রাধার গুণ কত
নন্দলাল তা জানে না
কিঞ্চিৎ জানলে তো
লম্পট ভাব থাকত না।
করে সে পীরিতি
নাই তার সুরীতি
কুরীতি ছলনা
বলে তাই সত্য দেখি
অন্য ভাব না।
যদি মন দিলে রাধারে
তবে শ্যাম কু-বুজারে
স্পর্শ করতো না।
এক মন কয় জায়গায় বেচে
তাও তো জানলাম না।
চন্দ্রাবলীর সনে মত্ত
কোন রসরঙ্গ
ভেবে দেখ না।
তেমনি অনন্ত ভ্রান্ত
শ্যামের যায় জানা।
জানলে প্রেম গোকুলে
নয় তো ক্যাঁথা গলে
নদেয় আসতো না।
অধীন লালন কয়
কর এ বিবেচনা।.
বিদেশিনীর সনে প্রেম কেউ কোর না
আগে ভাব জেনে প্রেম করো
যাতে ঘোচে মনের যাতনা।।
ভাব দিলে বিদেশীর ভাবে
ভাবে ভাব কভু না মিশিবে
শেষে পথের মাথায় গোল বাধাবে
কারো সাথে কেউ যাবে না।।
দেশের দেশী যদি সে হয়
একবার মনে করলে তারে পাওয়া যায়
বিদেশী ঐ জংলা টিয়ে কভু পোষ মানে না।।
নলিনী আর সূর্যের প্রেম যেমন
সেই প্রেমের ভার লও রসিক সুজন
অধীন লালন বলে, ঠকলে আগে
কাঁদলে শেষে সারবে না।।
(লালনের গান হিশাবে গাওয়া হয়। তবে সাঁইজীর গান কিনা নিশ্চিত না।)
মন রে সামান্য কি তারে পায়।
শুদ্ধ প্রেমভক্তির বশ দয়াময়।।
কৃষ্ণের আনন্দপুরে
কামিলোভী যেতে নারে
শুদ্ধ ভক্তি ভক্তের দ্বারে
সে চরনকমল নিকটে যায়।।
বাঞ্ছা থাকলে সিদ্ধি মুক্তি
তারে বলে হেতু ভক্তি
নিহেতু ভক্তের রতি
সবে মাত্র দীননাথের পায়।।
ব্রজের নিগূঢ় ত্ত্ত্ব গোঁসাই
রূপে রে সব জানালে তাই
লালন বলে মোর সাধ্য নাই
সাধলে সে মত রসিক মহাশয়।।
(আরো পড়ূন)
সেই প্রেম গুরু জানাও আমায়
যাতে মনের কৈতব আদি ঘুচে যায়।।
এ দাসীরে নিদয় হয়োনা
দাও কিঞ্চিৎ প্রেম উপাসনা
ব্রজের জলদ কালো গৌরাঙ্গ হলো
কোন্ প্রেম সাধনে বাঁকা শ্যাম রায়।।
পুরুষ কোন্ দিন সহজ ঘটে
শুনলে মনের ধন্দ যায় মিটে
তবে তো জানি সে প্রেম-করণী
সহজে সহজে লেনা দেনা হয়।।
কোন প্রেমে বশ গোপীর দ্বারে
কোন প্রেমে শ্যাম রাধার পায়ে ধরে
বল বল তাই ও গুরু গোসাঁই
দীন অধীন লালন বিনয় করে কয়।।
আয় হারালি অম্বুবাচী না মেনে
তোর হয়না সবুর একদিনে।।
অম্বুবাচী ভর
মাটি রসে সরোবর,
সাধু গুরু বৈষ্ণবে তিনে
উদায় হয় রসের সনে।।
তুইত মদনা চাষা ভাই
তোমার বুদ্ধি জ্ঞান ত নাই,
বার মাস চাষ করিয়ে
জো-র সময় চাল কেনে।।
যে জন রসিক চাষা হয়
জমির জো বুঝে হাল বায়,
লালন ফকির পায়না ফিকির
হাপুর হুপুর বীজ বোনে।।
অম্বুবাচী
‘অম্বু’র আভিধানিক অর্থ
১. যা প্রবাহিত হয়, প্রবাহিত জলে যে জীব বাস করে যেমন জলচর বা মাছ, কিম্বা যে গাছ জন্মে, যে কারণে ‘অম্বুজ’ মানে জলধারা থেকে যার জন্ম ‘হিজল’ গাছ; প্রবাহমান জলধারার মধ্যেই হিজল গাছ জন্মে।
২. বারিবর্ষণ.
২. রস, দ্রব, পঙ্ক, জলের কঠিন বা ঘন রূপ।
৩. ঋতু।
৪. রক্তের জলীয় অংশ
‘অম্বুবাচী’র আভিধানিক অর্থ তাহলে যা অম্বু বা বারিবর্ষণ সূচনা করে; বর্ষায় জলবর্ষণে বীজধারণযোগ্যা ভূমি বা রজস্বলা পৃথিবী (বন্দোপাধায়, ১৯৬৬)।
এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়।
নক্ষত্র বা রাশি বিচারের দিক আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী ঋতুমতী হন। শেষার্ধ, আর্দ্রার পাদচতুষ্টয় এবং পুনর্বসুর পাদত্রয় মিথুন্রাশির অন্তর্গত সূর্য্য মৃগশিরা ভোগ করবার পর যখন আর্দ্রার প্রথম পদ ভোগের জন্য গমন করে সেই সময় পৃথিবী (বিশতিদণ্ডাধিক দিবসত্রয় ) ঋতুমতী হয়। এই সময় হাল দেওয়া বা বীজ বপন নিষিদ্ধ।
লোকায়তিক চর্চা অনুযায়ী অম্বুবাচীর তিন দিন পর্যন্ত কোনো ধরনের মাংঙ্গলিক কাজ করা যায়না। চারদিনে পর থেকে মাঙ্গলিক কাজে কোনো বাধা থাকেনা। অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ গণ্য করা হয়। এই সময় প্রাচীন কাল থেকেই মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে।
এখনও গ্রামে ৭ থেকে ১১ আষাঢ় চার দিন গ্রাম-বাংলার মেয়েরা অম্বুবাচী পালন করেন। চাষ বাসের কাজ এই সময় বন্ধ থাকে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে পিঠা-পায়েস বানাবার রীতি আছে। এই অনুষ্ঠানে মেয়েরা, বিশেষত বিধবা মহিলারা তিন দিন ধরে ব্রত পালন করেন। যারা অম্বুবাচী মানেন তাঁরা অম্বুবাচীর আগের দিন রান্না করা খাবার তিন দিন ধরে খান। তিন দিন কোন আগুন জ্বলে না, তারা গরম খাবার খান না।
এই তিন দিন কামরূপ কামাখ্যায় পূজা হয়। সমস্ত দেবী মন্দির বন্ধ থাকে। কামরূপ কামাখ্যার মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে লাল রং এর তরল বের হয়। ভক্তদের কাছে এটা জননী প্রকৃতির রজস্রাব হিসাবে গণ্য।
একে ধর্মীয় আচারের দিক থেকে দেখা আর এর প্রতীকী মানে উপলব্ধি ও বিচার, বলাবাহুল্য আলাদা। যে গর্ভ থেকে সবকিছুর উৎপত্তি তিনি গ্রহনক্ষত্রের বিশেষ যোগ বা সন্ধিক্ষণে ঋতুমতি হন। এই সৃষ্টি মূহূর্ত অন্য যে কোন মূহূর্ত থেকে আলাদা এবং আদি। ঋতু মেনে তা চক্রবৎ ফিরে আসে। এই মূহূর্ত জানা সাধকের জন্য অপরিহার্য।
সূত্র
বন্দোপাধ্যায় , হরিচরণ. (১৯৬৬). বঙ্গীয় শব্দকোষ (প্রথম খণ্ড). নতুন দিল্লী: সাহিত্য অকাদেমি.
(আরো পড়ূন)
ডুবে দেখ দেখি প্রেম নদীর জলে
মীনরূপে সাঁই খেলে,
প্রেম ডুবারু না হইলে
বাঁধবে নারে জালে।।
জেলে যুতেল বোড়শেল আদি
ভ্রমিয়ে চার যুগ অবধি
কেউ না তারে পেলে
ক্ষার করে মীন রয় চিরদিন
প্রেম সন্ধিস্থলে।।
তিরধারার যেহি ছন্দি
খুলতে পারে সেই বন্দি
প্রেম ডুবারু হরে,
তবে সে মীন আসবে হাতে
আপনা আপনি চলে।।
স্বরূপ শক্তি প্রেম সিন্ধু
মীন অবতার দীন বন্ধু
সিরাজ সাঁই যায় বলে,
শোনরে লালন ম'লি এবার
গুরুতত্ত্ব ভুলে।।
(আরো পড়ূন)
যে জন পদ্মহীন [১] সরোবরে যায়
অটল অখণ্ড নিধি সেই জনা পায়।।
অপরূপ সেই নদীর পানি
জন্মে তাতে মুক্তামণি
বলবো কী তার গুণবাখানি
যে পরশে পরশ হয়।।
পলক ভরে পাড় করা
পলকে যে তরকা ধরা
সে ঘাট ভেঙে মৎস ধরা
সামান্য কাজ নয়।।
বিনে হাওয়ায় মৌজা খেলে
ত্রিখণ্ড হয় ভিন্ন পলে
তাহে ডুবে রত্ন তোলে
রসিক মহাশয়।।
গুরুজী কাণ্ডারি যারে
অঠাঁইয়ে ঠাঁই দিতে পারে
লালন বলে সাধন জোরে
শমন এড়ায়।।
(শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ১৫ এপ্রিল ২০১৮)
(শাহ, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৫২)
[১] অনেকে ভাষ্যে 'পদ্মহেম'; কিন্তু পাণ্ডুলিপিতে স্পষ্টই পদ্মহীন সরোবর রয়েছে।
(আরো পড়ূন)লীলা দেখে লাগে ভয়,
নৌকার উপর গঙ্গা বোঝাই
ডাঙ্গায় বেয়ে যায়।।
আব হইতে গঙ্গা সে যে
খেলা পরম রঙ্গে,
পলকে পাউড়ী ডোবে
পলকে লুকায়।।
ফুল ফোটে তার অগাধ জলে
ফল ধরে তার অচিন দলে
ফলে ফুলে যুক্ত হলে
তাইতো কথা কয়।।
গঙ্গা জোড়া মীন রয়েছে
সংক্ষেপেতে লওরে বুঝে,
লালন বলে জল শুখালে
মীন যাবে হাওয়ায়।।
(আরো পড়ূন)
শুদ্ধ প্রেম-রসের রসিক মেরে সাঁই
গণিলে পড়িলে কি তারে পাই।।
রোজা পূজা পড়ে
আত্ম সুখের কার্য্য হয় রে
সাঁইর খাতার কি সই পড়িবে
মনে ভাব তাই।।
ধ্যানী-জ্ঞানী মানি জনা,
সাধুর খাতায় সই পড়ে না,
প্রেম প্রাপ্তির উপাসনা
বেদে নাই।।
প্রেমে পাপ হয় কি পূণ্য হয়রে
চিত্রগুপ্ত লিখতে নারে,
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোরে
তাই জানাই।।
(আরো পড়ূন)
শুদ্ধ প্রেমের প্রেমিক মানুষ যে জন হয়
মুখে কথা কউক বা না কউক
নয়ন দেখলে চেনা যায়।।
রূপে নয়ন করে খাঁটি
ভুলে যায় সে নাম মন্ত্রটি,
চিত্রগুপ্ত পাপপুণ্য তার
কি লিখবেন খাতায়।।
মণীহারা ফণী যেমন
প্রেম রসিকের দুটি নয়ন,
কি করতে কি করে সে জন,
অন্ত নাহি বোঝা যায়।।
সিরাজ সাঁই বারে বারে
শোনরে লালন বলি তোরে,
মদন রসে বেড়াও ঘুরে
সে ভাব তোমার কৈ দাঁড়ায়।।
(আরো পড়ূন)
করি কেমনে সহজ শুদ্ধ প্রেম সাধন
প্রেম সাধিতে ফাঁপরে উঠে কাম নদীর তুফান।।
প্রেম-রত্নধন পাবার আশে
ত্রিবেণীর ঘাট বাঁধলাম কষে
কাম নদীর এক ধাক্কা এসে
কেটে যায় বাঁধন ছাদন।।
বলবো কি সে প্রেমের কথা
কাম হয়েছে আলেকলতা
কাম ছাড়া প্রেম যথাতথা
কৈ হয় আগমন।।
প্রেম পিরিতি পরম গতি (১)
কাম গুরু হয় নিজ পতি,
কাম বিনে প্রেম পায় কি গতি
ভেবে কয় ফকির লালন।।
কথান্তর:
পরম গুরু প্রেম-প্রকৃতি
কামগুরু হয় নিজ পতি
কামছাড়া প্রেম পায় কি গতি
(আরো পড়ূন)
শুদ্ধ প্রেম রসিক বিনে কে তারে পায়,
যার নাম আলেক মানুষ আলেকে রয়।।
রসিক রস অনুসারে
নিগূঢ় ভেদ জানতে পারে
রতিতে মতি ঝরে
মূলখণ্ড হয়।।
নীরে নিরঞ্জন আমার
আদ্য লীলে করে প্রচার
হলে আপন জন্মের বিচার
সব জানা যায়।।
আপনার জন্মলতা
খোঁজগে তার মূলটি কোথা
লালন কয় হবে সেথায়
সেথায় সাঁইর পরিচয়।।
(শুদ্ধ পাঠ নির্ণয়: ৪ এপ্রিল ২০১৮)
সূত্র:
(আরো পড়ূন)
শুদ্ধ প্রেম রাগে সদায় থাক রে আমার মন
স্রোতে মন ঢালান দিও না
বেয়ে যাও উজান।।
নিভাইয়া মদন-জ্বালা
অহিমুণ্ডে করগে খেলা
উভয় নেহার ঊর্ধতালা
প্রেমের ঐ লক্ষণ।।
একটি সাপের দুটি ফণি
দো-মুখে কামড়ালেন তিনি
প্রেম-বাণে বিক্রমি যিনি
তার সনে দাও রণ।।
মহারস মুদিত কমলে
প্রেম-শৃঙ্গারে লও রে তুলে
আপ্ত সামাল সেই রণকালে
কয় ফকির লালন।।
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃষ্ঠা ১৮০; বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃষ্ঠা ৬৯-৭০; বাউল কবি লালন শাহ, পৃষ্ঠা ২৮১ ( শেষের দুটি গ্রন্থে অন্তরার ২য় চরণে ‘অহিমুণ্ডে’ স্থলে ‘অহিতুণ্ডে’ কথান্তর আছে।) সঞ্চারীর ৩য় চরণ ‘প্রেম-বাণে বিক্রমে’ স্থলে ছন্দের খাতিরে ‘প্রেম-বাণে বিক্রমি’ পাঠ নির্ণয় করেছি।
কথান্তর :
শুদ্ধ প্রেম রাগে সদায় থাক রে আমার মন
সোঁতে গা ঢালান দিও না, বেয়ে যাও উজান।।
নিরাবিয়া মদন-জ্বালা
ও মন দিয়া করছে খেলা
আছে প্রেম-ভাসি ঊর্ধতালা
ও সেই প্রেমেরই লক্ষণ।।
একটি সাপের দুটি ফণি
আবার দুই মুখে কামড়ালেন তিনি
আছে প্রেম-বাণী বৃক্ষ-ধ্বনি
তুমি কার সাথে দাও রণ।।
মহারস মুদিত কমলে
তারে প্রেম-শৃঙ্গারে লও রে খুলে
আরও আত্ম সামাল কালে
কয় ফকির লালন সেই রঙ।। — লালন গীতিকা, পৃষ্ঠা ১১১৩-১৪
‘হারামণি’ ১ম খণ্ডে (পৃষ্ঠা ৪১) ও ৫ম খণ্ডে (পৃষ্ঠা ৫৫) গানটি সংকলিত হয়েছে। উভয় গ্রন্থে কিছু কিছু কথান্তর আছে। তাঁর সংগৃহীত গানটি প্রথমে প্রবাসী, জৈষ্ঠ্য ১৩৩৫ সংখ্যায় এভাবে প্রকাশিত হয় :
শুদ্ধ প্রেম-রাগে থাকরে অবোধ মন।।
নিভাইয়া মদন-জ্বালা
অহি পথে কর মন খেলা
উভয় নিহার ঊর্ধতালা
প্রেমেরই লক্ষণ।।
একটি সাপের দুটি ফণি
দুই মুখে কামড়ালেন তিনি
প্রেম বাণে বিক্রমে
তার সনে দাও রণ।।
মহারস যার হৃদ-কমলে
প্রেম আশ্রম লাও রে খুলে
আমৃতত সামাল সেই রণকালে
কয় ফকির লালন।। — ঐ, পৃষ্ঠা ৩১৪
নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুকে পেজে লাইক দিয়ে একটিভ থাকুন।
(আরো পড়ূন)
নিগূঢ় প্রেম কথাটি তাই আজ আমি শুধাই কার কাছে
যে প্রেমেতে আল্লা নবী ভবে মে'রাজ করেছে।।
মে'রাজ হয় ভাবেরই ভুবন,
গুপ্ত ব্যক্ত দুইয়ে প্রেমের আলাপন
কে পুরুষ আকার কে প্রকৃতি তার
শাস্ত্রে কি প্রমাণ লিখেছে? ।।
কোন প্রেমের প্রেমিকা ফাতেমা
করেন সাঁইকে পতিভজনা
কোন প্রেমের দায়ে ফাতেমাকে সাই
' মা' বোল বলেছে।।
কোন প্রেমে গুরু হয় ভবতরী
কোন প্রেমে শিষ্য হয় কাণ্ডারী,
না জেনে লালন প্রেমের উদ্দীপন
পিরিত করে মিছে।।
(আরো পড়ূন)
ধন্য আশেকীজনায়, এ দ্বীন দুনিয়ায়
আশেক জোরে গগনের চাঁদ পাতালে নামায়।।
নাম জপেনা কাম করেনা
শুদ্ধ দেল আশেক দেওয়ানা
তাইতে আমার সাঁই রব্বানা
মদত দেয় সদায়।।
সুঁইয়ের ছিদ্রে চালায় হাতী
বিনা তেলে জ্বালায় বাতি,
সদায় থাকে নিষ্ঠা রতি
ঠাঁই অ-ঠাইয়ে সে রয়!।।
আশেকের মাশুক নামাজ
যাতে রাজী সাঁই বেনেয়াজ,
লালন করে শৃগালের কাজ
নিয়ে সিংহের দায়।
(আরো পড়ূন)
মন রে সামান্য কি তারে পায়
শুদ্ধ প্রেমভক্তির বশ দয়াময়।।
কৃষ্ণের আনন্দপুরে
কামী লোভী যেতে নারে
শুদ্ধ ভক্তি ভক্তের দ্বারে
সে চরণকমল নিকটে যায়।।
বাঞ্ছা থাকলে সিদ্ধি মুক্তি
তারে বলে হেতু ভক্তি
নিহেতু ভক্তের রতি
সবে মাত্র দীননাথের পায়।।
ব্রজের নিগূঢ় ত্ত্ত্ব গোঁসাই
রূপে রে সব জানালে তাই
লালন বলে মোর সাধ্য নাই
সাধলে সে মত রসিক মহাশয়।।
শুদ্ধ প্রেম সাধলো যারা
কামরতি রাখিল কোথা।
বলো রসিক রসের মাফিক
ঘুচাও আমার মনের ব্যাথা।।
আগে উদয় কামের রতি
রস আগমন তারই গতি
সেই রসে করে স্থিতি
খেলছে রসের প্রেমদাতা।।
মন জানিত রসের করণ
নয়রে সে প্রেমের ধরন।
জল সেঁচে তার হয়রে মরণ
কথায় কেবল বাজি জেতা।।
মনের বাধ্য যে জন
আপনার আপনি ভোলে সে জন
ভেবে কয় ফকির লালন
ডাকলে সে তো কয় না কথা।।
(আরো পড়ূন)
মন বিবাগী বাগ মানে নারে
যাতে অপমৃত্যু ঘটে
মন সদাই তাই করে।।
কিসে হবে ভজন সাধন
মন হল না মনের মতন
দেখে শিমুল ফুল, সদাই ব্যাকুল
দুকুল হারালাম মনের ফেরে।।
মনের গুণে কেউ মহাজন হয়
ঠাকুর হয়ে কেউ নিত্য পূজা পায়
আমার মন তো, আমায় করল হত
মনকে বুঝাইতে নারি জনম ভরে ॥
মন কি মুনাই হাতে পেলাম না
কীরূপে আজ তারে করি সাধনা
লালন বলে আমি, হলাম পাতালগামী
কি করিতে এসে গেলাম কি করে ॥
(আরো পড়ূন)