- মনসান্তোর জিএমও কারসাজি
- আমাদের এখনকার সংকট
- আওয়ামি লিগের ইতিহাসও পারিবারিক ইতিহাসে পর্যবসিত হয়েছে...
- বাংলাদেশে 'নিউকনি' সিপাই
- রাষ্ট্রপ্রধান ও উচ্চ আদালত নিয়ে রাজনীতি
- রোকেয়া পাঠের স্থান কাল পাত্র
- গণতান্ত্রিক বিপ্লবের তিন লক্ষ্য
- মোদীর ভারত এবং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য বদল
- দেখলেই গুলি?
- আদালতের কর্তৃত্ব ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
ভাসানী, রবুবিয়াত ও নতুন বিপ্লবী রাজনীতি
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের উদয়, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং উপমহাদেশের জনগনের লড়াই সংগ্রাম থেকে যেভাবে মুছে ফেলা হয়েছে সে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বাংলাদেশে নতুন রাজনীতির পুনর্গঠনের প্রশ্ন মওলানা ভাসানীকে নতুন ভাবে জানা, পড়া ও চর্চায় নিয়ে যাবার ওপর নির্ভরশীল। এই পরিপ্রেক্ষিত মনে রেখে মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লেখাগুলোর পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গঠনের গলদ, গণতন্ত্র ও এখনকার কর্তব্য
বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, আইন ও বিচারব্যবস্থার গোড়ার গলদ হচ্ছে শুরু থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা ও গঠন করা যায় নি। মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু ও সংঘটিত হয়েছিল একাত্তরের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে -- যার ঘোষিত ও লিখিত মূল উদ্দেশ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফ কায়েম ও চর্চার উপযোগী গণমানুষের রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু ডান কি বাম প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা ধারা মুক্তিযুদ্ধ ও গণমানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। গণশক্তির বিকাশ ও বিজয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বিপ্লবই অসমাপ্ত যুদ্ধ সম্পন্ন করতে পারে, এটাই এখনকার রাজনৈতিক কাজ। এদেশের সকল মানুষের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, আচার, লোকায়ত জ্ঞান ও ভাবুকতা সবই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি হিসাবে গড়ে ওঠার আন্তরিক ও ঐতিহাসিক উপাদান। কিন্তু গণ ঐক্য ও গণশক্তি বিকাশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ধর্মের নামে, ধর্ম বিরোধিতার নামে কিম্বা বাস্তবতা বিবর্জিত নানান আসামানি মতাদর্শের দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও আশু রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ও কর্তব্য পূরণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে তারাই -- ডান কিম্বা বাম -- জনগণের শত্রু।
- চতুর্থ সংশোধনীতে হারানো ক্ষমতা সামরিক আইনে ফিরে পাওয়ার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছে আদালত
- আইনের শাসনের তামাশা ও বাকশাল ‘দর্শনের’ জের
- আদালত অবমাননার বিচার ও দণ্ড প্রসঙ্গ
- ‘কমিউনিস্ট’দের রিমান্ড সমস্যা
- হাসিনার কনস্টিটিউশন সংশোধন: আসলে কি হতে যাচ্ছে?
- সংজ্ঞাহীন অবারিত এখতিয়ার বন্ধ হবে কবে?
- ছয় বছরেও চূড়ান্ত হয় নাই আদালত অবমাননা আইন
বাংলার ভাবসম্পদ
লালন ও ভাবান্দোলন
চিনিয়ে দেওয়া, ধরিয়ে দেওয়া
গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও নীতিগত অবস্থানের সংকট প্রসঙ্গে
মন্টু ঘোষ। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য, সিপিবির হয়ে প্রায় সারাজীবন শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠিত করার তৎপরতায় ব্যস্ত থেকেছেন। সিপিবির শ্রমিক সংগঠন--ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা হিশাবে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উপদেষ্টা তিনি, আবার সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও দলের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি। তৈরি-পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ওই খাতে এবং সমাজে তোলপাড় দেখা দিয়েছে সম্প্রতি। ধরপাকড়, প্রধানমন্ত্রীর হুমকি ও রিমান্ড-নির্যাতন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের নীটওয়্যার পোশাক কারখানাগুলা প্রধানত নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ফলে মন্টু ঘোষের কাজেরও মূলক্ষেত্র সেখানে। গত ৩০ জুলাই সরকার পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে ৩০০০ টাকা। এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পোশাক খাতের শ্রমিকদের চলমান বিক্ষোভ, আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল ৩০ ও ৩১ জুলাইয়ে। মন্টু ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন। পুলিশ তাঁকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে ৩১ জুলাই ভোররাত্রে। অভিযোগ; রাজধানীতে পোশাক খাতের শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরে মদদ দেয়া। গত ৩০ জুলাই আদাবর থানায় এই অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। আমরা অনুমান করতে পারি পোশাক খাতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবিলা করতে সরকার এই গ্রেফতার করেছে।
বাংলাদেশে সমাজের প্রতিটা আন্দোলনের পাশাপাশি শ্রমিক আন্দোলন সমান্তরাল কদমে হেঁটেছে। পাকিস্তানের সময় আয়ুব খানের আমল থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে একাল পর্যন্ত, ধারাবাহিকভাবে। কখনো আন্দোলনে-গণঅভ্যুত্থানে নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছে। আর অন্য সব আন্দোলনের ক্ষেত্রে যেমন হয়ে থাকে, শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রামের বেলায়ও তা হয়েছে; সরকারি ধরপাকড়, রাস্তায় নির্যাতন, আগাম গ্রেফতার, আন্দোলনের মাঠে গুন্ডা লেলিয়ে দেয়া, আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা--এসব মোকাবিলার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলন বড় হয়েছে। যেকোন আন্দোলনে এগুলা আমাদের স্বাভাবিক অভিজ্ঞতা; যার ভেতর দিয়ে সমাজ বিকশিত হয়। বিভিন্ন স্বার্থে বিভক্ত আমাদের সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লড়াই সংগ্রামে এগুলাই তো আমাদের দেখতে পাবার কথা।
কিন্তু মন্টু ঘোষের এই গ্রেফতার আলাদা, বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ
পোশাক খাতের শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন যদিও ‘রাষ্ট্র ক্ষমতা’ দখলের ধারে কাছেরও ঘটনা না; অর্থাৎ রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের আন্দোলনের প্রেক্ষিত ও বিশাল পরিসরের বিচারে এই আন্দোলনের মাত্রা, মেজাজ ও ব্যাপ্তি গোনায় ধরার মত কোন ঘটনাই না। এমনকি সরকারের বদলে নতুন সরকার আনার মত তেজবাহী কোন আন্দোলনও না। সমাজের আর কোন শ্রেণী পেশার আন্দোলন, এমনকি রাজনৈতিক আন্দোলন এই মুহূর্তে সমাজে সংগঠিত হয়ে নাই, ফলে সেসবের সাথে শ্রমিকদের আন্দোলন তাল মিলিয়ে হাঁটবে--সে বাস্তবতাও নাই। এমনকি শ্রমিকদের সব ট্রেড মিলিয়ে গড়ে ওঠা শ্রমিক আন্দোলন বলতে যা বুঝায়, এটা তা না; বরং একেবারে বিচ্ছিন্ন, শুধু পোশাক ট্রেডের শ্রমিকদের আন্দোলন এটা। এখন প্রশ্ন হল; এত ক্ষুদ্র ও বিচ্ছিন্ন এক শ্রমিক আন্দোলন হওয়া সত্ত্বে ট্রেড ইউনিয়ন নেতা মন্টু ঘোষের এই গ্রেফতারকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলছি, আলাদা করছি কোথায়?
মন্টু ঘোষকে ৩১ জুলাই ভোররাত্রে গ্রেফতারের পর, গত ৩ আগস্ট থেকে মোট পাঁচটি মামলায় তাঁকে প্রথমত; শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে, দ্বিতীয়ত; জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয় দিনের রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছে অধঃস্তন আদালত। বিচার বিভাগের ‘স্বাধীনতা’ প্রাপ্তি নিয়ে বিখ্যাত সব উকিলদের নাচানাচি আমরা বহুত দেখেছি। এখনো প্রায়ই দাবি করতে দেখা যায় যে আমাদের বিচার বিভাগ নাকি স্বাধীন হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা যেখানে ছিল সেখানেই আছে। বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলা আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোন এক যুগ্মসচিবের পকেটে ছিল, এখন সেখান থেকে আরো নিচে নেমে গেছে। এখন আর এটর্নি জেনারেলের মারফত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সচিবের হুকুমের দরকার হয় না, বরং সরকারি পিপি-ই (পাবলিক প্রসিকিউটর) যথেষ্ট। বিচার বিভাগরে ‘স্বাধীনতা’র পরে এখন আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবের হয়ে বিভিন্ন মহানগর ও জেলার সরকারি উকিলরাই অধঃস্তন আদালতের ওপর খবরদারি করতে যথেষ্ট। পিপি’র হুকুম মানতে বিভিন্ন মহানগর ও জেলার প্রধান বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের আমরা এক পায়ে খাড়া হয়ে থাকতে দেখেছি। এরা রিমান্ডের কাগজে সই করে করে একেকজন বিখ্যাত হয়েছেন।
এই অদ্ভূতুড়ে ঘটনা আমাদের পুরনো অভিজ্ঞতার বিচারে নতুন
শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে আমাদের এটা নতুন অভিজ্ঞতা। আমাদের শ্রমিক আন্দোলনের নেতারা জেলে যান নাই এমন ইতিহাস কমই আছে। শ্রেণীর আন্দোলন লড়াই-সংগ্রামে গ্রেফতার হওয়া, জেলে নিক্ষিপ্ত হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এখন রাজনৈতিক গ্রেফতার কোন ব্যাপারই না। শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডের নামে নির্যাতনের ভয়ে হাইকোর্ট বিভাগের কাছে নালিশ এখন আর কোন কাজে আসে না। পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বন্দির সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনামা চিত হয়ে পড়ে থাকে, আর পুলিশ চাইলে আপনাকে মেরেও ফেলতে পারে।
আমাদের দেখা সাম্প্রতিক কাল বলতে এক এগারোর সরকারের জমানা যদি বুঝি, তবে ওই জমানা থেকে যথেচ্ছ ধরপাকড়, শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডের ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া দেখেছিলাম আমরা। কেউ গ্রেফতার হওয়া মানেই আমরা দেখেছি--রিমান্ড, নির্যাতন, পিটিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়, নিজের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দেয়া, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি ও সবার ওপরে ছিল এই পুরা নাটকের ভিডিও ধারণ এবং প্রচার মাধ্যমে এর মসলা মাখানো প্রকাশ। এককথায় বললে, নতুন এক ধরনের ‘শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডে নির্যাতন” এর ঘটনা আমরা চালু হতে দেখেছিলাম। এক অদ্ভূত সময় পার করেছি আমরা সেই সময়। ভূতুড়ে বলছি এই অর্থে যে চেনা পরিচিত সমাজ রাজনীতিকে সে সময় খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে আমাদের। কমিউনিস্ট বা বামপন্থি নামে যেসব রাজনৈতিক দলকে সমাজ চেনে, আমরা দেখেছি এরা বিভিন্ন ইস্যুতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজকর্মের সমর্থন করেছেন। এই অদ্ভূতুড়ে ঘটনা আমাদের পুরানো অভিজ্ঞতার বিচারে নতুন। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের দুর্নীতি ও দলবাজি নিঃসন্দেহে সত্য--এটা ঘটনার একটা দিক। পাশাপাশি এর বিপরীত দিক হল; বিশ্ব পুঁজিতন্ত্রের স্থানীয় দোসর--সুশীল সমাজের ঘটকালিতে বিশ্ব পুঁজির স্বার্থের সাথে স্থানীয় মধ্যবিত্তের স্বার্থের যে জোট গড়ে উঠল--সেই স্বার্থজোটের সরকারই ছিল এক এগারোর সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিজেই নিজেকে পরিচিত করাতো ‘সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ বলে। সরকার নিজেই যখন নিজেদের এই সামরিক খাসলত জানান দিয়েছিল, তা সত্ত্বেও আমরা কমিউনিস্টদের ওই সরকারের সাথে একমত থাকতে দেখেছি। এর কারণ কি? কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করেছিল তারা নাকি ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে জেহাদ করতে এসেছে।
কমিউনিস্টরা এটা বিশ্বাস করেছিল ও তারা নিজেরাও ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে একই জেহাদের তাগিদ অনুভব করেছিল। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সাথে তাদের যে মিল, ঘোষিত অঘোষিত ঐক্যমত দেখা যেত এর মূল কারণ, ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে জেহাদ--এক্ষেত্রে উভয়ের একই কর্মসূচিগত ভিত্তি। কারো কোন কর্মসূচিতে কমিউনিস্টরা সমর্থন দিতেই পারে, কিন্তু রাষ্ট্র সেজন্য যে নিপীড়কের ভূমিকায় হাজির হয়ে গিয়েছে সেদিকে এদের কারো দৃষ্টি পড়ে নাই। ‘শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডে’র নামে নতুন এক ধারা শুরু করা হয়েছিল। তারও আগে নাগরিকদের গঠনতান্ত্রিক (কনস্টিটিউশনাল) মৌলিক অধিকারগুলা জরুরি অবস্থা জারির অজুহাতে ফরমান জারি করে স্থগিত করা হয়েছিল। ফলে, কোথাও এর বিরুদ্ধে কোন প্রতিকার চাইবার সুযোগও ছিল বন্ধ। ওই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির আসল দিকটা ছিল এমন; রাষ্ট্র এক দুর্দমনীয় নিপীড়ন নির্যাতনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল, অন্যদিকে সমাজে যারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের লক্ষ্যে রাজনীতি করে বলে দাবি করে তারা রাষ্ট্রের চরম অগণতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যকে উপেক্ষা করেছিল। ভাব ধরেছিল, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে মহান জেহাদে’ সবকিছু জায়েয। এটা সত্য যে এক এগারোর সরকারের প্রথম ছয়-আট মাস, আসলে বিদেশী স্বার্থের হলেও ‘জনপ্রিয় সরকার’ বলতে আমরা যা বুঝি সেধরনের এক ভাবমূর্তি কায়েম রাখতে পেরেছিল।
বাংলাদেশে নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করতে পারে এমন দুইটা রাজনৈতিক দল দুর্নীতিগ্রস্ত এবং দলবাজ রাজনীতিকে ঠাসা।এদের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনের ফলে অতিষ্ঠ হয়ে ছিল সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষ, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত। এতে করে জনগণের এক ব্যাপক অংশের সাথে ওই দুই রাজনৈতিক দল ও তাদের রাজনীতি একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ঠিক এ সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক পুঁজিতন্ত্রের স্বাস্থ্য টিকিয়ে রাখার নতুন রাজনীতি--বাংলাদেশে ‘গুড গভর্নেন্স’ বা কথিত সুশাসনের রাজনীতি চালুর মোক্ষম সময় হিশাবে বেছে নেয়; আর স্থানীয় দোসর হিশাবে সাথে নেয় ‘সিভিল সোসাইটি’ বা ‘সুশীল সমাজ’কে। আমরা দেখলাম; এক. বিশ্ব পুঁজিতন্ত্রের সহজাত স্বার্থ; দুই. (স্থানীয় রাজনৈতিক দলের দুর্নীতি ও দলবাজিতে অতিষ্ঠ) স্থানীয় মধ্যবিত্ত--এ দুই শ্রেণীর স্বার্থের মিলনে, শ্রেণী মৈত্রীর ভিত্তিতে জন্ম নিল এক অদ্ভূত সরকার--যে মিলনের ঘটকালি করলো বিশ্ব পুঁজিতন্ত্রের স্থানীয় দোসর ‘সিভিল সোসাইটি’ বা ‘সুশীল সমাজ’। এখানে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের দুর্নীতি ও দলবাজি নিঃসন্দেহে সত্য--এটা ঘটনার একটা দিক। পাশাপাশি এর বিপরীত দিক হল; বিশ্ব পুঁজিতন্ত্রের স্থানীয় দোসর--সুশীল সমাজের ঘটকালিতে বিশ্ব পুঁজির স্বার্থের সাথে স্থানীয় মধ্যবিত্তের স্বার্থের যে জোট গড়ে উঠল--সেই স্বার্থজোটের সরকারই ছিল এক এগারোর সরকার। একারণেই ওই সরকারটা বাইরের স্বার্থ রক্ষার কাজে আসলেও প্রথম থেকে ছয়-আট মাস ধরে মধ্যবিত্তের সমর্থনে জনপ্রিয় সরকার হিশাবে মিথ্যা ভাবমূর্তি বজায় রাখতে পেরেছিল।
বাংলাদেশে ‘কমিউনিস্ট’রা এই স্থানীয় মধ্যবিত্তের ঈর্ষাকাতর চোখেই রাজনীতি দেখে, ভাবে ও বিচার করে। বিশ্ব পুঁজিতন্ত্রের সহজাত বিদেশি স্বার্থের সাথে প্রত্যক্ষ শ্রেণী-মৈত্রী গড়ে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধার ও রক্ষা করা যাবে কিম্বা এমন একটা রাজনীতি দাঁড় করানো যাবে; এটাই পাতি-বুর্জোয়া ঈর্ষাকাতর ভাবনা এবং এক অন্তঃসারশূন্য রাজনীতি ফালু, ভুলু, লালু ইত্যাদির হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকলে আমার নাই কেন--এটা কারো ভাবনা হিশাবে মন্দ না, মিথ্যাও না এই ভাবনা-- এক বিন্দু মিথ্যা নাই। কিন্তু এ উপলব্ধির ওপর ভর করে বিশ্ব পুঁজিতন্ত্রের সহজাত বিদেশি স্বার্থের সাথে প্রত্যক্ষ শ্রেণী-মৈত্রী গড়ে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধার ও রক্ষা করা যাবে কিম্বা এমন একটা রাজনীতি দাঁড় করানো যাবে; এটাই পাতি-বুর্জোয়া ঈর্ষাকাতর ভাবনা এবং এক অন্তঃসারশূন্য রাজনীতি। দেশের সাধারণ মধ্যবিত্ত ঈর্ষাকাতর হতেই পারে, ঈর্ষাকাতর হয়ে যে কারও সমর্থক হয়ে যেতে পারে; দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষের কঠিন কষ্টকর জীবন যাপন যে করে সে-ই বোঝে; এর মধ্যে এক বিন্দু অস্বাভাবিকতা নাই। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দল যখন এই সংকীর্ণ ভাবনাকে ভিত্তি করে তার রাজনীতি বানায়, নিজের রাজনীতি বলে সমাজে হাজির করে--তখন এটাকে আমরা পাতি-বুর্জোয়া ঈর্ষাকাতর ভাবনা ও নিজ জনগোষ্ঠীর তরফে বিপজ্জনক রাজনীতি বলি।
এক এগারোর সরকারের শুরুর দিককার সমর্থক আমাদের মধ্যবিত্ত কিন্তু মাত্র ছয়-আট মাসের মধ্যেই নিজের অভিজ্ঞতায় বুঝে ফেলেছিল যে এটা তার সরকার না, ফলে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু আমাদের কমিউনিস্টদের পাতি-বুর্জোয়া ঈর্ষাকাতর রাজনীতি এটা এখনো পারে নাই। এরা শেষ পর্যন্ত সমর্থক থেকে গিয়েছে আর এর আরো মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছিল তখনই, যখন এক এগারোর উদগাতারা ওই ‘দুর্নীতিবাজ’ হাসিনাকে প্রায় গায়ের জোরে জেল থেকে তুলে ওয়াশিংটনে নিয়ে বসে রফা করেছিল। শূন্য থালা হাতে এঘটনা ফ্যাল ফ্যাল করে দেখা ছাড়া বাংলাদেশের ‘কমিউনিস্ট’দের কিছুই করার ছিল না। এতে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন ও তাদের ওস্তাদেরা শুধু হাসিনার সাথে ক্ষমতা ছেড়ে পালানোর রাস্তার রফাই করে নাই, বরং ওর মধ্যেই রাষ্ট্রকে এক দুর্দমনীয় নিপীড়ন নির্যাতনের হাতিয়ার হিশাবে তৈরি করে যে চরিত্র দিয়ে গিয়েছিল--সেই দানব চরিত্রের ধারাবাহিকতাও যেন বজায় থাকে তারও ব্যবস্থা করে গিয়েছিল। শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডের ধারাবাহিকতা এখন আরো পাকাপোক্ত ভাবে গেড়ে বসেছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনামাকে বুড়া আঙ্গুল দেখানো হচ্ছে, এটর্নি জেনারেলের অফিস হুমকি দিচ্ছে আদালতকে, চেম্বার জজেরা শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডের ধারাবাহিকতাকে আরো পাকাপোক্ত করে তুলছেন। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য লড়বার রাজনীতি কর্তব্য শিকায় তুলে আমাদের কমিউনিস্টরা এক এগারোর সরকারের আমল থেকে সেই যে রাষ্ট্রের চরম অগণতান্ত্রিক চরিত্রকে উপেক্ষা করছিল এর ধারাবাহিকতা হাসিনা সরকারের আমলেও তারা বজায় রেখেছে। যদি কেউ হাসিনার সরকারের বিরোধিতা বা সমালোচনা করছেন--তো মামলার ওপর মামলা, শ্যোন অ্যারেস্ট ও রিমান্ডের নহর বয়ে যাচ্ছে তার ওপর দিয়ে। আর কমিউনিস্টরা ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চুপ করে থাকছেন। কোন নীতিগত প্রতিবাদও কোথাও নাই শুধু তাই না, বরং পুরা সমাজে একটা নতুন রেওয়াজ চালু করে ফেলা হয়েছে--ওই রেওয়াজের স্বগত উক্তিগুলা এরকম; ও! হাসিনা তো শুধু ‘মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি’র বিরুদ্ধে মামলাবাজি করছে--শ্যোন অ্যারেস্ট-রিমান্ড-বিচারককে ধমক-পত্রিকা টিভি বন্ধ করে দিয়ে নির্যাতন--সবই তো হচ্ছে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি’র বিরুদ্ধে। তো, এই নিয়া আর প্রতিবাদ করার দরকার নাই! বরং এক এগারোর সরকারের সময়ের মত সমর্থনের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যেতে হবে।
ওদিকে সুশীল রাজনীতির দোসররা তবু-যদি-কিন্তু লাগিয়ে হলেও, নামকা ওয়াস্তে হলেও নীতিগত নিন্দা করছে। হাসিনা সরকারের প্রায় দুবছরে সিপিবি’র কমিউনিস্টরা এভাবে পার করছে; কিন্তু আর কত? গর্ত সম্ভবত অপরের জন্য খোঁড়া হচ্ছে মনে করে মনকে যতই প্রবোধ দেই না কেন, ওই গর্ত থেকে নিজে বাঁচার নিশ্চয়তা কোথায়? কে দেবে নিশ্চয়তা? মন্টু ঘোষ আজ রিমান্ডের জালে আটকা পড়ে গেছেন। কমিউনিস্টরা রাষ্ট্রের দুর্দমনীয় নিপীড়ন নির্যাতনের হাতিয়ার হয়ে ওঠার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য লড়াইয়ে আপোষহীনভাবে সবার সামনের কাতারে থাকে শুধু নিজের জন্য না, শুধু ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি’র জন্যও না--সবার জন্য। কারণ এটা নীতিগত প্রশ্ন, আপোষহীনতার প্রশ্ন, কোন ‘যদি-কিন্তু’ শর্ত সাপেক্ষেও নয়, নিঃশর্ত, কারণ এটা নীতিগত প্রশ্ন। নিজের রাজনৈতিক শত্রুর গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষেও নীতিগত ভাবে দাঁড়াতে হয়, নিজের রাজনৈতিক শত্রু রাষ্ট্রের দুর্দমনীয় নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হোক এটা খুশির ব্যাপার না, কৌশলে চুপ কর থাকার ব্যাপার না, হতে পারে না। কারণ ঐ রাষ্ট্র আগামীতে ওই একইভাবে তাকেও নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার বানাবে--ফলে নীতিগত অবস্থান থেকে সবসময় সোচ্চার বিরোধিতা করতে হবে। সাফ সাফ মনে রাখতে হবে; শত্রুর গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে নীতিগত ভাবে দাঁড়ানো মানে কোনক্রমেই শত্রুর বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনগত বা ফৌজদারি অভিযোগের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো বোঝায় না, আকার ইংগিতেও না।
মন্টু ঘোষকে একা লড়তে হচ্ছে, কেন?
রিমান্ডের নামে অকথ্য নির্যাতনের শিকার হয়ে মন্টু ঘোষ যেন পঙ্গু হয়ে যান কি না--সেই শঙ্কা জেগেছে কমিউনিস্টদের মনে। তাহলে কেন তাঁরা এতদিন নিশ্চিত হয়ে বসে ভেবেছিল যে রিমান্ড-শ্যোন অ্যারেস্ট এগুলা শুধু বিএনপি আর জামায়াতের জন্য? ‘স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি’র জন্য? আর ওদেরকে নিজের রাজনৈতিক শত্রু বলে জ্ঞান করার ফলে তাই চুপ করে থাকাটা হচ্ছে কৌশল?
গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চে সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো একটা আবেদন করেছেন, এ আবেদনের পক্ষে আইনজীবী হিশাবে দাঁড়িয়েছেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তাঁদের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ পুলিশ হেফাজতে মন্টু ঘোষকে শারীরিক নির্যাতন না করার নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে চিকিৎসক বোর্ড গঠন করে দিনে অন্তত দুই বার তাঁর শারীরিক পরীক্ষা ও দরকারি ওষুধ সরবরাহ করারও নির্দেশ দেয়া হয়। ব্যারিস্টার সারা হোসেন, রনো বা সিপিবি কি এতে সন্তুষ্ট? তারা কি নিশ্চিত যে মন্টু ঘোষকে নির্যাতন করা হবে না? তাকে না খাইয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক বাতির নিচে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে না? চ্যাংদোলা করে ওপরে তুলে আছাড় দিয়ে মেঝেতে ফেলা হবে না? স্বীকারোক্তি আদায় করা হবে না? পত্রিকায় সরকার রমরমা কাহিনী ছাপাবে না যে মন্টু ঘোষ বিদেশি শক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়া তৈরি-পোশাক খাতে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন? মাত্র মাস খানেক আগে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মামলার ক্ষেত্রেও কি আমরা পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিরুদ্ধে আদালতের একই রকম নির্দেশনা দেখি নাই? আর তাতে কি মাহমুদুর রহমানের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়েছিল? হয় নাই। সিপিবির কোন নেতাকে হাসিনা গ্রেফতার করবে কি না, এটা ভাবভালোবাসা দিয়ে নির্ধারিত হবে না। বরং এটা নির্ধারিত হবে হাসিনার রাজনীতি ও ক্ষমতায় থাকার স্বার্থ দিয়ে মাহমুদুর রহমানের মামলার ক্ষেত্রেও আমরা যদি একসাথে নীতিগত কর্তব্য হিশাবে শক্ত আওয়াজ তুলতে পারতাম তবে আজ মন্টু ঘোষের মামলার সময় নিঃসন্দেহে আমরা শক্তিশালী থাকতাম; একটা গণতান্ত্রিক মৈত্রী না হোক অন্তত রাষ্ট্রের শ্যোন অ্যারেস্ট রিমান্ডের নামে নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ প্রতিরোধ দাঁড় করাতে পারতাম। হাসিনার সরকারকে অদম্য মর্ষকামী পদক্ষেপগুলা নেবার আগে নিদেনপক্ষে দুইবার ভাবতে বাধ্য করতে পারতাম।
আচ্ছা! মাহমুদুর রহমানের মামলার ক্ষেত্রে তাঁর ওপর রিমান্ড নির্যাতনের ঝড়ের সময় মন্টু ঘোষ বা তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীরা কি ভাবতে পেরেছিলেন যে পরের মাসে মন্টু ঘোষ একই ঘটনার শিকার হতে যাচ্ছেন? না কি মনে করা হয়েছিল, এতে তো মাহমুদুর রহমান তথা বিএনপি বা খোদ খালেদা জিয়ার রাজনীতিকে সমর্থন করা হয়ে যাবে? এই ভাবনাটা বাংলাদেশের কমিউনিস্টদের দলবাজির এক ন্যাংটা রূপ। অথচ নিপীড়ক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আপোষহীন ভাবে লড়াই করার কথা তাদেরই। এরই ভিত্তিতে শত্রু-মিত্রের ভেদাভেদ ধার্য করা। আপোষহীন ঝাণ্ডা আগে হাতে নিয়ে পেছনে সকলকে জড়ো করা।
প্রায় মাস খানেক আগে শুনেছিলাম, পোশাক শ্রমিকদের নেতা মন্টু ঘোষ, মোশরেফা মিশু ইত্যাদি বামঘেঁষা নেতাদের গ্রেফতার না করার জন্য হাসিনার কাছে সুপারিশ করেছিলেন আওয়ামী শ্রমিক লীগের রায় রমেশ চন্দ্র। সিপিবি কি সেই আশ্বাস বাণী পেতে যাওয়ার বিনিময়ে হাসিনার সরকারকে অদম্য মর্ষকামী পদক্ষেপগুলাতে চুপ করে থাকার দাসখত দিতে যায় নাই? ওই কৌশল নিয়ে নিপীড়ন নির্যাতনকে পরোক্ষে সমর্থন জানানোর কাজটা করে নাই? এটা আত্মঘাতি এবং দলবাজি তবে বামপন্থা দলবাজি, এবং অবশ্যই নিজের রাজনীতি না। সিপিবির কোন নেতাকে শেখ হাসিনা গ্রেফতার করবেন কি না, সেটা ভাবভালবাসা দিয়ে নির্ধারিত হবে না। বরং নির্ধারিত হবে রাজনীতি ও ক্ষমতায় থাকার স্বার্থ দিয়ে। এই সাধারণ কথা বোঝার জন্য কারো কমিউনিস্ট নাম ধারণের দরকার পড়ে না, স্রেফ শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন নেতা হলেই এটা বোঝা সম্ভব। সিপিবি না বুঝুক অন্তত মন্টু ঘোষের তো এটা বুঝতে পারার কথা। মন্টু ঘোষের গ্রেফতার আর তারপরে অকেজো হাইকোর্ট বিভাগে দৌড়াদৌড়ি কি সিপিবি’র হুঁশ ফেরাতে পারবে? না কি এটা কমিউনিস্টদের রিমান্ড সমস্যা হয়েই থেকে যাবে? আগামীতে আমরা সেসব দেখব।
fidaehasan@gmail.com
Available tags : কমিউনিস্ট, রিমান্ড, রাষ্ট্র, নির্যাত, গণতান্ত্রিক আন্দোলন
Thanks1
Monday 09 August 10
Farid Ahmed Reza
কমিউনিস্ট ও ইসলামিস্ট2
Monday 09 August 10
Dripto Hasan
3
Tuesday 01 February 11
Observer