ক্রসফায়ার, গ্রেফতার বাণিজ্যের পর এবার লাঠিপেটায় নেমেছে র‌্যাব

র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবর্হিভূত হত্যার অভিযোগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, নিরীহ লোককে হয়রানি, গ্রেফতার বাণিজ্য, গুপ্তহত্যা, অপহরণসহ আরো বেশ কিছু অপরাধের অভিযোগ উঠেছে এবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। সবশেষ বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতাকে গুম ও দলটির অপর এক নেতার বাড়িতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে লাঠিপেটা ও ভাংচুরের অভিযোগ এসেছে। দলটির পক্ষ থেকে অপহৃত নেতাকে উদ্ধারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে।

সামরিক অস্ত্রসাজে সজ্জিত এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ নতুন নয়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যখন বিরোধী দলে ছিলেন তারাও একই অভিযোগ এনেছিলো এ বাহিনীর বিপরীতে।

সাম্প্রতিক এ কর্মকান্ডকে আরেক বিপদজনক মোড় বলা যায়। সরাসরি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি প্রতিহত করতে এবারই প্রথম ব্যবহৃত হল র‌্যাব। অন্তত এতদিন এধরনের কাজে র‌্যাবকে সংশ্লিষ্ট না করে একধরনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার রেয়াজ ছিল। কিন্তু গত ২৭জুন হরতালের দিন যেভাবে র‌্যাব একজন রাজনৈতিক নেতার বাড়ীতে ঢুকে নির্বিচারে উপস্থিত নারী ও বৃদ্ধসহ লোকজনকে পিটিয়েছে, অপদস্থ করেছে তাতে সবাই শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। ঘটনার পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে মিডিয়া ও লিগ্যাল ইউংএর কর্তাব্যাক্তি পুরো ঘটনাকেই সঠিক ও যৌক্তিক বলে দাবি করেন সাংবাদিকদের কাছে। যা যেকোনো শৃঙ্খলাবাহিনীর সংযম, শৃঙ্খলা ও কার্যপ্রণালীর পরিপন্থী।

অপরাধ দমন, মাদক ব্যবসা ও পাচার সহ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার বা গ্রেফতারের কাজে র‌্যাবকে একটি দক্ষবাহিনী করে গড়ে তোলা হবে এমন একটা প্রত্যাশা ছিল শুরু দিকে অনেকের। একদিকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের অভাব অন্যদিকে তড়িৎ সবকিছু ঠিক করে ফেলার একটা আবহের মধ্যে র‌্যাবের কর্মকাণ্ডকে ন্যয্য ভাবার প্রবণতাও ছিল লক্ষনীয়। দিনকে দিন স্পষ্ট হচ্ছে, আইনের বাইরে কিম্বা জবাবদিহিতার উর্ধ্বে রাখলে সেই প্রতিষ্ঠান দিয়ে সুশৃঙ্খল বাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এ বাহিনীটির শৃঙ্খলা অনেকটা ভেঙে পড়েছে। আগের সেই সমর্থনও এখন শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে।

গত ২৭ জুন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাড়িতে হামলা-ভাংচুরের পর বাংলা ভাষায় সর্বাধিক পঠিত সামাজিক ওয়েবসাইট “ সামহোয়ার ইন ব্লগে ” এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিলো।

সেখানে ব্লগাররা র‌্যাবের এধরনের কর্মকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনেন। তীব্র সমালোচনা করে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তারা।

ব্লগারদের ভাষা ছিলো এ ধরনের: র‌্যাব এখন জনমনে একটি আতংকের নাম। সাধারণ জনগণের ওপর নির্যাতন করায় এতদিন তা খুববেশি প্রকাশ পায়নি। রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলা চালানোয় এটা নিয়ে সমালোচনা উঠেছে। কেউ কেউ র‌্যাব সদস্যদের আড়ালে সেখানে ছাত্রলীগের কর্মীদের তান্ডব চালানোর অভিযোগও এনেছে। অপর এক ব্লগার বলেছেন, এ বাহিনী তুলে দিতে পরিকল্পিতভাবে তাদের সদস্যদের বিতর্কিত কাজের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে।

রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে “র‌্যাব” এমন অভিযোগে এরিমধ্যে এ বাহিনী সাধারণ জনগণের আস্থা হারিয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এর বহি:প্রকাশও ঘটছে।

অনেকেই মনে করেন, গত ২১ মে সাতক্ষিরায় র‌্যাব সদস্যদের আটকে রাখার ঘটনা জনগণের অনাস্থা ও ক্ষোভের একটা বড় উদাহরণ। ওই দিন রাতে র‌্যাব সদস্যরা সাতক্ষিরার সদর উপজেলার নতুয়াডাঙা গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ি সফিকুল ইসলামকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনা এরিমধ্যে দেশের মধ্যে হ-ই-চ-ই ফেলে দেয়। যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

এ ঘটনার পর ২৫ মে র‌্যাব-১ এর হেফাজতে আবুল কালাম আজাদ নামে চল্লিশোর্ধ এক আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী মারা যান। ছেলে রিপনসহ তাকে ২৪ মে রাতে রাজধানীর মহাখালী সেনাকল্যাণ কমপ্লেক্স থেকে আটক করা হয়। তাদের বিপরীতে অভিযোগ ছিলো, পর্নো সিডি বিক্রির। আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুর কারণ হৃদরোগে বলে দাবি করেছে র‌্যাব। নিহতের পরিবার বলছে, নির্যাতনে মৃত্যুর কথা।

এরপর গত ২৫ জুন রাতে রাজধানীর ইন্দিরা রোড থেকে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: চৌধুরী আলমকে আটক করে গুম করার অভিযোগ এনেছে বিএনপি। এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়।

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেছে, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন অজুহাতে রাজনৈতিক কর্মীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন ও মেরে ফেলার ঘটনা ঘটছে। যাতে তারা উৎকন্ঠিত।

এছাড়া গত বছরের ২১ অক্টোবর রামপুরার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী কামরুল ইসলাম বাপ্পীকে ধরতে গিয়ে নিরীহ কায়সার মাহমুদ বাপ্পী নামের এক তরুণকে ক্রসফায়ার ও গত ২৪ জানুয়ারি মহিউদ্দিন আরিফ নামের অপর এক তরুণের র‌্যাব হেফাজতে মৃত্যু হয়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এই দুটি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

গত ২০ জুলাই এনজিও কর্মী তারিক হোসেনকে ঢাকার লালবাগ থেকে আটক করে খুলনায় নিয়ে ক্রসফায়ারে দিয়েছে, অভিযোগ নিহতের স্ত্রী শারমিনের।

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে বিজ্ঞাপন ব্যবসায়ী তাজুল ইসলামের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গত বছরের ২৪ জুলাই র‌্যাবের এএসপি সোয়েব আহমেদ, সিপাই সাগর চন্দ্র বিশ্বাস ও শাহীন আলমকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর অধিনায়কের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ছয় লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন রাজধানীর সূত্রাপুরের মিনারা বেগম। তার ছেলে রাজধানীর ৮১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা সাইজুদ্দিন ওরফে সাজুকে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১০ সদস্যরা আটক করে। এরপর আত্মীয়স্বজন র‌্যাব কর্মকর্তার কাছে গেলে সাজুর মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাকে ছয় লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপরেও সাজুকে র‌্যাব ক্রসফায়ার দেয়, অভিযোগ মিনারা বেগমের। এছাড়াও এখন পর্যন্ত বেশ কিছু লোক নিখোজ রয়েছে। যাদেরকে বিভিন্ন সময় র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত দুই বছরে এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে র‌্যাব সদস্যদের ঘিরে। অথচ এই বাহিনীটি গঠন করার সময় বলা হয়েছিলো পুলিশ তথা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর নানা দুর্নাম ঘোঁচাতে এরা কাজ করবে। কিন্তু ঠিক এর উল্টোটাই ঘটছে বলে মনে করেন মানবাধিকার সংগঠনসমূহ। ভুক্তভোগীরা প্রায়শ সংবাদ সম্মেলন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করছে। অধিকাংশ সময়েই র‌্যাব এসব অভিযোগের সন্তোষজনক কোনো জবাব দিচ্ছে না।

গত ২৭ মে ব্রিটেনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত বার্ষিক রিপোর্টেও এ ধরনের একটি অভিযোগ আনা হয়। সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতির সমালোচনা করে ‘ক্রসফায়ার’-এর একটি ঘটনাও উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ঢাকা পলিটেকনিক্যাল কলেজে ‘সরকার সমর্থক ছাত্রলীগের দু’নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও মোহসিন শেখের পরিবার দাবি করেছে র‌্যাবের গুলিতে তারা দু’জন নিহত হয়েছে। যদিও র‌্যাব বলেছে, একটি চেক পয়েন্টে তাদের থামানোর চেষ্টা করা হলে তারা থামেনি এবং বন্দুকযুদ্ধে তারা মারা যায়। ময়নাতদন্তে দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এ ঘটনায় ১০ র‌্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হলেও তাদের কাউকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়নি।

র‌্যাব মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, অধিকাংশ সদস্যই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। তারপরও কিছু সদস্যের নৈতিক স্খলন হয়েছে। যারাই অন্যায় করছে তাদের র‌্যাবের বিধি অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হচ্ছে। র‌্যাবে কোনো অন্যায় প্রশ্রয় দেয়া হয় না। এ বাহিনীতে অন্যায় কাজের জন্য কাউকে ক্ষমা করার নজির নেই।

র‌্যাবের দেয়া এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠার পর মে মাস পর্যন্ত নানা অপরাধে জড়িত ৭৫৬ জন র‌্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিভিন্ন পদমর্যাদার অন্তত ৩১৪ সদস্যকে গুরুদণ্ড, ৩১০ জনকে লঘুদণ্ড এবং নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৩২ জনকে।

র‌্যাবে এ ধরনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংগঠন “অধিকার”। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান বলেন, র‌্যাবের সাম্প্রতিক কর্মকান্ড প্রশ্নবিদ্ধ। তারা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না সেটি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাদের তৎপরতার নামে এই অপতৎপরতা ব্যাপারে অধিকার-এর পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অগাদ ক্ষমতা প্রাপ্তির কারণে তারা এই অপতৎপরতার চালাচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, র‌্যাবের সাজানো ঘটনা এখন আর কেউ বিশ্বাসও করছে না। তাদের ভাবমুর্তি শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তারা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কি না- তা পরিস্কার করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানান।

ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, গুপ্তহত্যা, বাণিজ্য ও বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড আর র‌্যাব একাকার হয়ে গেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বার্ষিক রিপোর্টে র‌্যাবের কর্মকান্ডের সমালোচনা করে। সমালোচনা করা হয় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর প্রতিবেদনেও।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ র‌্যাবকে শীঘ্রই বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের কাছে। যদি বিলুপ্ত করা না হয় তবে র‌্যাব ঘটিত হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনুসন্ধানে একটি কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন তারা।

 


প্রাসঙ্গিক অন্যান্য লেখা


Name

Email Address

Title:

Comments


Inscript Unijoy Probhat Phonetic Phonetic Int. English
  


Available tags : নির্যাতন, মানবাধিকার, র্যাব

View: 3802 Leave comments (2) Bookmark and Share

বাড়াবািড়1

সাম্প্রতিক সমেয় র‌্যাব পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত বির্তকিত। রক্ষক এখন ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। তবে দোষটা শুধু তাদেরই নয়, যারা তাদেরেক চালায় তাদেরো।
সরকার তাদেরেক যেভাবে ব্যবহার করেছ, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর এ ব্যাপারে আরো সোচ্চার হওয়া দরকার।


Sunday 04 July 10
Manik

র‌্যাব তৈরে হইছে বিরোধী দলীয় কমীর্দের ক্রসফায়ারে দিতে 2

রাজনৈতিক নেতাদের বাসায় হামলা করায় র‌্যাবের প্রতি সবার অনাস্থা। ঠিক কথাই বলছেন। রাজনীতিকরা র‌্যাব তৈরি করছেন বিরোধী দলের কমর্ীদের ক্রোসফায়ারে দেয়ার জন্য। এখন নেতাদের বাসায় হামলাতো করবেই।
র‌্যাব এখন রাজনৈতিক নেতাদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে গুম করছে। রীতিমত ভয়ঙ্কর সব খবর। সরকার অচিরে এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিবে সরকারের আচরণে তা বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো এখনো অনেক কাম বাকি আছে। অনেক নেতা তালিকায় আছেন এখনো। বিরোধী দলের যারা বাড়াবাড়ি করবে তারাই ক্রসফায়ারে যাবে নিসন্দেহে। তাই সবাইরে সাবধান। তালিকায় পাইরেন্না।

Tuesday 13 July 10
?????? ????
Go Back To Issues
EMAIL
PASSWORD