মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
ফরিদা আখতার
Friday 06 August 10
হাইতিতে জিএমও কারসাজি ভেস্তে গেছে
সাবাশ হাইতির কৃষক, সালাম জানাই। এই বছরের শুরুতে ১২ জানুয়ারী তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে কাছের একটি দেশ, হাইতিতে, ভয়াবহ ভুমিকম্প হয়েছিল। আমাদের খুব মনে আছে সেই ভয়ানক দৃশ্য। ঘরবাড়ী চূর্ণবিচুর্ণ হয়েছিল, মানুষ মারা গিয়েছিল লাখে লাখে। যারা বেঁচে ছিল তাদের দুর্দশা দেখে আরো কষ্ট লেগেছে। টেলিভিশনে এবং পত্র-পত্রিকায় ছবি দেখে ও রিপোর্ট পড়ে বিশ্বের মানুষের মন কেঁদেছিল। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তারা। খাদ্য, ওষুধ, কাপড়সহ জরুরী সব ধরণের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছিল বিশ্বের মানুষ। একই সময়ে অনেক দেশে রাজনৈতিক প্রশ্ন উঠেছিল, এই ভুমিকম্প কেন হোল? কেনই বা ভুমিক্ম্প হতে না হতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারী ক্লিন্টন সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন। এটা কি তাদের নেহায়েত মানবতাবোধ নাকি অন্য কিছু? ঠাকুর ঘরে কেরে...! প্রশ্ন উঠেছিল এই ভুমিকম্প কি প্রাকৃতিক নাকি এর সাথে প্রযুক্তির ব্যবহারের কোন সম্পর্ক আছে? অবশ্য যারা এই প্রশ্ন তুলেছেন, বিশেষ করে ইওরোপের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, তাঁদের অনেক হুমকিরও সম্মুখিন হতে হয়েছে। এমন কথাও নাকি বলা যাবে না। সে যাক।
হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্প। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
দুর্যোগ কেটে যাবার পরও হাইতির মানুষের দরদীর অভাব হয় নাই। হাইতির কৃষকদের উপহার হিসেবে ৪৭৫ টন জিএম বীজ উপহার দেবার জন্য বহুজাতিক জিএম বীজ ও কীটনাশক কোম্পানী মনসান্তো এগিয়ে এলো। শুধু জিএম বীজ নয়, এর সাথে প্রয়োজনীয় সকল সার ও কীটনাশক মিলে একটি উপহার উইনার প্রজেক্ট নামক একটি সংগঠন মার্কিন দুতাবাসের মাধ্যমে হাইতির সরকারকে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করে। মনসান্তো প্রচার করতে থাকে যে এটা তাদের নেহায়েত উদারভাবে দেয়া ‘উপহার’ বা গিফট। কিন্তু সকলেই জানে এই পেটেন্ট করা বীজ থেকে ফসল হলে হাইতির কৃষকদের মনসান্তোকে রয়াল্টি দিতে হবে। অর্থাৎ গুনে গুনে ডলার দিতে হবে। উপহার দেবার ঘোষণা দেয়া হলেও ব্যবসায়িক কাজ হিসেবে মনসান্তো হাইতির কয়েকটি এলাকায় জিএম ভুট্টা বীজ দিতে শুরু করেছে। এমন একটি বিশাল দুর্যোগের পর মনসান্তোর এই কর্মকান্ডের কারণে হাইতির কৃষকদের স্বাধীনভাবে ফসল উৎপাদনের অধিকার বলে আর কিছু থাকবে না। হাইতির পরিবেশবিদরা এই উদ্যোগকে দ্বিতীয় ভুমিকম্প বলে আখ্যায়িত করেন।
তাছাড়া এই উপহারের মধ্যে আরও একটু কিন্তু আছে। কৃষকরা বুঝেছেন যে একবার এই বীজ ব্যবহার করে নির্ভরশীল হয়ে পড়লে এই বীজের সরবরাহকারী এক মাত্র মনসান্তোই থাকবে। উপহার তো একবারই দেবে, পরে কৃষকের পকেট থেকেই কাড়ি কাড়ি ডলার মনসান্তোর কাছে উপহার যাবে!
মনসান্তোর জন্যে আফসোসের বিষয় হচ্ছে হাইতির কৃষকরা মনসান্তোর এই বদান্যতায় মুগ্ধ হতে পারে নি। তারা এই উপহারের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। কারণ তারা মনসান্তোর কর্মকান্ড সম্পর্কে জানে, বিশেষ করে মনসান্তো এমন সব বিষাক্ত আগাছানাশক উৎপাদন করেছে যার প্রভাব দীর্ঘদিন থেকে যায়। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় গেরিলাদের মারবার জন্যে এজেন্ট অরেঞ্জের (Agent Orenge) প্রস্তুতকারক হিসেবে মনসান্তো যে ভুমিকা রেখেছে হাইতির মানুষ তা জানে। ভিয়েতনাম সরকারের দাবী অনুযায়ী এজেন্ট অরেঞ্জের কারণে সেই সময় ৪ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল কিংবা পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল, এবং ৫ লক্ষ বিকলাংগ শিশু জন্ম নিয়েছে।
প্রাণবিধ্বংসী মনসান্তোর ভূমিকার জন্য দেশে দেশে প্রতিবাদ ও ঘৃণা অপরিসীম...।
মনসান্তোর এই উপহারের মধ্যে জিএম ভুট্টা এবং জিএম টমেটো বীজ রয়েছে। জিএম ভুট্টাকে Maxim XO নামক fungicide বা ছত্রাক নাশক এবং টমেটো বীজে thiram নামক অতি বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান দ্বারা ট্রিট করা হয়েছে। এগুলো অতি ক্ষতিকর এবং তাই প্রতিরোধক পোষাক ছাড়া এই বিষ ব্যবহার করা যায় না। যা কৃষকের পক্ষে করা কোন মতেই সম্ভব নয়। কাজেই হাইতির কৃষকরা জেনে শুনে এমন বিষাক্ত বীজ নিতে আগ্রহী নয়। তারা স্পষ্ট ভাষায় দয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। হাইতির কৃষক নেতা সাবানেজ জিন-ব্যপ্টিস্টে IPS News এর কাছে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের স্থানীয় বীজ রক্ষা করতে চাই এবং কৃষকের জমির ওপর অধিকার রক্ষা করাও আমাদের কর্তব্য। হাইব্রীড এবং জিএমও এর বিরুদ্ধ্বে সংগ্রাম করে আমাদের দেশের ফসলের বৈচিত্র্য এবং কৃষিকে রক্ষা কতে হবে’।
কৃষকদের কথা হচ্ছে বীজ এবং পানি মানবতার সম্পদ। এই বীজ ও পানি নিয়ে কেঊ ব্যবসা করবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ বর্তমানে মাত্র গুটি কয় বহুজাতিক কোম্পানী যেমন মনসান্তো, সিনজেন্তা, ডু- পন্ট এবং বায়ার বিশ্বের বীজ ব্যবসার অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে। মনসান্তো ইতিমধ্যে তুলা, ভুট্টা এবং সয়াবিনের ওপর ৬৫০ টি পেটেন্ট নিয়েছে।
মনসান্তোর বীজ পুড়িয়ে দিচ্ছে হাইতির কৃষক।
এই ঘটনায় বিরক্ত হয়ে পাপায় কৃষক আন্দোলন ৬০,০০০ বস্তা (৪৭৫ টন) হাইব্রীড ভুট্টা ও সব্জী বীজ জ্বালিয়ে দিয়েছে http://www.foodsafetynews.com/2010/06/haitian-farmers-burn-monsanto-hybrid-seeds/। হিনচে নামক একটি কৃষি শহরে কৃষকরা লাল টি-শার্ট গায়ে দিয়ে মাথায় খড়ের হ্যট পড়ে এই বীজগুলো প্রতিকীভাবে পুড়িয়ে দেয়। http://planetgreen.discovery.com/food-health/whats-wrong-with-monsanto-helping-post-earthquake-haiti.html অন্যান্য সামাজিক আন্দোলনও এর সাথে যুক্ত হয়ে জিএম বীজ আমদানীর ব্যপারে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করেন এর ফলে স্থানীয় জাতের বীজ ব্যবহার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যদিও হাইতিতে জিএমও ব্যবহারে কোন আইনী বাধা নাই, তবুও হাইতির কৃষি মন্ত্রণালয় মনসান্তোর কাছে চিঠি দিয়ে রাউন্ড আপ-রেডী নির্ভরশীল বীজের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে জানতে চায়, তাদের দেয়া বীজ জিএমও কি না। মনসান্তো এই চিঠির জবাবে আশ্বস্ত করেছে যে জিএম বীজ তারা দেবে না। সাবাস!
হাইতির খাদ্য সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে নিজ দেশের উপযুক্ত খাদ্য উৎপাদন করার মতো খাদ্য নীতি প্রণয়ন করার দাবী উঠেছে। জিএম বীজ ব্যবহারের আগে মনে রাখতে হবে একবার এই বীজ পরিবেশের মধ্যে ঢুকে গেলে তা যে ক্ষতি করে তা থেকে ফিরে আসা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই কৃষকদের এই সাবধানতা।
Available tags : হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র, ভারত, ভাষা, সংস্কৃতি, মারাঠি, গুজরাটি, মালয়ালি, অসমীয়া, বিহারী, সিকিমি, কাশ্মীরি
হাইতির কৃষকদের এই সচেতনতা ও প্রতিরোধ বাংলাদেশের কৃষকদের মাঝে সঞ্চারিত হোক। এ বিষয়টি জনসাধারনের নিকট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে ইতিবাচক ফল বয়ে অানতে পারতো। এরকম তাৎপর্যপূর্ন বিষয়ে লেখার জন্য ফরিদা অাখতারকে ধন্যবাদ জানাই। কৃষি বিষয়ে এই ভয়ংকর বিষয়টি চিন্তার মাধ্যমেই অামি প্রথম জানতে পারি।
প্রানবৈচিত্র রক্ষার লড়াই
‘‘হাইতিতে জিএমও কারসাজি ভেস্তে গেছে’’ শিরোনামে পৃথিবীর অপর প্রান্ত মধ্য আমেরিকায় ঘটে যাওয়া প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য ফরিদা আখতারকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। সেই সাথে ধন্যবাদ হাইতির জনগণ ও সরকারকে যারা চরম দূরাবস্থার মধ্যে ও উপহার হিসাবে দেওয়া মনসান্তোর ভুট্টা ও টমেটোর জিএম বীজ শুধু প্রত্যাখ্যানই করেনি বরং তা পুড়িয়ে দিয়েছে। সাবাস হাইতি। সাবাস হাইতির মানুষ। তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছেন যে বহুজাতিক শকুনের (কোম্পানীর) দৃষ্টি এখন দূর্যোগ ও মানুষের দূর্দশার দিকে। এসবই তাদের অবলম্বন। তারা জাম্বিয়ার খাদ্য সাহায্য হিসাবে দিতে চেয়েছিল জিএম ভুট্টা। কিন্তু জাম্বিয়া তা গ্রহণ করেনি। জাম্বিয়া যা পেরেছে হাইতিও তা করেছে। তবে বাংলাদেশে আমরা তা পারিনি। ১৯৯৮ সালে বন্যার পরে অধিক ধান উৎপাদনের কথা বলে হাইব্রিড ধানের বীজ প্রবর্তন করা হয়েছে। শুরুতেই রোগ পোকার আক্রমন হয়েছে। ফসলহানী ঘটেছে। কৃষক প্রতারণার শিকার হয়েছে বারবার। তার পরেও সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে (২০০৭, ২০০৮) ব্যাপক হারে হাইব্রিড ধানের আবাদ চাপিয়ে দেয়া হয়। সিডরের (১৫ নভেম্বর, ২০০৭) পরে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বোরো মৌসুমে সাহায্য হিসাবে ব্যাপক হারে হাইব্রিড ধানের বীজ দেয়া হয়েছিল। সেবারে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট, ব্যাকটেরিয়াল লিফষ্ট্রিক ও বাদামী গাছ ফড়িং এর মারাত্মক আক্রমন হয়েছিল। ফসলহানীতে কৃষক মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। মরার উপর খাড়ার ঘার’ মত কৃষক সিডরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য হাইব্রিড ধানের আবাদ করে আবার সর্ব্বস্ব হারিয়েছিন।
এদেশে এখনও কৃষকের সঙ্গে প্রতারনার জন্য নতুন নতুন বহুজাতিক ফাঁদ পাতা হচ্ছে। ‘গোল্ডেন রাইস’ নামে জিএম ধান প্রবর্তনের নতুন কৌশল শুরু হয়েছে। যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া নিরিকা (নিউরাইস ফর আফ্রিকা) ছাড় করার পায়তারা চলছে। ধানের বংশগত বুনিয়াদ তথা এদেশের মানুষের খাদ্য সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে এ সব অপতৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন। সেই সাথে জরুরী ভিত্তিতে বহুগুণে সমৃদ্ধ ধানসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
মনসান্তোর শয়তানি
চিন্তা পত্রিকায় ‘হাইতিতে জিএমও কারসাজি ভেস্তে গেছে’ লেখার লেখক ফরিদা আখতারকে অনেক ধন্যবাদ। এই লেখাটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ভালো লাগার কারণ হলো হাইতিতে যখন ভূমিকম্প হয়ে অনেক লোক মারা যায় এবং অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় তখন বহুজাতিক কোম্পানী মনসান্তো সেখানকার কৃষকদেরকে উপহার হিসেবে জিএমও বীজ, সার ও কীটনাশক উপহার দেবে বলে প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সে দেশের কৃষকরা মনসান্তোর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতেন। তাই হাইতির কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষকরা মনসান্তোর উপহারের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। আর এই লেখাটি একটি শিক্ষামূলক লেখা। আমাদের দেশের কৃষকরা এই লেখাটি পড়ে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো কি করছেন তার সম্পর্কে জানতে পারবে এবং সচেতন হবে। এই ধরনের লেখা চিন্তার মাধ্যমে আমরা আরও পড়তে পারবো আশা করি। ধন্যবাদ -
হাইতিতে মনসান্তো
ফরিদা আখতারের লেখা পড়ে আমার মনে হয়েছে, আমার সামনেই হাইতির ঘটনাটা ঘটেছে। হাইতির মানুষের দুঃখ দুর্দশা যেন ইজের চোখেই দেখছি। ভূমিকম্পটা আসলেই প্রাকৃতিক না প্রযুক্তির ব্যবহার? দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর কৃষকদের উপহার হিসেবে ৪৭৫ টন জি এম বীজ, সার ও কীটনাশক উপহার বা গিফ্ট করার চেষ্টা হয়েছে। খুব ভাল হল যে কৃষকরা বুঝেছেন একবার এই বীজ ও কীটনাশক ব্যবহার করলে তারা বহুজাতিক কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। কৃষক ও দেশের এতে ভীষণ বড়ো ক্ষতি। হহে যাবে।
কৃষকদের পড়ে শোনালে ভাল হয়
ফরিদা আখতারের লেখা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে এ বছরের শুরুতে ১২ জানুয়ারিতে আমেরিকার একেবআরে কাছের একটি দেশ হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। ভূমিকম্পের পর আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, পরপাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন সেখানে গিয়েছিলেন। এটা কি তাদের সনহায়েত মানবতাবোধ নাকি অন্য কিছু? প্রশ্ন উঠেছিল এই ভূমিকম্প কি প্রাকৃতিক নাকি এর সাথে প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন সম্পর্ক আছে।
এই সময় হাইতির জন্য দরদির অভাব হয় নাই। তাদের কৃষকদের উপহার হিসাবে ৪৭৫ টন জিএমও বীজ নিয়ে কোম্পানী মানসান্তো এগিয়ে এল। হাইতির পরিবেশবিদরা এই উদ্যোগকে দ্বিতীয় ভুমিকম্প বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মনসান্তোর জন্য আফসোসের বিষয় হচ্ছিল যে হাইতির কৃষকরা মনসান্তোর উপহারে মুগ্ধ হতে পারে নাই। মনসান্তোর কৃষকরা তাদের স্থানীয় বীজ রক্ষা করতে চায় এবং কৃষকের জমির উপর অধিকার রক্ষা করাও কর্তব্য বলে গণ্য করে। হাওতিত কৃষকদের কাছ থেকে শিখে হাইব্রিড এবং জিএমও-র বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের দেশের কৃষি ও ফসল বৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে। জিএম বীজ যে ক্ষতি করে তা থেকে ফিরে আসা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এই লেখাটা খুব সুন্দর লেখা হয়েছে। এ টাইপের লেখা গুলি আমাদের দেশের কৃষকদেও মধ্যে পড়ে শুনালে আরো ভালো হয়
বাংলাদেশের কৃষকদের কাজে আসবে
চিন্তা পত্রিকায় ফরিদা আখতারের এই লেখাটি আমার খুব ভাল লেগেছে। সত্যিই হাইতির কৃষক নেতা সাবারেজ জিন ও তার দেশের কৃষকরা মনসান্তো ও উইনার প্রজেক্ট কোম্পানীকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছেন, ৮৭৫ টন জিএমও বীজ পুড়িয়ে দিয়ে। হাইতির কৃষকদের প্রতিজ্ঞা হল জান দেবো তবু বীজ দেবোনা। তারা দেশীয় বীজ রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই লেখাটি বাংলাদেশের কৃষকদের খুব কাজে আসবে। আমাদের কাজ হবে কৃষকদের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা। আমাদের দেশের কৃষকরা আলোক ধান চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ধরনের লেখা চিন্তা পত্রিকায় আরো বেশি করে লেখা দরকার।
মাননীয় মন্ত্রী মতিয়া চোধুরী দৃষ্টি দেবেন
ফরিদাআখতারের এই লেখাটি খুবই ভালো লেগেছে। এই ধরনের লেখা ভবিষ্যতে আরো আশা করি ছাপা হবে। লেখাটি ভালো লেগেছে বিশেষ করে যে, হাইতির কৃষকরা মনসান্তোর হীন উদ্দেশ্য ও তাদের কর্মকান্ড সমন্ধে জেনে মনসান্তোকে বর্জন করেছে। হাইতির কৃষি মন্ত্রণালয় মনসান্তোকে চিঠি দিয়ে জিএমও বীজ গ্রহণের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। এজন্য হাইতির সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের দেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের টনক নড়বে কবে সেটাই দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? আশা করি আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এই লেখাটির প্রতি দৃষ্টি দেবেন এবং হাইতির কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষকদের কাছ থেকে কিছু শিখবেন কি করে মনসান্তোর মতো বীজ কোম্পানীগুলোকে প্রতিহত করা যায়।