পড়ূন)

৪. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

করোনাভাইরাস ভয়ংকর বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতি। সেনাবাহিনী, পুলিশ বা আইন দিয়ে মহামারী দমন করা যায় না। এটা 'জরুরি অবস্থা' ঘোষণার পরিস্থিতি নয়। দেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির কোন অবনতি ঘটেনি যাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। জনগনকে সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ করবার প্রশ্ন বাদ দিয়ে এই সময় 'জরুরী অবস্থা' ঘোষণার কথা একমাত্র গণশত্রুদের পক্ষেই তোলা সম্ভব। এই যুদ্ধে জয়ের একমাত্র উপায় নিজের সুবিধা বা অসুবিধার চেয়ে সবার জীবন রক্ষাকে সবকিছুর উর্ধে স্থান দেওয়া। চাই দায়িত্ববোধ, যাতে আমি নিজে মহামারী বিস্তারের কারন না হয়ে উঠি। এবং নিজেকেও রক্ষা করতে পারি। এই বোধ বলপ্রয়োগ করে কিম্বা আইন জারি করে হয় না। মানুষকে বোঝানোর ও সচেতন করবার কোন বিকল্প নাই। কোন শর্টকাট নাই।

(আরো পড়ূন)

৩. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশ মারাত্মক করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি এই বিপর্যয় মোকাবিলা করতে পারব? বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমাদের আস্থা থাকা উচিত। মোকাবিলা দুঃসাধ্য বটে, কিন্তু মোটেও অসম্ভব নয়। কিন্তু সেটা সম্ভব যদি আমরা আতংকিত না হই। দ্বিতীয়ত সরকারকে বুঝতে হবে আইন করে, মিলিটারি-পুলিশ দিয়ে মহামারী দমন করা করা যায় না। চিনের উহানে অসম্ভব সম্ভব করেছে প্রধানত স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্থানীয় জনগণ। অর্থাৎ জনগণকেই সম্পৃক্ত করতে হবে। আইন, লাঠি বা বন্দুক দিয়ে পিটিয়ে মহামারি দমন করা যায় না। এতে হিতে বিপরীত হবে। নিপীড়নের মুখে মানুষ তথ্য লুকাবে। ভয়ংকর পরিস্থিতি ঘটবে। ঠাণ্ডা মাথায় আমাদের বিভিন্ন দিক ভাবা দরকার।

প্রথমত কোভিড-১৯ সম্পর্কে আমাদের যারপ (আরো পড়ূন)

২. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

চিন ছাড়া আর দুটি দেশ মৃত্যু হার ও প্রাদুর্ভাবের দিক থেকে করোনাভাইরাসে ভীষণ ভাবে আক্রান্ত: একটি ইটালি, আরেকটি ইরান। ইরান করোনাভাইরাসে অতিশয় আক্রান্ত তিনটি দেশের একটি। ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতার পরামর্শদাতাদের একজন আয়াতুল্লাহ হাশেম বাথায়ি গোলপায়েগানি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডাক্তারি পরীক্ষায় নিশ্চিত হবার দুই দিনের মধ্যেই মারা গিয়েছেন। ইরানের রেভুলিউশনারি গার্ড কোরের একজন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসের শাবানি কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারা গিয়েছেন। ইরানে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে, যখন এ লেখা লিখছি, ৮৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশ ভয়ংকর বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। সরকারি সংক্রমণ সরকারী পর্যায়ে অস্বীকার করবার প্রবণতা আমরা শুরু থেকেই লক্ষ্য (আরো পড়ূন)

১. করোনাভাইরাস, জীবানু মারণাস্ত্র এবং বৈশ্বিক নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ

করোনাভাইরাস নিয়ে দেশে বিদেশে যতো আলোচনা দেখছি তার প্রায় সবই এই সংক্রামক ব্যাধি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত , বিশেষভাবে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিখুঁত করবার সঙ্গে যুক্ত।

সংক্ষেপে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার নীতিগত মূল্যায়ন, কারিগরি বা চিকিৎসাশাস্ত্রীয় সামর্থ বিচার এবং এপিডিওমেলজি -- অর্থাৎ কোথায় কয়জন আক্রান্ত হোল, কয়জন মরলো এবং কয়জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলো, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা। বাড়তি ভূ-রাজনৈতিক আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল চীন কিভাবে কঠোর ভাবে তার নাগরিকদের কার্যত ‘শহরবন্দী’ করেছে তার সমালোচনা। পাশ্চাত্য নিজের নৈতিক মাহাত্ম প্রচার করবার জন্য চিনের বিরুদ্ধে প্রচারণা। যেমন, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির একক ক্ষমতায় যা সম্ভ (আরো পড়ূন)