কী আইন আনিলেন নবি সকলের শেষে
রেজাবন্দি সালাত যাকাত
পূর্বেও তো জাহের আছে।।
ঈসা মুসা দাউদ নবি
বে-নামাজি নহে কভি
শেরেক বেদাত সকল ছিল
নবী কি জানালেন এসে।।
তৌরাত জব্বুর আরো ইঞ্জিল
কিতাব তিনটি কীসে হয় বাতিল
তবে কি নবি পয়গম্বর না খাস
ভেবে না পাই দিশে।।
ফোরকানের দারজা ভারি
বুঝেও না বুঝতে পারি।
তাই না বুঝে অবোধ লালন
বিচারে গোল বাঁধিয়েছে।।
এই গানের আরেকটি ভাষ্য আছে:
... ... ... ... ... ... ... ... ... ......
কী আইন আনিলেন নবি সকলের শেষে
রেজাবন্দি সালাত যাকাত পূর্বেও তো জাহের আছে।।
ঈসা মুসা দাউদ নবি
বেনামাজি নহে কভি
শেরেক বেদাত সকল ছিল
নবি কি জানালেন এসে।।
ইঞ্জিল তৌরাত জব্বুর কিতাব
বাতিল হলো কিসের অভাব
তবে নবি পয়গম্বর কী খাস
ভেবে আমি না পাই দিশে।।
ফোরকানের দরজা ভারি
কিসে হলো বুঝতে নারি।
তাই না বুঝে অবোধ লালন
বিচারে গোল বাঁধিয়েছে।।
(আরো পড়ূন)
নবী দ্বীনের রাসুল খোদার মকবুল।
ও নাম ভুল করিলে পড়বি ফেরে হারাবি দুই কুল।
নবী পাঞ্জাগানা নামাজ পড়ে
সেজদা দেয় সে গাছের পরে
সেই না গাছের ঝরে পড়ে ফুল
সেই ফুলেতে মৈথুন করে
দুনিয়া করলেন স্থূল।।
নবী আউলে আল্লার নূর
দুওমেতে তওবার ফুল
সিয়ামেতে ময়নার গলার হার
চৌঠামেতে নূর ছিতারা
পঞ্চমে ময়ূর।।
আহাদে আহাম্মদ বর্ত
জেনে কর তাহার অর্থ
হয় না যেন ভুল;
লালন বলে ভেদ না জেনে
হ’লাম নামাকুল।।
ভুল না মন কারো ভোলে
রাসুলের দ্বীন সত্য মান ডাক তারে আল্লা বলে।।
খোদা প্রাপ্তি মূল সাধনা রাসুল বিনা কেউ জানেনা
জাহের বাতেন উপসনা রাসুল হইতে প্রকাশিলে।।
দেখাদেখি সাধিলে যোগ বিপদ হবে বাড়িবে রোগ
যে জনা শুদ্ধ সাধক নবীর ফরমানে সে চলে।।
অপরকে বুঝাইতে তামাম করেন রাসুল জাহেরা কাম
বাতুনে মশগুল মোদাম কারো কারো জানাইলে।।
যেরূপ মুর্শিদ সেইরূপ রাসুল যে ভজে সে হবে মকবুল
সিরাজ সাঁই কয় লালন কি কুল পাবি মুর্শিদ না ভজিলে।।
(আরো পড়ূন)
দ্বীনের ডঙ্কা বাজে শহর মক্কা-মদিনে
আয়গো যাই নবীর দ্বীনে।।
তরিক দিচ্ছেন নবী জাহের বাতেনে
যথাযোগ্য লায়েক জেনে
রোজা আর নামাজ ব্যক্ত এহি কাজ
গুপ্ত পথ মেলে ভক্তির সন্ধানে।।
অমূল্য দোকান খুলেছেন নবী
যে ধন চাবি সেই ধন পাবি
বিনা কড়ির ধন সেধে দেয় এখন
না লইলে আখেরে পস্তাবে মনে।।
নবীর সঙ্গে ছিল ইয়ার চারজন
চারকে দিলেন নবী চার মতো যাজন।।
নবী বিনে পথে গোল হোল চার মতে
ফকির লালন বলে যেন গোলে পড়িস নে।।
সরলার্থ: ধর্মের বিজয় ধ্বনি বাজছে শহর ও গ্রামে, মদিনা ও মক্কায়। ধর্মের শিক্ষা নিতে হবে দুই অবস্থান থেকেই। যেমন, চূড়ান্ত বিজয়ের আগে হিজরত করে পিছু হটে আসা মদিনার অভিজ্ঞতা এবং এবং মক্কা বিজয়ের ভূতপূর্ব সাফল্যের অভিজ্ঞতা, আল্লার সহায়তা ছাড়া যা ছিল অসম্ভব। রক্ত, গোত্র, জাতিবাদ, বংশবাদ, ভূখণ্ডবাদ -- বিশেষ ভাবে কোরেশদের আভিজাত্য ও অহংকার চূর্ণ বিচূর্ণ করে যে দ্বীনের আবির্ভাব ঘটেছে, তার বিজয় এভাবেই সম্ভব হয়েছে। নবী পথ দেখিয়েছেন কখনো প্রকাশ্যে, কখনো নীরবে বা গোপনে। কিন্তু সবার জন্য একই ভাবে নয়। কাউকে তিনি জাহেরি শিক্ষা দিচ্ছেন নিয়ম শৃংখলা বিধিবিধান ভালমন্দ ভেদবুদ্ধি ইত্যাদি দ্বারা, আবার কাউকে শিক্ষা দিচ্ছেন হৃদয় দিয়ে, একান্তে।
রোজা আর নামাজ তিনি 'ব্যক্ত' করে গিয়েছেন, যা আমাদের সুশৃংখল জীবনের জন্য দরকার, কিন্তু যা তিনি একান্তে গোপনে দিয়ে গিয়েছেন সেটা রোজা নামাজে মিলবে না। সেই একান্ত বা লোকচক্ষুর আড়ালের রুহানি পথ ভক্তির পথ। বিনা শর্তে সর্বস্ব আত্মসমর্পনের পথ। যে মন যেমন 'লায়েক', সেই মন যতোটুকু গ্রহণ করতে পারবে, সেটা খেয়াল করেই তিনি যার যেমন বহনের ক্ষমতা তেমন ভাবে দ্বীনের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
এ এক অমূল্য দোকান নবীর। এখানে কিছু কিনলে কোন মূল্য দিতে হয় না। এই 'অমূল্য' দোকানে তুই যা চাইবি, তাই পাবি। তোর যা দরকার সেটা এই দোকানে পেয়ে যাবি। বিনা কড়িতে ধন বিলিয়ে যাচ্ছেন নবী। যদি এখনই সরল ভাবে তুই তা গ্রহণ করতে না পারিস তাহলে আখেরে নির্ঘাত পস্তাবি।
কারন নবীর 'ইয়ার' , দোস্ত বা সাহাবা ছিল চারজন, তাদের কথা ভেবে দেখ। চারজনের কেউই একই রকম শিক্ষা পান নি। চার জনকে নবী চার প্রকার 'যাজন' বা শিক্ষা দিয়েছেন। তারা যে যেমন তারা সেভাবেই নবীকে বুঝেছে। চারজন চারভাবে। নবীকে এখন হাজার জন হাজার ভাবে বুঝবে। হাজার ভাবে বোঝে! গোলমাল শুরু হয়ে গিয়েছে।!
দেখিস্, তুই নিজে যেন আবার গোলামালে পড়িস নে । বিনামূল্যে নবীর কাছ থেকে তুই নিজে যা বোঝার নিজের গরজে নিজের মতো বুঝে নে।
চল যাই নবীর দ্বীনে, ডংকা বাজছে মক্কায় আর মদিনায় -- জাহেরে এবং বাতেনে। নিয়ম বিধিবিধানের সরল পথে অথবা রুহানিয়াতের সদর রাস্তায়।
(আরো পড়ূন)
ভেবে দেখ রে আমার রাসুল যাব কাণ্ডারী এই ভবে
ভব নদীর তুফানে কি তার নৌকা খানি ডোবে।।
তরিকার নৌকা খানি,
এশেক নাম তার বলেন শুনি,
বিনা বাওয়ায় চলছে অমনি,
রাত্রি দিবে।।
ভুল না মন কারো ধোঁকায়,
চড়ো ঐ তরিকার নৌকায়,
বিষম ঘোর তুফানের দায় ,
বাঁচবি তবে।।
ভাবের নৌকা নাহি চড়ি,
কেমনে দিবে ভব পাড়ি,
লালন বলে এহি ঘড়ি,
দেখ মন ভেবে।।
(আরো পড়ূন)
তোমার মত দয়াল বন্ধু আর পাব না
দেখা দিয়ে ওহে রাসুল ছেড়ে যেও না।।
তুমি তো খোদার দোস্ত অপারের কাণ্ডারী সত্য
তোমা বিনে পারের লক্ষ্য আর তো দেখি না।।
আসমানি এক আইন দিয়ে আমাদের আনলেন রাহে
এখন মোদের ফাঁকি দিয়ে ছেড়ে যেও না।।
আমরা সব মদিনাবাসি ছিলাম যেমন বনবাসি
তোমা হতে জ্ঞান পেয়েছি আছি সান্ত্বনা।।
তুমি বিনে এরূপ শাসন কে করবে আর দ্বীনের কারন
লালন বলে আর তো এমন বাতি জ্বলবে না।।
কি আইন আনিলেন নবী সকলের শেষে,
রেজাবন্দী ছালাত নামাজ পূর্বেও ত জাহের আছে।।
ইছা মুছা দাউদ নবী,বে-নামাজী নাহি কভি,
শেরেক বেদাত তখনও ছিল,নবী কি জানালে এসে।।
ইঞ্জিল তৌরিত জব্বুর,এ তিন কেতাব বাতেল হয় কিসে,
তবে নবী কি পয়গম্বর না-খাছ,ভাবিয়া না পাই দিশে।।
ফোরকানের দরজা ভারি,কিসে হল বুঝতে নারি,
তাই না বুঝে অবোধ লালন,বিচারে গোল বাধিয়েছে।।
(আরো পড়ূন)
মুরশিদ রংমহালে সদায় ঝলক দেয়
যার খুলেছে মনের কপাট সেই দেখিতে পায়।।
শতদলে আতসপুরী,আলিপুরে তার কাছারী,
দেখিলে তার কারিগরী,হবে মহাশয়।।
সজল উদয় সেই দেশেতে,অনন্তফল ফলে তাতে,
প্রেম পাতি জাল পাতলে তাতে,অধর ধরা যায়।।
রত্ন যে পায় আপন ঘরে,সে কি আর খোঁজে বাহিরে,
না বুঝিয়ে লালন ভেড়ে দেশ-বিদেশে ধায়।।
(আরো পড়ূন)
তরিকাতে দাখেল না হলে,
শরিয়ত হবে না সিদ্ধ
পড়বি গোলেমালে।।
শরার নামাজের বীজ
আরকাম আহকাম তের চিজ
শরিয়তের আহকাম আরকান
কয় চিজ বলে।।
সালেকী মজ্জবী হয়
হকিকতে হয় পরিচয়
মারেফাতে সিদ্ধির মোকাম
দেখনারে খুলে।।
আত্মতত্ত্ব জানে যে
সব খবরে জবর সে,
লালন ফকির ফাঁকে প'ল
নিগূঢ় না বুঝে।।
(আরো পড়ূন)
যে জন সাধকেরই মূল গোড়া,
বে মুরিদ বে-তালিম সে-ত,ফিরছে সদায় বেদ ছাড়া।।
গুপ্তনূ রে হয় তার সৃজন,গুপ্তভাবে করছে ভ্রমণ,
নূরেতে নূর নবী পয়দা,এই কথাটি জগৎ জোড়া।।
পীরের পীর সে দস্তগীয় হয়,তার মুরশিদকে মুরশিদ বলা যায়,
চিনতে যদি পার কেহ,সেই পাবে পথের দাঁড়া।।
কেউ বলে সে মূলাধারের মূল,মুরশিদ বিনে কে জানে তার উল,
লালন বলে ভেদ না জেনে,ঝাকমারী সাঁইর বেদ পড়া।
(আরো পড়ূন)
যে দিন ডিম্বভরে ভেসেছিলেন সাঁই
কে হল তাহার সঙ্গী,কাহারে সুধাই।।
পয়ার রূপ ধরিয়ে সে,দেখা দিল ঢেউতে ভেসে,
কি নাম তার না পাই দিশে।।
আগমে এশারায় বলে,কওহে তাই,
সৃষ্টি না করিল যখন,কি ছিল তার আগে তখন।।
শুনতে অনম্ভব বচন,একের কুদরতে দুজনে তা’রাই।।
তারে না চিনিতে পারি,অধর কেমনে ধরি,
না বলে সেই যে নুরী,খোদার ছোট নবীর বড় কেহ কয়।
(আরো পড়ূন)
করিয়ে বিবির নিহার রাছুল আমার কৈ ভুলেছে রব্বানা
জাত ছেফাতে দোস্তি করে, কেউ কারেও ভুলেতে পারেনা।।
খুঁজে তার মর্ম কথা পাবি কোথা,চৌদ্দ নেকা কৈ করেছে,
চৌদ্দ ভুবনের পাত, চৌদ্দ বিবি,করেছে তার দেখ নমুনা।।
ছেফাতে এসে নবী,তিনটি বিবি সু-সন্তানের মা হয়েছে,
আলেফ লাম মিমে দেখনা,
ও দীন কানা, তিনি নবী সাল্লো আলা।।
আদার বেপারী হয়ে,জাহাজ লয়ে,সাত সমুদ্রের খবর লেনা,
লালন কয় কর করণ,দেখনা বনী ছৈয়েদেনা।।
(আরো পড়ূন)
খাকি আদমের ভেদ পশু কি বোঝে
আদমের কালেবে খোদা খোদে বিরাজে।।
আদম শরীরে আমার ভাসয় বলেছেন অধর সাঁই নিজে,
নৈলে কি আদমকে সেজদা ফেরেস্তার সাজে।।
শুনি আজাজীল খাসতন
খাকে আদম তন গঠন,
গঠেছে সেই আজাজীল
খবিছ হল,আদম তন না ভজে।।
আব আতস খাক বাদে ঘর
গঠল জান মালেক মোক্তার
কোন চিজে লালন বলে এ ভেদ
সব জানে যে সে?
(আরো পড়ূন)
মুরশিদ জানায় যারে সেই জানিতে পায়
জেনে শুনে রাখে মনে সে কি কারো কয়।।
নিরাকার হয়,অচিন দেশে আকার ছাড়া চলে না সে,
ন-অন্ত-সবই অন্ত যার নাই,যাহা ভাবে তাই হয়।।
মুনশী লোকের মুনশীগিরি,আকার নাই যার বরজক করি,বলে সর্বদায়।।
নূরেতে কুলআলম পয়দা,আবার কয় পানির কথা,
নূর কি পানি,বস্তু জানি,লালন ভাবে তাই।
(আরো পড়ূন)
মুরশিদ জানায় যারে সেই জানিতে পায়।
জেনে শুনে রাখে মনে সে কি কারো কয়।।
নিরাকার হয়, অচিন দেশে আকার ছাড়া চলে না সে,
ন-অন্ত-সবই অন্ত যার নাই, যাহা ভাবে তাই হয়।।
মুনশী লোকের মুনশীগিরি, আকার নাই যার বরজক করি, বলে সর্বদায়।।
নূরেতে কুলআলম পয়দা, আবার কয় পানির কথা,
নূর কি পানি, বস্তু জানি, লালন ভাবে তাই।।
(আরো পড়ূন)
নূরের ভেদ বিচার জানা উচিত এবার।।
নবীজী আর নিরূপ খোদার নূর কি প্রকার।।
নবীর যেন আকার ছিল, তাতে নূর চোয়ায় বল,
কি প্রকারে নূর চোয়ায় খোদার।।
আকার বলিতে খোদা, সরাতে নিষেধ সদা,
আকার বিনা নূর চোয়ান, প্রমাণ কি তার।
জাত এলাহি ছিল সুতে, কি রূপে এল ছেফাতে;
লালন বলে নূর চিনিলে ঘোচে আঁধার।।
(আরো পড়ূন)
নবিজী মুরিদ কোন ঘরে?
কোন কোন চার ইয়ারে এসে চাঁদোয়া ধরে।।
যার কালেমায় দিল দুনিয়া
সে মুরিদ হল কোন কলেমায়,
লেহাজ করে দেখ মনরায়, তত্ত্ব অঠাঁই গভীরে।।
ও তারিল তারে কোন পিয়ালা,
জানিতে উচিত হয় নিরালা
অরুণ বরুন জ্যোতির্মালা
কোন যোগাশ্রয়ে সাধন করে।।
ময়ুরীলীলা কোন যোগে প্রকাশ করে
সিরাজ সাঁই ইসারায় বলে
লালন ঘুরে মলি বুদ্ধির ফেরে।।
(আরো পড়ূন)
যে জানে ফানার ফিকির সেই জানে ফকিরী।।
ফকির হয় কি করলে নাম জিকির।।
আছে কত মত ফানার ধরন, জানতে হয় তার বিবরণ,
ফানা ফিল্লা ফানা ফিশ্বেখ, ফানা ফির-রাছুল আখির।।
আখের অকারণ হবি ফানা, প্রাপ্তি না হলে ফানা,
জেনে শুনে মুড়িয়ে মাথা, ফকিরি পদে কর সাকির।।
ফানা হয় মুরশিদ রূপ দেখে,
মাওলারে পায় অনাসে, সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার
ফকিরী নয় ফাঁদ ফিকির।।
(আরো পড়ূন)
করবে পিয়ালা কবুল শুদ্ধ এমানে।।
মিশবি যদি জাত ছেফাতে এ দিন আখেরের দিনে।।
চেনরে নূরের পিয়ালা খুলে যাবে রাগের তালা,
অচিন মানুষের খেলা, দেখবিরে দুই নয়নে।।
ছত্তরী জব্বারী নূরী, চেনরে সেই নূর জহুরী,
এচার পিয়ালা ভারি, আছেরে মন অতি গোপনে।।
ফানা ফিশ্বেখ ফানা ফি-রাছুল, ফানা ফিল্লা ফানা বাকা স্থুল;
এ চারি মোকামে লালন ভজরে মুরর্শিদ নির্জনে।।
(আরো পড়ূন)
নজর একদিক দিলে
আর একদিকে অন্ধকার হয়।।
নূরে নীরে দুটি নিহার
কোনটিরে ঠিক রাখা যায়।।
নবী আইন করলেন জগৎ জোড়া
সেজদা হারাম খোদা ছাড়া,
মুরশিদ বরজখ সামনে খাড়া
সেজাদার সময় থুই কোথায়।।
শোগল রাবেতা বল
বরজখ লিখে দলিলে,
কারে থুয়ে কারে নিলে
একমনে দুই কৈ দাঁড়ায়।।
যদি বেলায়েতে হতো বিচার
ঘুচে যেত মনের অন্ধকার,
লালন ভেড়ো এবার ওধার
দুই ধারেতে খাবি খায়।।
(আরো পড়ূন)
তরিকতে দাখিল হলে সকল জানা যায়।।
কেনরে মন কোলের ঘোরে ঘুরছে ডানে বায়।।
আওয়ালে বিসমিল্লা বর্তা,মূল জান তার তিনটি অর্থ,
আওলে বলেছে সত্য,ডুবে জানতে হয়।।
নবী আদম খোদ বুদ খোদা,এ তিন কভু নহে জুদা,
আদমে করিলে ছেজদা,আলেক জনা পায়।।
যথা আলেক মোকাম বাড়ী,সফিউল্লা তাহার সিঁড়ি,
লালন বলে মনের বেড়ি,লাগাও গুরুর পায়ঁ।।
(আরো পড়ূন)
নবীর আইন বোঝার সাধ্য নাই।।
যার যমন বুদ্ধিতে আসে বলে তাই।।
বেহেস্তের লায়েক আহাম্মুখ সবে, তাই শুনি হাদিছ কেতাবে,
এমত কথায় হিসেবে, বেহেস্তের গৌরব কিসে জানতে পাই।।
সকলে বলে আহাম্মুখ বোকা, আহাম্মুখ পায় বেহেস্তে জায়গা,
এত বড় পূর্ণ ধোকা কে ঘুচাবে ধোক, কোথা যাই।।
রোজা নামাজ বেহেস্তের ভজন, তাই করে কি পাবে সে ধন,
বিনয় করে বলছে লালন, থাকতে পারে ভেদ, মুরশিদের ঠাঁই।।
(আরো পড়ূন)
নবী একি আইন করলেন জারী।।
পাছে মারা যায় আইন, তাই ভেবে মরি।।
শরিয়ত আর মারফত আদায় নবীর হুকুম এই দুই সদায়,
শরা শরিয়ত, নবুয়ত মারফত, জানতে হয় গভীরি।।
নবুয়ত অদেখা ধিয়ান, বেলায়েত রূপের নিশান,
নজর একদিক যায়, আরো দিক আঁধার হয়,
দুই রূপে কোন রূপ ঠিক করি।।
সরাকে ছরপোষ লেখা যায়,বস্তু মারফত ঢাকা আছে তায়,
ছরপোষ থুই তুলে কি দেই ফেলে, লালন ভাবে বস্তু ভিখারী।।
(আরো পড়ূন)
নবী না চিনলে পরে, সে কি খোদার ভেদ পায়।।
চিনিতে বলেছে খোদে সেই দয়াময়।।
সে নবী পারের কান্ডার, জেন্দা সে চার যুগের উপর,
হায়াতোল মোরছালি, সেই জন্য কয়।।
কোন নবী বান্দার হায়াত, কোন নবী হল ওফাত,
লেহাজ করে দেখলে শষ্কা তার যায়।।
যে নবী সঙ্গে তোর, চিনে তার দাওন ধর,
লালন বলে পারের কারো সাধ যদি হয়।।
(আরো পড়ূন)
মন কি ইহাই ভাব আল্লা পাব নবী না চিনে।।
কারে বলিস নবী দিশা পালিনে।।
বীজ মানে সেই বৃক্ষ নবী, দেল ঢুড়িলে জানাতে পাবি,
কি বলব সেই বৃক্ষের খুশি,
এক ডালে দীন এক ডালে দ’নে।
যে নূরেতে আদম পয়দা, সেনবীর তরিক জুদা,
নূরের পিয়ালা খোদা, দিলেন খোদ অঙ্গ জেনে।।
চার কারের উপরে দেখ, আশ্রয় করে ছিল কে গো,
পূর্ব পরের খবর রাখ, তবে জানবি লালন নবীর ভেদ মনে।।
(আরো পড়ূন)
রাছুল কে তা চিনতে নারে !
রাছুল পয়দা হলেন আল্লার নূরে।।
রাছুল মানুষ চিনলে পরে রে,আল্লা তারে দয়া করে
দেল-আরশে আল্লা নবী দুজনাতে বিহারে করে।।
নয়নে না দেখলাম যারে রে, কি মতে ভজিব তারে
নীচের বালু না গণিয়ে আকাশ ধরছ অন্ধকারে।।
রাছুল মানুষের সঙ্গ নিলে রে, যম যাতনা যেত দূরে
লালন বলে রাছুলেরে না চিনে,পড়েছি ফেরে।।
(আরো পড়ূন)
রাছুলকে চিনলে পরে খোদা চিনা যায়।।
রুপ ভাড়ায়ে দেশ বেড়ায়ে,গেলেন সেই দয়াময়।।
রাসুলের পথে ঘাটে,মেঘে রয় যে ছায়া ধরে,
দেখ দেখি লেহাজ করে,জীবরে কি সেই দরজা হয়।।
জন্মে যার এই মানবে, ছায়া তার পড়ে নাই ভূমে,
দেখ দেখি তাই বর্তমানে কে এল এই মদিনায়।।
আহাম্মদ নাম লিখিতে, মিমি হরফ হয় নফি করতে,
সিরাজ সাঁই কয় লালন তোকে নজীর দেখায়।।
(আরো পড়ূন)
অপারের কাণ্ডার নবীজি আমার
ভজন সাধন বৃথা নবী না চিনে।।
আউয়াল আখের, বাতেন জাহের,
কখন কোন রূপ ধারণ করেন কোন খানে।।
আসমান জমি, জলধি পবন,
যে নবীর নূরেতে সৃজন
কোথায় ছিল সে নবীজির আসন
নবী পুরুষ কি প্রকৃতি আকার তখনে।।
আল্লা নবী দুটি অবতার
গাছ-বীজ দেখিয়ে প্রচার,
সু-বুদ্ধিতে করহ বিচার
গাছ বড় কি ফলটি বড় লও জেনে।।
আত্মাতত্ত্বে ফাজেল যে জনা,
সেই জানে সাঁইজীর নিগূঢ় কারখানা
হলেন রাসূলরূপে প্রকাশ রব্বানা
লালন বলে দরবেশ সিরাজ সাঁইর গুণে।।
(আরো পড়ূন)
অশেক বিনা ভেদের কথা কে আর পোছে
শুধালে খলিফা সবে রাসুল বলেছে।।
মাশুকে যার আশেকী
খুলে যায় তার দিব্য আঁখি
নফসে আল্লা নফসেই নবী
দেখবে অনাসে।।
যিনি মুরশিদ রাসুলুল্লাহ
সাবুদ কোরান কালুল্লাহ,
আশেকে বলিলে আল্লা
তাও হয় সে।।
মুরশিদের হুকুম মান
দায়েমী নামাজ জান,
রাসূলের ফরমান
লালন তাই বলে।।
(আরো পড়ূন)
রাসুলের সব খলিফা কয় বিদায়কালে।।
গায়বী খবর আর কি পাব,আজ তুমি গেলে
কোরানের ভিতর সে-তো,মকতায়াত অক্ষর কত,
মানে কও তার ভাল মত, ফেল না গোলে।।
মহা পেচ আইন তোমার বুঝে ওঠে কি সাধ্য কার,
কি করিতে কি করি আর,ছহি না বুঝলে।।
আহাদ নামে কেন আপি,মিম,দিয়ে মিম কর নফি,
মানে কি তার কও নবিজী, লালন তাই বলে।।
(আরো পড়ূন)
দিবানিশি থেকো সবরে বা-হুসিয়ারী।।
রাসূল বলে এ দুনিয়া মিছে ঝাকমারি।।
পড়িও আউজুবিল্লা,দূরে যাবে লানত উল্লা,
মুরশিদরূপ করিলে হেলা,শষ্কা যায় তারই।।
জাহের বাতেন সব ছফিনায়,পুসিদার ভেদ দিলাম ছিনায়,
এমনি মত তোমরা সবায়,বল সবারই।।
অবোধ অভক্ত জনা,তারে গুপ্ত ভেদ বলো না,
বলিলে সে মানিবে না,করবে অহষ্কারী।।
তোমরা সব খলিফা রইলে,যে যাহা বোঝে দিও বলে,
লালন বলে রাসুলের এ নছিহত জারী।।
(আরো পড়ূন)
হাতের কাছে মামলা থুয়ে কেন ঘুরে বেরাও ভেয়ে।
ঢাকা শহর দিল্লি-লাহোর খুঁজলে মেলে এই দেহে।।
মনের ধোঁকায় যেথায় যাবি
ধাক্কা খেয়ে হেথায় ফিরবি
এমনি ভাবে ঘুরে মরবি
সন্ধান না পেয়ে।।
গয়া-কাশী মক্কা-মদিনা
বাইরে খুঁজলে ধান্দা যায় না
দেহরতি খুঁজলে পাবি
সকল তীর্থের ফল তাহে।।
দেখ দেখি মন রে আমার
অবিশ্বাসের ধন প্রাপ্তি হয় কার
যার বিশ্বাসের মন, নিকটে পায় ধন
লালন ফকির যায় কয়ে।।
(আরো পড়ূন)
যেতে সাধ হায়রে কাশী কর্ম ফাঁসি বাধল গলায়।।
আর কতদিন ঘুরব এমন নাগর দোলায় ।।
হলরে এ কি দশা সর্বনাশা মনের ঘোলায়
ডুবল ডিঙ্গি নিশ্চয় বুঝি জন্ম নালায়।।
বিধাতা হয় বিবাদী কি মন পাজী ফেরে ফেলায়
বাও না বুঝে বাই তরনী ত্রুমে তলায় ।।
কলুর বলদ যমন ঢেকে নয়ন পাকে চালায়
লালন প’ল তমনি পাকে হেলায় হেলায়।।
(আরো পড়ূন)
একদিন পারের ভাবনা ভাবলিনারে
পার হবি হীরার সাঁকো কেমন করে।।
একদমের ভরসা নাই
কখন কি করবে সাঁই,
তখন কার দিবি দোহাই
কারাগারে।।
বিনা কড়ির বেচা কেনা,
মুখে সাঁইয়ের নাম জপনা,
তাতে কি তোর অলসপানা,
দেখি হা রে।।
ভাসাও অনুরাগ-তরী
মুরশিদ কাণ্ডারী,
লালন কয় যার পাড়ি
যাও না সেরে।।
(আরো পড়ূন)
হতে চাও হুজরের দাসী
মনে গিল্লাত পোরা রাশি রাশি
না জানি সেবা সাধ্না
না জানো প্রেম উপসনা
সদাই দেখি ইতরপনা
প্রভু রাজী হবে কিসি?
কেশপাশে বেশ করলে কি হয়
রসবোধ না যদি রয়
রসবতি কে তারে কয়
কেবল মুখে কাষ্ঠ হাসি।।
কৃষ্ণপদে গোপী সুজন
করেছিল দাস্য সেবন
লালন বলে তাই কিরে মন
পারবি ছেড়ে সুখবিলাসী।।
(আরো পড়ূন)
ভুল না মন কারো ভোলে
রাসুলের দ্বীন সত্য মান ডাক তারে আল্লা বলে।।
খোদা প্রাপ্তি মূল সাধনা রাসুল বিনা কেউ জানেনা
জাহের বাতেন উপসনা রাসুল হইতে প্রকাশিলে।।
দেখাদেখি সাধিলে যোগ বিপদ হবে বাড়িবে রোগ
যে জনা শুদ্ধ সাধক নবীর ফরমানে সে চলে।।
অপরকে বুঝাইতে তামাম করেন রাসুল জাহেরা কাম
বাতুনে মশগুল মোদাম কারো কারো জানাইলে।।
যেরূপ মুর্শিদ সেইরূপ রাসুল যে ভজে সে হবে মকবুল
সিরাজ সাঁই কয় লালন কি কুল পাবি মুর্শিদ না ভজিলে।।
(আরো পড়ূন)
নবী দ্বীনের রাসুল খোদার মকবুল।
ও নাম ভুল করিলে পড়বি ফেরে হারাবি দুই কুল।।
নবী পাঞ্জাগানা নামাজ পড়ে
সেজদা দেয় সে গাছের পরে
সেই না গাছের ঝরে পড়ে ফুল;
সেই ফুলেতে মৈথুন করে
দুনিয়া করলেন স্থুল।।
নবী আউলে আল্লার নূর
দুওমেতে তওবার ফুল
সিয়ামেতে ময়নার গলার হার;
চৌঠামেতে নূর ছিতারা
পঞ্চমে ময়ূর।।
আহাদে আহাম্মদ বর্ত
জেনে কর তাহার অর্থ
হয় না যেন ভুল;
লালন বলে ভেদ না জেনে
হ’লাম নামাকুল।।
(আরো পড়ূন)
দীনের রাছুল এসে আরব শহরে দীনের বাতি জ্বেলেছে॥
দীনের বাতি রাছুলের রূপ উজালা করেছে॥
মহম্মদ নাম নূরেতে হয়, নবুয়তে নবী নাম কয়,
রাছুল উল্লা ফানা ফিল্লাহ, আল্লাতে মিশেছে॥
মহম্ম হন সৃষ্টিকর্তা, নবী নামে ধর্ম দত্তা,
শরিয়তের ভেদ ওতে রেখে শরা বুঝায়েছে॥
জাহেরা ভেদ জাহেরাতে, আশেকের ভেদ পুসিদাতে,
মহর নবুয়ত আশকদারকে দেখায় দিয়েছে॥
রাছুল রূপ যার মনে আছে, মনের আধাঁর ঘুচে গেছে,
অধিন পাঞ্জু ভাব না জেনে ভ্রমেতে ভুলেছে॥
(আরো পড়ূন)
কে তোমারে এ বেশ ভূষণ
পরাইলো বলো শুনি।
জিন্দা দেহে মরার বসন
খিলকা তাজ আর ডোর কোপিনী।।
জিন্দা মরার পোশাক পরা
আপন সুরত আপনি সারা।
ভবলোককে ধ্বংস করা
দেখি অসম্ভব করণী।।
যে মরণের আগে মরে
শমনে ছোঁবে না তারে।
শুনেছি সাধুর দ্বারে
তাই বুঝি করেছ ধনি।।
সেজেছ সাজ ভালইতরো
মরে যদি ডুবতে পারো।
লালন বলে যদি ফেরো
দুকূল হবে অপমানি।।
(আরো পড়ূন)
শূন্যেতে এক আজব বৃক্ষ দেখতে পাই
আড়ে দীঘে কত হবে
কল্পনা করবা সাধ্য নাই।।
সেই বৃক্ষের দুই অপূর্ব ডাল
তার এক ডালে প্রেম আর এক ডালে কাল
চার যুগেতে আছে সে ফুল
নাই টলাটল রতিময়।।
বলব কি সে বৃক্ষের কথা
ফুলে মধু ফলে সুধা
এমন বৃক্ষ মানে যেবা
তার বলিহারি যায়।।
বিনা বীজে সেই যে বৃক্ষ
ত্রিজগতের উপলক্ষ
শাস্ত্রেতে আছে ঐক্য
লালন ভেবে বলে তায়।।
(আরো পড়ূন)
একি আজগুবি এক ফুল
ও তার কোথায় বৃক্ষ
কোথায় আছে মূল।।
ফুটেছে ফুল মান সরোবর
স্বর্ণ গোফায় ভ্রমরা তার
কখন মিলন হয়রে দোহার
রসিক হলে জানা যায় রে স্থুল।।
শম্ভু বিম্বু নাই রে সে ফুলে
মধুকর কেমনে খেলে
পড় সহজ প্রেম ইস্কুলে
জ্ঞানের উদয় হলে যাবে ভুল।।
শনি মুকুল এরা দু,জন
সে ফুলে হইল সৃজন
সিরাজ সাঁই বলে রে লালন
ফুলের ভ্রমর কে তা করগে উল।।
(আরো পড়ূন)
যে জন বৃক্ষমূলে বসে আছে।
তার ফলের কি অভাব আছে।।
কল্পবৃক্ষে যে-জন বসে রয়
বাঞ্ছা করলে সে ফল হাতে পায়
ভুবনজোড়া গাছের গোড়া
মূল শিকড় তলাতে আছে।।
গাছের গোড়ায় যে জন বসে রয়
চৌদ্দ ভুবন সেই দেখতে পায়
এ-কুল ও-কুল দু’কুলই যায়
জনম হবে না পশুর মাঝে।।
ডাল নাই তার পাতা আছে
তিন ডালে জগৎ জুড়েছে
লালন বলে ভাবিস মিছে
ফুল ছাড়া এক ফল রয়েছে।।
(আরো পড়ূন)
নৈরাকারে ভাসছে রে এক ফুল।
সে যে ব্রহ্মাবিষ্ণু হর, আদি পুরন্দর
তাদের সে-ফুল হয় মাতৃকুল।।
বলবো কি সেই ফুলের গুণবিচার
পঞ্চমুখে সীমা দিতে না রে নর
যারে বলি মূলাধার, সেহি তো অধর
ফুলের সঙ্গ ধরা তার সমতুল।।
নীলে অন্ত নাই স্থিতি সে ফুলে
সাধকের মূল বস্তু এই ভূমণ্ডলে
বেদের অগোচর, সে ফুলের নাগর
সাধুজনা ভেবে করেছে তার উল্।।
কোথা বৃক্ষ কোথা রে তার ডাল
তরঙ্গে পড়ে ফুল ভাসছে চিরকাল
কখন এসে অলি, মধু খায় ফুলি
লালন বলে চাইতে গেলে দেয় রে ভুল।।
(আরো পড়ূন)
এক ফুলে চার রঙ ধরেছে।
সে ফুলে ভাব নগরে
কি শোভা করেছে।।
কারণবারির মধ্যে সে ফুল
ভেসে বেড়ায় একুল ওকূল।
শ্বেতবরণ এক ভ্রমর ব্যাকুল
সে ফুলের মধুর আশে ঘুরতেছে।।
মূল ছাড়া সে ফুলের লতা
ডাল ছাড়া তার আছে পাতা।
এ বড় অকৈতব কথা
ফুলের ভাব কই কার কাছে।।
ডুবে দেখ মন দেল-দরিয়ায়
যে ফুলে নবির জন্ম হয়।
সে ফুল তো সামান্য ফুল নয়
লালন কয় যা নাই মূল দেশে
(পাঠান্তর - লালন কয় যার মূল নাই দেশে)
(আরো পড়ূন)ঘরে বাস করে সে, ঘরের খবর নাই
(চেতন গুরুর সঙ্গ লয়ে খবর করো ভাই)
চার যুগে ঘর চাবি আঁটা ছোড়ান পরের ঠাঁই।
কলকাঠি যার পরের হাতে
তার ক্ষমতা কী জগতে
লেনাদেনা দিবা রাতে
পরে পরের ভাই।।
একি বেহাত আপন ঘরে
থাকতে রতন হই দারিদ্রে
দেয় সে রতন হাতে ধরে
তারে কোথা পাই।।
ঘর ছেড়ে ধন বাইরে খোঁজা
বয় সে যেমন চিনির বোঝা
পায়নারে সে চিনির মজা
বলদই যে ছাই।।
(পর দিয়ে পর ধরা ধরি
সে পর কৈ চিনতে পারি
লালন বলে হায় কি করি না দেখি উপায়।। )
(ভোলাই শা, গান নং ১৬৩, পৃষ্ঠা ৫২; তবে ব্রাকেটের অন্তর্ভুক্ত পদ্গুলো ভোলাই শায়ের বইয়ে নাই)
অন্যান্য ভাষ্য
ঘরে বাস করে সে ঘরের খবর নাই
চার যুগে ঘর চাবি আঁটা
ছুরান পরের ঠাঁই।্
কলকাঠি যার পরের হাতে
তার ক্ষমতা ত্রি-জগতে
লেনাদেনা দিবা রাতে
পরে পরের ভাই।।
একি বেহাত আপন ঘরে
থাকতে রতন হয় দারিদ্রে
দেয় সে রতন হাতে ধরে
তারে কোথা পাই।।
ঘর ছেড়ে ঘর বাইরে খোঁজা
বয় সে যেমন চিনির বোঝা
পায়নারে সে চিনির মজা
বলদ যে যা ছাই।।
পর দিয়ে পর ধরা ধরি
সে পর কৈ চিনতে পারি
লালন বলে হায় কি করি
না দেখি উপায়।।
(আরো পড়ূন)
জগত শক্তিতে ভোলালে সাঁই
ভক্তি দেও হে যাতে চরণ পাই॥
রাঙা চরণ দেখবো বলে
বাঞ্ছা সদাই হৃদ-কমলে
(তোমার) নামের মিঠায় মন মজেছে
আমি রূপ কেমন তাই দেখতে চাই॥
ভক্তি-পথ বঞ্চিত করে
শক্তি-পথ দিচ্ছে তারে
যাতে জীব ব্রহ্মান্ডে ঘোরে
কান্ড তোমার দেখি তাই॥
চরণের যোগ্য মন তো নয়
তথাপি মন ঐ চরণ চায়
অধীন লালন বলে, হে দয়াময়
তুমি দয়া করো আজ আমায়॥
(আরো পড়ূন)
সাঁই আমার কখন খেলে কোন খেলা
জীবের কি সাধ্য বলো
গুণে পড়ে তাই বলা॥
কখনো ধরে আকার
কখনো হয় নিরাকার
কেউ বলে আকার সাকার
অপার ভেবে হই ঘোলা॥
ভাণ্ড ব্রহ্মাণ্ড মাঝে
সাঁই বিনে কি খেল আছে
লালন কয় নাম ধরে সে
কৃষ্ণ ও করিম কালা॥
(আরো পড়ূন)
সাঁইর লীলা বুঝবি খ্যাপা কেমন করে
লীলার যার নাইরে সীমা
কোন্ সময় কোন্ রূপ সে ধরে
কেমন করে ॥
আপনি ঘর আপনি ঘরি
আপনি করে রসের চুরি ঘরে ঘরে
আপনি করেন ম্যাজেষ্টারি
আপন পায়ে বেড়ি পরে
কেমন করে ॥
গঙ্গায় গেলে গঙ্গাজল হয়
গর্তে গেলে কূপজল কয় ভেদ বিচারে
তেমনি সাঁইজীর বিভিন্ন বিভিন্ন নাম
জানায় পাত্র অনুসারে
কেমন করে ॥
একে বহে অনন্ত ধারা
তুমি আমি নাম বেওয়ারা ভবের পরে
লালন বলে আমার আমি
জানলে বাধা যেত দূরে
কেমন করে ॥
(আরো পড়ূন)
কে কথা কয় রে দেখা দেয় না?
নড়ে চড়ে হাতের কাছে
খুঁজলে জনমভর মেলে না।।
খুঁজি তারে আসমান জমিন
আমারে চিনি না আমি
এ বিষম ভ্রমের ভ্রমি
আমি কোন্ জন, সে কোন্ জনা।।
হাতের কাছে হয় না খবর,
কি দেখতে যাও দিল্লির শহর!
সিরাজ সাঁই কয়, লালন রে তোর
সদাই মনের ঘোর গেল না।।
(আরো পড়ূন)
এক ফুলের মর্ম জানতে হয়
যে ফুলে অটল বিহারী
বলতে লাগে ভয়।।
ফুলে মধু প্রফুল্লতা,
ফলে তার অমৃত সুধা।
এমন ফুল দুনিয়ায় পয়দা
জানিলে দুর্গতি যায়।।
চিরদিন সেই যে ফুল,
দিন দুনিয়ার মকবুল।
যাতে পয়দা দিনের রাসুল,
সে ফুলতো সামান্য নয়।।
জন্মপথে ফুলের ধ্বজা
ফুল ছাড়া নয় গুরু পূজা।
সিরাজ সাঁই কয় এ ভেদ বোঝা
লালন ভেড়োর কার্য নয়।।
(আরো পড়ূন)
সেই অটল রূপের উপাসনা।
ভবে কেউ জানে কেউ জানে না।।
বৈকুণ্ঠে গোলকের উপর
আছে রে সেই রূপের বিহার
কৃষ্ণের কেউ নয় সেই অধর
রাধার পতি সেই জনা।।
স্বরূপ রূপের এই যে ধারণ
দোহার ভাবে টলে দোহার মন
অটলকে টলাতে রে মন
পারে বল কোনজনা।।
নৈরাকারে জল হইতে জন্ম
শক্তির ধারা সেই অবিম্বে
লালন বলে তার অনুপ্রেমে
দিন থাকতে জেনে নে না।।
(আরো পড়ূন)
নিচে পদ্ম উদয় জগৎময়।
আসমানে যার চাঁদ-চকোরা
কেমন করে যুগল হয়।।
নিচে পদ্ম দিবসে মুদিত
আসমানেতে চন্দ্র উদয় তখন বিকশিত
তারা দুয়েতে এক যুগল আত্মা
সে চাঁদ লক্ষ যোজন ছাড়া রয়।।
চন্দ্র পদ্ম কান্ত শান্ত যে
মালির সঙ্গে রসরঙ্গে যোগ করেছে সে
মালি যেমন সাজিয়ে ডালি
বসে আছে দরজায়।।
গুরু পদ্ম শিষ্য চন্দ্র হয়
শিষ্য পদ্মে গুরু বদ্ধ রয়
লালন বলে এরূপ হলে
তাদের যুগল আত্মা জানা যায়।।
(আরো পড়ূন)
আহাদে আহাম্মদ এসে
নবি নাম কে জানালে।
যে তনে করিলে সৃষ্টি
সে তন কোথায় রাখিলে।।
আহাদ নামে পরওয়ার
আহাম্মদ রূপে সে এবার।
জন্মমৃত্যু হয় যদি তার
শরার আইন কই চলে।।
নবি যারে মানিতে হয়
উচিৎ বটে তাই জেনে লয়।
নবি পুরুষ কি সে প্রকৃতি কায়
সৃষ্টির সৃজনকালে।।
আহাদ নামে কেন রে ভাই
মানবলীলা করিলেন সাঁই।
লালন বলে তবে কেন যাই
অদেখা ভাবুক দলে।।
(আরো পড়ূন)
আর কি হবে এমন জনম
বসব সাধুর মেল।
হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়
ঘিরে নিল কালে॥
মানবদলেরই আশায়
কত দেব দেবতা বাঞ্ছিত হয়
হেন জনম দীন-দয়াময়
দিয়েছে কোন ফলে ॥
কত কত লক্ষ যোনি
ভ্রমণ করেছ তুমি
মানব কুলে মন রে তুমি
এসে কী করিলে ॥
ভুলো না রে মন রসনা
সমঝে কর বেচাকেনা
লালন বলে কুল পাবা না
এবার ঠকে গেলে॥
(আরো পড়ূন)
(কবে) সাধুর চরণ ধুলি (মোর) লাগবে গায়
(আমি) বসে আছি আশাসিন্ধু হয়ে সদাই ॥
চাতক যেমন মেঘের জল বিনে
অহর্নিশি চেয়ে থাকে মেঘ ধোয়ানে
(ও সে) তৃষ্ণায় মৃত্যুর গতি জীবনে (হোল)
সে দশা আমার ॥
ভজন সাধন আমাতে নাই
কেবল মহৎ নামেএ দেই গো দোহাই
(তোমার) নামের মহিমা জানাও গো সাঁই
পাপী হও সদয় ॥
শুনেছি সাধুর করুণা
সাধুর চরণ পরশিলে হয়গো সোনা
বুঝি আমার ভাগ্যে তাও হোলনা ফকির
লালন কেঁদে কয়॥
[ছেঁউড়িয়ায় প্রচলিত, ভোলাই শা-র খাতা, গান নং ৯৯]
(আরো পড়ূন)
না বুঝে মজ না পিরীতে
বুঝে সুঝে কর পিরীতি
শেষ ভাল দাঁড়ায় যাতে ।।
ভবের পিরীত ভূতের কীর্তন
ক্ষণেক বিচ্ছেদ ক্ষণেক মিলন
অবশেষে বিপাকে মরণ
তেমাথা পথে।।
পিরীতে যদি হয় বাসনা
সাধুর কাছে জানগে বেনা
লোহা যেমন পরশে সোনা
হবে সেই মতে।।
এক পিরীতের বিভাগ চলন
কেউ স্বর্গে কেউ নরকে গমন
দেখে শুনে বলছে লালন
এই জগতে।।
(আরো পড়ূন)
গোল করনা ও নাগরী গোল কোর না গো
দেখি দেখি ঠাওরে দেখি কেমন গৌরাঙ্গ।।
সাধু কি ও যাদুকরি
এসেছে এই নদেপুরি
খাটবে হেথায় জারিজুরি
তাই কি ভেবেছ?
বেদ-পুরাণে কয় সমাচার
কলিতে আর নাই অবতার
যে কয় সেই গিরিধর
এসেছে নদেপুরী।।
বেদে যা নাই তাই যদি হয়
পুঁথি পড়ে কে মরতে যায়
লালন বলে ভজব সদাই
(আমরা) গৌরেরই পদ।।